নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তথ্যের মৌমাছি, জ্ঞানের ভিক্ষুক, প্রজ্ঞার সাধক।
ডাক্তার দাবি করা ভাইরাল মুনিয়া জানেন না ওটি, আইসিইউ কি? | Nagorik TV
উপরুক্ত শিরোনামে একটি ইন্টারভিউ-টকশো ধাঁচের ভিডিও প্রকাশ করেছে নাগরিক টিভি, তাদের ভেরিফাইড ইউটিউব চ্যানেলে।
লেখাটি পড়ার আগে অবশ্যই ভিডিওটি পুরো-টুকু দেখবেন, অন্যথায় লেখার কনটেক্সট বুঝতে সমস্যা হতে পরে। ভিডিও লিঙ্ক
দেশটা এমনিতেই নরক জ্বালায় ভুগছে! তার ওপর এসব আটার-ননসেন্স কনটেন্ট কেন টিভি চ্যানেল গুলো তৈরি করছে সেটা বোঝা কোনো রকেট সায়েন্স নয়।
একজন ভুয়া ডক্টর যার বিচার প্রক্রিয়া আদালতে চলমান। যে কিনা রেডহ্যান্ডেড ধরা পড়েছে এবং সকলের সামনে শিকারও করেছে যে; সে কোন ডক্টর নয়। তাকে টিভি চ্যানেলে ডেকে, তার ইন্টারভিউ নেয়া কতটুকু যৌক্তিক এই প্রশ্ন থেকেই যায়। এই মহিলা যে কিনা ওটি, আইসিইউ, এসবের অর্থই জানেন না। প্রেক্রিপশন ঠিক মতো উচ্চারণ করতে পারেন না। তাকে কেন টিভি চ্যানেলে ডেকে ইন্টারভিউ করতে হবে? এখানে কী দেশের বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে না? নাকি পুরো কনটেন্টটাই পেইড এন্ড স্ক্রিপ্টেড কনটেন্ট! যদি পেইড-স্ক্রিপ্টেড কমেডি কনটেন্ট হয়েই থাকে তাহলে এই সেনসেটিভ ইস্যু নিয়ে কেন এসব আটার-ননসেন্স বানাতে হবে? তাদের আসল উদ্দেশ্যটা কী?
বাংলাদেশ বহু মানুষ প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করে ভারতে যায় তাঁদের চিকিৎসা এর জন্য। এই মানুষ গুলো প্রতিবেশী রাষ্ট্রে যায় কারণ; এই দেশের চিকিৎসা সেবায় তাদের ভরসা নেই, ভুয়া ডক্টরদের দৌরাত্ম্য।
এই ভিডিওটা দেখে অলমোস্ট প্রতিটা মানুষ হাসার কথা, হাসাটাই স্বাভাবিক। কারণ, মানুষের মস্তিষ্ক সাদারণত এভাবেই কাজ করে। কিন্তু এই আটার-ননসেন্স ভিডিও কনটেন্ট এর কী অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে?
একজন মানুষ যখন এই ভিডিওটি দেখবে তখন নিজের অজান্তেই হাসবে। তাঁর প্রিয়জনকে এই ভিডিও শেয়ারও দিতে পারে ফানি কনটেন্ট হিসেবেই। যেটা বর্তমান সময় খুবই সাধারণ। কিন্তু এই ভিডিও দেখার পর তাঁর নিজের, তাঁর প্রিয়জনদের এবং যে যে ব্যক্তি এই ভিডিও দেখেছে অলমোস্ট সবারই নিজের অজান্তেই বিশ্বাসে,আস্থায় পরিবর্তন হচ্ছে! কীসের বিশ্বাস, আস্থা?
বিশ্বাসটা, আস্থা হলো এই দেশের চিকিৎসা সেবার ওপর, এই দেশের ডক্টরদের ওপর। পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর। কারণ ভিডিওটা দেখার পর সাবকন্সীআস মাইন্ডে প্রতিটি মানুষ এইসব ডক্টরদের ঘৃণা করছে একই সাথে পুরো সিস্টেমটাকেই ঘৃণা করছে। যেটা করাই উচিত। কিন্তু এই ঘৃণা আমাদের দেশের কোয়ালিফাইড-স্কিল্ড ডাক্তারদেরকেও অবিশ্বাস ও হেয় করা হচ্ছে, বহির্বিশ্বে আমাদের ডক্টরদের ইমেজ সংকটে ফেলা হচ্ছে। ধুকে ধুকে চলতে থাকা স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে মৃত্যু-কূপকে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। যার ফল স্বরূপ প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ ভারতে চিকিৎসা করাতে যায়।
এই ভিডিও দেখার পর কোনো জটিল রোগে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি যার ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য আছে, সে কী আর এই দেশে চিকিৎসা করাবে? না করানোটাই স্বাভাবিক।
এইসব কনটেন্ট আমাদের বিনোদনের খোরাক হলেও ওদের আয়ের উৎস, মাস্টারপ্লান এক্সিকিউট করার ন্যানো স্টেপ। দেশ পুড়িয়ে নরক করার জ্বালানি!
ওরা বহু আগে থেকেই এইসব মাস্টার প্লানে কাজ করে আসছে এবং সফলও হয়েছে যার ফল দৃশ্যমান। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ধ্বংস করেছে তিলে-তিলে। ৮০/৯০ দশকেও এই বিপুল সংখ্যক মানুষ ভারতে চিকিৎসা নিতে যেত না, যতটা এখন যাচ্ছে। এর পরও যদি বাংলাদেশের মানুষের ঘুম না ভঙ্গে, এই ঘুম আর কোনো জনমেও ভাঙবে না। যখন ভাঙবে ঘুম, তখন চোখ খুলে দেখবে লাল-সবুজে অন্য রং যুক্ত হয়েছে।
আমরা হাসতে হাসতে আনমনে বিশ্বাস করবো কিন্তু ওদের চালাকি ধরতে পারব না!
©somewhere in net ltd.