নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহাভারতের কথা অমৃত সমান?

২০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:২৭


মহভারত মোটামুটি খ্রিস্টপূর্ব অস্টম শতাব্দী থেকে লোকমুখে প্রচারিত হয়েছিল। খৃস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে প্রথম লেখা হয়। এর আগে পরে মহাভরতের কলেরব বৃদ্ধি পেতে থাকে। সুবিশাল মহাকাব্যটি অবয়ব ও আকর্ষণীয়তায় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ। ধর্মীয় স্বীকৃতি না পাওয়ায় ইলিয়াড-ওডেসির কোন ক্ষতি হয়নি আবার মহাভারত-রামায়ণেরও ধর্মীয় স্বীকৃতি এর কোন উপকারও করেনি বরং অন্য ধর্মাবলম্বীদের কাছে আকর্ষণহীন করেছে। আমার হিন্দু বন্ধুদের এমন কাউকে দেখিনি যারা মভাভারত ও রামায়ণ পড়েছে। তারা হয়তো মনে করেছে অন্যন্য ধর্মগ্রন্থের মতোই এটি রসকসহীন ও প্রাচীন ধর্মীয় বাণিতে পূর্ণ। ভারতে রামায়ণ-মহাভারত যতটা পূজিত ততটা পঠিত হয় না একারণেই। কাশীরাম দাস যতই বলুক ‘মহাভারতের কথা অমৃত সমান’ কেউ শুনে পুণ্যবান হতে চায় না। অবশ্য ব্যাসদেবের মহাকাব্যে এমন বাক্য নেই।

মহাভারত থেকে আমরা খৃস্টপূর্ব ভারতের সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে ধারণা পাই। ধর্মীয় চেতনা ও মূল্যবোধ, পারিবারিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত, রাজনৈতিক অবস্থা, যুদ্ধের কৌশল ও অস্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পারি। উপন্যাসকে আমরা সমাজচিত্র বলি তেমনি মহাকাব্যটি থেকেও ওই সমাজের চিত্র পাই। পারিবারিক মূল্যবোধ, কর্তৃত্ব, নারীর সম্মান ও অধিকার, বড় ভাইর ক্ষমতা ও অধিকার, বর্ণপ্রথার প্রাবল্য, শূদ্রদের অধিকারহীনতা ইত্যাদি বিষয়ে অবগত হই। তবে ধর্মীয় স্বীকৃতি একটা বড় ক্ষতি করেছে। ধরুন দৈব নির্দেশ অলঙ্ঘণীয় তা মানুষ বিশ্বাস করে বসেছে। মহাভারতের বহু বিষয়ই মনে হয় পূর্ব নির্ধারিত দেবদেবীর অভিশাপ, বর বা ইচ্ছায় সংঘটিত। রয়েছে অসংখ্য অলৌকিক ঘটনা। মানুষ সে ঘটনাকেই বাস্তব বলে বিশ্বাস করে বসেছে। আছে জন্মান্তরের ঘটনা। এক জন্মের পাপের ফল ভোগ করছে অন্য জন্মে। ফলে জন্মান্তরবাদে বিশ্বাস অটুট রেখেছে। অলৌকিক ঘটনা অসংখ্য। মানুষ অলৌকিক ঘটনাকে সত্য ধরে নিয়েছে। অদৃষ্ট খণ্ডানো যায় না এমন ভাবনা তাদের সীমা অতিক্রমে বাঁধা দিয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতি করেছে জাতপাতের বিষয়টি।

মহাভারতের অনুশাসনিক পর্বের দশম অধ্যায় থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ শুনি-
ধর্মরাজপুত্র যুধিষ্ঠির গঙ্গাপুত্র ভীষ্মকে জিজ্ঞেস করলেনে, ‘হে পিতামহ, হীনজাতিকে সহৃদয়ভাবে উপদেশ দান করলে শুনেছি দোষের ভাগীদার হতে হয়, এ সম্পর্কে আপনি কিছু বলুন’।
ভীষ্ম বললেন, ‘হ্যাঁ তুমি ঠিকই শুনেছো। শাস্ত্র অনুসারে, হীনজাতিকে উপদেশ প্রদান করলে অপরাধী হতে হয়’।

আমরা কি শিখলাম। শূদ্রদের উপদেশ দান করাও অপরাধ। তাদের শাস্ত্রপাঠ অপরাধ। শূদ্রদের কি পূণ্য হবে মহাভারত পাঠে? এখানেতো শুধু ব্রাহ্মণ আর ক্ষত্রিয়দেরই জয়জয়াকার, তাদেরই শৌর্যবীর্য।

রাক্ষস কি কোন দিন ছিল, না আছে?
হনুমানের পক্ষে কি সূর্যকে বগলদাবা করে রাখা সম্ভব?
বানরকূল কি কথা বলতে পারতো, না পারে?

যখন এটা সাহিত্য হয় তখন রূপকথা হিসেবে মানুষ পড়বে ও আনন্দ লাভ করবে। কিন্তু ধর্মগ্রন্থ হিসেবে পড়লে তাকে অবশ্যই পশ্চাৎপদ হতে হবে। ১৯৮৮-১৯৯০ সালে ভারতীয় জাতীয় টেলিভিশনে রামায়ণের সম্প্রচারের পরিণতি আমরা দেখেছি, উগ্র হিন্দুদের দ্বারা বাবড়ি মসজিদ ধ্বংস করা। যদি এটাকে ধর্মগ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত না হতো তাহলে এতোটা উগ্র হয়ে উঠতো না ভারতে মানুষ। যুধিষ্ঠির জুয়ায় আসক্ত হওয়া থেকে আমরা কি শিখবো? তিনিতো সবকিছু হারতে হারতে নিজের স্ত্রীকেও জুয়ার বোর্ডে তুলে দিলেন। শ্রীকৃষ্ণ তার প্রথম স্ত্রীকে এক স্বয়ংবরা সভা থেকে তুলে এনে বিয়ে করলেন। কি শিখবো নারী সম্পর্কে? ধর্মগ্রন্থতো শাশ্বত, সবসময় শিক্ষা দেয়ার কথা, সে উদাহরণই থাকবে। শ্রীকৃষ্ণ বা অর্জন কি মিথ্যার আশ্রয় নেয় নি? মিথ্যা বলাকে কি সমর্থন করবো?

যখন সাহিত্য হবে, পৌরণিক কল্পকাহিনী হবে তখন আমরা তুলনা করবো, চরিত্র বিশ্লেষণ করবো। চরিত্রগুলো মন্দ হলেও তা মহৎ মহাকাব্য হতে পারে। সেভাবেই মহাভারত মহৎ মহাকাব্য। কিন্তু ধর্মগ্রন্থ হিসেবে?

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৪৮

অনল চৌধুরী বলেছেন: এসব হচ্ছে আক্রমণকারী আর্যদের অন্য দেশ দখল সেই দেশের আদিবাসীদের অসুর ম্লেচ্ছ নাম দিয়ে গণহত্যা এবং ধর্মান্তরিত করে নীম্নবর্ণের নামে ক্রীতদাস বানানোর প্রমাণ।

২০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৪০

মুজিব রহমান বলেছেন: ভারতের মানুষ অতিক্রম করতে পারেনি। বহিরাগত ধর্ম নিয়ে আমরা টানাটানি করি আর সেটাকেই বানিয়ে নিয়েছি একমাত্র সমস্যা।

২| ২০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৫০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

২০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৪১

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
অনবরত বলতে চাই। সবাই মিলে বললেই সমাজ বদলাবে।

৩| ২০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:০৭

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: পৃথীবির সকল ধর্ম গ্রন্থ প্রায় একই দোষে দুষ্ট ।কেবল উনিশ আর বিশ।

২০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৪২

মুজিব রহমান বলেছেন: আমাদের দায়িত্ব রয়েছে কথা বলার এবং সমাজ বদলানোর। ধন্যবাদ আপনাকে।

৪| ২০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: মহাভারত এর গল্প গুলো রুপ কথাকে হার মানায়।

২১ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:১৫

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
কল্পগল্প হিসেবে অসাধারণই!

৫| ২১ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:১৭

তানভীর রহমান শুভ্র বলেছেন: আপনার কথাগুলো সত্যি। অনেক ভালো লেগেছে!

২১ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪২

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ২১ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৩৮

কানিজ রিনা বলেছেন: ধর্মে মানুষের বেগ আবেগ দুটো আছে, আর বিজ্ঞান মানুষকে বেগ আবেগ ও কাঁপুনি দিয়েছে।
বলতে পারবেন ধর্ম শাসন কত যুগ চলে আসছে?
আর বিজ্ঞানের শাসন কত যুগ চলবে?
বিজ্ঞানের আধুনিকতায় যখন পারমাণবিক এটম
হুমকি-ধামকিতে বিশ্ব প্রকম্পিত তখন মানুষ কি
ধর্মের আশ্রয় নিবে নাকি বিজ্ঞানের আশ্রয় নিবে?

৭| ২১ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৬

মুজিব রহমান বলেছেন: মানুষ সত্যের কাছেই আশ্রয় নিবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.