নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
সূরাহ আদদাহর/ আল ইনছান এর শেষ দু'টি আয়াত কাব্যে অনুবাদের প্রচেষ্টা
তোমাদের চাওয়া-পাওয়া সব অভিলাষ,
আল্লাহর অভিপ্রায়ে হোক একাকার।
প্রজ্ঞাময় যিনি জ্ঞাত সৃষ্টির প্রতিটি নি:শ্বাস,
সকলেই ফিরে যাবে সন্নিকটে তাঁর।
তাঁর রহমের বারি বৃষ্টির ফোটা হয়ে ঝড়ে-
যাকে খুশি সিক্ত করেন দয়ার আধার।
তাঁর করুনাধারা বহে জগতে অনন্তকাল ধরে-
যাকে খুশি প্রবেশের দেন অধিকার।
অত্যাচারীর জন্য প্রস্তুত ভয়াবহ শাস্তি সকল,
মর্মন্তুদ সে যাতনার নেই নেই শেষ।
যালিমেরা বুঝে পাবে নিকৃষ্টতম কর্মফল,
ফুরোবে না সীমাহীন দুর্ভোগের ক্লেষ।
এসো তাঁর রহমের শামিয়ানা ছায়ায় দাঁড়াই,
মুঠি মুঠি তাঁর দয়া নিতে, দু'হাত বাড়াই।
উৎসর্গ: শ্রদ্ধেয় ডঃ এম এ আলী ভাইকে, যিনি সূরাহ আদদাহর/ আল ইনছান এর বক্ষমান শেষ দু'টি আয়াতের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করে পূর্বোক্ত পোস্টটিতে প্রেরণাদায়ক একটি মন্তব্য রেখেছিলেন। পৃথিবীতে আমাদের গমনাগমনের এই যে ধারাবাহিকতা, আমরা যে এখানে কেউই ছিলাম না, আছি আবার থাকবোও না, অর্থাত, থাকা যাবে না- গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়গুলো মরমে অনুধাবনের প্রচেষ্টা ছিল গত পোস্টে, একই সূরাহর প্রথম আয়াতে ইঙ্গিত রয়েছে যার। তিনি শেষ দু'টি আয়াতের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করায় তাকে অভিনন্দন এবং মোবারকবাদ। মূলত: তাঁর সেই আন্তরিক মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই আজকের এই কবিতাটির জন্ম।
অর্থসহ সূরাহ আদদাহর/ আল ইনছান এর শেষ দু'টি আয়াত:
وَمَا تَشَاؤُونَ إِلَّا أَن يَشَاء اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا
'আল্লাহর অভিপ্রায় ব্যতিরেকে তোমরা অন্য কোন অভিপ্রায় পোষণ করবে না। আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।' সূরাহ আদদাহর, আয়াত-৩০
But ye will not, except as Allah wills; for Allah is full of Knowledge and Wisdom. Surah Addahr/ Al Insaan, Ayat-30
يُدْخِلُ مَن يَشَاء فِي رَحْمَتِهِ وَالظَّالِمِينَ أَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
'তিনি যাকে ইচ্ছা তাঁর রহমতে দাখিল করেন। আর যালেমদের জন্যে তো প্রস্তুত রেখেছেন মর্মন্তুদ শাস্তি।' সূরাহ আদদাহর, আয়াত-৩১
He will admit to His Mercy whom He will; But the wrong-doers,- for them has He prepared a grievous Penalty. Surah Addahr/ Al Insaan, Ayat-31
পূর্বোক্ত সেই ছিলাম না - আছি - থাকবো না পোস্টটি
ছবি: অন্তর্জাল।
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৪৪
নতুন নকিব বলেছেন:
জ্বি, আজকের দিনটি আপনার জন্য কল্যান বয়ে আনুক প্রিয় ভাই।
প্রথম মন্তব্যে একরাশ শুভকামনা এবং কৃতজ্ঞতা। অনুবাদ ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগছে।
২| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:০৫
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: সুন্দর------------
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১১
নতুন নকিব বলেছেন:
অভিনন্দন আপনাকে।
৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুক।
২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১০
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার জন্যও একই দুআ।
ভালো থাকুন সবসময়।
৪| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:০৬
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
উৎসর্গে কৃতজ্ঞতা জানবেন।
ভাললাগা রেখে গেলাম।
দ্বীনের কাজে একটু বাইরে যাচ্ছি,
ভাল করেই জানি কেউ তার শক্তিতে বা
যোগ্যতা বলে দ্বীনের কাজ করতে পারে না,
আল্লাহ যার প্রতি দয়া করেন,
তাকে দিয়ে তিনি দ্বীনের কাজ করান। তাই
ভাই দোয়া করবেন আল্লাহ যেন তৌফিক দেন ।
সময় নিয়ে পরে আবার আসব। তবে
যাবার বেলায় মুল্যবান লেখাটি প্রিয়তে নিয়ে গেলাম।
শুভেচ্ছা রইল ।
২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১৪
নতুন নকিব বলেছেন:
শুকরিয়া, প্রিয় ভাই।
দ্বীনের প্রতিটি কাজে আমাদের শরিক হওয়ার তাওফিক দান করুন মহান প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা এবং এগুলোকে তিনি মেহেরবানী পূর্বক কবুল করে নিন।
ইনশাআল্লাহ আপনি সালামত এবং আফিয়াতের সাথে কাজশেষে ফিরে আসুন। মোবারকবাদ।
লেখাটি প্রিয়তে নেয়ায় আবারও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
৫| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ২:২৩
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
ব্যস্ততার জন্য পোষ্টে ফিরে আসতে বিলম্ব হল । তবে দ্বীনের কাজে আপনাদের দোয়ায় সফলতা এসেছে।
শুকর আলহামদুলিল্লাহ ।
পোষ্টটি মনযোগ দিয়ে পাঠ করলাম । সুরা আদাহরের আয়াত ৩০ ও ৩১ নিয়ে আপনার কাব্যিক বিবরণ খুব প্রাসঙ্গিক হয়েছে।
এখানে আমার সেই পোষ্টের মন্তব্যে তুলে ধরা আয়াতটির অনুবাদ নিয়ে কিছু কথা বলা প্রসঙ্গিক মনে করি ।
আর আল্লার ইচ্ছা ব্যতিত তোমরা কোন বিষয়ের ইচ্ছা করতে পারনা;
আল্লাহ মহাজ্ঞানী প্রজ্ঞাময়(৭৬:৩০)তিনি যাহাকে ইচ্ছা,স্বীয় রহমতে দাখিল
করিয়া লন; আর অনাচরীদের জন্য যন্ত্রনাময় শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন(৭৬ : ৩১)।
উপরে দেয়া আয়াতদুটির বঙ্গানুবাদ এমদাদিয়া লাইবরেরী ,চকবাজার,ঢাকা কতৃক প্রকাশিত নূরানী কোরআন শরীফ হতে তুলে ধরা হয়েছিল। এর মুল অনুবাদক হযরত মাওলানা আশ্রাফ আলী থানভী ( র যিনি হানাফী অনুসারী একজন দেওবন্দী আলেম , এর বাংলা তরজমা করেছেন মাওলানা নুরুর রহমান, ভূতপুর্ব ভাইস প্রিনসিপাল ,আলীয়া মাদ্রাসা, রায়পুর ,নোয়াখালী ।
এখন আয়াত দুটির বিষয়ে আপনার অনুবাদ দেখে বিষয়টি ইসলামিক ফাউন্ডেশন কতৃক প্রকাশিত ডিজিটাল কোরানের বঙ্গানুবাদের সাথে মিলিয়ে দেখেছি । যা আপনার দেয়া অনুবাদের মতই। নীচে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কতৃক প্রনীত অনুবাদটির স্ক্রীনশট তুলে দিলাম ।
সুত্র (https://quran.com/76/30)
আয়াত ৩০ সম্পর্কে আর একটি অনুবাদে পেয়েছি যেখানে বলা হয়েছে
তবে আপনার ইচ্ছা কোন উপকারে আসবে না যতক্ষণ না আল্লাহ নিজে চান ; নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময় (আল কোরআন ৭৬: ৩০)।
যাহোক, আপনার দেয়া অনুবাদসহ বিভিন্ন অনুবাদে এই আয়াত ৩০ এ যে তিনটি মুল বিষয়ে কথা বলা হয়েছে তা নিয়ে কিছু পাঠক কুলে যেন কোন ধরনের ভুল ধারনার উদ্রেক না হয় সে জন্য আয়াত এ থাকা মুল বিষয় গুলি নিয়ে একটু আলোচনা করা যায়। তবে এখানে প্রথমেই বলে রাখি আমি কোরানের আয়াতের সরল ও গুঢ়ার্থ নিয়ে খুবই কম জ্ঞান রাখি। আমি বিষয়টি নিয়ে এই অল্প সময়ে কোন আলেম কিংবা বুযুর্গ লোকের একান্ত সান্নিধ্যে গিয়ে আলোচনা করতে পারিনি । তবে বিভিন্ন তাফসিরগ্রন্থ পাঠে যা মনে হয়েছে তা নীচে তুলে ধরেছি। কোন রূপ ভুল হলে আল্লাহ যেন আমাকে ক্ষমা করেন এবং আপনিও যদি আপনার বিজ্ঞ বিবেচনায় ভুলটুকু সংশোধন করে দেন তা হলে বাধিত হব।
আয়াতটির মধ্যে থাকা তিনটি অংশে দেখা যায় বলা হয়েছে:-
(১) মানুষ সেই ইচ্ছা করবে যা তার পালনকর্তা নির্দেশিত পথ অবলম্বন করে;
(২) আল্লাহ তায়ালা না চাইলে কোনও কাজ করতে চাওয়ার ইচ্ছা যথেষ্ট নয়;
(৩) আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
যদি কেউ এই তিনটি বিষয়কে গভীরভাবে বিবেচনা করে তবে যে কেউ মানুষের পছন্দসই স্বাধীনতা এবং আল্লাহর ইচ্ছার মধ্যকার পার্থক্য সম্পর্ককে পুরোপুরি বুঝতে পারবে এবং নিয়তির প্রশ্ন সম্পর্কে মানুষের মনে সমস্ত বিভ্রান্তি দূর করতে সহায়তা করবে।
আয়াতের প্রথম অংশটি দেখায় যে এই পৃথিবীতে মানুষকে প্রদত্ত ক্ষমতা সে কেবলমাত্র সেই মাত্রাতেই প্রয়োগ করতে পারবে যা তার জীবন যাপন করার জন্য বিভিন্ন বিকল্প পন্থা হতে কোনটি সঠিক তা উপলব্দি করে তার ভিতর থেকে উপযুক্ত একটি গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আল্লাহ তা'আলা তাকে এই পছন্দের স্বাধীনতা দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, যখন কোনও ব্যক্তি নিজের জীবিকা নির্বাহের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহনের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়, তখন সে তার সামনে অনেকগুলি উপায় খুঁজে পায় যার মধ্যে কতক হয় হালাল যথা হালাল ধরণের শ্রম, সেবা, ব্যবসা বাণিজ্য, শিল্প বা কৃষিকাজ আর কতক হয় হারাম যথা চুরি, ছিনতাই, পকেট মারা, পতিতাবৃত্তি, অর্থের বিনিময়ে (সুদের ভিত্তিতে) জুয়া, ঘুষ এবং অবৈধ ধরনের পরিসেবা ও বেআইনী ব্যবসা বানিজ্য ইত্যাদী । এর যে কোনও একটি উপায় অবলম্বন করার সিদ্ধান্ত মানুষের নিজস্ব পছন্দ বা ফ্রিডম অফ উইলের উপর ছেড়ে দিয়েছেন , ছেড়ে দিয়েছেন মানুষ কিভাবে তার জীবন যাপন করতে চায় তার নিজস্ব পছন্দের উপরে । তেমনি, নৈতিকতার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে; একদিকে সততা, আভিজাত্য, শালীনতা, ন্যায়বিচার, করুণা, সহানুভূতি এবং সতীত্বের মতো ভাল গুণাবলী এবং অন্যদিকে দুষ্টতা, ব্যভিচারিতা, অত্যাচার, অসত্যতা এবং অহঙ্কারের মতো দুষ্ট বৈশিষ্ট্য গুলি । মানুষের পক্ষ্যে তার পছন্দ মতো নৈতিকতার যে কোনও পদ্ধতি অবলম্বন করার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। ধর্মের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা; এক্ষেত্রেও মানুষের সামনে তাঁর অনেক পথ খোলা আছে; নাস্তিকতা এবং ঈশ্বরে অস্বীকার, বহুশাস্ত্র এবং প্রতিমা উপাসনা, এবং উপাসনাবিহীন বহুশাস্ত্রের বিভিন্ন সংমিশ্রণ অন্যদিকে রয়েছে একেশ্বরবাদ তথা আল্লার প্রতি ধর্মবিশ্বাস যা কুরআন শিখিয়েছে। এর মধ্যেও, বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তগুলির মধ্যে সে কোনটি গ্রহণ করতে চায় তা মানুষের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত তাঁকে চাপিয়ে দেন না। মানুষ যদি জীবিকা নির্বাহের বৈধ উপায় বেছে নিতে পছন্দ করে তবে আল্লাহ তাকে এর জন্য অবৈধ উপায় অবলম্বন করতে বাধ্য করবেন না। সঠিক ইচ্ছাটি মানুষ কুরআন অনুসরণ করেই করতে পছন্দ করতে পারে, আল্লাহ তাকে নাস্তিক, মুশরিক বা কাফের হতে বাধ্য করবেন না। আবার একজন মানুষ যদি ভাল মানুষ হতে পছন্দ করে, আল্লাহ তাকে মন্দ মানুষ হতে বাধ্য করবেন না। এ বিষয়গুলি বুঝতে হলে মানুষকে শুধু কোরানের কোন আয়াতের অংশ বিশেষ পাঠ করলে চলবেনা তাকে পুরা কোরানই পাঠ করতে হবে, জানতে হবে কোরানের আয়াত নাযিলের আনুপুর্বিক প্রেক্ষাপট ও সময়কাল আর বুঝতে ও জানতে হবে তাঁর প্রেরিত রাসুলের অনুসৃত পথ, জীবন যাপন পন্থা ও শিক্ষা ।
যাহোক, এটাও বুঝতে হবে যে মানুষ তার পছন্দসই স্বাধীনতা প্রয়োগ করার পরে বাস্তবিকভাবে যা করতে চায় তা করতে পারে কিনা, তা একান্তই আল্লাহর ইচ্ছা, এবং তাঁর অনুগ্রহের উপর নির্ভরশীল। মানুষ যা করতে ইচ্ছা করে বা করার সিদ্ধান্ত নেয় তা একান্তই আল্লার ইচ্ছাধীন । মানুষ যতই ইচ্ছা করে যে সে তার ইচ্ছামত কাজ করতে পারে তবে তা একান্তই ভুল, মানুষ আল্লাহর ইচ্ছা ও তাঁর অনুমতি ব্যতীত কিছুই করতে পারবেন না যদিঁও সে তা কঠোর ও খুবই গুরুত্ব সহকারে করার চেষ্টা করে ।
আয়াতের দ্বিতয় অংশেও একই কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি একটি উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। মানুষকে যদি পৃথিবীর সমস্ত ক্ষমতা অর্পণ করা হত এবং যা খুশি করার অনুমতি দেওয়া হত, তাহলে পৃথিবীর পরিচালন ব্যবস্থা বিঘ্নিত হত। একজন খুনিকে যদি তার পছন্দসই কাউকে মেরে ফেলার স্বাধীনতা দেওয়া হয় তবে সে একাই বিশ্বের সমস্ত মানুষকে হত্যা করার পক্ষে যথেষ্ট ছিল। একটি পিক পকেটারকে যদি তার পছন্দমত পকেট মারার ক্ষমতা দেয়া হয় তাহলে সে দুনিয়ার সকলের পকেট উজার করে দিত । যদি তাদের প্রত্যেকের কাছে তার ইচ্ছা মতো আচরণ করার পূর্ণ ক্ষমতা দেয়া হত তাহলে অনেকেই যথা একজন চোর তার পছন্দমত চুরি করতে পারত, একজন ব্যভিচারী তার পছন্দ মত ধর্ষণ করতে পারত , প্রত্যেক বাড়ি লুট করার জন্য একজন ডাকাতই যথেষ্ট ছিল্ । অতএব, আল্লাহ মানুষকে তার পছন্দ অনুযায়ী বা ভুল পথে চলার অনুমতি নাও দিতে পারেন, মানুষ কি অনুসরণ করবে বা বেছে নিতে পারবে তা তাঁর নিজের হাতে রেখে দিয়েছেন। যে ব্যক্তি ত্রুটি ত্যাগ করে সঠিক পথ অবলম্বন করতে চায় কেবল তাকেই ন্যয়পরায়নতার ভিত্তিতে আল্লাহর ইচ্ছার অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে শর্ত হ'ল ত্রুটি মুক্ত হয়ে নীজ জীবন যাপনের সিন্ধান্ত মানুষের নীজেরই নেয়া উচিত ; অন্যথায় আল্লাহ যেমন কাউকে জোর করে চোর, খুনী, নাস্তিক বা মুশরিক বানান না, তেমনি তিনি কাউকে জোর করে আস্তিকও করেন না।
এর পরে আয়াতটির তৃতীয় অংশে মানুষের ভুল বুঝাবুঝি অবসান কল্পে আল্লার ন্যয় পরায়নতার বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এ কারণেই বলা হয়েছে যে, “আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।” তিনি যা কিছু করেন তা জ্ঞান ও প্রজ্ঞার ভিত্তিতে করেন; সুতরাং, তাঁর সিদ্ধান্তগুলিতে কোনও ত্রুটির সম্ভাবনা নেই । কাকে নির্দিষ্ট ধরণের কি সাহায্য দেওয়া উচিত এবং কাকে দেওয়া উচিত নয়, কাকে নির্দিষ্ট কি কাজ করার অনুমতি দেওয়া উচিত এবং কাকে কোন কাজ করার অনুমতি দেওয়া উচিত নয় সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্পূর্ণ জ্ঞান এবং প্রজ্ঞার সাথে সিদ্ধান্ত নেন । আল্লাহ মানুষকে ততটুকুই সুযোগ করে দেন এবং পরিস্থিতি তার পক্ষে অনুকূল করে তোলেন, যদ্ধারা সে তার ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করতে পারে, তা ভাল হোক বা মন্দ হোক। আল্লাহ একমাত্র তাঁর জ্ঞানের ভিত্তিতেই জানেন কে তাঁর পথপ্রদর্শন প্রাপ্তির যোগ্য এবং তিনি তাঁর জ্ঞানের ভিত্তিতেই তা নির্ধারণ করেন।
তিনি যাকে ইচ্ছা তাঁর রহমতে কবুল করেন। অন্যায়কারীদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব (আয়াত ৩১) ।
এই আয়াতে "অন্যায়কারী" বলতে বোঝায় সেই সমস্ত লোকদের যাদের কাছে আল্লাহর আয়াত সমূহ এবং তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শিক্ষা পৌঁছে যাওয়ার পরেও ইচ্ছাকৃতভাবে এবং সচেতনভাবে ভুল সিদ্ধান্ত নেয় এবং কোরান ও রাসুলের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেনা এবংতাঁদেরকে অনুসরণও করে না । এর মধ্যে সেইসব অন্যায়কারী লোকেরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যারা স্পষ্টভাবে বলে যে তারা কোরানের বাণীকে এবং তাঁর প্রেরিত রাসুলকে গ্রহণ করে না, বা তারা যারা আল্লার প্রতি একেবারেই বিশ্বাস করে না এবং অস্বিকার করে কুরআন এবং আল্লার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ ও তাঁর নির্দেশ অনুসরণ না করার জন্য হয় সংকল্পবদ্ধ। প্রকৃতপক্ষে, এই দুটি দলই অন্যায় ও দুষ্ট। প্রথম গ্রুপ হিসাবে, তাদের অবস্থা পরিষ্কার এবং সুস্পষ্ট; তবে দ্বিতীয় দলটি এর চেয়ে কম দুষ্ট নয়; এরা কপট ও বিশ্বাসঘাতকও। মৌখিকভাবে, তারা বলে যে তারা আল্লার প্রতি , রাসুলের প্রতি এবং কুরআনে বিশ্বাস করে তবে তাদের হৃদয় ও মনের মধ্যে থাকে তাঁদেরকে অনুসরণ না করার জন্য দৃঢ় সংকল্প এবং তাদের ব্যবহারিক জীবনযাপনও হয় এর বিরোধী। উভয়টি সম্পর্কে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন যে তিনি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক আযাব প্রস্তুত করেছেন। তারা পৃথিবীতে বিভ্রান্ত হতে পারে, জীবনকে তারা যেমন পছন্দ করে তেমনি তা উপভোগ করুক এবং তাদের শ্রেষ্ঠত্বের গর্ব করুক, তবে শেষ পর্যন্ত তাদেরকে লাঞ্ছিত করে দেয়া হবে শাস্তি; পরিনামে তারা কোনওভাবে চীর আনন্দময় জগতে প্রবেশ করতে পারবেনা এবং আল্লাহর রহমত উপভোগ করতে পারবেনা।
কামনা করি আমাদের সকলের মাঝে আসুক সঠিক অনুভব। জগত হতে দুর হোক সকল প্রকার অনাচার। আল্লা সহায় হোন।
শুভেচ্ছা রইল ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৯
তারেক ফাহিম বলেছেন:
শুভ সকাল প্রিয়,
অনুবাদ ভালো লাগছে।