নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ধর, তুমি আজ মারা গেলে, ওপারে কিছু আছে কি নেই সেই রহস্য সেদিন উন্মোচিত হবে
পুরো পৃথিবী বাদ দাও, তোমার পরিচিত সেই প্রিয় চা-ওয়ালা মামা চা বিক্রি করা কি বন্ধ করে দিবেন?
হ্যাঁ, বড়জোর এটা হতে পারে এই শোক সংবাদ শোনে তিনি বরং দশকাপ চা ফ্রি-তেই মানুষকে খাওয়াবেন শুধু তোমার আত্মার শান্তি কামনার জন্য।
তোমার প্রিয় বন্ধুরা সোশ্যাল মিডিয়াতে তোমাকে হারানোর শোক প্রকাশ করতে গিয়ে চোখ দিয়ে জল ফেলবেন
দু’দিন, চারদিন, এক সপ্তাহ বা বড়জোর একবছর তারপর একটি ফটোগ্রাফ কবিতার মত তাদের হৃদয় থেকে তুমি গায়েব হয়ে যাবে একদিন
আর তোমার সেই সোশ্যাল মিডিয়া! এত পোস্ট পর্যবেক্ষণ করে বাধ্য হয়ে তোমার প্রোফাইল এর উপরে “রেমাম্বারিং” একটা ট্যাগ বসিয়ে দিবে।
ধর, তুমি আজ মারা গেলে।তোমার বন্ধুরা আগামীকাল পরীক্ষার সিটে বসা বন্ধ করে দিবে?
না কি তোমাকে আবার এই পৃথিবীতে ফিরে আসার জন্য তারা কোন ধর্মঘট করবে?
আর তাদের শ্লোগানে কি এটা থাকবে? “প্রিয় বন্ধু! তুমি ফিরে না আসলে আমরা পরীক্ষার সিটে আর বসবো না”।
যে সাংবাদিক প্রচন্ড সাংঘাতিক, দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করে হলুদ সংবাদ প্রকাশ করে থাকে
তাও আবার মাননীয় মন্ত্রী মোস্তফা জব্বারের দূর্বোধ্য বিজয় লে-আউটের SutonnyMJ ফন্টে মাতৃভাষা বাংলায়!
আপনার মৃত্যুর পর মানুষ কি বলবে সেটা না হয় ছেড়েই দিলাম, সেদিন আপনার লেখাগুলো আপনার পক্ষে দাঁড়াবে কি?
ইংরেজি ব্যকরণবিদ একটা বাক্য খুব ব্যবহার করেন, “ডাক্তার আসিবার পূর্বেই রোগী মারা গেলেন”- এর অনুবাদ কি?
সত্যিই যদি একজন ডাক্তারের ভূমিকা এমন হয় তবে অনুবাদ নিয়ে তারও একটু সচেতন থাকা উচিত
অনুবাদটা তো এমনও হতে পারতো, “ডাক্তার সময়মত আসিয়া রোগীকে বাঁচাইলেন”- কারণ মৃত্যুভয় তারও আছে।
ধর, তুমি আজ মারা গেলে, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে পদ্মা সেতুর মত নকশা আঁকানোর দায়িত্ব ছিলো তোমার
কিন্তু দূর্নীতি বল বা ঘুষ, ঐ টাকাটা নিয়ে কি কবরে যাবে? না কি শ্মশানের ছাই হয়ে আকাশে উড়ে বেড়াবে?
না কি ধ্বংসে পড়া ঐ সেতুর লক্ষ মানুষের আত্মার অভিশাপ বা আশীর্বাদ হয়ে থাকবে, কারণ ফ্রি উইল তোমারও তো আছে।
তোমার স্ত্রী অথবা হ্যাজবেন্ড তোমায় প্রচন্ড ভালোবাসে, তোমার প্রস্থানে সে দিশাহীন হয়ে পড়বে মানলাম
না কি কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর মতে, ওর লাশ দেখে ভয়ে কেঁপে মরবে
তবে মনে রেখো, বয়েস থাকলে আরো একটা জীবনসঙ্গী খুঁজে নিতে সেও ভুলবে না।
তুমি কি সেই ধর্মপ্রচারক যার চিন্তাধারা হাজারো মানুষকে খুনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়
মৃত্যুর পর উপর আল্লাহ্ বা ঈশ্বরকে কি বলবে? ধর্ম রক্ষা করেছি? না কি মানুষকে রক্ষা করেছি?
তোমার কথায় তিনি কনভিন্স হয়ে যাবেন তো! আফসোস! নিশ্চয়তাটুকুও দিয়ে গেলে না।
সত্যজিৎ রায়, হুমায়ুন আহমেদ, বা জহির রায়হান না হতে পেরে আফসোস করো না
অথবা বর্তমানের সাদাত হোসাইন কে নিয়ে ঈর্ষা করো না
মৃত্যুর পর তোমার প্রিয় ঐ বন্ধুটা নিজেকে সামলাতে পারবে না, মনে রেখো তোমার উদেশ্যহীন ও অর্থহীন লেখা নীল বক্সে স্ক্রোলিং করতে করতে তার চোখ দিয়ে নিজের আজান্তেই জলের ফোঁটা গড়িয়ে পড়বে।
অনেক তো হলো, একটু আশার কথা বলা উচিত
তোমার মৃত্যুর আগে তোমার বাবাকে জড়িয়ে ধরতে নাই-বা পারলে
তোমার শত ভুল যিনি মাফ করে দিয়েছেন তাকে অন্তত একবার “সরি” বলে দিও।
তোমার মা, যিনি এখনো তার প্রার্থনায় তোমার জন্য শুভকামনা করে
তোমার জন্য রোযা রাখে, অথবা শুধু তোমার জন্য নির্দিষ্ট পূজা-পাঠে ব্যস্ত থাকে
তাকে হয়তো অনেক কষ্ট দিয়েছো তোমার শব্দে, তাই অন্তত একবার “ধন্যবাদ” বলে দিও।
ওহে! বন্ধুরা, কবিদের কবি নির্মলেন্দু গুণ আর কত জপবে?
তোমার প্রিয়তমা অথবা প্রিয়তমকে স্ট্রেইটকাট বলে দিও, “ভালোবাসি”
কারণ জীবন তোমাকে দ্বিতীয়বার সুযোগ নাও দিতে পারে।
২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪২
মি. বিকেল বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
২| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: পৃথিবীর নিয়মটাই এমন যে কিছু মানুষ থাকবে সুখী আর অন্য দিকে কিছু মানুষ থাকবে দুঃখী।
২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪৩
মি. বিকেল বলেছেন: মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:২৮
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
বাহ্ ! খুবই চমৎকার ভাবে বললেন। ভালো লাগলো।