নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।
নবী কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খাদ্যাভ্যাস এবং খাবার গ্রহনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সুন্নত
হযরত নবী কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সর্বাপেক্ষা পছন্দনীয় খাদ্যের মধ্যে ছারীদ উল্লেখযোগ্য। ছারীদ বলা হয় গোশতের তরকারীতে টুকরো রুটি মিলিয়ে যে খাদ্য তৈরি করা হয়। গোশতের মধ্যে হুযুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশি পছন্দ করতেন খাসীর সামনের রানের গোশত। তরি-তরকারীর মধ্যে তাঁর নিকট সর্বাধিক পছন্দের ছিল লাউ। তাছাড়া তিনি দুধ, মধু, খেজুর, সিরকা, পনির ইত্যাদি সবই আগ্রহভরে খেয়েছেন এবং পান করেছেন।
শ্রেষ্ঠ খাদ্য হিসেবে দুধের উল্লেখই বেশি পাওয়া যায়, যা একই সাথে খাদ্য এবং পানীয়। প্রিয়নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদ্য সম্পর্কে যেসব আদর্শ রেখে গিয়েছেন তন্মধ্যে মৌলিক কিছু এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করা যেতে পারে। হুযুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- তোমরা ততক্ষণ খাদ্যগ্রহণ করবে না, যতক্ষণ না তোমরা ভালো রকম ক্ষুধিত হও। যখন খানা খাবে তখন পেটকে তিনভাগে বিভক্ত করে নিও। একটি অংশ খাদ্যের, একটি পানীয়ের, অপর একটি শূন্য রেখো আল্লাহর জিকরের জন্যে, স্বচ্ছন্দে শ্বাস প্রশ্বাসের জন্যে। খেতে বসলে কিছুটা বাকী থাকতেই উঠে পড়। একজনের খানা দু’জনের জন্য যথেষ্ট। দু’জনেরটা যথেষ্ট তিনজনের জন্য।
হাদিসে বর্ণিত এসব নির্দেশনা মেনে চললে একজন মানুষ সাধারণত খাদ্যজনিত কোনো রোগব্যধির শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
রাসুলে আকরাম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার প্রিয় সাহাবিদের ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ—প্রত্যেক বিষয়ে উত্তম আদর্শ শিক্ষা দিয়েছেন। তার প্রতিটি কর্ম ও পদক্ষেপ মানবতার জন্য শিক্ষণীয় এবং অনুসরণযোগ্য। সফলতা ও কামিয়াবির মাধ্যম। জীবনপথের পাথেয়। তার কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করলে মানব জীবনে বয়ে যাবে প্রশান্তির ফল্গুধারা।
রাসুলে মাকবুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কীভাবে খাবার খেতেন, খাবার গ্রহণে তাঁর পদ্ধতি কেমন ছিল—সে সম্পর্কে এই নিবন্ধে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ।
খাবার গ্রহণের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা
রাসুল (সা.) খাবার গ্রহণের আগে সব সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলতেন। তার সঙ্গীদেরও বিসমিল্লাহ বলতে উৎসাহিত করতেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর নাম নিয়ে ও ডান হাত দ্বারা খানা খাও। এবং তোমার দিক হতে খাও।’ (বুখারি, হাদিস নং : ৫১৬৭, তিরমিজি, হাদিস নং : ১৯১৩)
বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেলে
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, “যখন তোমরা খানা খেতে শুরু করো তখন আল্লাহর নাম স্মরণ করো। আর যদি আল্লাহর নাম স্মরণ করতে ভুলে যাও, তাহলে বলো, ‘বিসমিল্লাহি আওয়ালাহু ওআখিরাহ।” (আবু দাউদ, হাদিস নং : ৩৭৬৭, তিরমিজি, হাদিস নং: ১৮৫৮)
হাত ধুয়ে শুরু ও শেষ করা
খাবার গ্রহণের আগে হাত ধোয়া আবশ্যক। না হয় বিভিন্ন ধরনের অসুখ দেখা দিতে পারে। রাসুল (সা.) খাওয়ার আগে হাত ধোয়ার আদেশ দিয়েছেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) পানাহারের আগে উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে নিতেন। (মুসনাদে আহমাদ)
অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) খাওয়ার পর কুলি করতেন এবং হাত ধৌত করতেন। (মুসনাদে আহমাদ ও ইবনে মাজাহ)
দস্তরখান বিছিয়ে খাওয়া
আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) পায়াবিশিষ্ট বড় পাত্রে খাবার খেতেন না। কাতাদা (রা.) কে জিজ্ঞেস করা হলো, তাহলে কীসের ওপর খানা খেতেন? তিনি বললেন, ‘চামড়ার দস্তরখানের ওপর।’ (বোখারি : ৫৩৮৬)
ডান হাত দিয়ে খাওয়া
রাসুল (সা.) আজীবন ডান হাত দিয়ে খাবার খেতেন। বাম হাত দিয়ে খাবার খেতে নিষেধ করেছেন তিনি। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা বাম হাত দ্বারা খাবার খেয়ো না ও পান করো না। কেননা শয়তান বাম হাতে খায় ও পান করে।’ (বুখারি, হাদিস নং: ৫৩৭৬; মুসলিম, হাদিস নং: ২০২২)
হাত চেটে খাওয়া
রাসুল (সা.) খাওয়ার সময় সর্বদা হাত চেটে খেতেন। না চাটা পর্যন্ত কখনো হাত মুছতেন না। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন খাবার গ্রহণ করবে, তখন হাত চাটা নাগাদ তোমরা হাতকে মুছবে (ধোয়া) না।’ (বুখারি, হাদিস নং : ৫২৪৫)
আঙুল চেটে খাওয়া
আঙুল চেটে খাওয়ার ফলে বরকত লাভের অধিক সম্ভাবনা থাকে। কারণ খাবারের বরকত কোথায় রয়েছে মানুষ তা জানে না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন খাবার গ্রহণ করো তখন আঙুল চেটে খাও। কেননা বরকত কোথায় রয়েছে তা তোমরা জানো না।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ১৯১৪)
পড়ে যাওয়া খাবার তুলে খাওয়া
খাবার গ্রহণের সময় কখনো কখনো থালা-বাসন থেকে এক-দুইটি ভাত, রুটির টুকরো কিংবা অন্য কোনো খাবার পড়ে যায়। সম্ভব হলে এগুলো তুলে পরিচ্ছন্ন করে খাওয়া চাই।
রাসুল (সা.)-এর খাবারকালে যদি কোনো খাবার পড়ে যেত, তাহলে তিনি তুলে খেতেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের খাবার আহারকালে যদি লুকমা পড়ে যায়, তাহলে ময়লা ফেলে তা ভক্ষণ করো। শয়তানের জন্য ফেলে রেখো না।’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ১৯১৫; ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৩৪০৩)
হেলান দিয়ে না খাওয়া
কোনো কিছুর ওপর হেলান দিয়ে খাবার খেতে তিনি নিষেধ করেছেন। হেলান দিয়ে খাবার খেলে পেট বড় হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে দাম্ভিকতা প্রকাশ পায়। আবু হুজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-এর দরবারে ছিলাম। তিনি এক ব্যক্তিকে বলেন, আমি টেক লাগানো অবস্থায় কোনো কিছু ভক্ষণ করি না। (বুখারি, হাদিস নং: ৫১৯০, তিরমিজি, হাদিস নং: ১৯৮৬)
খাবারের দোষ-ত্রুটি না ধরা
শত চেষ্টা সত্ত্বেও খাবারে দোষ-ত্রুটি থেকে যাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু এ নিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঝগড়াঝাটি করা নিতান্ত বেমানান। রাসুল (সা.) কখনো খাবারের দোষ ধরতেন না। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) কখনো খাবারের দোষ-ত্রুটি ধরতেন না। তার পছন্দ হলে খেতেন, আর অপছন্দ হলে খেতেন না। (বুখারি, হাদিস নং : ৫১৯৮; ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৩৩৮২)
খাবারে ফুঁ না দেওয়া
খাবার ও পানীয়তে ফুঁ দেওয়ার কারণে অনেক ধরনের রোগ হতে পারে। রাসুল (সা.) খাবারে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) কখনো খাবারে ফুঁ দিতেন না। কোনো কিছু পান করার সময়ও তিনি ফুঁ দিতেন না। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৩৪১৩)
খাবারের শেষে দোয়া পড়া
আল্লাহ তাআলা খাবারের মাধ্যমে আমাদের প্রতি অনেক বড় দয়া ও অনুগ্রহ করেন। এ দয়ার কৃতজ্ঞতা আদায় করা সভ্যতা ও শিষ্টাচারের অন্তর্ভুক্ত। খাবার গ্রহণ শেষে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করা অপরিহার্য।
খাবার শেষে রাসুল (সা.) আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাতেন ও দোয়া পড়তেন। আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) খাবার শেষ করে বলতেন, ‘আলহামদুলিল্লাহি হামদান কাসিরান ত্বয়্যিবান মুবারাকান ফিহি, গায়রা মাকফিইন, ওলা মুয়াদ্দায়িন ওলা মুসতাগনা আনহু রাব্বানা।’ তিনি কখনো এই দোয়া পড়তেন: ‘আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আতআমানা ওয়াছাকানা ওয়াজাআলানা মিনাল মুসলিমিন।’ (বুখারি, হাদিস নং : ৫৪৫৮)
শেষের প্রার্থনা
রাসুল সাসল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আচরিত আমলগুলো, তাঁর রেখে যাওয়া উত্তম আদর্শ সুন্নতগুলো আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে, সুন্দর ও সার্থক হবে প্রত্যেকের জীবন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা আমাদেরকে প্রতিটি সুন্নতের উপরে আমল করার তাওফিক দান করুন।
২| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ রাত ৮:০২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: রসুল (সাঃ) বলেছেন যে পেটের তিন ভাগের এক ভাগে থাকবে খাবার, আরেক তিন ভাগের ১ ভাগে থাকবে পানি আর অবশিষ্টাংশ ফাকা থাকবে।
একটুখানি খিদে বাকি থাকতে খাওয়া শেষ করাও সুন্নত। অনেক ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ সবাইকে জানানোর জন্য।
৩| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩০
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আল্লাহ তায়ালার হুকুম জেনে খাবার খাওয়া, খাবারের দোষ না ধরা, খাবারের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা দস্তরখানা ব্যবহার ডান হাতে খাওয়া রসুলের সুন্নত ।
অন্ধকারে না খাওয়া , দ্বিপ্রহরে খাওয়ার শেষে কায়লুলাহ করা, পরিমান মত খাবার খাওয়া বিষয়ও আছে।
অনেক গুরুত্বপূর্ণ হলো খাবারের তাহকিক করা মান হালাল হারাম যাচাই করা । মুরগি জবাই না করলে সেটা হারাম। আবার পশু সুন্নত তরিকায় জবাই করলেও হারাম থেকে যাবে ।
সুন্দর পোস্ট ।
৪| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: এজন্য আমি পুরো পেট ভরে খাই না। একবাগ খালি রাখি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সত্য তো পরিস্ফুট।
সমস্যা হলো আমাদের গ্রহনের। উপলদ্ধির। সম্মানের।
আর যার মূল কারণ হলো শ্রদ্ধা বা ভালবাসার অভাব।
নবীকে যতক্ষন অন্তর থেকে উপলব্ধির সাথে ভালবেসে গ্রহণ না করা হবে ততক্ষন মন দ্বিধান্বিত থাকে।
আর যখন সকল কিছু উপেক্ষা করে সত্যকে হৃদয় ধারন করে, তখনই তা হয়ে ওঠে অনুসরনীয়
তার জন্য জিগিষা জাগে, আরো বেশী আরো বেশি অনুধাবনের, ধারনের, বিকাশের।
তখন নবী হয়ে ওঠেন কালোত্তীর্ণ আইডল। মহানায়কেরও মাহানায়ক।
আমাদের বিশ্বাসের দুর্বলতাতেই আমরা না ঘরকা, না ঘাটকা।
আমাদের পথ চলা হোক দৃঢ়তায়। আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান, প্রেমে সুতীব্র।
ভাল যদি বাসতে হয় নবীকে বাসুন,
ভাল যদি বাসতে হয় রাসূলকে বাসূন ।
কারন. . .?
নবী ত্বরানে ওয়ালা, নবী
বাচানে ওয়ালা
প্রানের চেয়েও প্রিয় তাই
নবীকে বাসুন ।
ভাল যদি বাসতে হয় নবীকে বাসুন,
ভাল যদি বাসতে হয় রাসূলকে বাসূন ।
সাকারাতের বিছানাতে কি যে যন্ত্রনা
সাত সাগরের পানি দিলেও তৃঞ্চা মিঠেনা ।
(আর তখনি তো হবে আসল ঘটনা)
কাউসারের পানি দিবেন
শাহে মদিনা ।
ভাল যদি বাসতে হয় নবীকে বাসুন,
ভাল যদি বাসতে হয় রাসূলকে বাসূন ।