নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আবুল কালাম শমসের (আকাশ) নামটা একটা টিভি নাটকের চরিত্র থেকে ধার করা হলেও আকাশ ছোট বেলা থেকে সৎ সাহসী ও মেধাবী (লোকে বলে, প্রমাণ করার সুযোগ নেই)। এক কথায় তার হ্রদয় আকাশের মতোই বিশাল। কিন্তু আকাশ কখনই তার মেধার পরিচয় দিতে পারে নাই। ছোট বেলায় আকাশের পিতার অকাল মৃত্যু তার পরিবারকে অকুল দরিয়ায় ভাষিয়ে দিলেও সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে খড়খুটো ধরে জীবন রক্ষা করে দিনপাত করতে থাকে।
প্রতিকূল পরিবেশে আকাশ নিজের পড়া নিজে আয়ত্ব করে সর্বক্ষেত্রে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করে। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় ছয়টি বিষয়ে লেটার মার্ক পেলেও প্রথম হতে পারে নি। প্রথম হয়েছিল পাঁচ বিষয়ে লেটার মার্ক পেয়ে। শ্রেণি শিক্ষক ফাস্টবয়কে একটি খাতা ও সেকেন্ড বয়কে ৬ টা লেটার পাওয়ায় বিশেষ বিবেচনায় একটি খাতা উপহার দেয়া হয়। আকাশের জীবনে এটাই প্রথম উপহার। আকাশ পড়ায় আরও মনোযোগী হয় এবং প্রাথমিক মেধা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত হয়। বৃত্তি পরীক্ষার মাধ্যমে আকাশ যে তার মেধার পরিচয় দিবে সে সুযোগ হলো না । বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় উপজেলা সদরে। কিন্তু আকাশকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা সদরে যাওয়ার মতো অভিভাবক খুঁজে না পাওয়ায় তার মেধা বৃত্তি পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার পরিচয় সুযোগ হলো না। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে স্কুলের পাশে হোস্টেলে থেকে অতিরিক্ত প্রস্তুতি নিতে থাকে । কিন্তু বিধি বাম, আল্লাহ না চাইলে কারও পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। প্রধান শিক্ষক নিকট আত্মীয়ের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হওয়ার দরুন অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা হলো না আকাশের। অষ্টম শ্রেণিতে আকাশ মেধার পরিচয় দেখাতে না পারলেও নবম শ্রেণিতে উচ্চতর গনিত বিষয়ে ৯৮ নম্বর পেয়েছিল।
এসএসসি পরীক্ষায় ৬ টা বিষয়ে লেটার ও স্টার মার্ক পেয়ে উপজেলার মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেও আকাশ তার মেধার পরিচয় দেখাতে পারল না কারন প্রতি বছর উপজেলা পর্যায়ে মেধাবীদের পুরস্কার দেয়া হলেও সে বছর দেয়া হলো না।
পারিবারিক আর্থিক সংকট ও নানা প্রকিূলতার মধ্যে আকাশ ঢাকার একটা কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে এইচএসসি পাশ করলেও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরিক্ষায় মেধার পরিচয় দেখাতে পারল না।
সে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবচেয়ে কঠিন বিষয় পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রী অর্জন করার পর মেধার পরিচয় দিতে এবং গবেষণা করে সফল হতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়(বুয়েট) এ ভর্তি হলো এমফিল করতে। গবেষণার বিষয়টি তো আকাশের হাতে নয় বাংলাদেশের সার্বিক পরিবেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক শিক্ষকদের মর্জির উপর নির্ভর করে। শ্রদ্ধীয় শিক্ষকগণ আকাশকে গবেষণার চাইতে চাকুরির দিকে নজর দিতে উৎসাহিত করেন। আকাশ গবেষণার পাশাপাশি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে সরকারি প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেতে প্রতিযোগিতামূলক বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। কোচিং সেন্টারের সহযোগিতা ছাড়াই নিজ প্রচেষ্টায় প্রিলিমিনারী , লিখিত পরীক্ষা ও চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও আকাশ মেধার পরিচয় দিতে পারল না কারন সে তার পছন্দমতো ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয় নি।
বুয়েটের সুপারভাইজার এমফিল গবেষণায় সিরিয়াস হতে বললে আকাশ কথা দেয় যে পিএইচডি গবেষণায় তার মেধার স্বাক্ষর রাখবে। বাণিজ্যে স্নাতক না থাকার কারনে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কর্পোরেট জগতে চ্যালেঞ্জিং চাকুরির মাধ্যমে আকাশ মেধার প্রকাশ করতে না পারলেও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রায়ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংকে প্রথম শ্রেণির (৯ম গ্রেড) চাকুরিতে যোগদান করেন। কিন্তু এখানে মেধার কোন প্রয়োগ নেই। হায় আপসোস, আকাশের বেলায় একটা প্রবাদ সত্য হয়ে যা, অভাগা (আকাশ) যেখানে যায় সাগর শুকিয়ে যায়।
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:২০
রবিন.হুড বলেছেন: বর্তমানে শেষ করার চেষ্ট করেছি। পড়ে মতামত দিতে পারেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৫৩
সোহানী বলেছেন: লিখাটা কি শেষ না করেই পোস্ট করেছেন?