![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২৪ পরগনা একটা বহুল প্রচারিত শব্দ। ভারতের পশ্চিম বঙ্গের একটা গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহর ও প্রাচীন জনপদ হিসেবে খ্যাত ২৪ পরগনা। আসলে এই পরগনা বলতে কি বোঝায় তা জানতে হলে পড়তে হবে নিচের লেখা।
পরগনা কিছু গ্রাম নিয়ে গঠিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত পূর্ব রাজস্ব একক। প্রাচীনকালেও এ ধরনের এককর অস্তিত্ব ছিল, যদিও এর নাম ছিল ভিন্ন। সুলতানি শাসনামলে পরগনা শব্দটির সর্বপ্রথম প্রচলন ঘটে। সুলতানদের অধীনে একগুচ্ছ গ্রাম মিলে একটি পপুলিগঠিত হতো। কয়েকটি গ্রাম মিলে একটি পরগনা গঠিত হতো। শেরশাহের আমলে অতিরিক্ত কর্মকর্তা যেমন সিকদার (সেনা প্রধান, পরগনা প্রধান ), আমিন (বা মুনসেফ), রাজস্ব নির্ধারণ ও আদায়ের জন্য দীউয়ানি বিচারক ও রাজস্ব অফিসার এবং কারকুন (দলিলপত্র সংরক্ষক) নিয়োগের মাধ্যমে পরগনা প্রশাসনকে আরও শক্তিশালী করা হয়। আকবর প্রবর্তিত সরকার ব্যবস্থায় পুরনো পরগনা প্রথা অক্ষুণ³ ছিল এবং তা আরও বিশদ করা হয়। টোডরমলের বন্দোবস্তে (১৫৮২) পরগনাকে সরকার-এর স্থানীয় একক হিসেবে গ্রহণ করা হয় । পরগনা প্রশাসনে নিয়োজিত কর্মকর্তা ছিলেন সিকদার (নির্বাহি প্রধান, পরগনা প্রধান ও বিচারক), আমিল (রাজস্ব নির্ধারক ও আদায়কারী), বিতিক্চি (প্রধান হিসাবরক্ষক ও নিবন্ধক), কানুনগো (রাজস্ব দলিলাদি সংরক্ষক), ফতাহদার বা খাজিনাদার (কোষাধ্যক্ষ)। পরগনার প্রধান ছিলেন সিকদার । কখনও কখনও তাকে পরগনাদারও বলা হতো।
প্রশাসনিক সুবিধার জন্য জমির বিভিন্ন ধরনের স্বত্বাধিকারীদের অধিকার ও দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রচলিত প্রথা ও রীতিনীতির অভিন্নতার ভিত্তিতে পরগনাগুলিকে দস্তুর বা এলাকায় ভাগ করা হতো। সরকার ও অপরাপর সকল পক্ষ প্রথাগতভাবেই পরগনা দস্তুর বা পরগনা নিয়ম কানুন মেনে চলতে বাধ্য ছিল। পরগনা দস্তুরে পরগনা নিরিখ বলে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। পরগনা নিরিখের মাধ্যমে জমির খাজনা, ফিস ও মজুরি, ওজন ও পরিমাপ নিয়ন্ত্রিত হতো। প্রতিটি পরগনার নিজস্ব নিরিখ ছিল যা সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণ জানত ও বুঝত, যদিও বহিরাগতদের কাছে এগুলি অদ্ভুত ও কৌতুকাবহ মনে হতো। এ পরগনা দস্তুর ও পরগনা নিরিখ প্রথাগতভাবে বহুকাল পর্যন্ত অপরিবর্তিত ছিল। খাজনা বৃদ্ধি ও কৃষিক্ষেত্রে নতুন পরিমাপের মানদণ্ড চালু করার ক্ষেত্রে জমিদারদের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে এগুলি ছিল নিশ্চিতভাবেই বড় বাধা। এ কারণে কর্নওয়ালিস প্রশাসন পরগনা দস্তুর ও পরগনা নিরিখসহ পরগনা পদ্ধতি বিলুপ্ত করে। চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কে কার্যকর করার জন্য এ ধরনের পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের আওতায় জমিদারগণ জমির একচ্ছত্র মালিক হন এবং তাদেরকে যে কোন প্রতিপক্ষের প্রভাবমুক্ত রাখা হয়। পরগনা দস্তুর ও পরগনা নিরিখ যেহেতু জমিদারি অধিকারে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছিল, তাই পরগনা ব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবস্থা বিলোপ করা হয়। পরগনা এক সময় ছিল সরকারি প্রতিষ্ঠান। চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার ফলে এ ব্যবস্থা অনাবশ্যক ও সঙ্গতিহীন হয়ে পড়ে।
কিন্তু বিভিন্ন পরগনার রায়তগণ পরগনা দস্তুর ও পরগনা নিরিখের সঙ্গে এতটাই সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিল যে, তারা কখনোই সরকারি ব্যবস্থাকে স্বীকৃতি দেয় নি। তারা তাদের ঠিকানায়, সম্পত্তির দলিলে এবং নিজেদের পরিচয় শনাক্তকরণে অনিবার্যভাবে পরগনার উল্লেখ করত। সরকারও এ বাস্তবতা মেনে নেয়। এভাবে ১৭৯৩ খ্রিষ্টাব্দে পরগনা পদ্ধতি বিলুপ্ত হলেও সরকারি কর্মকর্তারা জমিজমা জরিপ, গ্রাম চিহ্নিতকরণ, আদালতের ডিক্রি প্রদান ইত্যাদি কাজে পরগনা শব্দটি বরাবরই ব্যবহার করত।
২| ০৯ ই জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩২
বাকপ্রবাস বলেছেন: ছোট বেলায় পড়া, কাজী নজরুল ইসলাম চব্বিশ পরগনা জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৬
কামাল১৮ বলেছেন: এসব জানার এখন আর প্রয়োজন নাই।জমিদারও নাই প্রজাও নাই।