![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে নক্ষত্রের নিচে
প্রতিদিন অফিস থেকে একরাশ ক্লান্তি নিয়ে ঘরে ফিরি। কোনো দিন পেটে কিছু একটা দিয়েই শরীর এলিয়ে দিই বিছানায়। ক্লান্তিতে চোখের পাতা জুড়ে নেমে আসে রাজ্যের ঘুম। আবার কোনো কোনো দিন চাইলেও দু চোখের পাতা এক করতে পারি না৷ এরকম এক নির্ঘুম রাতে হঠাৎ মনে পড়ে যায় উপমার কথা। উপমার সাথে আমার সম্পর্কের কোনো প্রচলিত নাম দিতে পারি না৷ আমরা বন্ধু নই, নই প্রেমিক প্রেমিকাও। তবে আমাদের মধ্যকার সম্পর্ক কী? এ যেনো এক জটিল ধাঁধা৷ সর্বোপরি আমাদের সম্পর্ক থেকে গেছে এক ভীষণ টানাপোড়েনে, এক নিবিড় অস্থিরতায়। তখন একে একে মনে পড়ে যায় বহু বছর আগের টুকরো অনেক স্মৃতি।
কোনো এক জ্যোস্না রাতে আমরা পাশাপাশি বসে আছি৷ কেউ কোনো কথা বলছি না৷ কেননা দীর্ঘদিন পর আমাদের দেখা হলে আমরা পরস্পরের কাছে নিজেকে সহজভাবে তুলে ধরতে পারি না৷ আমার এই সংকোচবোধ কোনো ভণিতা না। যেনো প্রকৃতিপ্রদত্ত। উপমাই সবসময় এরকম গুমোট পরিস্থিতিকে করে ফেলতো স্বাভাবিক। নীরবতা ভেঙ্গে সে আমার কাছে জানতে চায় কিছুদিন আগে ঢাকায় হওয়া গোলমাল সম্পর্কে। আমাদের কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে। এক জেনারেল দেশ জুড়ে কায়েম করেছেন স্বৈরশাসন। নূর হোসেন নামে এক যুবক মারা যায়। আমি এসব গল্প শোনাই উপমাকে। অন্য সময় হলে আমার গল্পের ভান্ডার ফুরিয়ে যেতো দ্রুতই৷ কেননা একজন অন্তর্মুখী মানুষ হওয়ায় আমার মনে যতসব কথা ঘুরপাক খায়, মুখ ফুটে প্রকাশ করতে পারি না তার সিকিভাগও। এ যেনো এক নিরাময়ের অযোগ্য কোনো ব্যাধি যা আমাকে বয়ে বেড়াতে হবে আমৃত্যু। কিন্তু সেদিন যেনো আমার মুখে কথার ফোয়ারা ছোটে৷ হয়ত কাছ থেকে বিপ্লব দেখে আমার ভিতরের নির্লিপ্ততা পালিয়ে গেছে। আমাদের কথা চলতে থাকে। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়। দেশের এই আলোচনা ছাপিয়ে আমরা নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনে দৃষ্টিপাত করি। উপমার জন্য বিয়ের প্রস্তাব আসছে দীর্ঘ দিন ধরে৷ এ নতুন কিছু না৷ কিন্তু এক আমেরিকা প্রবাসী যুবকের প্রস্তাবে তার বাবা মার মন গলতে শুরু করেছে। উপমার মনও যে গলতে শুরু করেছে এটাও টের পাই আমি। তবে কি মনে করে যেনো বলে ফেলি, ‘আমার মনে হয় তোমার সাথে আমারই বিয়ে হবে, এবং তা হবে খুব শীঘ্রই।’
উপমা হেসে ওঠে। যেনো আমি কোনো জোক্স বললাম। চাঁদের উজ্জ্বল আলোর সাথে তার এই হাসি মিলেমিশে পরিবেশটাকে ভীষণ অপার্থিব মনে হয়৷ উপমা জিজ্ঞেস করে, ‘তোমার হঠাৎ এমন মনে হবার কারণ?’
‘আমার সিক্সথ সেন্স বড্ড প্রবল’
‘কই? আগে তো কখনো বলো নি!’
‘এখন তো বললাম।’
বুদ্ধিমান পাঠকরা ইতোমধ্যে ধরে ফেলেছেন যে আমার সিক্সথ সেন্স মোটেও প্রবল না৷ আমার আর উপমার বিয়ে হয় নি। সে পাড়ি জমিয়েছে আমেরিকায়। অনেকদিন আগের এসব স্মৃতি আমাকে বিপাকে ফেলে দেয়৷ ‘কেউ কারও জীবনে অনিবার্য না’ এই সত্য আমি জানি। উপমাকে ছাড়া আমার জীবনও কেটে যাচ্ছে বেশ৷ জীবনকে ঘিরে রাখা এই নিঃসঙ্গতা, একাকীত্ব আমি উপভোগ করি। তবুও যখন কোনো স্যাড এন্ডিং উপন্যাস পড়ার পর ভিজে ওঠে আমার চোখের পাতা, ঠিক তখনই আপনাআপনি মনে পড়ে যায় উপমার কথা৷ ভাবি আমার সাথে উপমার সম্পর্ক নিয়ে। এও ভাবি এই সম্পর্কের কী নাম দেওয়া যায়? হুমায়ূন আজাদের একটা কবিতার লাইন আমাকে তখন উদ্ধার করে৷ কবির কাছ থেকে ধার করা কথা নিয়ে উপমার নাম দিই ‘তুমি মোর আঁখিপাতে চিরদিন জমে থাকা জল’।
২| ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:০১
রাজীব নুর বলেছেন: তাকে না পেয়ে ভালো হয়েছে। পেয়ে গেলে দাম থাকে না।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:০০
রাজীব নুর বলেছেন: অফিস থেকে এত ক্লান্ত হয়ে ফিরেন কেন?
গার্মেন্সে চাকরি করেন?