নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

যে উপন্যাস সন্ধান দেয় নতুন জগতের

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১৮


বইমেলা থেকে নোবেল বিজয়ী জার্মান লেখক হেরমান হেস এর ‘সিদ্ধার্থ’ উপন্যাসটি কিনেছিলাম। কিন্তু একজন কবিবন্ধু ছুঁ মেরে পড়ার জন্য নিয়ে গেল। আর যা হয়, বই আর বউ একবার চলে গেলে আর ফিরে আসে না। বেশ কয়েক বছর পর বইটির আরেকটি কপি হাতে আসে। মাত্র ১৯ পৃষ্ঠা পড়েই মনে হল- আজ এটুকুই থাক। যেটুকু পড়লাম তা নিয়ে অনেক কিছু ভাবনার আছে। এটুকু পড়েই বুঝেছি আমার পড়া আরেকটি সেরা বই হতে যাচ্ছে এটি। পুরোটা পড়ে আমি এর অসাধারণত্বে ঝিম মেরে যাই।

গৌতমবুদ্ধের আরেক নাম সিদ্ধার্থ। আমি ভেবেছিলাম এটি বুদ্ধকে নিয়ে লেখা উপন্যাস। কিন্তু উপন্যাসে গৌতম বুদ্ধ থাকলেও তারা দুজন সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যক্তি। এখানে অভাবিতভাবে বুদ্ধর দর্শনকে অতিক্রম করে একই ভূবনে ভিন্ন দর্শন সৃষ্টি করা হয়েছে। বুদ্ধর মতোই অল্প বয়সে সন্ন্যাস গ্রহণের জন্য গৃহ ত্যাগ করেছিল ব্রাহ্মণ কুমার সিদ্ধার্থ। সে সন্ন্যাসীদের সাথে তিন বছর কাটায়। গৌতম বুদ্ধ নামে মহাত্মার আবির্ভাবের কথা তারা বনে বসেও জানতে পারে। সে তার বন্ধু গোবিন্দকে বলে, বিদ্যা এবং উপদেশে আস্থা হারিয়ে ফেলেছি, গুরুবাক্যে আর বিশ্বাস নেই। নতুন উপদেশ শুনতে তারা বুদ্ধর কাছে যায়। বুদ্ধর উপদেশ শোনার পর তাঁর সাথে অনেক কথা হয় সিদ্ধার্থের। সিদ্ধার্থ বলে, . . সংসারের ঊর্ধ্বে উঠবার এবং নির্বাণ লাভ সম্বন্ধে আপনার মতবাদ আকস্মিক এবং খাপছাড়া মনে হয়। বুদ্ধ বলে, . . দুঃখের হাত থেকে মুক্তি পাবার পথ খুঁজে পেতে সাহায্য করাই আমার লক্ষ্য। সিদ্ধার্থ বলে, . . উপদেশ থেকে আপনি কিছু শিক্ষালাভ করেননি; এবং হে মহাভিক্ষু, আমার মনে হয়, অপরের উপদেশের সাহায্যে কেউ মোক্ষলাভ করতে পারে না।. . সকল গুরু এবং তাদের শিক্ষা ত্যাগ করে নিজের পথ ধরে একাকী লক্ষ্যে পৌঁছব, অথবা প্রাণ দেব- এই সংকল্প নিয়ে আবার পথ চলব। . . আমরা যারা ঘর ছেড়েছি তারা মুক্তি চাই অহং থেকে। আপনার শিষ্যত্ব গ্রহণ করলে যে মুক্তি পেতাম তা হত বাহ্যিক; মুক্তির প্রতারণা দিয়ে নিজের মনকে শান্ত করতে চেষ্টা করতাম. .। বুদ্ধ তাকে বিদায়ের ইঙ্গিত জানিয়ে বললেন, হে সন্ন্যাসী, তোমার বুদ্ধি তীক্ষ্ণ; চমৎকার করে কথা বলবার কৌশলও তোমার জানা আছে বন্ধু। সিদ্ধার্থ ভাবে, শুধু একজন লোক দেখেছি যার সামনে দাঁড়িয়ে আমার চোখ নত হয়। আর কারো সামনে আমার দৃষ্টি নত হবে না। এঁর ধর্ম শিক্ষাই আমাকে আকৃষ্ট করতে পারেনি, সুতরাং অন্যকোন ধর্মোপদেশও পারবে না। বুদ্ধ আমার সব কেড়ে নিয়েছে কিন্তু ফিরিয়ে দিয়েছেন সিদ্ধার্থকে, আমাকে।
এই কথোপকথন দীর্ঘ কিন্তু আকর্ষণীয়। দুজনের মধ্যেকার চিন্তা ভাবনার পার্থক্য স্পষ্ট হয়। সিদ্ধার্থ তার বন্ধু গোবিন্দকে রেখেই পা বড়ায় নতুন পথে। বুদ্ধের মতো মহাত্মা, জ্ঞানী, শ্রেষ্ঠ এবং পুণ্যাত্মাকেও সিদ্ধার্থ গুরু বলে স্বীকার করতে পারল না; গ্রহণ করতে পারল না তাঁর উপদেশ। তাই সিদ্ধার্থ দূরে সরে এসেছে। এক গ্রামে এক নারীর কামনা এড়িয়ে শহরে এসে এক কারুকার্যখচিত চতুর্দোলায় দেখল- একরাশ কালো চুলের নিচে উজ্জ্বল, বড় মধুর, অতিশয় বুদ্ধিদীপ্ত মুখখানি; সদ্য-কাটা ডুমুরের মতো রক্তিম ওষ্ঠাধর; গভীর কালো চোখে সজাগ দৃষ্টি; একজোড়া সূক্ষ্ম ভ্রূ-মনে হয় যেন তুলি দিয়ে আঁকা। সবুজ শাড়ির সোনালি পাড় ছাড়িয়ে দেখা যায় সুকুমার গ্রীবা; দৃঢ় ও মসৃণ, দীর্ঘ ও কমনীয় দুই বাহু; মণিবন্ধ জুড়ে আছে সোনার বালা। এই অপূর্ব সৌন্দর্য দেখে সিদ্ধার্থ উৎফুল্ল হয়ে উঠল। এই নারীর নাম কমলা- সুপরিচিত বারাঙ্গনা। সিদ্ধার্থ জানে অপেক্ষা করতে, চিন্তা করতে এবং উপবাস করতে। এক সময় তাকে জয় করে নেয়, তার পরামর্শে বাণিজ্য করে বহু অর্থ আয় করে। বহু বছর কমলার জন্য আয় করে, তাকে উপহার দিয়ে তার সান্নিধ্যে থাকে কিন্তু কেউ কাউকে ভালবাসেনি। বিলাসী জীবন যাপন করতে থাকে। সিদ্ধার্থ জানে, অধিকাংশ লোকই ঝরাপাতার মতো হাওয়ায় উড়ে যায়, ভেসে বেড়ায় কিছুক্ষণ, তারপর মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে। কিন্তু অল্প কয়েকজন আছেন যাঁরা আকাশের নক্ষত্রের মতো নির্দিষ্ট কক্ষপথে চলেন। তার পিতার কথা, গোবিন্দের কথা এবং বুদ্ধের কথা ভাবতে ভাবতে একসময় সম্পত্তি কুড়ানোর প্রবৃত্তির মৃত্যু ঘটে। সে বিদায় নিল বাড়ি, শয্যা ও খাবারের কাছ থেকে। ঘুরতে ঘুরতে চলে এল এক নদীর ধারে। এই নদীর মাঝি বাসুদেব একদিন তাকে বিনা ভাড়ায় নদী পার করে দিয়েছিল। এখানেই সিদ্ধার্থ খেয়াঘাটের মাঝি হয়, শিখতে থাকে নদীর কাছ থেকে।

সিদ্ধার্থের সাথে শেষ মিলনে গর্ভবতী হয়েছিল কমলা। তারপর থেকেই সে আর বারাঙ্গনা থাকেনি। কমলা বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করে। বৌদ্ধভিক্ষুদের জন্য আশ্রম তৈরি করে। বুদ্ধের অসুস্থতার কথা শুনে তাঁকে দেখার জন্য নদী পার হতে এসে সর্পদংশনে তার মৃত্যু ঘটে। মৃত্যুর আগে অবশ্য সিদ্ধার্থের সাথে দেখা হয়, পুত্রকে তুলে দেয় পিতার হাতে। সিদ্ধার্থের মধ্যে পুত্রের প্রতি তীব্র ভালবাসা তৈরি হয়। কিন্তু পুত্র মায়ের প্রেমিককে সহ্য করতে পারে না। একদিন সে বাসুদেবের টাকা-পয়সা চুরি করে পালায়। একদিন বাসুদেবও চলে যায়। এই খেয়াঘাটেই একদিন আসে গোবিন্দ। গোবিন্দ বলে, বুদ্ধ শিখিয়েছেন দয়া, ক্ষমা, করুণা ও ধৈর্য- কিন্তু শেখাননি প্রেম। পার্থিব প্রেমে জড়িয়ে না পরতে তিনি উপদেশ দিয়েছেন। সিদ্ধার্থ গোবিন্দকে তার কপালে চুমু খেতে বলে। ঠোঁট দিয়ে স্পর্শ করামাত্র তৎক্ষণাৎ এক আশ্চর্য রূপান্তর ঘটল তার মধ্যে। গোবিন্দ মনে মনে বিচার করে দেখছিল সিদ্ধার্থের অদ্ভুত কথাগুলো, সময়ের অখণ্ডতা উপলব্ধি করার জন্য তখনো সে বৃথা চেষ্টা করছে, কল্পনা করতে চেষ্ট করছে সংসার ও নির্বাণ এক; বন্ধুর কথা রেখেছে, সহস্র সহস্র জন্ম-মৃত্যুকে এই হাসি দিয়েছে সমকালিীনতা। গোবিন্দের মনে হল, সিদ্ধার্থের এই আশ্চর্য হাসি অবিকল বুদ্ধের শান্ত, কোমল. দুর্জয়, বিজ্ঞ, করুণাব্যঞ্জক অথবা বিদ্রূপাত্মক হাসির মতো বিচিত্র গুণসম্পন্ন। গোবিন্দের মাথা শ্রদ্ধায় আরো নত হল। সিদ্ধার্থের অচঞ্চল মূর্তি ও প্রশান্ত হাসির দিকে চেয়ে চেয়ে গোবিন্দের একসঙ্গে মনে পড়ে গেল জীবনে যা-কিছু সে ভালোবেসেছে, যা-কিছুকে পবিত্র বলে গ্রহণ করেছে এবং যা-কিছু কষ্ট জীবনে সে স্বীকার করেছে, তার সামনে যে লোকটি নিশ্চল হয়ে বসে আছে, তার মধ্যে এক হয়ে গেছে গোবিন্দের সে সকল মহৎ আদর্শ, মহৎ অভিজ্ঞতা।
গোবিন্দ মাটিতে মাথা রেখে তাকে প্রণাম করল।

এইতো গল্প! গল্প সামান্যই কিন্তু ঘটনার বর্ণনা পাঠককে নিয়ে যায় দর্শনরাজ্যে। বুদ্ধের দর্শন আর সিদ্ধার্থের দর্শন আলাদা। পাঠক উপভোগ করে, সিদ্ধার্থের মতো নিজেও চিন্তার রাজ্যে বিচরণ করে। পাঠক বুঝে এটি এমন এক উপন্যাস যা পড়া শেষ হলেও ভাবনা শেষ হবে না। তার মনে হবে, বিশ্ব সাহিত্যের সাথে বাংলা সাহিত্যর এখানেই পার্থক্য। ‘সিদ্ধার্থ’ লেখার সামর্থ আমাদের কারো নেই। এটি বিশ্বসাহিত্যের শেষ্ঠ উপন্যাসগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানীয়।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:১৭

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সুক দুঃখ দুই ভাই।দুঃখ বাদ দিলে সুখ আর থাকে না।সুখ দুঃখ বাদ দিবার কোন উপায় জীবিত মানুষের নেই।আছে সুধু কথার মার পেঁচ

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৫৫

মুজিব রহমান বলেছেন: শুধু কথার মারপ্যাচই নয়, আছে জীবনকে সাফল্যমণ্ডিত করার ইংগিত। ধৈর্যধারণ করার কথা, অপেক্ষা করার কথা বলা হয়েছে যা জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: বইটা শুরু করেছিলাম। শেষ করতে পারি নি। বই কে যেন নিয়ে গিয়েছিলো। আর পড়া হয়নি। আপনি রিভিউ পড়ে মনে হচ্ছে ভীষন কিছু মিস করে ফেলেছি। এখন বইটা না পড়ার জন্য অপরাধবোধ হচ্ছে।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৫৭

মুজিব রহমান বলেছেন: কিনেও পড়তে পারিনি, পরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কাছ থেকে নিয়ে পড়েছি। না পড়লে আমারও মিস হতো একটি ভিন্ন স্বাদের বই পড়ার সুযোগ। জীবনকে সুন্দরমতো তৈরি করার সুযোগ করে দেয় এ ধরনের বই।

৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৪৬

অনল চৌধুরী বলেছেন: শশীকাপুর অভিনীত সিদ্ধার্থ ছবিও হয়েছে এই উপন্যাস অবলম্বনে, যেখানে হেমন্তর ২ টা বাংলা গান ছিলো।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৫৮

মুজিব রহমান বলেছেন: আমি হলিউডের সিনেমাটা দেখেছি। ওখানে শ্বেতাঙ্গ অভিনেতারা অভিনয় করেছে ভারতীয় চরিত্রে।

৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার কাছ থেকে ভালো ভালো বইয়ের সন্ধান পাই।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০৪

মুজিব রহমান বলেছেন: অসংখ্য বাজে বই পড়েছি। যাতে মানুষ কম বাজে বই পড়ে সেজন্যই চেষ্টা করছি।

৫| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:২৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সবই ভালো লাগলো কিন্তু শেষের প্যারাগ্রাফে বাংলা সাহিত্যকে ছোট করাটাকে ভালো লাগলো না। বাংলা সাহিত্য কি বিশ্ব সাহিত্যের অংশ না। আমার তো মনে হয় বিশ্ব সাহিত্যে বাংলা সাহিত্যের অবদান অগ্রাহ্য করার মতো না। আমরা আমাদের ভালো সাহিত্য কর্মগুলিকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছানোর কাছে গাফলতি করছি। এর দায় তো বাংলা সাহিত্যকে দেয়া যায় না। এর আগের কয়েকটি পোস্টে আপনি বাংলা সাহিত্যের অনেক ভালো ভালো কর্ম নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু এই পোস্টে আপনি কেন বাংলা সাহিত্যকে খাট করলেন বুঝতে পারলাম না। আপনার কথায় মনে হচ্ছে বাংলা সাহিত্য বিশ্ব মানের না।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০৭

মুজিব রহমান বলেছেন: বাস্তবিক বাংলা সাহিত্য অনেক পেছনে। লেটিন আমেরিকার সাহিত্যও বিশ্বের দরবারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই মানের লেখা বাংলায় কোথায়? এতো বই পড়েছি। লিখছিও তা নিয়ে। যখন তুলনা করি তখন হতভম্বই হই, তুলনা করার বই কই?

৬| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ২:২২

অনল চৌধুরী বলেছেন: সাড়ে চুয়াত্তরলেছেন ...সবই ভালো লাগলো কিন্তু শেষের প্যারাগ্রাফে বাংলা সাহিত্যকে ছোট করাটাকে ভালো লাগলো না। বাংলা সাহিত্য কি বিশ্ব সাহিত্যের অংশ না। আমার তো মনে হয় বিশ্ব সাহিত্যে বাংলা সাহিত্যের অবদান অগ্রাহ্য করার মতো না। আমরা আমাদের ভালো সাহিত্য কর্মগুলিকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছানোর কাছে গাফলতি করছি। এর দায় তো বাংলা সাহিত্যকে দেয়া যায় না। এর আগের কয়েকটি পোস্টে আপনি বাংলা সাহিত্যের অনেক ভালো ভালো কর্ম নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু এই পোস্টে আপনি কেন বাংলা সাহিত্যকে খাট করলেন বুঝতে পারলাম না। আপনার কথায় মনে হচ্ছে বাংলা সাহিত্য বিশ্ব মানের না-
এটা আবেগের ব্যাপার না। কোনো দেশপ্রেমিকই নিজের দেশ কে ছোটো করতে চান না। কিন্ত যেটা সত্য সেটা হচ্ছে বাংলা সাহিত্যের কবিতা-নাটক বা গান যতো সমৃদ্ধ, উপন্যাস সে তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে। তিনি সেটাই বলেছেন।
আপনি কি পথের পাচালী , অশনী সংকেত, পদ্মা নদীর মাঝি, প্রাগৈতিহাসিক মার্কা দু:খ-দারিদ্র-হতাশা নির্ভর উপন্যাস বা গল্পগুলিকে বিশ্বমানের বলবেন ?
বিশ্বের কোনো উন্নত দেশের জনগণ এগুলিকে সাহিত্য হিসেবে মেনে নেয়নি একমাত্র ছিচকাদুনে বাংলাদেশীরা ছাড়া, যারা আবার এগুলিকে পাঠ্য বইয়েও অন্তর্ভূক্ত করে হতাশা কান্নাকাটি আর পরশ্রীকাতর আজব জাতি সৃষ্টি করেছে।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৪

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
বাংলা সাহিত্যের সেরা বইগুলো নিয়ে কথা বলে বাংলা সাহিত্যের প্রেক্ষিতে তার প্রশংসা করেছি। কিন্তু যখন তুলনা আসে তখনতো আর প্রশংসা করতে পারি না সেভাবে। আমাদের সাহিত্যমান দুর্বলইতো।

৭| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৩০

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: অতিপ্রিয় একটি বই। প্রত্যেকের নিজের সন্ধান যে একদমই নিজস্ব, অন্য কারও দেখানো পথে যে কারও নির্বাণ হতে পারে না- এই কথাটা হেরমান হেস ছাড়া আর কে এভাবে বলতে পেরেছে!

শুভেচ্ছা।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৫

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা। আবার দৈর্য ধরা ও অপেক্ষা করার গুরুত্বও তিনি দিয়েছেন।

৮| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:১১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: @ অনল চৌধুরী - বিভূতিভূষণের লেখা আন্তর্জাতিক মানের না এ কথা বলার ধৃষ্টতা আমি দেখাতে পারবো না। দুঃখ, দারিদ্র্য্, হতাশা থাকলে সাহিত্য বিশ্ব মানের হয় না এই ধরণের কথা আমি জীবনে প্রথম শুনলাম। কোন উন্নত দেশের মানুষ দুঃখ, দরিদ্রতা, হতাশা মূলক সাহিত্য কর্মকে মেনে নেয় নি জানতে ইচ্ছে করছে। সাহিত্যের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে দুঃখ, দরিদ্রতা কোনও বাঁধা বলে আমি মনে করি না।

৯| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১৪

অনল চৌধুরী বলেছেন: সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বিভূতিভূষণের লেখা আন্তর্জাতিক মানের না এ কথা বলার ধৃষ্টতা আমি দেখাতে পারবো না- বিভূতিভূষণের লেখা আন্তর্জাতিক মানের হলে তার সেই স্বীকৃতি ও পরিচিত থাকতো। টলষ্টয়কে ইচ্ছাকৃতভাবে তার মতবাদের কারণে নোবেল দেয়া হয়নি। কিন্ত তার সারা পৃথিবীর পাঠকদের মনে তার সাহিত্য স্থান করে নিয়েছে, যেটা পৃথিবীর সব পুরস্কার পেলেও সম্ভব হতো না। বিভূতির ক্ষেত্রে কি সেটা ঘটেছে?
কোন উন্নত দেশের মানুষ দুঃখ, দরিদ্রতা, হতাশা মূলক সাহিত্য কর্মকে মেনে নেয় নি জানতে ইচ্ছে করছে।- পৃথিবীর শ্রেষ্ট বলে বিবেচিত একটা উপন্যাসের নাম বলেন, যেটা পথের পাচালী , অশনী সংকেত, পদ্মা নদীর মাঝি বা শরৎচন্দ্রের অধিকাংশ উপন্যাসের মতো দুঃখ, দরিদ্রতা, হতাশা সর্বস্ব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.