![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২০১৪-১৫ অর্থবছরে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ। এবং মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পের
প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ২৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রক্কলন অনুযায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন অথ্যাৎ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮.১ শতাংশ। এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ৭.৮৬ শতাংশ।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশের কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৫১ শতাংশ নেমেছে। যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ৪.১৯ শতাংশ।
একই সময়ে কৃষি খাতের অবদান ১৪.২৩ শতাংশ থেকে কমে ১৩.৬০ শতাংশে নেমেছে। তাছাড়া, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিল্প খাতের অবদান ও প্রবৃদ্ধি দুটোই বেড়েছে।
দেশে পণ্য রপ্তানি আয় কমেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ( জুলাই - মার্চ) শেষে রপ্তানি আয় দাড়িয়েছে ২ হাজার ৮৯৭ কোটি মার্কিন ডলারের কিছু বেশি। এটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬.২৮ শতাংশ কম।
অবশ্য রপ্তানি আয় আগে থেকেই কমতির ধারায় ছিল। ২০১৯-২০ অর্থবছরের কয়েক মাস আগে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল ৪.৭৯ শতাংশ।
দেশের সিংহভাগ রপ্তানি আয়ের উৎস তৈরী পোশাক খাতেও আলোচ্য সময়ে রপ্তানি আয় কমেছে।
গত জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ( ২০১৯-২০) সময়ে এ খাতে আয় হয়েছে ২ হাজার ৪১০ কোটি ডলার। যা কমেছে ৭ শতাংশের মতো।
২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৪ ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মাথাপিছু গড় আয় ছিল ১ হাজার ৯০৯ ডলার। অর্থাৎ, দেশের মানুষের গড় মাথাপিছু আয় এক বছরের ব্যবধানে ১৫৫ ডলার বেড়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ( বিবিএস) মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ও মাথাপিছু আয়ের সাময়িক হিসাবে এই চিত্র উঠে এসেছে।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশী মুদ্রায় মানুষের মাথাপিছু আয় বছরে দাঁড়াচ্ছে গড়ে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ, মাসে গড় আয় প্রায় ১৪ হাজার ৬০০ টাকার মতো।
মাথাপিছু গড় আয় কোনো ব্যক্তির গড় আয় নয়। একটি দেশের মোট আয়কে মাথাপিছু ভাগ করে দেওয়া হয়।
বিদায়ী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.২৪ শতাংশ। এটি সাময়িক হিসাব।
যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮.১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।
বাংলাদেশের মাননীয় অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন। বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রনালয় কোভিড-১৯ এর প্রভাব উপেক্ষা করে বিদায়ী অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫.২ শতাংশ প্রক্ষেপণ করেছে এবং আসন্ন অর্থবছরের জন্য তা ৮.২ শতাংশ ধার্য করেছে।
বেসরকারী বিনিয়োগ যা প্রবৃদ্ধির একটা প্রধান উৎস।
তা ২০১৯-২০ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে ১২.৭ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে, যেহেতু বিনিয়োগ অনেকখানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু ২০২০-২১ অর্থবছরে বেসরকারী বিনিয়োগ জিডিপির ২৫.৩ শতাংশে পৌঁছানোর অনুমান করা হয়েছে।
বেসরকারী বিনিয়োগের এই বিপুল পরিমাণ বৃদ্ধি ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৬.৭ শতাংশ বেসরকারী ঋন প্রবৃদ্ধির ধারা অর্জন করার কথা বলা হয়েছে।
একইভাবে, রপ্তানি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ২০১৯-২০ অর্থবছরের নেতিবাচক ( ১০ শতাংশ) হার থেকে বাড়িয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৫ শতাংশ নির্ধারন করা হয়েছে।
রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় বাড়ার হার ২০১৯-২০ অর্থবছরের ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৫ শতাংশে উন্নীত করার কথা বলা হয়েছে।
এর ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে রাজস্ব জিডিপি হার মাত্র ১১.৪ শতাংশ। আসন্ন অর্থবছরে রাজস্ব আদায় ৮.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বল অনুমান করা হয়েছে।
সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা চলতি অর্থবছরের জন্য ধরা হয়েছে।
৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৯ কোটি টাকা। তবে সিপিডির হিসাব অনুযায়ী এটি ২ লাখ ৫২ হাজার ৮১১ কোটি টাকার মতো হবে।
এবার বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। যার মানে দাঁড়ায়, রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪৯.৫ শতাংশ বেশি হতে হবে।
সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে যাওয়ায় ব্যাংকঋনমুখী হয়ে পড়েছে সরকার। আর গত অর্থবছরের বেসরকারী খাতের ঋন প্রবৃদ্ধি কমে হয় ৮.৬১ শতাংশ। তবে করোনার মধ্যেও ভালো প্রবাসী আয় আসছে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বাড়ছে। গত অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে প্রায় ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়। আর পুরো অর্থবছরে আয় আসে ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলার। ফলে গত ১৯জুলাই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে হয় ৩ হাজার ৭১৮ কোটি ডলার। যা দিয়ে প্রায় ৭ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
জানা গেছে গত অর্থবছরে বিভিন্ন দেশ থেকে ৫ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে ৮.৫৬ শতাংশ কম। ওই অর্থবছরে পণ্য আমদানি হয়েছিল ৫ হাজার ৯৯১ কোটি ডলারের। যদিও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য আমদানিতে ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আমদানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল প্রায় ২৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভোক্তা পণ্য ছাড়া সব ধরনের আমদানিতে নেতিবাচক ধারা ছিল। মূলধনি যন্ত্রপাতি সাড়ে ৮ শতাংশ, জ্বালানি ৭.৬৭ শতাংশ, শিল্পের কাঁচামালে ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ ও অন্যান্য পণ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ কম ঋনপত্র নিষ্পত্তি হয়। তবে ভোক্তা পণ্য আগের অর্থবছরের চেয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩.৭৭ শতাংশ পণ্য আমদানি নিষ্পত্তি হয়।
২০১৯-২০ অর্থবছরে, ' সমৃদ্ধির সোপানে বাংলাদেশ, সময় এখন আমাদের, ' শিরোনামে প্রস্তাবিত এই বাজেটে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। আর আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ৩ লাখ ৮১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১ লাখ ৪১ হাজার ২১২ কোটি টাকা ঘাটতি নিয়ে আগামী অর্থবছরটি শুরু হবে।
সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে বরাদ্দ ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপির ৩ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ২.৫৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত রাষ্টে পরিণত করবেন। কিন্তু, বাংলাদেশ যেভাবে এগোচ্ছে, আদৌ কি তা সম্ভব? যেমন- শিল্পের অনুন্নয়ন, উদ্যােক্তার অভাব, সম্পদের সুষ্ট ব্যবহারের অভাব, দূর্নিতি, উৎপাদন ব্যহত, প্রযুক্তির অভাব, শ্রমিক অসন্তোস, রাজনৈতিক
প্রভাব, সৃষ্টশীল শিল্পের অভাব, জ্বালানি ও বিদ্যুতায়নের অভাব, অদক্ষ মানবসম্পদ ইত্যাদি।
ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি বা বৃহদায়তন শিল্পের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারেকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। যেমন- সহজ শর্তে ঋন প্রদানের ব্যবস্তা, কাঁচামাল আমদানিতে সহযোগিতা, দক্ষ মানবসম্পদ গড়ার জন্য কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা। যেখানে শুধুমাত্র সার্টফিকেট প্রদান নয়, প্রকৃতপক্ষে একজন দক্ষ কারিগর তৈরী হবে। যারা কি-না গাড়ি, বিমান, জাহাজ, প্রযুক্তি (ইলেট্রনিক্স, যান্ত্রিকযান) ইত্যাদি তৈরীতে পারদর্শী হবে। প্রয়োজনে সাধ্যনুসারে বিদেশে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা। যেখানে, জাপান ও চায়নার স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন খেলনা, ঘড়ি তৈরী করতে সক্ষম, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়। দক্ষ জনবল তৈরী করতে, যুবউন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্টানের মাধ্যমে সঠিকভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং তদারকি করা। প্রযুক্তির ব্যবহার উৎকর্ষ সাধনের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও উন্নয়ন। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরী করে শ্রমবাজার সৃষ্টি করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মেধা উন্নয়নে সমসাময়িক বিভন্ন প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা ও শিক্ষকদের বিভন্ন সৃষ্টিশীল বিষয়ে প্রশক্ষণের ব্যবস্থা করা। উন্নয়ন ব্যহত হয় এমন রাজনৈতিক কর্মকান্ড প্রতিহত করা। রাজনৈতিক হিংসা-প্রতিহিংসা বর্জন করা। সহজ শর্তে ঋন প্রদানের মধ্য দিয়ে উদ্যােক্তা হওয়ার জন্য উদ্ভুদ্ধ করা। একজন শ্রমিকের ব্যয় ভার বিবেচনা করে শ্রমিক অসন্তুস কমিয়ে নিয়ে আসা। উৎপাদনশীল বাজার সৃষ্টি করতে ভূমিকা পালন করা। পাট শিল্পের উন্নয়নের জন্য পাটজাত পণ্যের বাজার সৃষ্টি করতে সবাইকে ব্যবহারে বাধ্য করা। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ দেশি পণ্য ব্যবহার পছন্দ করে, তাই গ্রাম উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে, যেমন- কৃষিজাত পণ্যের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করে গ্রামের মানুষের জীবনমান উন্নত করে দেশি পণ্য ব্যবহারে উদ্ভুদ্ধ করা। তাছাড়া, অর্থনৈতিক উন্নয়নে কুটির শিল্পের ভূমিকা অবশ্যম্ভাবী। তাই এই শিল্পে সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে পণ্য উৎপাদন বাড়িয়ে দেশ ও বিদেশের বাজার তৈরী করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখা সম্ভব। সম্পদের সুষ্ট ব্যবহার করতে হবে। দূর্নীতি কমিয়ে আনতে হবে।
প্রতিবছর বাজেটে একটি নিদিষ্ট পরিমাণ অর্থ সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যয় বাবদ বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু বরাবরের মতই সরকারী কর্মচারীদের জন্য অবসর ভাতা সামাজিক সুরক্ষা খাতের বরাদ্দের একটা বড় অংশ দখল করে নিয়েছে। যা দারিদ্র্য বিমোচনে অনেকটা ব্যঘাত ঘটে। এখনও অনেকেই দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করছে। মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন হচ্ছে। অনেকেরই বাসস্থান, বস্ত্র, চিকিৎসা ও শিক্ষা এর যতেষ্ট অভাব রয়েছে। সেইজন্য, সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখা অত্যান্ত জরুরী। বাংলাদেশ সরকারের উচিত প্রতিবছর নুন্যতম কয়েকটি পরিবারকে দারিদ্র্য বিমোচনে আর্থিক সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদান করা। এভাবে কয়েক বছর পর দেখা যাবে দারিদ্র্য বিমোচন অনেকখানি এগিয়ে গেছে। তাহলেই অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্ভব। এখনও অনেকেই অর্থের অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছে না। বিনা চিকিৎসায় কষ্টে জীবন-যাপন করছে নয়তো অকালে ঝরে পড়ছে। তাই সরকারের উচিত সরকারী হাসপাতাল গুলোতে একটা ইউনিট গঠন করা, যাতে অসহায় অসুস্থ রোগীরা সরকারী সহায়তায় চিকিৎসা সেবা পেতে পারে। বিনা চিকিৎসায় যেন কেউ মৃত্যুবরন না করে। এদিকে লক্ষ্য রাখা। এসব গঠনমূলক উন্নয়ন যখন হবে ঠিক তখনই বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হতে দারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে।
তাছাড়া উন্নয়নের অবকাঠামো তৈরীর একটা বড় অংশ বেকার সমস্যা দূরীকরণে সরকারকে ভূমিকা রাখতে হব। দেশে প্রতিবছর ২০ থেকে ২২ লাখ তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে।বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর হিসাব মতে, বাংলাদেশের বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৩১ হাজার বলা হলেও প্রকৃত বেকারের সংখ্যা অনেক বেশি। তাই, উন্নয়নের অগ্রগতি ধরে রাখার জন্য এই খাতের সমস্যা নিরসনে এগিয়ে আসা খুবই প্রয়োজন।
সামাজিক সুরক্ষা উন্নয়নের খাতে বরাদ্দ জিডিপির ৩ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। এটা শুধুই, ' দরিদ্রদের জন্য এবং সরকারী কর্মচারীদের, অন্য কারো জন্য নয়,' তাই, সার্বিক উন্নয়নের জন্য এর যথাযথ ব্যবহার খুবই জরুরী।
২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপির ২৫.৩ শতাংশে পৌঁছার অনুমান করা হয়েছে। চলমান কোভিডের সময় মাত্র এক বছরে ১২.৬ শতাংশের এক অসম্ভব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। কতটা সম্ভব?
মহান জাতীয় সংসদে আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হয়েছে। যা অনেক মোটা অংকের এবং আকাশচুম্বী।
এর জন্য রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ হবে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪৯.৫ শতাংশ আদায় করতে হবে। এই করোনার সময় মাত্র এক বছরে এত বিরাট রাজস্ব আহরণের জন্যে কী আলাদীনের প্রদীপ বা জাদু আছে নাকি। এত বড় আকারের বাজেট বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সরকারকে যেন ঋনের মুখোমুখি না হতে হয়। এবং এর জন্য সাধারণ জনগন ও হতদরিদ্র পরিবারের জন্য জীবনযাপন কঠিন হয়ে যায়। এই বাজেটের জন্য ভোগ্যপণ্যের কর বৃদ্ধির মাধ্যমে মূল্য বাড়ানো হবে। তাতে পণ্য ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যাবে। সাধারণ জনগন ভুগান্তিতে পড়বে। কিন্তু আয় বাড়বে না। ব্যয় ঠিকই বাড়বে। সরকারি কর্মচারীদের বেতন ভাতা সরকার বাড়িয়ে দিবে। কিন্তু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মচারীদের বেতন বাড়াতে সম্মত হবে না। তাই, ১০ শতাংশ সরকারী কর্মচারী ও ১০ শতাংশ ধনী আর ১০ শতাংশ অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল তাদের হয়তোবা সমস্যা হবে না। কিন্তু বাকি ৭০ শতাংশ দূর্ভোগ পোয়াবে।
এখন আন্তর্জাতিক বাজারেও অর্থনৈতিক ধস নেমেছে। মধ্যপ্রাচ্যে তেলের দাম কমে যাওয়ায় শ্রমবাজারে ব্যাঘাত ঘটছে। শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে। বৈদেশিক রেমিট্যান্স কমছে। এছাড়াও আমদানি রপ্তানির ধারা আগের মত নেই। মোটকথা, সবকিছু মিলে একটি ধীরগতি অবস্থান।
তাই, সরকারের উচিত সরকারী ব্যয়ভার কমিয়ে, বাজেট হাতের নাগালে রেখে, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা স্বাভাবিক করার জন্য শ্রমবাজার ও সাধারণ জনগনের মানউন্নয়নে কাজ করা এবং পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। প্রতিটি বরাদ্দকৃত খাতে জবাবদিহি নিচ্ছিত করা। সাধারণ জনগনের জন্য বরাদ্দ সাহায্য ও সহযোগিতা সঠিকভাবে পৌঁছে দেয়া এবং নিশ্চিত করা। বাংলাদেশের অর্থনীতি ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় পরিচালিত। যার অর্থ যে বড় হবে সেই বড় হবে। এই অবস্থান থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। সম্পদের সুষ্ট ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আমদানি রপ্তানি বাড়ানোর জন্য কৌশল অবলম্বন করতে হবে। স্বাস্থ্য খাতের উন্নতির জন্যে তদারকি জোরদার করতে হবে। মেয়াদত্তীর্ন ভোগপণ্যে উৎপাদন বন্ধ করতে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। বিশেষ করে ঔষধ খাত। এন্টিবায়োটিক ও অপ্রয়োজনীয় ঔষধের ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা। যেনতেন রাসায়নিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করতে হবে। আইনের সুষ্ট ব্যবহার নিশ্চিত করা। অপপ্রচার ও হয়রানি বন্ধ করা। ক্ষমতার প্রদর্শন না করা। একটি প্রতিষ্টানের মালিক যেন কর্মচারীদেরকে বিভন্ন প্রকার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে অধিক মুনাফা অর্জন না করতে পারে, সেইদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঘোষ ও দুর্নীতি দমনে সক্রিয় ভুমিকা রাখতে হবে। দুর্নীতিকে না বলা। ভোক্তা
অধিকার নিশ্চিত করা। জ্বালানি খাতের উন্নয়ন ও শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা। এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে প্রতিটি স্তরের জন্যগনের উন্নয়ন করে উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে সমুন্নত রেখে লক্ষ্যে পৌঁছা। বাংলাদেশে যতেষ্ট পরিমাণ সম্পদ আছে। এবং বিরাট জনবল। এই জনগোষ্ঠীকে দক্ষ করে সম্পদে পরিণত করতে হবে। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সম্পদের সুষ্ট ব্যবহার দ্বারা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। তাহলেই সম্ভব একটি উন্নত দেশ গঠন করা।
©somewhere in net ltd.