নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মেহেদি হাসান, মি. বিকেল নামে পরিচিত। আমি একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ও অ্যাপ ডেভেলপার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, এবং নাট্য পরিচালক। মাইক্রোসফটে ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত এবং গল্প বলা আমার প্রধান পরিচয়।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নাম মি. বিকেল।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্লটিং/ন্যারেটিভ ইন ডার্ক সাইকোলজি (পর্ব – ৫)

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:২০




হলিউডে এমনকি বলিউডে এমন বেশ কিছু সিনেমা নির্মিত হয়েছে যেখানে স্পষ্ট একজন ‘লেখক’ মানেই সহজ নন, তিনি ধুরন্ধর, তিনি ক্ষতিকর, তিনি প্ররোচক এমনকি তিনি একজন হত্যাকারী। এই সিনেমাগুলো কি এমনিতেই তৈরি করা হয়েছে নাকি এর পেছনের গল্প আমাদের অজানা?


‘লেখক’ মানেই কেন একজন ভয়ানক মানুষ! তিনি একা থাকেন, শান্ত পরিবেশ তার খুব পছন্দ, শব্দ চয়নে সূক্ষ্ম, মোটেই কোনো কারণেই তিনি বিঘ্নিত হোন না, তিনি বেশ রহস্যময় জীবনযাপন করেন। জীবনটা তার খুব বেশি রঙীন নয়। তিনি অতটুকুই করছেন যতটুকু তার প্রয়োজন। কিন্তু হঠাৎ করে তিনি মানুষকে খুন করতে শুরু করছেন! তিনি মানুষকে বিপদে ফেলছেন! অথবা, কারো জন্য ফাঁদ পেতে রাখছেন!


চলুন, কিছু সিনেমার তালিকায় চোখ বুলানো যাক এবং সেসবের প্রধান চরিত্র একজন ‘লেখক’ এবং তিনি ভয়ানক।


১. ১৯৯২ সালে মুক্তি পাওয়া এবং যুবসমাজের জনপ্রিয় হলিউড সিনেমা ‘Basic Instinct’ দেখেন নি এমন হতে পারে না। এই সিনেমায় ক্যাথেরিন একজন ক্রাইম নভেলিস্ট ছিলেন। সে সময়ে বক্স অফিস কাঁপানো এই সিনেমার গল্প কম-বেশি সবাই জানেন।


২. ২০০৪ সালে মুক্তি পাওয়া জনি ডেপের সিনেমা ‘Secret Window’ আমাদেরকে ভাবাতে বাধ্য করে যে, হত্যাকারী আসলে কে? কেন-ই-বা দুজন লেখকের লেখা নাম ভিন্ন কিন্তু মিলে যাচ্ছে বা ‘PLAGIARIZED’ হয়ে যাচ্ছে।


৩. ২০১০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘The Ghost Writer’ সিনেমা আমাদের দারুণ থ্রিল উপহার দেয়। এমন একটি গল্প লেখার কথা বলা হচ্ছে যা পরবর্তীতে বিপাকে ফেলছে এই পর্দার পেছনে থাকা ঘোস্ট লেখক কে। যুক্ত আছে ‘CIA’ পর্যন্ত!


৪. ২০২১ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘Alter Ego’ আমাদেরকে চমকে দেয়। একজন দুর্দান্ত লেখক কীভাবে ক্রাইমের সাথে জড়িত তা দেখলেই গা শিউরে উঠবে আপনার।


৫. ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘The Chronic Adventure Story’ তে লেখক তার লেখায় নয় বরঞ্চ নিজ জীবনের চরিত্রগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন যেন।



এছাড়া বলিউডেও একাধিক সিনেমা এ বিষয়ে নির্মিত হয়েছে এবং হচ্ছে,


১. Kaun? (১৯৯৯)

২. Baazigar (১৯৯৩)

৩. Khamosh (১৯৮৫)


দেখুন, একজন লেখক/ঔপন্যাসিক এঁদের একটি প্লট প্রয়োজন হয় হোক সেটা গল্প বা উপন্যাসের জন্য। এবং একটা পোক্ত গল্প বা এঁদের মতে মানানসই গল্প পেতে এঁরা কতদূর পর্যন্ত যেতে পারে সেটা দুই চারটে সিনেমা দেখে বুঝা দায়।


প্লটিং/ন্যারেটিভ কিছুই নয় আবার অনেক কিছু। একটা ন্যারেটিভ বা গল্পকে প্রাণ দেয় এমন শক্ত স্ট্রাকচার। একজন লেখক যে পরিমাণ কল্পনাপ্রবণ হোন তাতে তিনি মনের আকাশে অনেক কিছু তৈরি করতে পারেন। শুধু তাই নয়, তিনি যে কল্পনাপ্রসূত গল্প তৈরি করলেন সেটা ঐ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারেন যে পর্যন্ত গেলে একজন পাঠক ‘সত্য’ বলে মানতে বাধ্য হোন।


দ্বিতীয় যে বিষয়টি হচ্ছে, একজন লেখক প্রচুর মিথ্যে কথা নির্দ্বিধায় বলতে পারেন। তাঁর লেখার মাধ্যমে যে কাউকে প্রভাবিত করতে পারেন। তবে জরুরী নয়, তিনি মিথ্যে অবশ্যই বলবেন। কিন্তু তিনি যদি চান তাহলে আপনার মাথা বিগড়েও দিতে পারেন। আর মিথ্যে ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠার জন্যও অনেকদূর পর্যন্ত যেতে পারেন।


তৃতীয়, এঁদের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা গড়পড়তা মানুষের চেয়ে একটু হলেও বেশি থাকে। তাই আপনি তাঁর সাথে কি শব্দ চয়ন করছেন কথা বলায় তা শুনেই এঁরা বুঝে যেতে পারে আপনি কোন ক্লাসে অবস্থান করেন এবং একজন মানুষ হিসেবে ঠিক ক্যামন?


চতুর্থ, এঁরা প্রচুর এডভেঞ্চার প্রিয় হয়। কারণ নতুন গল্প চারদেয়ালে বসে থেকে তো আর মাথায় আসে না। যেমন ‘You’ সিরিজের যে প্রটাগনিস্ট/এন্টাগনিস্ট যাই বলুন, ওর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা শুধু তীক্ষ্ণ-ই নয়; আমরা আকর্ষিত হই।


পঞ্চম, এঁরা বস্তুবাদী নয়। মানে বাইরের দেখানে সাজগোছে বিশ্বাসী নয়। মানুষের ভেতরের জায়গা/আলোকে বেশি প্রাধান্য দেয়। এঁরা মানুষকে একটি নির্দিষ্ঠ মাপকাঠিতে মাপতে যায় না; বিশেষ করে অর্থ/সম্পদের দিক থেকে।


৬ষ্ঠ, এঁরা এঁদের আবেগ কে শব্দে বন্দী করতে পারেন। ফলে উপস্থাপন করার ভঙ্গীতে কয়েকধাপ এগিয়ে থাকেন একজন গড়পড়তা মানুষের চেয়ে। এজন্য মানুষ এঁদের প্রতি আরো বেশি আকর্ষিত হয়। কারণ আবেগ তো আমাদের সবার আছে কিন্তু প্রকাশ করার জন্য প্রয়োজনীয় শব্দ কি আছে?


এখন মিথ্যে বলার পাশাপাশি একটি প্লট/ন্যারেটিভ তৈরি করা। এমন প্লট যে মিথ্যে সত্যের সঙ্গে সঙ্গ দেয়। জরুরী নয় ওটা পুরোপুরি সত্য, কিন্তু অসত্যও নয়। আর বলার ভঙ্গিমায় মিষ্টতা। প্রকাশভঙ্গী থেকে শব্দচয়ন সবই দুর্দান্ত। সমাজে বড় বড় ন্যারেটিভ এঁরাই সাধারণত তৈরি করে থাকেন।


এখন যদি আমি এমন কিছু প্রস্তাব দেই যে, “পৃথিবীর সবচেয়ে বড় লেখক এখন পর্যন্ত তিনি তার লেখা প্রকাশ-ই করেন নি।” এই প্রস্তাব পেয়ে প্রথমে আপনি অনেক অনেক ভাববেন, কেউ কেউ তো পুরোপুরি নাকোচ করে দেবেন, কেউ কেউ বলবেন, “হ্যাঁ, আংশিক সত্য হতে পারে!” আর কেউ কেউ এক বাক্যে মেনে নেবেন।


এক্সাক্টলি! এই যে কেউ কেউ এক বাক্যে মেনে নেবেন এঁদের সংখ্যা অনেক কম এবং আমার মতে এঁরাই বিজ্ঞ। সুতরাং প্লটিং বা একটা ন্যারেটিভ শুধু একজন লেখক সেট করেন কি? প্লটিং কি শুধু গল্প আর উপন্যাসে থাকে? ওটা আপনার সম্পর্কের মধ্যে থাকে না? ওটা আপনার পরিবারে থাকে না? ওটা আপনার সমাজে থাকে না? একটু বুকে হাত দিয়ে বলুন দেখি?


ডার্ক সাইকোলজির এই দুনিয়ায় প্লটিং হতে পারে আপনার ব্যক্তি জীবনের জন্য একটি বিষের নাম। আস্তেধীরে আপনি প্লটিং এর ফাঁদে পড়লে শেষ হয়ে যাবেন। কাকে নিয়ে কে কখন প্লট তৈরি করছে তা শুধু ঐ উপরতলার রাজনীতিবিদরা করেন না; একজন রিক্সাওয়ালা থেকে চা-ওয়ালা সবাই করছেন। যখন নিজ স্বার্থে আঘাত লাগে তখন আমরাও না জানি কত কত প্লট/ন্যারেটিভ তৈরি করেছি, করছি। নিজের জন্য নিজেরা ওকালতি করে বেড়াচ্ছি; যা হয়তো সবসময় ঠিক নয়, সত্য নয়।


কথায় আছে, “দুষ্ট লোকের মিষ্টি কথা।” অন্যকে ম্যানিপুলেট করবেন না। না পারলে ছাড়বেন; সাইকোপ্যাথ হয়ে যন্ত্রণা দেবেন না। ওসব সিনেমায় মূল চরিত্রের সাথে প্রকৃতি সায় দিলেও, আপনাকে দেবে তো?


ছবি: Formasup
Also Read It On: প্লটিং/ন্যারেটিভ ইন ডার্ক সাইকোলজি (পর্ব – ৫)

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লেখা সমাজের উপকার করে।
মন্দ লেখা সমাজের ক্ষতি করে। ধর্মীয় বই যারা লিখেন তারা সমাজের ক্ষতি করছেন।

ভাল কিছু মুভির নাম লিখেছেন। ধন্যবাদ।

২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্টে অন্য কারো মন্তব্য নেই কেন?

০১ লা মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৫৯

মি. বিকেল বলেছেন: আমি নিজেই আপনাকে সময় দিতে পারি না। অন্যরাও আমাকে হয়তো এজন্য সময় দিচ্ছে না।

৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৫৪

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

০১ লা মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৫৮

মি. বিকেল বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.