নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

হোমারকে সবাই চিনে, কৃষ্ণ দৈপায়নকে কেউ চিনে না!

২১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:০৮


অন্ধ কবি হোমারকে সবাই চিনে। তাঁর রচিত মহাকাব্য ওডেসি ও ইলিয়াড জনপ্রিয় হওয়ায় হোমারও শ্রদ্ধেয় বিশ্বব্যাপী। কিন্তু মহাভারত ও আরো আঠারোটি পুরাণের রচয়িতা হওয়া সত্ত্বেও কৃষ্ণ দৈপায়নকে কেউ চিনে না। বেদের শ্রেণিবিভাজন করায় তাকে বেদব্যাস বলা হয়। তারই আরেক নাম ব্যাসদেব। মহাভারতে মুণিঋষিগণ খুবই যৌন কাতর। কাকে দেখে কার বীর্য যে কোথায় স্খলন ঘটে আর কার জন্ম হয় তার কোন সীমা নাই। মহাভারতে অযৌনভাবে জন্ম নেয়াদের সংখ্যাও কম নয়। দ্রৌপদীর জন্ম হয় যজ্ঞবেদী থেকে। আবার দ্রৌপদী পঞ্চপাণ্ডবের অর্থাৎ পাঁচ ভাইর স্ত্রী হন। ব্রহ্মা এক পরমাসুন্দরী নারী সৃষ্টির মানসে অহল্যাকে সৃষ্টি করেছিলেন। দেবরাজ ইন্দ্র অহল্যাকে ধর্ষণ করেছিলেন বলে অহল্যার স্বামী গৌতম মুণি তাকে অভিশাপ দিয়েছিলেন। কুন্তির বিয়ের আগেই এক সন্তানের জন্ম হয়। তার নাম কর্ণ। কর্ণ আবার কুন্তির জননাঙ্গ দিয়ে জন্ম নেয় নি। সে কুন্তির কান দিয়ে জন্ম নিয়েছে বলেই তার নাম কর্ণ। কুন্তির অন্য সন্তানরাও পাণ্ডবের নয়- একেক দেবতার সন্তান একেকজন। যেমন দেবরাজ ইন্দ্রের ঔরসে জন্ম নেয় অর্জুন। কুন্তিই একেক দেবতাকে আহবান করেছিলেন মিলনের জন্য।

তাহলে কৃষ্ণ দৈপায়নের জন্মও কি স্বাভাবিক? একদিন পরাশস মুণি অনার্য সত্যবতীর নৌকায় করে নদী পার হওয়ার সময় তার সৌন্দয়ে মুগ্ধ হয়ে যৌনমিলনের প্রার্থনা করলেন। সত্যবতী বললেন, তিনি কুমারী, কৌমার্য নষ্ট হলে সমাজ তাকে পরিত্যাগ করবে। পরাশর মুণি বললেন, পুত্রলাভ হলেই তিনি আবারো কুমারী হয়ে যাবেন। সত্যবতী বললেন, দিনের বেলায় মানুষ দেখে ফেলবে তাছাড়া আমার শরীরে মাছের দুর্গন্ধ। কামার্ত পরাশর তখন নিজেদের চারদিকে কুয়াশার আবরণ সৃষ্টি করলেন এবং সত্যবতীর শরীরে মৃগনাভির সৌরভ দিলেন। নদীবক্ষে তারা মিলিত হলে সত্যবতীর গর্ভে ব্যাসদেবের জন্ম হয়। দীপে জন্ম হয় ও গায়ের রং কালো বলে ব্যাসদেবের নাম কৃষ্ণ দৈপায়ন। তার মা সত্যবতী নিজেই মহাভারতের একটি চরিত্র- যুধিষ্ঠির পিতা পাণ্ডুর দাদীমা তিনি। সত্যবতীকে রাজা শান্তনুর বিয়ে করেন। তার দুই পুত্র চিত্রাঙ্গদ ও বিচিত্রবীর্য। দুই পুত্র উত্তরাধিকারী না-রেখেই অকালে মারা যায়। সত্যবতীর সৎ পুত্র ভীষ্মও বিয়ে করবেন না বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাহলে কুরুবংশ রক্ষা পাবে কিভাবে? উদ্বিগ্ন সত্যবতী তখন তার সেই অবিবাহিতকালীন সময়ে পরাশর মুণির ঔরসে জন্ম নেয়া পুত্র কৃষ্ণ দৈপায়ন ওরফে ব্যাসদেবকে ডেকে আনেন। তাকে নির্দেশ দেন ভ্রাতৃবধূদের গর্ভবতী করার জন্য। ব্যাসদেবের ঔরসেই জন্ম নিল ধৃতরাষ্ট্র ও পাণ্ডু। ধৃতরাষ্ট্র থেকেই আসলো কৌরব বংশ তথা- দুর্যোধন, দুঃশাসন ও আরো ৯৮ ভাই। আর পাণ্ডু থেকে আসলো পাণ্ডব বাংশ তথা- যুধিষ্ঠির, অর্জুন, ভীম, সহদেব, নকুল। এই দুই বংশের দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিয়েই মহাভারত। অর্থাৎ প্রকৃত প্রস্তাবে ব্যাসদেবের অবৈধ সন্তানরাই বিচরণ করেছে মহাভারতে। এমন যৌনতা, দ্বন্দ্ব-সংঘাত, অনাচার-মিথ্যাচার-প্রতারণার গল্প কিভাবে ধর্মগ্রন্থ হবে? মহাকাব্যেই সম্ভব।

মহাভারত সুবিশাল। এটি রামায়ণের চারগুণ আর হোমারের ইলিয়াড-ওডেসির মিলিত আকৃতির দশগুণ। এতো বিশাল মহাকাব্য লিখে, বেদের বিভাজন করে এবং গুরুত্বপূর্ণ ১৮টি পুরাণ লেখার পরেও কেন হোমারের মতো এতো সুপরিচিত হলেন না কৃষ্ণ দৈপায়ন? মহাভারত যতটা সুপরিচিত কেন তার হাজার ভাগের এক ভাগও পরিচিতি নেই কৃষ্ণ দৈপায়নের? কারণ সেই একই- মহাভারতের ধর্মগ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া। ধর্মগ্রন্থ আসে স্রষ্টার কাছ থেকে বা দৈব ভাবে। অনেক ধর্মগ্রন্থ যার উপর নাযিল হয় তারও গুরুত্ব থাকে। তাওরাতের জন্য মুছা, বাইবেলের জন্য মুছা, কোরানের জন্য নবী মহাম্মদ (সা.)‘র গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু কৃষ্ণ দৈপায়ন বা ব্যাসদেবতো প্রকৃতপ্রস্তাবে প্রেরিত পুরুষও নন। শুধু বলতে পারি ধর্মের খপ্পড়ে পড়ার কারণে বেচারা তার রচনার তুলনায় অনেক ছোট হয়েই থাকলেন।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:২৯

আকন বিডি বলেছেন: একটা হতে পারে এর বিশালতার আর একটি এর জটিলতার জন্য। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে সংক্ষিপ্ত মহাভারত গ্রন্থটি কিনি। কিন্তু এর জটিলতার জন্য আর পড়তে পারি নাই। পরে বড় বোনের বাংলায় অনার্সের বই (ক্লাশ+ রেফারেন্স) ঘাটাঘাটি করে আরো প্যাচ লেগে যায় বলে আর পড়ি নাই।

২১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৩২

মুজিব রহমান বলেছেন: চরিত্রগুলো সম্পর্কে আগে জেনে নিয়ে পড়লে হয়তো সুবিধা হতো।

২| ২১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৪১

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: মহাভারতে যেখানেই গোঁজামিল সেখানেই ধর্মের রেফারেন্স দিয়ে ব্যালেন্স করে দিয়েছে।বিজয়ী পক্ষ যা করেছে তা ধর্ম অনুসারে করেছে বলে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে সব জায়গায়।

২২ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:২৩

মুজিব রহমান বলেছেন: কল্পগল্প মেলাতে এমন অলৌকিকতা আসতেই পারে। যদি মহাকাব্যেই সীমাবদ্ধ থাকতো তাহলে এগুলোই হতো উপভোগ্য। যখনই ধর্মগ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃতি পেলে গেল তখনইতো সংকট তৈরি হল। এর মর্যাদা হচ্ছে প্রশ্নবিদ্ধ।

৩| ২১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৫১

চাঁদগাজী বলেছেন:


মহাভারত আরো আগের থেকে মানুষের মুখে মুখে ছিলো, তিনি কাব্যরূপ দিয়েছেন। মহাভারত ভালোভাবে জানেন বিশ্বের ১৪০ কোটী মানুষ। আপনি উহার কতটুকু জানেন?

২২ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:২৬

মুজিব রহমান বলেছেন: ভারত, পৃথিবী, মহাবিশ্ব সম্পর্কে খুব কমই জানি, অনেকেই আরো কম জানে। কেউ কেউ আরো বেশি জানে। আমার জানাটুকুই প্রকাশ করছি। মহাভারত মুখে মুখে ছিল ঠিক তবে সেটাই ছিল ব্যাসদেবের। পরবর্তীতে তা লিখিত রূপ লাভ করে এবং ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন রূপ লাভ করে।

৪| ২১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:১৯

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: জানার কোন শেষ নাই, জানার চেষ্টা বৃথা তাই।হিরক রাজা

জীবনে চলার জন্য এতো কিছু জানার দরকার নেই।প্রয়োজন থেকে জানতে হবে।বেশি জানতে হবে বর্তমান কে।

২২ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:২৮

মুজিব রহমান বলেছেন: দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান সমস্যাই ধর্মান্ধতা। বলুন কেন দেশ ভাগ হল? কেন কোটি কোটি মানুষকে বাস্তুভিটা ছাড়তে হল? কেন এতো বিদ্বেষ ও খুন? ধর্মান্ধতাইতো! তাহলে আমাদের সবচেয়ে বেশি কথা বলা দরকার ধর্মান্ধতা নিরসনের জন্যই।

৫| ২২ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: ছোটদের মহাভারত নামে একটা বই আছে। সেটা আমি পড়েছি।

২২ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:২৯

মুজিব রহমান বলেছেন: উপেন্দ্রকিশোর রায়ের লেখা- ছোটদের মহাভারত।

৬| ২২ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:১৩

শূন্য সারমর্ম বলেছেন: কি হবে,? মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে " এই কথাটা প্রায় শুনতাম মানুষের মুখে।

২২ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৬

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। এমনটা এখনো প্রচলিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.