![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ
একদা বাংলাদেশের আনাচে কানাচেও এমন শ্লোগান শোনতাম। বাংলাদেশের হাজার হাজার মাদ্রাসার ছাত্র, উগ্র ডানপন্থী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এই শ্লোগান দিয়ে দেশ কাঁপাতো আমরাও ভয়ে কাঁপতাম। এখন আর এই শ্লোগানটি শুনি না। এখন আর কেউ তালেবান হতে চায় না, বাংলাকেও আফগান বানাতে চায় না। তারা যদি তখন বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানাতে পারতো তবে আজ বাংলাদেশও হতো আফগানিস্তানের মতোই অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্র।
গত কয়েক দশকে আফগানিস্তানে লক্ষ লক্ষ মানুষ যুদ্ধের বলি হয়েছে। এদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাও অনেক। বহু নারীই ধর্ষণ ও খুনের শিকার হয়েছেন, হচ্ছেন। তালেবান আর আইএস সংঘাত চালিয়ে যাচ্ছে সরকারের সাথে আবার নিজেদের সাথেও। সমৃদ্ধ আফগানিস্তান আজ ধ্বংসের নগরী। মানবতা ওখানে বিপন্ন। ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে সাধারণ মানুষ। তিন পক্ষের ভয়াবহ সংঘাতের খবরগুলোও এখন আর মানুষ গুরুত্ব দেয় না। ওদের জন্মই যেন হয়েছে বেঘোরে প্রাণ দেয়ার জন্য। কখনো নিরাপত্তাবাহিনী ডজন ডজন তালেবান জঙ্গিকে হত্যা করে, কখনো তালেবান হত্যা করে ডজন ডজন আইএস জঙ্গিকে। অহরহই খুন হয় সরকারি বাহিনীর লোকেরা। আবার সাধারণ মানুষকেই টার্গেট করে তালেবান বা আইএস জঙ্গিরা। বাংলাদেশের জঙ্গি/ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের সেই তালেবান হওয়ার স্বপ্ন আজ দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে। সত্তরের দশকের শেষে আফগানিস্তানে এক রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে। সেই গৃহযুদ্ধে হস্তক্ষেপ করে সোভিয়েত বাহিনীও নাস্তানাবুদ হয়ে এক দশকের মধ্যেই ফিরে যায় এবং তার কিছুদিনের মধ্যেই সোভিয়েত নিজেই ভেঙ্গে যায়। সোভিয়েতরা যাওয়ার পরেও আফগানদের কোন লাভ হয়নি। তারা আবারো জড়িয়ে পড়ে সেই গৃহযুদ্ধে। কয়েক বছরের মধ্যে মৌলবাদী তালেবানরা কাবুল দখলে নেয়। বাংলাদেশ থেকেও কিছু জঙ্গি আফগানিস্তানে গিয়ে তালেবানদের পক্ষে যুদ্ধ করে। বাংলাদেশের তরুণরা তালেবান হতে চেয়ে চিৎকার করতে থাকে। আফগানিস্তানে তালেবানরা আমদানি করে আল কায়েদাকে। লাদেন- মোল্লা ওমর ভাইভাই! দুঃখিত বাস্তবিক তারা ছিলেন একজন আরেক জনের জামাতা এবং শ্বশুর। আফগানিস্তানের আধুনিক ইতিহাসে নৃশংস ও বর্বর শাসন ছিল তালেবান শাসন। আল কায়েদা টুইন টাওয়ার ধ্বংস করলে মার্কিন হামলার মুখে তালেবানরাই উৎখাত হয়। উৎখাত হয় বাংলাকে আফগান করার স্বপ্ন।
তালেবানদের সময়েও আফগানিস্তানে জীবনযাত্রার মান ছিল বিশ্বে সর্বনিম্ন। সেই সর্বনিম্ন মানের দেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষার কথা মুখে বললেও কেউই আফগানে বসতির জন্য যায়নি। সিরিয়া ও ইরাকের কিছু অংশ নিয়ে আইএস গঠিত হলেও বাংলাদেশ থেকে কিছু জঙ্গি গিয়েছিল সেখানে যুদ্ধ করতে। যুদ্ধে অধিকাংশই প্রাণ হারিয়েছে। কেউ কেউ স্ত্রীকেও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন যুদ্ধে। সেই নারীদেরও করুণ পরিণতি হয়েছে। সেই আইএসও প্রায় বিলুপ্তির পথে। বাংলাদেশ থেকে খুব অল্প কিছু জঙ্গি গিয়েছিল প্যালেস্টাইনের পক্ষে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। এখন আর এমন কারো কথা শোনা যায় না যারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। আইএস দর্শনই বাংলাদেশকে বেশি ভূগিয়েছে। এই দর্শনে উদ্বুদ্ধ কতিপয় তরুণ হলি আর্টিজানে হামলা চালিয়ে নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল।
মধ্যপ্রাচ্যে আইএস কোন মানবিক আদর্শ নিয়ে ক্ষমতায় যায়নি। তারা ক্ষমতায় যেতেই শুধু ধর্ম ও ধর্মান্ধদের ব্যবহার করেছে। তারা অসংখ্য নারীকে বানিয়েছে যৌনদাসী। কুর্দি ও ইয়াজিদি নারীদের বেশুমার ধর্ষণ করা হয়েছে। তেলক্ষেত্রগুলোতে চালানো হয়েছে লুটপাট। সেগুলো আমেরিকা/ইউরোপের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট লোকদের হাতে তুলে দিয়ে কিনেছে অস্ত্র-গোলাবারুদ। মূলত লক্ষ লক্ষ মুসলিম খুন হয় আইএসের হাতে। একইভাবে বলা যায় তালেবানরা যাদের খুন করেছে তারাও অধিকাংশই মুসলিম। হলিআর্টিজান বাদে বাংলাদেশের জঙ্গিদের হাতে খুন হওয়াদের অধিকাংশও মুসলিম। আফগানিস্তানে ঘটে চলা তালেবান বনাম আইএস বনাম সরকারের মধ্যেকার সংঘাত কোনভাবেই ধর্ম সংশ্লিষ্ট নয়, ধর্ম রক্ষার জন্যও নয়। তারা কেবল ক্ষমতার স্বাদ নিতে চায় ধর্মকে ও ধর্মান্ধদের ব্যবহার করে। তালেবান মানে ছাত্র- যে ছাত্ররা গত শতাব্দিতে লড়াইতে নেমেছিল তারা আজ বৃদ্ধ কিন্তু তবুও তালেবান। বলতে পারেন শিক্ষার কোন বয়স নাই। আমাদের প্রকৃত সত্যটাই শিখতে হবে।
০৬ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪৬
মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ হয়েছে।
২| ০৬ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:২৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আপনার পোস্টটি খুবই সুন্দর।
পড়ে খুবই ভালো লেগেছে।
+++
০৬ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪৮
মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
আমাদের অতিক্রম করতেই হবে এমন পরিস্থিতি।
৩| ০৬ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৪৪
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: এখন বলে মনে মনে।তার প্রমান দুই দিন আগেই দেখলেন।
০৬ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫১
মুজিব রহমান বলেছেন: সে জন্যইতো আতঙ্কিত বোধ করছি।
৪| ০৬ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: আমি আমার দেশ নিয়ে আশাবাদী। বাংলাদেশ দিন দিন উন্নতির দিকেই যাবে। দুই একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনায় কিচ্ছু হবে না।
০৬ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৩
মুজিব রহমান বলেছেন: বিচ্ছিন্ন ঘটনা সীমাহীন হয়ে যাচ্ছে এই যা!
৫| ০৬ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: হেফাজতের মিছিলে লক্ষ লক্ষ লোকের সাথে মুনাজাত করেছে পুলিশ এরা কোন পন্থী । বাবু সাব বলেছে এই সরকার আমাদের সরকার কোন পন্থী । দুই একটা আবুল মামার চিৎকারে প্রভাব পড়বে দেশে
০৬ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৪
মুজিব রহমান বলেছেন: আমরাতো দেখি, বুঝি!
কেন হচ্ছে তাও দেখি, বুঝি!
বলতে তো পারা কঠিন!
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৪১
সোহানী বলেছেন: ভালোলাগলো বিশ্লেষন। দেশের চারপাশে এ ক'দিন যা দেখছি তাতে আতংকিত না হয়ে পারছি না। আমরা দিন দিন মাথামোটা মানুষ হয়ে যা যাচ্ছি।