নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বলার মত কিছুই নই আমি।একজন মহামূর্খ।
★★গল্পটি তিন পর্বে সমাপ্ত হবে। গল্পের প্রয়োজনে কিছু জায়গায় অশ্রাব্য স্ল্যাং ব্যবহার করা হয়েছে। আশাকরি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন সকলে।★★
## প্রথম পর্ব ##
গাছের ফাঁক গলে সকালের সোনালি রোদ উঁকি দেয়ার আগে যখন তুলোর মতো শুভ্র কোমল আলোয় বিশ্বচরাচর পরিস্কারভাবে অবলোকনের পর্যায়ে থাকে, মন জুড়োনো ঠাণ্ডা সমীরণে যখন গাছের পাতা কাঁপতে থাকে,ঠিক তখনই শহরের লোকেরা হাটঁতে বের হয়। কেউ হাঁটে,কেউ ব্যায়াম করে, কেউ ফিটফাট হয়ে অফিসে ছোটে, ছোট-ছোট ছেলে-মেয়েরা স্কুলের পথে ছোটে কাঁধে ভারী ব্যাগ নিয়ে। নানা বয়সের, নানা ধরণের লোকের দেখা মেলে সকালবেলা।সকলেই সকলের কাজে ব্যস্ত। তারা সকলেই যখন শহরের এই পার্কের দিকটায় আসে তখন তারা দেখতে পায় পার্কের গেটেই বছর নয়-দশ বয়সী এক ছেলেকে। তার কোলের ওপর একটা চার-পাঁচ বছর বয়সী ছেলে ঘুমিয়ে থাকে। শহরের লোকেরা আজ পর্যন্ত এই ছেলে দুটোকে হারাতে পারে নি। যে যত ভোরেই আসুক না কেন এই ছেলে আগে থেকেই তার ছালার আসনে বসে থাকে সামনে একটা প্লাস্টিকের বাটি রেখে।সে কখন আসে,কোত্থেকে আসে কেউ জানে না।কেউ তাকে কখনো এসে বসতে দেখেনি। কাঁদো কাঁদো কণ্ঠস্বরে সে সকলের কাছে ভিক্ষা চায়।
"স্যার, ইট্টু সাহায্য করেন স্যার। স্যার, আমার ভাইডা অসুস্থ স্যার।"
তার প্রতিটি বাক্যের শুরুতে এবং শেষে স্যার শব্দটি শোভা পায়। তার এই কাতর কণ্ঠে অনেকেরই দয়া হয়।বিশেষ করে সাথে আসা ভদ্রমহিলাদের। অনেক সময় স্যারেরা সাহায্য করতে চায় না।কিন্তু সাথে আসা ম্যাডামদের অনুরোধে তারা সাহায্য করে। এজন্য উচ্চস্বরে দোয়া করার সময় স্যারদের চেয়ে ম্যাডামদের প্রাধান্য বেশি থাকে। "আল্লাহ আপনেরে সুস্থ রাহুক।" বলে তার দোয়া শুরু হয়। দোয়া কোনোসময়ই পুরোপুরি করতে পারে না সে। কারণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার দোয়া শোনার সময় শহরের মানুষের নেই। তাছাড়া এভাবে প্রকাশ্যে নিজ গুণগান ও দোয়ায় বেশির ভাগ লোকই বিব্রত হয়ে সেখান থেকে চলে যায়।তবে কিছু লোক আবার দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পুরো দোয়া শোনে। নিজের প্রশংসা শুনতে কার না ভালো লাগে?? এরকম লোক দেখলে ছেলেটি কৌশলে দোয়া সংক্ষিপ্ত করে দেয়। কারণ দোয়ায় সময় নষ্ট হলে অন্যদের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার সময়টা কমে যায়।
প্রতিদিনের মতো আজও ভোরবেলায় দেখা যায় ছেলেদুটোকে। জেগে থাকা বড় ছেলেটার আকুতিতে বেশ ভালো পরিমাণ টাকা জমা হয়েছে বাটিতে। ছোট ছেলেটার চোখ বন্ধ। সে অসুস্থ এবং ঘুমন্ত। তাকে এভাবেই দেখে অভ্যস্ত শহরের লোকজন।তাকে জাগ্রত অবস্থায় কেউ দেখেনি। কিন্তু আজ যখন সকালের শুভ্র আলো আস্তে আস্তে সোনালি রং ধারণ করছিলো তখন সময়ের সাথে সাথে রোদের তাপ অসহনীয় হয়ে উঠছিলো। এই অসহনীয় সোনালি রোদ যখন ঘুমন্ত ছেলেটির চেহারার ওপর পতিত হয় তখন সেই রোদের তাপে অতিষ্ঠ হয়ে ছেলেটির চোখ-মুখ একটু পরপর সংকুচিত হয়ে যায়। বড় ছেলেটির এদিকে দৃষ্টি নেই। সে সমানে ভিক্ষা করে যাচ্ছে। আর তাই তার মাথার জায়গা পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।রোদের তাপ অসহনীয় হবার দরুণ কিছুক্ষণের জন্য চোখ মেলে তাকায় ছোট ছেলেটি। ছোট ছেলেটির কপাল খারাপই বলতে হয়। এতক্ষণ বড় ছেলেটির চোখে পড়লো না, কিন্তু সে চোখ খোলা মাত্রই মনে হয় গায়েবি ইংগিতে বড় ছেলেটি টের পেয়ে গেল। বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে রইলো ছোট ছেলেটির দিকে। চোখ খোলার এই নিষিদ্ধ ব্যাপারটি ঘটতে দেখে আসন্ন বিপদের কথা চিন্তা করে জাগ্রত ভিক্ষুক ছেলেটি তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে। শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে অপর ছেলেটির গালে চড় দিয়ে বলে, "
খানকির পোলা!! তরে কইছি না চোক বন্দ রাকতে।। চোক বুজ!!"
ছোট ছেলেটি তৎক্ষনাৎ বড় ছেলেটির আদেশ পালন করে। সে আবার তার চোখ বুজে ঘুমিয়ে পড়ার অভিনয় চালু রাখে। তার গাল ব্যাথায় টনটন করে। তার ইচ্ছা করে কিছুক্ষণ নিজের হাতটা গালে ঘষতে। কিন্তু সেই সুযোগ না থাকায় নিজের নিপুণ অভিনয়ক্ষমতা প্রদর্শন করতে হয় তাকে।তার প্রচণ্ড কান্না পায়। অনেক কষ্টে কান্না আটকে রাখে,যার প্রমাণ স্বরূপ তার চোখের কোণে অল্প পানির অস্তিত্ব টের পাওয়া যায় কিছুক্ষণের জন্য। সে পানি গড়িয়ে পড়ে না। ঝিম মেরে পড়ে থাকে সে। সবকিছুই আবার আগের মতো হয়ে যায়। কিন্তু এই অভিনব ঘটনাটি চোখে পড়ে যায় দুজন নগরবাসীর। তারা গর্জে ওঠে ছেলেদুটির সামনে এসে-
"সুস্থ ছেলেকে দিয়ে অসুস্থতার অভিনয় করিয়ে ভিক্ষা করা ভারি অন্যায় কাজ। এই প্রতারকদের জন্যই দেশের উন্নতি হচ্ছে না।ছোটলোকের জাতগুলোকে বিশ্বাস করে সাহায্য করে লোকে।"
শহরবাসীর গর্জনে আশেপাশে আরো লোক জড়ো হয়। কিন্তু শহরবাসীর কথাকে ভুল প্রমাণ করতে ঘুমন্ত ছেলেটি এতক্ষণ মোটেও নড়াচড়া করে নি। নিপুণ অভিনয়দক্ষতার জোরে সে ঝিম মেরে পড়ে আছে। অপরদিকে বড় ছেলেটি কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েছে। লোকগুলোকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু কেউ কথা শুনছে না। গ্যাঞ্জাম থামাতে সেখানে চলে আসে টহল পুলিশ। পুলিশ আসামাত্রই ছোট ছেলেটি তার অভিনয়ে ক্ষান্ত দিয়ে উর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে পালায় বড়টিকে ফেলে রেখে, যেন গলায় সোনার মেডেল ঝোলানো সেই কাইল্যা লোকটাকে* হারাবে আজ। ছোট ছেলেটির এই দৌড় বড় ছেলেটির প্রতারণাকে নগ্নভাবে সামনে তুলে আনে। পুলিশ সবকিছু জানে। তবুও পাবলিক ডিমান্ড উপেক্ষা করতে পারে না। বড় ছেলেটার হাতটা ধরে নিতম্বের ওপর ধমাধম করে দুটো বাড়ি মেরে বসলো হাতে থাকা লাঠিটা দিয়ে। ছেলেটা ব্যাথায় কঁকিয়ে ওঠে। "উ-মা-বাবা গো" বলে একই সাথে বাবা-মায়ের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে। কিন্তু বাবা মা আসে না। তার চোখ বেয়ে পানি আগেই ঝরছিলো।এবার দ্বিগুণ গতিতে ঝরতে লাগলো। দুটো বাড়ি মেরেই
" হালা টোকাইয়ের ঘরে টোকাই। বাটপারি মারাইতে আইছো এনে?? যা।ভাগ!"
বলে ছেলেটিকে তাড়িয়ে দেয় পুলিশ। দুহাতে নিতম্ব ডলতে ডলতে ছুটে পালায় ছেলেটি।
ছুটতে ছুটতে শহরের সবচেয়ে বড় শপিং মলের সামনে চলে আসে ছেলেটি। এসে দেখে একটু দূরেই সাগরেদ ছেলেটি বসে আছে। তাকে এভাবে ফেলে আসার জন্য গালির ফোয়ারা ছোটায় বড় ছেলেটি। অন্য ছেলেটি জবাবে কিছুই বলে না।শুধু মুখ টিপে হাসে। সে খুব মজা পাচ্ছে। মনে মনে আনন্দিত সে একটা কারণে। কিন্তু বলতে পারছে না। সকালে বড় ছেলের চড়ে সে যে ব্যাথা পেয়েছিলো, কম করে হলেও তার দ্বিগুণ ব্যাথা বড় ছেলেটি ফেরত পেয়েছে বলে তার ধারণা। বড় ছেলেটার ক্রোধ তার ধারণাকে পোক্ত করেছে। এবার কৌতকের সুরে ছোট ছেলেটি বড় ছেলেটিকে জিজ্ঞাসা করে,
"পুলিশে শিন্নি কেমুন দিলো রাকিব বাই???"
রাকিব বাই এই কৌতুকে আনন্দিত হয় না, বরং জ্বলে ওঠে,
" কতা কইস না বাইঞ্চোত। চুদির পুতে পুটকিডা জ্বালাইয়া দিছে।"
উত্তর শুনে ডাঙায় তোলা মাছের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে হাসতে থাকে অন্য ছেলেটি। যেন এমন মজার কথা সে জীবনে শোনে নি।
"ঠিকই তো আছে। দুই নম্বরি করছ, মাইর তো খাইবাই। "
বলে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে হাসতে থাকে ছোট ছেলেটি। হাসির দমকে কলিজা বের হয়ে আসবে বলে মনে হয় তার।
"পুলিশ চুদির পুতে নিজে ভিখারি-রিশকাওলার তে ট্যাকা খায় আর আমারে বাটপারির লাইগা মাইর দেয়।" রাকিবের কণ্ঠ থেকে শ্লেষ ঝরে পড়ে।
"বালো অইছে।আমারে মারছিলা না!! "
"মারছি তো তর বেকুবির লাইগ্যা। অহন ইনকাম করবি কেমনে হেইডা ভাব।এহন পার্কের দিকে থাকলে হেব্বি ইনকাম অইতো।"
ঐদিকে এখন যাওয়া যাবে না। সেই টহল পুলিশ এখনো আছে সেখানে। যাওয়াটা বিপজ্জনক। দুপুরের দিকে এক টহল পুলিশের ডিউটি শেষ হয়ে নতুন পুলিশ আসে। তখন যাওয়া যেতে পারে। পুলিশের ডিউটি শেষ হতে এখনো অনেক সময় বাকি। তাই সময়টাকে কাজে লাগানোর জন্য মনস্থির করে তারা। কিন্তু কী করবে সে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না । যদিও ভিক্ষাই করবে। কিন্তু একই ধরণের ভিক্ষা সব জায়গায় চলে না। ভিক্ষার ধরণ পরিবর্তন করতে হবে। এসব শপিং মলের সামনে তারা সচরাচর আসে না। সিকিউরিটির লোকজন তাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া লোকজনের গাড়ির কাছে গিয়ে ভিক্ষা চাইতে গেলেও সিকিউরিটির লোকজন কোত্থেকে যেন চলে আসে। তাই বিকল্প পদ্ধতির চিন্তা করে তারা।
চলবে.....
*গলায় সোনার মেডেল ঝোলানো কাইল্যা লোক- উসাইন বোল্ট।*
দ্বিতীয় পর্ব
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৫১
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: প্রথম প্লাসে ও মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা ভাই। অপেক্ষায় রইলাম।
২| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তব গল্প।
এরকম চরিত্র গুলো রাস্তায় বের হলেই দেখা যায়।
কিশোর বয়সী ছেলে গুলো দেখা যায়, পলিথিনের মধ্যে জুতো আঠা দিয়ে সেই আঠার ঘ্রান নেই। এটা কেমন নেশা আমি জানি না। কি সুখ হয় তাদের? কি আরাম হয়?
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৫৪
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই। জুতার আঠার নেশা গাঁজার নেশার চেয়েও তীব্র হয়। তারা এর জন্য কাওকে খুনও করে ফেলতে পারে। যার কাছে শুনেছি সে বলেছে, এতে নাকি মনে আনন্দ জাগে।
৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:০৪
এস সুলতানা বলেছেন: ভালোলাগাটুকু রেখে গেলাম। পরবর্তি পর্বের অপেক্ষা।
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:০৬
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনাকে স্বাগত জানাই আমার ব্লগে। ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
৪| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:৫১
পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনার গল্পের হাত ভালো সে তো আগেও বলেছি। এটার শুরুটাও দারুণ হয়েছে। তিনপর্বে শেষ হলে ছোট হয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে।
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:৫৮
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এর পরিসর মোটামুটি রাখতে চাচ্ছি। বেশি বড় না আবার ছোটও না। ঘটনার চেয়ে ভাবনার অবকাশ বেশি রাখতে চাচ্ছি। আশাকরি পরবর্তী সময়ে পাশে পাবো আপনাকে।
৫| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:৫৬
মা.হাসান বলেছেন: উসাইন বোল্টের এরকম অভিনব নামকরণ দেখে ব্যাপক আনন্দ পাইলাম।
নামকরণ থেকে বুঝছি শিশুদের মাদক সেবনের বিষয়টা পরে আসছে।
হাসি-কান্নার মিশ্র অনুভূতি এনে দিলেন।
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:০৭
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ মা. হাসান ভাই। যাদের নিয়ে লিখেছি তাদের পক্ষে ক্রিকেটার,ফুটবলার, নায়ক-নায়িকা চেনা সম্ভব হলেও উসাইন বোল্টকে চেনা প্রায় অসম্ভব। চেহারায় চেনা সম্ভব।
মাদক এদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেটা আসবে পরে।
আপনার অনুভূতি জেনে ভালো লাগলো ভাই।
৬| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:১৮
শায়মা বলেছেন: ভাইয়া
যত অভিনয় করুক আর উসাইন বোল্ট হোক। সাধে পড়ে তো এই পথ বেছে নেয় না। কয়েকদিন যাবৎ এই রকম বাচ্চাদের না খেয়ে থাকা ভিডিও দেখে দেখে মনটা খারাপ হয়ে উঠছে। অন্তত পানি বিক্রি করে চকলেট বা পান বিক্রি ফুল বিক্রি করেও তো কিছু জুটতো। এখন তো সব বন্ধ!
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:২৭
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু। এই পথ বেছে নেবার পেছনে ক্ষুধা ছাড়াও আরো বহুবিধ কারণ আছে। গল্পের মধ্যে মধ্যে সেগুলো আনার চেষ্টা করব। এখনকার দিনে এরাই সবচেয়ে কষ্টে আছে। অনেকেই নিজ থেকে এদের সাহায্য করার চেষ্টা করে । সেগুলো পর্যাপ্ত নয়। এদের জন্য কারো তেমন পরিকল্পনাও নেই।
৭| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৫৭
জুল ভার্ন বলেছেন: শুরু খুব সুন্দর হয়েছে!
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:২২
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। আশাকরি সামনের পর্বগুলোতেও পাশে পাবো।
৮| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২০
ওমেরা বলেছেন: আচ্ছা এই বাচ্চা গুলো আসে কোথা থেকে, ওরা এই ধরনের ট্রেনিং পায় কিভাবে, ওদের বাবা,মায়ের কাছ থেকে নাকি কোন সংস্থা আছে ?
ভাবলেই কষ্ট লাগে একটু খাবারের জন্য এই অল্প বয়সে প্রতারনা করছে মানুষের সাথে।
দেশে যাইলে রাস্তায় যখন এই ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের যখন ভিক্ষা করতে দেখি, খুব খারাপ লাগে।
খুব ইচ্ছা করে এসব বাচ্চাদের জন্য যদি কিছু করতে পারতাম।
আপনার গল্প পড়ে ভাবনায় চলে গিয়েছিলাম তাই আউ- ফাউ প্যাঁচাল পারলাম ।
আপনার গল্প সুন্দর হয়েছে। তবে গালিগুলো এ্যভোয়েট করলে আরো ভালো লাগতো ।
অনেক ধন্যবাদ,ভালো থাকবেন।
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২২
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আচ্ছা এই বাচ্চা গুলো আসে কোথা থেকে, ওরা এই ধরনের ট্রেনিং পায় কিভাবে, ওদের বাবা,মায়ের কাছ থেকে নাকি কোন সংস্থা আছে ?
এদের ট্রেনিং দিতে হয় না। সারভাইভালের জন্য নিজে নিজেই শিখে যায়।
আপনার গল্প পড়ে ভাবনায় চলে গিয়েছিলাম তাই আউ- ফাউ প্যাঁচাল পারলাম ।
গল্প পড়ে যে আপনার মধ্যে ভাবনার উদয় হয়েছে সেটাই লেখক হিসেবে আমার উদ্দেশ্যকে সফল করেছে। আপনি আপনার উপলব্ধির কথা বলেছেন। সেগুলো মোটেও আউফাউ প্যাচাল না।
তবে গালিগুলো এ্যভোয়েট করলে আরো ভালো লাগতো ।
অ্যাভোয়েড করে করে যতটুকু না রাখলেই নয়, ততটুকুই রেখেছি। আমরা এসব গালিতে অভ্যস্ত না হলেও এরা উঠতে বসতে এসব গালি দেয়। এর চেয়েও অশ্রাব্য গালি এদের জীবনেরই একটা অংশ। নিজের দুঃখ কষ্ট, আনন্দ সবকিছুই এরা গালি দিয়েই প্রকাশ করে। গালি ছাড়া এদের চরিত্রায়ণ অসম্পূর্ণ থেকে যাবার আশংকা থেকেই এই গালিগুলো এনেছি। তারপরও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আবারো।
৯| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৯
সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: গল্পের রচনা শক্তি যথেষ্ট ভালো। গালিগুলো পড়তে কষ্ট হলেও গল্পের গাঁথুনি যথেষ্ট ভালো।
তাদের জন্য আমাদের ধনাঢ্যদের চেয়ে সরকারের দায়িত্বশীলতা থাকার কথা ছিল অধিক৷যদি সরকার নিজ দায়িত্বে এদের জন্য কিছু ব্যবস্থা করত তবে এদেরকে এভাবে অভিনয়ের মুখোমুখি হতে হত না। ধনাট্যদের দায় নেই বলে কিন্তু তারাও এ থেকে মুক্ত নয়।
আমার গ্রামের প্রবাসীদের যৌথ উদ্যোগে আশপাশের কয়েকটি এলাকার ভিক্ষাপ্রার্থীদেরকে একটা মাসিক ভাতা প্রদান করা হয়। যে কারণে আমি দেখেছি। এই ভাতা প্রদানের পর ভিক্ষুকদের পরিমাণ কমে আসছে। তাদের মধ্য থেকে কেউ যে আসে না এমন না। যারা সেটা অভ্যাসে পরিনত করে নিয়েছে তারা ঠিকই আসে। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে এভাবেই কিন্তু কিছুলোকের জীবনের কলঙ্কময় অধ্যায় সমাপ্ত হতে পারে৷
আমার ব্যক্তিগত অভিমত থাকে এসমস্ত ব্যাপারে, মহল্লার ধনাট্যরা চাইলেই এর সমাধান করতে পারেন। সরকারের চেয়ে এসব ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট মহল্লার ধনাট্যরাই এসব ভিক্ষাপ্রথা দূর করতে অধিক সহায়ক।
বাস্তব জীবনের গল্পকে শৈল্পিকভাবে তুলে আনার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ৷
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৪
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনাকে স্বাগত জানাই আমার ব্লগে। আমি যাদেরকে গল্পে এনেছি এরা পথশিশু। এদের এই অবস্থার পেছনে দায় আমাদের সকলেরই। এদের জন্য অনেকেই অনেক কিছু করছে কিন্তু সেগুলো প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই যথেষ্ট নয়। বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন সময়ে এদের সাহায্য করে থাকে। বহু ছাত্রকে দেখেছি এদেরকে ফ্রি পড়াতে। কিন্তু এদের পূনর্বাসন নিয়ে কোন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেই কারো। সময়ে সময়ে সাহায্য না করে এমন ব্যবস্থা করা উচিৎ যাতে এদেরকে কখনোই ভিক্ষা করতে না হয়।
ধনাঢ্যরা ইচ্ছে করলেই পারে। কিন্তু সদিচ্ছার অভাবে হচ্ছে না।
আপনার সুচিন্তিত ও বিস্তৃত মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আশাকরি বাকি পর্বগুলোতেও পাশে পাবো।
১০| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৪২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: আপনার গল্প পড়ার অপেক্ষায় থাকলে তা সার্থক হয়
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৪৯
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনার এই অনুপ্রেরণাদায়ক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ নেওয়াজ ভাই।। আপনি আমার দায়িত্ব আরো বাড়িয়ে দিলেন। আশাকরি পরবর্তী সময়েও পাশে পাবো।
১১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৮:১৩
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: গল্পটা রাতেই মোবাইলে পড়েছি। সকালে তাই লগইন করলাম মন্তব্যের জন্য।
কেই ইচ্ছায় কেউ অনিচ্ছায় এই পেশায় আসে।
ছেলে দুটোর পরবর্তী কর্মকান্ড দেখার জন্য অপেক্ষা করছি। দারুন। চলুক................
২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:৫৩
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ মাইদুল ভাই। এরা প্রথমে অনিচ্ছায় আসে। এরপর অভ্যস্ত হয়ে গিয়ে আর ঐটুকু বয়সে টাকা হাতে পেয়ে এই অবস্থা থেকে আর ফিরতে চায় না।
এদের পরবর্তী কার্যক্রম খুব শীঘ্রই আসবে।
১২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:০০
শেরজা তপন বলেছেন: পড়লাম- গালি-গালাজগুলো খারাপ লাগেনি বরংচ না হলে, লেখা আকর্ষন হারাত।
দারুন লিখেছেন ভ্রাতা। সমাজের এই শ্রেনীর গল্পটা খুব বেশী লেখা হয়না।
২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৩০
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: গালি এদের নিত্যসঙ্গী। এদের ক্ষোভ, আনন্দ প্রকাশের ভাষা। হৃদ্যতাও প্রকাশ করে গালি দিয়ে। তবুও যত কম পারা যায় আনার চেষ্টা করেছি।
আপনি বরাবরের মতোই সাথে আছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশাকরি পরের পর্বগুলোতেও পাশে পাবো।
১৩| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:০৬
রাজীব নুর বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি। দ্রুত।
২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৪০
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আবার এসে মন্তব্য করায় ধন্যবাদ ভাই। আশাকরি দ্রুতই ফিরব পরের পর্ব নিয়ে।
১৪| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৩৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: গল্পে কিছু নিদারুণ করুণ কাহিনি মনে হয় তুলে আনছেন।
কয়েক বছর আগে, ২০১০/১১'র দিকে হবে, টিভি রিপোর্টিং দেখেছিলাম, কীভাবে বাচ্চাদের ধরে নিয়ে লুলা, ন্যাংড়া বানানো হয়, পা ভেঙে বিভিন্ন হাঁড়ি, বালতিতে রেখে ন্যাংড়া বানানো হয়। অত্যন্ত করুণ দেখাচ্ছিল বাচ্চাগুলোকে। তারপর ভিক্ষায় নামিয়ে দিয়ে তাদের দিয়ে ভিক্ষা করানো হয়। একটা চক্র আছে যারা এই জঘন্য ভয়ঙ্কর অপরাধগুলো করে। সেটা দেখে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম।
বাংলাদেশে 'গহীনে শব্দ' নামে একটা সিনেমা আছে, কুসুম শিকদার আর নীরব অভিনীত। সেখানে একদল ভিক্ষুককে দেখা যায় ভিক্ষা করতে। ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে, একটা চক্র তাদের দিয়ে ভিক্ষা করিয়ে অবৈধ ভাবে অর্থ আয় করছে।
ঢাকা শহরে ফার্মগেইটসহ বিভিন্ন মোড়ে অনেক পেটফোলা, অন্ধ, ভিখারিদের শুইয়ে রাখতে দেখা যেত আগে। এখন আছে কিনা জানি না।
আমাকে এক লোক বলেছিলেন, ঢাকা শহরে যত ভিক্ষুক আছে, তারা সবাই বিভিন্ন জোনে ভাগ হয়ে ভিক্ষা করে এবং প্রত্যেকেই কোনো না ভিক্ষুক-লিডারের অধীনে ভিক্ষা করে।
কিছু কিছু ভিক্ষুকের অসহায় অবস্থা দেখলে সত্যিই খুব কষ্ট হয়। কেউ হয়ত নেচারালিই এরকম অন্ধ, ন্যাংড়া হয়েছে। কিন্তু, এদের অনেকেই যে কোনো নরপশু চক্রের দ্বারা নিষ্ঠুর ভাবে পা হারিয়ে ন্যাংরা হয়েছে, সেটা ভাবতেই কষ্ট আরো বেশি লাগে।
গল্পের শুরুতে ছেলে দুটোর যে বিবরণ পাই, কষ্ট পাচ্ছিলাম। কিন্তু পরে যখন ওদের চাতুর্য প্রকাশ পেয়ে গেল, তখন আবহটা একটু বদলে গেলেও কষ্ট কিছুই কমে নি। বাস্তবের রাকিবরা না জানি কত নিষ্ঠুর ঘটনার শিকার। কত শিশু, পথশিশু টোকাই ঘুরে বেড়ায়, কেউ খেতে পায়, কেউ পায় না, কেউ হয়ত সত্যিকারেই এভাবে ভিক্ষায় নামছে- তাদের জীবন কীভাবে চলছে, তা ভাবতে গেলে কোনো কূল কিনারা পাই না।
এদের ভিক্ষার টাকায় এরা নিজেরা আর কতটুকু পায়, তা কত জনের পকেটে ঢোকে তা কে জানে?
আপনার গল্প লেখার কৌশল খুব সাবলীল, অনুকরণীয়।
পরের পর্বের অপেক্ষায়।
২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:০৭
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: ফিরে এসে চমৎকার বিস্তারিত মন্তব্য করায় আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। রাজধানীর অধিকাংশ ভিক্ষুক মাসিক মাইনেতে ভিক্ষুক নেতার অধীনে চাকরি করে।এজন্য দেখবেন ঈদ, শবে বরাত, শবে মেরাজ, শবে কদরে রাজধানীতে ভিক্ষুক বেড়ে যায়।তাদেরকে ট্রাকে করে নিয়ে আসা হয়।তাদেরকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অ্যামাউন্ট প্রতিদিন দিতে হয়। উদ্বাস্তু নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলেদের এভাবে হাত পা ল্যাংড়া করে ভিক্ষা করানো হয়। অনেক সময় বাচ্চাদের অপহরণ করানো হয়। এখন আর পেটফোলা বাচ্চা তেমন দেখা যায় না। এখন ঘুমন্ত শিশু আর ফুটবলের সাইজের মাথাওয়ালা বাচ্চা দেখা যায় বেশি।
পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই নিয়ে আসবো। ভালোবাসা নেবেন ভাই।
১৫| ০১ লা মে, ২০২১ ভোর ৬:৩৩
ইসিয়াক বলেছেন: চমৎকার সূচনা।
০১ লা মে, ২০২১ রাত ১১:০০
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: গল্পটি প্রথম থেকে পড়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ব্লগার ইসিয়াক ভাই। শুভকামনা রইলো।
১৬| ০১ লা মে, ২০২১ রাত ১১:২৯
ইসিয়াক বলেছেন: ২য় পর্ব এখনো পড়িনি। এখন পড়বো।
শুভ রাত্রি।
০২ রা মে, ২০২১ সকাল ১০:০৩
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: ঠিক আছে ভাই। শুভসকাল।
১৭| ০৭ ই মে, ২০২১ দুপুর ১২:৩৫
আমি সাজিদ বলেছেন: পদ্মপুকুর যেমন বললেন আমি তার সাথে একমত। আপনার গল্পের হাত চমৎকার।
০৭ ই মে, ২০২১ দুপুর ১:৫৩
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: গল্প পড়ার ও মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ সাজিদ ভাই। মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম। আশাকরি পরের পর্বগুলোও পড়বেন সময় পেলে। শুভেচ্ছা নেবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৪৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: চিহ্ন রেখে গেলাম তমাল ভাই। আবার আসবো।