নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

উত্তর-সত্য (Post-Truth) এর যুগে যে শৃঙ্খলা এবং বিশৃঙ্খলা অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য

১০ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১২:০৪




উত্তর-সত্য (Post-Truth) নিয়ে কথা বলার বেকায়দা হচ্ছে, যাকে বিষয়টি বলছি তাঁর জানার অবস্থা অনুযায়ী একরকমের মৃদু থেকে কঠিন সংঘর্ষ ঘটতে পারে। প্রথমেই বুঝতে হবে সামনের মানুষটি উত্তর-সত্য কে ‘মিথ্যে’ ব্রাকেটে নিয়েছেন কিনা? অথবা, এই শব্দ কে আরো সুযোগ দিচ্ছেন কিনা? এই শব্দ নিয়ে আরো আরো ভাবছেন কিনা?


ক্যানভাস – ০১ বিবেচনায়

উত্তর সত্য (Post-Truth) ২০১৬ সালে অক্সফোর্ড ডিকশিনারিতে জায়গা পায়। শব্দটি আরো বেশি ব্যবহৃত হয় ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প’ এর সময়ে বা তার সম্পর্কে। উল্লেখ্য, এই বিষয়টি হিটলার বা তার তৎপূর্বেও উপস্থিত ছিলো। অথবা, সৃষ্টির শুরু থেকেই যে উপস্থিত ছিলো কিনা সেটাই বা কে নিশ্চিত করে বলতে পারবেন!

‘অনুভূতি (Perception)’, ‘আবেগ (Emotion)’, ‘দৃষ্টিভঙ্গি (Perspective)’, ‘মতামত (Opinion)’ এসব যুক্ত হয়ে মানুষের মনে যে বিচার কোন বিষয়ে তৈরি হয় এবং সেটা অধিক সমর্থন পাওয়ার ফলে সত্য বলে মনে হতে পারে। ‘সত্য’ আপনার সামনে, আপনার টেবিলে আছে তবুও উক্ত আলোচিত ‘সত্য’ যেন এই ‘সত্য’ কে ছাপিয়ে যাচ্ছে।

উদাহরণস্বরূপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো কোনো খবর যদি ভীষণভাবে ছড়িয়ে যায় এবং বিশাল অঙ্কের মানুষ সে গুজবে বিশ্বাস করা শুরু করে দেন তাহলে সেটা একসময় সত্যর মত দেখায় বা বুঝায় বা শোনায়।

“কক্সবাজারে বিশাল ভূমিকম্পে পুরো শহর তছনছ হয়ে গেছে!” – এখন ভূমিকম্প যেহেতু ঘটছে, কক্সবাজারও যেহেতু ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা সেহেতু কিছু মানুষ এই খবরে হুট করে বিশ্বাস করতে পারেন। অতীতেও রেডিওতে/টিভিতে এরকম কিছু ভুল খবরের জন্য অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ঘটেছে।

আরো একটি উদাহরণ বাধ্য হয়ে টানছি, কারণ আমার জানার উৎস কম। আপনারা জানবেন, ভারতে “তাজমহলের নিচে হিন্দু ‘মন্দির’ আছে” - এই কথাটি একেবারে নতুন। কিন্তু অসংখ্য মানুষের এই নিয়ে মতামত হচ্ছে ইতিবাচক। কিন্তু আপনার কাছে কোনো প্রমাণ নেই, তাই এই সমস্ত লোকদের ভারতের এলাহাবাদ হাইকোর্ট পর্যন্ত গিয়ে প্রকৃত ‘সত্য’ কে হাতে নিয়ে আসতে হয়েছে।

এই পুরো ঘটনা ঘটেছে কিন্তু স্রেফ একটি ‘Perception’ এর উপর। এমনকি বাবরী মসজিদের বিচার পর্যন্ত হয়েছে ‘Perception’ এর উপর। কোথাও না কোথাও সে দেশের বিচারকদের মধ্যে, মানুষদের মধ্যে জবাবদিহিতা আছে বলে আমরা এসব অন্তত জানতে, বলতে বা লিখতে পারছি। তাহলে উত্তর সত্য কেমন ভয়ানক? মিথ্যের চেয়েও কতটা ক্ষতিকর?


ক্যানভাস - ০২ বিবেচনায়

সত্যি বলতে, এটা আমার ক্যানভাস। আমি চাই এই শব্দটিকে আরো সুযোগ দিতে। আমি প্রথমেই প্রশ্ন করতে চাই, সত্য আসলে কি? আমার মতে, সত্য সেটাই যা আপনার কাছে উপস্থিত/উপস্থাপিত।

আমরা দ্বিতীয় ক্যানভাসে একটি দুর্বল উদাহরণ নিয়ে প্রথমে চিন্তা করি। আপনি আপনার পার্টনারের প্রতি খুব বিশ্বস্ত। আপনার পার্টনার আপনাকে বিন্দুমাত্র সন্দেহ করেন না। আপনার এই সততা এবং অনুগত ব্যক্তিত্ব দেখে তিনি মুগ্ধ। কিন্তু বর্তমান জমানায় আপনার একাধিক বান্ধবী/বন্ধু থাকলেও থাকতে পারে। আপনার হাতে হাজারো/লাখো অপশন আছে। ‘Snapchat’, ‘Facebook’, ‘Tinder’ সহ একাধিক সোশ্যাল ও ডেটিং সাইটে খাতা আছে।

এখন হুট করেই হয়তো মনে প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে বলতে চাইছেন এই ‘সত্য’ কি কোনোদিন -ই প্রকাশ পাবে না? ওহুম, পাবে… পাবে… কিন্তু যতক্ষণ গোপন থাকছে ততক্ষণ যে সুবিধা পাচ্ছেন আপনি, যে ক্রেডিট যুক্ত হচ্ছে আপনার ব্যক্তিত্বের সাথে তার যোগ্যতা আপনার ছিলো না। সুতরাং যা ভোগ করলেন তার অধিকার আপনার ছিলো না।

এখন মানুষের সাইকোলজি বুঝেন আপনি, আপনি মানুষকে খুব নিখুঁতভাবে ধোকাও দিতে পারেন তাহলে এই গোপন রাখার ক্ষমতা প্রায় অনির্ধারিত হয়ে যায়। কবে স্রষ্টা আসবেন এবং এই গোপনীয়তা থেকে সবাইকে মুক্তি দেবেন সে ধৈর্য্য ধরে থাকতে পারেন।

ঠিক একইভাবে রাষ্ট্রের শাসন কর্তার কাছে আছে জনগণের সমস্ত তথ্য। রাষ্ট্রের উন্নতি/অবনতির পরিসংখ্যান। আপনার জন্ম এবং মৃত্যুর পরিসংখ্যান সহ আপনি কোথায় থাকেন? কি করেন? প্রায় তার সবটুকু।

সুতরাং রাষ্ট্র চাইলে, এই তথ্য ভিন্নভাবে আপনার কাছে উপস্থাপন করতে পারেন। রাষ্ট্র বলে দেবে, খুন টা আসলে ‘রহিম’ নয় ‘করিম’ করেছে। রাষ্ট্র আপনাকে জীবিত অবস্থায় মৃত ঘোষণা করতে পারে। অথবা, উন্নয়নের ঢোল পিটিয়ে একটি দুর্দান্ত ‘Perception’ তৈরি করার সক্ষমতাও আছে। এবং উপরোক্ত সমস্ত বর্ণনায় রাষ্ট্র আপনাকে কনভিন্স করার মতন গল্পও উপহার দিতে সক্ষম। প্রয়োজনে ইতিহাসে ফিরে গিয়ে কিছু দলিলপত্র পর্যন্ত নাশ করে দিতে পারে।

তাই ‘উত্তর-সত্য’ হচ্ছে একটি সত্যের ভিন্ন দিক এবং ভিন্ন পরিসংখ্যান যেটাও কিন্তু সত্য। বাংলাদেশ যেমন দরিদ্র দেশ ঠিক তেমনি এটি ২ কোটিরও বেশি কোটিপতির দেশ। এখানে ঢাকা থাকলে, রাজশাহীও আছে। তাই উত্তর-সত্য (Post-Truth) কে সরাসরি ‘মিথ্যে’ এর ব্রাকেটে তুলতে আমি রাজী নই। আবার একেবারে গলাধঃকরণ করার মতন ইচ্ছেও নেই। কিন্তু নিশ্চয় একটি সুযোগ পেতে পারে, একটি ক্রসচেক হতে পারে। তারপর সেই সত্য কে আমি ‘Narcissistic’ হিসেবে মেনে নিতে পারি।

ভাবছেন হয়তো এতে করে সমাজে অরাজকতা বাড়বে! বাড়তে দেন… কিন্তু লাগামছাড়া উত্তর-সত্যের ভয়াবহতা অথবা বন্দিদশা দুটোই সমান বিপদজনক হতে পারে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর একটি লেখা।
তাজমহলের নিচে মন্দির মূলত এই টাইপ চিন্তা গুলো ধার্মিকদের মাথাতে আসে। ধার্মিকেরা আধুনিক সমাজের জন্য বোঝা।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:২৬

মি. বিকেল বলেছেন: সহমত নই। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.