![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি রুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারি(১০'সিরিজ) ডিপার্টমেণ্টে পড়ালেখা করছি। সুযোগ পেলেই লেখালেখিতে বসে যাই। আমার লেখালেখির সব থেকে পছন্দের বিষয় হল ছোটগল্প ।বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে ভালো লাগে। আরও ভালো লাগে নতুন বন্ধু তৈরি করতে।
আজ ২৬ সে মার্চ।
আহমেদ সাহেবের বয়স সত্তরের কাছাকাছি। চোখে পুরু লেন্সের চশমা। চশমার কাঁচও কেমন যেন ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। ইচ্ছে করেই কেন জানি যাওয়া হয়না চশমার দোকানে। পা’টা ভালো হওয়ার কোন সুযোগ নেই। একটা ক্র্যাচ নিয়ে কোন রকম খুরিয়ে খুরিয়ে হাঁটতে হয় তাকে।
ছেলে থাকে আমেরিকায় আর মেয়ের বিয়ে হয়েছে সে কত আগে!!! মানুষ বলতে বাড়িতে তারা বুড়ো-বুড়ি দুইজন। কাজের মেয়েটা প্রত্যেকদিন এসে একবেলা রান্না-বান্না করে দিয়ে যায়।
প্রত্যেকদিনের মত আজও বাজারে যাচ্ছেন আহমেদ সাহেব। এক হাতে বাজারের ব্যাগ অন্য হাতে ক্র্যাচ। রাস্তার অন্য সকলের মত দ্রুত হাঁটতে পারেন না তিনি। তাইতো অনেকে পেছন থেকে গালমন্দ করতেও ছাড়েনা অনেকে।
আজ মাংসের দোকানে যেতে হবে। কতদিন যে মাংস খাওয়া হয়না!!! খাসীর মাংস,গরুর মাংস দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা রয়েছে কসাইয়ের দোকানে। আহমেদ সাহেব ভীরের ভিতর যেতে পারেন না। দোকানটার এক পাশে দাড়িয়ে থাকলেন অনেকক্ষণ। ভীর কমলে এগিয়ে গিয়ে গেলেন।
-বাবা আমাকে হাফ-কেজি গরুর মাংস দিবেন????
কসাই বিস্মিত হল মনে হয়। আহমেদ সাহেবের দিকে একবার তাকালো। তাচ্ছিল্যের সুরে বললো,হাফ কেজি মাংস??? হাফ কেজি মাংস আবার কেউ কিনে নাকি!!
আহমেদ সাহেব স্মিত হেসে বললেন,হ্যাঁ বাবা আমার হাফ-কেজিই লাগবে।
-হাফ-কেজি দিতে পারি তবে দাম আজ বেশি পড়বে।
-তা কত দাম??
আহমেদ সাহেব দাম শুনে অবাক হলেন। এত দাম কেন?? গত সপ্তাহে দাম এর অর্ধেক ছিলতো।
-আইজ ২৬ শে মার্চ। সরকারী ছুটির দিন। সবাই ভালো-মন্দ খাচ্ছে। দাম তো বাড়বোই।
আহমেদ সাহেব কিছু বলতে গিয়েই থেমে গেলেন। এদের সাথে কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। থাক আজ না হয় মাংস খেলাম না। মাছের বাজারেও আজকে খুব খারাপ অবস্থা। টুক-টাক সবজি কিনে বাড়িতে ফিরছেন। রাস্তায় মোতালেব ফকিরের সাথে দেখা। এই ফকির তাকে খুব ভালো করেই চেনে। সেই দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এই রাস্তার পাশেই তাকে বসতে দেখেছেন আহমেদ সাহেব। লম্বা একটা সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করে মোতালেব। আহমেদ সাহেব যা পারেন দান করে বাড়ির পথে হাঁটতে শুরু করেন।
আজকে স্বাধীনতা দিবস। মনে পড়ে যায় আহমেদ সাহেবের। স্বাধীনতাকে হাতড়ে ফেরেন তিনি।
সেই ১৯৭১। শেখ সাহেবের ভাষণ আজও তার কানে বাজে। যখন মনে হয় তখন আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারেন না। সকল পিছুটান ভুলে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়া। তারপর শুধু জয়ের নেশা। থ্রি-নট-থ্রি দিয়েই ঘায়েল করা অত্যাধুনিক অস্ত্রে-সস্ত্রে সজ্জিত পাক সেনাদের। একটা গুলি এসে লাগলো ডান পায়ে। সেই ক্ষত এখনো তাজা মনে হয় তার কাছে।
কিন্তু স্বাধীনতা!!! কোথায়??? সে মনে মনে বলতে থাকে....
....এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম....এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম......
২| ২৭ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:১৩
নাজমুল_হাসান_সোহাগ বলেছেন: ধন্যবাদ। অনেকদিন পড়ে লিখতে বসলাম। সুযোগই হয়ে উঠেনা। আপনার প্রতি শুভ কামনা রইলো।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:৪৬
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: শুভেচ্ছা। চালিয়ে যান।