নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পর্ব-১ঃ ছোটদের বড়দের সকলের প্রিয় দুটি বই

২৪ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:২০

মার্ক টোয়েনের
অ্যাডভেঞ্চার্স অব টম সয়্যার ও
দি অ্যাডভেঞ্চার্স অব হাকলবেরি ফিন


মার্ক টোয়েনের বিশ্বসেরা কিশোর ক্লাসিক হল দি অ্যাডভেঞ্চার্স অব টম সয়্যার। অনেকে নিজের সন্তান বা ভাগ্নে সম্পর্কে বলেন, দুষ্টের শিরোমণি। বাস্তবিক দুষ্টু বালক বলতে কি বুঝায় তা দেখেছি অ্যাডভেঞ্চার্স অব টম সয়্যার উপন্যাসের টম সয়্যারের মধ্যে। টম একই সাথে দুর্দান্ত চালাক-চতুর ও দুষ্টু বালক। দেয়াল রঙ করানোর দৃশ্যের কথা এখনো মনে আছে। কিভাবে তার বন্ধুদের আকৃষ্ট করে তাদের দিয়ে উল্টো উপঢৌকন নিয়ে রঙ করিয়ে নেয়। টম বন্ধুদের মধ্যে এমন ধারণা দেয় যে, টমের কতই না সৌভাগ্য, কাজ কতই না আনন্দের। খালা তাকে শাসন করতে যতই কাজ দেক না কেন টমের জন্য তা কোন ব্যাপারই না। সেতো আর নিজে করবে না। বন্ধুদের দিয়ে করানোর জন্য একটা বুদ্ধি বের করেই ফেলবে। এমন কাণ্ড সে করতেই থাকে। টম এক চাল দুবার চালে না। সে থাকে তাঁর খালার বাসায়। একাধারে স্কুল ফাঁকি দেয় আর খালার লুকিয়ে রাখা খাবার খেয়ে সাবাড় করে দেয়। আর খালাও রাগ করে কাজ চাপিয়ে দেয় যাতে করতে বাধ্য হয়।

শহরে নতুন আসা একটি মেয়েকে ভালবাসে টম। মেয়েটিও টমকে ভালবাসে। কিন্তু মেয়েটি যখন জানতে পারে টম আগেও আরেকটি মেয়েকে ভালবাসতো তখন সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয়। এখানে টমের বন্ধু হল হাকলবেরি ফিন। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে তারা দুই বন্ধু রাতে এক কবরস্থানে গিয়ে একজনকে খুন হতে দেখে ফেলে। এরপর তারা একটি দ্বীপে পালিয়ে যায়। বিচ্ছিন্ন দ্বীপে তারা চূড়ান্তভাবেই স্বাধীনতা উপভোগ করে। বাড়ির সকলেই ধরে নেয় তাদের হত্যা করা হয়েছে। ওরা দেখতে পায় নদীতে লাশ খোঁজা হচ্ছে। টম একসময় বুঝতে পারে বাড়ির সকলেই তাকে ভালবাসে। তাদের মৃত্যু নিয়ে গীর্জায় একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের সময় তারা বাড়িতে ফিরে আসে। আবারো স্কুলে যাওয়া শুরু করে। টম ভালবাসা পায় সেই নবাগত মেয়েটিরও যে একসময় তাকে রিফিউজ করেছিল। খুনিও জেনে যায়, টম ও তার বন্ধুরা তাকে খুন করতে দেখে ফেলেছে। টমও জানে যে, খুনি জানে টম তাকে খুন করতে দেখেছে। শেষ পর্যন্ত দেখে ফেলা সেই খুনিকেও ওরা ধরিয়ে দিতে পারে। ডাকাত আর গুপ্তধনেরও সন্ধান পাওয়া যায়। ইংরেজিতে লেখা মূল বইটিই পড়ার সুযোগ হয়েছিল। সহজ ও প্রাঞ্জল ইংরেজিতে লেখা। পরবর্তীতে একটি বাংলা অনুবাদও পড়েছিলাম। অসংখ্য বাংলা অনুবাদ পাওয়া যায়।

একটি উপন্যাস কতো বছর জনপ্রিয় থাকতে পারে। অভাবনীয় যে বইটি ১৮৭৬ সালে প্রকাশিত হওয়ার পরে প্রায় দেড়শো বছর ধরে সারা পৃথিবীর শিশু-কিশোরদের সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করে রেখেছে। গল্পটি গড়ে উঠেছে মিসিসিপি নদীর তীরে এক কাল্পনিক শহর সেইন্ট পিটারবার্গে এক অনাথ কিশোর টমকে কেন্দ্র করে। অমন একটি শহরেই মার্ক টোয়েনও বাল্যকাল কাটিয়েছেন। তিনি শিশু-কিশোরদের জন্য বইটি লিখলেও বইটি বড়দেরও খুবই প্রিয়। শৈশবে দুষ্টুমী করে আসা বড়রাও নিজেদের শৈশবকে খুঁজে পান বইটিতে।


মার্ক টোয়েনের জোড়া বিশ্বসেরা কিশোর ক্লাসিক এর দ্বিতীয়টি হল- দি অ্যাডভেঞ্চার্স হাকলবেরি ফিন। দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন উপন্যাস হলেও টম ও হাক দুটি উপন্যাসে রয়েছেন বন্ধু হিসাবেই। প্রধান চরিত্র শুধু আলাদা। প্রথম উপন্যাসে টমের বন্ধু হল হাকলবেরি ফিন। যুগল উপন্যাসের পরেরটি দি অ্যাডভেঞ্চার্স হাকলবেরি ফিন-এ মূল চরিত্র হাক এবং তার বন্ধু হিসেবে রয়েছে টম সয়্যার। এ বইটিও পৃথিবীব্যাপী কোটি কোটি কিশোর পড়ে রস আস্বাদন করেছে। যদিও হাকলবেরি ফিনকে নিয়ে একসময় বিতর্কও তৈরি হয়েছিল, কিছুটা অশ্লীলতার অভিযোগ উঠেছিল। সেসব অতিক্রম করেই আজও প্রায় দেড়শো বছর ধরে বই দুটি সমান জনপ্রিয় হয়েই রয়েছে। আরো বহু বছর জনপ্রিয় থাকবে বলেই মনে করি।
হাকলবেরি ফিন বন্ধুদের কাছে হাক নামেই পরিচিত। খুবই দরিদ্র কিশোর। হাকের মা নেই, বাবাও সারাদিন নেশায় চুর হয়ে থাকেন। ভুলেও হাকের খোঁজ-খবর করেন না। বাবা সুযোগ পেলেই মারধর করেন। হাক থাকছিলেন মিসেস ডগলাসের আশ্রয়ে। মিসেস ডগলাসের এবং তার বোনের বকাঝকায় হাক অতিষ্ঠ ছিল। তাই টমের দস্যু দল গঠনের আহবানে সে সাড়া দেয়। কিন্তু দল আগায় না। দলনেতা টমও সব বুঝে না। হাকের বাবা নিজের কাছে নিয়ে যায় হাককে। শুরু হয় দুর্বিসহ জীবন। হাক একদিন পালাতে সক্ষম হয়। পালিয়ে এক দ্বীপে গিয়ে সাক্ষাৎ পান মিসেস ডগলাসের বাড়ির ক্রীতদাস জীমের। জীমও পালিয়ে এসেছে। সর্বক্ষণ সঙ্গী হয়ে উঠে নিগ্রো জিম। তখন আমেরিকায় নিগ্রোদের অবস্থা খুবই সঙ্গীণ ছিল। দাসদের পালিয়ে যাওয়া অপরাধ। ধরা পড়লে ঝুলিয়ে হত্যা করলেও কোন বিচার হতো না। নিগ্রো দাসদের মানুষ বলেই গণ্য করা হতো না। জিম মুক্ত মানুষ হতে উদগ্রীব। তাই তারা মুক্ত রাজ্যে যেতে চায়। জিমের সেই লক্ষ্য কি পূরণ হয়?
বইটিতে অসাধারণ কিছু ডায়ালগও আছে। জিম তার ভেলার জঞ্জাল দেখিয়ে হাককে বলে, ‘এই যে জঞ্জাল দেখছ, ওটা সেই সব লোকের প্রতীক, যারা বন্ধুদের মাথায় ময়লা চাপিয়ে দিয়ে লজ্জা দেয়’। এমন আরো বহু ভাবনার জায়গা করে দিবে। বলা হয়, মার্ক টোয়েনের এক বন্ধু ছিল টম। সেই টমকেই আঁকতে চেয়েছেন হাকের মধ্যে। মার্ক টোয়েনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তাঁর গল্প বলার এবং খুঁটিনাটিকে প্রাণবন্তভাবে তুলে ধরার অসাধারণ ক্ষমতা। উপন্যাসটিতে লেখকের নিজের শৈশব ধরা পড়েছে বলেই তা হয়ে উঠেছে অত্যন্ত আন্তরিক

বই দুটি এখনো আমার খুব প্রিয়। ছোটদের খুবই উপযোগী। উপহার হিসেবে জোরা বই খুবই চমকপ্রদ হবে- সন্তানের জন্য, ছোট ভাই বোনদের জন্য, জন্মদিনের জন্য।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৫১

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ।

২৫ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৭:৫৩

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২৫ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট।

২৫ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৭:৫৪

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ২:৪৪

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: টম সয়্যার বইটি কিনেছিলাম আমার মেয়ের জন্য।ও তখন ও লেবেলে পড়ে।বাংলা ও ভাল পড়তে পারে না।এই ফাঁকে আমারও অনেক বই পড়া হয়ে গেছে।

২৫ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৭:৫৬

মুজিব রহমান বলেছেন: আমি ছাত্র জীবনে ফুটপাত থেকে কিনেছিলাম ইংরেজিতে লেখা। বইটি এখনো আমার কাছে আছে। পরে বাংলায় পড়েছি বই দুটি এবং প্রকৃত স্বাদ আস্বাদন করতে পেরেছিলাম।

৪| ২৫ শে আগস্ট, ২০২০ ভোর ৪:১৪

অনল চৌধুরী বলেছেন: দুইটাই সেবা কিশোর ক্লাসিক হিসেবে ১৯৮৫ সালে বের হয়েছিলো।তখন পড়েছি।টম সয়্যার জঘণ্য লেঘেছে,কারণ নাম শুনে অভিযান কাহিনী হবে আশা করেছিলাম। কিন্ত দেখি ফাজলামি।

হাকলবেরি ফিন মোটামিুটি ভারো।এতে কালো চরিত্রের উপস্থিতির কারণে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো।

২৫ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৭:৫৮

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
আমার কাছে মনে হয়, কিশোরদের আনন্দ দেয়ার জন্য এর চেয়ে ভাল উপন্যাস নেই। যে জীবনটা ফাজলামি করা যায় সেই জীবনের কথাইতো লেখা।

৫| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:২৯

অশ্রুকারিগর বলেছেন: ছোটবেলায় সেবার কিশোর ক্লাসিকে পড়েছিলাম। সম্ভবত নাম ছিল গোয়েন্দা টম সয়্যার! আবার সবগুলো পড়ার ইচ্ছা আছে। চার্লস ডিকেন্সের গ্রেট এক্সপেকটেশন্স আমার অনেক পছন্দের ছিল।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৫৫

মুজিব রহমান বলেছেন: সেবার অনুবাদগুলো প্রাঞ্জল। আমি সেবার বহু অনুবাদ পড়েছি। যদিও মাসুদ রানা সিরিজ আমাকে কখনোই টানেনি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.