![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করেই বাসায় বিয়ে করার বায়না ধরে বসল হাবিবুর রহমান সরকার ওরফে হাবু। বাবা-মার একমাত্র সন্তান বলে সবার আদরে আদরেই বড় হয়েছে। কিন্তু তাই বলে এত তাড়াতাড়ি বিয়ে! না, এটা কেউ মানতে চায় না। কিন্তু অন্যরা না মানলে কী হবে, হাবু তার বিয়ের সিদ্ধান্তে অনড়। বিয়ের পক্ষে তার কাছে কিছু যুক্তিও আছে। যারমধ্যে দুইটা যুক্তি বেশ জোড়ালো। যুক্তি দুইটাই গার্লফ্রেন্ড সংশ্লিষ্ট। প্রথম যুক্তিটা হলো তার গার্লফ্রেন্ডকে কিছু ছেলে জ্বালাতন করে, রাস্তাঘাটে উত্তক্ত করে। বিয়ে করে ফেললে তাকে আর কেউ জ্বালাতে আসবে না। দ্বিতীয়ত তার পরিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেজাল্ট বের হলে হাবুকে বিদেশ পড়তে পাঠিয়ে দিবে। তাই গার্লফ্রেন্ড ইস্যুটা এমন অনিশ্চিত রেখে সে বিদেশে পড়তে যেতে চায় না কিছুতেই।
মাঝখানে হাবুর নানু একটা আজাইরা ইস্যু নিয়া হাজির হয়। তার কথা হল, বাংলায় প্রেমিক-প্রেমিকার মতো এতো মধুর শব্দ থাকতে তোমরা বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড কেন বলবা। হাবু বলে, নানী, প্রেমিক-প্রেমিকা আর বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড এক না। যেমন কেক আর পিঠা এক না। পিঠার চাইতে কেক যেমন অনেক ইয়াম্মি হয় তেমনি প্রেমিকার চাইতে গার্লফ্রেন্ড আলাদা হয়। নানী শোনো, এটা বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড এর যুগ। প্রেমিক-প্রেমিকার যুগ ছিল তোমাদের সময়। যে যুগে যে নিয়ম৷ হাবুর এই যুক্তিতে হাবুর নানু আর কোনো কথা খুঁজে না পেয়ে চুপ করে যায়। হাবু হুমকি দেয় বাবা-মা বিয়ে না দিলে সে নিজে নিজে বিয়ে করে ফেলবে। দেশের আইন অনুযায়ী তার বিয়েকে কেউ আটকাতে পারবে না। অবশেষে নানা নাটক আর অঘটন ঘটনের পর হাবুর বিয়েটা পারিবারিকভাবেই হয়ে গেল তার সেই গার্লফ্রেন্ডের সাথে।
বিয়ের পর পরই একদিন হাবু তার বউকে নিয়ে বাইকে চড়ে ঘুরতে বের হয়েছে। বাসা থেকে বের হয়ে নিজেদের ব্লকের রাস্তাটা অতিক্রম করে কিছু দূর গিয়ে বড় রাস্তায় উঠতেই ট্রাফিক পুলিশের একজন সার্জেন্ট তাকে থামালো। পথঘাটে কেউ ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করছে কিনা সেটা দেখাই তাদের কাজ। হাবু বুঝতে পারে না তারা কোন আইনটা ভঙ্গ করেছে। তারা দুজনেই হেলমেট পরে আছে। সে নিয়ম মেনেই বাইক চালাচ্ছে। গাড়ির কাগজপত্রও ঠিক আছে। ‘কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা সেটা অবশ্য তাঁরা দেখতে চাইতেই পারে’-মনে মনে ভাবে হাবু।
যাই হোক হাবু বাইক থামিয়ে নেমে সার্জেন্টের সামনে এসে দাঁড়াল। তার পেছনে অনেকটা মুখ লুকানোর মতো করেই দাঁড়াল তার বউ। জিন্সের প্যান্টের ওপরে খয়েরী লং টপস পরা। শরীর থেকে এখনও কিশোরী কিশোরী ভাব দূর হয় নি। হাবুকে যে খুব তরুণ লাগছে তাও না। যদিও বয়স তার একুশ হয়ে গেছে আর তার বউয়ের ঊনিশ।
রোদে ঝলসে যাওয়া কালো গায়ের রঙ সার্জেন্ট সাহেবের। তবে কেমন একটা বনেদি ভাব আছে। একবার হাবুর দিকে তাকায় আবার দেখে তার বউয়ের দিকে। মিটি মিটি হাসে। হাবুর কাছে তাকে বাংলা সিনেমার ভিলেইনের মতো লাগছে। তবে সার্জেন্টের হাবভাবে হাবু অনেকটা ভরকে যায়।
‘মাইয়াটা কে’? অবশেষে প্রশ্ন করে সার্জেন্ট সাহেব।
‘আমার ওয়াইফ’-স্বাভাবিকভাবেই উত্তর দিতে চেষ্টা করে হাবু। মুখের হাসিটাও অনেক কষ্টে ধরে রাখে।
‘তোর আবার ওয়াইফও আছে!’ খুবই রূঢ় কণ্ঠে বলে সার্জেন্ট সাহেব। যেন হাবুর বউ থাকাতে তিনি খুবই বিস্মিত হয়েছেন। হাবু অবাক হয় সার্জেন্টের এমন ব্যবহারে। সে কোনো অন্যায় করে নি। তার সাথে কেন এমন তুইতোকারি করা হচ্ছে সে ভেবে পায় না! দেশের আইনে তাদের বিয়ে করার বয়স হয়েছে। বাবা মা তাদের বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। বিয়ে করে তারা কোনো অপরাধ তো করে নি।
‘কাগজপত্র বের করো!’ এবার তুমি সম্বোধনেই নির্দেশ দিলেন সার্জেন্ট সাহেব।
হাবু গাড়ির কাগজপত্র বের করে দেয়। সার্জেন্ট কাগচপত্র নেড়েচেড়ে দেখে। কাগজ উল্টাতে পাল্টাতে মাথা উঠিয়ে সার্জেন্ট সাহেব একবার হাবুর বউয়ের দিকে দেখে আর একবার কাগজের দিকে দেখে। তারপর হঠাৎই ধমকে উঠে সার্জেন্ট-‘গাড়ির কাগজ না, তোর বউয়ের মানে তোদের বিয়ের কাজপত্র বের কর হারামজাদা।’
বাইকের কাগজপত্র ঠিকঠাক সাথে রাখলেও বউয়ের কাগজপত্রও সাথে সাথে রাখতে হবে সে সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই ছিল না। বিয়ের সময় কিছু কাগজপত্রে সে স্বাক্ষর করেছে বটে কিন্তু সেসব কিছুই তার কাছে নেই। কাগজপত্র যা আছে সব আছে তার বাবার কাছে। আবার সে এটাও ভেবে পায় না যে, বউ কি গাড়ি যে কাগজপত্র সাথে রাখতে হবে! তার বাবার গাড়ির কাগজপত্র থাকলেও বাবা-মার বিয়ের কাগজপত্র সে কখনও দেখে নি। হাবু মাথা চুলকায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে।
‘কাগজ না থাকলে টাকা পয়সা কী আছে বের কর।’ সার্জেন্ট এবার ক্ষেপার মতো চেচিয়ে উঠে। হাবু মানিব্যাগ বের করে। ভেবেছিল এক হাজার টাকা দিবে। বাইকের সমস্যা হলে তো দুই শ’র বেশি দিত না। কিন্তু সার্জেন্ট তার হাত থেকে মানিব্যাগ কেড়ে নিয়ে টাকা পয়সা যা কিছু ছিল নিয়ে খালি মানিব্যাগটা ফেরত দেয়। তারপরও হাবু মনে মনে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। তবে নতুন বউয়ের সামনে এভাবে হেস্তন্যস্ত হতে তার খুবই খারাপ লাগছিল। হোক না সে পুরনো গার্লফ্রেন্ড, বউ হিসেবে তো নতুনই।
সে যাত্রা মানি ব্যাগের উপর দিয়ে গেছে বিপদটা। তারপর থেকে হাবু তাদের বিয়ের কাগজপত্র চেয়ে নেয় বাবার কাছ থেকে। কখনও বউকে নিয়ে বের হলে বউ আর বাইক দুইটারই কাগজপত্র সাথে রাখে। ‘যে দেশের রাস্তায় যে আইন, মানতে তো হবেই’-ভাবে হাবু।
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০৭
হামিদ আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ..
২| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৯
মুদ্দাকির বলেছেন: ভালোই কইসেন, পুলিশ এখন সব কিছুর কাগজ পত্রই চাইতে পারে, আমারতো মনে হয় আমি যে আমি, আমিযে আমার ক্লোন না তারও কাগজ চাইতে পারে।
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০৮
হামিদ আহসান বলেছেন: হা হা হা ...তাও চাইতে পারে ..
৩| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৩
অসামাজিক শফিক বলেছেন: হা হা হা
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০৮
হামিদ আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ...
৪| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৪
নীলসাধু বলেছেন: চমৎকার রম্য লিখেছেন হামিদ ভাই!
শুভেচ্ছা জানবেন।
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০৯
হামিদ আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ নীলদা ....
শুভেচ্ছা নিরন্তর ...
৫| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২২
প্রামানিক বলেছেন: খুব ভাল লাগল আপনার লেখা রম্য। ধন্যবাদ হামিদ ভাই।
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৮
হামিদ আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ....
৬| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০০
আখেনাটেন বলেছেন: হাবুর এই অসহায় আত্নসমর্পণ আমাদের সামনে অনেক কিছু উলংগ করে দেয়। ভালো লিখেছেন। রম্য হলেও ম্যাসাজটা চমৎকার।
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩৩
হামিদ আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ৷ ভাল থাকুন ......
৭| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৯
অগ্নি সারথি বলেছেন: নাহ! আমার হাসি আসল না। বিরক্তি এসেছে কিছুটা। দেশের পুলিশ বাহিনীর দূর্নীতি এবং জঘন্য অমানবিক কর্মকান্ডের উদাহরন এটি। 'যে দেশে যে আইন। মানতে তো হবেই।' আর এই আইন তৈরি করে কিছু চরম দূর্নীতিবাজ এবং হারামী অফিসার।
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৮
হামিদ আহসান বলেছেন: সেটাই ...
অনেক ধন্যবাদ ৷ শুভেচ্ছা নিরন্তর জানবেন..
৮| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২১
হামিদ আহসান বলেছেন: ভুক্তভোগী অার চাক্ষুষ যারা দেখে উপলব্ধি করতে পেরেছেন তাঁরা বুঝবেন বাস্তব পরিস্থতি কীরকম
৯| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১১
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: গুড স্যাটায়ার। মোটর সাইকেলে হুড নাই কেন? এজন্যও জরিমানা হতে পারে...
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০৫
হামিদ আহসান বলেছেন: হা হা হা ......সবকিছুই সম্ভব এখানে৷ ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৪
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: হা হা হা । চমৎকার রম্য । তবে এমন ঘটনা কিন্তু ঘটতেও পারে । পুলিশের যা অবস্থা !!!!