![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি রুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারি(১০'সিরিজ) ডিপার্টমেণ্টে পড়ালেখা করছি। সুযোগ পেলেই লেখালেখিতে বসে যাই। আমার লেখালেখির সব থেকে পছন্দের বিষয় হল ছোটগল্প ।বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে ভালো লাগে। আরও ভালো লাগে নতুন বন্ধু তৈরি করতে।
হাসান আজ নীল রঙের পাঞ্জাবী পড়েছে। পাঞ্জাবী সাধারণত পড়া হয়না। তবে আজ বিশেষ দিন বলে কথা। ফুটপাথ দিয়ে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে হেঁটে চলেছে সে। কেন জানি রিকশা নিতে ইচ্ছা করছেনা।
কিছুদূর এগোনোর পর পেছন থেকে কেউ একজনের ডাক শুনতে পেল। পিছে তাকিয়ে দেখে নীল শাড়ি পড়া কেউ। আরে এতো দীপা!! বিস্মিত দৃষ্টিতে দীপার দিকে তাকিয়ে হাসান। নীল শাড়িতে অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে মেয়েটিকে। কিউরোসিটি চেপে রাখতে পারলো না হাসান।
-তুমি এদিকে কোথায় যাও??
-কেন তোমার মেসের সামনে যাবো।
-আমার মেসের সামনে!!! আমার মেসের সামনে তোমার কি???
-তেমন কিছুনা। আজ তো আমাদের বিশেষ একটা দিন। তাই ভেবেছিলাম নীল শাড়ি পড়ে তোমাকে আজকে চমকে দিবো। কিন্তু তা আর হলনা। তার আগেই তো তুমি ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ছুটে চলেছ।
তো স্যার সেজে-গুজে যাচ্ছেন কোথায় বলুনতো?? মজা করে বললো দীপা।
হাসান হাসি চেপে রাখতে পারলো না। ব্যস্ত ফুটপাথের মাঝেই হো হো করে হেসে উঠলো। দীপা হা হয়ে তাকিয়ে আছে হাসানের দিকে। হাসে কেন!!!
-ঐ থামো। লজ্জা শরম সব গেছে নাকি??? কি হইছে বলো।
তুমি যেমন আজ নীল শাড়ি পড়ে বেরিয়ে আমাকে সারপ্রাইজ দিতে চাইতেছিলা। আমিও আজ তোমাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য নীল পাঞ্জাবী পড়ে বেরলাম। আপাতত উদ্দেশ্য ছিল তোমার বাসার সামনে যেয়ে তোমাকে ফোন দিবো। কিন্তু তা আর হলোনা বলে আবারও হাসতে শুরু করলো হাসান। দীপা স্মিত হেসে বললো যা হবার হয়েছে চলো এগনো যাক।
-তবে একটা জিনিস কিন্তু ভালো হইছে। আমরা দুজনই সারপ্রাইজড!!!
-ভালো না কচু। রোদের ভিতর আর কতক্ষন দাড়িয়ে থাকবো। চলো কোথাও গিয়ে বসি।
-হুম চলো। সামনের ঐ রেস্টুরেন্টটায়।
আকাশের অবস্থা ভালোনা। এই রোদ তো এই বৃষ্টি। অন্যদিন হলে হাসান হয়তো রুম থেকেই বেরতো না।
মাঝারি মানের একটা রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টের একপাশে মুখোমুখি করে দুইটা চেয়ার রাখা। আলো ওতটা বেশিনা। বসার কিছুক্ষণের ভিতরই বৃষ্টি শুরু হল। যাকে বলে ঝুম বৃষ্টি। বৃষ্টির ফোটাগুলো কাঁচ গড়িয়ে পড়ছে। দুইটা আইসক্রিম অর্ডার দিলো দীপা। অর্ডার শুনেই হাসান বিরক্তি প্রকাশ করলো। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে তো। ঠাণ্ডার ভিতর আইসক্রিম কেন??
দীপা একটু মন খারাপ করলো। বললো,তোমার কিছুই মনে থাকেনা। হাসান মনে করার চেষ্টা করলো। তার মনে পড়েলো,এক বছর আগের ঠিক এই দিনটির কথা। আইসক্রিমের দোকানেই তাদের প্রথম পরিচয়।
হুট করেই হাসান বলে বসলো
-চলো বাইরে যাই।
-বাইরে বৃষ্টি হচ্ছেতো। এখানেই থাকিনা কিছুক্ষণ।
-হোকনা বৃষ্টি তবুও চলো।
দীপার হাত ধরে টেনে নিয়ে আসলো হাসান। বাইরে বৃষ্টি আরও বেড়েছে। কিছুই দেখা যাচ্ছেনা ঠিকমত। একটা রিকশা ডেকে উঠে বসলো দুজনে.........
বৃষ্টিতে হয়ে রাস্তা যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো। চারিদিকে নম্রতা। রিকশায় হাসান আর দীপা। একে অপরের দিকে তাকাতেই দীপা লজ্জায় মুখ সরিয়ে নিল। এক অন্যরকম মায়া আছে মেয়েটার চোখে। ওর চোখের দিকে তাকালে নিজের সব দুঃখ যেন ফুরিয়ে যায় হাসানের। বাঁচতে ইচ্ছা করে অনন্তকাল। দীপাকে সাথে নিয়েই বাঁচতে ইচ্ছা করে।
বৃষ্টির পানি খুব ঠাণ্ডা। শাড়িটা ভিজে আটকে গেছে গায়ের সাথে। দীপা হাসানের কাঁধে মাথা রাখে। একটু উষ্ণতার জন্য আরেকটু কাছে সরে বসে.........
-সমাপ্ত-
©somewhere in net ltd.