নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গল্পকারেরা যে কল্পকাহিনী বর্ণনা করেন তার প্রায় সবটুকুই মিথ্যে। ওর সাথে কিন্তু বস্তবতার তেমন বিশেষ কোনো সদৃশ নেই, জরুরীও নয়। আমাদের মত গল্পকারেরা সবসময় সামাজিক বার্তা দিয়ে আপনাকে উদ্বুদ্ধ নাও করতে পারেন। বিশ্বাস করুন ওটা আমাদের দায়িত্বও নয়।
স্রেফ কল্পনাপ্রসূত এই গল্পগুলো নিয়ে পাঠকদের মনে আগ্রহের সীমা থাকে না। আলোচনা-সমালোচনাও হয়… কেউ কেউ আবার হুট করেই বলেন, এই গল্পটি না খুব ভালো হয়েছে! তারমানে হলো ঐ মিথ্যেটুকু আপনার ভালো মত হজম হয়েছে। যদি ওর রুপ-রঙ-রস ভালো না লাগতো তাহলে হয়তো বলতেন, “আজকাল এসব বাজারে লেখকদের সাথে আর পারা যায় না, কি বাজে লেখা!”
আমার দাদার দাদার প্রজন্ম কি লিখে গেছেন তা আমরা আজও পড়ি। কিন্তু আমি অন্তত তাঁদের শ্রদ্ধার সাথে অনুসরণ করি না। খুব সম্ভবত আমি চাইলেও তা পারবো না। সংস্কৃতি কোনো ধ্রুব বস্তু নয়। তাই আমার দাদার দাদার সময়ের প্রেক্ষাপট এ ক্যানভাসে অনেকটা অচল। অন্তত আমার কাছে সেটা মনে হয়।
অবশ্য আমি গল্প লিখি আমার জন্য, এবং আমার বিশ্বাস গল্পকারেরা গল্পগুলো নিজেদের জন্যই লিখেন। এজন্য ঢাকঢোল পিটিয়ে, “প্যাটার্ণ ঠিক নেই”, “এ বাবা! এসব গল্পের ব্যাকরণ ঠিক নেই” বলে নাচানাচি করে লাভ নাই, ওটা আপনার জন্য উৎসব হতে পারে তবে আমার গল্প নয়।
আমাদের মানে নব্বই দশকের নিকট প্রজন্ম খুব গর্ব করেন যে, তারা জীবনে কত কত বই পড়েছেন, জ্ঞান অর্জনে তাদের মত ভূমিকা আমরা অন্তত দেখাতে পারছি না। সত্যি বলতে এরচেয়ে বড় ডাহা মিথ্যা কথা আর পৃথিবীতে একটিও আছে বলে মনে হয় না; অন্তত আমার পর্যবেক্ষণ তাই বলে।
দেখুন, এখন গল্পের জন্য অডিওবুক আছে, ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট এক্সপ্লেনেশন আছে, শর্ট সামারি আছে, এফ.এম রেডিও আছে। ইন্টারনেট এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এআই মডেল আছে… এমনকি কিছু কিছু সিনেমা/সিরিজ এখন মুক্তি পাচ্ছে যা নিয়ে একাধিক রিসার্চ পেপার পর্যন্ত লেখা যায়।
তাছাড়া হাজারো ওয়েবসাইট আছে যেখানে এক ক্লিকে আপনার পছন্দের পিডিএফ পেয়ে যাবেন তারপর শুধু ডেস্কটপ/স্মার্টফোন স্ক্রিনে স্ক্রল করে পড়ে যাওয়া। কিন্তু বদ্ধমূল ধারণা দেখুন! বই না ক্রয় করে পড়লে কি পড়া হয়? ওতে কি আর ঐ আবেগ থাকে? ঐ একই রকম আগ্রহ নিয়ে কি পড়া যায়? লেখাগুলো কেমন যেন দ্রুত চোখের সামনে থেকে সরে যায়!
পয়েন্ট হলো, বইটা পড়া জরুরী। গল্পটা জানা জরুরী। প্লাটফর্ম সে তো পরিবর্তন হতেই থাকবে। আমি আজকে যেসব প্লাটফর্মের কথা বলছি, আগামীকাল হয়তো এর অত্যাধুনিক সংস্করণ দেখতে পাবেন। এটা নিশ্চিত করে বলা যায়।
একটি আর্টিকেল ‘National Center for Education Statistics (NCES)’ তে ‘Trends in Student Academic Achievement’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে সত্তর দশক এবং নব্বই দশকের পড়াশোনার মাপকাঠি টানা হয়েছে। যাতে পরিষ্কার ভাবে দেখানো হয়েছে যে, গণিত, বিজ্ঞান, উদ্যোক্তা সহ একাধিক বিষয়ে নব্বই দশকের প্রজন্ম এগিয়ে আছেন। এছাড়া ‘Pew’ এর রিসার্চ দেখুন, ‘Statista’ এর রিসার্চ দেখুন। গ্রাজুয়েট বেড়েছে ১৫%-৪০% শতাংশ পর্যন্ত। এমনকি প্রায় ১৫% শতাংশ থেকে ৪০% শতাংশে এগিয়েছেন নারীরা।
তবুও এই প্রজন্ম পড়েন না। সৃজনশীলতা নেই। এশিয়ান শিল্প-সাহিত্যে হুটহাট যে বিপ্লব চোখে পড়ছে সেটা কি শুধুই ঐ সত্তর দশকের হিরোদের কান্ড? নাহ্। এখনো আমাদের হাতে সময় আছে, আগামী দশ বছরে বাংলাদেশ তার অতীত রেকর্ডের দ্বিগুণ প্রশংসা কুড়িয়ে নেবেন সৃজনশীল বিভাগে; এ আমার বিশ্বাস।
কিন্তু আমি সত্তর দশক কে শ্রদ্ধা করি তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের জন্য। তার নিজস্ব অর্জনের জন্য। কই আমরা তো আপনাদের খোঁটা/খোঁচা দেই না! কই আমরা তো আপনাদের ভুলগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকি না। কিন্তু সারাক্ষণ, এই প্রজন্ম কে দিয়ে কিচ্ছু হবে, সব গোল্লায় গেল, হায়রে! নাইরে… এই দুঃখবিলাস একটু কম করলে ক্ষতি নাই তো।
আমার এক শ্রদ্ধেয় শিক্ষক বলছিলেন, “তোমার ‘জোনাকিরা সব ঘুমিয়ে গেছে’ বইটি নিয়ে ভেবেছিলাম, এটি ভালো আর মন্দের লড়াই। কিন্তু সেরকম কিছু পেলাম না।” কিন্তু উনি কখন যে ‘বাইনারিস্ট’ হয়ে পড়েছেন সে ব্যাখা দিতে গিয়ে আরেক বিপদে। শেষকথা বললেন, “তবে মাইকেল মধুসূদন হও না, কিন্তু আবার এই বাংলায় ফিরে আসতে হবে।”
আমি এরপর স্রেফ মুচকি হাসি দিয়ে স্যার কে সালাম দিয়ে প্রস্থান করলাম… আর মনে মনে ভাবতে লাগলাম, গল্প লিখতে চাইলে বুঝি মান্ধাতা/সেকেলে আমলের গ্রামার মেইনটেইন করতে না পারলে পাপ হয়? অবশ্য ওতেও আমাকে আটকানো যাবে বলে এখন পর্যন্ত তো আমার মনে হচ্ছে না।
০২ রা আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৭:৪৫
মি. বিকেল বলেছেন: সঠিক বলেছেন। দিনদিন মন্তব্যের ঘর কেমন জানি শূন্যের ঘরে। প্রায় ৭ বছরেরও বেশি এই ব্লগে লেখালেখি করছি। ভালোবাসার একটি প্লাটফর্ম। আমি লেখা শিখেছি এই ব্লগের হাত ধরে, ঐ মন্তব্যগুলো পড়ে পড়ে। এই পোস্ট নির্বাচিত-তে না আসলে মন্তব্যও পাওয়া যেত বলে মনে হয় না
আমি অবশ্য আপনার কাছে এই নিয়ে অপারগতা প্রকাশ করেছি। গত ৩ বছর হলো আমি একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রধান সম্পাদক পদে আছি। কি করা যায় বলুন তো? হাতে তো সময় থাকছে না... ইচ্ছাটুকু আছে।
২| ০১ লা আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৩:৩০
মোগল সম্রাট বলেছেন:
ভালো বিশ্লেষন । মাথায় রাখলাম।
০২ রা আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৭:৪৬
মি. বিকেল বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৩| ০১ লা আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৭
রানার ব্লগ বলেছেন: আপনার প্রথম প্যাড়াটা যদি লোকজনকে ধড়ে বেঁধে বোঝাতে পারা যেতো । বেশিরভাগ লোক গল্প পড়ে মেসেজের আশায় । এদের ভাব থাকে দুনিয়ার সব মেসেজ একজন গল্পকার তার গল্প দিয়ে বসে থাকবে আর পাঠক সেই মেসেজ পড়ে দিন শেষে বলবে আহা কি এক খান মেসেজ পাইলাম ।
০২ রা আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৭:৪৭
মি. বিকেল বলেছেন: একজন গল্পকারের পক্ষে অতসব ম্যাসেজ নিয়ে ব্যস্ত থাকা আদতেই সম্ভব নয়।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:২২
শেরজা তপন বলেছেন: মি. বিকেল যেচে পড়ে একটা উপদেশ দিচ্ছি।
ব্লগে কোন ভাল লেখা দিয়ে মন্তব্য না পেলে যে কেউ হতাশ হবে। আপনিও হবেন নিশ্চিত। আপনি মোটামুটি নিয়মিত লিখেন- কিন্তু কোন লেখায় মন্তব্য করেন না। শেষবার মন্তব্য করেছিলেন ২ বছর আগে। টুকটাক মন্তব্য না করলে এভাবে আপনার লেখাও এক সময় মন্তব্য শুন্য থাকবে সেটাই স্বাভাবিক।
আমাদের ব্লগে বেশ মন্তব্য খরা চলছে, পুরনো ব্লগার হিসেবে আপনার কর্তব্য ব্লগকে খানিকটা হলেও প্রানবন্ত করার চেষ্টা করা।