নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বিশ্বাসী, কিন্তু মনের দরজা খুলে রাখাতে বিশ্বাস করি। জীবনে সবথেকে বড় অনুচিত কাজ হল মনের দরজা বন্ধ রাখা। আমি যা জানি সেটাই সত্য, বাকি সব মিথ্যা…এটাই অজ্ঞানতার জন্ম দেয়।

মুক্তমনা ব্লগার

“Ask yourself often, why do I have to think like other people think?”

মুক্তমনা ব্লগার › বিস্তারিত পোস্টঃ

কারো চাপিয়ে দেওয়া মানীকে মান্য করিবো না

১১ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:৪২

হুমায়ূন আহমেদের ‘হিজিবিজি’ নামক প্রবন্ধ সংকলনে একটা ছোট্ট প্রবন্ধ আছে অধ্যাপক ইউনূসকে নিয়ে লেখা; অধ্যাপক ইউনূস নামে। লেখাটির সময়কাল জানি না। হুমায়ূন আহমেদ লেখাটি শুরু করেছেন এইভাবে –

একটি দৈনিক পত্রিকা অধ্যাপক ইউনূসকে নিয়ে প্রথম পাতায় কার্টুন ছেপেছে। সেখানে তিনি হাসিমুখে রোগাভোগা একজন মানুষের পা চেপে শূন্যে ঝুলিয়েছেন। মানুষটার মুখ থেকে ডলার পড়ছে। অধ্যাপক ইউনূস বড় একটা পাত্রে ডলার সংগ্রহ করছেন। কার্টুন দেখে কেউ কেউ হয়তো আনন্দ পেয়েছেন। আমি হয়েছি ব্যথিত ও বিস্মিত। পৃথিবী-মান্য একজন মানুষকে এভাবে অপমান করা যায় না। ছোটবেলা থেকেই আমরা শুনি, ‘মানীকে মান্য করিবে।’

হুমায়ূন আহমেদ বর্ণিত পত্রিকাটি আমি পড়িনি। তাই ইউনূসের কার্টুনটিও দেখিনি। কিন্তু হুমায়ূনের বর্ণনা পড়ে মনে হচ্ছে, কার্টুনটি একেবারে যথার্থ হয়েছে। কার্টুনিস্টকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি এমন অসাধাণ শিল্পকর্মের মাধ্যমে যথাযথ ইউনূসকে মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য। ক্ষুদ্র ঋণের নামে তিনি কত অগণিত হতদরিদ্র মানুষকে তাদের একমাত্র সামান্য সম্বল ভিটে-মাটিটুকু ছাড়া করেছেন আর কোনো হিসেব কি হুমায়ূন আহমেদের কাছে ছিলো? ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অত্যন্ত চড়া সুদে ঋণ নিয়ে অসংখ্য দরিদ্র লোক কিছুদিন চড়া সুদ দিয়ে যেতে যেতে সর্বস্বান্ত হয়ে গেলে ইউনূস সাহেব তার ব্যাংকের লাঠিয়াল বাহিনি পাঠিয়ে তাদের থালাবাসন, ছেঁড়া কাঁথা-বালিশ, ভাঙা হাঁড়ি-পাতিল, ছেঁড়া জুতা-স্যান্ডেল লুট করিয়ে নিয়েছেন। যাদের ভিটে আছে তাদের ভিটে দখল করে নিয়েছেন। হতদরিদ্রকে করেছেন উদবাস্তু। আমি ব্যক্তিগতভাবে কয়েকজনকে জানি, যারা চড়া সুদের ঋণের দায়ে ভিটেমাটি হারিয়ে উন্মাদ হয়ে স্ত্রী-সন্তানদের রাস্তায় ফেলে দেউলিয়া হয়ে গেছে।

কার্টুনটা যেভাবে আঁকা হয়েছে – একজন রোগাভোগা মানুষের পা চেপে ধরে শূন্যে ঝুলিয়ে রেখেছেন ইউনূস। লোকটির মুখ থেকে ডলার পড়ছে, আর একটা বড় পাত্রে তা সংগ্রহ করছেন ইউনূস সাহেব। একেবারেই বাস্তব ছবি নয় কি এটা?

হুমায়ূন আহমেদ এই কার্টুন দেখে ব্যথিত হয়েছেন বলে জানিয়েছে। ব্যথিত হয়েছি আমিও। আমি ব্যথিত হয়েছি ইউনূসের হাতে শূন্যে ঝুলে থাকা রোগাভোগা লোকটার জন্য। একজন কাঙাল মানুষ, যাদের হারাবার কিছুই নেই, যাদের পেটে জনম জনমের খিদা তাদের পেট টিপেও ইউনূস সাহেব ডলার বের করেছেন। যে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি করে তিনি ধন-কুবের হয়েছেন সে সমস্ত কাঙালের জন্য আমি ব্যথিত বোধ করছি। এই দস্যুপনার জন্য তিনি নোবেল পুরস্কারও পেয়েছেন। তাও আবার শান্তিতে। ঠিক হেনরি কিসিঞ্জার যেমন শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন তেমন আরকি! এজন্যও ব্যথিত বোধ করছি। হায়, নোবেল!

হুমায়ূন বলেছেন, ‘পৃথিবী-মান্য একজন মানুষকে এভাবে অপমান করা যায় না।’ হেনরি কিসিঞ্জারও পৃথিবীতে অনেকের কাছে মান্য। তাই বলে কোনো বিবেকবান মানবিক মানুষের কাছে সে মান্য হতে পারে? গোলাম আজম, সাইদী, কাদের মোল্লা প্রমুখ যুদ্ধাপরাধীরাও রাজাকারদের কাছে মান্য। তাই বলে আমরাও এদের মান্য করবো? আমার নিজের কাছে মান্য একজন ব্যক্তি যদি কোনো অপরাধ করে তবে তার সমালোচনা করতে আমি নিশ্চয়ই পিছপা হবো না, যেমন কার্পণ্য করবো না তার ভালো কাজের প্রসংসা করতে। ছোটবেলা থেকে যে আমাদের শেখানো হয়, মানীকে মান্য করিবে – তা অত্যন্ত ভুল। প্রসংশা ও ভালোবাসা কিংবা ঘৃণা ও নিন্দা যে যার যার কর্মকাণ্ড অনুযায়ী পাবে। এসবও আবার আপেক্ষিক। যেমন যুদ্ধাপরাধীরা আমাদের কাছে ঘৃণ্য, আর পুরানো ও নতুন প্রজন্মের রাজাকারদের কাছে পূজনীয়। হুমায়ূন ব্যথিত বোধ করেছেন ডাকাত ইউনূসের জন্য। আর আমি ব্যথিত বোধ করছি যারা তার ডাকাতির স্বীকার হয়েছেন তাঁদের জন্য।

আর কেউ একজন এসে আমাকে বললো, এই যে, অমুক তমুক ও সমুককে মান্য করিবেক কিন্তু। আর এজন্যই আমি কাউকে মান্য করিবো? আমি যেকোনো মানুষকে সম্মান বা অসম্মান করবো তার কাজের জন্য। এবং সেটা আমারই বিবেক ও বিবেচনায়। অন্য কারো চাপিয়ে দেওয়া মানীকে আমি মান্য করবো কেন? অথবা কারো চাপিয়ে দেওয়া অমানীকে অমান্য করবো কেন? নিজের বিবেক বুদ্ধির জলাঞ্জলি দিয়ে দিতে আমাদেরকে ছোটবেলা থেকেই শিক্ষা দেওয়া হয়।

কার্টুন আঁকা একটা শিল্প। একজন কার্টুনিস্ট তার কার্টুনের মাধ্যমে জীবন্ত করে তোলেন এক একটা ঘটনা, ঘটনার নায়ক এক একজন ব্যক্তিকে। কার্টুনে থাকে বিদ্রূপ হাস্য পরিহাস। এটাও এই শিল্পেরই অপরিহার্য অঙ্গ। তাই বলে পৃথিবীতে যত কার্টুন আঁকা হয় সবই যে সত্যি তাও নয়। কিন্তু ইউনূসকে নিয়ে আঁকা এই কার্টুনটি একেবারে বাস্তবতার ছবি। কিন্তু কথাশিল্পী হুমায়ূন এর শিল্প ও সত্য-গুণের প্রসংসা না করে ব্যথা প্রকাশ করলেন এক দস্যুর জন্য; কাঙালের ধন লুট করে যে হয়েছে পৃথিবী-মান্য।

হুমায়ূন আরো লিখেছেন, ‘একটি পত্রিকায় পড়লাম, গান্ধীজীকে নিয়ে বই লেখা হয়েছে। সেই বইয়ে যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করা হয়েছে, গান্ধীজী ছিলেন সমকামী। হায় রে কপাল! অধ্যাপক ইউনূসকে গান্ধীজীর মতো গভীর গর্তে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা হলেও আমি বিস্মিত হবো না।’

গান্ধীজী সমকামী ছিলেন কিনা আমি জানি না। যদি তিনি সমকামী না হন তবুও কেউ তাঁকে সমকামী ভাবলেই কি তিনি গভীর গর্তে পড়ে গেলেন হুমায়ূনের কাছে? হুমায়ূনের কাছে কি সমকামী হওয়া এতোই ঘৃণ্য? আর বিষমকামী হওয়া বড় মহান ব্যাপার? একজন বিজ্ঞানীর এমন দৃষ্টিভঙ্গী দেখে গভীর গর্তে পড়তেই হয় আসলে। কেউ সমকামী হলে হুমায়ূনের কপালের হায় হায় হয়ে যায়? সমকামিতা বিষমকামিতা বা উভকামিতা এসব মানুষের যৌনাভ্যাস। একেকজনের একেক রকম। এখানে নিন্দা বা প্রসংশার কিছু নাই। গর্তে পড়ার কিছু নাই। হায় রে কপালের কিছু নাই। যার যার যৌন জীবন সে সে উপভোগ করবে তাদের নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী। জোর জবরদস্তি না থাকলেই হলো সম্পর্ক স্থাপনের মধ্যে। শুনেছিলাম, গান্ধীজী তরুণী মেয়েদেরকে উলঙ্গ করে তাঁর বিছানায় শুইয়ে রাখতেন, তিনি নিজেও উলঙ্গ হয়ে থাকতেন সারারাত। এবং তাদের মধ্যে কোনো যৌন সম্পর্ক হতো না। আর এভাবেই নাকি তিনি নিজের সতত্ব পরীক্ষা করতেন। আসলে এভাবে তিনি নিজের সতত্ব নয়, পুরুষত্বই পরীক্ষা করতেন। এইসব ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে নিশ্চয়ই তিনি উত্থান-রহিত হয়ে যাবার পর নেংটু তরুণীদের দ্বারা রাতভর পরিবেষ্টিত থেকে আপ্রাণ প্রচেষ্টা করেছিলেন উত্থান ঘটাতে। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। অথবা যদি তিনি সমকামী হয়ে থাকেন তাহলে নেংটু যুবতী সুন্দরী রমণীদের সাথে নেংটু হয়ে শুয়ে থাকলে উনার শারীরিক অনুভূতি না জাগারই কথা।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:৫০

শিপন মোল্লা বলেছেন: যার যার যৌন জীবন সে সে উপভোগ করবে তাদের নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী। জোর জবরদস্তি না থাকলেই হলো সম্পর্ক স্থাপনের মধ্যে। শুনেছিলাম, গান্ধীজী তরুণী মেয়েদেরকে উলঙ্গ করে তাঁর বিছানায় শুইয়ে রাখতেন, তিনি নিজেও উলঙ্গ হয়ে থাকতেন সারারাত। এবং তাদের মধ্যে কোনো যৌন সম্পর্ক হতো না। আর এভাবেই নাকি তিনি নিজের সতত্ব পরীক্ষা করতেন। আসলে এভাবে তিনি নিজের সতত্ব নয়, পুরুষত্বই পরীক্ষা করতেন। এইসব ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে নিশ্চয়ই তিনি উত্থান-রহিত হয়ে যাবার পর নেংটু তরুণীদের দ্বারা রাতভর পরিবেষ্টিত থেকে আপ্রাণ প্রচেষ্টা করেছিলেন উত্থান ঘটাতে। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। অথবা যদি তিনি সমকামী হয়ে থাকেন তাহলে নেংটু যুবতী সুন্দরী রমণীদের সাথে নেংটু হয়ে শুয়ে থাকলে উনার শারীরিক অনুভূতি না জাগারই কথা।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:০০

মুক্তমনা ব্লগার বলেছেন: খুব ভাল বলেছেন।

২| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:৫৩

গেম চেঞ্জার বলেছেন: আমি কেবল একটা ব্যাপার নিয়ে বলব সেটা হলো সমকামিতা!
আমার মতে এটা একটা যৌন অসুস্থতা! এই যেমন ধরেন কেউ ভাবে পৃথিবীতে সে বিশেষ কারণে এসেছে! এখন এটা কিন্তু অসুস্থতা। মানসিক অসুস্থতা! অন্যভাবে দেখুন, কেউ ঠোঁট দিয়ে তোতলায়! অথচ সে কিন্তু দেখতে আর দশটা মানুষের মতোই! আমি একেও সুস্থ মানুষ বলতে রাজি না। সেও অসুস্থ!!!

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:০১

মুক্তমনা ব্লগার বলেছেন: সহমত

৩| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১:৫৯

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এই জন্যই তো সাকা বলেছিলেন, মহাত্মা গান্ধী, ন্যালসন ম্যান্ডেলা, বঙ্গবন্ধু কেউই সমালোচনার উর্ধ্বে ছিলেন না। কাজেই আপনি কোনটা গ্রহণ করবেন, সেটা আপনারই ব্যপার। এখানে হুমায়ুন আহমেদ তাঁর মতামত ব্যক্ত করেছেন। আপনি আপনার। আপনার চাপিয়ে দেয়া মতামতও আরেকজনের পছন্দ নাও হতে পারে...

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:০২

মুক্তমনা ব্লগার বলেছেন: তাই আমিও চাপিয়ে দেওয়াতে বিশ্বাসী নই।

৪| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৪

বিলুনী বলেছেন: লিখাটির অন্তর্নিহিত অর্থটা সকলেই বুঝুক এটাই চাই । কার কি গুণ ইতিহাসে কালে কালে তা সকলিই হবে দৃশ্যমান , বর্তমানটা দ্রতই চলে যায় ইতিহাসের অতলে , সেখান হতে আবার কেও কেও ভেসে উঠে সত্যের আলোকে, বাকী সব চলে কালো গহ্বরে। শুনেছি বিদেশী নামকরা অনেক অর্থনীতির প্রফেসরগন বলেছিলেন বাংলাদেশের দরিদ্র জনগন বোধহয় পরতে যাচ্ছে ৪০% রিয়েল ইন্টারেস্টের যাতাকলে । তাঁর কথার কিছু প্রকাশ ঘটে কালে কালে যার স্বিকৃতি মিলে নোবেলে, তারা চলে যান কিসিঞ্জারের মত শান্তবাদীদের মিছিলে এক কাতারে !!!! এটাই বা কম কিসে , বিশ্বের সর্বধুনিক প্রযুক্তি মোবাইল ফোন ৠণের টাকায় করতে পেরেছেন তিনি বিপনন দেশের হত দরিদ্রদের কাছে!!! যারা তার অর্ধেক টাকায় করতে পেরেছেন বিপনন , তাদেরকে নোবেল কমিটি না চিনে । মানির মান পুজিবাদী অামিরিকানরাই ভাল বুঝেন , তাই তাকে দিয়েছেন সে দেশর সর্বোচ্চ সন্মান , আর নির্বোধ আলিম্পিক কমিটি তার হাতে দিয়েছে তুলে একখান হারিকেন, আর দিকে দেশবাসী তার রাজনীতি করার খায়েসে দিয়েছে ডেলে পানি করে তার ডাক প্রত্যাখান । পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের আর্থায়ন বন্ধের বিষয়ে কে কলকাঠি নেরেছে তা হতেছে প্রকাশমান দেশবাসীর কাছে , তবে শুকরিয়া জানাই তার পরে যিনি অশুভ শক্তির সাথে লড়াই করে এনেছেন ফিরিয় দেশের সন্মান, পদ্মা সেতুর কাজ নীজেদের অর্থায়নে শুরু করে । এ জন্য লোকে বলে মানির মান আল্ল্‌ই দেন , ছেড়ে দেন না তা পুজিবাদী নোবেল কমিটির পরে ।

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫১

মুক্তমনা ব্লগার বলেছেন: খুব ভাল বলেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.