নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মেহেদি হাসান, মি. বিকেল নামে পরিচিত। আমি একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ও অ্যাপ ডেভেলপার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, এবং নাট্য পরিচালক। মাইক্রোসফটে ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত এবং গল্প বলা আমার প্রধান পরিচয়।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নাম মি. বিকেল।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেয়েদের জন্য রোল মডেল ‘স্বপ্নের রাজকুমার’: ডিজনি ক্ষতিকর সংস্কৃতি ছড়াচ্ছে

২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:০৯



সাহিত্য এবং শিক্ষামূলক বইয়ের বেশিরভাগ এবং মিডিয়া কেন্দ্রিক নাটক, সিনেমা, এবং সিরিজ প্রায়শই পুরুষদের দ্বারা রচিত এবং পরিচালিত হয়। এর ফলে, নারীরা যা পড়েন বা দেখেন তা থেকে তাদের মধ্যে ‘নারী’ এবং তার বৈশিষ্ট্য কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়ে ধারণা গঠিত হয়। এই ধারণাগুলি অনেক সময় নারীদের উপর গভীর প্রভাব ফেলে।

সমাজে নারীরা প্রথমে তাদের মায়ের মাধ্যমে এবং পরে নিজের পরিবেশে নারীদের ভূমিকা দেখে নিজেদের ভূমিকা সম্পর্কে ধারণা পান। নারীবাদীরা মানেন যে, একজন নারী জন্মগতভাবে নারী নন বরং তারা সাহিত্য এবং মিডিয়া থেকে শিখে নারীতে পরিণত হন। একইভাবে, পুরুষরাও জন্মগতভাবে পুরুষ নন, তারা এসব পড়ে এবং দেখে পুরুষে পরিণত হন।

আজকের আলোচনার বিষয় হলো ‘ডিজনি প্রিন্সেস সিনড্রোম (Disney Princess Syndrome – DPS)’ সম্পর্কে, যদিও এটি কোনো চিকিৎসাগত মনোবিজ্ঞানের সমস্যা হিসেবে পরিচিত নয়। ‘ডিজনি (Disney)’ হলো হলিউডের একটি প্রধান শাখা যেখানে অ্যানিমেশন সিনেমা তৈরি হয়। এই সিনেমাগুলি দেখার ফলে মেয়েদের মধ্যে কিছু অবাস্তব ধারণা তৈরি হতে পারে, যেমন তারা মনে করতে পারে যে তারা কোনো জটিল সমস্যায় আটকা পড়েছে এবং একজন রাজকুমার এসে তাদের উদ্ধার করবে।

ডিজনির সিনেমা দেখার ফলে মেয়েরা ‘সিনড্রেলা কমপ্লেক্স (Cinderella Complex)’ -এ ভুগতে পারে, যা সাধারণত দুটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে:

১. ভয় (Fear) - স্বাধীনতা পাওয়ার ভয়।
২. উদ্ধার (Rescue) - কোনো রাজকুমারের হাতে উদ্ধার হওয়ার তীব্র ইচ্ছা।

‘ডিজনি প্রিন্সেস সিনড্রোম (Disney Princess Syndrome – DPS)’ -এর কিছু লক্ষণ হলো:

১. রুপকথা কে সত্য মনে করা: এই ধরণের মেয়েরা নিজেদের সৌন্দর্যের প্রতি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি মনোযোগী হয় এবং বস্তুবাদী জিনিসপত্রে বেশি আগ্রহী হয়। তারা নিজেদেরকে রুপকথার রাজকুমারীর মতো সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দেখতে চায়।

২. নির্ভরশীলতা: এই ধরণের মেয়েরা একজন রাজপুত্রের জন্য অপেক্ষা করে, যার আগমনে তাদের জীবনে সফলতা ও সুখ আসবে বলে বিশ্বাস করে।

৩. উপস্থিতি: এই ধরণের মেয়েরা শুধু নিজের সৌন্দর্য নিয়ে কাজ করে না, বরং তারা তাদের সৌন্দর্যের বাহ্যিক প্রশংসা ও স্বীকৃতি চায়।

৪. কৃত্রিম বা সুপারফিশিয়াল মূল্যবোধ বহন করা: এই ধরণের মেয়েরা বুদ্ধিমত্তা, দয়াপ্রদর্শন ও স্বাধীনতার মূল্যবোধকে তুচ্ছ মনে করে এবং সমাজে বা ব্যক্তি জীবনে নিজের পরিচয় গড়ে তোলার প্রতি আগ্রহী হয় না।

৫. পাপা কি পরী (Papa Ki Pari - Hindi): বাবা-মা যদি তাদের মেয়েকে সমাজের সব ভালো দিকগুলো দেখায় এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা বা হার্ড টাইমগুলো হ্যান্ডল করা না শেখায়, তাহলে এই সিনড্রোম বয়স বাড়ার সাথে সাথে বাড়বে। বাবা-মা বা পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে একটা মেয়েকে বড় করে তোলার ক্ষেত্রে। তাকে দায়িত্ব দেওয়া এবং পেইন ও প্লেজার দর্শনের মধ্যে দিয়ে তার সেরাটুকু পাওয়া যেতে পারতো।

সাধারণত নিম্নোক্ত ডিজনি চরিত্রগুলো ডিজনি প্রিন্সেস সিনড্রোমের জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়:

• Cinderella
• Ariel from ‘The Little Mermaid’
• Belle from ‘Beauty and the Beast’
• Snow White

এই চরিত্রগুলো প্রায়শই একটি অবাস্তব ও রোমান্টিক জীবনযাত্রার চিত্র তুলে ধরে, যা বাস্তব জীবনের চ্যালেঞ্জ ও সমস্যাগুলো মোকাবিলা করার পরিবর্তে অবাস্তব প্রত্যাশা ও স্বপ্নে বিভোর থাকার প্রবণতা তৈরি করে। এই চরিত্রগুলো সাধারণত একটি নির্ভরশীল ও সহায়তা-প্রার্থী নারীর চিত্র তুলে ধরে, যা স্বাধীনতা ও আত্মনির্ভরতার বিপরীতে দাঁড়ায়।

এছাড়াও, এই সিনড্রোমের আরেকটি দিক হলো বাস্তব জীবনের সম্পর্ক ও সামাজিক বিনিময়ের প্রতি একটি অবাস্তব ও অতিরিক্ত রোমান্টিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা। এই ধরণের মনোভাব ব্যক্তির সামাজিক বিকাশ ও সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

এই সিনড্রোম মোকাবিলা করার জন্য বাবা-মা ও অভিভাবকদের উচিত তাদের সন্তানদের বাস্তব জীবনের মূল্যবোধ, স্বাধীনতা, এবং আত্মনির্ভরতার শিক্ষা দেওয়া। তাদের উচিত সন্তানদের বুঝতে শেখানো যে সম্পর্ক ও সাফল্য নিজের প্রচেষ্টা ও দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে অর্জন করতে হয়, এবং একজন ‘রাজপুত্র’ এর অপেক্ষায় থাকা উচিত নয়।

ছবি: Bing Enterprise (Copilot Ai)

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৬

ঘুম ভাঙ্গা শহরে বলেছেন: চমৎকার পোস্ট।

০৪ ঠা জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৮

মি. বিকেল বলেছেন: জেনে ভালো লাগলো। শুভেচ্ছা!

২| ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩

নতুন বলেছেন: বাবা মায়ের উচিত সন্তানদের ছোট বেলা থেকেই বিভিন্ন জিনিস সম্পর্কে জ্ঞান দেওয়া।

নৈতিকরা ভীত মজবুত করার পরে তাকে ভালো মন্দ সব বিষয়ে সম্পর্কেই জ্ঞান দেওয়া যাতে সে দুনিয়ার বাস্তবতা বোঝে।

নতুবা মানুষ তাদের ঠকাবে।

০৪ ঠা জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৯

মি. বিকেল বলেছেন: আপনার মন্তব্যের সাথে পুরোপুরি একমত প্রকাশ করছি।

৩| ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

মুসাফির নামা বলেছেন: সহমত

০৪ ঠা জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৯

মি. বিকেল বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.