নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বাস ও বিজ্ঞান কি এক না আলাদা?

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:০৮


আদম ও হাওয়ার গন্ধম খাওয়া নিয়ে তাদের কথোপকথন এর কথা বলছিলাম ধর্ম পড়াতে গিয়ে। এক ছাত্রী বলল, ‘স্যার গতকাল আপনি সমাজ পড়াতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘আদিম মানুষ কথা বলতে পারতো না’, আজ ধর্ম পড়াতে গিয়ে বলছেন, ‘আদম হাওয়া কথা বলছে’।
আমি শুধু বলেছিলাম, ধর্ম পড়ার সময় বিশ্বাস নিয়ে পড়বে আর বিজ্ঞান পড়ার সময় যুক্তি-প্রমাণসহ পড়বে।
বাংলায় শব্দদুটির মধ্যে অনেক মিল। দুটোই বি দিয়ে শুরু এর পর একটি যুক্তাক্ষর সাথে ‘আ’ কার এবং শেষে একটি অক্ষর। অথচ এরা বিপরীত মেরুর। নিউটন ও আইনস্টাইনের কোন সূত্রে বিশ্বাস স্থাপন করার সুযোগ নেই। প্রমাণ ছাড়া সূত্র টিকবে না। যখনই ভুল প্রমাণ হবে সাথে সাথেই বাতিল। অনেকেই ধর্মগ্রন্থের সাথে বিজ্ঞান মিলাচ্ছেন। অনেকে বলেন- বিশ্বাস ছাড়া বিজ্ঞান অন্ধ! তারা না জেনে, না বুঝেই মিলাচ্ছেন। মাত্র তিনটি পার্থক্য তুলে ধরছি-

১। বিজ্ঞানে বলা হয়েছে, পৃথিবী গোলাকার। চন্দ্র পৃথিবীর চার দিকে আর পৃথিবী-চন্দ্র মিলে সূর্যের চারদিকে আবর্তিত হয়। মহাবিশ্বে কোটি কোটি গ্রহ-নক্ষত্র রয়েছে যা সম্প্রসারণশীল। ধর্মগ্রন্থে বলা হচ্ছে, পৃথিবী সমতল। স্থলভাগের পরে রয়েছে অফুরন্ত জলরাশি। সকালে ফেরেস্তারা সূর্যকে টেনে পূর্ব দিগন্ত থেকে পশ্চিমে টেনে নিয়ে যায়। কর্দমাক্ত জলাশয়ে অস্ত যায়। রাতে সূর্য আরশের নিচে বসে জিকির করে। চন্দ্র ও সূর্যের জন্য নির্দিষ্ট পথ করা হয়েছে যাতে একটি আরেকটিকে অতিক্রম করতে না পারে। তারকামণ্ডলী সৃষ্টি করা হয়েছে আকাশের সৌন্দর্যবৃদ্ধির জন্য।

২। বিজ্ঞানে এখন বলা হয়েছে, সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে। ‘বিবর্তনের মাধ্যমে বর্তমান মানুষের প্রজাতি তিন লক্ষ বছর আগে এসেছে। বাইবেল বিশ্লেষণ করে, পাদ্রিরা বলছেন, যিশুর ৪ হাজার বছর আগে ঈশ্বর এডাম ও ইভকে তৈরি করেছেন। অন্য ধর্মে বিভিন্ন নবী ও ধর্মপ্রচারকদের আয়ুষ্কাল বিশ্লেষণ করে কাছাকাছি পৌঁছানো গেলেও হিসাব মেলানো যায় না। ছয় দিনে মহাবিশ্ব, পৃথিবী, গাছ-পালা, পশু-পাখি ও মানুষ সৃষ্টি হয়েছে।

৩। বিজ্ঞানে বলা হয়েছে, মানুষ কোষ দ্বারা তৈরি। কোষের সম্মিলিত শক্তিই তাকে চালিত করে। শরীরে আত্মা, রুহু বলতে কিছু নেই। ধর্মগ্রন্থগুলো বলছে, ঈশ্বর আত্মা বা রুহু সৃষ্টি করে তা মানুষের শরীরে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছেন। আত্মা বা রুহু অবিনশ্বর। মৃত্যু মানে শরীর থেকে রুহু বা আত্মা বের হয়ে যাওয়া। শরীর মাটি দিয়ে তৈরি।

যার ধর্ম তার তার কাছে, বিশ্বাসও যার যার তার তার। অসুবিধা কি? চলুক। কিন' দুটোকেই এক করতে গেলে কিছু সমস্যা তৈরি হবে। যারা লেখাপড়া শিখে একটু সচেতন হবেন, যারা বিজ্ঞান বুঝবেন তাদেরকে যখন বলবেন ধর্মগ্রন' থেকেই বিজ্ঞান গ্রনে'র উৎপত্তি হয়েছে আর বিশ্বাসই বিজ্ঞান তখন সে লোক কিন্তু ঠিকই বুঝে ফেলবে। আপনার সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করবে।

বিজ্ঞান ও বিশ্বাসের মধ্যে কি কোন সম্পর্ক রয়েছে? বাস্তবিক কোন সম্পর্ক থাকার সুযোগ নেই। দুটি দুই মেরুর। একটির বিপরীতে আরেকটি। বিজ্ঞান সত্য ও যুক্তিনিষ্ঠ আর বিশ্বাস অলৌকিকতা নির্ভর। একজন যুক্তিবাদী মুক্তচিন্তার বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ বিশ্বাস নির্ভর হয় না। তাহলে মানুষ কেন বিজ্ঞানমনষ্ক হয় না? জন্মের পরেই মানুষ মুক্ত না হয়ে পারিবারিক ফাঁদে পড়ে যায়। যে পরিবারে যার জন্ম সে ওই পরিবারের ভাবাদর্শেই বড় হয়। সাধারণত একজন হিন্দুর সন্তানরা ধারাবাহিকভাবেই হিন্দু থাকে, মুসলিমের সন্তানরা ধারাবাহিকভাবে মুসলিম থাকে। পরিবার থেকে তারা শিখে- এগুলোই সত্য, সঠিক এবং এগুলো অবিশ্বাস করা মহা অপরাধ। পরিবার থেকে বেরিয়ে সে একই ধরনের সমাজে মিশে। সেই সমাজেও সে একই শিক্ষা পায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার পরিবার ও সমাজ থেকে অর্জিত অন্ধবিশ্বাসকেই লালন করতে শেখায়। দরিদ্র দেশের মানুষ বের হতে পারে না, তারা মুক্তচিন্তা করতে শিখে না।

বিজ্ঞান থেকে আমরা কি শিখি? অজানাকে জানা ও রহস্যকে উন্মুচন করা। বিশ্বাস থেকে আমরা শিখি উল্টোটা অর্থাৎ অজানাকে রহস্য দিয়ে ঢেকে রাখা আর রহস্যকে অলৌকিকতা দান করা। বিজ্ঞানের সাথে বিশ্বাসের বিরোধ এমনই। একটিতে আসক্তি আসলে অন্যটি দূরে চলে যাবে, একটি বুঁদ হয়ে থাকলে অন্যটি হারিয়ে যাবে। যুক্তিবোধ প্রাধান্য পেলে বিশ্বাস হালকা হয়ে যাবে। আবার বিশ্বাসবোধ প্রাধান্য পেলে যুক্তিবোধও হালকা হয়ে যাবে। দুটো একসাথে বাস করে না।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:২৪

ঊণকৌটী বলেছেন: আহার এবং বাসস্থান এর সমস্যা দূর হলে মানুষ তার পরবর্তী কার্য কর্মের চিন্তা ভাবনা শুরু করে সেই আদিম কাল থেকেই, শুরুর সেই দিন থেকেই মানব জাতির দলপতি বা প্রধান সৃষ্টি হয়ে ছিল, প্রধান যা বলতো তাই গোষ্ঠীর বিশ্বাস বা নীতি ছিলো, কিন্তু যুগের পরিবর্তনে কিছু কিছু গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা অন্য খাতে ভাবতে শুরু করলেন,যদিও সে সময় খুবই কঠিন সে কাজটা,কিন্তু সে সব মহাপুরুষ দের জন্যই আজকে আমরা বিজ্ঞান বা ভবিষ্যতের কথা বলতে বা ভাবতে পারি পৃথিবীর জন্য বর্তমান ভবিষ্যত প্রজন্ম এগিয়ে যাবে, তা কথাটা যে খান থেকে শুরু করেছিলাম,সেই আদিম গোষ্ঠী কিন্তু এখনও আছে,সারা পৃথিবীতেই আছে আপনার আমার সামনে, যেইখানে খাদ্যের অভাব, শিক্ষার অভাব, বা গোষ্ঠীর রাজত্ব সেখানে ধর্ম বা অনুসারে বিভিন্ন শাসন বা পরোয়ানা আসতেই থাকবে, কারণ তাদের রাজ চালাতে হবে,মানুষের যতদিন না নিজস্ব ভাবনা শক্তি আসবে নিজেকে না চিনতে পারে ততোদিন তো এই সমস্যা চলতেই থাকবে

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৪৩

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। উত্তরণের জন্য আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারলে সমস্যা কমেই আসবে।

২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:




জুনিয়র হাই স্কুলের সায়েন্স ক্লাশ?

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৪৫

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ!
হাইস্কুলে এখনো বিজ্ঞানকে বিশ্বাস মিশিয়েই পড়ানো হয়।

৩| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:২৫

অধীতি বলেছেন: এ নিয়ে প্রচুর মতপার্থক্য আছে। এসব আলোচনা ভাল লাগেনা। বিজ্ঞান সবার হাতের কাছে হয়ে গেছে। ড. মোহাম্মদ ইউনুস বলেছেন "সাইন্স ফিকশন যেমন বিজ্ঞানের অগ্রগতি ঘটায় তেমন সোশ্যাল ফিকশন সমাজের অগ্রগতি ঘটাবে।আমরা কেউই সোশ্যাল ফিকশন লেখিনা।" এইসব এখন যার যার ব্যাপার। সমাজ,ধর্ম,বিজ্ঞান তিনটাও কেউ মেনে সফল হয় আবার কেউ যেকোন দুটো আবার কেউ যেকোন একটি মেনে সফল হয়।এটা কোন ব্যাপার না।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৪৮

মুজিব রহমান বলেছেন: ধর্মান্ধতা ব্যক্তিগত সফলতা নিয়ে আসতে পারে। যেমন পীরকে ধনী বানিয়ে দিতে পারে। কিন্তু রাষ্ট্রকে অন্ধগলির পথই দেখায়।

৪| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: কেউ যখন কোন কিছু আছে বলে দাবী করে তা প্রমাণের দায়িত্ব তার উপর বর্তায়। আমি যদি আজ দাবি করি ভুত আছে, একই সাথে আমি কাউকে বলি ভুত যে নাই তা প্রমাণ করে দেখাও, নাহলে আমার কথা মেনে নাও - তা এক ধরণের কুযুক্তির মধ্যে পড়ে যাকে Burden of Proof বলা হয়।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৪৯

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
তাই হওয়া উচিৎ। কিন্তু দাবি করে উল্টো।

৫| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ২:৫২

নিরীক্ষক৩২৭ বলেছেন: শুধু অন্ধবিশ্বাস লালনই শেখায় না, কেঊ ভুল ধরাতে চাইলে কিভাবে তাকে সাইজ করা লাগে সেটাও শেখায়।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৪৯

মুজিব রহমান বলেছেন: সেজন্য তারা চাপাতি ধার দিয়ে রাখে।

৬| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:২১

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: সকল ধর্মই মানুষকে সৎপথে চালিত করে, সহনশীন হতে শেখায়, মানুষের প্রতি মানুষে মমত্ববোধ তৈরি করে তাই ধর্মকে একেবারে বাদ দেয়া যাবে কোন দিনই; যদিও আমরা প্রতিটি ধর্মের লোকই প্রচন্ড অসহিষ্ণূ হচ্ছি দিনের পর দিন তা কিন্তু ধর্মের দোষ না, সবই আমরা মানুষের দোষ।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৬

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
স্ক্যান্ডেনেভিয়া অঞ্চলের মানুষ, চীন-ভিয়েতনামের মানুষ এবং জাপানের মানুষদের অধিকাংশই ধর্মহীন। একারণেই কি তারা অধিক অমানবিক?

৭| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:০১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

বাংলাদেশ থেকে বিজ্ঞান পালিয়ে যাবে।
সেই দিন আর বেশী দূরে নয়।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪০

মুজিব রহমান বলেছেন: বিজ্ঞান পালিয়ে গেলে মানবতাও পালিয়ে যাবে। বাংলাদেশ হয়ে উঠবে আফগানিস্তানের মতোই অকার্যকর রাষ্ট্র।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.