![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“আল্লাহর রাসুল (দ.) একদিন মরুভূমির বুকে একটি সরল-সোজা লাইন থেকে ডান দিকে কতগুলি এবং বাম দিকে কতগুলি লাইন টানলেন এবং বললেন-শয়তান এই রাস্তাগুলিতে ডাকতে থাকবে। এই বলে তিনি কোর’আন থেকে এই আয়াত পড়লেন- নিশ্চয় এই হচ্ছে আমার (আল্লাহর) সহজ সরল পথ সেরাতুল মুস্তাকিম। সুতরাং এ পথেই চলো, অন্য পথে চলো না, চললে তা তোমাদের তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে। এই ভাবে তিনি নির্দেশ দিচ্ছেন যেন তোমরা সাবধানে পথ চলতে পারো (হাদীস আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) থেকে- আহমদ, নেসায়ী, মেশকাত)।”
আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের (দ.) সরাসরি আদেশকে অমান্য করে সেরাতুল মুস্তাকিমকে ত্যাগ করে এই জাতি আজ অতি মুসলিম হয়ে শতধা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আজ দুনিয়াময় মুসলিম বলে যে জাতিটি পরিচিত সেটা বহুভাগে বিভক্ত। এর প্রত্যেক ভাগ অর্থাৎ প্রত্যেক ফেরকা, মাযহাব বিশ্বাস করে যে শুধু তারাই প্রকৃত ইসলামে আছে, বাকি সব মাযহাব, ফেরকা পথভ্রষ্ট। ঠিক যেমন অন্যান্য ধর্মের লোকেরা নিশ্চিত যে তাদের ধর্মই সঠিক, অন্য সব ধর্মের মানুষ নরকে যাবে। কিন্তু আসলে অন্যান্য সব ধর্ম যেমন তাদের নবীদের দেখানো পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে তেমনি মুসলিম নামধারী এই জাতিও তার নবীর (দ.) প্রতিষ্ঠিত পথ থেকে তেমনি ভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে। যতখানি পথভ্রষ্টতা, বিকৃতি আসলে, পূর্বে আল্লাহ নতুন নবী পঠিয়েছেন, এই জাতিতে ততখানি বিকৃতি বহু পূর্বেই এসে গিয়েছে। নতুন নবী আসেন নি কারণ নবুয়াতের সিলসিলা শেষ হয়ে গিয়েছে এবং মুসলিমদের জন্য শেষ রাসুলের (দ.) প্রতিষ্ঠিত পথে অর্থাৎ প্রকৃত ইসলামে আবার ফিরে যাওয়ার জন্য অবিকৃত কোর’আন আছে যা অন্যান্য ধর্মে নেই।
ইসলামের বিভিন্ন বিভক্তিগুলির মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাগ হচ্ছে শিয়া মাযহাব। এই মাযহাবের পণ্ডিতরাও কোর’আন ও হাদীসের চুলচেরা বিশ্লেষণে সুন্নী পণ্ডিতদের মতই শক্ত অবস্থানে আছে এবং তাদের পণ্ডিতদের ফলে শিয়া মাযহাবের মধ্যেও সুন্নীদের মতো অসংখ্য ফেরকায় বিভক্তি দেখা যায়। ফলে প্রকৃত ইসলামের উদ্দেশ্য থেকে শিয়া-সুন্নী উভয় মাযহাব বহু দুরে সরে গিয়েছে। কে বেশি দুরে কে কম এ পরিমাপ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, আমাদের সাধ্যও নয়। আমরা শুধু এইটুকুই জানি যে মহানবী (দ.) কথিত একটিমাত্র ফেরকা বাদে শিয়া-সুন্নী সহ আর সমস্ত ফেরকা, মাযহাব আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে কারণ তারা রাসুলের প্রতিষ্ঠিত ইসলামের উপর নেই।
সুন্নীরা যেমন বিশ্বনবী (দ.) এর প্রকৃত সুন্নাহ ত্যাগ করে আল্লাহর রাসুলের নিষিদ্ধ ‘চুলচেরা বিশ্লেষণ’ করে উম্মাহটাকে টুকরো টুকরো করে ভেঙে দিলেন এবং হাত থেকে তলোয়ার ফেলে দিয়ে তসবিহ নিয়ে খানকায়, হুজরায় ঢুকে উম্মাহর বর্হিমুখী (Extrovert) গতিকে অর্ন্তমুখী করে স্থবীর করে দিলেন (Introvert), তেমনি শিয়ারাও তাদের মাযহাবকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বহু ভাগে ভাগ করে দিলেন এবং নবীর (দ.) প্রকৃত সুন্নাহ অর্থাৎ দীনকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বাদ দিয়ে বহু পূর্বের এক দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাকে নিয়ে মাতম করাটাকেই সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম-কর্ম হিসাবে গ্রহণ করলেন। মাতম করা কোন জীবন্ত জাতির মুখ্য কাজ হতে পারে না, মৃত জাতির হতে পারে।
অতএব এখন আমাদের এই ফেরকা, মাযহাবের দলাদলি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং এক আল্লাহ, এক রসুল, এক কেতাবের ধারক জাতিকে এক জাতিতে পরিণত হতে হবে। সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যই পারে বর্তমান মুসলিম জাতিকে আবার গৌরবের আসনে আসীন করতে।
©somewhere in net ltd.