![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ মীম ও ফাহীমের বাসর রাত,যা
প্রতিটি নারী-পুরুষেরই কাঙ্ক্ষিত,সবাই
এরাতটি নিয়ে হৃদয়ের গহীনে অনেক স্বপ্ন
দেখে! মীম ও ফাহিমের জন্যেও নিশ্চয় এর
বিপরীত নয়,তারাও অনেক স্বপ্নের জাল
বুনে রেখেছে হৃদয়রাজ্যে!
.
ঘড়ির কাঁটা অবিরাম ঘুরছে। দু'জনের
প্রতীক্ষা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। কখন
যে বাজবে বারোটা! কখন যে হবে মনের
আলিঙ্গন! অপেক্ষার সময় যেনো কাটছেনা
কিছুতেই।
.
অবশেষে অপেক্ষার ও তীব্র প্রতীক্ষার
অবসান ঘটলো।ঘড়ির কাঁটা একে একে ঘুরতে
বরাবর বারোটার ঘরে পৌঁছলো!
.
ফাহীম অজু করে এলো, সালাম দিয়ে রুমে
প্রবেশ করলো। ক্ষীণ কণ্ঠে ওয়ালাইকুম
আসসালাম এর মধুর ধ্বনি কানে বাজলো ফাহীমের।
সঙ্গে সঙ্গে তুলতুলে নরম হাতের কোমল স্পর্শ
অনুভব করলো, লাল টুকটুকে শাড়িপরিহিতা
দীর্ঘ একটি ঘোমটা টানা পরী তার পা ছুঁয়ে
সালাম করলো।
.
সে কিছু বুঝে ওঠার আগেই কাণ্ডখানা ঘটে
গেলো, তাই বারণ করা সম্ভব হয়নি। নচেৎ
ফাহিম তাই করতো। যাকগে ফাহিম একটু
পিছনে সরে গিয়ে আলতো করে মিমের
দু'বাহু ধরে খাটের ওপর বসালো এবং তার
সন্নিকটে গা ঘেঁষে বসলো। মীম একটু লজ্জা
পেয়ে পিছনে সরে যেত উদ্ধত হল কিন্তু
ঘরের দেয়ালে তার পিঠ ঠেকে গেছে।
ফাহিম বুঝলো মীম লজ্জা পাচ্ছে তাই সে
সরে যেয়ে তার অদূরেই গিয়ে বসলো।
.
আর বলতে আরম্ভ করলো তুমি আমার কাছে
এখনো অপরিচিতা, এখন পর্যন্ত তোমাকে
শুধু একবার দেখেছি, তাও আবার ঠিক মত
দেখিনি,তোমার চেহারা মনেও করতে পারছিনা,
কিন্তু আল্লাহ চাহে'তো জীবনের দীর্ঘ একটি সময়
তোমাকে সঙ্গী করেই পাড়ি দিতে হবে!
.
দেখ মানুষ কোনো কাজ আরম্ভ করার পূর্বে
ঐ কাজ সম্পর্কে সামান্য পরিমাণ হলে
জ্ঞান সংগ্রহ করে রাখে যাতে সংকটে
কিংবা বিপর্যয়ের সময় পথেয় অর্জন করতে
পারে, কিন্তু জীবনের দীর্ঘ একটি সফরের
জন্য জ্ঞান অর্জন করা অবিস্যম্ভাবি তা কেউ বুঝেনা!
.
আজ থেকে আমাদের জীবন শুরু হতে যাচ্ছে
বলতে পার এখন থেকেই শুরু। তো আমরা
কিন্তু সবার মতো একই ভুল করবোনা।
আলহামদুলিল্লাহ আমি আমার মুরুব্বিদের
কাছ থেকে ও ধর্মীয় বই পুস্তুক থেকে যথেষ্ট
জ্ঞান লাভ করেছি আমি চাই তুমি সে গুলো
মনোযোগ দিয়ে শুনবে ও হৃদয় সঙ্গ করবে।
শুনবেতো আমার কথা গুলো? মাথা
নাড়িয়ে হ্যা সূচক সায় দিলো মিম।
.
মানুষের মারাত্মক ভুল গুলোর মধ্যে একটা
হচ্ছে বিয়ের উদ্দেশ্যর সম্পর্কে, একেকজন
একেক উদ্দেশ্যে বিয়ে করে। বাবা মা
অসুস্থ হয়ে গেছেন তাদের খেদমত করার মত
কেউ নেই বাবা মার খেদমত করার উদ্দেশক
অনেকে বিয়ে করে থাকেন। অনেকে আবার
বিয়ের নাম শুনলেই মনে করেন শারীরিক
চাহিদা মেটানো! আসলে আদৌ কি এগুলো
কখনো বিয়ের উদ্দেশ্য হতে পারে? না
পারেনা! আমাদের প্রিয় নবী সা. বিয়ের
মহৎ উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেছেন "বিয়ে হল
আমার সুন্নাত সমূহের মধ্য থেকে একটি" আর
অন্য হাদীসে এসেছে যে "আমার সুন্নাত
কে ভালোবাসবে সে আমাকেই
ভালোবাসলো আর যে আমাকে
ভালোবাসলো সে আমার সঙ্গে জান্নাতে
থাকবে" আমি এ মহৎ উদ্দেশ্যেই তোমাকে
বিয়ে করেছি।
.
দেখ নশ্বর এ পৃথিবী আজ বা কাল একদিন না
একদিন সবাইকে ইহকাল ত্যাগ করতে হবে।
চিরস্থায়ী ঠিকানায় চলে যেতে হবে, আর
আমাদের চিরস্থায়ী ঠিকানা হলো
জান্নাত। আমরা জান্নাতে একইসঙ্গে
থাকবো। তাই পরস্পর আমরা জান্নাতের
পথে সহযোগী। একে অপরকে জান্নাতে
যাওয়ার পথে সাহায্য করবো।
আর আমার জান্নাত হল আমার মা। আমার
মায়ের পায়ের নিছেই আমার জান্নাত।
আমি তোমাকে তাদের খেদমত করার জন্য
বিয়ে করিনি ঠিক কিন্তু তাদের খেদমত
করা আমার কর্তব্য আর আমার কর্তব্য মানে
তোমারও কর্তব্য। আমি যেহেতু তাদের
পাশে থেকে তাদের খেদমত করে জান্নাত
লাভ করতে পারছিনা তাই আমার হয়ে তুমি
একাজ টি করে আমার জান্নাতের পথ সুগম
করবে, কারণ আমরা একে অন্যের সহযোগী।
.
অনেকেই এদিনটি তে বলে থাকে তার
পরিবারের সবার মন যুগিয়ে চলার জন্য
আমি এ কথাটির প্রচণ্ড দ্বিমত করি যে
মেয়েটিকে আমার ঘরে এনেছি সে কি
মানুষ নয়? তার কি একটি কোমল হৃদয় নেই?
তার কি মনে চায়না সবাই তার সঙ্গে নম্র
ব্যাবহার করুক? কোমল আচরণ করুক? আমি
তোমাকে এ উপদেশ দিবোনা যে তোমাকে
সবার মন জয় করে চলতে হবে। শুধু এটুকুই
বলবো আচার-উচ্চারণ যদি সুন্দর হয়,ন্ম্র-ভদ্র
হয়,কোমল হয়, তাহলে তার সঙ্গে কেউ
কখনো বিরূপ আচরণ করবেনা। এটা
পরীক্ষিত!
.
দেখ! এতদিন আমার সমস্ত ভালোবাসার
কেন্দ্রবিন্দু ছিল আমার মা। যিনি আমাকে
গর্ভে ধারণ করেছেন প্রসববেদনা ভোগ
করেছেন নিজেকে তিলেতিলে ক্ষয় করে
আমাকে লালন-পালন করেছন। এতদিন
আমার ওপর তার অখণ্ড অধিকার ছিল। যখন
তিনি দেখবেন তার আদরের ধন আঁচলের রত্ন
পুত্রের জীবনে স্ত্রী পরিচয়ে কোনো
নারীর অনুপ্রবেশ ঘটেছে তাঁর অখণ্ডিত
অধিকার খণ্ডিত হতে যাচ্ছে। এতদিন আমি
তার একক অবলম্বন ছিলাম, আর এখন অন্য
নারীর অবলম্বন হতে চলেছি! এ বাস্তবতা
তিনি না অস্বীকার করতে পারবেন! না
মেনে নিতে পারবেন!এমন অন্তরজ্বলা শুরু
হবে তখন যা তিনি নিজেই ভোগ করবেন।
কাউকে বুঝতে দিবেননা। না আমাকে, না
তোমাকে, না অন্য কাউকে!
এজন্য সামান্য কারণে এমনকি অকারণেই
হয়ত তোমাকে কিছু বলে পেলবেন যা
তোমার কাছে ভালো লাগবেনা। তিক্ত
মনে হবে।আশা করি তখন তুমি সংযমতা
অবলম্বন করবে। নিশ্চুপ থাকবে। প্রতোত্তর
করবেনা।জানি তুমি একাজ করোনি বা
সামান্য বিষয়ে এত বড় কথা বলা ঠিক হয়নি
কিন্তু তুমি যদি তার মুখের ওপর কথা বলে
যাও তাহলে তিনি খুব মর্মাহত হবেন।
পুরনো কষ্ট গুলোর কথা স্মরণ করে তিনি
আরো বেশি কষ্ট পাবেন! আর মায়ের কষ্ট
আমার জন্যও কষ্ট আর তুমি কি চাও আমি
কষ্ট পাই?
.
তিনিতো তোমার মায়ের মতই।
বলতে পারো এখন তোমার নিজের মা।
আচ্ছা তুমি বল তোমার মা যদি তোমাকে
বকা দিত তুমি তাকে কিছু বলতে?
.
দেখ! আমার কোনো আচরণ হয়ত তোমার
অপছন্দ হতে পারে অনুরূপ তোমার কোনো
আচরণ আমার অপছন্দ হতে পারে। তখন
কোনো ঝগড়া না করে পরস্পর এটা ভেবে
নিবো আমার সকল আচরণ কি তার নিকিট
পছন্দমত? আমারওতো ত্রুটি আছে নিশ্চয়!
যদি এটা ভাবতে পারি আমরা তাহলে
এমনিতেই সব কিছুর সমাধান হয়ে যাবে।
.
আর রাগ, মান, অভিমান এটা তো থাকবেই।
এটা চিরাচরিত,আমাদের প্রিয় নবীজির
দাম্পত্য জীবনেও এমনটা হয়েছিল! মান
অভিমান সম্পর্ককে দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর করে।
পরস্পর মোহাব্বত বাড়ায়। ভালোবাসা
সৃষ্টি করে,দেখবে যখন কোন কারণে তুমি
আমার ওপর রাগ করবে, দেখবে কিছুক্ষণ পর
আমার প্রতি তোমার ভালোবাসাও বেড়ে
যাবে।অন্তরঙ্গতা আরো দ্বিগুণ হবে! অনুরূপ
আমার বেলায় ও তেমনই......!
.
-তুমি কী ঘুমিয়ে পড়েছ?(ফাহিম)
-না (মিম)
-ইশ! আমি কি আসলে? আমি নিজেই শুধু
বকে যাচ্ছি, তুমি কিছু বলবেনা? এবার তুমি বল!
-আপনার এ কথা গুলো শোনার পর আর কিছু বলার থাকে?
-আপনি নয়, আমাকে তুমি করেই বলবে, ঠিক আছে?
-আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি শুধু দোয়া করো তোমার কথা গুলো যেন মেনে চলতে পারি
আর জান্নাতে দু'জন এক সঙ্গে থাকতে পারি!
-আলহামদুলিল্লাহ্!(ফাহিম)
.
চল দু'রাকাত নামাজ পড়ে আল্লাহর শোকর
আদায় করে দোয়া করি............
আমি ফেজবুকে
১৬ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:০৪
মুসাফির হাসান বলেছেন: আপনাদের উৎসাহ ভালো লেখার প্রতি অনুপ্রেরণা দেয়,
ধন্যবাদ ভাই
২| ১৫ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:১১
বিলিয়ার রহমান বলেছেন: অনেক বড় পোষ্ট,পুরোটা পড়া হয়নি। তবে যেটুকুন পড়েছি অসাধারন লেগেছে।
১৬ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:০৬
মুসাফির হাসান বলেছেন: বাঁকিটা পড়ার আমন্ত্রণ রইলো,
ধন্যবাদ ভা,, অনুপ্রেরণা পেলাম।
৩| ১৬ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৪৪
নাবিক সিনবাদ বলেছেন: ভালো লাগলো
১৭ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:১৯
মুসাফির হাসান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
৪| ১৬ ই জুলাই, ২০১৬ ভোর ৫:৫৪
হুজ্জাত বলেছেন: ভালো লাগলো
১৬ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:০৬
মুসাফির হাসান বলেছেন: ধন্যবাদ
৫| ১৭ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:১৮
জোবায়ের হোসাইন জামীল বলেছেন: সকলের বাসরের আসরটি যদি এমন আলোচনায় ভরে উঠতো তবে কতইনা ভালো হতো
১৭ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:২০
মুসাফির হাসান বলেছেন: সবার হোক আর নাহোক আপনারটা যেন এমন হয়!
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৪১
দ্যা প্রোক্রাস্টিনেটর বলেছেন: ভাল লেগেছে ...............