নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Movie: Jai Bhim
Cast: Suriya, Lijomol Jose, K. Manikan, Rajisha Vijayan, Prakash Raj, Rao Ramesh etc
Initial release: November 2, 2021
Directed by: T. J. Gnanavel
Distributed by: Amazon Prime Video
Editor: Philomin Raj
Production company: 2D Entertainment
IMDb Rating: 9.6/10
আইনের উপর ভরসা রেখে আমরা লাখো মানুষ রাতে ঘুমাতে যাই, সকালে ঘুমে থেকে উঠে ডিউটিতে। হোক সেটা সরকারি চাকরি বা বেসরকারি চাকরি, আমাদের বিশ্বাস আইনের উপর থাকে। আমরা স্বস্তিতে থাকি এটা ভেবে যে, “আমার সাথে যাই ঘটুক না কেন, আইন তো আছে আমাকে রক্ষা করবার জন্য।”
কিন্তু কেমন হয় যখন সেই আইন-ই কোন মানুষকে ধ্বংস করার অস্ত্র হয়ে যায়। তখন সেটা হয়ে উঠে সবচেয়ে ভয়ানক অস্ত্র যা মানুষকে মানুষের মত জীবন উপহার না দিয়ে উল্টো তাদেরকে সমাজে জানোয়ারদের মত করে জীবন ধারণ করতে বাধ্য করে।
“Jai Bhim” –এমন একটি সিনেমা যা সমাজের সেই দিকগুলো বিবেচনায় রেখে তৈরি করা হয়েছে। যেখানে দেখানো হচ্ছে সত্য কে তামাশা হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। বিশেষ করে যখন সে সত্য আমি বা আপনার মত সাধারণ মানুষদের সাথে ডিল করছে। আরো একটি বিষয় হলো, “Jai Bhim” একটি সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি বা তামিল/তেলেগু ইন্ডাস্ট্রির মুভি হলেও এটাকে আপনি “Amazon Prime” –এ হিন্দিতে উপভোগ করতে পারবেন এবং সাবটাইটেল থাকার দরুণ খুব সহজে উপলব্ধিও করতে পারবেন। এর অরিজিন্যাল ভাষা তামিল। একই সাথে এটি তেলেগু ভাষাতেও মুক্তি পেয়েছে। এই মুভিটিকে আরো ভালো করে বুঝতে হলে আমাদের একটি টার্মের সাথে পরিচিত হওয়া জরুরী।
HABEAS CORPUS: ENSURING NO ONE IS HELD WITHOUT CHARGES.
এই আইনের সূত্র ধরে কোর্ট খোদ অর্ডার করে কোন বিশেষ ব্যক্তি কে উপস্থিত করতে তাও যতদ্রুত সম্ভব। মুভিতে যেটা হয়, এক গ্রামের প্রভাবশালী এক ব্যক্তির বাড়িতে চুরির কান্ড ঘটে। তারপর দেখা যায় পুলিশ সোজা একটি উপজাতির কাছে যায় যারা মূলত Lower Caste –থেকে সেখানে অবস্থান করছে। উল্লেখ্য, ভারতে যাদের দলিত বলে চিহ্নিত করা হয়। তাদের জীবন ধারণ খুবই সাধারণ। তারা মূলত সাপ আর ইদুর ধরে জীবন যাপন করছেন।
তারপরের ঘটনা হচ্ছে, পুলিশ তাদের শক্তি ব্যবহার করে এই কমজোর এবং সাধারণ এক ট্রাইব কে জবরদস্তি দোষারোপ করেন কোন ধরণের ইনভেস্টিগেশন/তদন্ত ছাড়াই। তারপর জেলে যে অত্যাচারের দৃশ্য দেখানো হয়েছে তা অত্যন্ত মানবিক ও লোমহর্ষক বৈ আর কি!
কি পুরুষ! আর কি নারী! সবাইকে জেলে ঢুকিয়ে বস্ত্র খুলে অমানবিকভাবে মারপিট করেন। থার্ড ডিগ্রী কি আমি ভালো মতন জানিনা কিন্তু এই ধরণের শাস্তি বা মারধর সেটাকেই নির্দেশ করছে বলে মনে হয়েছে। প্রশ্ন হলো, কেন এই মারধর? এই মারধর করা হয় এজন্য যে, যেন তাদেরকে জোর করে একটি মিথ্যা কান্ডে জড়িত থাকার জন্য বাধ্য করা যায়।
এখানে পুলিশ কর্মকর্তাদের কমন যে সেন্স তাদের উপর কাজ করছে তা দেখা যায়। তারা মনে করেন, এরা ছোট জাতের। এদের মধ্যে লোভ আছে। সুতরাং চুরি যদি কেউ করেই থাকে তবে সেটা এরাই করেছে। আবার মুভিটির প্রথম দিকে দেখা যায়, নিঁচু জাতের মানুষদের কীভাবে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসাচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। তাই রেকর্ড ঘাটলেও দেখা যাচ্ছে, এদের রক্তে মিশে আছে লোভ ও লিপ্সা। যা কাগজে সত্যি হলেও, মাঠে মিথ্যে।
সত্যি বলতে পুলিশের এই গুন্ডাগিরি প্রমাণ করতেও পারতো যে, হ্যাঁ এরাই আসল চোর। কিন্তু কথায় আছে, সত্য কে লুকানো যায় না। তবে একজন দর্শক হিসাবে এক সময় পুলিশের যে দাদাগিরি স্বভাব তা বোধহয় এ যাত্রায় রক্ষা করা গেল না। কিন্তু একসময় ঠিকই এই নিঁচু জাতের মানুষদের জন্য দাঁড় হোন একজন সত্যিকারের আইনজীবী।
এই আইনজীবীর নাম, চন্দ্রু। তো চন্দ্রুর কাছে সামনে কেউ নিঁচু জাত বা উঁচু জাত আছে কিনা সে ব্যাপারে তার কিচ্ছু আসে বা যায় না। তিনি তার চোখে শুধু মানুষ দেখতে পান। শুধু তাই নয় তিনি ভীমরাও রামজি আম্বেডকর এর চিন্তাকে প্রাধান্য দেন। আমরা দর্শকরা নিশ্চয় খেয়াল করেছি যে, এক ডায়ালগে তিনি বলছেন, “সবার ফটো-ই তো আছে কিন্তু কোথাও আম্বেডকরের ফটো নেই কেন!”
ভীমরাও রামজি আম্বেডকর হলো ইতিহাসের এমন একজন মহান ব্যক্তি যাঁর কাছে উঁচু বা নিঁচু জাত বলে কিছু ছিলো না। অন্তত আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে। আর চন্দ্রুর মধ্যেও ভীমরাও রামজি আম্বেডকরের সেই মূর্তি আমরা দেখতে পাই। তিনি বিশেষ কিছু মামলা লড়ার জন্য কোন ফি চার্জ করেন না। আর সেই বিশেষ কেস হলো, মানবাধিকার সংক্রান্ত।
এখন এই কেসে যে সমস্যা হয় তাহলো সেখানকার বন্দিরা সবাই আচানক গায়েব হয়ে যায়। পুলিশ কর্মকর্তা তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন দেখিয়ে বিভিন্ন ডকুমেন্ট পেশ করেন। তাদের দাবী, যাদেরকে আটক করা হয়েছিলো তারা চিহ্নিত অপরাধী শুধু তাই নয় তারা জেল থেকে পালিয়েছে।
আর ঠিক এখানেই সাহায্য নেওয়া হয়, Habeas Corpus: Ensuring no one is held without charges -এর। আর এর মাধ্যমেই শুধু একটি মামলা নয়, এমন হাজারো মামলার রায় যেসব বিতর্কিত তা পুনরায় যাচাই করা সম্ভব হয়।
আমার দৃষ্টিতে “Jai Bhim” কোন মামুলি মুভি নয়। অন্যদিকে এই ধরণের মুভি নির্মাণে বর্তমানে রয়েছে সেন্সরশীপের অবৈধ কেঁচি। মনে করে দেওয়া উচিত, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি নিয়েও বাংলাদেশে মুভি নির্মাণ হবার কথা ছিলো। কিন্তু সেই সিনেমা মুক্তির আগেই উধাও। আমরা যখনই আমাদের সমাজের ডার্ক সাইড দেখাতে চাই ঠিক তখনই এমন কিছু সামনে আসে যা সামনে যেতে দেয় না। ঠিক যেন, বলতে হয় তো ভালোটা বলো এবং যদি কিছু করতে হয় তবে ভালোটা করো। দ্বিতীয় জায়গায় ব্যাটে বলে আর হয়ে ওঠে না। সুতরাং “Jai Bhim” মুভি নির্মাণ একরকম চ্যালেঞ্জিং তো বটেই।
এজন্য হিম্মত লাগে। নিজের সমাজ ব্যবস্থাকে আয়না দেখানোর জন্য। মুশফিকুর রহিম আয়না দেখাতে গিয়ে যেমন নিজেই দল থেকে কি করে জানি উধাও হয়ে যায়। আর বাংলাদেশ লাগাতার গত দুই টি-টুয়েন্টি ম্যাচে হারতে থাকে।
যাইহোক, এই ফিল্মের স্ক্রিনপ্লে এত সুন্দর এবং ডিটেইলস যে, দেখার পর না নিজের প্রতি লজ্জা লাগতে শুরু করে। আমাদের দেশের ছোট ছোট উপজাতি/আদিবাসী/ট্রাইব এর কথা মনে পড়েছে বারবার। বিশেষ করে তাদের প্রতি আমাদের বর্তমান সমাজের মনোভাব কি ভয়ংকর অশ্লীল! ধনী ও গরীবের ভেদাভেদ তো আগে থেকে ছিলোই কিন্তু চাকমা, ত্রিপুরা, মারমা, মণিপুরী, ম্রো, সাওতাল, মুন্ডা, তঞ্চঙ্গা, বম, গারো, ওরাঁও, চাক, লসুাই, কোচ, ডালু, খুমি, খিয়াং, রাখাইন, হাজং, খাসিয়া, পাংখোয়া ইত্যাদি জাতের সাথে আমাদের আচরণ কি আজও ন্যায় করছে? এটা আমার প্রশ্ন।
উল্লেখ্য, “Jai Bhim” হচ্ছে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত মুভি। যেট কথা বলছে সরকারের বিপক্ষে গিয়ে, পুলিশের গুন্ডাগিরি নিয়ে। সুপার কপ নিয়ে তো খুব সহজেই একটা মুভি নির্মাণ করা যায়, এতে সেন্সরশীপের ঝামেলা এড়ানো যায়। কিন্তু স্রোতের বিপরীতে গিয়ে ক’টা সিনেমা বানানো যায় বা তৈরি হচ্ছে?
চেহারায় মেক-আপ দিয়ে ভরপুর, যৌন উত্তেজক স্টেজ কাঁপানো ড্যান্স, হিরোর ধামাকাদার এন্ট্রি… সত্যি বলতে এসবের কিছুই নেই এই মুভিটিতে। কিন্তু সাসপেন্স, থ্রিলার, ভালো ও মন্দের লড়াই, সাহসী গল্প দিয়ে ভরপুর প্যাকেজ হচ্ছে এই “Jai Bhim” সিনেমা। মাত্র ১০ কোটি বাজেটের এই সিনেমা ওটিটি প্লাটফর্মে মুক্তি পেলেও দেশ ছেড়ে ভিনদেশেও নাম কুড়াচ্ছে। তাদেরকেও আয়না দেখাতে বাধ্য করছে। ইতোমধ্যেই হইচই ফেলে দিয়েছে দর্শকদের মধ্যে। আর দর্শকরাও রেটিং করছে সেরা সিনেমা হিসেবে।
আর যদি সাপোর্টিং ভূমিকার কথা বলি তাহলে এক কথায় বাজিমাত করে দিয়েছেন সবাই। বুঝবার উপায় নেই এখানে কেউ অভিনেতা বা অভিনেত্রী মাত্র। মনে হতে পারে চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে সত্যিকারের দৃশ্য দেখানো হচ্ছে। সুতরাং আর দেরী কীসের? অন্তত একবার দেখে নেওয়া যেতেই পারে সূর্য এর সিনেমা Jai Bhim!
- মেহেদি হাসান(Mehedi Hasan)
২| ২১ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ২:১৪
স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: সারা বিশ্বের মিলিয়নস দর্শক গডফাদার দেখে রেটিং দিয়েছে, যাদের সংস্কৃতি, ভাষা, রেইস ভিন্ন। এর সাথে লক্ষাধিক ভারতীয় দর্শকের রেটিং তুলনা করা হাস্যকর।
গডফাদার মুভি দেখুন, সাথে মার্লোন ব্রান্ডো, আল পাচিনো, রবার্ট ডি নিরো, এদের অভিনয় দেখুন - তারপর এর সাথে জয় ভীমের তুলনা করুন।
৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০২১ ভোর ৫:৪২
এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: ভারতীয় দর্শকগণ আইএমডিবির রেটিং ব্যবস্থাকে নষ্ট করে দিলো। অবশ্য যেকোনো সার্ভেতে আমাদের উপমহাদেশের মানুষ একটু বেশি আবেগী, কম নৈর্ব্যক্তিক।
৪| ২১ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৪৮
জ্যাকেল বলেছেন: কোথায় আগরতলা আর কোথায় চকির তলা।
৫| ২১ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:০৮
হাসান রাজু বলেছেন: মুভিতে ফাইট নাই ভাই, ফাইট ?
গড ফাদার আমার ও ভাল লাগে নাই। ফাইট নাই।
৬| ২১ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দেখেছি।
পুলিশ যে কত খারাপ সেটা এই মুভিতে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছে।
আবার একজন ভালো উকিল চাইলে সত্যের জয় সম্ভব। সেটাও মুভিতে দেখানো হয়েছে।
৭| ২১ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:২৫
মি. বিকেল বলেছেন: দুঃখজনক হলেও সত্যি সমস্ত মন্তব্য পেয়েছি আমার ব্লগের শিরোনাম কেন্দ্রিক। আমার মনে সন্দেহ জাগছে, আপনারা অন্তত ১০০০+ শব্দের অনুচ্ছেদের কিছু অংশও পড়েছেন তো?
হ্যাঁ, আমি মানলাম এমন তুলনা করা আমার ঠিক হয়নি। অন্যদিকে এটা সত্য। কিন্তু এই বিষয়ে আমি আমার লেখার মধ্যে কোথাও তুলনায় যাইনি। আমার কাজ মুভিটির রিভিউ দেওয়া। আর আমি আমার কাজটি করেছি, জরুরী নয় সবার ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
৮| ২১ শে নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৫৭
হাসান রাজু বলেছেন: আপনি ভুল (ইচ্ছা বা অনিচ্ছাকৃত) করেছেন আপনার পোস্টে পাঠক টানতে চক্ষু চড়ক গাছ মার্কা শিরোনাম দিয়ে। যা পাঠকদের শুধু হতাশ না বিরক্ত করেছে। সেই বিরক্তি পাঠকরা মন্তব্য করে মিটিয়েছে।
আমি দুঃখিত।
৯| ২১ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪৬
নেওয়াজ আলি বলেছেন: আপনি কারো মন্তব্যের উত্তর দিচ্ছেন না কেনোরে ভাই
২১ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৫২
মি. বিকেল বলেছেন: যখন আমরা শিরোনাম নিয়ে তর্ক করতে চাই, লেখাটা বাদ দিয়ে তখন একজন ব্লগার হিসেবে খারাপ লাগে। কষ্ট করে এত কিছু লেখার পর মন্তব্যে তেমন কোন যৌক্তিক কথা নেই। পলিটিক্যাল কারেক্টনেসেও তো শিরোনাম ঠিক আছে। তারপরেও ওটিটি প্লাটফর্ম সম্পর্কে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের কি করে বুঝাই! আমরা অরিয়েন্ট, আমাদের সাহিত্য, লেখা, মুভি বা যে কোন শিল্প আজীবন পেছনে ঠেলতে থাকলে জাস্টিস হয় না। হয়তো আমার ব্যর্থতা। Pulp Fiction -মুভিটি আমার কাছে ওভার-রেটেড। কিন্তু আই.এম.ডি.বিতে সেরা মুভি। সুতরাং আমি আমার ব্যর্থতা স্বীকার করছি।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৪৪
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ভারতীয় মুভির আইএমডিবি রেটিং যদি ৬ থাকে, তাহলে সেটাকে শূন্য ধরে নিয়ে গুনতে শুরু করবেন। এরপর প্রতি দুই পয়েন্টে ১ ধরবেন। ১০এ ১০ হলে ভাববেন সেটা আদতে ১০এ ২। তাহলে আর চিন্তা থাকবে না।