![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিক্ষক
আসসালামু আলাইকুম!
সম্মানিত দেশবাসী!
আপনাদের সকলের উপর এবং পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের উপর মহান আল্লাহর রহমতের অফুরন্ত বারিধারা বর্ষিত হোক!
দেশের মানুষ আজ দু’ভাগে বিভক্ত। একদল সরকার ও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সরকার সমর্থক এবং অপরদল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সরকার বিরোধী। উভয় পক্ষ প্রতিনিয়ত একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপ এবং আক্রমণাত্মক ভূমিকায় অবতীর্ণ—যা কারো কাম্য নয়। কেননা সবাই জানে দোষারোপ-দোষারোপের জন্ম দেয়, নিন্দা-সমালোচনা-নিন্দা সমালোচনার জন্ম দেয়, কঠোরতা-কঠোরতার জন্ম দেয়, হিংসা-হিংসার জন্ম দেয়, শত্রুতা-শত্রুতার জন্ম দেয়, বিরোধীতা-বিরোধীতার জন্ম দেয়, আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মনোভাব সৃষ্টি করে এবং ক্ষতিসাধন-প্রতিরোধ স্পৃহা জাগ্রত করে। কাজেই বর্তমান এমন অবস্থা চলতে থাকলে দেশ ও জাতি যে ক্রমাগত বিপজ্জনক সমস্যা ও লোমহর্ষক অধঃপতনের অতল গহ্বরের দিকে ধাবিত হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী ও সচেতন মহল দিক নির্দেশনা দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে। এমতাবস্থায় বিবেকের তাড়নায় এবং ধার্মিকতার দাবি পূরণে সার্বিক সমস্যা সমাধানে সুস্পষ্ট, যৌক্তিক ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য উচ্চমান সম্পন্ন দিক নির্দেশনা দেয়ার মাধ্যমে সরকারকে এবং গোটা জাতিকে সহযোগিতা করা অতীব জরুরী মনে করছি—যা সরকার কর্তৃক আমাকে দেয়া খেতাব ‘জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক’ এর পক্ষ থেকে ‘শ্রেষ্ঠ উপহার’ হিসাবে প্রমাণিত হবে বলে আশা করা যায়। অন্যথায় আমি বিবেক ও বিশ্বাসের কাছে আটকা পড়ে যাব।
সুপ্রিয় দেশবাসী
সরকার ও বিরোধী উভয় পক্ষই এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, কারো পক্ষেই পেছনে যাবার কোনোই সুযোগ নেই। কেননা, বর্তমান অবস্থায় কারো পেছনে যাওয়া মানে নিজেদেরকে ধ্বংস করে দেয়ার নামান্তর বলে উভয় পক্ষই মনে করছেন। আর সামনের দিকে আগানোরও শান্তিপূর্ণ কোনো পথ খোলা নেই। উপরন্তু কোনো পক্ষের এগিয়ে যাওয়া মানে অপর পক্ষের দৃষ্টিতে নিজেদেরকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দেয়ার নামান্তর। এমতাবস্থায় উভয় পক্ষকে নিজেদের স্বার্থে একটি সম্মানজনক ‘জিরো’ পয়েন্টে আসতে হবে—যেখানে এসে উভয় পক্ষই পারস্পরিক দুঃখ-বেদনা ভুলে গিয়ে একে অপরের কল্যাণ কামনা করবে এবং প্রতিযোগিতার পরিবেশ ও মনোভাব নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়ার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়বে।
প্রাণপ্রিয় দেশবাসী
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজে ১৪দলীয় জোট সরকার তৎপর রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই সরকার সফল—একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তবে যারা কাজ করে তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি হতেই পারে। কাজেই এমন একটি উদ্যোগ নেয়া দরকার, যাতে করে অতীতের কার্যক্রমের ভুল-ত্রুটিকে সম্মানজনক পন্থায় সংশোধন করে নেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। যেমন স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার মাধ্যমে মরহুম বঙ্গবন্ধু নিজের মর্যাদাকে অনেক উর্দ্ধে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। অনুরূপভাবে বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে অতীতের ভুল-ভ্রান্তির জন্য জাতির কাছে সরলভাবে ক্ষমা চেয়ে একটি ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। এতে করে ওই সময়ের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আশাতীত ফলও পেয়েছিলেন। তাই উন্নতি ও অগ্রগতির লক্ষ্যে বর্তমান পারস্পরিক দোষারোপের অবস্থাকে সার্বিকভাবে বদলে দেয়ার প্রয়োজনে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট, সরকার বিরোধী ২০ দলীয় জোট ও অন্যান্য দল, সকল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি সহ গোটা জাতির প্রতিনিধিত্বকারীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি ‘জাতীয় দায়মুক্তি দিবস’ পালন করা অতীব প্রয়োজন—যে দিবস পালনের মাধ্যমে গোটা জাতি একটি সম্মানজনক ‘জিরো’ পয়েন্টে পৌঁছতে পারবে। আর এর পরই শুরু হবে ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক সমস্যা সমূহ সমাধান করে অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাবার পালা।
সম্মানিত দেশপ্রেমিক দেশবাসী
স্বাধীনতা অর্জনে মরহুম বঙ্গবন্ধুর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রদর্শন দেশপ্রেমিক প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য। গোটা জাতির অন্তরে এ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বদ্ধমূল করার জন্য অনেকগুলো ইতিবাচক কর্মসূচী গ্রহণ করার আছে বলে আমি মনে করি। সুযোগ দেয়া হলে আমি সেগুলো তুলে ধরতে পারি। কেননা, ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করা ছাড়া জোর করে মানুষের মন জয় ও ভালোবাসা আদায় করা যায় না। মরহুম বঙ্গবন্ধুর অবদানকে স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু পরিবারকে বাংলাদেশের সংবিধানে একটি স্থায়ী মর্যাদা দেয়া যেতে পারে—যার উদাহরণ যুক্তরাজ্য, জাপান, থাইল্যাণ্ড, নেপালসহ বিশ্বে অগ্রসর-অনগ্রসর অনেক রাষ্ট্রে রয়েছে। উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের চর্চা থাকা সত্ত্বেও ঐসব দেশে বিশেষ বিশেষ পরিবারের বিশেষ বিশেষ কারণে বিশেষ স্থায়ী মর্যাদা রয়েছে। অপরদিকে স্বাধীনতা অর্জন, রক্ষা ও উন্নয়নের জন্য যারা শহীদ, পঙ্গু ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদেরও উপযুক্ত মূল্যায়ন হওয়া উচিত। প্রস্তাবিত ‘জাতীয় দায়মুক্তি দিবস’ পালন এসব ক্ষেত্রে ইতিবাচক ও শান্তিপূর্ণ সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।
বাংলাদেশের ৩বারের প্রধানমন্ত্রী ও ২০দলীয় জোট নেত্রী মাননীয় বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অনেক ক্ষেত্রে যথেষ্ট সফলতা রয়েছে। যারা কাজ করে তাদেরই ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকে। আর যারা কাজ করে না, তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি প্রকাশের সুযোগ কোথায়? তাই অতীতের গ্লানি মুক্ত হয়ে স্বচ্ছতার সাথে সামনে অগ্রসর হতে হলে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে প্রস্তাবিত ‘জাতীয় দায়মুক্তি দিবস’-এর কার্যক্রমে সক্রীয় অংশগ্রহণ সকলের স্বার্থেই অতীব প্রয়োজন। তাই ২০দলীয় জোট, ১৪দলীয় জোট এবং দেশের সকল রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে উক্ত দিবস পালনে এগিয়ে আসা সময়ের অপরিহার্য দাবি।
বিভিন্ন এন,জি,ও সহ দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত সকলেরই ব্যক্তিগতভাবে বা দলীয়ভাবে কাজ করতে গিয়ে অনেক সফলতা রয়েছে—যেসবের জন্য প্রশংসা ও পুরস্কার পাবার যোগ্য। তবে কাজ করতে গিয়ে হয়ে যাওয়া ভুল-ভ্রান্তি থেকে মুক্ত হয়ে সামনে এগিয়ে চলার প্রয়োজনে উক্ত ‘জাতীয় দায়মুক্তি দিবস’ উদযাপন করে অগ্রগতির শপথ গ্রহণ একান্ত আবশ্যক মনে হচ্ছে। কেননা, দেশে পরস্পরের প্রতি দোষারোপের পরিবেশের জন্য আমরা সবাই কমবেশি দায়ী।
দেশের সকল আলেম-উলামা, পীর-মাশায়েখ, ইমাম-মুয়াজ্জিন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মের গুরুজন এবং সর্বস্তরের সচেতন মহল ও বুদ্ধিজীবীগণ জাতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন। এতে জাতির অনেক কল্যাণ হচ্ছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তথাপি জাতি গঠনে পূর্ণ সফল হতে মহান আল্লাহর সাহায্য লাভের চেষ্টা করা একান্ত প্রয়োজন। ‘জাতীয় দায়মুক্তি দিবস’-এর কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে এক্ষেত্রে যথেষ্ট দূর এগিয়ে যাবার যুক্তিসংগত সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে জনগণকে তাওবা-ইস্তেগফার ও বাইয়াতের এ অনুষ্ঠানের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা একান্ত আবশ্যক। মরহুম শেখ মুহাম্মাদ উল্লাহ হাফেজ্জী-হুজুর (রহ) তাওবার রাজনীতি শুরুর মাধ্যমে এ বিষয়ের প্রতিই মূলতঃ গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
প্রিয় দেশপ্রেমিক দেশবাসী
অতীতের সকল প্রকার গ্লানি মুক্ত হয়ে ব্যক্তিগত, দলীয় ও সামষ্টিক সমস্যা সমূহের সমাধান করে উন্নতি-অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাবার একটি শান্তিপূর্ণ, গ্রহণযোগ্য ও সম্মানজনক পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একটি ‘জিরো’ পয়েন্টে পৌঁছার লক্ষ্যে গোটা জাতিকে ব্যক্তিগতভাবে ও দলীয়ভাবে একটি ‘জাতীয় দায়মুক্তি দিবস’ বা ‘জাতীয় শপথ দিবস’ বা অনুরূপ কোনো দিবস পালনের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
জাতীয় দায়মুক্তি দিবসের করণীয়
১. গোটা জাতির প্রতিনিধিত্বশীল ও জাতীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে যথাসম্ভব সর্বোচ্চ সংখ্যক জনগণকে নিয়ে (প্রথমে কেন্দ্রীয়ভাবে ও পরে স্থানীয়ভাবে) সম্মিলিত প্রার্থনা সভায় যোগদান করা।
(এ প্রার্থনানুষ্ঠানে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে।)
ক) ব্যক্তিগতভাবে ও দলীয় বা সামষ্টিকভাবে স্বেচ্ছায়-অনিচ্ছায় ছোট-বড় সকল ভুল-ভ্রান্তির কথা যথাসম্ভব স্মরণ করে কায়মনোবাক্যে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবো।
খ) ভবিষ্যতে ব্যক্তিগতভাবে বা দলীয়ভাবে বা সামষ্টিকভাবে কোনো অন্যায়-দুর্নীতি করবোনা বলে শপথ গ্রহণ করবো।
গ) ভবিষ্যতে ব্যক্তিগতভাবে বা দলীয়ভাবে অন্য কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী, দল, সম্প্রদায় বা জাতিকে কোনোভাবেই কষ্ট দেবনা বা কারো কোনো প্রকার ক্ষতি করবো না বলে অঙ্গীকার করবো।
ঘ) অতীতে বিভিন্ন ব্যক্তি বা দলকে নানাভাবে যেসব দুঃখ-কষ্ট দিয়েছি, সেগুলোর কারণে ক্ষমা চাইবো এবং যথাসম্ভব ক্ষতিপূরণে তৎপর হবো বলে প্রতিজ্ঞা করবো।
ঙ) ব্যক্তিগতভাবে বা দলীয়ভাবে অন্যান্য ব্যক্তি ও দলের মন্দ আচরণকে (সংশোধনের উদ্দেশ্যে) ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবো এবং অন্যান্য ব্যক্তি ও দলের কল্যাণে যথাসম্ভব ভূমিকা রাখবো বলে পণ করবো।
চ) নিজেকে ও নিজের দলকে সংশোধন এবং অন্য ব্যক্তি ও দলের ভালো দিকগুলোর প্রশংসা করার মাধ্যমে ভালো কাজে উৎসাহ দান করবো এবং মন্দ কাজের জন্য দোষারোপ ও গাল-মন্দ করার পরিবর্তে গঠনমূলক ও কল্যাণধর্মী বক্তব্য ও আচরণ দ্বারা সংশোধন নীতি গ্রহণ করবো বলে ওয়াদাবদ্ধ হবো।
২. যারা ব্যক্তিগতভাবে বা দলীয়ভাবে কৃত ছোট-বড় অপরাধসমূহ (বেঁধে দেয়া যৌক্তিক সময়ের ভিতরে) সংশোধন করার প্রমাণ দিবে, তাদেরকে অতীতের কোনো বিষয়ের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হবে না মর্মে প্রয়োজনীয় মজবুত আইন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। (অনেকটা ট্রুথ কমিশনের ন্যায়)
৩. উপরোক্ত বিষয়গুলো বাস্তবায়নে Follow up programme বা ধারাবাহিক মূল্যায়ন করার নিমিত্তে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সবাই ঐক্যবদ্ধ হবে।
©somewhere in net ltd.