নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রবিন.হুড

রবিন.হুড › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষ হওয়া কঠিন ব্যপার

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৩


সৃষ্টিকর্তা আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে মানুষ সৃষ্টি করলেও পরিপূর্ণ মানুষ হতে কতগুলো ধাপ রেখেছেন। অন্যান্য প্রাণী জন্মগ্রহণ করেই পরিপূর্ণ আকৃতি , বৈশিষ্ট্য বা গুনাগুন অর্জন করে। যেমন গরুর বাছুর জন্মের দিন থেকেই হাটতে পারে। গাধার বাচ্চাকে গাধায় পরিণত হতে কোনো কিছুই করতে হয় না। কিন্তু মানব সন্তানকে অনেক সাধনার পরে মানুষ হতে হয়। জন্মের পর থেকেই মানব শিশু অসহায়। নিজে কথা বলতে পারে না, হাটতে পারে না, কিছুই করতে পারে না অন্যের সাহায্য ছাড়া। ধীরে ধীরে মা-বাবা আত্মীয় স্বজনের সহযোগিতায় কথা বলতে শেখে, হাটতে শেখে, খাওয়া-দাওয়া করে শরীর গঠন, চিন্তা চেতনার মাধ্যমে মানষিক বিকাশ ঘটিয়ে একজন মানুষের আকার ধারণ করলেও প্রকৃত মানুষ হতে আরও সাধনা করতে হয়। যে মানব শিশু জন্মের পর তিনমাস পর্যন্ত নিজের মাথা উঁচু করতে পারে না তাকে বড় হয়ে সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে মানুষের মতো মানুষ হতে প্রতি পদে পদে অপরের সহযোগিতা নিতে হয়। মানুষ হিসেবে মানবীয় গুনাবলী অর্জন করাই সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। পারিপার্শিক পরিবেশ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পরিবার থেকে নৈতিক শিক্ষা, ধর্মীয় শিক্ষা,সামাজিক মূল্যবোধ, পারিবারিক শিক্ষা ও সুশিক্ষা গ্রহণ করার মাধ্যমে মানবীয় গুনাবলী অর্জন ও ফুটিয়ে তুলতে হয়। এক্ষেত্রে অসহায় মানবশিশুর মানসিক বিকাশের মাধ্যমে আদর্শ মানুষ গড়তে শিক্ষক এবং মা-বাবার ভূমিকা অগ্রগন্য। কার কি দায়িত্ব সে নিজেই জানে না। এ প্রসঙ্গে ছোট্ট একটা গল্প বলি, একবার এক রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টারকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ট্রেন কখন আসবে? তিনি উত্তর দিলেন ট্রেন কখন আসবে সেই তথ্য ছাড়া আমি সব কিছু বলতে পারব। অর্থাৎ স্টেশন মাস্টার তার মূলদায়িত্ব পালনে ব্যর্থ,অন্য দায়িত্ব পালন এখানে জরুরী না। তেমন একজন স্কুল মাস্টার (শিক্ষক) কে প্রশ্ন করুন তাঁর মূল দায়িত্ব কি? বলতে পারবেন না। একজন শিক্ষকের মূল দায়িত্ব হলো শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী করে তোলা। তিনি তা না করে সাজেশন দিয়ে শিক্ষার্থীদের ফাঁকফোকর শিখিয়ে শর্টকাটে পরীক্ষায় ভালো নম্বর ও কাগুজে সার্টিফিকেট অর্জনের রাস্তা সুগম করেন। যেখানে শিক্ষার্থীদের জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ (আদর্শ মানুষ হওয়া) করা শেখাবে, দু-চারটা মানবীয় গুনাবলী আয়ত্ব করতে শেখাবে সেখানে তিনি অসম প্রতিযোগিতার নামে অতিরিক্ত বইয়ের বোঝা ঘাড়ে চাপিয়ে প্রতিভা বিকাশের রাস্তা বন্ধ করে দেন। একটা বাস্তব ভিত্তিক আধুনিক কৌতুক, এক অভিভাবক একটা স্কলে গিয়েছেন সন্তান কে ভর্তি করাবেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, ছাত্রকে বই,খাতা, কলম,পেন্সিল,স্কুল ড্রেস, জুতা সবকিছুই স্কুল থেকে দেওয়া হবে। অভিভাবক জানতে চাইলেন সবকিছুই তো দিবেন কিন্তু শিক্ষাটা কেমন দিবেন। স্কুল কর্তৃপক্ষের সোজা সরল সঠিক উত্তর, শিক্ষা টা বাইরের কোন কোচিং সেন্টার থেকে নিয়ে নেবেন। এই হচ্ছে মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা।
সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মা বাবার দায়িত্ব তাকে মানুষের মতো মানুষ করা। কিন্তু বেশিরভাগ মা-বাবাই তাদের সঠিক দায়িত্ব পালন করতে পারে না। ছেলে মেয়েকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠিত পেশাজীবী বানাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায় কিন্তু মূল উদ্দেশ্য মানুষ বানানোর চেষ্টা করে না। তাই ছেলে মেয়ে হয়তো ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হয় কিন্তু মানুষ হয় না তাদের মধ্যে কোন মানবীয় গুনাবলী থাকে না। তাইতো বর্তমানে অমানুষের তালিকা করলে ডাক্তার এক নম্বর এবং ইঞ্জিনিয়ার দুই নম্বরে। তাইতো কসাই ডাক্তার আর রক্তচোষা ইঞ্জিনিয়ার এর অভাব নেই যারা জনগণে পকেট কেটে, সরকারের উন্নয়ন বাজেট চুরি করে নিজেদের পকেট ভারী করলেও বাবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাতে কার্পণ্য করে না।
আমাদের সবাইকে মানুষ হতে হবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মানুষ করতে হবে তা না হলে সাবেক অর্থমন্ত্রীর মতো নিজের বাড়ি ঠাই পাওয়া যাবে না ( ছেলেকে শিক্ষিত করেছেন মানুষ করতে পারেন নি) বা কবি আল মাহমুদ, অভিনেতা আনোয়ার হোসেনের মতো একাকী ঘরে দূঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করতে হবে( যদিও তাঁদের প্রতিষ্ঠিত অমানুষ সন্তান ছিল)। বৃদ্ধাশ্রম গুলো ঘুরে এসে একটা শিক্ষা নেন তাদের প্রত্যেকের সন্তানকে সমাজে সু প্রতিষ্ঠিত করেছেন কিন্তু মানুষ করতে পারেন নি। তাই আমাদের মানুষ হওয়ার কোন বিকল্প না। আল্লাহ আমাদের সবাই কে মানুষ হওয়ার তৌফিক দিন এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে মানুষ হওয়ার সুযোগ দিন। আমিন

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৯

সাগর শরীফ বলেছেন: এই কঠিন ব্যাপারটিকেই আয়ত্ত করার চেষ্টা আপ্রাণ করে যাচ্ছি। দোয়া করবেন।

২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৫

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: বৃদ্ধ বয়সে বৃদ্ধাশ্রমে থাকাই উত্তম তাতেকরে অনেক বৃদ্ধদের সাথে মিলেমিশে থাকা যায়।বাসায় থাকলে কথা বলার লোক থাকে না।
বৃদ্ধদের সাথে কেই কথা বলতে চায় না। বৃদ্ধ হবার আগেই বৃদ্ধাশ্রমে থাকার ব্যবস্থা করে রাখুন।অবাস্তব কল্পনা করলে হবে না।বাস্তব বাদী হউন।আগার গাঁয়ে ভাল বৃদ্ধশ্রম আছে খরচ একটু বেশি।

৩| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:০০

রাজীব নুর বলেছেন: আমরা সবাইই তো মানুষ।
আসলে ভালো মানুষ হওয়া কঠিন ব্যাপার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.