নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘরে ঘরে রজনীগন্ধ্যার ঘ্রাণ ফুটাবেন!

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:১৪


একদিন শুনলাম আমাদের স্কুলের ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ক্লাসে বলেছেন, তিনি ঘরে ঘরে রজনীগন্ধ্যার ঘ্রাণ ফুটাবেন!
আমার বুঝতে বাকি থাকে না- এর অর্থ তিনি প্রত্যেক বাড়িতেই অন্তত একজন করে গঞ্জিকাসেবী বানাবেন। আরো কথা শুনতে পাই। তিনি ক্লাসে বলেন, ‘গাজা প্রকৃতিতে জন্মে শব্জির মতো। প্রকৃতির দান শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। গাড়ি যে ধুয়া ছাড়ে তা পেট্রোলের বলে মারাত্মক ক্ষতিকর। গাজার সামান্য ধুয়ায় কোন ক্ষতি নেই’। আর তিনিতো মনোসংযোগের কথা সবসময়ই বলেন। এটা আরো ভয়ঙ্কর মিথ্যা কথা। অনেক শিক্ষার্থীই অমনোযোগী থাকে, তারা সহজেই তাঁর কথায় আকৃষ্ট হয়ে গাজায় আসক্ত হয়ে যায়। বাস্তবিক হয়েছেও। বিষয়টা নিয়ে আমি বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলি। তাতে কিছুটা কাজও হয়। তাকে অস্বীকার করতেই হয়।

করোনাকালেও একদিন জানালেন, ‘যারা ধুমপান করে তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ধুমপানই করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে’। আক্রান্তদের মধ্যে বাস্তবিক ধুমপায়ীর সংখ্যা কম। কারণ সমাজে এখন ধুমপায়ীর সংখ্যাই কম। উন্নত দেশেতো আরো কম। গবেষণা হয়েছে সেখানে। মৃতদের একটি তথ্যের কথা জানালাম- আক্রান্তদের মধ্যে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে আনুপাতিক হারে ধুমপায়ীর মৃত্যুঝুঁকি ১৪গুণ বেশি।
তিনি ইউটার্ন নিয়ে বললেন, ‘আমি সিগারেট ও গাজা ছেড়ে দিয়েছি অনেকদিন’।
আমি খবর নিয়ে জানলাম- আগের দিনই তিনি নিজের বানানো গঞ্জিকার আখড়ায় গিয়ে সেবন করেছেন। সামাজিক কিছু চাপে পড়ায় বলে বেড়াচ্ছেন ছেড়ে দিয়েছেন। তবুও এটা ভাল যে, এতে সরাসরি তরুণদের বিভ্রান্ত করতে পারছেন না। বছরের শুরুতে আমাদের স্কুলের এক ছাত্রের কাছে জানতে চাইলাম, তোমাদের সবচেয়ে ভাল কে পড়ায়? দুই জনের নাম শুনলাম। পরের প্রশ্ন ছিল, সবচেয়ে খারাপ শিক্ষক কে?
ছাত্রটি আমাকে বিস্মিত করে ওই গাজাখোর শিক্ষকের নামই বলল। কেন?
সে জানালো, ‘সেতো ক্লাসে পড়ায় না, খালি গল্প করে আর কি থেকে কি বলে আগামাথা নেই। আর মিথ্যা কথা বলে।
কেমন মিথ্যা বলে?
ছাত্রটি বলল, ‘যেমন সে এখন ক্লাসে বলে একদম ধুমপান করে না। অথচ এ কথা বলার পরেও তাকে সিগারেট টানতে দেখেছি।

গত বছর থেকে সরকারে মাদকবিরোধী একশনের পরেই তিনি মুখে বলে আসছিলেন, মাদক গ্রহণ ছেড়ে দিয়েছেন। বাস্তবিক এটা সম্পূর্ণই মিথ্যা। কিন্তু রাষ্ট্রীয় চাপ মাদকসেবী ও মাদকব্যবসায়ীদের অসুবিধায় ফেলেছে। এটা ভাল খবর যে অনেকেই ভোল পাল্টেছে যাতে গ্রেফতার না হতে হয়।

আমাদের এলাকায় মাদক বিকাশে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ওয়াপদার একজন কর্মচারী। তিনিও মাদক বিকাশে প্রচুর মিথ্যা বলতেন। মানুষকে আকৃষ্ট করতেও মিথ্যা বলতেন। আমাকে একদিন ডেকে বললেন, তিনি ডিকশনারীর সমস্ত শব্দই মুখস্ত করে ফেলেছেন। বললেন, ডিকশনারীর প্রথম ও শেষ অক্ষর কি? তিনিই হাসতে হাসতে উত্তর দিয়েছিলেন, জানো না তো- ডি আর ওয়াই। দুএকটি অপ্রচলিত শব্দের অর্থও বললেন। আমি জানতাম তিনি মাদকসেবী এবং কিছু অনুসারী বানিয়েছেন। আমাদের প্রতিবেশি এক কিশোরের কাছ থেকে, দমের সাধন শেখাবেন বলে গুরুদক্ষিণা বাবদ ৫০০/- টাকা নিয়ে গেছেন। আমি জানতে পেরে ওর সাথে বিস্তারিত আলোচনা করি। সে বুঝতে পারে এবং মাদকসেবীকে এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়।

গঞ্জিকা সেবকদের দুটি বিষয় দেখে আসছি- তাদের বুদ্ধিনাশ হয় ও মতিভ্রম ঘটে। শিক্ষিত অশিক্ষিত সবার ক্ষেত্রেই ঘটে। আর অন্য মাদকসেবীর মতোই তারা অনবরত মিথ্যা বলতে পারে, যে মিথ্যাগুলো শুনলে আপনিও বিশ্বাস করে বসবেন। গাজাকে মাদকের রাজা বলে। গাজাখোরগণ সব ধরনের মাদকই গ্রহণ করে কিন্তু গাজা ছাড়তে পারে না। এদের ফাঁদে বেশ কয়েকজন মেয়েকেও ফেঁসে যেতে দেখেছি। অন্য জেলায় একটি মেয়ের সাথে পরিচয় হলে সে আমার গ্রামের নাম শুনেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বলেছিল, ওই গ্রামের সবাই নষ্ট ও প্রতারক। পরে জানলাম মেয়েটিকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে, গাজা ধরিয়ে দিয়ে, তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে প্রেগন্যান্ট করে এদের একজন পালিয়ে গিয়েছিল। মেয়েটি মহাবিপদে পড়ে ওনার বন্ধুদের ধরেছিল। মেয়েটি বলেছিল- তোমরা সবাই নষ্ট ও প্রতারক। মেয়েটি তার দুঃসময় কাটিয়ে উঠে সুস্থ জীবনে ফিরেছিল দেখেই খুশি হয়েছিলাম।

আপনার সন্তান বা ছোট ভাইকে কোন মাদকসেবীর সান্নিধ্যে দেখলেই বুঝে নিবেন- সর্বনাশ হয়ে গেছে। আপনার ঘরেও সে ফুটিয়ে দিয়েছে রজনীগন্ধ্যার ঘ্রাণ। এ পর্যায়ের মাদকসেবীরা কোনদিনই ভাল হয় না, ভাল হবে না। তাদের মিথ্যায়, ছলনায় পড়লে আর রক্ষা নেই।
আগের পর্ব পড়তে ক্লিক করুন: Click This Link

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩৩

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: এখানে গাঁজা নিষিদ্ধ না(কানাডা)।কোন লোক যখন পাশদিয়ে যায়, সে গাঁজা না সিগারেট খায় বুঝা যায়।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৮

মুজিব রহমান বলেছেন: শরীরের জন্য ক্ষতিকর কি না সেটাই বড় কথা।

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:১৬

নতুন নকিব বলেছেন:



যে কোনো ধরণের নেশাখোরই ভয়ঙ্কর। এদের খপ্পরে পড়লে সর্বনাশ। জীবন শেষ। সুতরাং, সর্বাবস্থায় সাবধানতার বিকল্প নেই। ভালো লিখেছেন। উপকারী আলোচনা। ধন্যবাদ।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৮

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
মাদকের বিরুদ্ধে লেখার উদ্দেশ্য ওটাই।

৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৩৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আশ্চর্যের বিষয় পৃথিবীর বহু সাহিত্যিক গাঁজা খেতেন। পৃথিবীতে এখনও বহু দেশে গাঁজা খাওয়া কোনও অপরাধ না। তবে এটা মানুষকে ধীরে ধীরে শেষ করে দেয়।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪০

মুজিব রহমান বলেছেন: অবশ্যই খারাপ অভ্যাস। ভ্যান গগ কান কেটে পতিতাকে উপহার দিয়েছেন। শরৎবাবু নটিবাড়ি গিয়ে থেকেছেন। বাজে অভ্যাস যেই করুক তা দেখে অবশ্যই শিখবো না।

৪| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০০

শোভন শামস বলেছেন: যে কোন নেশাকে নিয়ন্ত্রন করে বাদ দেয়ার শিক্ষা দিতে হবে সবাইকে।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪০

মুজিব রহমান বলেছেন: সেটাই প্রত্যাশিত।

৫| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।
গাজা খুব খারাপ জিনিস। আমাদের এলাকায় এক লোক গত ২০ বছর ধরে নিয়মিত গাজা খাচ্ছে। সে ভয়ানক মিথ্যাবাদী। তার কথা অগোছালো। যুক্তিহীন।
বেশির ভাগ লোক গাজা খায়, কারন গাজা সস্তা।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪১

মুজিব রহমান বলেছেন: সব গাজাখোরদের মধ্যেই এ প্রবণতা দেখেছি।

৬| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:২৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি বকবক সাক্ষী গোপাল।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪২

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। তাহলে গঞ্জিকা পর্ব খান্ত দিলাম। আবারো সাহিত্যেই ফিরে যাই।

৭| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৫৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সব ধরনের মাদক মুক্ত সমাজ কামন করি

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৪

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
যদিও মাদকসেবীরা এর বিরুদ্ধে থাকবে তবুও আমরা চাই তারাও মাদকমুক্ত হোক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.