নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হামিদের ব্লগ

হামিদ আহসান

ভবের এই খেলাঘরে খেলে সব পুতুল খেলা জানি না এমন খেলা ভাঙে কখন কে জানে ...

হামিদ আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কৃষ্ণকলি ...............(গল্প)

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪৮


নিশির সাথে আবার এভাবে দেখা হবে ভাবি নি কখনও। সত্যি বলতে কি তখন কলেজ জীবনের বন্ধুদের কারোর সাথেই আর যোগাযোগ ছিল না। অনেককে ভুলেও গেছি। তবে দুয়েকজন এমনও ছিল যাদের কথা বেশ মনে পড়ত। মাঝে মধ্যে মনের কোনো গভীর কোণা থেকে জেগে উঠত দুয়েকটি নাম। নিশি তেমনই একটি নাম।পুরো নাম আফসানা নিশি। গায়ের রং কালো বলে তার নাম নিশি রাখা হয়েছে বলে তার ধারণা। যাঁরা নামটা রেখেছিলেন তাঁদের কী চিন্তা-ভাবনা ছিল সেটা অবশ্য আমার জানা হয় নি কখনও।

ঢাকার প্রাচীনতম কলেজগুলোর একটির নাম সলিমুল্লাহ কলেজ। পুরনো ঢাকার ওয়ারীতে এর অবস্থান। এই ওয়ারী নাকি এক সময় ঢাকার অভিজাত আবাসিক এলাকা ছিল। একাশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে আমি আর নিশি একে অপরের সহপাঠি ছিলাম এই কলেজে। প্রথম দেখায় যখন নাম বিনিময় হচ্ছিল তখন সে এভাবেই বলেছিল-‘আমি নিশি। নিশি মানে রজনী। মানে রাত। গায়ের রঙ রাতের মতো কালো, তাই বাবা-মা আমার নাম রেখেছে নিশি।’ কথাগুলো বলেই একটা হাসি দেয়, আমি চমকে উঠেছিলাম দ্যুতি ছড়ানো হাসি দেখে।

কী ছিল তার কথা বলার ঢংয়ে আর সেই হাসিতে জানি না, আমি অপলক চেয়েছিলাম তার দিকে। তার সেই হাসি সেই বয়সে আমাকে কেমন যেন আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল। গায়ের রং কালো ঠিক, তবে কথা বলার সময় মুখে কেমন একটা নিষ্পাপ ভঙ্গি আসে। আমি গভীর মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়ে থাকতাম সেদিকে। সেই প্রথম দিন থেকেই তার সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়ে যায়। তারপর দু’টো বছরে আমরা একে অপরের অনেক ভাল বন্ধু হয়ে উঠেছিলাম; পাশাপাশি ছিলাম এইচএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত।


গায়ের রঙ নিয়ে তার আক্ষেপ সব সময় লক্ষ্য করতাম। যেকোনো ছুতো পেলেই সে যে একটা কালো সেটা মনে করিয়ে দিত আর দীর্ঘশ্বাস ছাড়ত। এদীর্ঘশ্বাসের পেছনে যে কোনো করুণ ঘটনাও থাকতে পারে, মানুষের বর্ণবাদী আচরণ যে এর জন্য দায়ী হতে পারে তেমন কোনো চিন্তা আমার মাথায় সে সময় আসে নি। মাঝে মাঝে মনে হতো ও খুব ক্ষেপাটে আচরণ করছে।

একদিন দেখি কেমন ঝিম মেরে বসে আছে। জিজ্ঞেস করলাম কী হয়েছে নিশি, এমন চুপচাপ বসে আছো? বলল, না কিছুই হয় নি। তারপর আচমকাই বলে বসল:

শোনো প্রত্যয়! এখন থেকে আমার নাম কৃষ্ণকলি। তুমি এখন থেকে আমাকে এই নামেই ডাকবে বুঝলে?

কেন? হঠাৎ নাম পরিবর্তন করলে কেন?

নাম পরিবর্তন করিনি তো বুদ্ধু কাহেকার! বলেই আমার পিঠে একটা কিল দিয়ে দৌড় দেয়। আমি বোকার মতো চেয়ে থাকি। তখন না বুঝলেও এখন বুঝি তার অর্থ কী ছিল।

গায়ের রঙ নিয়ে নিশির আক্ষেপের কারণ তখন না বুঝলেও এখন ঠিকই বুঝি৷ সমাজের এক শ্রেনীর মানুষের কাছে মেয়েদের গায়ের রঙটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সমাজে এরাই হয়ত সংখ্যাগরিষ্ট। মানুষের মন, মনন আর চেতনার জগৎটা তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। এমনকি আমাদের তথাকথিত শিক্ষিতরাও এর বাইরে যেতে পারে না। কারণ এরা কেবল সনদসর্বস্ব শিক্ষিত। জ্ঞানের চর্চা তাদের মধ্যে নেই। অথচ মানুষেরচেতনার জগৎটাকে সঠিকভাবে শানিত ও বিকশিত করতে জ্ঞান চর্চার বিকল্প নেই।

আমরা আমাদের শরীরটাকে প্রতিদিন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে থাকি। দাঁত-মুখ পরিস্কার করি। তারপর কাপড়চোপড় ধুয়ে পরিস্কার করে পুরুষরা চুল দাড়ি কেটে ফিটফাট হয়ে বাইরে বের হই। কিন্তু মন, মনন আর চেতনাকে পরিচ্ছন্ন সুন্দর আর ফিটফাট করতে আমরা কী করি? এক্ষেত্রে আমাদের উদাসীনতা আশ্চর্যজনকভাবে বেশি।

নিশিকে আমার সবচেয়ে বেশি ভাল লাগত তার পড়াশোনার জন্য। সেই সময়ই দেশি বিদেশি মহৎ সাহিত্যিকদের সাহিত্যকর্ম তার নখদর্পে ছিল।সাহিত্য পাঠ একজন মানুষকে তার জীবন সম্পর্কে একটা সুন্দর বোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে। জীবনের দর্শন সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা তৈরী করে মানুষকে পরিপক্ক পরিশীলিত মস্তিষ্কসম্পন্ন করে গড়ে তুলতে অনন্য ভূমিকা পালন করে থাকে। যারা সাহিত্য পড়ে আর যারা পড়ে না তাদের মানসিকতায় পার্থক্যটা চোখে পড়বেই। সাহিত্য পাঠ একজন মানুষের মস্তিষ্কটাকে পরিশীলিত এবং ম্যচ্যুরড করে গড়ে তুলতে পারে। এধরনের ম্যাচ্যুরিটি সম্পন্ন লোকেরাই গড়তে পারে সুন্দর একটা পৃথিবী।নিশি এধরনেরই একজন সাহিত্যপ্রেমী মেয়ে।

নিশির সাথে কি আমার প্রেম ছিল? না, প্রেম করার মতো সাহস আমার ছিল না তখন; কিংবা প্রেম হয়ে গেলেও সেটা স্বীকার করার সাহস ছিল না। আমার ভেতরে এই ধারণাই বদ্ধমূল ছিল যে, আমি প্রেম করতে পারি না। একজনকে যতই ভাল লাগুক, যতই তাকে মিস করি, যতই তার জন্য কষ্ট পাই না কেন সেটা প্রেম না। সেটা কষ্ট পাওয়ার জন্যই কষ্ট পাওয়া। যেমন রাস্তার একটা টোকাই যখন কোনো একটা দামি মিষ্টির দোকানের পাশ দিয়ে যায় তখন আয়নার ভেতরে থরে থরে সাজানো মিষ্টি দেখে কখনও সখনও মুগ্ধ হলেও সে কোনো দিন ভাবতে পারে না যে, এই মিষ্টি সে খাবে। এটা তার মনে আসেই না। তার ভেতরের অনুভূতিটাই এমন থাকে যে, এই জিনিস আমার না। তার অবচেতনেই থাকবে এ জিনিস আমার খাওয়ার জন্য না। ফলে তার চেতন মন কখনওই বলবে না সেই মিষ্টি আমি খাব । ধরতে গেলে মাইর ছাড়া কিছুই জুটবে না কপালে।

আমারও ছিল সেই অবস্থা। রক্ষণশীল পরিবার আমাদের। বাবা মা শুনলে মেরেই ফেলবে এমনই ছিল আমার চিন্তা। কিন্তু যখন কলেজ জীবন শেষ হয়ে গেল, দু’জন দু’দিকে চলে গেলাম তখন থেকে বুকের ভেতরে কোথায় যেন খুবই তীব্রভাবে অনুভব করতাম নিশিকে।

নব্বই এর দশকের মাঝামাঝি আমাদের সেই সময়টাতে ছেলেমেয়েদের মাঝে বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড শব্দগুলো আজকালকার মতো এতো সহজে উচ্চারিত হতে শুরু করে নি। মোবাইল ফোন এসে গেলেও সেটা সবার নাগালে ছিল না। গুটি কয়েক মানুষের হাতে শোভা বর্ধন করত ঢাউস সাইজের মোবাইল সেট। তবে একটা নাম্বার সে আমাকে দিয়েছিল। কলেজে যেদিন শেষ ক্লাশ হল সেদিন দিয়েছিল নাম্বারটা। তখন টেলিফোনের নাম্বার লিখে রাখার জন্য ছোট্ট নোটবুকের মতো একটা খাতা ছিল আমার; যার নাম টেলিফোন ইনডেক্স। তো এই ইনডেক্সের নাম্বারগুলির মধ্যে অনেক নাম্বারের পাশেই অনুরোধে কথাটি লেখা ছিল । মানে এই নাম্বারটা পাড়াপ্রতিবেশির। চাইলে ডেকে দিবে। এই রকম পাশে অনুরোধে লেখা একটা নাম্বার নিশি আমাকে খাতার একটা কোণা ছিড়ে তাতে লিখে দিয়েছিল।

অনেকবার মনে হয়েছিল ফোন দেই। কিন্তু অপরিচিত একটা ছেলে একটা মেয়েকে তার প্রতিবেশির কাছে ফোন দিয়ে চাইবে এটা কোনো সহজ ব্যাপার ছিল না আমার মতো পুরনো ঢাকার রক্ষণশীল পরিবারের একট বুদ্ধু ছেলের জন্য। কে কী বলবে সেসব ভাবতে ভাবতে সাহস করে কোনোদিন আর ফোন দেওয়া হয় নি।

আমার শিক্ষাজীবন সলিমুল্লাহময় হয়ে আছে। সলিমুল্লাহ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি হলাম স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে। এরপর এখন যদি দেশে সলিমুল্লাহ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নামে কেনো মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত তাহলে সেখানে হয়তো আরও উচ্চতর শিক্ষা নিতে পারব।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে এরই মধ্যে চিকিৎসাবিদ্যার তাত্ত্বিক পাঠ শেষ করে ইন্টার্নশীপও প্রায় শেষের দিকে। ইন্টার্নী ডাক্তার হিসেবে সেদিন ডিউটি পড়েছিল জরুরী বিভাগে। রাত একটার দিকে একটা রোগি নিয়ে আসা হল। ঘুমের বড়ি খেয়েছে। স্টমাক ওয়াস করতে হবে।

নার্সদের সহযোগিতায় দ্রুত স্টমাক ওয়াসের ব্যবস্থা করতে গিয়ে আমি বিরাট একটা শক খেলাম। দেখি রোগি আর কেউ নয় আমার এক সময়ের সহপাঠি বন্ধু, সেই কৃষ্ণকলি, সেই নিশি। ক্ষণে চোখ মেলে দেখছে আবার পরক্ষণেই গভীর ঘুমে তলিয়ে যাচ্ছে।

দুই.

আমি কালো মেয়ে। তাই আমাকে দেখে কোনো পুরুষের মনে যদি প্রেম না জাগে তাতে সেই পুরুষকে যেমন দোষ দেওয়া যায় না তেমনি আমাকেও তো দোষ দেয়া যায় ন। কিন্তু পরিবার, পাড়াপড়শি, আত্মীয়-স্বজন আমাকেই দোষতে লাগল।নানা কথায় আমার জীবনটা অতিষ্ট করে তুলতে লাগল।

আবার অন্যদিক দিয়ে দেখো, কোনো পুরুষের মনে প্রেম জাগানোর মতো কোনোকিছুই আমার চেহারায় না থাকলেও বয়স হওয়ার সাথে সাথে একজন সুন্দরী রাজকুমারীর মনে যেমন প্রেম জাগে আমারও তেমনি জেগেছিল। এক সময় আমারও বয়স ষোল বছর হয়। এসময় মেয়েদের আদুরে নাম হয় ষোড়শী। তো আমিও একসময় ষোড়শী হলাম এবং আমারও মনে তীব্র ইচ্ছা জাগল কারো প্রেয়সী হতে। কোনো প্রেমিক পুরুষের কামনার নারী হয়ে তার বুকে হুটোপুটি করতে; ভালবাসার নীড়ে ভালবাসাবাসি করতে। কিন্তু কেউ তো এলো না আমাকে ভালবাসতে।

তারপর একদিন এই আমি কালো মেয়ে হয়ে উঠলাম অষ্টাদশী। না, তখনও আমার জীবনে আসে নি এমন কোনো পুরুষ যাকে ভালবেসে মরতেও পারি আমি। আমার কালো মুখ আর আর কালো গায়ের রঙ দেখে পুরুষের মনে প্রেম নয় বরঞ্চ ঘৃণাই নাকি জন্মায়। কিন্তু সেটা তো আর আমার দোষ না! আমি কি চেয়ে এনেছি আমার কালো রঙ! এজন্য আমি না হয় ভালবাসা নাই পেলাম, কিন্তু ঘৃণা কেন পাব?

তুমি তো জান আমার রেজাল্ট ভাল। কিন্তু বাবা বলেন মেয়ে মানুষের আর পড়তে হবে না। বিয়ে দিয়ে দিতে পারলে বাঁচি। শেষে ইডেনে ভর্তি হলাম বায়োলজিতে। এখানে কেবল মেয়েরা পড়ে বলে বাবা শেষ পর্যন্ত অনুমতি দিলেন। আমি লেখা পড়া চালিয়ে যেতে লাগলাম এক মনে। কিন্তু বয়স তো আমার ইতোমধ্যে কুড়ি। তো লোকের মুখে আমি বুড়ি। সেসময় আমার পিতাও নিজেকে কন্যাদায়গ্রস্ত ভেবে নানা আলতু ফালতু ছেলের প্রস্তাব নিয়ে আসতে লাগলেন। বাবার কথা তোর মতো কালো মেয়েকে কে বিয়ে করবে? শেষে আমার ইজ্জত ডুবাবি। এভাবে গায়ের রঙ কালো হওয়ার কারণে নিয়মিতই নানা লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সইতে হতো আমাকে ।

এই সমাজে কেবল কালো হয়ে জন্ম নেওয়াই যেন আজন্ম পাপ ছিল আমার। পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে সঙ্গে এই কালো রঙের জন্য কটূক্তি-বিদ্রুপ হজম করতে হচ্ছিল ঘরের লোকজনের কাছ থেকেও। বিয়ে হবে না বলে ভাবীর উস্কানির আগুনে ঘি ঢালে অন্য ভাই-বোনেরাও। খোদ জন্মদাতাই সুযোগ পেলেই বলতেন মরিস না কেন? মরে যা তুই!

শেষ পর্যন্ত সবাইকে রেহাই দিতেই মরতেই চেয়েছিলাম। আত্মহননের মাধ্যমে সবাইকে রেহাই দেওয়ার সাথে সাথে নিজেও মুক্তি খুঁজে নিতে চাইছিলাম বলতে পার। যাবতীয় লাঞ্ছনা-গঞ্জনার হাত থেকে মুক্তি। বেঁচে থাকার আর কোনো অর্থ অবশিষ্ট ছিল না আমার কাছে। আমি তো আত্মহত্যা করছিলাম না, আমি খুন হচ্ছিলাম সামাজিক বর্ণবাদী অবিচারের হাতে। যখন এসব গঞ্জনা অনেক বেশি অসহনীয় হয়ে পড়ে তখনই মানসিক যন্ত্রণায় আত্মহননের পথটাই বেছে নেয় আমাদের মতো মেয়েরা!

একটা ছেলে হলে এক্ষত্রে বাড়ি ছেড়ে গিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা কোনো ব্যাপারই হত না। কিন্তু সারা জীবন পরিবারের সাথে কাটানো আমার মতো একটা মেয়ের পক্ষে হঠাৎ করে ঘর ছাড়ার চিন্তা করাও সম্ভব ছিল না। কোথায় যাব আমি! একটা কালো মেয়েকে বিয়ে করার লোকের অভাব হলেও নষ্ট করার লোকের যে অভাব নেই সেটা আমি ভালই বুঝে গেছি।

ভাল কোনো জায়গায় ভর্তি না হতে পারলেও আমি কঠোরভাবে পড়াশোনা করতে থাকলাম। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেখে জাপানে একটা স্কলারশীপের জন্য আবেদন করলাম এবং পেয়েও গেলাম। বাবা যেতে দিবে না তাই গেলাম না। দেশে কোনো একটা চাকরী করতে চাইলাম, বাবা তাও করতে দিবে না। তার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করে সংসার করতে হবে। চাকরী করা যাবে না কোনোভাবেই। আমি তাও মেনে নিলাম। কিন্তু বিয়ের আগেই যখন বুঝে গেলাম ছেলেটা নেশাখোর তখন আর সহ্য করতে পারলাম না। বলতে পারো প্রত্যয়, বিধাতা যাকে ভালবাসার কাঙাল একটা মন দিয়েছেন, মনে মায়া দিয়েছেন, ভালবাসা দিয়েছেন তাকে কায়াটা না দিয়ে কেন কষ্ট দেন? শেষে এই কঠিন প্রশ্নটা আমার দিকে ছুড়ে দেয় নিশি।

হাসপাতালের কেবিনে বেডের পাশে স্তব্ধ হয়ে বসে শুনছিলাম নিশির কথাগুলি। কেবিনে আমি ছিলাম প্রায় সার্বক্ষণিক। দ্রুতই অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠে নিশি। বেডের এক পাশেই দু’ পা তুলে দিয়ে বসেছিলাম। খালাম্মাকে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছিলাম একটু বিশ্রাম নিয়ে আসতে। নিশির কথাগুলো শুনতে শুনতে অজান্তেই কখন যে তার হাত দু’টি নিজের দু’হাতে মুঠোবদ্ধ করে নিয়েছিলাম টেরই পাই নি। চোখাচোখি হতেই হেসে দিয়েছিলাম দু’জনেই। আমি কিছুটা লজ্জা পেয়ে হাতটা ছেড়ে দিয়ে বাইরে চলে এসেছিলাম।

পরিশিষ্টঃ সেই যে ধরেছিলাম নিশির হাত আর ছাড়ি নি। এবার আর ভয় করি নি সমজ-সংসারের। নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিতে শুরু করলাম। দু’জনেই চাকরি বাকরি পাওয়ার পর বিয়েটাও সেরে ফেললাম। নিজেরা যখন সাহসী আর স্বাবলম্বি হলাম তখন ভাল কাজে পরিবারকে সাথেই পেলাম। আট বছরের সংসার জীবনে আমাদের ঘর আলো করে আছে আমাদের মেয়ে অর্হা।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৩০

রায়হান চৌঃ বলেছেন: অসাধারণ......... হামিদ ভাই
কিন্তূু কিছুটা কনফিউজ্ড, ভাবছি- সত্যি কি গল্প ? না কি বাস্তব ?, আর যদি বাস্তব ! হয়ে থাকে তবে শেষের অংশ টুকু ভালো লেগেছে, যদি বাস্তব হয়ে থাকে তবে আপনার জন্য শুভ কামনা রইল :)
ভালো থাকবেন

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:০১

হামিদ আহসান বলেছেন: হা হা হা ...........
চমৎকার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ..........

২| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:২৭

প্রামানিক বলেছেন: হামিদ ভাই, এটা কি বাস্তব জীবন কাহিনী?

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:০২

হামিদ আহসান বলেছেন: হা হা হা ..........

ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই ........

৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৯

হামিদ আহসান বলেছেন: কনফিউশনটা থাকুক না .........

৪| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:০২

মানবী বলেছেন: আপনার লেখার স্টাইটা চমৎকার!

বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করেনা যে শুধু মাত্র শ্যামবর্ণ বা কৃষ্ণর্বের কারনে কোন বাবা তার সন্তানের সাথে এমন নিষ্ঠুর আচরন করতে পারে! এটাও কি সম্ভব যে বাংলাদেশের মতো স্থানে শুধুমাত্র কৃষ্ণবর্ণ হবার কারনে কেউ আত্মহত্যা করতে চাইবে!!! যদি হয়, তাহলে তা ভীষণ ভীষণ দুঃখজনক এবং আধুনিক হয়ে উঠতে আমাদের আরো কয়েক শতাব্দীর প্রয়োজন তা প্রমনিত হবে!

ধন্যবাদ হামিদ আহসান।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:১২

হামিদ আহসান বলেছেন: অাপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ চমৎকার একটি গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৫৬

হামিদ আহসান বলেছেন: তবে এজাতীয় ঘটনা ঘটে৷ মূলত পত্রিকার একটি খবরই ছিল অামার এগল্পের ইন্সপিরেশন ..।

৫| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:১৫

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
মনই প্রকৃত সৌন্দর্য্যের সংজ্ঞা হোক ৷ আদিমতম অবহেলা চিরকালীন প্রথা সবদেশে ৷

গল্প হিসেবে কিছু জায়গায় বক্তব্য সর্বস্ব বিধায় পাঠক হতাশ হতে পারেন ৷

০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:৫৪

হামিদ আহসান বলেছেন: //গল্প হিসেবে কিছু জায়গায় বক্তব্য সর্বস্ব //


সেটা অামি নিজেও অনুভব করেছি৷ উৎরে যেতে পারি নি সেটা অবশ্যই অামার ব্যর্থতা৷ অনেক ধন্যবাদ ......

৬| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:২৩

হামিদ আহসান বলেছেন: ......

৭| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:০১

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: বাস্তব কি অবাস্তব সেটার বাইরে গিয়ে বলবো আপনার লিখায় সমাজের কঠোর বাস্তবতা উঠে এসেছে ।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:২৬

হামিদ আহসান বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই ......।

৮| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:০৩

হামিদ আহসান বলেছেন: .......

৯| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৫৬

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: গল্প ভালো লাগলো। নিজে কালো মেয়ে বলেই কাহিনীটা আরও রিলেট করতে পেরেছি। ছোটবেলায় খাব কথা শুনতাম এখন তত শুনতে হয় না। শুনলেও গায়ে লাগে না। মানুষের রূপের চেয়ে গুণের দামই বেশী। কেউ ভালোবাসুক না বাসুক। ভালো থাকবেন।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:০২

হামিদ আহসান বলেছেন: মানুষের রূপের চেয়ে গুণের দামই বেশী। কেউ ভালোবাসুক না বাসুক। ভালো থাকবেন।
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি কমেন্টের জন্য৷ ভাল থাকুন..জীবন অারও সুন্দর হোক...।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.