![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি রুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারি(১০'সিরিজ) ডিপার্টমেণ্টে পড়ালেখা করছি। সুযোগ পেলেই লেখালেখিতে বসে যাই। আমার লেখালেখির সব থেকে পছন্দের বিষয় হল ছোটগল্প ।বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে ভালো লাগে। আরও ভালো লাগে নতুন বন্ধু তৈরি করতে।
আজ জিওটেক ল্যাব দেরি করিয়ে দিলো মুহিতকে। রুটিন অনুযায়ী ল্যাবের টাইম এখনো শেষ হয়নি। যদিও অন্যান্য দিন নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই ল্যাব শেষ হয়ে যায়। প্রায় প্রত্যেকদিনই কোন না কোন কারণে দেরি হয়ে যায় টিউশনিতে যেতে। ল্যাব থেকে বেরিয়ে দ্রুত হাঁটতে শুরু করলো মুহিত। অ্যাড বিল্ডিং পার করে মেইন গেটে পৌঁছে গেলো এক সময়। সামনের রাস্তাটা একদম শুনশান। দুপুর হয়ে যাওয়ায় লোকজনের আনাগোনা নেই। অটো,রিকশারও অস্তিত্ব নেই। মুহিত হাঁটতে শুরু করলো সামনের মোড়টার দিকে। হয়তো সামনে গেলে কিছু একটা পাওয়া যাবে।
‘বাবা কেমন আছেন।’ পেছন থেকে কেউ একজন জিগ্যেস করলেন। কয়েক পা সামনে এগিয়ে যাওয়ার পর মুহিত কথাটা শুনতে পেল। পেছনে ফিরে তাকালো মুহিত। জুতা সেলাই বন্ধ করে লোকটা বসে আছেন। ষাটোর্ধ বয়সের লোকটা পুরু লেন্সের চশমার ভিতর দিয়ে মুহিতের দিকে তাকিয়ে। লোকটার দিকে এগিয়ে গিয়ে মুহিত জিগ্যেস করলো-
-চাচা,আমাকে কিছু বলছেন।
-হুম। আপনাকেই বলছিলাম। কেমন আছেন।
-এইতো ভালো। আপনি কেমন আছেন।
কথাটা বলে মুহিত কি যেন ভাবছিল। হঠাৎ করে এই লোকটা তাকে ডেকে এগুলো জিগ্যেস করছে কেন। আগে তো কোনদিন কথা হয়নি লোকটার সাথে। আজ এমনিতে সময় নেই। তারপর এই লোকটা কি বলতে চাইছে কে জানে। মনে মনে রাগই হচ্ছিলো মুহিতের।
-বাবা,ভালো আছি। শান্তিতেই আছি। আমি আপনাকে একটা জিগ্যেস করতে চাচ্ছিলাম।
-হুম,বলতে পারেন। তবে একটু যদি তাড়াতাড়ি বলতেন তাহলে ভালো হত। আমার আবার তাড়া আছে।
-ঠিক আছে। আপনাকে প্রায়ই অনেক দ্রুত হেঁটে যেতে দেখি। দেখেই মনে হয় অনেক ব্যস্ত থাকেন আপনি। আবার আপনার কাজ শেষে ফেরার সময়ও দেখি আপনি ব্যস্ততা নিয়েই ফিরছেন। এত ব্যস্ততা আপনার ভালো লাগে।
-হুম। চাচা সত্যি কথা বলতে ব্যস্ততা তেমন ভালো লাগে না। কিন্তু বাধ্য হয়ে থাকতে হয়। একটু সুখে থাকার আশায়। একটু শান্তিতে থাকার জন্য।
-(লোকটা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন) এত ব্যস্ততা,একটু শান্তিতে থাকার জন্য(হাসতে চেষ্টা করলেন)!!! বাবা আপনাকে অনেক দেরি করিয়ে দিলাম। ভালো থাকবেন কেমন।
কথাগুলো বলে লোকটা তার নিজের কাজ শুরু করলেন। হাতের স্যান্ডেলটা সেলাই করে চলেছেন আয়েশি ভঙ্গিতে। যেন অনেক মজা নেই কাজটি করছেন। কোন তাড়া নেই।
মুহিত কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলো। তখনো লোকটার কথার মানে বুঝতে পারলো না। বিদায় নিয়ে সামনের রিকশায় উঠে পড়লো সে। রিকশায় উঠার পর থেকেই লোকটার বলা শেষের কথাটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। মুহিত কেন জানি নিজেকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে। আসলেই তো। এত ব্যস্ত থাকি কিন্তু নিজের দিকে তো তাকানো হয়না। এমনকি কোথাও কিছুক্ষণ বসে থাকারও সময় হয়না। সেই কবে থেকে শুরু হইছে দৌড়াদৌড়ি কোথাও তো একটুও শান্তি পেলাম না। যন্ত্র মনে হচ্ছিলো নিজেকে তখন।
রিক্সাওয়ালাকে নদীর পাড়ে যেতে বললো মুহিত। আজ টিউশনিতে যাবে না সে। নদীর পাড়ে একটু স্থির হয়ে খুব বসতে ইচ্ছে করছে তার। রিকশার ভাড়া মিটিয়ে নদীর এমবাঙ্কমেণ্টে গিয়ে দাঁড়ালো সে। চোখ বন্ধ করে বুক ভরে একটা নিশ্বাস নিল। চোখ খুলে চারপাশ দেখলো সে। সামনের নদীটা আসলেই অন্যরকম মনে হচ্ছে আজ। সে অনেকবার এসেছে এই নদীর পাড়ে কিন্তু কখনো এভাবে দেখা হয়নি। পাশের বেঞ্চিটাতে বসলো সে। এতক্ষন হয়তো টিউশনিতে বসে লেকচার দেয়ার কথাছিল তার। অন্য আট-দশটা দিনের মতই কেটে যেত আজকের দিনটাও। কিন্তু এই নীরবতা,এই সৌন্দর্য,এই বিশালতা হয়তো অদেখাই থেকে যেত। আসলেই তো,একটু শান্তিতে থাকতে এতটা ব্যস্ততা!!
সমাপ্ত
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৩২
নাজমুল_হাসান_সোহাগ বলেছেন: ধন্যবাদ। এইমাত্র এডিট করলাম। ভালো থাকবেন।
২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫৭
সকাল রয় বলেছেন:
লেখার মাঝে () না দিয়ে অন্য কোন ভাবে বাক্য দিলে লেখায় শৈল্পিকতা বৃদ্ধি পায়। অনুগপ হিসেবে যথেষ্ট পাঠ্যনীয়।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৫৬
নাজমুল_হাসান_সোহাগ বলেছেন: গল্পটা লেখার সময় একটু কনফিউজড ছিলাম যে () দিলে আদৌ ভালো দেখাবে কি না। শেষমেশ দিয়েই ফেললাম । পরের গল্পের সময় অবশ্যই জিনিসটা মাথায় থাকবে। অনেক ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান পরামর্শের জন্য। শুভ কামনা রইলো।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:২৩
নীল-দর্পণ বলেছেন: ভাল লাগা......
লেখাটা ২বার আসছে। এডিট করে দিয়েন