নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিক্রমপুর ছেড়ে যাওয়া দুজনের সেরা দুটি উপন্যাস

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৩৩

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব বসু, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সমরেশ বসু, জীবনানন্দ দাশ, প্রতিভা বসু, সঞ্জিব চট্টোপাধ্যায়ের মতো সাহিত্যিকের পূর্বপুরুষের বাড়ি আমাদের বিক্রমপুর যারা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে গিয়েছেন। বাংলাদেশে থেকেও- ইমদাদুল হক মিলন, হুমায়ুন আজাদ ও রাবেয়া খাতুন উপন্যাস লিখে খ্যাতি অর্জন করেছেন। মিলন বৃহদাকার নুরজাহান লিখে দুই বাংলাতেই খ্যাতিমান হয়েছেন। তবে যারা দেশ ছেড়েছেন তাদের মধ্যে শীর্ষেন্দু ও সঞ্জিব চট্টোপাধ্যায় বৃহদাকার উপন্যাস লিখেছেন। শীর্ষেন্দু লিখেছেন- পারাপার, পার্থিব, মানবজমিন, যাওপাখি, দূরবীন এর মতো বড় উপন্যাস। এরমধ্যে দূরবীনই আমাকে বেশি টেনেছে। তবে সঞ্জিব এক লোটাকম্বল লিখেই পাঠকদের হৃদয়ে আসন তৈরি করে নিয়েছেন।

সঞ্জিব চট্টোপাধ্যায়ের লোটাকম্বল
এটি হাসি, হিউমার, ঘাত-প্রতিঘাত, দুঃখ, সুখের টানাপোড়েনে তৈরি শ্বাশ্বত জীবনবেদ লোটাকম্বল। অগণিত চরিত্রের বহুবর্ণরঞ্জিত এক বিশাল ক্যানভাস। ভেঙ্গে যাওয়া যৌথ পরিবারের এক নিঃসঙ্গ পৌঢ় এই উপন্যাসের বিশ্বাসী পিতা হরিশংকর। যার দৃঢ় ব্যক্তিত্ব এবং অসম্ভব আদর্শ-নিষ্ঠা। তার মাতৃহারা যুবক সন্তানের মধ্যে সঞ্চারিত করতে চান জীবনের শ্রেষ্ঠ গুণ এবং মূল্যবোধ। একটি জরাজীর্ণ পুরাতন দ্বিতল বাড়িতেই তারা থাকেন রসে টাইটুম্বুর পিতা-পুত্র। সেই রস আস্বাদন করলেই পাওয়া যায় অমৃত। পিতার পথ আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের পথ। তিনি সে পথেই মুক্তি খুঁজেন যা পুত্রের মধ্যেও দেখতে চান। কিন' পুত্র অবিশ্বাসী নাস্তিক। পিতা হরিশংকর আর পুত্র পিন্টুর মধ্যে থাকে এক মনস্তাত্ত্বিক লড়াই। পিতা এক বাস্তববাদী প্রভাববিস্তারকারী ব্যক্তিত্ব আর পুত্র ছিল ঠিক উল্টো দুর্বল চরিত্রের সাধারণ মানুষ। ১৯৯৮-৯৯ সালের কথা। আমার সহকর্মী নাসরিন সুলতানা খুবই পড়-য়া মেয়ে। আমার পড়াশোনাও যে আছে তা মাঝেমধ্যে জাহির করতাম। নাসরিন একদিন জানতে চাইলেন, লোটাকম্বল পড়েছি কিনা? বইটির নাম দেখে আমার একটা অনিহা তৈরি হয়েছিল অজ্ঞাত কারণে, তাই পড়িনি। ওর মুগ্ধতাই আমাকে বইটি পড়তে বাধ্য করে এবং আমি নিজেও মুগ্ধ হয়েছিলাম। সুবৃহদাকার বই। ছত্রে ছত্রে মজা লুকিয়ে আছে। খুবই প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা।

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের দূরবীন
শীর্ষেন্দুর সবচেয়ে আকর্ষণীয় উপন্যাস ‘দূরবীন’ একটি রাজনৈতিক উপন্যাস। তিনপ্রজন্মের সেতুবন্ধন, বিস্ময়কর জালবুনন। দুরবীন উপন্যাসে রয়েছে একই পরিবারের তিন সময়ের, তিন পুরুষের দাদা-পিতা-পুত্রের কাহিনী। একটি বর্তমান সময়ের নায়ক ধ্রুব এবং তার মন্ত্রী বাবার এবং আরেকটি ধ্রুবর বাবার এবং তার বেড়ে উঠার কাহিনী, আরেকটি জমিদার দাদার কাহিনী। তিনটি ধারাই আকর্ষণীয়, তবে বর্তমান ধারাটিই বেশি আকর্ষণীয়। শীর্ষেন্দুর কয়েকটি বৃহৎ পরিসরের উপন্যাস রয়েছে, যার মধ্যে সফলতম অবশ্যই দূরবীন, সবচেয়ে সংবেদনশীল, জোরালো সৃষ্টি। গত শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক থেকে অস্টম দশক পর্যন্ত ষাট বছরের ব্যাপ্তি নিয়ে এ সময়ে ঘটা সামাজিক পরিবর্তনের এক নিপুণ বুনন দূরবীন। প্রভাবশালী জমিদারের জমিদারী, গোপন প্রণয় চলতে থাকে একটি ধারায়; দ্বিতীয় ধারাটির নায়ক মন্ত্রী কৃষ্ণকান্ত একদিকে স্বদেশি আন্দোলনে জড়িয়ে থাকা, ব্রহ্মচর্যগ্রহণ ও দেশভাগের জটিলতা চলতে থাকে। আর এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবারটির পরের প্রজন্মের যুবক ধ্রুব দিগভ্রষ্ট, বিপথগামী। তারই স্ত্রী রেমি স্বামীর উপেক্ষা, বিরাগ নিয়ে প্রবল প্রতিকূলতায় টিকে থাকে। তিনটি ধারাই একইসাথে চলমান। দূরবীন কি দূরের জিনিসকে কাছে দেখায়, নাকি উল্টো করে ধরলে কাছের জিনিসকেই দূরের মনে হয়। কষ্টকর জীবনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হওয়া রেমির জীবনও আমাকে আকৃষ্ট করেছিল যদিও মূল আকর্ষণীয় চরিত্র ধ্রুব। বইটি পড়ার কয়েক বছর পরেই আমার ছোট বোনের এক কন্যা জন্ম নেয়। আমি দূরবীনের রেমি থেকেই ওর নাম রাখি রেমি। ও এখন বিবিএ সম্পন্ন করেছে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: দূরবীন আর লোটা কম্বল পড়েছি। দারুন বই।
আমার নিজের বাড়িও মুন্সিগঞ্জ।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৪

মুজিব রহমান বলেছেন: আপনার বাড়ি কামারগাঁও গ্রামে আর আমার বাড়ি ভাগ্যকুল গ্রামে। আমরা একই ইউনিয়নের মানুষ যদিও দেখা হয়নি সম্ভবত।

২| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর আর মাইকেল মধুসূদন দত্তকে নিয়ে একটা উপন্যাস পড়েছিলাম যেটা লিখেছিলেন সম্ভবত সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় অথবা শিরশেন্দু। মনে করতে পারছি না। বহু আগে পড়েছিলাম।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৯

মুজিব রহমান বলেছেন: শীর্ষেন্দুর এমন বই নেই। মধুসূদনকে নিয়ে কোন উপন্যাস পড়িনি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.