নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সহজ সরল সোজা সাদা ভাষায় জীবনের কথা লিখতে পছন্দ করি। কাদা মাটিতে বেড়ে ওঠা একজন নিতান্তই সাধারন মানুষ। মনের কথাগুলি বরাবরই মুখে এসে বের হতে চায় না, কলমে আসতে চায়।

বিজু চৌধুরী

আমি পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার।

বিজু চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরি বাংলা ভাষা

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:১৮

তিনজন দেশী ও একজন ফরেনার সহ একবার অফিসিয়াল কাজে চায়না গেলাম, গুয়াংজু, ফোসান। ফোসানকে বাংলাদেশের সাথে তুলনা করলে - কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার সব্জিকান্দি ইউনিয়নের বাতাকান্দি গ্রাম ধরতে পারেন। সেখানেও দশতলা শপিং মল দশটার উপরে আছে। প্রথমদিন, ডিনারে বিদেশী ফরেনিয়ার অজ্ঞাত কারণে না গেলে আমরা হোটেলের পাশেই একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম।
দেশী একজন, এনএসইউ এর ছেলেটার সাথে এক বুয়েটিয়ান, ওয়েট্রেস কে বোঝাতে পারছে না, ইংলিশ আর হাত পা নাড়িয়ে। আরেক বুয়েটিয়ানের যাওয়া নিষিদ্ধ। কারণ, প্রচণ্ড বিয়ের ইচ্ছের কারণে, মেয়ে দেখলেই ঘন ঘন প্রেমে পরে যায়। সিনিয়র হিসেবে ওরা আমাকে এইসব ঝামেলাগুলো থেকে দুরে রাখে।
বাধ্য হয়ে আমি গেলাম। যেয়ে হাত পা মুখ চোখ নাড়িয়ে স্ট্রেইট বাংলায় কথা বলা শুরু করলাম –
- ভাতিজি এইদিক শুনো। আঙ্গুলের মধ্যে আরেক আঙ্গুল দিয়ে সাইজ বুঝিয়ে, তার পড়নের ড্রেসের সাদা রং দেখিয়ে বললাম, ভাত আছে? সাদা ভাত। তারপর বোতল থেকে তেল ঢালার ভঙ্গি করে দুই হাত মাথা নাড়িয়ে না বুঝিয়ে বললাম, তেল ছাড়া সাদা ভাত, বুঝছ ভাতিজি? এরপর হাম্বা করে একটা ডাক দিয়ে দুই হাত দিয়ে শিং বুঝিয়ে বললাম – গরুর মাংস দেও, ঝাল কম দিয়ে (ঠোট দুটো দিয়ে ঝাল লাগাড় ভঙ্গিমা করে দুই হাত দিয়ে না দেখিয়ে বোঝালাম। এরপর মোনাজাতের ভঙ্গি করে নাকটা ফুলিয়ে বললাম – আমরা খাঁটি মুসলমান ভাতিজি, শুকড় খাওয়াস না ভাতিজি। সেই মেয়ে দুই গাল ফুলিয়ে কাগজে লিখছে আর আমাকে বলছে –
- চউং ছই ইং ওন সা টূ বূড়ী এই টাইপের কথা।
- ইয়েস, এইতো ভাতিজি ঠিক বলছ, নিয়ে আস। সে খুশী মনে গেল, বাকীরা বলছে ভাইয়া আজকে কপালে খারাবি আছে। সবাই অবাক! একদম হুবহু সার্ভ করার পরে, নিজেই মোনাজাতের ভঙ্গিতে বলছে –
- জীক যো ইন ইসলাম আং ইস পর্ক নো।
- ভাতিজি, উপরওয়ালা তোর ভাল করবে। বাকীরা আমাকে বলছে -
- ভাইয়া, আমরাও তো একইভাবে বোঝালাম, না বোঝার কারণটা কি?
- দেখ, যে ইংলিশ বূঝে না, তার জন্য ইংলিশ আর বাংলার মধ্যে কোন পার্থক্য নাই। সমস্যাটা তোমার। তুমি যখন ইংলিশে কথা বলার সাথে হাত পা ঠোট নাড়ছ, তখন সেটি পারফেক্ট হচ্ছে না। কারণ, ইংলিশ যেহেতু তোমার ভাষা নয়। কিন্তু বাংলার সাথে হাত পা ঠোঁট চোঁখ নাড়িয়ে বোঝালে সেটি পারফেক্ট হয় এবং এখানে মেয়েটিকে বোঝানই হচ্ছে সেটি দিয়ে। যাই হোক, সূত্র পেয়ে ঘন ঘন প্রেমে পড়া বুয়েটিয়ানের কারণে পরের দিনও যেতে হল, সেদিন সে অর্ডার করবে। কপাল খারাপ, গেল ফরেনার মামু। স্বাভাবিকভাবেই সেই ফরেনার অর্ডার করবে। মেয়েটি আমাদের দেখে এগিয়ে এসেছে। আমার পাশে বসা ফরেনার মেয়েটিকে ইংলিশে অর্ডার করা শুরু করলে মেয়েটি বলছে –
- তুই মাঝখানে ভ্যাজাল করতে কই থাইকা আইলি? চূপচাপ বইয়া থাক। অর্ডার করার লোক আছে। ওর বলার ভঙ্গি দেখেই আমি ১০০ পারসেন্ট শিওর, ঠিক এই কথাগুলাই বলছে। আমি অর্ডার করলাম। আমার পারফর্মেন্স সেদিন আরও ভাল, কারণ আমি আমার দেশের বাড়ী রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে শুরু করেছি। সাথের বাঙ্গালিরা পূরাটা না বুঝলেও, ঐ মেয়ে ঠিকই কুড়িগ্রামের ভাষা ভালই বুঝল। সেদিন টিপস দিয়ে বললাম –
- মোক তুই বাচাইছিস রে ভাতিজি, বাঁচি থাক ম্যালা দিন। ভাল একটা বর পাবু তুই।
- চূং যো সিমা মূণ আক…।
হোটেল থেকে বেরিয়ে আসার পরে বিদেশী ফরেনিয়ার আমাকে বলছে –
- ইউ নেভার টোল্ড মি, ইউ ক্যান স্পিক চাইনিজ।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:২৯

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: বেশ মজার!

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:২৭

বিজু চৌধুরী বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:২১

বিজু চৌধুরী বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.