নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোল পৃথিবী তোমার জন্য ভাল কিছু নিয়ে অপেক্ষা করছে।তবে ঠিক ততটুকুই তোমাকে সে দিবে যতটুকু তুমি নিজেকে গড়েছ।

পথিক৬৫

আমি খুব সাধারন একজন মানুষ,যে কিনা পৃথিবীর মানুষ গুলোকে হাসতে দেখলেই হাসে,আর কারো কান্না সহ্য করতে পারেন না। তবে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে ভুল করেন না।

পথিক৬৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ+ না পাওয়া ছেলের বাস্তব সফলতার গল্প।। ( আজ যারা এ+ পাও নাই তাদের জন্য বাস্তব শিক্ষার গল্প)।

২৩ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৯



এই লেখাটি আজ ২০১৭ সালের এইচএসসি এর ফলাফল নিজের মত করে নিতে গিয়ে, ”এ+” নামক সোনার হরিন এর ছোটা পাও নাই তাদের জন্যই মূলত।আজ ফলাফলের দিন।সেই রাত থেকে কারো চোখে ঘুম নেই।সকাল হতেই বারবার দেয়ালের কিংবা হাতের ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছিলে আর ভাবছিলে কখন সেই ক্ষন আসে।
দেখতে দেখতে সময়টাও চলে এলো।নিজের মোবাইল কিংবা অন্য যে কোন মাধ্যমে রেজাল্ট এর সন্ধান করতে লাগলে।কি অবাক করার বিষয় দেখ এক সেকেন্ড এর মাঝে যে বন্ধুর সাথে একই টংগে বসে আড্ডা দিচ্ছিলে ক্ষনিকের মাঝেই হততো তোমার আর সেই বন্ধুর আর তোমার মাঝে একটা বিশাল পরিবর্তিত মূখ সামনে এলো।

সে “দোস্ত আমি এ+ পেয়েছি,দেখ দেখ তোরটা তারাতারি দেখ” বলে সে চিৎকার দিচ্ছিল।যে বন্ধুর চিৎকার তুমি শুনে নিজেও চিৎকার দিতেই বেশি ভালবাস,সেই বন্ধুর চিৎকার যেন তোমার কাছে গরল এর মত লাগছিল।কারন তুমি তোমার রেজাল্ট আগেই দেখে ফেলেছ।আর তুমি “এ+” পাও নাই।

তোমার কাছে মনে হচ্ছিল পায়ের নিচের মাটি যদি ফাকা হয়ে যেত সেখানে ডুকে যেতে।সাথে ভাবছিলে বাসায় কি জানাবে,কিভাবে জানাবে ইত্যাদি।সেই সাথে একটু পর পরই আত্মীয়দের থেকে ব ফোন তো আছেই।একটি মাত্র রেজাল্ট এর জন্য যে পরিবার তোমাকে সব থেকে বেশি ভালবাসে সেই পরিবারই তোমার জন্য যেন আজ একটি বিরক্তির কারন।
কারন তাদের নানান প্রশ্ন আর তোমাকে অবহেলা তো তুমি মেনে নিতেই পারছ না।
এভাবে আজ আর কাল গেলে শুধু হবে ভার্সিটির পরিক্ষাতে তোমার ৫০ মার্কস থেকে কতটা কমে গিয়েছে তার হিসেব।এবাবে আরো কত যন্ত্রনা।জীবনটাই যেন বৃথ ভেবে নিজেকে শেষ করে দেয়ার মত চিন্তাও আসছে তোমার মাঝে।

এমন একটা সময়ই পার করেছিল আমার বন্ধু তারেক।প্রথম সময়টা ছিল ২০১১ সাল।এসএসসি এর রেজাল্ট দিবে।তারিখটা পুরো মনে নেই।ছাত্র হিসেবে সে মাঝারী টাইপের।পরিক্ষার গনিত ছাড়া সব কিছুতেই মাঝারী লেভেলের মার্কস পেত।ক্লাশ নাইনে থাকতে সে গনিতে ফেলই করে বসল।
সেই গনিতের দিক গুলো পাড়ি দিতে তাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। এসএসসি এর টেস্ট পরিক্ষায় কিভাবে যেন এ+ পেয়ে গেল।এটাকে আজব বলা যাবে না কারন সে তখন নিজের হাল গোছাতে অনেক চেষ্টা কিন্তু ঠিক করেছিল। সেই বছর মোট ৪৬ জন এ+ পেয়েছিল সেই প্রতিষ্ঠান থেকে।
তারেকের বাবা একজন স্কুল মাস্টার।ছেলের এই ভাল ফলাফলে বেশ তৃপ্ত ছিল সে আর সাথে পরিবারও।
যে ছেলে টেস্ট পরিক্ষায় এ+ পেয়ে যায় সে তো অবশ্যই বোর্ড এ গেলে এ+ পাবেই।সেই এ+ এর সুভাষ টা যেন তাদের নাকের কাছে মৌ মৌ করছিল। এর এই অধিক প্রত্যাশাই হয়েছিল তারেকের জন্য অনেক বেশি চাপ।

যথাসময়ে পরিক্ষার সময় এলো।সেই বছর পরিক্ষাতে প্রথম বারের মত সৃজনশীল পরিক্ষা পদ্ধতি এসেছিল। বাঙলা এবং ইতিহাস।পরীক্ষা তো ভালই ছিল।কারন ছাত্র যদি বুঝত তার কি ভুল হচ্ছে তবে তো আর সে সেই ভুল করত না।

সময় যেতে যেতে তোমাদের আজকের দিনের মতই তারও পরীক্ষার ফলাফলের দিন চলে এলো।
আমি তখন আমাদের বাড়ীতে।আর তারেক তার পরিবার এর সাথে বরিশালে। তারেকের বাবা অবশ্য তখন দেশের বাহিরে গিয়েছিল কোন কাজে। সকাল গড়িয়ে দুপুর।ফলাফল আসে তো আসে না।মনের মানে হাজারও প্রত্যাশা আর আগামীর স্বপ্ন।দুপুর দুইটার দিকে তারেক গেল একটি সাইবার ক্যাফে।
ফলাফল তখনও আসে নাই ইন্টারনেটে।তখন ফোন দিল আর প্রতিষ্ঠানে।জানা গেল তার রেজাল্ট ৪.৮১। তার মানে সেই স্বপ্নের এ+ থেকে একটু দূরে।অনেকে টা নিজেকে সামলে নিয়ে বাসায় এসে হুমড়ি খেয়ে পড়ল সে।শুনতে পেল তারই খালাত ভাই যে কিনা তার সাথেই পরিক্ষা দিয়েছিল সে ঠিকই “এ+” পেয়ে গিয়েছে।কষ্টটা যেন আরো বেড়ে গেল।অনেক কেঁদেছিল তারেক সেদিন।আমি কাছ থেকেই দেখেছি।কারন যখন ওর আর কিছু ভাল লাগছিলনা আমাকে ফোন করিয়েছিল ওর আম্মুকে দিয়ে।আমি যেতে যেতে বিকেল অনেকটা।সে রাত ওর সাথেই ছিলাম।
কান্নায় চোখ গুলো ফুলে উঠেছিল।তার কান্না দেখে তখন সবাই এটা বলতে লাগল যে, যে রেজাল্ট হয়েছে সেটা একজন আর্টস বিভাগের ছাত্র হিসেবে অনেক ভাল ফলাফল। ইত্যাদি।
তাতে কি আর মন মানে।তারেকের সব থেকে বেশি কষ্টের কারন ছিল তার বাবা। সে কিভাবে জানাবে সে “এ+” পায় নাই।যে বাবা তার সন্তানকে নিয়ে গর্বে বুক ফুলিয়ে কথা বলে,সেই বাবার মলিন মুখটা কিভাবে দেখবে সেটা ভেবেই যেন যে আরো বেশি ভেঙ্গে পড়েছিল।

যাইহোক,সময়ের সাথে স্রোত যেমন করে তলিয়ে যায় এই এ+ এর পাওয়া আর না পাওয়া নিয়ে তার কষ্ট টাও হারিয়ে গিয়েছিল।আর নতুন করে সামনের দিকে আগাতে চাইল।
ও হা! যে কারনে সে এ+ পায় নাই তার কারন ছিল সে ইতিহাসে পেয়েছিল বি গ্রেড,বাংলাতে এ- আর বোধায় ইংলিশে এ পেয়েছিল।

এবার আবার নতুন কোথাও ভর্তির পালা এলো।চারদিকে যখন শুধু “এ+” এর হাক ডাক সেই সময়ে কি আর এভাবে রেজাল্ট দিয়ে ভাল কোথাও ভর্তি হওয়া যায়(?) আর তার বাবা যখন জানতে পারল তারেক “এ+” পায় নাই তখন যতটা কষ্ট পেয়েছে তার থেকে বেশি রেগে গিয়ে জানিয়েই দিল সে তার ছেলেকে তার ইচ্ছে মত ভর্তি করাবে।তারেকের কোন ইচ্ছেই কাজে আসবে না।কিন্তু তারেক তার বাবার ইচ্ছের কথা জানত এবং সেখানে ভর্তি না হওয়ার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে তার বাবা দেশে আসার আগেই তার আম্মুকে অনেক বুঝিয়ে টাকা নিয়ে চলে এলো ঢাকাতে।ঢাকা সকালে নেমেই ভর্তি পরিক্ষার হলে ডুকল।সাথে কিন্তু আমিও আছি।কারন আমরা দুজন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমরা যেখানেই যাই একই সাথে যাব।তারেকের জন্য আমার পরিবারকে বুঝাতেও অবশ্য আমার কাঠখড় কম যায় নাই।কারন আমিও আসলে ওকে ছাড়া একা হয়ে যেতাম।

যাইহোক,ভর্তিপরিক্ষার রেজাল্ট দেয়া অব্দি তারেকের আব্বু বাংলাদেশে নেমেছেন।ভর্তি পরিক্ষার রেজাল্ট আমাদের কাছে এলো।সিরিয়ালে আমি ১০ আর তারেক ৯ নং।কি মজার বিষয় তাই না? দুই বন্ধু একসাথে পাশাপাশি ভর্তি হয়ে গেলেম বাংলাদেশের একটা সেরা বিদ্যাপীঠে। আরো মজার বিষয় হল আমার দশম শ্রেনীতেও রোল ছিল ১০ আর তারেকের ২৮।তখন অবশ্য আমি সায়েন্স এ ছিলাম।আর এবার আর্ট এটাই বেছে নিলাম।

২০১১ থেকে ২০১৩ আমরা এক রুমে,এক প্রতিষ্ঠানে বলা যেতে পারে আমরা একটা জোড়া ছিলাম।
২০১৩ এর ফেব্রুয়ারি এর ১৩ তারিখ। তারেক আর অন্য আরেক তারেক দুই জন মিলে কোথাও যাচ্ছিল।যতটুকু মনে পরে ওরা মেডিকেলে যাচ্ছিল আমাদের আরেকটা ফ্রেন্ড সেখানে ভর্তি ছিল।
সেদিন ঢাকাতেও চলছিল পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড়। বিষয়টা ছিল রাজনৈতিক ধরপাকড়।
আমাদের দুই তারেক শুরুতে সরকার দলীয় লোকজন এবং এরপর পুলিশের হাতে।
তারা নিজের সাক্ষ্যি সাবধ যা দেখাচ্ছিল তা আর কোন কাজে আসল না।শুরুতে ২টি মামলায় ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড আর এরপর জেল হাজত।নিরপরাধ ছিল তারা।তাদের মানে দেয়া মামলার স্থানে তারা জীবনেও কোন দিন গিয়েছে বলে মনে পরে না।আর যে কাজের মামলা দিয়েছিল সে কাজ তো করার প্রশ্নই আসে না।

যাইহোক, প্রায় ৬ মাস জেল হাজতে কাটাতে হয়েছিল তারেক এবং তারেককে। আর এরই মাঝে ছিল আমাদের এইচএসসি পরিক্ষা।মে মাসে ছিল পরিক্ষা।আমরা বাহির থেকে তারেককে বই পুস্তক সাপ্লাই দিতাম কোর্ট এর অনুমতি নিয়ে।আর সময় মত পরীক্ষার ও অনুমতি পেয়ে গেলাম।
এদিকে তারেকের বাবা মা ছেলের জন্য যেমন পাগল প্রায়,তেমনি ছেলে পরিক্ষা দিতে পারবে কিনা সেটা ভেবে আরো বেশি অসুস্থ।জেলে থেকে প্রস্তুতি নিতেই,জেলের ভেতরের অস্থায়ী কেন্দ্রে পরিক্ষায় অংশ নিল তারেক। পরিক্ষার কিছুদিন পর ওর জামিন হয়ে গেল। এবং সে বাহিরে চলে এলো।তার বছর খানে পর অবশ্য সে নিরপরাধ সাব্যস্থ হয়েছিল কোর্টে।

এবার অপেক্ষা তার জেলে থেকে দেয়া পরিক্ষার রেজাল্টের। তারেক জেলে থাকতে আমি কয়েকবার গিয়েছিলাম।পরিক্ষার্থী হওয়ায় তাকে রাখা হয়েছিল কাশিমপুর-২ নং জেলে।

১৯ জুলাই ২০১৩ আমাদের পরিক্ষার রেজাল্ট দিয়েছিল।তারেকের জন্য আমাদের মতই সব কিছুই যেন সাধারন ছিল।আমি তখন আমাদের দেশের বাড়িতে আর তারেক ঢাকা। দুপুর গড়িয়ে বিকেল এসে গেছে সবাই যখন তাদের ফলাফল পেয়ে গেল তারেক তখনও তার ফলাফলের ক্ষেত্রে কিছু পেল না। আমি এর মাঝে আবারও ওর সাথে বিশ্বাসঘতকতার মত “এ+” পেয়ে গেলাম।
২০১১ তে আমি ওর পাশে ছিলাম।কিন্তু ২০১৩ তে সেটা থাকার সুযোগ নেই।কারন আমিও অনেক দূরে।আর ওর রেজাল্ট এর কি সমস্যা ছিল সেটাও তখন অব্দি বুঝা যাচ্ছিল না। পরে জানা গেল জেলে থেকে পরিক্ষা দেয়ার কারনে সাইনপেপারে তার নামে মূল কেন্দ্রে একটি “অনুপস্থিত” এবং জেলের কেন্দ্র থেকে আর একটা সাধারন সাইন পেপার জমা হয়েছ।
একছাত্রে নামে এভাবে ২টি সাইন পেপার থাকায় রেজাল্ট “স্থগিত” করে রাখা হয়েছে।
যেটা করা দরকার ছিল তা হল,জেলে যাকে পরিক্ষা নিতে পাঠানো হত সেই টিচার মূল কেন্দ্রে জানিয়ে দিবেন যে এই ছাত্র এভাবে জেলে হেকে অংশ নিবেন পরিক্ষায়। কিন্তু তিনি সেটা করেন নাই।

যাইহোক,এবার তারেক আগের থেকে মানসিক ভাবে অনেক ষ্ট্রং।সে নিজেই তার পরিবারকে বুঝ দিচ্ছেন।এবার রেজাল্ট উদ্ধারে শুরু হল তারেকের নতুন যূদ্ধ।
প্রতিদিন বোর্ডে যাওয়া আর আসা। সেই সকাল ৯ টায় যেত আর বিকেল ৪ টায় শুন্য হাতে ফিরে আসত। এভাবে ১ মাস পর জানা গেল তার রেজাল্ট আর হবে না। তাকে আবারও পরিক্ষা দিতে হবে।এবার তারেকের পরিবারকে মানানো তো দায় হয়ে গেল।আর এদিকে তারেক শুরু করল আরো শক্ত ভাবে মোকাবেলা।
এখনও সে বোর্ডে যায় প্রতিদিন।আর এভাবেই আরো ৩ মাস এই টেবিল থেকে অন্য টেবিল করতে করে করে কেটে গেল। মোট ৪ মাস প্রায় মাঝ থেকে উদায়।এবার একটা আশার আলো।
তাকে জানানো হল “রেজাল্ট হবে,অমুক দিন এসো”। এই আশার মাঝে ভরসা করেই সে আবার নতুন আশা দেখতে পেল।

নির্ধারিত দিন খুব সকালে বোর্ডে চলে গেল। ২ টার পর তাকে যেতে বলা হল।২ টায় গিয়ে সে জানালা দিয়ে দেখতে পাচ্ছে তার রেজাল্ট মার্কশীট সাইন হচ্ছে।নিজের মাঝে অনেক আনন্দ থাকার কথা যখন তখন আবার সাধারন সবার মতই কি রেজাল্ট হবে এটা ভেবে ভেবে নাজেহাল।

বোর্ডের এইচএসসি বিভাগের প্রধান বের হয়ে এসে বলল “অভিনন্দন তোমাকে,তুমি এ+ পেয়েছ”। তারেকের কান যেন গরম হয়ে যাচ্ছিল।আনন্দটা করবে করবে করে নাই তবে তার জন্য আরো একটু বেশি আনন্দ অপেক্ষা করছিল।মার্কশীট টা হাতে পেয়ে দেখল সে সব গুলোতে এ+ পেয়েছে।যার মানে দাঁড়ায় সে গোল্ডেন এ+ পেয়েছে।

এবার সবার আগের ফোন টা তার আব্বুকে দিল। কথা বলতে পারছিল না।কান্নার রোল পরে যাচ্ছিল।এরপর আমাকে ফোন দিয়েও কাদতেঁই ছিল।

একটা কথা আছে না যে,”যার যত বড় সার্টিফিকেট তার তত বড় বোঝা”।তারেকের জন্যও শুরু হল সেই দিন।রেজাল্ট পেতে পেতে ভর্তির জন্য আর কোন ভার্সিটির আবেদন টাইম থাকল না।তবে “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়” বার বার তাদের ভর্তি আবেদন এর টাইম বাড়ানোর কারনে সেখানে একটা সুযোগ হয়ে উঠেছিল।একটা বিভাগ থেকে ফর্ম তুলল তারেক।ততদিনে আমি ২য় বারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি কারন আমার কোথাও চান্স হল না।আসলে আমার ঢাকার বাহিরে কোথাও ইচ্ছে ছিল না।তাই আমি ঢাকা আর জগন্নাথ ছাড়া আর কোন ভার্সিটির ফর্ম তুলি নাই।যাই হোক,লিখিত পরিক্ষাতে তারেক টিকে গেলেও জাহাঙ্গীর নগর এর ভাইভাতে সে ওয়েটিং লিস্টে থেকে গেল।আর তার জন্য কোন স্থান হল না সেই ক্যাম্পাসে।

এর মাঝে নিজের মত করে তারেক ২য় বারের জন্য পড়াশুনা শুরু করল।হঠাৎ একটি স্কলারশিপ এর আবেদন এর খবর পেল ইউরোপের একটি দেশে।আবেদন করল।আমাকে বলেছিল তবে আমি গুরুত্ব দেই নাই।প্রাথমিক বাছাই এবং চুড়ান্ত বাছাই এর সব পর্যায়গুলো তারেক পাড় করে,১৯ শে সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সকালে আমি গিয়েছিলাম ২য় বারের মত ঢাকা ভার্সিটির ভর্তি পরিক্ষা দিতে তারেক “ফুল ফান্ডেড সরকারী স্কালারশীপ” নিয়ে পাড়ি দিল ইউরোপে।বিশ্ব সরিতে প্রথম দিকের স্থানে থাকার একটি ভার্সিটিতে অনার্স করছে তার সব থেকে প্রিয় বিষয়ে।আর সেখানে যে এখন ডিপার্ট্মেন্টে ফাস্ট।
সাথে আল্লাহর শুকরিয়াতে নিজেকে তৈরির জন্য চালিয়ে যাচ্ছে সব যুদ্ধ।নিজেকে এবং দেশকে উপস্থাপন করছেন দেশে দেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনফেরান্স সহ নানা প্রোগামে।



অনেক বড় গল্প টা শুনালাম আজ তোমাদের যারা এই পরিক্ষার রেজাল্ট পেয়ে “আমাকে দিয়ে আর কিছু হবে না” “আমি কিছু পারি না” টাইপের চিন্তা করছ তাদের জন্য।এটা কোন গল্প না।এটা বাস্তব থেকে নেয়া।আর হাজার বছর আগের কোন গল্প ও না।এটা মাত্র ৪/৫ বছর আগের সময়ের গল্প।এই গল্পের শেষে আবার নতুন করে কোন উপদেশে বানী দেয়াকে আমি শ্রেয় মনে করি না।শুধু এটাই বলছি,নিজেকে প্রশ্ন কর যে তুমি কি জান আর তোমার এ+ পাওয়া বন্ধু কি জানে।তোমার জানার অপূর্ন স্থান গুলোকে পূর্ন করতে লেগে যাও।
নিজেকে সবার আগে জানানোর পাল্লায় রাখবে রেজাল্ট এর পাল্লায় না।তাহলে রেজাল্ট তোমার পাল্লায় চলে আসবে।কেউ তোমাকে নিয়ে উপহাস করলে,মুচকি একটা হাসি দিয়ে তাকে বিদায় দিয়ে দাও।তোমার আগামীর জন্য উঠে দাঁড়ানোই একদিন এই উপহাসের জবাব দিবে।।ধন্যবাদ।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.