নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

লটকা/ লটকন

২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৯



মোলায়েম আবরনে স্বাদে ভরা লটকা,
ভাবতুম, খায় এসব যারা শুধু ফটকা।
আসলে মোটেই নয়, দারুন এ ফলটা,
সি ভিটের কাজ দেয় মুখে এনে জলটা।
রুচিতে ভরায় মুখ, টক-মিঠা স্বাদ বেশ,
পেটপুরে খেয়েও কাটে না তৃপ্তির রেশ!
কেউ বলে লটকা কেউবা লটকন কয়,
মনলোভা দেশী ফল, লটকার হোক জয়।
আশি টাকা কেজি তবু ক্রেতার থাকে ধুম,
লটকন চাষীদের হাসি হাসি চোখে ঘুম।
রসে ভরা লটকন মুখে মুখে আনে জল,
টিকে থাক যুগ যুগ দেশময় এই ফল।

মন্তব্য ৩৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:০৩

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: লটকন আমার মেয়ের খুব পছন্দের। সত্যি টক মিষ্টি স্বাদের লটকন খেতে মন্দ নয়।

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৮:২৯

নতুন নকিব বলেছেন:



আগে কখনো খাইনি। ফালতু বুনো ফল মনে করে এড়িয়ে যেতুম। আসলে মোটেই তা নয়, এ ফলের তো দেখি অনেক গুন। এতে ভিটামিন সি রয়েছে প্রচুর। অন্যান্য খাদ্যগুনও বেশ। ফরমালিন ওষুধ বিষ ইত্যাদি মুক্ত। অবহেলিত হলেও সব মিলিয়ে অসাধারন একটি দেশীয় ফল।

মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা। অনেক ভাল থাকবেন তারেক_মাহমুদ ভাই।

২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:০৮

সাগর শরীফ বলেছেন: দারুণ কোযেন্সিডেন্স! এই মূহুর্তে লটকনই খাচ্ছি। কিন্তু কোনটা টক আবার কোনটা মিষ্টি কেন লাগছে বুঝলাম না। দুই গাছের লটকন নাকি !

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৮:৩৮

নতুন নকিব বলেছেন:



দারুন ব্যাপার! কোয়েনসিডেন্স বটে!

আপনি লটকন খেতে খেতেই এই পোস্ট সামনে চলে এলো তাহলে! বেশ! দুই গাছের হলে টক মিষ্টি হতে পারে। আবার একই গাছের এমনকি একই বোটায়ও মিষ্টি টক দুই ধরনের ফল হতে পারে।

কৃতজ্ঞতা। অনেক ভাল থাকবেন।

৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:১০

অচেনা হৃদি বলেছেন: জিবে জল চলে এলো! :`>

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৮:৪০

নতুন নকিব বলেছেন:



কিছু লটকন সংগ্রহ করে খেতে শুরু করে দিলেই তো হয়!

কৃতজ্ঞতা পাঠ এবং মন্তব্যে। ভাল থাকুন সারাক্ষন।

৪| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:১০

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:


দুর্দান্ত লটকনের মত কবিতা! সুস্বাদু!

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৮:৪১

নতুন নকিব বলেছেন:



কবিতা সুস্বাদু! বেশ বলেছেন ডানা ভাই।

আপনার আগমনে কৃতজ্ঞতা একরাশ। অনেক শুভাশীষ।

৫| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:২০

স্রাঞ্জি সে বলেছেন:
জিবে জল চলে আইলো :-P

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৮:৪৯

নতুন নকিব বলেছেন:



লটকন খেয়ে তবে জীবজল হোক দূর,
ছোট এই মধুফলে মধু যেন ভরপুর।

ধন্যবাদ। কৃতজ্ঞতা।

৬| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৬

জগতারন বলেছেন:
কোন দিন এ ফল আমার খাওয়া হয় নাই।
জানিনা কেমন এর স্বাধ।

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৮:৫৩

নতুন নকিব বলেছেন:



অবশ্যই একদিন খেয়ে দেখার অনুরোধ থাকলো। দারুন ফল এটি। আমি গত বছর সম্ভবত: প্রথম খেয়েছিলুম। এ জনপদের ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছুর মত এসব ফলও একসময় হয়তো হারিয়ে যাবে এই ফল। থেকে যাবে শুধুই স্মৃতিতে। সেই আশঙ্কা থেকেই কবিতা লেখার চেষ্টা।

অনেক কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা।

৭| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৯

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: দেশী ফল। ভেজাল ছাড়া। প্রচুর ভিটামিন সি আছে। ছড়াও ভাল হয়েছে ।

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৮:৫৪

নতুন নকিব বলেছেন:



দেশী ফল। ভেজাল ছাড়া। প্রচুর ভিটামিন সি আছে।

একদম সঠিক বলেছেন প্রিয় কবি।

কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা।

৮| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৪১

এ.এস বাশার বলেছেন: লটকনের কেজি ৪০ টাকা এখন.... অনেক মজার ফল ......

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৮:৫৫

নতুন নকিব বলেছেন:



৪০ টাকা! আমরা তো ৮০ টাকায় কিনি।

বাগান এলাকায় হয়তো দাম কিছুটা কম!

ধন্যবাদ শুভকামনা অন্তহীন।

৯| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৭

এখওয়ানআখী বলেছেন: ভাই এমনভাবে লটকনকে উপস্থাপন না করলেই পারতেন! এখন আমি লটকন কোথায় পাই বলেনতো? জিভে জল করে টলমল

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৮:৫৯

নতুন নকিব বলেছেন:



লটকন,
দেশী ফল।
জিভে জল,
টলমল।

হেটে হেটে,
হাটে যান।
লটকন,
কিনে খান।

অনেক অনেক শুভকামনা। কৃতজ্ঞতা সুন্দর মন্তব্যে।

১০| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি ছাড়া আর কেউ কি আছেন লটকন নিয়ে কবিতা লিখেছেন?

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:০৩

নতুন নকিব বলেছেন:



ইহা তো রীতিমত গবেষনার বিষয় বৈকি! যাহা বুঝিতেছি, বাংলা সাহিত্যের আদ্যিকাল হইতে প্রকাশিত সকল পুঁথি ঘাটিয়া এই তথ্য বাহির করিতে আমার তো ঘর্মাক্ত কলেবরে আপনার প্রশ্নের জবাব খুঁজিতে হইবে!

কবিদের খেয়ে দেয়ে আর কাজ নেই বুঝি, লটকন নিয়ে লিখবে কবিতা!

অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন নিরন্তর।

১১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৮

আখেনাটেন বলেছেন: চমৎকার এক ফল। সুন্দর কবিতা নকিব ভাই।

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:০৫

নতুন নকিব বলেছেন:



আসলেই তাই। অবহেলিত এই ফলটি সত্যি অসাধারন।

আপনার আগমনে মুগ্ধ হলাম। মোবারকবাদ। কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা অহর্নিশ।

১২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৯

কথার ফুলঝুরি! বলেছেন: আমি টক খেতে পারিনা। তবে এই ফলটা খারাপ না।
লটকন কি আপনার প্রিয় ফল ভাইয়া? লটকন নিয়ে কবিতা ? তবে ভালো হয়েছে কবিতা ।

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:১০

নতুন নকিব বলেছেন:



গতবছরের পূর্বে এই ফল চিনতাম না। দেখলে মনে হত, বুনো ফল এগুলো। এখন তো রীতিমত প্রিয় ফলই এই লটকন।

লটকন নিয়ে কবিতা লেখার প্রচেষ্টা কেন, তার কারনটা ৬ নং মন্তব্যের উত্তরে বলার চেষ্টা করেছি।

অনেক ভাল লাগলো আন্তরিক মন্তব্য। কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা অ্ন্তহীন।

১৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪০

চাঁদগাজী বলেছেন:


দেশের কোন এলাকায় ইহার চাষ হয়? এক গাছে কি গড়ে কি পরিমাণ ফল হয়? একটা গাছের জন্য আনুমানিক কত বর্গগজ যায়গার দরকার?

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:২৭

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ চাঁদগাজী ভাই। লটকনের চাষ করতে চাচ্ছেন না কি? আচ্ছা, চাষ করলে জানাবেন, আমরা যেন আপনার বাগানে যেয়ে লটকন নিয়ে আসতে পারি। আপনার অবগতির জন্য লটকন চাষ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ন তথ্যাবলী যুক্ত করে দিলাম।

লটকন চাষ ও এর পুষ্টিমান
লটকন হচ্ছে এ দেশের একটি অপ্রচলিত ও খাদ্যমানে সমৃদ্ধ ফল। এ ফলটি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি এর চাষও লাভজনক। তবে এটি চাষ করতে বাড়তি কোনো জায়গার প্রয়োজন হয় না। বাড়ির আঙিনায় বা বড় বড় গাছের নিচে অধিক ছায়াযুক্ত জায়গায় খুব সহজেই লটকনের আবাদ করা যায়।

লটকন (বৈজ্ঞানিক নাম Baccaurea motleyana) এক প্রকার টক মিষ্টি ফল। লটকন নানা নামে পরিচিত, যেমন- Rambai, Rambi, Mafai-farang, Lamkhae, Ra mai ইত্যাদি। গাছটি দক্ষিণ এশিয়ায় বুনো গাছ হিসেবে জন্মালেও বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে বানিজ্যিক চাষ হয়। লটকন বৃক্ষ ৯-১২ মিটার লম্বা হয়, এর কান্ড বেটে এবং উপরাংশ ঝোপালো। পুং এবং স্ত্রী গাছ আলাদা; যাতে আলাদা ধরণের হলুদ ফুল হয়, উভয় রকম ফুলই সুগন্ধি। ফলের আকার দুই থেকে পাঁচ সেমি হয়, যা থোকায় থোকায় ধরে। ফলের রঙ হলুদ। ফলে ২-৫ টি বীজ হয়, বীজের গায়ে লাগানো রসালো ভক্ষ্য অংশ থাকে, যা জাতভেদে টক বা টকমিষ্টি স্বাদের। এই ফল সরাসরি খাওয়া হয় বা জ্যাম তৈরি করা হয়। এর ছাল থেকে রঙ তৈরি করা হয় যা রেশম সুতা রাঙাতে ব্যবহৃত হয়। এর কাঠ নিম্নমানের। ছায়াযুক্ত স্থানেই এটি ভাল জন্মে।

লটকনের বেশ কয়েকটি নাম রয়েছে; যেমন- হাড়ফাটা, ডুবি, বুবি, কানাইজু, লটকা, লটকাউ, কিছুয়ান ইত্যাদি।

পুষ্টিমানঃ
ফল পাকা অবস্থায় হালকা গোলাপী হলদে বর্ণের হয়। ফলের কোষ খোসার দ্বারা ঢাকা থাকে। কোষের পাতলা আবরণের মধ্যে সুগন্ধযুক্ত টকমিষ্টি রস থাকে। ফলের ওজনের ৬৬% খোসা এবং বীজ এবং বাকী ৩৪% খাদ্য উপযোগী অংশ। লটকন ফলের রসে ৭২.৪% পানি থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী অংশে পুষ্টির পরিমাণ পুষ্টি উপাদান পরিমাণ আমিষ স্নেহ শর্করা আঁশ ক্যালসিয়াম ফসফরাস আয়রণ ভিটামিন-এ ভিটামিন-বি১ ভিটামিন-বি২ নায়াসিন এসকরবিক এসিড ১.০ গ্রাম ০.৫ গ্রাম ২৫.২ গ্রাম ০.৪ গ্রাম ২.০ মি.গ্রাম ৬.০ মি.গ্রাম ০.৩ মি.গ্রাম ২৮.০ আইইউ ০.০৪ মি.গ্রাম ০.০৭ মি.গ্রাম ০.৬০ মি.গ্রাম ৮.০ মি.গ্রাম ।

লটকনের ওষুধিগুণঃ
১। আর্থ্রাইটিস রোগে উপকার পাওয়া যায় ।
২। ফোঁড়া এবং অন্যান্য ত্বকের রোগ সারাতে লটকন ফল অনেক উপকারী।
৩। মিজোরামে পাকস্থলীর ব্যথা, কলিক ও পাকস্থলীর আলসার সারাতে লটকন ব্যবহার করা হয়।
৪। লটকন ফল খেলে ব্রণ ও ত্বকের দাগ কমে আসে ।
৫। গরমে তেষ্টা মেটানো এবং বমি বমি ভাব দূর করতে লটকন ফল কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
৬। লটকন ফল খাওয়ার রুচি বাড়ায়।
৭। মানসিক অবসাদ কমিয়ে আনে।
৮। লটকন গাছের পাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে খেলে ডায়রিয়া থেকে উপশম পাওয়া যায়।
৯। লটকন গাছের ডাল এবং বাকল চর্মরোগ সারাতে ব্যবহার হয়।
১০। গনোরিয়া রোগ হলে লটকনের বীজ খেলে উপকার পাওয়া যায় ।

লটকনের জাতঃ
বারি লটকন-১ 'বারি লটকন-১' জাতটি বাংলাদেশে চাষের জন্য ২০০৮ সালে অনুমোদন করা হয়। এটি একটি মাঝ মৌসুমি জাত। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে এর ফল পরিপক্বতা লাভ করে। গাছপ্রতি ফলের সংখ্যা ৩৩৩৪টি। এটি একটি নিয়মিত ফলদানকারী উচ্চ ফলনশীল জাত। গাছপ্রতি ফলন ৪৫ কেজি (১২.৫০ টন/হেক্টর)। মাঝারি আকারের প্রতিটি ফলের গড় ওজন ১৪ গ্রাম। প্রতিটি ফলে ৪-৫টি ক্ষুদ্রাকারের বীজ থাকে এবং ফল গোলাকার, ফলের শাঁস রসালো, নরম এবং টক-মিষ্টি স্বাদ (ব্রিক্সমান ১৫.৬০)। প্রতিটি ফলে কোষের সংখ্যা ৪-৫টি। লটকনের এ জাতটি বাংলাদেশের সর্বত্র চাষ উপযোগী।

পরিচিতিঃ
লটকন বেঁটে আকারের চিরসবুজ বৃক্ষ। ফল কান্ড ও বড় বড় ডালে থোকায় থোকায় ঝুলে থাকে। একটি থোকায় ৫-৬টি থেকে ১৫-২০ টি পর্যন্ত ফল ধরে। প্রতিটি ফলের ওজন প্রায় ১২ থেকে ২০ গ্রাম । প্রতিটি ফলে ৩-৪টি কোষ থাকে। ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং মার্বেল এর মত গোলাকার থাকে। পাকা অবস্থায় হালকা গোলাপী-হলুদ বর্ণ ধারণ করে। প্রতিটি ফলের ব্যাস হয় ৩-৪ সেন্টিমিটার। খোসার আবরণের ভিতর কোষগুলো একটি অন্যটি থেকে পাতলা কাগজের মত সাদা আবরণে পৃথক থাকে। ফলের কোষগুলো ফলের বোঁটার দিকে যুক্ত না থেকে গোড়ার দিকে যুক্ত থাকে এবং প্রতিটি কোষ পাতলা আবরনে আবৃত থাকে। ফলের কোষ কমলা লেবুর কোষের মত অর্ধ চন্দ্রাকৃতির এবং সুগন্ধযুক্ত টকমিষ্টি রসে পূর্ণ থাকে। বাংলাদেশের বাজারে দুই ধরণের লটকন পাওয়া যায়। এদের মধ্যে একটি ৩ কোষ বিশিষ্ট ছোট আকারের এবং অন্যটি ৪ কোষ বিশিষ্ট বড় আকারের। বড়টির কোষে রসের পরিমাণ এবং মিষ্টতা বেশি থাকে। চাষের জন্য ৪ কোষ বিশিষ্ট জাতটি নির্বাচন করাই উত্তম। গাছের বৈশিষ্ট্য লটকনের গাছ ৫-৬ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয় প্রতি গাছে প্রচুর পরিমাণে সরল পত্র থাকে। পাতাগুলো সাধারণত ১০-১২ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ৬-৮ সেন্টিমিটার চওড়া, লটকনের পুরুষ গাছ ও স্ত্রী গাছ ভিন্ন এবং গাছের গুড়ি থেকে বসন্তকালে থোকায় থোকায় পুস্পমঞ্জরী বের হয়। তবে পুরুষ এবং স্ত্রী ফুলের পুস্পমঞ্জরী আলাদা গাছে হয় বলে একই বাগানে পুরুষ এবং স্ত্রী গাছ থাকা বাঞ্চনীয়। একক লিঙ্গের ক্ষুদ্র ফুল আলাদা গাছে থাকে তাই বাতাস এবং ক্ষুদ্র পোকামাকড় দ্বারা পরাগায়ন হয়। এভাবে পরাগায়নের পর ফলের বৃদ্ধি আরম্ভ হয়। এবং তা জুন- জুলাই পর্যন্ত চলতে থাকে। প্রতি গাছে যথেষ্ট শাখা প্রশাখা থাকে। গাছে ফল আসলে তা বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।

আবহাওয়া এবং মাটিঃ
লটকন উষ্ণ এবং নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের আর্দ্র আবহাওয়ায় ভাল জন্মে। এ জন্য পানি দাঁড়ায় না অথচ বৃষ্টিপাত বেশি হয় এমন এলাকার বেলে -দোআঁশ, বা কাদা-দোআঁশ, ক্ষারবিহীন, সামান্য অম্লযুক্ত মাটি লটকন চাষের জন্য বেশি উপযোগী। মাটির অম্লমান ৫.৫ থেকে ৬.০ পর্যন্ত হলে ভাল হয়। এ ফলের গাছ দাঁড়ানো পানি সহ্য করতে পারে না। গাছের গোড়ায় ৮-১০ দিন পানি জমে থাকলে গাছ মরে যেতে পারে। আংশিক ছায়াযুক্ত স্থানে এ গাছ ভাল হয় বলে আম বা কাঁঠালের মত বড় গাছের নিচেও চাষ করা যায়। মধুপুর অঞ্চলের চালা জমি এ ফলের জন্য উপযুক্ত।

লটকনের চাষ প্রণালী
লটকন বাংলাদেশের অতি সুপরিচিত ফল। ফল গোলাকার ও পাকা অবস্থায় হলুদ। ফলের খোসা নরম ও পুরু। প্রতি ফলে তিনটি করে বীজ থাকে। উৎপাদনের পরিমাণ বেশি না হলেও দেশের সব এলাকাতেই এর চাষ হয়। নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর নেত্রকোণা ও সিলেট এলাকায় লটকন চাষ বেশি হয়।

চাষ পদ্ধতি
মাটি

১. শুনিকাশযুক্ত প্রায় সব ধরণের মাটিতেই লটকনের চাষ করা যায়।
২. তবে বেলে দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী।
৩. উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি এবং উন্মুক্ত বা আংশিক ছায়া চাষ করা যায়।

চারা রোপণের সময়
১. বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস গাছ রোপণের উপযুক্ত সময়
২. তবে বর্ষার শেষের দিকে অর্থাৎ ভাদ্র-আশ্বিন মাসেও গাছ লাগানো যায়।

রোপণের দূরত্ব
১. সারি থেকে সারির দূরত্ব ঃ ৬ মিটার
২. চারা থেকে চারার দূরত্ব ঃ ৬ মিটার

গর্ত তৈরি
১. গর্তের আকার হবে ৯০ সেমি
২. গর্ত করার ১০-১৫ দিন পর প্রতি গর্তে নিম্নরূপ হারে সার প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে ভালভাবে মিশিয়ে গর্ত ভরাট করতে হবে।

সার সারের পরিমাণ/গর্ত
১) গোবর / জৈব সার ১৫-২০ কেজি
২) টিএসপি ৫০০ গ্রাম
৩) এমপি ২৫০ গ্রাম

৩. গর্ত ভর্তি করার সময় মাটি শুকনা হলে গর্তে পানি দিয়ে মাটি ভিজিয়ে দিতে হবে।

চারা রোপণ ও পরিচর্যা
১. সাধারণত বীজ দিয়ে লটকনের বংশ বিস্তার করা যায়।
২. সমতল জমিতে বর্গাকার বা আয়তাকার পদ্ধতিতে লটকনের চার লাগানো যেতে পারে।
৩. গর্ত ভর্তি করার ১০-১৫ দিন পর গর্তের মাঝখানে নির্বাচিত চারা সোজাভাবে লাগিয়ে চারদিকে মাটি দিয়ে চেপে দিতে হবে।
৪. চারা লাগানোর পর পর পানি দিতে হবে।
৫. প্রতি ১-২ দিন অন্তর পানি দিতে হবে।
৬. প্রয়োজনবোধে বাঁমের খুঁটি ও বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

সার প্রয়োগ
প্রতি বছর পূর্ণবয়স্ক গাছে নিম্নরূপ হারে সার প্রয়োগ করতে হবে।

সারের নাম সারের পরিমাণ/গাছ
১) গোবর / জৈব সার ১৫-২০ কেজি
২) ইউরিয়া ১ কেজি
৩) টিএসপি ০.৫ কেজি
৪) এমপি ০.৫ কেজি

অথবা, মিশ্রসার প্রয়োগ করলে নিম্নরূপ হারে সার প্রয়োগ করতে হবে।

সারের নাম সারের পরিমাণ/গাছ
১) গোবর / জৈব সার ১৫-২০ কেজি
২) এনপিকেএস মিশ্র সার (১২-১৫-২০-৬) ১ কেজি

উপরোক্ত সার গাছের গোড়া থেকে ১ মিটার দূরে যতটুকু জায়গায় দুপুুর বেলা ছায়াপড়ে ততটুকু জায়গায় ছিটিয়ে কোঁদাল দিয়ে কুপিয়ে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।

সেচ
১. চারা রোপণের প্রথম দিকে ঘন ঘন সেচ দেয়া দরকার
২. ফল ধরার পর দু’একটা সেচ দিতে পারলে উপকার পাওয়া যায়।

ডাল ছাঁটাই
১. গাছের মরা, রোগাক্রান্ত ও কীটাক্রান্ত ডাল ছাঁটাই করে দিতে হবে।

ফল সংগহ
শীতের শেষে গাছে ফুল আসে। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে ফল পাকে।

তথ্যসূত্র কৃতজ্ঞতা:
১. কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
২. Click This Link


১৪| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:৪০

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: ইহা আমাদের নরসিংদীর অন্যতম অর্থকরি ফল

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:২৯

নতুন নকিব বলেছেন:



তাহলে তো নরসিংদী যেতে হবে লটকন খেতে!

কামাল ভাই নিশ্চয়ই ভাল সময় কাটছে আপনার। অনেক ভাল থাকবেন কামনা করছি।

১৫| ২৬ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৩৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় নকিবভাই,

ফলের কবিতা খুব ভালো লাগলো। তবে সরি! আমি এই ফলটি খাইনি। এপারে বাজারে দেখেছি বলেও মনে হয়না ।

শুভকামনা জানবেন ।

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:৩১

নতুন নকিব বলেছেন:



একবার চলে আসুন আমাদের পল্লীর ছোঁয়া নিয়ে যাবেন। লটকনও দেখা হয়ে যাবে তখন।

অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা আন্তরিক মন্তব্যে। নিরন্তর ভাল থাকার প্রার্থনা।

১৬| ২৭ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ২:৫৬

অনল চৌধুরী বলেছেন: ছবিটা কি পাকা লটকনের?
অামরা তো খাই কাচা।

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:৩৪

নতুন নকিব বলেছেন:



ছবিটা পাকা লটকনের। ভাল জাতের কাঁচাগুলোও কিন্তু মিষ্টি হয়।

মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা এবং শুভাশীষ।

১৭| ২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৮:৪২

নিভৃতেনৈঃশব্দে বলেছেন: কবিতায় ভালোলাগা লটকে দিলাম কিন্তু।
বহু আগে ছোট বেলায় এক দুইবারই খেয়েছিলাম। তারপরে কখনো চোখেই পড়েনি দেশেI আর দেশের বাইরেতো এগুলো পাবার বা খোঁজার কোনো ব্যাপার নেই।

২৮ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:৪২

নতুন নকিব বলেছেন:



লটকনের কবিতায় ভালোলাগা লটকে দিলেন, আনন্দিত হলাম। কিন্তু নিখাদ এই ভালোলাগা-ভালোবাসা লটকে দিয়ে আবার যেন সটকে না পড়েন কখনো।

হ্যাঁ, আমারও তাই মনে হয়। দেশের বাইরে এগুলো সম্ভবত: যায় না। তা আপনি বললে কুরিয়ারে করে কেজি কয়েক পাঠিয়ে দিতে রাজি আছি।

কৃতজ্ঞতা ও শুভপ্রত্যাশা অহর্নিশ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.