নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভণ্ডবাবা ও ভণ্ডপীরদের কে রুখবে?

২৬ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১০:১৮


রাষ্ট্র ও সমাজে গীর্জার তীব্র প্রভাব থেকে মুক্তির জন্য খৃস্ট ধর্মে সংস্কারের দাবী উঠে। ৫শ বছরেরও আগে অর্থাৎ ১৫১৭ সালে মার্টিন লুথারের ক্যাথলিক চার্চের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আরম্ভ হয়। এই আন্দোলনের বস'জাগতিক পরিস্থিতি ধর্মসংস্কারকে প্রায় অবশ্যম্ভাবী করে তুলেছিলো। এই আন্দোলনের সাফল্যে প্রটেস্টান্ট ধর্মের উৎপত্তি ঘটে। এতে পুরোহিত শ্রেণির বিত্তসম্পত্তি, ভোগবিলাস ও ভ্রষ্টাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। তাদের অন্যতম দাবী ছিল, ঈশ্বরের বিকেন্দ্রীকরণ! মানে হল- ব্যক্তি ও ঈশ্বরের মধ্যে পুরোহিত শ্রেণির দালালির কোন প্রয়োজন নেই। মানুষের সরাসরি যোগাযোগ থাকবে ঈশ্বরের সাথে। বাইবেল পাঠ ও আরাধনার মাধ্যমে মানুষ নিজেই ঈশ্বরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে। অর্থাৎ পোপেরও প্রয়োজন নেই। ইসলাম ধর্মে এখন পীরপন্থা এবং আরো বহুপন্থা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। হিন্দু ধর্মেও বাবারা জাঁকিয়ে বসে আছে। বাবা-পীররা বংশ পরম্পরায় জনগণের টাকায় থাকছে আরাম-আয়েশে। ভারতে দেখছি ভণ্ডবাবাদের আখড়ায় হাজার হাজার যৌনদাসী। তাদের রক্ষার জন্য থাকে নিজস্ব বাহিনী। আমাদের পীরদের অনেকেই বহুবিবাহ করেন। তাদের আঙিনায় স্থাপন করেন প্রতিষ্ঠান এবং সেখানে যারা থাকে তারা পীরদের রক্ষা করে। এ যেন আলাদা একটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা! ট্যাক্সের মতোই জনগণের কাছ থেকে, জনগণকে বিভ্রান্ত করেই হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। যারা দরিদ্র মানুষকে যে দানখয়রাত করতো তাও এখন চলে যায় ওই মধ্যস'তাকারীর পকেটে। একেকজন পীরের দরগায় জমে কোটি কোটি টাকা। প্রটেস্টান্ট পন্থাও কিন্তু খৃস্টধর্মের অসারতার বিপরীতে খুব বেশি কিছু করতে পারেনি, সে লক্ষ্যও ছিল না। তবে সেই আন্দোলন ইউরোপের রেনেসাঁয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। সেই পুনঃজাগরণের ধারায় বিজ্ঞানের উত্থানই আজ ইউরোপে খৃস্ট ধর্ম আস্তে আস্তে বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে।

বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে একটি সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু স্বামী বিবেকানন্দ এবং হাজী শরিয়তুল্লাহরা প্রভাবশালী হয়ে উঠায় এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন রায়রা ইংরেজ ঘণিষ্ঠ ও ধর্ম ঘণিষ্ঠ থাকায় দক্ষিণ এশিয়ায় ইউরোপের কয়েকশ বছর পরেও নবজাগরণ ঘটলো না। হিন্দুদের মধ্যে অসংখ্য স্বামী/বাবাদের উত্থান ঘটলো আর মুসলিমদের মধ্যে উত্থান ঘটলো পীরদের। সমাজ চলে গেল তাদের নিয়ন্ত্রণে। আজ গ্রামে গ্রামে তরুণ থেকে বৃদ্ধরা বছর ধরে টাকা জমায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান করার জন্য। অসংখ্য সংগঠনও গড়ে উঠেছে যারা পূজা-পার্বনের আয়োজন করে, কির্ত্তন/শোভাযাত্রা/ভগবৎপাঠের আয়োজন করে। পীরদের রাজনৈতিক/অরাজনৈতিক সংগঠনে জড়িয়ে থাকে। পীরগণ সেই সংগঠনের ব্যানারেই ধর্মসভায় হাজির হয়। পীরদের রাজনৈতিক সংগঠনগুলো সরকারের জন্য খুবই দরকার। সরকার সময়মতো তাদের হাতে টাকা পৌঁছে দিলেই হল। গত নির্বাচনে কয়েকজন পীরের রাজনৈতিক দলকে কিনে ফেলতে দেখা গেল। ধর্মাশ্রয়ী সংগঠনগুলো বাস্তবিক জনমানুষের স্বার্থে কখনোই থাকে না। তারা রাজনীতিও করে নিজের স্বার্থে, অর্থবিত্তের জন্য সেই প্রমাণই হয়েছিল। বাবা/স্বামী ও পীরগণ একটি অন্ধ ও বদ্ধ সমাজ তৈরি করে রেখেছেন। আমাদের উপজেলা শ্রীনগরে এক দাদার কাছে যখনই জানতে চাই, কেমন আছেন? তিনি বলেন, ‘বাবা যেমন যেখেছেন!’ তিনি প্রতি বছরই একাধিকবার ভারতে যান ওই বাবার দর্শনে, অর্থ-কড়ি দিয়ে আসতে। বাবাই যেন তাকে ভাল রেখেছে! অথচ তাঁর হার্টে সমস্যাসহ অনেক সমস্যা রয়েছে যার চিকিৎসা নেন ডাক্তারের কাছ থেকে। তারা সমাজে একটা বিজ্ঞানবিরোধী পীর/বাবাময় ভাবাদর্শ গড়ে তুলেছে। সমাজে এই ভাবাদর্শের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোই যাচ্ছে না। অথচ আমরা ধর্মানুযায়ীই বলতে পারি, সমাজে ধর্ম পালন করার জন্য মধ্যস্বত্ত্বভোগী দালালদের দরকার নেই। ব্যক্তি ও স্রষ্টার মধ্যে বাবা/পীর/স্বামী শ্রেণির দালাদীর কোন প্রয়োজন নেই। মানুষের সরাসরি যোগাযোগ থাকবে স্রষ্টার সাথে। এখন বাংলাতেই ধর্মগ্রন্থ' পাঠ ও আরাধনার মাধ্যমে মানুষ নিজেই স্রষ্টার সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের জন্য এ জরুরী কথাটিও বলার কেউ নেই।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:১৫

নতুন বলেছেন: এখানে ধান্দাবাজেরা মূর্খদের সাথে বাটপারী করছে।

কিছু সাটিফিকেট ধারীরাও কিন্তু এই পীর মাজারের মুরিদ তাই এই ব্যবসা চলছে।

তবে এখন কমে আসছে ।

২৭ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৭:৩২

মুজিব রহমান বলেছেন: এখন চরমোনাই যত শক্তিশালী, এতোটা শক্তিশালী কোন আমলেই কোন পীর ছিল না। এমনকি আটরশির প্রতি এরশাদের সমর্থন থাকার পরেও তারা এতোটা ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারেনি। শফি হুজুরের হেফাজতও বারবারই শক্তি প্রদর্শন করেছে।
তবে সচেতন ও অগ্রসর চিন্তার মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে। এটাই আশার আলো।

২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:২০

আকন বিডি বলেছেন: ১মই ছবির লেখাটা নিয়ে বলি, "চেপে ধরেছে আমাকে আপনাকে"-----আপনাকে কোন পির চেপে ধরেছে? এটা একটু খোলাসা করুন।
২য়তো ইসলাম বিষয়ে বলি, যেহেতু অন্যদের বিষয়ে অল্প জানি। আল্লাহ আর তার বান্দার মধ্যে কোন মেডিয়েটর নাই তাই বিশুদ্ধ আকিদার অনুসারিরা কখনো পিরের জাতাকলে পরে না। তাদের খপ্পরে পরে সাধারন, ইলম বিহীন, ত্রুটিপূর্ণ আকিদাহর অনুসারি। তাদেরকে যতই বিশুদ্ধ আকিদাহর কথা বলা হোক না কেন, তারা পির বলতে অজ্ঞান। যখন বয়স হয়ে যায় দ্বীনহীন অবস্থায়, সর্টকাট ফলো করতে গিয়ে পির ধরে। এটা নিয়ে অনেক আলেম কাজ করছেন। রাসুল (স ) এর ২৩ বছরের নবুয়ত জীবনের ১৩ বছর এই বিশুদ্ধ আকিদাহ নিয়ে কাজ করেছেন। সমস্যা এটা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কম গুরুত্ব দেওয়া হয়। আবার দেশের মাথা থেকে শুরু করে হর্তাকর্তারা কোন না কোন পিরের মুরিদ। তাই এদের মসনদে থাকা খুবই সহজ।

২৭ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৭:৩৫

মুজিব রহমান বলেছেন: আমি একটি সমাজে বাস করি। সেখানে আত্মীয় স্বজন অনেক। তারা যখন পীরদের খপ্পরে পড়ে তখন সেটার প্রভাব আমার উপরেও পরে বৈকি! এছড়া পীরের মুরিদদের চাপও পড়ে।

৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: এখন তো অনেক কমে গেছে ভন্ডদের কর্মকান্ড।
৮০/৯০ দশকে সোণালী সময় পার করেছে বাবারা।

২৭ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৭:৩৫

মুজিব রহমান বলেছেন: এখন চরমোনাই যত শক্তিশালী, এতোটা শক্তিশালী কোন আমলেই কোন পীর ছিল না। এমনকি আটরশির প্রতি এরশাদের সমর্থন থাকার পরেও তারা এতোটা ক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারেনি। শফি হুজুরের হেফাজতও বারবারই শক্তি প্রদর্শন করেছে।
তবে সচেতন ও অগ্রসর চিন্তার মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে। এটাই আশার আলো।

৪| ২৬ শে অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৩:২১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
পীর মানেই তো ভন্ড।
এখানে আবার সাধু পীর কোথায় পাওয়া যাবে?

২৭ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৭:৩৬

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনি ঠিক বলেছেন।

৫| ২৬ শে অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:২০

চাঁদগাজী বলেছেন:



শুরুতে ধর্ম ছিলো বিস্ময়, ভয় ও কম-জ্ঞানের ফসল; পরে উহা মিথ্যার জ্ঞানের উপর ভর করে বেড়ে উঠেছে।

২৭ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৭:৩৬

মুজিব রহমান বলেছেন: বাহ!
আলোকিত বার্তা!

৬| ২৬ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:৫২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভণ্ড পীর/ বাবার চেয়ে মুরিদদের দোষ বেশী। অনেক উচ্চশিক্ষিত লোক এদের কাছে যায়।

২৭ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৭:৩৭

মুজিব রহমান বলেছেন: মুরিদদের বিভ্রান্তই করা হয়। তারা অন্ধবিশ্বাসীতো আগে থেকেই। তাদের সচেতন করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আমাদেরও বলতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.