নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মেহেদি হাসান, মি. বিকেল নামে পরিচিত। আমি একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ও অ্যাপ ডেভেলপার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, এবং নাট্য পরিচালক। মাইক্রোসফটে ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত এবং গল্প বলা আমার প্রধান পরিচয়।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নাম মি. বিকেল।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

সম্পূর্ণ ভিন্ন ধাঁচের নতুন ওয়েব ফিল্ম ‘মায়াশালিক’ – রিভিউ

১৩ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৭:০৩



বাংলা সিনেমায় বরাবর যে একটি বিষয়ে প্রচন্ড অভাব আছে বলে অন্তত আমার কাছে মনে হয়েছে সেটা হলো ‘যত্ন’। গল্প ঠিক আছে, বাজেট ঠিক আছে, অভিনেতা/অভিনেত্রী যারা আছেন তাঁরাও বেশ ভালো, পরিচালক খুব যত্ন করে ক্যামেরা ধরে ধরে সিনেমটির শট নিচ্ছেন কিন্তু এতকিছুর পরেও যেটার খুব অভাব অন্তত গতকাল পর্যন্ত অনুভব করছিলাম সেটা হলো এই ‘যত্ন’।

অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক ‘বিঞ্জ (Binge)’ বাংলা ওটিটি প্লাটফর্ম আমাদের এই ‘যত্ন’ উপহার দিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। ওয়েব সিনেমা ‘মায়াশালিক (২০২২)’ যেন তারই প্রমাণ। যদিও এই সিনেমার গল্প চুরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। কিন্তু যিনি লিখেছেন সত্যি বলতে দুর্দান্ত ভালো লিখেছেন।


গল্প

এই ধরণের গল্পে একাধিক কাজ আমি ‘হলিউড’ এবং ‘বলিউড’ এ দেখেছি। কিন্তু বাংলা সিনেমায় এমন গল্পের অবতারণা আমাদের সিনে-ইন্ডাস্ট্রি কে নিশ্চয় আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য, একজন লেখক, একজন ক্লিনিকাল ডিপ্রেশনে ভোগা মানুষ… যিনি খুব করে জীবনের মধ্য সময়ে এসে একটি উপন্যাস/গল্প লিখতে চাইছেন।

কিন্তু কোনভাবেই যেন পেরে উঠছেন না। আর এখানেই লেখক ‘প্যারালাল ইউনিভার্স এবং দেজা ভু - পূর্বদৃষ্ট (Déjà vu)’ নামক কঠিন কঠিন বিষয়গুলো টেনেছেন এক প্রেমের টাইমলাইনে। আর ল্যান্ড ফোনের ভূতোরে ব্যাপার-স্যাপার আমাকে ২০১০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কার্তিক কলিং কার্তিক (Karthik Calling Karthik)’ বলিউড মুভিটির কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।

কিন্তু সিনেমাটির পরিচালক এবং লেখক যে সমাপ্তি টেনেছেন তা কিন্তু হলিউড/বলিউড এর জনরার সাথে খুব একটা যায় না। লিপ-ইয়ার এবং যে ‘হ্যাপি এন্ডিং’ দেবার বিষয় সেটা জোরপূর্বক এই গল্পে ইনজেক্ট করা হয়েছে। হতে পারে আমরা বাঙালীরা বেশ আবেগী এবং এটাই তার কারণ। আমরা যে কোনো গল্প শেষে সুন্দর সমাপ্তি চাই। এবং এখানেই এই গল্পের কিঞ্চিৎ ব্যর্থতা বলে আমার মনে হয়েছে।


অভিনয়

জিয়াউল ফারুক অপূর্ব নতুন নতুন গল্পে যে নিজেকে ঢেলে দিচ্ছেন তা অনস্বীকার্য। দীর্ঘদিন আমরা দর্শক হিসেবে তাঁর রোমান্টিক নাটকগুলো দেখতে দেখতে একরকম অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলাম। হয়তো অভিনেতা নিজেও সেটা অনুভব করেছেন তাই ‘বুকের মধ্যে আগুন (২০২৩)’ সিরিজেও তিনি তাঁর মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন।

এই গল্পে অপূর্ব কে নিজের ওপর খুব বেশি খাটতে হয়নি কিন্তু অভিনয়ে আরো একধাপ নিঃসন্দেহে এগিয়ে গেছেন। কোথাও এমন মনে হয়নি তিনি তাঁর চরিত্র থেকে বাইরে এসে কিছু করছেন। খুব সম্ভবত এমন ডার্ক থিমের কাজগুলোতে অপূর্ব কে ভালো মানায়।

সাদিয়া আয়মান এর অভিনয় এই প্রথম দেখলাম। পরিচালক শিহাব শাহীন তিনি তার থেকে একরকম কাজ আদায় করে নিয়েছেন বলে মনে হয়েছে। টিনেজার হওয়ায় কিছুটা ছাড় পেয়েছেন সিনেমার এক বড় অংশ জুড়ে। কিছু ভুলভাল কিছু পাগলামী যেহেতু স্ক্রিপ্টেই ছিলো তাই নতুন করে আর কিছু ভুল করতে হয় নি। কিন্তু তাঁর চাঞ্চল্য এবং এবং কিশোরীর চরিত্র নিশ্চয় প্রশংসাযোগ্য। যখন শাড়ীতে দেখছি বা বয়সটা একটু বেড়েছে তখন এই দুই চরিত্রের মধ্যে আমার পক্ষে পার্থক্য করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

সিনেমাটির আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশে কাজ করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম (সারাহ-র বাবা), ইমতিয়াজ বর্ষণ (সাই-ফাই লেখক) টুনটুনি সোবহান (ফরিদের মা) প্রমুখ। কিন্তু এখানে ফরিদের মা মানে টুনটুনি সোবহান চমৎকার অভিনয় করেছেন। এই প্রথমবার মনে হয়েছে, খালার হাতের রান্না সত্যিই খেতে দারুণ!


পরিচালনা

শিহাব শাহীনের এই দিয়ে অনেকগুলো কাজ দেখলাম। নিঃসন্দেহে তিনি একজন গুণী পরিচালক। কিন্তু সেটার দেখা দীর্ঘদিন পাওয়া যায় নি। কাজের মধ্যে ফাঁকি দৃষ্টিগোচর হয় নাই। কিন্তু বর্তমানের কাজগুলোতে মনোনিবেশ যে করতে পারছেন সেটাই বা মন্দ কীসে! দুর্দান্ত পরিচালনা।


চিত্রনাট্য, সংলাপ ও বিজিএম

একটি সিনেমার শুধু গল্প সুন্দর হলেই হয় না তার কাল্পনিক বিন্যাস এবং যথাযথ প্রয়োজনীয় স্থান সেটাকে আরো বেশি আলোকিত করে তোলে। এই মাপকাঠিতে ‘টিম - মায়াশালিক’ দুর্দান্ত কাজ করেছেন। প্রায় নির্জেভাল চিত্রনাট্য।

নেই কোনো অপ্রয়োজনীয় সংলাপ। কিন্তু কখনো কখনো গল্পটি আপনাকে একঘেয়েমিতে ফেলতে পারে বিশেষ করে চরিত্র ডেভেলপমেন্টে সময় দিতে গিয়ে। অবশ্য সেটুকু বাদ রেখেও কথা বলার জায়গা আছে।

দুটো টাইমলাইনের মানুষ যেভাবে যুক্ত থাকছেন, কথা বলছেন, একটু দেখা করবার চেষ্টা করছেন… এসব বিষয় টেনে আনার পূর্বে চরিত্র নিয়ে কাজ করাটাও জরুরী ছিলো। কিন্তু কোনভাবেই এটি এত দীর্ঘায়িত গল্প নয়, আরো একটু দ্রুত গতির হলে কারোর ক্ষতি বোধহয় খুব বেশি হত না।

আর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকে যখন ‘তাহসান খান’ ছিলেন তাই এই সমস্ত অপূর্ণতা আপনা-আপনি যেন মুছে গেছে। শুরু থেকেই দুর্দান্ত একটি বিজিএম আপনাকে সিনেমাটি দেখার জন্য চালিত করবে। ঠিক যেখানে যত অঙ্কের সাউন্ড প্রয়োজন তা উপহার দেওয়া হয়েছে বলে তো আমার মনে হয়েছে।


মতামত

সত্যি বলতে আমার কাছে এই গল্পে নতুন কিছুই ছিলো না। এটার বড় কারণ হচ্ছে এই ধরণের অনেক কাজ আমার দেখা আছে। কিন্তু এই গল্প আপনাকে কোনোভাবেই হতাশ করবে বলে তো আমার মনে হয় না। এমন সুন্দর সুন্দর গল্প নিয়ে আরো কাজ হোক এটাই কামনা।

হয়তো আমরা অনেক পিছিয়ে পড়েছি কিন্তু এরকম গল্পগুলো/কাজগুলো পুনরায় সিনে-ইন্ড্রাস্ট্রি তে বড় জায়গা করে নেবার সুযোগ দেবে। আর কাজের মধ্যে এমন যত্ন সবার কামনা। এতে একটি সাধারণ গল্পও অনেক মধুর হয়ে ওঠে।

ব্যক্তিগত রেটিং ১০ এর মধ্যে আমি ৭ দেবো। এবং শেষকথা হল, আমাদের বাজেট সত্যিই এত কম কেন!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:০৬

রানার ব্লগ বলেছেন: একজনার অনুরোধে মায়া শালিক দেখেছি। আফসোসের বিষয় যে উহা তামিল সিনেমার নকল। বাংলা নাটকের এত্ত আকাল আসলো যে সিনেমার নকল নাটক বানাতে হচ্ছে।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:২২

মি. বিকেল বলেছেন: অনুগ্রহ করে উক্ত 'তামিল' সিনেমার নাম যদি বলতেন?

২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ২:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার এই ওয়েব ফিল্ম সাউথ ইন্ডিয়ান মুভির নকল।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:২৩

মি. বিকেল বলেছেন: ওয়েব ফিল্ম টি কেমন লেগেছে আপনার?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.