নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহাকাব্য মৌলবাদীদের হাতে পড়লে কি হয়?

২২ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:০৬


ভারত ভাগের কারণ কি?
কোটি কোটি মানুষকে কেন বাস্তুভিটা ছাড়তে হল?
কেন দাঙ্গায় হাজার হাজার মানুষ খুন হয়?

সকল প্রশ্নের উত্তর একটিই- ‘ধর্মীয় বিদ্বেষ, হিংষা ও ঘৃণা’।
এই ঘৃণা, হিংষা, বিদ্বেষের উৎস কি? উত্তর কি হবে? ধর্মীয় গ্রন্থ!

মহাভারত ও রামায়ণের মহাকাব্যিক কল্পকাহিনীতে থাকা যুদ্ধ, হিংষা, বিদ্বেষ এর কি দায় আছে? গবেষকগণ যতই বলুক- এগুলো মহাকাব্য, কল্পকাহিনী। কিন্তু তাতে মৌলবাদী শক্তি থামেনি। তারা এগুলোকে ঐতিহাসিক সত্য বলেই মনে করে আসছে। সেই হিংষা, বিদ্বেষকেই শক্তি হিসেবে নিয়ে তার প্রয়োগ ঘটাচ্ছে। বিশেষ করে রামায়ণের চরিত্র ও স্থানগুলোকে সত্য ধরেই ভারতের ধর্মান্ধ মানুষ রামরাজ্য প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘদিন ধরেই তৎপর রয়েছে। অযোধ্যায় রাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন তাই সেখানকার বাবরি মসজিদকে ধ্বংস করে রাম মন্দির নির্মাণ করতেই হবে। ভারতের আদালতও রায় দিল- আগে মন্দির ছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি তবে মসজিদ সরিয়ে মন্দির নির্মাণ করতে হবে। ভারতের ইতিহাসে তালগাছবাদী তত্ত্বের চূড়ান্ত ব্যবহারিক প্রয়োগ দেখলাম।

মহাভারতের কৃষ্ণ জন্ম নিয়েছেন মথুরায়। সেখানে কৃষ্ণের জন্মস্থান চিহ্নিত করার সুযোগ না থাকলেও, মৌলবাদীরা ধরে নিয়েছে। যে কক্ষে কৃষ্ণের প্রকৃত পিতা ও মাতা কারারুদ্ধ ছিলেন তারও কক্ষ চিহ্নিত করে নিয়েছে ধর্মান্ধরা। তারা দাবী করছে কৃষ্ণের জন্ম ৭ হাজার বছর আগের। কোনরূপ প্রত্নপ্রমাণ ছাড়াই শুধু মহাভারতের কল্পকাহিনীর উপর ভিত্তি করেই তারা ব্যবহারিক প্রয়োগ ঘটাচ্ছেন। সাম্প্রতিক একটি দাবি দেখছি মথুরার একটি মসজিদকেও মন্দির বানানোর। বিজেপির আগামী অস্ত্র হতে পারে মথুরার মসজিদটিও।

তাহলে অযোধ্যার এই দীর্ঘ হানাহানি, মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির বানানো, গোধরার মুসলিম হত্যা এর কারণ অবশ্যই রামায়ণ। আর মধুরার মসজিদ ভাঙ্গার যে দাবী উঠছে তার কারণ মহাভারত। রামায়ণ ও মহাভারত মহাকাব্যদুটি ধর্মগ্রন্থের মর্যাদা দেয়ায় এর ভিতর থেকে রস আস্বাদনের পরিবর্তে আস্বাদিত হচ্ছে হিংষা-বিদ্বেষ ও ঘৃণা। ভালবাসার ও ত্যাগের নজির থাকলেও গৃহিত হয়েছে হত্যা ও ধর্ষণ। দক্ষিণ এশিয়ায় যেখানে যে ধর্মের মানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠ সেখানেই তারা দানবের আচরণ করেছে, সংখ্যালঘুদের তাড়িয়ে তাদের জমি/ব্যবসা দখলে নিয়েছে, নারীদের ধর্ষণ করেছে, শিশু-নারী-বৃদ্ধসহ যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে বা ভয় দেখিয়েছে, নিপীড়ন করেছে।

পশ্চিম পাকিস্তানে ১৯৫১ সালেই হিন্দুদের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১.৬% আর পূর্ব পাকিস্তানে ২২%। ১৯৩১ সালে পূর্ববাংলায় হিন্দু ছিল ২৮% ভারত ভাগের আগের এক দাঙ্গাতেই হিন্দু কমে যায় ৬%। এরপর গত শতাব্দী ধরেই হিন্দুরা বাংলাদেশ ছেড়েছে ধারাবাহিক ভাবে। এই শতাব্দিতে এসেই আমরা দেখি হিন্দুদের দেশত্যাগ কমেছে। ১৯৯২ সালের অযোধ্যার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঢেউ লাগে বাংলাদেশে। ধর্মান্ধ জিহাদীদের দৌরাত্মা বেড়ে যায়। বাংলাদেশে ওই সময়ে হিন্দুদের উপর অধিক নিপীড়নের ঘটনা ঘটে, দেশ ছাড়ার গতি বেড়ে যায়। যদি ভারতে আবারও মথুরার মসজিদ বা অন্যকোন ইস্যুতে মুসলিমদের ব্যাপক নিপীড়ন করা হয় তার ঢেউ আবারো আছড়ে পরতে পারে বাংলাদেশেও। মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করতে না পারলে দক্ষিণ এশিয়ার আকাশ থেকে অন্ধকার মেঘ কাটবে না। ভারত-বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সুশিক্ষিত সচেতন ও অগ্রসর চিন্তার মানুষ কম নয়। তারা দেশ ছাড়ে কিন্তু দেশের মানুষকে এগিয়ে নিয়ে ধর্মান্ধতা ছাড়াতে ভূমিকা রাখে না। আজকের পৃথিবীতে চলতে হলে, টিকতে হলে বিজ্ঞানমনষ্ক হওয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: ধর্মের কারনে পৃথিবীর অনেক সর্বনাশ হয়েছে।

২২ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৬

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। সেটা ঠিক। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে এশিয়াতেই, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া আর আরবে।

২| ২২ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:১০

ফেনা বলেছেন: ধর্ম আমাকে কখনোই খারাপের দিকে ধাবিত করে না। আমরা কিছু মানুষ যারা নিজেদের সবার্থে এইসব ফিতনা সৃষ্টি করে যাচ্ছি।

ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।

২২ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৮

মুজিব রহমান বলেছেন: ধর্ম আপনাকে ভৌত ও বস্তুজগতের দিকে মনোনিবেশ করতে বাঁধা দিবে। সুযোগই থাকে না অলৌকিক দৃষ্টিভঙ্গির সীমা অতিক্রম করার।

৩| ২২ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৫৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


'মাদ্রাসার ছাত্ররা' কিভাবে বিজ্ঞান মনস্ক হবেন?

২২ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১০

মুজিব রহমান বলেছেন: আব্দুল্লাহ আল মাসুদসহ কিছু ছাত্রকে দেখেছি তারা বুঝতে পেরে বেরিয়ে এসেছেন। তবে বহুমাত্রিক সমস্যা বের হওয়া। একসময় পেশা হয়ে গেলে অসম্ভব হয়ে যায়। যেহেতু বিজ্ঞান ও ধর্মীয় বিষয় প্রায়শই বিপরীত তাই কঠিন। এজন্য পাঠ্যসূচি বদলানো দরকার।

৪| ২২ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৪০

অক্পটে বলেছেন: ধর্মের সৃষ্টি হয়েছিল ব্যবসা করার জন্য নয়, মানুষকে একতাবদ্ধ করে রাখার জন্য। তখন একতাবদ্ধতার প্রয়োজন ছিল। কোন সন্দেহ নাই যে ঈশ্বরের নাম ভাঙ্গিয়েই প্রথম ধর্মের যাত্রা শূচিত হয়েছিল। এরপর যখন দেখা গেল নির্বোধ মানুষদের ধর্মের দোহাই দিয়ে সব কিছুই করানো যায় তখনই ধর্মের মধ্যে এজেন্ট ঢুকে গেল আর শুরু হল ব্যবসা। আমরা সাধরণ মানুষেরা হলাম নির্বোধ প্রকৃতির তাই ধর্মকে আমাদের কাছে সত্য বলে মনে হয়। কিন্তু জ্ঞানীর কাছে ধর্ম সর্বৈব মিথ্যা একটা ব্যাপার। শাসকগোষ্ঠির কাছে ধর্ম হল ফয়দা লুটার বড় এক হাতিয়ার। ভারত ধর্ম ব্যবসায় সিনেমাকেও পেছনে ফেলেছে। মোদির শাসন পুরোটাই ধর্মের কুফল।

২২ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১১

মুজিব রহমান বলেছেন: ক্ষমতার জন্যই সব হয়েছে। একত্রিত মানুষের শক্তিকে কাজে লাগানো সহজ।

৫| ২২ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৪০

আহমেদ জী এস বলেছেন: মুজিব রহমান,



মৌলবাদীদের হাতে পড়লে "মহাকাব্য" "মহামারনাস্ত্র" হয়।

সহব্লগার অক্পটের সাথে সহমত।

২২ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৩৩

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। আমরা সত্যানুসন্ধান করতে চাই।

৬| ২৩ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:০০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আপনি যেই মাসুদের কথা বলছেন, এই মাসুদ কি মুফতি মাসুদ।

ধর্ম গ্রন্থ হওয়াতে বই দুইটা এখনও বেঁচে আছে, মেঘ দূত কিন্ত হারিয়ে গেছে।
বর্তমানে এরচেয়ে অনেক খারাপ কিছু প্রচার হচ্ছে,সেগুলো নিয়ে লিখা বেশি দরকার।

৭| ২৩ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:০৩

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ভারত ভাগের জন্য হিন্দু ধর্মের চেয়ে বেশি দায়ী ইসলাম ধর্ম।

২৩ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৫৩

মুজিব রহমান বলেছেন: হিন্দু না মুসলিম কে বেশি দায়ী সেটা বড় নয়, ধর্মই এখানে মূল ভূমিকা রেখেছে। ভারত ভাগে ভূমিকা রেখেছে কলকাতা, বিহার ও নোয়াখালির দাঙ্গা। কলকাতা কেন্দ্রিক বাঙ্গার শাসন সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে চলে গিয়েছিল মুসলিমদের হাতে। পরপর তিনজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলেই বাংলাভাগটা নিশ্চিত হয়ে যায়। মুসলিমরা বাংলাভাগ চায়নি কারণ তারা জানতো টোটাল বাঙলার ক্ষমতা আর মুসলিমদের হাত থেকে নিতে পারবে না। আর হিন্দু নেতৃবৃন্দ বুঝে গিয়েছিল, বাংলাভাগ ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়ার আর কোন সুযোগ নেই। তাই তাদের দাবি ছিল ভারত ভাগ হোক বা না হোক বাংলাকে ভাগ করতেই হবে।

এজন পড়তে পারেন জয়া চ্যাটার্জির কেন বাঙলা ভাগ হল। আসলে ইতিহাস রচিত হতে হয় নির্মোহভাবে। তাহলেই সত্যটা বের হয়ে আসে।

৮| ২৩ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:১০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ধর্ম যতদিন থাকবে মন্দির ভেঙ্গে মসজিদ,মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির হতেই থাকবে।কাবা ঘরের ইতিহাস দেখুন না?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.