নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোল পৃথিবী তোমার জন্য ভাল কিছু নিয়ে অপেক্ষা করছে।তবে ঠিক ততটুকুই তোমাকে সে দিবে যতটুকু তুমি নিজেকে গড়েছ।

পথিক৬৫

আমি খুব সাধারন একজন মানুষ,যে কিনা পৃথিবীর মানুষ গুলোকে হাসতে দেখলেই হাসে,আর কারো কান্না সহ্য করতে পারেন না। তবে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে ভুল করেন না।

পথিক৬৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

"বিলেতে এক টুকরো বাংলাদেশের বিজয় আনন্দ"

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৬:২১

গতকাল ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের ৪৬তম জন্মদিন। দেশ থেকে বিলেতে থাকার সময়টা ক্রমশই বেড়ে গিয়ে আজ সেটা প্রায় সাড়ে তিন বছরে দাড়িয়েছে।
ওয়ারশতে বাংলাদেশী কমিউনিটির একাংশঃ

দেশের প্রতি মমত্ববোধ আর ভালবাসা প্রকাশ করার মত খুব একটা সুযোগ আসে নাই কখনো। যদিও ব্যাক্তি পর্যায় থেকে দেশকে সব অবস্থানেই তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি। তার্কি থেকে পোল্যান্ড এসেছি সে আজ প্রায় আড়াই মাস।

মনে করেছিলাম তার্কিতে আমি যেখানে থাকি সেখান থেকে যেহেতু বাংলাদেশের মঞ্চটা (এম্বাসী) বেশ দূরে আর তেমন ভাবে দেশের কোন প্রোগ্রামেও অংশ নেয়া হয় না, এবার ওয়ারশতে সেটা নিশ্চয়ই হবে। কারন, এখানেরই যে রয়েছে আমাদের দেশকে উপস্থাপনের সেই রংগিন মঞ্চখানা।

অনেকটা আমার সেই মনে করাটা মিথ্যেই হয়ে যাচ্ছিল নিজের ব্যস্ততা আর হাড় কাপানো শীতে বাহিরে যাওয়া থেকে কম্বলে মুখ লুকানোর ইচ্ছেটার কারনে। বলা যেতে পারে এই দুই বা আড়াই মাসের সময়টাতে ২/৩ জন বাঙ্গালীর সাথে পথে প্রান্তরে দেখা হওয়া ছাড়া কারো সাথে দেখাই হয় নাই। এর মাঝেই ১৬ ডিসেম্বর এর দিন টি চলে আসল। এম্বাসী থেকে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার একখানা দাওয়াত পত্র পেলাম। বিলেতের মাঝে এই একটি ছোট বাংলাদেশ দেখার সুযোগটা হারাতে চাই নাই। যাব বলেই পরিকল্পনা পাক্কা।

সকালে খুব ভোরেই উঠলাম। নিজের প্রস্তুতি সেরে বের হয়ে গেলাম কিছু বাংলাভাষী, যারা কিনা আমার প্রানের উচ্ছাস বুঝেন, আমাকে বুঝেন আর আমার সাহিত্য আর সংস্কৃতি বুঝেন, সেই মানুষদের সাথে একবার এর জন্য মিলিত হওয়ার উদ্দ্যেশে। ছোট বেলায় বিজয় দিবসের র‍্যালিতে অংশ নেয়া কিংবা স্মৃতিসৌধে যাওয়ার মত সেই উচ্ছাসের মতই একটা দিক বেশ ভালবাবেই কাজ করছিল প্রানে। প্রান খুলে কিছু প্রিয় স্বদেশী মানুষের সাথে মিলিত হওয়ার আনন্দ বোধটাই এই উপলব্ধির সঞ্চায়ক।

বেশ অনেকটা দূর আমাদের এই ছোট বাংলাদেশ। নাম বাংলাদেশ হাউজ। সামনে তিউনেশিয়া আর শ্রীলংকা পাশে একটু এগোলেই আফগানিস্তান সহ অনেক দেশের মঞ্চ এখানে। শুরুতে কুশল বিনিময় এরপর কুয়াশা মাখা ওয়ারশর আকাশে "আমার সোনার বাংলা" গানের সুরে সুরে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকার উত্তোলন। দেশ প্রধানদের বানী পাঠ নিয়েই অনুষ্ঠান এগিয়ে গেছে।
প্রথম প্রহরে পতাকা উত্তোলনঃ


বাংলাদেশীদের মাঝ থেকে কিছু বলার জন্য ডাক পাওয়া গেল মঞ্চে। "আমি তো ভাই এখানেই মুসাফির। সামান্য কিছুদিন এর জন্য এসেছি আর হঠাৎ করেই আবার চলে যাব। কি বা বলার থাকতে পারে আমার জন্য" এটা মনে মনে ভাবতে ভাবতে গিয়ে দাঁড়িয়ে পরলাম সেই মঞ্চে। নজরুল এর সেই কথাটাও ভাব মনে পরে যাচ্ছিল, " আমাদের উপদেশ কেউ মানে না- বেদীতে না বসলে । আমাদের অভিনয় কেউ দেখে না- রঙ্গমঞ্চে না চড়লে । আমাদের বক্তৃতা কেউ শোনে না- কাষ্ঠমঞ্চে না দাঁড়ালে"। দাঁড়িয়েও গেলাম। এলোমেলো বেশ গরম বক্তব্য। বুঝতে পারছেন মঞ্চ পেলে যে আর ছাড়তে ইচ্ছে করে না।

কাষ্ঠমঞ্চ বড়ই চৌম্বক। কাছেই টানেঃ

হা হা হা, করে হাসছেন তাই না? খুব বেশী নয়। বিলেতের মাটিতে আমরা যেখানেই থাকি না কেন ব্যাক্তি একটি বাংলাদেশ। আমি ১৬ কোটি মানুষ আর তাদের প্রতিনিধি। সুযোগের সব ধরনের ব্যবহার করে দেশেকে উপস্থাপনাই হোক আজকের বিজয় দিবসের সংকল্প। এটাই ছিল আমার কথার সারমর্ম। বুঝতেই পারছেন বলিবার কালে আমরা কত উচ্চ বাক্যই না আমরা বলিয়া ফেলি। কারন ইহাই যে সব থেকে সহজ কর্ম।

আড্ডাপনা যে বাঙ্গালীয়ানার সাথেই যায়ঃ


আমার পরে কথা বলতে আসলেন ম্যাডাম। আমাদের এম্বাসেডর স্যারের সম্মানিতা স্ত্রী। ভদ্র মহিলা ঢাকা তিতুমির কলেজের শিক্ষিকা। বছরের ৪/৬ মাস তিনি ছুটি নিয়ে স্বামী সঙ্গ দিতে এখানে আসেন। দেশের বাড়ি পঞ্চগড়। খুব স্পষ্টভাষী আর বেশ ভাল চিন্তবিধ মানুষ তিনি। ছোট করে কিছু কথা বলে গেলেন।

স্যার এবার আমার কথা বলার সময়ের একটা সুত্রকে দিয়েই কথা শুরু করলেন। বেশ এটার উপরেই তিনি গোছালো কিছু কথা শুনিয়েছেন।
এম্বাসেডর স্যারঃ


আনুষ্ঠানিক পর্বের শেষাংশে ম্যাডাম আর বাবুর্চিদের রান্না করা চমৎকার সব প্রকরন। খিচুরী, গরুর মাংশ, মুরগী, ডিম, মেয়াজু, সিঙ্গাগা। কোনটারই কমতি ছিল না। তবে স্যারের অনুরোধ ছিল যেন আমরা হাতে খাই। এতে নাকি তার দেখতে ভাল লাগবে।
রকমারী সব বাংলা খাবারের আয়োজনঃ


খেতে খেতেই শুরুতে ম্যাডাম, আর পরে স্যার এসে পাশে বসলেন। আমার আর ম্যাডামের শুরু করা কথাই তিনি টেনে টেনে অনেক কিছু বললেন। আমার কথায় কারো প্রতি আঙ্গুল ছিল না অবশ্যই। তবে বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের অবস্থান কি আরো শক্ত হতে পারত কিনা(?) দেশের প্রচারে আমাদের আরো কিছু অংশগ্রহন কিভাবে করা যায় এগুলো নিয়েই বেশ অনেক্ষন কথা হল। স্যার তাদের সীমানা গুলোও বুঝাতে চেষ্টা করলেন। বেশ ভাল কাটল সময়টা।
ভদ্র মহিলা বেশ মিশুক আর হাসি খুশি একজন মানুষঃ


এতক্ষন তো কথা হল সব পর্দার মানুষদের নিয়ে। এবার পর্দার পেছনের মানুষদের খোজ নিয়ে খুব ইচ্ছে করল। যেমন যিনি বাবুর্চি, কিংবা পরিচ্ছন্ন কর্মী। হাবীব ভাই ঘটনা ক্রমে আমাদের বরগুনার বেতাগীর মানুষ। এলাকার মানুষ পেয়ে ঝড়িয়ে নিলেন। বয়স খুব বেশী নয়। ৩০/৩৫ হবে। বাকিদের একজন কিশোরগঞ্জ আর অন্য জন ঢাকায়। পর্দার পেছনের এই মানুষ গুলোও তো কত কষ্ট করেন আমাদের দেশের প্রতিনিধি হয়ে। তাদেরও তো ভালবাসা পাওয়ার অধিকার থাকা উচিত।

বেলা অনেক হল। বিদায় তো নিয়েই হবে। বুকে বুক মিলিয়ে বিদায় নিয়ে চলে আসতে হল এবারের জন্য। সাথে সাথে কিছু বাঙ্গালী মানুষের বাংলায় দেয়া ভালবাসা।

বিজয় দিবসের দিন টি যেমন সবার জন্য শুভ আর আনন্দের সাথে কেটেছে, যে দেশপ্রেম আর ভালবাসা আমরা দেখাতে চেষ্টা করি এই বিশেষ দিন গুলোতে, সেই ভালবাসা পূর্ন হোক আমাদের প্রতিটি দিন। দেশের প্রতি ভালবাসা আর দেশের সম্মান অক্ষুন্ন রাখা হোক এই বিজয় দিবসের সংকল্প।।



লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর একটি লেখা পোষ্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

২| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:০৬

শাহানাজ সুলতানা অধরা বলেছেন: তোমার জন্মদিন
******************
ভোরের সোনালি সূর্য করে আহ্বান
গুন গুন সুরে, গায় কোন গান
মাগো আজ তোমার জন্মদিন
আমার মনে বাজে এই সুর বীণ।

এই দেশে এই মাটি এই নদী এই জল
ভালোবেসেছি আকাশ, এই ফুল ফল;
শরতের সাদা মেঘ, বাউলের গান
শালিকের শিস শিসে, জুড়ায় যে প্রাণ |

সোনার চেয়ে দামি, আমার বাংলার মাটি
সারা দেহে মেখে আমি, হই আরো খাঁটি
সবুজের ঢুউয়ে ঢুউয়ে ঘুরি সারাদিন
হাজার স্মৃতি ছোঁয়া মন, কতো যে রঙিন।

আমি শেষ নিশ্বাস ফেলে, এই বাংলায়
এমাটিতে আমার দেহ, যেনো মিশে যায় |

৩| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:০৫

হিম বাহ বলেছেন: সুন্দর লেখা. বিলেত বলতে ইংলান্ড বুঝায়। আপনি তো polland warsaw তে আছেন । বিলেতে আমাদের দুতাবাস আওয়ামিলীগ বা বিনপি নিয়ে ব
BUSY থাকে।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৫

পথিক৬৫ বলেছেন: বিষয়টা ঠিক তেমন না। বিলেত বলতে সমগ্র ইংল্যান্ড ও বুঝায় না। শুধু লন্ডন কে বুঝায়। তবে এই শব্দটার যখন প্রথম ব্যবহার হয়েছিল তখন আমরা আসলে লন্ডনকেই চিনতাম। কারন তখন আমাদের শাসন কর্তারা সেখানে থাকতেন। তবে বিলেত শব্দের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে বিদেশ।।

৪| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৩৩

মানুষ বলেছেন: ব্রেক্সিটের পর বিলেত কি পোল্যান্ডে চলে গেল নাকি? :||

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৫

পথিক৬৫ বলেছেন: বেক্সিট কি ভাই?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.