নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভণ্ডপীরদের নিয়ে গল্প উপন্যাস

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫০


ভণ্ডপীরদের নিয়ে প্রথম যে গল্পটি বাঙালি সমাজে আলোড়ন তুলে তা হল আবুল মনসুর আহমদ এর হুজুর কেবলা।তাঁর আয়না গল্পগ্রন্থভূক্ত গল্প হুজুর কেবলা পাঠ্যভূক্ত থাকায় সমাজ পরিবর্তনে কিছুটা ভূমিকা রাখে।গল্পের এমদাদ দর্শনে অনার্সের ছাত্র ছিল। পারিবারিক অবস্থাও ছিল ভাল। কিন্তু সবকিছু ছেড়ে সে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেয়ার জন্য খেলাফত আন্দোলনে যোগ দিল। গভীরভাবে ধর্মপালন করতে করতে এক পীরের মুরিদ হল। ভিতরে থাকা শিক্ষার কারণেই তার পক্ষে পীরের ভণ্ডামী বুঝতে পারা সহজ হয়। পীর এক এলাকায় গিয়ে এক মুরিদের সুন্দরী স্ত্রীকে দেখে পছন্দ করে। তিনি বহু নাটক করে মোরাকেবায় বসে আরেকজনের দেহে মহানবীর আত্মাকে নিয়ে আসে। সেখানে মহানবী পীরকে নির্দেশ দেয় ছুন্নত পূরণ করার জন্য চার নম্বর বিয়ে করতে। নবীর নির্দেশে অন্য মুরিদরাও সব ব্যবস্থা করে ফেলে। বিয়ের আসরে বসে ভণ্ডপীর। এমদাদ বুঝে ফেলে- জনতার উদ্দেশ্যে বলতে থাকে, ‘তোমরা নিতান্ত মূর্খ। এই ভণ্ডের চালাকি বুঝিতে পারিতেছ না? নিজে শখ মিটাইবার জন্য যে হযরত পয়গম্বর সাহেবকে লইয়া তামাসা করিয়া তাঁর অপমান করিতেছে। তোমরা এই শয়তানকে পুলিশে দাও।’ কিন্তু মূর্খ জনতা এমদাদকেই পাগল ভাবতে থাকে। তারা হুজুরে কেবলাকে অপমান করায় এমদাদের কান ধরে গ্রাম থেকে বের করে দেয়।

সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর লালসালু ভণ্ডপীরদের নিয়ে লেখা সবচেয়ে শক্তিশালী উপন্যাস। এখন সারাদেশটাকেই মনে হয় মহব্বতনগর। মজিদে মজিদে ভরে গেছে দেশটা। ভণ্ডপীর ধর্মপ্রচারক প্রতারক মজিদ মোদাচ্ছের পীরের মাজার বলে দাবি করে জাকিয়ে বসে।ঢেকে দেয় লালসালু দিয়ে। আমরা বহুভণ্ড কথিত প্রেরিত পুরুষকেও দেখেছি একই ধরণের প্রতারণার আশ্রয় নিতে। উচ্চ মাধ্যমিকে আমাদের পাঠ্য ছিল। পড়াতেন মোকতার স্যার। তিনি ছিলেন মজিদের দ্বিতীয় তরুণী বউ জমিলার মতোই চপল। পড়াতেন একটি গার্লস কলেজেও। আমাদের বলতেন, রহিমা/জমিলার কথা যখন অভিনয় করে বলতাম তখন মেয়েছে হাসতে হাসতে একে অন্যের উপর লুটিয়ে পড়তো। উপন্যাসে মজিদই সব। সহায়সম্বলহীন নিঃস্ব মজিদ এক মাজারের উসিলায় পেয়ে যায় সব। এক নারীতেও তৃপ্ত থাকেনি। যখন সুযোগ এসে যায়, পিতা হওয়ার অজুহাতে অল্প বয়সী জমিলাকে বিয়ে করে নেয়। সে তো নিজে জানতো, সবই প্রতারণা, ভণ্ডামি, মিথ্যাচার। আমরা দেখি ভণ্ড পীরেরা কখনোই এসব প্রতারণার কথা প্রকাশ করে না। চপল জমিলাকে বাগে আনতে মজিদ বেছে নেয় নিপীড়নের শাশ্বত পথ। জমিলা থুথু ছিটিয়ে দেয় মজিদের মুখে। স্বপ্ন দেখি একসময় মজিদদের হাতে প্রতারিত-নিপীড়িত সব নারীই থুথু ছিটিয়ে দিবে।

কাছাকাছি আরেকটি উপন্যাস পড়েছি আহমদ ছফার ‘একজন আলি কেনানের উত্থান পতন’। ধরন, উপস্থাপনা, গাথুনী সবই ভিন্ন তবে আলি কেনান নিজেও আকড়ে ধরেছিল সেই মাজার। তাঁর উত্থান যেমন ঘটে তেমনি পতনও ঘটে চূড়ান্তভাবে। আলি কেনানও কোন চর থেকে শহরে আসে। মোনায়েম খানের প্রাসাদেই চাকরি পায় এবং ক্ষমতার দাপট দেখায়। একসময় প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে বিদায় নিতে হয় এবং একটি গায়েবী মাজারকে কেন্দ্র করে নিজেকে প্রভাবশালী পীরবাবায় পরিণত করে। স্বাধীনতার পরে আরেকটা মাজার দখলে নিতে পারলে তার প্রভাবপ্রতিপত্তি আরো বেড়ে যায়। একসময় সরকার বদলের মতো তাকেও ক্ষমতা হারাতে হয়। প্রত্যাশিত পতন দেখি। তবে সারাদেশেই মজিদ ও হুজুরে কেবলাদের পতন ঘটেনি। আমরা এখনো উত্থানই দেখছি। তাদের পতন ঘটাতেই হবে।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০৯

অনল চৌধুরী বলেছেন: ধর্ম নিয়ে ভন্ডামি-ব্যবসার সাথে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভন্ডামি-ব্যবসার কোনো পার্থক্য নাই।
দুইটাই করা হয় জনগণের আবেগ-অনুভূতিকে ব্যবহার করে এবং ২টাই দেশের সেরা ধোকাবাজির ব্যবসা

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২৪

মুজিব রহমান বলেছেন: দুটোকে এক পাল্লায় মাপা যায় না।

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০০

নতুন বলেছেন: মানুষ বিজ্ঞান, সাহিত্যে শিক্ষিত না হইলে এই সব অলৌকিক কাহিনির উপরে অন্ধ বিশ্বাস করেই যাবে।

এখন অবশ্য অনেক কমে এসেছে এই রকমের কাহিনি।

হয়তো ২০-৩০ বছর পরে বাংলাদেশেও পীর মাজারের ব্যবসা বন্দ হয়ে যাবে।

এখনই মানুষ পীরের দরবারে আগের মতন টাকা পয়সা খরচা করেনা।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১১

মুজিব রহমান বলেছেন: এতোটা আশা করবেন না। পীরদের দৌরাত্ম গত ২০ বছরে কমেনি। ভণ্ডপীরবাবারা অনবরত অপকর্ম করে যাচ্ছে। আরো বেশি সময় হয়তো লাগবে তবে অবশ্যই মৌলবাদ শেষ পর্যন্ত নিপাত যাবেই।

৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



ছাত্র ইউনিয়ন করে, সোস্যালিষ্ট অর্থনীতি সম্পর্কে কি জেনেছেন, সেগুলো জানান, বইটই নিয়ে এত হয়রান হচ্ছেন কেন, ওগুলো তো আপনার বই নয়!

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১৩

মুজিব রহমান বলেছেন: আমিতো লিখবো আমার যেটা লিখতে ইচ্ছা করবে সেটা। আপনি ঘ্যান ঘ্যান করছেন কেন? প্রোফাইলেই লিখে দিয়েছি ধর্ম ও রাজনীতি নিয়ে আলাপন পছন্দ করি না।

৪| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: লালসালু ছবি দেখেছি।
মাজার হয়ে উঠার একটা নমুনা আমাদের এলাকার কাছা কাছি আছে। উইপোকার ডিবি বর্তমানে মাজার।

বি।দ্র। আপনার লেখা ২বার পোস্ট হয়েছে।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৫২

মুজিব রহমান বলেছেন: গায়েবী মাজার বলে চালাতে সুবিধা হয়।

৫| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০১

রাজীব নুর বলেছেন: লাল সালু বেস্ট।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৫৪

মুজিব রহমান বলেছেন: লাল সালুর চরিত্রগুলো শক্তিশালী ও ডিটেইলস। এটি নিয়েই বিস্তর লেখা যায়। অবশ্যই লাল সালু বেস্ট।

৬| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ভণ্ড কখনো পীর হয়না আবার
পীর কখনো ভণ্ড হয়না।
এরা পীরের মুখোশের আড়ালে
সয়তান

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৭

মুজিব রহমান বলেছেন: সব পীরই ভণ্ডপীর। ভণ্ডামী করে না এমন পীর দেখা যায় না। ব্যবসাটাই মিথ্যার উপর, প্রতারণার উপর দাঁড়িয়ে আছে।

৭| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:১৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: উপন্যাস দুইটা পড়েছি তবে গল্পটা পড়া হয় নাই। দুইবার পেস্ট হয়েছে আপনার লেখা। তবে শুনেছি যে সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ গ্রামের প্রেক্ষাপট নিয়ে লিখলেও উনি নিজে কখনও গ্রামে বাস করেন নি।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৬

মুজিব রহমান বলেছেন: ওনি দেশেই ছিলেন না। তবে বাস্তবতা গভীরভাবেই তুলে এনেছেন।

৮| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫৫

নতুন বলেছেন: নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ভণ্ড কখনো পীর হয়না আবার
পীর কখনো ভণ্ড হয়না।
এরা পীরের মুখোশের আড়ালে
সয়তান


দুই একজন পীরের কথা বলেন দেখি যারা আসলেই পীর। ব্যবসা করে খাচ্ছে না।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৮

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
বাস্তবিক সব পীরই ভণ্ডপীর। হয়তো দেওয়ানবাগীর অনুসারীরা বলবেন শুধু তারা ভণ্ড নন অথবা আটরশির মুরিদরা দাবি করবেন তারা ছাড়া সবাই ভণ্ড।

৯| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৩৫

অপু তানভীর বলেছেন: এদেশে আসল পীর বলে কিছু আছে? সব পীর গুলো মুরীদ সৃষ্টি করে আর ধর্মের নামে ব্যবসা করে খায় । আর করবেই বা না কেন? বাঙালীকে ধর্মের নামে এতো সহজে পরস্ত করা যায় যে কেউ এই ব্যবসা হাতে তুলে নিবে ।

দেখা যাবে একদিন আমিও পীরগীরি শুরু করে দিব ! পীর অপু তানভীর ! :D :D

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৫০

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ!
রমরমা ব্যবসা। আটরশির পীর বেঁচে থাকতে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। কোথা থেকে আসলো? মুরিদরাই দিয়েছেন। মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে না পারলে ভণ্ডরা ব্যবসা করেই যাবে।

১০| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৪৮

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: বাংলাদেশের সকল পীরই ভণ্ড। যারা তাদের মুরিদ বা ভক্ত, তারা আরও বেশি ভণ্ড। এদের ধারে কাছে যাওয়াও ঠিক না।

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২৪

মুজিব রহমান বলেছেন: ভক্তরা অসচেতন, কুশিক্ষিত ও প্রতারিত। আমরা দেশের মানুষকে সচেতন করে তুলতে পারিনি বলেই ভণ্ডপীরেরা জাঁকিয়ে বসে আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.