নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফরজ নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাতের হুকুম কী? এটি কি আসলেই বিদআত? পর্ব-০২

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪৫



ইসলামে মধ্যপন্থা অবলম্বন পছন্দনীয়:

মধ্যপন্থা অবলম্বন করা ইসলামের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে অতি উদারতা ও অতি রক্ষণশীলতা পরিহার করে মধ্যপন্থা অবলম্বন করার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। ইসলামের ইতিহাসের দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যায়, অতি উদারতা ও অতি রক্ষণশীলতার কারণে এ উম্মতের ওপর কখনো কখনো বিপর্যয় নেমে এসেছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে দেখা যায়, ব্যক্তিবিশেষের ভিন্নমতকে সাধারণ উন্মতের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার অযথা চেষ্টা।

ফরজ নামাজের পর হাত তুলে দোআ করা একটি সুন্নাত আমল। এটিকে বিদ'আত বলার কোনো অবকাশ নেই

উদাহরন হিসেবে ফরজ নামাজের পর হাত তুলে দোআ করার মাসআলাটি এখানে প্রনিধানযোগ্য। কিছু লোকের অতি রক্ষণশীলতার কারণে এটি মতানৈক্যপূর্ণ মাসয়ালার রূপ পরিগ্রহ করেছে। একদিকে ফরজ নামাজের পর হাত তুলে দোআ করা খুবই প্রয়োজনীয় কাজ মনে করা হচ্ছে, অন্যদিকে এটিকে বিদ'আত ও ঘৃণিত কাজ মনে করা হচ্ছে। অথচ এই দুই অতিরঞ্জিত মতামতের মাঝখানে হলো এ মাসআলার আসল সমাধান। অর্থাৎ ফরজ নামাজের পর হাত তুলে দোআ করা যেমন বাধ্যতামূলক নয়, তেমনি এটি বিদ'আতও নয়। বরং এটি একটি মুসতাহসান বা উত্তম কাজ। কেউ যদি স্বেচ্ছায় করে ভালো, না করলে কোনো জোর-জবরদস্তি নেই। কুরআন-হাদিসের দৃষ্টিতে এটি একটি সুন্নাত আমল। এটিকে বিদ'আত বলার কোনো অবকাশ নেই।

ফরজ নামাজের পর হাত তুলে দোআ করা হাদিসের ছয়টি নির্ভরযোগ্য কিতাব অর্থাৎ সিহাহ সিত্তার মাধ্যমে প্রমাণিত

ফরজ নামাজের পর দোআ করা হাদিসের ছয়টি নির্ভরযোগ্য কিতাব অর্থাৎ সিহাহ সিত্তার মাধ্যমে প্রমাণিত। অন্যদিকে দোআর সময় হাত তোলার কথাও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। কিন্তু এমন কোনো প্রমাণ নেই, যাতে ফরজ নামাজের পর হাত তুলে দোআ করাকে হারাম কিংবা নিষেধ করা হয়েছে। সাহাবায়ে কেরামের জামানা থেকে আজ পর্যন্ত হাজার বছর ধরে ফরজ নামাজের পর হাত তুলে দোআ করার নিয়ম চলে আসছে। এতে কেউ আপত্তি করেনি। ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম মালেক রহমাতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম শাফেয়ি রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং ইমাম আহমাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি -এর মতো অগণিত ফকিহ ও মুহাদ্দিস চলে গেছেন। কোনো একজন ইমামও এ বিষয়ে আপত্তি করেননি। শুধু ইবনে তাইমিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও ইবনে কাইয়্যিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি আপত্তি জানিয়েছেন। আহলে হাদিসের আলেম নাসিরুদ্দীন আলবানীর অনুকরণে বর্তমানে কিছু লা-মাজহাবি আলেম ফরজ নামাজের পর হাত তুলে মোনাজাত সম্পর্কে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন, যা শরিয়তের যুক্তিতে কখনো গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। হ্যাঁ, যাঁরা ফরজ নামাজের পর হাত তুলে মোনাজাত করাকে বাধ্যতামূলক মনে করতেন, তাঁরাও ভুলের মধ্যে আছেন। জায়েজ কাজকে বাধ্যতামূলক মনে করাও শরিয়তের দৃষ্টিতে গর্হিত কাজ। এতে সন্দেহ নেই।

আরবেও হাত তুলে মোনাজাত চালু ছিল:

আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব নাজদির উত্থানের আগ পর্যন্ত এবং পেট্রো ডলার পাওয়ার আগ পর্যন্ত ফরজ নামাজের পর হাত তুলে মোনাজাতের আমল জারি ছিল। এমনকি লা-মাজহাবিদের বড় বড় আলেমও তা সমর্থন করেছেন। যেমন সায়্যিদ নাজির হোসাইন, নাওয়াব সিদ্দিক হাসান (ভূপালি), সানাউল্লাহ, হাফেজ আব্দুল্লাহ, মাওলানা মুবারকপুরীর মতো বড় বড় আলেম নামাজের পর হাত তুলে দোআ করাকে বিদ'আত বলেননি। কয়েকজন লোকের ভিন্ন মতের কারণে উম্মতের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি আমলকে বিদ'আত বলা কখনো যুক্তিসংগত হতে পারে না।

রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ২২টি জায়গায় দোআ করার হাদিস রয়েছে। এর মধ্যে ফরজ নামাজের পর অন্যতম।

হাদিসের কিতাব অধ্যয়নে দেখা যায়, দোআর জন্য নির্দিষ্ট কোনো দিন বা সময়ের প্রয়োজন নেই। হ্যাঁ, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ২২টি জায়গায় দোআ করার হাদিস রয়েছে। এর মধ্যে ফরজ নামাজের পর অন্যতম। এ মাসআলাটি সকলের নিকট বোধগম্য করে উপস্থাপন করতে অল্পবিস্তর আলোচনার প্রয়োজন। আমরা এ নিবন্ধে হাদিস, সলফে সালেহিনের আমল ও তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

হাদিসের ভান্ডার থেকে কিছু হাদিস-

১. রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, 'তোমাদের প্রতিপালক অবশ্যই লজ্জাশীল এবং সম্মানী। বান্দা যখন তাঁর কাছে দুই হাত তুলে দোআ করে, তখন তিনি খালি হাত ফেরত দিতে লজ্জাবোধ করেন।' ইমাম হাকেম হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। লা-মাজহাবিদের আলেম আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী এই হাদিসের ব্যাখ্যায় এটিকে সহিহ বলে মেনে নিয়েছেন। অন্যদিকে ইমাম আবু দাউদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এই হাদিসটি বর্ণনা করে কোনো মন্তব্য করেননি। এতে বোঝা গেল, হাদিসটি নিঃসন্দেহে সহিহ।

লা-মাজহাবিদের আলেম নাসিরুদ্দীন আলবানী সহিহ ইবনে মাজাহ ও জয়িফ ইবনে মাজাহ নামে দুটি কিতাব লিখেছেন। এতে এই হাদিসটি সহিহ ইবনে মাজাহয় অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

লা-মাজহাবিদের আলেম মাওলানা উবাইদুল্লাহ মোবারকপুরী মিশকাত শরিফের ব্যাখ্যা গ্রন্থে এ হাদিসটিকে সহিহ বলে উল্লেখ করেছেন। এতে বোঝা যায়, হাদিসটি সবার কাছে সহিহ এবং নির্ভরযোগ্য।

এ হাদিসে সুস্পষ্টভাবে দোআর সময় হাত তোলার কথা উল্লেখ রয়েছে, যা কোনো বিশেষ দোআ কিংবা বিশেষ কার্যকারনের সাথে নির্দিষ্ট বা সম্পৃক্ত নয়। বরং সর্বক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য বিধায় ফরজ নামাজের পর দোআতেও এটি প্রযোজ্য।

হজরত ইমাম তিরমিজি রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর গ্রন্থের দ্বিতীয় খণ্ডে একটি অধ্যায় লিখেছেন এভাবে- 'দোয়ার সময় হাত তোলা সম্পর্কীয় হাদিসগুলোর বর্ণনা।' তিনি এ বিষয়টিকে অধ্যায় নির্ধারণ করাই আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, দোয়ার সময় হাত তোলা ইমাম তিরমিজি রহমাতুল্লাহি আলাইহি -এর কাছে হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। এতে তিনি একটি হাদিস উল্লেখ করেন-

২. হজরত উমর রাদিঅআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়ার সময় হাত উঠালে তা নামানোর আগে চেহারা মোবারকে মুছে নিতেন (জামেয়ে তিরমিজি ২/১৭৬, আল মুজামুল আওসাত লিত্তাবরানি ৫/১৯৭, হাদিস: ৭০৫৩)।

এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম তিরমিজি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, হাদিসটি সহিহ। বিশিষ্ট হাদিস বিশারদ আল্লামা হাফেজ ইবনে হাজর আসকালানি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হাদিসটি হাসান।

হজরত উমর রাদিঅআল্লাহু তাআ'লা আনহু সূত্রে বর্ণিত, এ হাদিসের মধ্যে স্পষ্টভাবে দোয়ার সময় হাত তোলার কথা উল্লেখ আছে। এতে বোঝা যায়, দোয়ার সময় হাত তোলা নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সুন্নাত এবং দোয়ার শেষে হাত দিয়ে মুখমণ্ডল মাসেহ করাও সুন্নাত।

৩. হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিঅআল্লাহু তাআ'লা আনহু সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করার সময় হাতের তালু ওপর দিকে করো। হাতের তালুর উল্টো দিক করে প্রার্থনা করো না। যখন দোয়া করা শেষ হবে, দুই হাত দিয়ে মুখমণ্ডল মাসেহ করো (আবু দাউদ ৫৫৩, আদ্দাওয়াতুল কবির লিল বায়হাকি, পৃ. ৩৯)।

৪. ইমাম ইবনে মাজাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেছেন এভাবে- হজরত ইবনে আব্বাস কর্তৃক বর্ণিত আবু দাউদ শরিফের উল্লিখিত হাদিস সম্পর্কে লা-মাজহাবি কোনো কোনো আলেম প্রশ্ন তুলেছেন যে ইমাম আবু দাউদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এই হাদিসের সনদে একজন বর্ণনাকারীর নাম উল্লেখ করেননি। সেজন্য হাদিসটি জয়িফ। এ প্রশ্নের উত্তরে লা-মাজহাবদেরই আলেম মাওলানা শামসুল হক আজিমবাদী আবু দাউদ শরিফের ব্যাখ্যা গ্রন্থ আইনুল মাবুদে ওই হাদিসের ব্যাখ্যা করেছেন, ইমাম আবু দাউদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি যে বর্ণনাকারীর নাম উল্লেখ করেননি, সে বর্ণনাকারীর নাম ইমাম ইবনে মাজাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইবনে মাজাহ শরিফে উল্লেখ করেছেন। হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি রহমাতুল্লাহি আলাইহিও তাঁর কিতাব তাকরিবুত তাহজিবে ওই বর্ণনাকারীর নাম উল্লেখ করেছেন। ফলে হাদিসটি জয়িফ বলার কোনো অবকাশ থাকে না।

লা-মাজহাবিদের কোনো আলেমের কথা অনুযায়ী যদি ওই হাদিসটির সনদ জয়িফও ধরে নেওয়া যায়, তখনো আলোচ্য বিষয়ে হাদিসটি দলিল হওয়ার সম্পূর্ণ উপযোগী। কারণ লা-মাজহাবিদের আলেম হাফেজ আব্দুল্লাহ রওপুরী তাঁর একটি ফতোয়ায় লিখেছেন, 'শরিয়তের বিধান দুই প্রকার। এক. কোনো কিছুকে বৈধ স্বীকৃতি দেওয়া, দুই. অবৈধ বলে স্বীকৃতি দেওয়া।' প্রথম প্রকারের বিধানের জন্য সহিহ ও জয়িফ হাদিস দুটিই প্রযোজ্য। দ্বিতীয় প্রকারের জন্য শুধু সহিহ হাদিসই প্রযোজ্য।

ফরজ নামাজের পর হাত তুলে দোয়া করা প্রথম প্রকারের অন্তর্ভুক্ত, অর্থাৎ এটি একটি জায়েজ কাজ, হারাম কাজ নয়। তাই মাসয়ালাটি প্রমাণিত হওয়ার জন্য সহিহ ও জয়িফ উভয় প্রকারের হাদিসই প্রযোজ্য। এ ছাড়া তিনি এও মেনে নিয়েছেন, ফরজ নামাজের পর হাত তুলে মুনাজাত করা মুস্তাহাব আমল (ফাতাওয়া উলামায়ে আহলে হাদিস ১/২২-১৯৮৭ ইং)।

৫. রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিয়ম ছিল, 'তিনি যখন হাত উঠিয়ে দোয়া করতেন, তখন নিজের হাত চেহারা মোবারকে ফেরাতেন' (আবু দাউদ) (হাদিসটি মুহাদ্দিসিনের কাছে গ্রহণযোগ্য)।

৬. মুহাম্মদ ইবনে আবি ইয়াহইয়া বলেন, হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইর রাদিঅআল্লাহু তাআ'লা আনহু এক ব্যক্তিকে নামাজ থেকে ফারেগ হওয়ার আগে হাত তুলে দোয়া করতে দেখেন। ওই ব্যক্তি নামাজ শেষ করার পর হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইর রাদিঅআল্লাহু তাআ'লা আনহু তাঁকে বলেন, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজ শেষ করার আগে দোয়ার জন্য হাত ওঠাতেন না (মাজমাউজ যাওয়ায়েদ)।

এ হাদিসটি হাফেজ ইবনে হায়সাম তাবারানির হাওয়ালায় বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাকারীদের ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, 'ওয়া রিজালুহুস সেকাত'-এর সব বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য।

৭. মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বার এ হাদিসে ফরজ নামাজের পর হাত উঠিয়ে দোয়া করার ব্যাপারে স্পষ্ট বক্তব্য রয়েছে।
আসওয়াদ আমেরি তাঁর বাবার সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করেছি। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম ফেরানোর পর পাশ ফেরালেন এবং হাত তুলে দোয়া করলেন (এলাউস সুনান ৩/১৬৪, ফাতাওয়ায়ে নজিরিয়া ২৪৫, ২৬৫, ৩৫২)।

৮. হজরত ফজল ইবনে আব্বাস রাদিঅআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর এই বর্ণনাটি বিভিন্ন হাদিসের কিতাবে বর্ণিত হয়েছে, যা থেকে হাত উঠিয়ে দোয়া করা মুস্তাহাব প্রমাণিত হয়।

এ হাদিসে প্রমাণিত হয়, নামাজ একাগ্রতা বা খুশুখুজুর সঙ্গে পড়া এবং এরপর দুই হাত তুলে হাতের তালু চেহারার সামনে রেখে দোয়া করা (তিরমিজি, নাসায়ি)।

মুহাদ্দিসিন ও ফকিহদের দীর্ঘ যাচাই ও আলোচনার পর হাদিসটি নির্ভরযোগ্য বলেই বিবেচিত হয়েছে।

৯. হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিঅআল্লাহু তাআ'লা আনহু সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি নামাজের পর হাত বিস্তৃত করে এই দোয়া করবে- 'হে আল্লাহ! যিনি আমার এবং ইবরাহিম, ইসহাক, ইয়াকুব আলাইহিস সালাম -এর খোদা, জিবরাইল, মিকাইল, ইসরাফিল আলাইহিস সালাম -এরও খোদা, আপনার কাছে প্রার্থনা করছি, আমার দোয়া কবুল করুন। কারণ আমি মুখাপেক্ষী, পেরেশান এবং অপারগ। আমাকে দ্বীনের সঙ্গে হেফাজত করুন, গুনাহ থেকে বাঁচান, অভাব দূর করে দিন। তখন আল্লাহ তায়ালা তাঁর দুই হাতকে খালি ফেরাবেন না (আমলুল ইয়াওমি ওয়াল্লায়লাতি ৪৮, ৪৯, কানজুল উম্মাল ২/৮৪)। এ হাদিসের দুজন বর্ণনাকারী সম্পর্কে কিছু কথা থাকলেও ইবনে মুইন বলেছেন, হাদিসটি প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করায় কোনো সমস্যা নেই। একই মন্তব্য করেছেন ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান। সুতরাং হাদিসটি নির্ভরযোগ্য।

১০. ইমাম বুখারি রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর কিতাব আদ্দাওয়াতে 'বাবু রাফয়িল ইয়াদায়ি ফিদ দোয়া'য় হজরত আবু মুসা আশআরি রাদিঅআল্লাহু তাআ'লা আনহু সূত্রে বর্ণনা করেন- রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করেছেন, দোয়ার মধ্যে উভয় হাত এটুকু উঠিয়েছেন, যাতে তাঁর হাতের পাতার শুভ্রভাগ দেখা গিয়েছে।

এ ছাড়া ইমাম বুখারি রহমাতুল্লাহি আলাইহি এ অধ্যায়ে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদিঅআল্লাহু তাআ'লা আনহু, হজরত আনাস রাদিঅআল্লাহু তাআ'লা আনহু সূত্রে বর্ণিত দুটি হাদিস উল্লেখ করেছেন। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ আছে- এ তিনটি হাদিসের আলোকে বুখারি শরিফের ব্যাখ্যাকার হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি রহমাতুল্লাহি আলাইহি লেখেন, প্রথম হাদিসটি তাঁদের জবাব, যাঁরা বলেন হাত তুলে দোয়া করা শুধু ইসতিস্কার নামাজের জন্যই খাস। দ্বিতীয় হাদিসদ্বয় তাঁদের জবাব, যারা বলেন, ইসতিস্কার দোয়া ছাড়া অন্য কোনো দোয়ায় হাত উঠানো যাবে না (ফতহুল বারি ১১/১১৯)।

এ মাসয়ালার সমর্থনে হজরত ইবনে হাজার রহমাতুল্লাহি আলাইহি আল আদাবুল মুফরাদ, বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, নাসায়ি ও হাকেমের উদ্ধৃতি দিয়ে আরো কিছু বর্ণনা উল্লেখ করেছেন। তা থেকে কয়েকটি হাদিস এখানে উল্লেখ করছি।

১১. 'এরপর তিনি উল্লেখ করেন, এক ব্যক্তি দীর্ঘ সফর করে এবং খুব পেরেশান ও মলিন বদনে আসমানের দিকে হাত তুলে দোয়া করেন, হে আল্লাহ!... তখন সে ব্যক্তির দোয়া কবুল করা হয় (রাফউল ইয়াদাইন ১৮, সহিহ মুসলিম কিতাবুদ দোয়া)।

১২. রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করার সময় বুক পর্যন্ত হাত তুলতেন এবং দোয়া শেষে হাত মোবারক চেহারায় ফেরাতেন (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ২/২৪৭)।

১৩. 'নামাজ শেষ করার পর রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের ডান হাত কপালের ওপর ফেরাতেন... (ইবনে সানি ৩৯)।
সিহাহ সিত্তার অনেক হাদিস থেকে এ কথা তো দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন ক্ষেত্রে দোয়ার সময় হাত উঠিয়েছেন এবং হাত মুখে ফিরিয়েছেন।

নামাজের পরে হাত তুলে দোয়া করার আরো কিছু প্রমানাদি:

ইমাম নববী রহমাতুল্লাহি আলাইহি মুহাজজাবের ব্যাখ্যা গ্রন্থ 'আল মাজমু' গ্রন্থে দোয়ার মধ্যে হাত উঠানো এবং হাতের তালু মুখে ফেরানোর ব্যাপারে ৩০ টি হাদিস উল্লেখ করেছেন। এরপর তিনি এর বিধান সম্পর্কে মন্তব্য করেন, দোয়ায় হাত উঠানো মুস্তাহাব (আল মাজমু ৪৪৮-৪৫০)।

সব শেষে ইমাম নববী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লেখেন, যারা এসব হাদিসকে কোনো সময় বা স্থানের সঙ্গে নির্দিষ্ট করে, তারা বড়ই ভ্রান্তির মধ্যে আছে।

তিনি কিতাবুল আজকারে নামাজের পর হাত তুলে দোয়া করার বিষয়টি জায়েজ বলে উল্লেখ করেছেন। এবং এর প্রমাণে তিরমিজি শরিফে বর্ণিত হজরত উমর রাদিঅআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর বর্ণনা এবং আবু দাউদ শরিফে বর্ণিত হজরত ইবনে আব্বাস রাদিঅআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর হাদিস উল্লেখ করেছেন (কিতাবুল আজকার ২৩৫)।

বিষয়টি নিয়ে হজরত ইবনে হাজার আসকালানি রহমাতুল্লাহি আলাইহি ফতহুল বারি ১১/১১৮ এবং বুলুগুল মুরামে সবিস্তার আলোচনা করেছেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন হাদিস উল্লেখ করে দোয়ায় হাত উঠানো মুস্তাহাব প্রমাণ করেছেন। এই দীর্ঘ আলোচনা থেকে স্পষ্ট প্রমাণ হলো, হাত তুলে দোয়া করা মুস্তাহাব এবং নামাজের পর হাত তুলে দোয়া করাও উত্তম কাজ।

ভদ্র সালাফিগন সত্যকে ঠিকই স্বীকার করে নেন:

বর্তমানে লা-মাজহাবি যারা নামাজের পর দোয়া করাকে সরাসরি বিদ'আত বলে হক্কানি উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন, তাঁদের বিজ্ঞজনদের এ ব্যাপারে মতামত কী, দেখা যাক।

তাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব নজলুল আবরার। তাতে স্পষ্ট লেখা আছে- 'দোয়াকারী দোয়ার সময় হাত উঠাবে। কাঁধ পর্যন্ত হাত তুলবে। এটি দোয়ার আদব। কারণ এটি রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে স্বীকৃত।'

এরপর লেখেন, 'যে দোয়াই হোক, যখনই হোক, চাই তা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পরে হোক বা অন্য সময়, তাতে হাত তুলে দোয়া করা উত্তম আদব। হাদিসের মর্মবাণী এর প্রমাণ বহন করে। মূলত নামাজের পর হাত তুলে দোয়া করার বিষয়টি নিতান্তই স্বাভাবিক এবং সবার জানা হওয়ায় সে ব্যাপারে ভিন্নভাবে স্পষ্ট বর্ণনা পাওয়া যায় না' (নাজলুল আবরার ৩৬)।

মাওলানা আব্দুর রহমান মোবারকপুরী তুহফাতুল আহওয়াজিতে লেখেন, 'নামাজের পর হাত তুলে দোয়া করা জায়েজ।' (তুহফাতুল আহওয়াজি ২/২০২, ১/২৪৪)।

জামেয়া সালাফিয়া বেনারস থেকে প্রকাশিত 'আলমুহাদ্দিস' জুন ১৯৮২ সালে মাওলানা উবাইদুল্লাহ মোবারকপুরী একটি ইস্তিফতার জবাবে লেখেন- 'ফরজ নামাজের পর হাত তুলে দোয়া করাও রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে স্বীকৃত বিষয়।'

তিনি আরো লেখেন, 'আমাদের মতে ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পর বাধ্যবাধকতা ছাড়া ইমাম ও মুক্তাদি হাত উঠিয়ে অনুচ্চস্বরে দোয়া করা জায়েজ। এটি একাকী হোক বা সামষ্টিকভাবে হোক, আমাদের আমলও এটি' (মুহাদ্দিস, জুন ১৯৮২)।

শেষের কথা:

আমাদের কর্তব্য হচ্ছে, দোয়াকে শুধু হাত তোলার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয়। আবার এমনও নয় যে দোয়ায় হাত তোলা বিদ'আত। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজের পর দোয়ায় হাত তুলেছেন। কিন্তু কম তুলেছেন। কারণ রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন জিকিরই সব সময় করতেন, যা তাঁর জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত ছিল। বাকি বিষয় তিনি উম্মতের উৎসাহের জন্য করেছেন। কাজেই কেউ যদি নামাজের পর নিয়মিত দুই হাত তুলে দোয়া করেন, তবে তিনি রাসুলের উৎসাহের ওপর আমল করছেন। আল্লাহ পাক আমাদের সহিহভাবে দ্বীন বুঝে সহিহ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

১ম পর্বে যাওয়ার লিঙ্ক-

ফরজ নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাতের হুকুম কী? এটি কি আসলেই বিদআত? পর্ব-০১

নিবন্ধটি তৈরিতে সহযোগিতা নেয়া হয়েছে যেসব সূত্র থেকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা:
আলবিদায়া ওয়াননিহায়া
আহলে হক মিডিয়া।
মাযমাউয যাওয়ায়েদ।
বুখারি শরিফ।
মুসলিম শরিফ।
তিরমিযি শরিফ।
নাসায়ি শরিফ।
মুস্তাতাদরাক আলাস সহীহাইন।
আলমুজামুল কাবীর।
আলমুজামুল কাবীর লিততাবরানী।
আততারগীব ওয়াত তারহীব।
কানযুল উম্মাল।
আলমুজামুল আওসাত লিততাবারানী।
আততারীখুল কাবীর।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: নকিব ভাই ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোষ্ট দিয়েছেন।

এই বিষয় নিয়ে একটি পোষ্ট দেন-
সৃষ্টির শুরু থেকে জীবজগতের মধ্যে কুকুর সবসময় মানুষের ভাল বন্ধু। কুকুরের প্রধানগুন সে প্রভুভক্ত। তারপরও কেন মুসলমানরা কুকুরকে নাপাক বলে ঘৃনা করে?

আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (স:) অবশ্যই কুকুরকে ঘৃনা করেন নাই। তাহলে কেন কুকুরের উপর নিষেদাজ্ঞা প্রদান করেছেন? এমন প্রশ্ন আসতেই পারে।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৮

নতুন নকিব বলেছেন:



দারুন। সুন্দর মন্তব্যে আপনাকেও ধন্যবাদ।

আচ্ছা, ঠিকই বলেছেন, কুকুর অবশ্যই বিশ্বস্ত এবং প্রভূভক্ত প্রানী। কুকুর বিষয়ে ইসলামী নির্দেশনা পড়ে দেখতে পারেন। আলাদা পোস্ট না দিয়ে এখানেই দিয়ে দিচ্ছি-

কুকুর সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা

জড়জগৎ, জীবজগৎ ও উদ্ভিদজগৎ এই পৃথিবীর উপাদান। জড়জগৎ প্রাণহীন। উদ্ভিদজগতেও আছে ন্যূনতম প্রাণের স্পন্দন। পশুপাখির মধ্যে প্রাণের উপস্থিতির পাশাপাশি রয়েছে আহার-বিহার, বিচরণ ও সন্তান ধারণের ক্ষমতা। এসব গুণ-বৈশিষ্ট্য আছে মানুষেরও। এরই সঙ্গে মানুষের আছে বিবেক ও বোধশক্তি; জ্ঞান অর্জনের যোগ্যতা এবং সত্য-মিথ্যা পরখ করার ক্ষমতা। এ গুণেই মানুষ শ্রেষ্ঠ জীবের আসনে সমাসীন। ইসলাম মনে করে, এই পৃথিবীতে মানুষের পরই প্রাণিজগতের স্থান। প্রাণিজগেক পৃথক জাতিসত্তার স্বীকৃতি দিয়ে কোরআন বলছে : ‘পৃথিবীতে বিচরণশীল যত প্রাণী আছে আর যত পাখি দুই ডানা মেলে উড়ে বেড়ায়, তারা সবাই তোমাদের মতো একেক জাতি।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৩৮) সে হিসেবে বলা যায়, কুকুর আল্লাহর বিশেষ সৃষ্টি। নিম্নে কুকুর সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা উল্লেখ করা হলো—

এক. শিকারের উদ্দেশ্যে, ফসল হেফাজতের উদ্দেশ্যে, পাহারাদারির জন্য, ছাগল-ভেড়া ইত্যাদির হেফাজতের লক্ষ্যে, ঘরবাড়ি, দোকান ও অফিস পাহারার জন্য, অপরাধের উৎস সন্ধান ও অপরাধীকে চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যে কুকুর লালন-পালন করা বৈধ। (ফতোয়াতে মাহমুদিয়া : খ. ১৮, পৃ. ২৬৪/ ফতোয়ায়ে আলমগিরি : খ. ৪, পৃ. ২৪২)

দুই. শখ করে ঘরে কুকুর রাখা, মানুষের চেয়ে কুকুরের যত্ন বেশি নেওয়া, কুকুরের সঙ্গে মানবীয় সম্পর্ক স্থাপন করা ইসলামে নিষিদ্ধ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শিকার করা বা গবাদি পশু পাহারা অথবা শস্যক্ষেত পাহারা দেওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া কুকুর লালন-পালন করে, প্রতিদিন ওই ব্যক্তির দুই কিরাত পরিমাণ নেকি হ্রাস পায়।’ (মুসলিম : হাদিস ১৫৭৫; তিরমিজি : হাদিস ১৪৮৭)

অন্য হাদিসে আছে, ‘এক কিরাত হলো, উহুদ পাহাড় সমপরিমাণ।’ (মুসনাদে আহমদ : হা. ৪৬৫০)

তিন. আমাদের হানাফি মাজহাব মতে, কুকুরের শরীর নাপাক নয়। তাই কুকুর কারো শরীর বা কাপড় স্পর্শ করলে তা নাপাক হবে না। তবে কুকুরের লালা নাপাক। কুকুর মুখ দিয়ে কারো জামা টেনে ধরলে যদি কাপড়ে লালা লেগে যায়, তবে কাপড় নাপাক হয়ে যাবে; অন্যথায় নাপাক হবে না। (আল-বাহরুর রায়েক : ১/১০১; ফতোয়াতে হিন্দিয়া : ১/৪৮; আদ্দুররুল মুখতার : ১/২০৮)

চার. ইসলামসহ আসমানি সব ধর্ম মতে কুকুরের গোশত খাওয়া হারাম।

পাঁচ. শিকারির জন্য রাখা কুকুর, পাহারার জন্য রাখা কুকুর মেরে ফেলা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম বা অবৈধ। পাগলা কুকুর, কষ্টদায়ক কুকুর মেরে ফেলা সব আলেমের মতে বৈধ। সাধারণ অবস্থায় থাকা কুকুর নিধন করা, মেরে ফেলা ইসলামের দৃষ্টিতে অপছন্দনীয়। (সূত্র : কুয়েতভিত্তিক ইসলামী বিশ্বকোষ ‘আল-মওসুআতুল ফিকহিয়্যা আল-কুয়েতিয়্যা : খ. ৩৫, পৃ. ১৩২-১৩৩)

ছয়. সম্ভব হলে কুকুরকে খাবার দেওয়া, পানি দেওয়া, কুকুর কোথাও পড়ে গেলে তাকে উদ্ধার করা ইসলামের দৃষ্টিতে সওয়াবের কাজ। বিশুদ্ধ হাদিসে কুকুরকে পানি খাওয়ানোর কারণে ব্যভিচারী নারীকেও জান্নাত দান করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘একবার এক পিপাসাকাতর কুকুর কূপের পাশে ঘোরাঘুরি করছিল। পিপাসায় তার প্রাণ বের হওয়ার উপক্রম হয়ে গিয়েছিল। হঠাৎ বনি ইসরাইলের এক ব্যভিচারী নারী তা দেখতে পায়। সে নিজের পায়ের মোজা খুলে কুকুরটিকে পানি পান করায়। এ কারণে তার অতীত পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি : ৩৪৬৭)

ঘরে কুকুর রাখা নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ কুকুরের ব্যাপারে ইসলামের কঠোর নির্দেশ কেবল এটাই যে শখ করে ঘরে কুকুর রাখা নিষেধ। হাদিস শরিফে আছে, ‘যে ঘরে কুকুর আছে, সে ঘরে রহমতের ফেরেশতারা প্রবেশ করেন না।’ (বুখারি শরিফ : হা. ৫৫২৫) আর কুকুরের লালা যেহেতু নাপাক, তাই কোনো পাত্রে কুকুর মুখ দিলে তা তিন বা সাতবার ধৌত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশের পেছনে কয়েকটি যুক্তি আছে—

প্রথমত, কুকুরের মধ্যে শয়তানের প্রভাব বেশি। তাই আজানের সময় কুকুর আওয়াজ করে।

দ্বিতীয়ত, কুকুর মনিবভক্ত হলেও তার মধ্যে খারাপ স্বভাব বেশি। যেমন—অন্যকে সহ্য না করা, সব সময় খেলাধুলা-দৌড়ের ওপর থাকা, পচা ও নিকৃষ্ট খাবার খাওয়া, যেখানে-সেখানে অশ্লীল কাজে লিপ্ত থাকা, মানুষকে কষ্ট দেওয়া, খাবার দেখলে লালায়িত হওয়া ইত্যাদি। ‘সঙ্গীর প্রভাবে মানুষ প্রভাবান্বিত হয়’—এর আলোকে কুকুরের সঙ্গ থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে।

তৃতীয়ত, কুকুর যাতে মানুষের ক্ষতি করতে না পারে, এ জন্য কুকুরের সঙ্গ থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। কেননা কুকুরের নখ ও মুখে বিষাক্ত জীবাণু রয়েছে। কুকুরের ওপর আস্থা রাখা যায় না। যেকোনো সময় সে মানুষের ক্ষতি করতে পারে। এতে জলাতঙ্কসহ নানা রোগ হতে পারে।

চতুর্থত, আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রমাণ করেছে, নিজ ঘরে, বিছানায় কুকুর রাখলে অ্যালার্জি, ভাইরাস সংক্রমণসহ বিভিন্ন বিপত্তি ঘটতে পারে। এ বিষয়ে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ড. ইউসুফ কারজাভি তাঁর ‘আল-হালালু ওয়াল হারামু ফিল ইসলাম’ নামের বইয়ে কুকুর নিয়ে জার্মান ও লন্ডনের বিভিন্ন গবেষকের গবেষণা উল্লেখ করেছেন। তাঁরা কুকুরের সঙ্গ মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে অভিমত দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন : স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে বিচার করলে কুকুর পালা ও তার সঙ্গে হাস্যরসকরণে যে বিপদ মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনের ওপর ঘনীভূত হয়ে আসতে পারে, তাকে সামান্য ও নগণ্য মনে করা কিছুতেই উচিত হতে পারে না। অনেক লোক নিজের অজ্ঞতার কারণে ভারি মাসুল দিতে বাধ্য হয়। তার কারণ এই যে কুকুরের দেহে এমন এমন জীবাণু রয়েছে, যা এমন রোগ সৃষ্টি করতে পারে, যা স্থায়ী এবং যা চিকিৎসা করে সারানো যায় না। কত লোক যে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবন দিতে বাধ্য হয় তা গুনে শেষ করা যায় না। এসব জীবাণু মানুষের কলিজায় প্রবেশ করে। আর সেখানে নানাভাবে আত্মপ্রকাশ করে। তা অনেক সময় ফুসফুসে, ডিম্ব, তিল্লি, গুর্দা ও মস্তকের ভেতরে প্রবেশ করে। তখন এগুলোর আকৃতি অনেকটা পরিবর্তিত হয়ে যায়। এমন অবস্থা দেখা দেয় যে বিশেষজ্ঞরাও তা ধরতে ও চিনতে অক্ষম হয়ে পড়েন।

যা-ই হোক, এ জীবাণুর দরুন যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়, তা দেহের যে অংশেই হোক না কেন, স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর ও মারাত্মক। এসব জীবাণুর কোনো চিকিৎসা আজ পর্যন্ত জানা যায়নি। এ করণে চিকিৎসা-অযোগ্য রোগের মোকাবিলা করার জন্য আমাদের পূর্ণশক্তিতে চেষ্টা করতে হবে। এ বিপদ থেকে মানুষকে বাঁচাতে হবে।

জার্মান চিকিৎসাবিদ নুললর বলেছেন, কুকুরের জীবাণুর দরুন মানবদেহে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়, তার সংখ্যা শতকরা ১-এর কম নয় কিছুতেই। আর কোনো কোনো দেশে শতকরা ১২ পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ রোগ প্রতিরোধের সর্বোত্তম পন্থা হচ্ছে, এর জীবাণুগুলোকে কুকুরের দেহ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ করে রাখা, তাকে ছড়িয়ে পড়তে না দেওয়া।

আশ্চর্য হলেও সত্য যে বিভিন্ন দেশে কুকুরের প্রতি ধনীরা যে উদারতা দেখায়, গরিব মানুষের প্রতিও তেমন উদারতা দেখানো হয় না। কুকুর লালন-পালনের জন্য যে মানুষকে কর্মচারী হিসেবে রাখা হয়, তার জন্যও এত টাকা খরচ করা হয় না, কুকুরের জন্য যা খরচ করা হয়। প্রশ্ন জাগে, নতুন সভ্যতা কি তাহলে মানুষকে মূল্যহীন করে তুলছে?

২| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনবাকে। অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:২৩

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনাকেও অশেষ ধন্যবাদ, পাঠ এবং সুন্দর মন্তব্যে।

অনেক ভাল থাকুন আপনিও।

৩| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৫৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুন্দর পোস্ট। কিছু মানুষ সবকাজেই বিদআত খোঁজে। আর বিভেদই ইসলাম কে ধ্বংশ করছে।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৩২

নতুন নকিব বলেছেন:



সেটাই। সুন্দর মন্তব্যে আপনাকে মোবারকবাদ।

কিছু লোক তাদের নিজস্ব মতবাদ (হোক সেটা ঠিক কিংবা ভুল) সবার উপরে চাপিয়ে দেয়ার অনর্থক চেষ্টার ফলে এই দুরবস্থার সৃষ্টি। অতি ভাল হওয়ার ইচ্ছায় হোক, আর অন্য যে উদ্দেশ্যেই হোক, অতিরিক্ত কট্টোর হওয়ার কারনে, নমনীয়তার আচরন- যেটা ইসলামের মূল শিক্ষা- তা থেকে দূরে সরে গিয়ে উদ্ধত এবং অহমিকার প্রকাশ ঘটিয়ে অন্যদের সুপ্রতিষ্ঠিত সুসাব্যস্ত আমলকে বিদআত বলে প্রকারান্তরে তারা মূলত: ইসলাম ধর্মেরই ক্ষতির কারন হচ্ছে।

আল্লাহ পাক আমাদের হেফাজত করুন।

৪| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২১

শামছুল ইসলাম বলেছেন: খুব চমৎকার শিক্ষণীয় পোস্ট । আমরা মুসলমানরা আজ কট্টর হয়ে গেছি । তাই নিজেদের মধ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে নিজেদের সর্বনাশ করছি । মধ্যমা পন্থা গ্রহণ না করে অতি-র প্রতি আমরা ঝুঁকছি । পরিণামে সারা বিশ্বে আজ আমরা লাঞ্চিত । আপনার পোস্ট পড়ে যেমন অনেক কিছু জানতে পারলাম সেই সাথে নিজেদের দোষ-ক্রুটিও চোখে ধার পড়ছে । আল্লাহ সকল মুমিনকে মধ্যপন্থা অবলম্বন করার শুভ বুদ্ধি দিন । আমীন ।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৩৬

নতুন নকিব বলেছেন:



খুব চমৎকার শিক্ষণীয় পোস্ট । আমরা মুসলমানরা আজ কট্টর হয়ে গেছি । তাই নিজেদের মধ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে নিজেদের সর্বনাশ করছি । মধ্যমা পন্থা গ্রহণ না করে অতি-র প্রতি আমরা ঝুঁকছি । পরিণামে সারা বিশ্বে আজ আমরা লাঞ্চিত । আপনার পোস্ট পড়ে যেমন অনেক কিছু জানতে পারলাম সেই সাথে নিজেদের দোষ-ক্রুটিও চোখে ধার পড়ছে । আল্লাহ সকল মুমিনকে মধ্যপন্থা অবলম্বন করার শুভ বুদ্ধি দিন । আমীন ।

--- অসাধারন একটি মন্তব্য রেখে গেলেন। জাজাকুমুল্লাহু তাআ'লা আহসানাল জাজা। কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা।

৫| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২৪

শামছুল ইসলাম বলেছেন: রাজীব ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তরে কুকুর সম্বন্ধে সুন্দর তথ্যবহুল আলোচনা করেছেন । খুব ভালো লাগলো । আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন । আমীন ।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৩৮

নতুন নকিব বলেছেন:



আবারও ফিরে এসে দুআ করে যাওয়ায় আপ্লুত! আপনার সর্বাঙ্গীন কল্যান হোক।

৬| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৪২

মোঃ আল মামুন শাহ্ বলেছেন: বিদআত ভাই সম্পূর্ণ মনের বিষয়। তবে আমাদের দেশে যেরকম সিস্টেম নিয়মিত চালু হয়েছে তাতে হয়তো বা কেউ কেউ একে বাধ্যতামূলক মনে করতেও পারে। আর বাধ্যতামূলক অথবা বেশি ভালো মনে করায় বিদআত।
প্রিয় নকীব ভাই, আপনার কাছে একটা রিকোয়েস্ট আছে, বিষয়টি নিয়ে আমি অনেক বিভ্রান্তি তে আছি। বিষয়টি হল ফাযায়েলে আমলের জাল হাদীস প্রসঙ্গ। কারামতের বিষয়টি আমি স্পষ্ট হয়েছি। কিন্তু জাল হাদিসের ওপর আমল বিষয়ে যদি একটু বিস্তারিত বলতেন আর কি। তাহলে উপকৃত হতাম।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৪৪

নতুন নকিব বলেছেন:



আমাদের দেশে যেরকম সিস্টেম নিয়মিত চালু হয়েছে তাতে হয়তো বা কেউ কেউ একে বাধ্যতামূলক মনে করতেও পারে। আর বাধ্যতামূলক অথবা বেশি ভালো মনে করায় বিদআত।

--- আপনার এই বক্তব্যের সাথে সহমত।

প্রিয় নকীব ভাই, আপনার কাছে একটা রিকোয়েস্ট আছে, বিষয়টি নিয়ে আমি অনেক বিভ্রান্তি তে আছি। বিষয়টি হল ফাযায়েলে আমলের জাল হাদীস প্রসঙ্গ। কারামতের বিষয়টি আমি স্পষ্ট হয়েছি। কিন্তু জাল হাদিসের ওপর আমল বিষয়ে যদি একটু বিস্তারিত বলতেন আর কি। তাহলে উপকৃত হতাম।

--- দেখি, এই বিষয়ে কোনো সময় একটি পোস্ট দিতে পারি কি না।

কৃতজ্ঞতা অশেষ। ভাল থাকুন।

৭| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৪১

আশাবাদী অধম বলেছেন: আমার একটি প্রশ্ন-
(ব্যতিক্রম কিছু মসজিদ বাদে) বাংলাদেশের কোন মসজিদের ইমাম মাত্র এক ওয়াক্তের জন্য নামাজের পরে সম্মিলিত মুনাজাতের আমল ছেড়ে দেয়ার সাহস করতে পারবেন?


১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৪৯

নতুন নকিব বলেছেন:



সমস্যাটা তো এখানেই। দুই ধারায়ই তো অনমনীয়তা বিদ্যমান। এই বাধার প্রাচীর ভাংতে হবে। সাধারন্যে বোধগম্য করে তুলতে হবে বিষয়গুলো। কিন্তু তা ঢালাওভাবে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে সবকিছুকে বিদআত বলার মত হঠকারিতা দিয়ে নয়, অবশ্যই ধৈর্য্য এবং কৌশল প্রয়োগে।

আগমনে কৃতজ্ঞতা এবং কল্যানের দুআ।

৮| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০০

আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: আমি যতদূর শুনেছি দন্ধটা হল সম্মিলিত মোনাজাত নিয়ে আর একা মোনাজাত নিয়ে।।
ইসতেমায়ী আমল নাকি ইনফেরাদি আমল?


অনেকে বলে ফরজ নামাযের পর মোনাজাত ইনফেরাদি(একা পড়ার) আমল
।এটাই আমি বেশি আলেমের কাছে শুনেছি।
ইসতেমায়ী নয়। একেবারে নিষেদ কেউ বলেনা।


সমস্যা টা হল আমাদের দেশে সম্মিলিত মোনাজাত হয়।
আর হাদিসে নাকি আছে একাকী করার কথা।।।

একেবারে নিষেধ বলে কেউ। এটা শুনিনাই।এবং কি আহলে সুন্নাত দের কাছেও না।।


১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৫৭

নতুন নকিব বলেছেন:



বক্ষমান নিবন্ধে সম্মিলিত মুনাজাতের দালিলিক প্রমান উপস্থাপন করা হয়েছে। আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনে বহুবার সম্মিলিত মুনাজাত করেছেন। হাদিস সম্ভার তার প্রমান।

পাশাপাশি এই নিবন্ধে এটাও আলোকপাত করার চেষ্টা করা হয়েছে যে, বা'দাল ফরজ মুনাজাত এমন কোনো সুন্নত আমল নয় যে, সর্বদা পালন করা আবশ্যক। কেউ এটাকে অত্যাবশ্যক মনে করে এর উপরে আমল করেন, অন্যদিকে কেউ এই মুসতাহসান সুন্নত আমলটিকে বিদআত বলে উড়িয়ে দিতে চান। সুতরাং, পক্ষে এবং বিপক্ষে দুই দলের ক্ষেত্রেই অতি কট্টোর হওয়ার কারনেই সমস্যা।

আল্লাহ পাক আমাদের সহিহ আমল করার তাওফিক দিন। কৃতজ্ঞতাসহ শুভাশীষ।

৯| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৩

আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: সম্মিলিত মোনাজাত বিধায়াত এটা এখন হানাফি আলেম রাও বলে। আমরা কি করবো যারা সাধারণ লোক। এর উপর আবার তাবলীগ এর মুরব্বী রাও বলে

তারা আবার সাধারণ জনতাকে বড় হাদিস গ্রন্থ পড়তে দেয়না। বলে বুঝবে না।।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:০৫

নতুন নকিব বলেছেন:



এই সিরিজের দু'টি পোস্ট আপনার কি পড়া হয়েছে? যদি হয়ে থাকে, আলহামদুলিল্লাহ। না হয়ে থাকলে অনুরোধ থাকবে, একটিবার অন্তত: দু'টি পোস্টেই সম্ভব হলে চোখ বুলিয়ে পুনরায় মন্তব্যে আসবেন। আশা করি, তখন এই বিষয়ে আরও গোছালো, দিকনির্দেশনাযুক্ত মন্তব্য পাবো আপনার নিকট থেকে।

আর হানাফি কিংবা অন্য কোনো মত বা পথ নিয়ে কথা নয়, কথা হচ্ছে যারাই সুসাব্যস্ত একটি বিষয়ে ঘোল পাকিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টায় লিপ্ত তাদের উদ্দেশ্য সম্মন্ধে ধারনা নেয়ার জন্যই এই পোস্ট।

কৃত্জ্ঞতা অশেষ। আল্লাহ পাক আপনার কল্যান করুন।

১০| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৫

আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: আসলে বুঝবান হলে হাদিস পড়া উচিত।। তা নয় কি? আপনার কি মতামত?

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:০৮

নতুন নকিব বলেছেন:



অবশ্যই। পড়তে হবে। পড়তে হবে। পড়তে হবে।

আমাদের মনে রাখতে হবে, মহাগ্রন্থ কুরআন শুরু হয়েছে 'ইক্করা', তথা 'পড়ুন' কথাটি দিয়ে। একজন সত্যিকারের মুসলিম জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পড়তে থাকবেন। পুরো জীবনটাই তার জন্য শেখার বিশাল দিগন্ত।

জাজাকুমুল্লাহ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.