![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পদার্থঃ
পদার্থবিদ্যার ভাষায়,যার ভর আছে, আয়তন আছে এবং যায়গা দখল করে অবস্থান করে তাকে পদার্থ বলে। একটি পদার্থের চিহ্নযোগ্য অবস্থাকেই পদার্থের অবস্থা বলা হয়।আমরা আমাদের রোজকার জীবনে পদার্থের ৩ ধরনের অবস্থা দেখে থাকি: কঠিন,তরল, গ্যাসীয়। আরও দুইটি অবস্থা লক্ষ করা যায় তা হলো প্লাজমা অবস্থা ও বোস আইনস্টাইন কনডেনসেট। এছাড়াও আরও কিছু অবস্থা আছে, যা কেবলমাত্র চরম পরিস্থিতিতেই পাওয়া যায়। যেমন নিউট্রন ডিজেনারেট ম্যাটার এবং কোয়ার্ক গ্লুওন প্লাজমা, যেগুলো যথাক্রমে চরম নিম্ন তাপমাত্রা, চরম ঘনত্ব এবং চরম উচ্চশক্তির কোল্ড চার্জড পদার্থের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। আরও কিছু অবস্থা আছে বলে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, কিন্তু সেগুলো এখন পর্যন্ত তত্ত্বেই সীমাবদ্ধ আছে।
কঠিন পদার্থঃ
কঠিন পদার্থের ক্ষেত্রে গাঠনিক কণাগুলো একত্রে অবস্থান করে। তাদের আন্তঃআণবিক শক্তি অনেক বেশি থাকে, ফলে তারা মুক্তভাবে চলাচল করতে পারেনা, শুধু কম্পিত হতে পারে। ফলস্বরুপ, কঠিন পদার্থের একটি নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন থাকে। কঠিন পদার্থের আকার শুধুমাত্র ভাঙা বা কাটার সময় সৃষ্ট বলের কারণেই পরিবর্তিত হতে পারে।
স্ফটিকসদৃশ কঠিন পদার্থের ক্ষেত্রে কণাগুলো একত্রে একটি নিয়মিত সুবিন্যস্ত এবং পৌনঃপুনিক নকশা গঠন করে রাখে। অনেক ধরনের স্ফটিকসদৃশ গঠন দেখা যায়, এমনকি একটি পদার্থের (কঠিন দশায়) একাধিক গঠন থাকতে পারে।উদাহরণস্বরূপ, আয়রন ৯১২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় বডি সেন্টারড কিউবিক গঠনে এবং ৯১২-১৩৯৪ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ফেস সেন্টারড কিউবিক গঠনে থাকতে পারে। বরফের ১৫ টি ভিন্ন ভিন্ন স্ফটিকসদৃশ গঠন অথবা ১৫ টি কঠিন দশা আছে, যা ভিন্ন ভিন্ন তাপমাত্রা এবং চাপে তৈরী হয়।
কাচ এবং অন্যান্য দীর্ঘ নিয়তাকার ক্রমবিন্যাস বিহীন অনিয়তাকার কঠিন পদার্থগুলো তাপীয় সাম্যবস্থায় থাকেনা। তাদেরকে পদার্থের নন ক্লাসিকাল অবস্থায় বর্ণনা করা হয়।
কঠিন পদার্থকে বাষ্পীভবনের মাধ্যমে তরল পদার্থে পরিণত করা যায়, এবং তরল পদার্থকে ঘনীভবনের মাধ্যমে কঠিন পদার্থে রূপান্তরিত করা যায়।এছাড়াও কঠিন পদার্থকে ঊর্ধ্বপাতন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরাসরি বাষ্পে রূপান্তরিত করা যায়, এবং বাষ্পও অপসারণ প্রক্রিয়ায় সরাসরি কঠিনে পরিণত হতে পারে।
তরল পদার্থঃ
তরল পদার্থ প্রায় অসঙ্কোচনীয় প্রবাহী যা তার ধারকের আকার গ্রহণ করে কিন্তু চাপের প্রভাবমুক্ত নির্দিষ্ট আয়তন থাকে।এই আয়তনও পরিবর্তিত হবে যদি তাপমাত্রা ও চাপ পরিবর্তিত হয়।যখন কোন কঠিন পদার্থকে তার গলনাঙ্ক এর উপরে তাপ দেয়া হয়,তখন তা তরল পদার্থে রূপান্তরিত হয়,তবে এক্ষেত্রে চাপ অবশ্যই ঐ পদার্থের ত্রৈধ বিন্দুর চেয়ে বেশি হতে হবে।আন্তঃআণবিক (অথবা আন্তঃপারমানবিক অথবা আন্তঃআয়নিক) বল অবশ্যই প্রয়োজনীয়,কিন্তু অণুটির একে অন্যের সাপেক্ষে মুক্তভাবে চলাচল করার মত প্রয়োজনীয় শক্তি আছে এবং এদের গঠন ভ্রাম্যমাণ।এর মানে এই দাঁড়ায় যে তরলের গঠন নির্দিষ্ট নয়,কিন্তু তা তরলের ধারকের গঠন দ্বারা নির্ধারিত হয়।তরল পদার্থের আয়তন সাধারণত যে কঠিন পদার্থ থেকে তরল তৈরী করা হয়েছে সে কঠিনের চেয়ে বেশি হয়।ব্যতিক্রম - পানি। যে সর্বশেষ তাপমাত্রায় একটি তরল পদার্থ তরলাবস্থায় থাকে তাকে তার ক্রান্তি তাপমাত্রা বলে।
তরল পদার্থঃ
গ্যাস এক ধরনের সঙ্কোচনীয় প্রবাহী। গ্যাস শুধুমাত্র তার ধারকের আকারই দখল করেনা, নিজেকে বিবর্ধিত করে তার আয়তনও দখল করে।
গ্যাসের অণুগুলোর পর্যাপ্ত গতিশক্তি থাকে। ফলে তাদের মধ্যে আন্তঃআণবিক বলের প্রভাব নগন্য হয় (আদর্শ গ্যাসের ক্ষেত্রে শুন্য), এবং এদের পার্শ্ববর্তী অণুগুলোর দূরত্ব অণুগুলোর আকারের চেয়েও অনেক বড়। গ্যাসের নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন থাকেনা, এরা এদের ধারকের আকার ও আয়তন দখল করে। তরলকে তার স্ফুটনাঙ্কএর উপরে তাপ দিয়ে এবং চাপ স্থির রেখে গ্যাসে পরিণত করা যায়, আবার তাপমাত্রা স্থির রেখে চাপ কমিয়েও গ্যাসে রূপান্তর করা যায়।
ক্রান্তি তাপমাত্রার নিচে গ্যাসকে বাষ্পও বলা হয়, যাকে শুধু চাপ কমিয়ে শীতলীকরণ ছাড়ায় তরলীভূত করা যায়। বাষ্প তরল (অথবা কঠিন) এর সাথে সাম্যাবস্থায় থাকতে পারে, যেখানে গ্যাসের চাপ তরল (বা কঠিন) এর ক্রান্তি চাপের সমান হয়।
চরমক্রান্তিক তরল হল এক ধরনের গ্যাস, যার তাপমাত্রা ও চাপ উভয়েই যথাক্রমে ক্রান্তি তাপমাত্রা ও ক্রান্তি চাপের উপরে থাকে। এমন অবস্থায়,গ্যাস আর তরলের মধ্যকার পার্থক্য থাকে না। সুপারক্রিটিকাল ফ্লুইডের গ্যাসের ধর্ম থাকে, কিন্তু এর উচ্চচাপ দ্রাবকের পরিচয় বহন করে,যার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, সুপারক্রিটিকাল কার্বন ডাইঅক্সাইড ক্যাফেইনবিহীন কফি তৈরীতে ক্যাফেইন বের করে নিতে ব্যবহৃত হয়।
প্লাজমা অবস্থঃ
গ্যাসের মতোই প্লাজমার নির্দিষ্ট আকার বা আয়তন নেই।কিন্তু এতে বিদ্যুত পরিবহন ক্ষমতা আছে,যা গ্যাসের নেই। এটি চৌম্বকক্ষেত্র এবং বৈদ্যুতিক প্রবাহ তৈরী করতে পারে এবং তাড়িতচৌম্বক ক্ষেত্রের প্রতি শক্তিশালী সাড়াপ্রদান করতে পারে।ধনাত্মক চার্জযুক্ত নিউক্লিয়াস পৃথক ইলেকট্রনের "সমুদ্রে" ভাসতে থাকে,যেমনটা হয় পরিবাহী ধাতুর ক্ষেত্রে। আসলে এই "সমুদ্র" ই প্লাজমা অবস্থার পদার্থকে বিদ্যুত পরিবহন করতে দেয়।
প্লাজমা অবস্থা নিয়ে অনেকেরই ভুল ধারণা রয়েছে,কিন্তু এটি আসলে পৃথিবীতে অহরহই দেখা যায়।এবং বেশিরভাগ লোক এটাকে জানা ছাড়াই সাধারণ ভাবেই দেখে। বজ্রপাত, বৈদ্যুতিক স্পার্ক, প্রতিপ্রভ বাতি, নিওন বাতি, প্লাজমা টিভি, কিছু ধরনের শিখা এবং সকল তারাগুলো প্লাজমা অবস্থার আলোকিত বস্তুগুলোর উদাহরণ।
গ্যাস দুটি উপায়ের যে কোন একটিতে প্লাজমা হতে পারে, হয় দুটি বিন্দুর মধ্যকার বিশাল বিভব পার্থক্য, অথবা বস্তুকে উচ্চ তাপমাত্রা দিলে।
পদার্থকে উচ্চ তাপমাত্রায় তাপ দিলে পরমাণুগুলো ছেড়ে যেতে শুরু করে, যা মুক্ত ইলেকট্রনের উপস্থিতিতে ঘটে। উচ্চ তাপমাত্রায়, যেমনটা নক্ষত্রে থাকে, সেক্ষেত্রে এটা মনে করে হয় যে সকল ইলেকট্রন অবশ্যই "মুক্ত", এবং উচ্চশক্তির প্লাজমা ইলেকট্রনের সমুদ্রে উন্মুক্ত নিউক্লিয়াসে অবশ্যই ভাসমান থাকবে।
বোস আইনস্টাইন কনডেনসেটঃ
১৯২৪ সালে আলবার্ট আইনস্টাইন এবং সত্যেন্দ্রনাথ বসু সর্বপ্রথম "বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেট" (BEC), যাকে পদার্থের পঞ্চম অবস্থা বলা হয়,এর কথা উল্লেখ করেন। BEC এ পদার্থ আর স্বাধীন কণার মত আচরণ করেনা, এবং একটি একক কোয়ান্টাম স্টেটে পতিত হয় যা একটি অভিন্ন ওয়েভফাংশন দ্বারা বর্ণনা করা যায়।
গ্যাসীয় অবস্থায় বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেট অনেক বছর ধরেই অযাচিত তত্ত্ব ছিল।১৯৯৫ সালে কলোরাডো ইউনিভার্সিটির এরিক কর্নেল এবং কার্ল ওয়েইম্যান-এর একটি রিসার্চ গ্রুপ সর্বপ্রথম এই কনডেনসেট পরীক্ষামূলকভাবে প্রমাণ করেন।বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেট কঠিন অবস্থার চেয়েও শীতল।মনে করা হয় এমনটি ঘটে যখন পরমাণুগুলোর পরম শুন্য তাপমাত্রা,অর্থাৎ -২৭৩.১৫০ কাছাকাছি সমান (অথবা সমান ই) কোয়ান্টাম লেভেল থাকে।
শক্তিঃ
পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় শক্তি বলতে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর কাজ করার সামর্থ্যকে বুঝায়। প্রধানত শক্তি হচ্ছে পদার্থের এমন একটি বৈশিষ্ট্য যার সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই, এক রূপ থেকে অন্য রূপ নিতে পারে এবং এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে যেতে পারে। বিখ্যাত E=mc² অনুযায়ী শক্তি পদার্থে নিহিত থাকতে পারে। যেমন ফিশন বিক্রিয়া। কাজ বা কার্য হচ্ছে বল ও বলের দিকে সরণের গুণফল। কৃতকাজের পরিমাণ দিয়েই শক্তি পরিমাপ করা হয়। অর্থাৎ বস্তুর শক্তি হচ্ছে ঐ বস্তু মোট যতখানি কাজ করতে পারে। সুতরাং কাজের একক ও শক্তির একক অভিন্ন - জুল। ১ জুল = ১ নিউটনХ ১ মিটার। শক্তি একটি অদিক রাশি।
শক্তির রূপ
শক্তির বিভিন্ন রূপ আছে। মোটামুটিভাবে শক্তির নয়টি রূপ দিয়ে প্রাকৃতিক সব ঘটনার ব্যাখ্যা দেয়া হয়। শক্তির রূপগুলি হল:
যান্ত্রিক শক্তি : যান্ত্রিক শক্তি হলো সেই শক্তি, যা কোনো বস্তু তার স্থির অবস্থান বা গতিশীল অবস্থার জন্য লাভ করে।
আলোক শক্তি : যে শক্তি আমাদের চোখে প্রবেশ করে দর্শনের অনুভূতি জন্মায় তাই আলোক শক্তি।
শব্দ শক্তি : শব্দ শক্তি হল একধরনের কম্পন যা গ্যাস, তরল বা কঠিন মাধ্যমের সাহায্যে শব্দ তরঙ্গ হিসাবে সঞ্চালিত হয়।
তাপ শক্তি : যে শক্তি আমাদের শরীরে ঠান্ডা বা গরমের অনুভূতি তৈরি করে তাই তাপ শক্তি।
চৌম্বক শক্তি : যে শক্তির ফলে এক পদার্থ কর্তৃক অন্য কোন পদার্থ আকর্ষিত বা বিকর্ষিত হয়।
তড়িৎ শক্তি : বৈদ্যুতিক শক্তি একটি যৌগিক শক্তি যা বৈদ্যুতিক বিভবশক্তি ও গতিশক্তি থেকে উদ্ভূত হয়ে থাকে।
পারমাণবিক শক্তি : পরমাণুকেন্দ্র তথা নিউক্লিয়াসকে ভাঙ্গার পর যে শক্তি পাওয়া যায় বা এর অভ্যন্তরে যে শক্তি সঞ্চিত থাকে তাকে পারমাণবিক বা নিউক্লীয় শক্তি বলে।
রাসায়নিক শক্তি : সকল জীবদেহে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এ সকল রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকে যে শক্তি উৎপন্ন হয় তাকে রাসায়নিক শক্তি বলা হয়। কোন পদার্থের মধ্যে একটি পরমাণু আর একটি পরমাণুর সাথে বা একটি অনু অন্য একটি অনুর সাথে যে আকর্ষণ শক্তির সাহায্যে যুক্ত থাকে তাকে রাসায়নিক শক্তি বলে।
সৌরশক্তি : মূলত সূর্য থেকে পাওয়া শক্তি হল সৌরশক্তি। তবে আমরা যখন সূর্য হতে প্রাপ্ত শক্তিকে কাজে লাগাই তখনই এটি সৌরশক্তি হিসেবে গণ্য হয়।
শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতিঃ
শক্তির যে কোন রূপকে অন্য যে কোন রূপে রূপান্তরিত করা যায়, কিন্তু মোট শক্তির পরিমাণ একই থাকে। একে শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি বা শক্তির নিত্যতা সূত্র বলা হয়। শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতিকে এভাবে বিবৃত করা যায়ঃ
শক্তির সৃষ্টি বা বিনাশ নেই, শক্তি কেবল একরূপ থেকে অপর এক বা একাধিকরূপে পরিবর্তিত হতে পারে। মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ নির্দিষ্ট ও অপরিবর্তনীয়।
শক্তি একরূপ থেকে অন্য রূপে পরিবর্তিত হলে শক্তির কোন ক্ষয় হয় না। একটি বা একাধিক বস্তু যে পরিমাণ শক্তি হারায়, অন্য এক বা একাধিক বস্তু ঠিক একই পরিমাণ শক্তি পায়। নতুন করে কোন শক্তি সৃষ্টি হয় না বা কোন শক্তি ধ্বংসও হয়না। সুতরাং এই মহাবিশ্ব সৃষ্টির মুহূর্তে যে পরিমাণ শক্তি ছিল, এখনও ঠিক সেই পরিমাণ শক্তিই আছে।
২| ২২ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:১৮
আলেক্স বলেছেন: Great read! Always enjoy your insights on cricket and how the game continues to evolve in Bangladesh. For those who like to stay updated during matches, I’ve been using cricket live score jeeta lately — it’s fast, reliable, and covers everything from local games to international fixtures. Worth checking out!
৩| ২২ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৩১
কামাল১৮ বলেছেন: পদার্থ শক্তিতে রূপান্তরিত হয় আবার শক্তি পদার্থে রূপান্তরিত করা যায়।মুলত পদর্থই মৌলিক।বিশ্বের সব কিছুই পদার্থের বিভিন্ন রূপ।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬
এইচ এন নার্গিস বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম ।