নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে নিকাহে মুত\'আ বা সাময়িক বিবাহের বিধান ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

১২ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:৪৬

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ইসলামে নিকাহে মুত'আ বা সাময়িক বিবাহের বিধান ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

নিকাহে মুত'আ কাকে বলে?

আরবি: نكاح المتعة‎‎, English: 'wedlease'। নিকাহ মানে, বিয়ে, বিবাহ। আর মুত'আ অর্থ, উপকার ভোগ করা, ফায়দা লাভ করা, আমোদ-প্রমোদে লিপ্ত হওয়া ইত্যাদি। পরিভাষায়, কোনো মহিলাকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্ধারিত অর্থের বিনিময়ে বিবাহ করাকে 'নিকাহে মুত'আ' বা 'সাময়িক বিবাহ' বলে। নির্দিষ্ট সময় সীমা অতিক্রম হওয়ার সাথে সাথে আপনা হতে এ বিবাহ ভঙ্গ হয়ে যায়। এর জন্য তালাকের দরকার হতো না।

নিকাহে মুত'আ আরব সমাজে ইসলামপূর্ব যুগের প্রথা; ইসলামের প্রথম যুগেও বৈধ ছিল এটিঃ

মূলতঃ মানব সভ্যতায় বিবাহের উদ্দেশ্য হল, সম্পর্ক বজায় রাখা এবং তা স্থায়ী করা। সাময়িক বিবাহ বা নিকাহে মুত'আ বিবাহের উদ্দেশ্যের পরিপন্থী। এ ধরণের বিবাহ প্রথা ইসলামপূর্ব আরব সমাজে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। ইসলামের প্রাথমিক যুগেও এর অনুমতি ছিল। পরে রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিয়ামত পর্যন্ত এর নিষিদ্ধতা ঘোষণা করেন। এ ধরণের কোনো বিবাহের বিধান ইসলামে বর্তমানে নেই।

হযরত আলী রায়দিাল্লাহু তাআ'লা ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,

مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ أَنَّه“ سَمِعَ الزُّهْرِيَّ يَقُوْلُ أَخْبَرَنِي الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيٍّ وَأَخُوه“ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ عَنْ أَبِيْهِمَا أَنَّ عَلِيًّا قَالَ لِابْنِ عَبَّاسٍ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهٰى عَنِ الْمُتْعَةِ وَعَنْ لُحُومِ الْحُمُرِ الأَهْلِيَّةِ زَمَنَ خَيْبَرَ.

হাসান ইব্‌নু মুহাম্মাদ ইব্‌নু ‘আলী ও তাঁর ভাই ‘আবদুল্লাহ্‌ তাঁদের পিতা থেকে বর্ণিতঃ ‘আলী (রাঃ) ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) - কে বলেছেন, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম খায়বর যুদ্ধে মুত’আহ বিয়ে এবং গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত খাওয়া নিষেধ করেছেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪২) এই হাদিসের মানঃ সহিহ।

অপর বর্ণনায় আছে,

«نهى عن متعة النساء يوم خيبر وعن لحوم الحمر الإنسية»

'নবী কারিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাইবারের দিন নারীদের সাথে মুত’আহ বিয়ে এবং গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত খাওয়াকে নিষেধ করেছেন।' -সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৯৭৯, সহিহ মুসলিম হাদিস নং ১৪০৭, এই হাদিসের মানঃ সহিহ।

অন্য এক হাদিসে এসেছে,

«يَا أَيُّهَا النَّاسُ، إِنِّي قَدْ كُنْتُ أَذِنْتُ لَكُمْ فِي الِاسْتِمْتَاعِ مِنَ النِّسَاءِ، وَإِنَّ اللهَ قَدْ حَرَّمَ ذَلِكَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ، فَمَنْ كَانَ عِنْدَهُ مِنْهُنَّ شَيْءٌ فَلْيُخَلِّ سَبِيلَهُ، وَلَا تَأْخُذُوا مِمَّا آتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا».

রবী ইবনে সাবুরা আল-জুহানী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তার পিতা তাকে হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি একদিন রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সাথে ছিলেন। তখন তিনি বলেন, 'হে মানবসকল! আমি তোমাদের মুত'আর অনুমতি দিয়েছিলাম। আল্লাহ তাআ'লা কিয়ামত পর্যন্ত তা নিষিদ্ধ করেছেন। তোমাদের কারো নিকট যদি তাদের কিছু থেকে থাকে তবে তোমরা তাদের মুক্তি দিয়ে দাও। তোমরা তাদের যা দিয়েছ তা আর ফেরত নিবে না।' -সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৪০৬

আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,

وَقَالَ ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنِي إِيَاسُ بْنُ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَيُّمَا رَجُلٍ وَامْرَأَةٍ تَوَافَقَا فَعِشْرَةُ مَا بَيْنَهُمَا ثَلاَثُ لَيَالٍ فَإِنْ أَحَبَّا أَنْ يَتَزَايَدَا أَوْ يَتَتَارَكَا تَتَارَكَا فَمَا أَدْرِي أَشَيْءٌ كَانَ لَنَا خَاصَّةً أَمْ لِلنَّاسِ عَامَّ.
قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ وَبَيَّنَه“ عَلِيٌّ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّه“ مَنْسُوخٌ.

ইব্‌নু আবূ যিব থেকে বর্ণিতঃ আয়াস ইবনু সালামাহ ইবনু আকওয়া‘ তার পিতা সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন, যে কোন পুরুষ এবং মহিলা উভয়ে (মুত‘আহ করতে) একমত হলে তাদের পরস্পরের এ সম্পর্ক তিন রাতের জন্য গণ্য হবে। এরপর তারা ইচ্ছে করলে এর চেয়ে অধিক সময় স্থায়ী করতে পারে অথবা বিচ্ছিন্ন হতে চাইলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। (বর্ণনাকারী বলেন) আমরা জানি না এ ব্যবস্থা শুধু আমাদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল, না সকল মানুষের জন্য ছিল। -সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৪০৫ আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৪

ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘আলী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু নবী কারিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এটা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন যে, মুতা‘আ বিবাহ প্রথা রহিত হয়ে গেছে। -সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৪০৫, আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৪, এই হাদিসের মানঃ সহিহ।

নিকাহে মুত'আ নিষিদ্ধ করার পেছনে হিকমত কি?

বিবাহকে আল্লাহ তাআ'লা তার নিদর্শন বানিয়েছেন। এতে রয়েছে মানুষের চিন্তার খোরাক। আল্লাহ তাআ'লা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মুহাব্বত ও অনুগ্রহ সৃষ্টি করেছেন। আর স্ত্রীকে স্বামীর জন্য প্রশান্তিস্থল বানিয়েছেন। প্রজননের প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন এবং নারীদের উত্তরাধিকারী করেছেন। এগুলো সবই উল্লিখিত নিকাহে মুত'আ তথা সাময়িক বিবাহে অনুপস্থিত। সামগ্রিক ভাবনায় মানব কল্যান এবং সাধারণ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটায় যুদ্ধকালীন সাময়িক প্রয়োজনে এমন কোনো বিষয়ের অনুমোদন দেয়া হলেও তাকে বিধানে পরিনত করে চিরস্থায়ীভাবে বহাল করে রাখার মত যুক্তি ইসলামে থাকতে পারে না। আর যারা এ ধরণের বিবাহকে বৈধ আখ্যায়িত করার ছুতোয় ফায়দা লুটতে চান তাদের মতে মুত'আকৃত নারী তাদের স্ত্রীও নয় আবার ক্রীতদাসীও নয়। অথচ আল্লাহ তাআ'লা বলেন,

وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ

এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে।

إِلَّا عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ

তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না। -সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত নং ৫, ৬

বিরুদ্ধবাদীদের মত খন্ডনঃ

ভ্রান্ত আকিদাসম্পন্ন শিআগনসহ কিছু কিছু বাতিল ফিরকা নিকাহে মুত'আর হুকুম বহাল থাকার তাদের মিথ্যে দাবির পক্ষে কিছু দলীল দিয়ে থাকেন, প্রকৃতপক্ষে যা দলীল হিসেবে টিকে না। কুরআনে ব্যবহৃত শব্দের শাব্দিক অর্থ বুঝার ক্ষমতা না থাকায় তারা হয়তো বিভ্রান্তিতে নিপতিত হয়েছে। যেমন, তারা বলেন-

আল্লাহ তাআ'লার বাণী-

فَمَا اسْتَمْتَعْتُم بِهِ مِنْهُنَّ فَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِيضَةً

অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। -সূরা আননিসা, আয়াত নং ২৪

তারা বলে যে, এ আয়াতের মধ্যে মুত'আ হালাল হওয়ার দলীল রয়েছে। কারণ, আল্লাহ তাআ'লার বাণী أُجُورَهُنَّ প্রমাণ করে اسْتَمْتَعْتُم দ্বারা উদ্দেশ্য মুত'আ।

এর জবাবঃ

পূর্বের আয়াতে আল্লাহ তাআ'লা পুরুষের জন্য যেসব নারীদের বিবাহ করা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে তাদের আলোচনা করেছেন। তারপর এ আয়াতে যাদের বিবাহ করা যাবে তাদের আলোচনা করেছেন এবং বিবাহিতাকে তার মহর আদায় করার নির্দেশ দেন। আর বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রীর উপভোগ ও পরিতৃপ্তিকে এখানে استمتاع শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করেছেন। এ ধরণের দৃষ্টান্ত আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বর্ণিত হাদিসেও এসেছে। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

«المرأة كالضِّلَع إن أقمتَها كسرتَها ، وإن استمتعتَ بها استمتعتَ بها وفيها عوج»

নারীরা পাঁজরের বাঁকা হাড়ের মতো। যদি তাকে তুমি সোজা করতে যাও তবে তাকে তুমি ভেঙ্গে ফেলবে। আর যদি তাকে তুমি উপভোগ কর, তবে তুমি বাঁকা অবস্থায় তাকে উপভোগ করবে। -সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৪৮৮৯, সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৪৬৮

আর এখানে মহরের ব্যাখ্যাটি বিনিময় দ্বারা করা হয়েছে। এখানে বিনিময় দ্বারা উদ্দেশ্য মাল সম্পদ নয় যা মুত'আর চুক্তিতে নারীকে দেয়া হয়। পবিত্র কুরআনের অন্য জায়গায় 'আজর' বলে নাম রাখা হয়েছে। আল্লাহ তাআ'লা ইরশাদ করেন,

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَاجَكَ اللَّاتِي آتَيْتَ أُجُورَهُنَّ

হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি 'আজর' তথা মোহরানা প্রদান করেন। -সূরা আল আহযাব, আয়াত নং ৫০

অতএব সত্য তাদের অন্তর স্পর্শ করুকঃ

সুতরাং, একথা স্পষ্ট হলো যে, কুরআনুল কারিমের আয়াতে এমন কোনো দলীল নেই যাতে প্রমাণ হয় যে, মুত'আ বিবাহ হালাল। মূলতঃ তাফসীরকারদের মধ্যে যারা উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় মুত'আর বিষয়টি উল্লেখ করেছেন এটা তাদের অভিমত মাত্র। একটি বিষয়ে সর্বাবস্থায় চোখ-কান খোলা রেখে অনুধাবন করার চেষ্টা করতে হবে যে, পবিত্র কুরআন ওহীর মাধ্যমে প্রদত্ত মহান আল্লাহ তাআ'লার বাণী, এর শব্দ, বাক্য, অক্ষর কিংবা নুকতায়ও কোনো পরিবর্তন-পরিবর্ধনের কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু তাফসীর ওহীর মাধ্যমে অবতীর্ণ হয়নি। তাফসীর শব্দের সরল বাংলা অর্থ- ব্যাখ্যা। এই ব্যাখ্যা একেকজন তাফসীরকার একেকভাবে করেছেন। এতে কোনো কোনো স্থানে শব্দের অর্থ গ্রহণের ক্ষে্ত্রে, বাক্যের অন্তর্ণিহিত অর্থ প্রকাশের ক্ষে্ত্রে কিছু কিছু পরিবর্তন লক্ষনীয় হয়ে উঠেছে। তাফসীরের কিতাবগুলোতে এধরণের ঘটনা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবেই স্বীকৃত। কোনো কোনো তাফসীরকার তাদের তাফসীরের কিতাবে ইসরাঈলী এমন এমন উপকথা বর্ণনা করেছেন যা মুসলমানদের আকিদার সাথে সাংঘর্ষিক। যেমন হযরত আইউব আলাইহিস সালামের অসুস্থতা প্রসঙ্গে আলোচিত আয়াতের ব্যাখ্যায় কিছু তাফসীরের কিতাবে অতিরঞ্জন লক্ষ্য করা যায়। তাফসীরের কিতাবে কোনো কিছু থাকলেই তা গ্রহণ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্বে সেই তাফসীরকার কোন মানসিকতার ছিলেন, তার মতাদর্শ কি ছিল ইত্যাদি বিবেচ্য বিষয়। আর তারচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, কুরআনের কোনো আয়াতে যে বিষয়ে কোনো পরিষ্কার নির্দেশনা নেই এবং বিষয়টিতে স্বয়ং প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর স্পষ্ট নির্দেশনা বিদ্যমান, সেই ক্ষেত্রে মহানবী এর বাণীর চেয়ে তাফসীরকারদের অভিমত তথা মতামতকে অধিক গুরুত্ব দেয়ার মুমিনের শান হতে পারে না। তাছাড়া সূরা আননিসা এর উপরোক্ত ২৪ নং আয়াতের তাফসীরে মহনবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামের অভিমত কেমন ছিল? তারা এই আয়াতের যে ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছেন আমাদেরকেও সেটাই গ্রহণ করতে হবে। তাই নয় কি, প্রিয় পাঠক?

কুরআনের কোনো আয়াতের মাধ্যমে মুত'আ বিবাহ আদৌ হালাল সাব্যস্ত হয়নিঃ

আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহর রাসূল সাধারণ কোনো মানুষ ছিলেন না। তিনি মহামানব। মহান নবী এবং রাসূল। শ্রেষ্ঠতম পয়গাম্বর। কোনো বিষয় কুরআনের আয়াত দ্বারা হালাল হয়ে থাকলে তিনি তা নিজের কথা অর্থাৎ, হাদিস দ্বারা বাতিল করার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি এমন ভুলো মনের কেউ ছিলেন না যে, নাসিখ-মানসূখ তাঁর জানা ছিল না (নাউজুবিল্লাহ)। তিনি এমন কেউ নন যে, এই কাজটি বেখেয়ালেই তিনি করে ফেলেছেন। আল্লাহ তাআ'লা তাঁর শ্রেষ্ঠতম বন্ধুকে দিয়ে এমন একটি ভুল করাবেন, আহলে হকের নিকট এটি কল্পনারও অতীত। অর্থাৎ, মুত'আ বিবাহ জায়েজ হওয়ার নির্দেশনা যদি কুরআনের আয়াত দ্বারা প্রদান করা হয়েই থাকতো, তবে তিনি কস্মিনকালেও তা নিজের বাণী দ্বারা রহিত করতেন না। এই নির্দেশ কখনোই দিতেন না। অবশ্যই কুরআনের অন্য কোনো আয়াত নাযিলের অপেক্ষায় থাকতেন। কিন্তু এই ক্ষেত্রে যেহেতু তিনি নিজেই নির্দেশনা দিয়ে মুত'আ বিবাহ স্পষ্টভাবে হারাম ঘোষনা করেছেন সুতরাং সহজেই বোধগম্য হওয়ার কথা যে, কুরআনের কোনো আয়াতের মাধ্যমে মুত'আ বিবাহ আদৌ হালাল সাব্যস্ত হয়নি। সুতরাং, সত্য মেনে নেয়ার পথে আমাদের আর বাধা থাকার কথা নয়।

তারপরও যদি আমরা তর্কের খাতিরে একথা মেনে নিই যে, আয়াত দ্বারা মুত'আ বিবাহ বুঝানো হয়েছে, তাহলেও আমরা বলবো আয়াতটির বিধান রহিত। কারণ, অনেকগুলো সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, নিকাহে মুত'আ তথা সাময়িক বিবাহ কিয়ামতের দিন পর্যন্ত নিষিদ্ধ।

কোনো কোনো সাহাবী বিশেষ করে ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমা থেকে নিকাহে মুত'আ বৈধ হওয়ার যে বর্ণনা পাওয়া যায় তার উত্তর হলো,

প্রথমতঃ এটি প্রমাণ করে যে, শিআরা তাদের প্রবৃত্তির অনুসারী। কারণ, তারা রাসূলের সাহাবীদের কাফির বলে, তারপর তারা এ বিষয়ে এবং অন্য যে কোনো বিষয়ে তাদের আমল দ্বারা তাদের মতের পক্ষে দলীল পেশ করে।

দ্বিতীয়তঃ যেসব সাহাবী থেকে মুত'আ বৈধ হওয়ার বর্ণনা এসেছে, তারা ঐসব সাহাবী যাদের নিকট উক্ত বিবাহ হারাম হওয়ার দলীল পৌঁছেনি। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমাকে সাহাবীরা বিশেষ করে আলী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু এবং যুবাইর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু নিকাহে মুত'আ বৈধ বলার জবাব দিয়েছেন।

«مهلا يا ابن عباس فإن رسول الله صلى الله عليه وسلم نهى عنها يوم خيبر وعن لحوم الحمر الإنسية» .

আলী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি ইবন আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুকে মুত'আর বিষয়ে নমনীয় বলে জানতে পেরে বলেন, 'হে ইবন আব্বাস! মুত'আর বিষয়ে সাবধান! কারণ, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাইবারের যুদ্ধে মুত'আকে নিষেধ করেছেন এবং পালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।' -সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৯৭৯, সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৪০৭

হাদিসের দ্বারা মুত'আ বিবাহের অনুমতি দেয়া হয়েছিলঃ

হাদিসের দ্বারাই মুত'আ বিবাহের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। প্রমান হিসেবে নিচের সহিহ হাদিসগুলো দ্রষ্টব্য,

এক. আবূ জামরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমি মহিলাদের মুত’আহ বিয়ে সম্পর্কে ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে প্রশ্ন করতে শুনেছি, তখন তিনি তার অনুমতি দেন। তাঁর আযাদকৃত গোলাম তাঁকে বললেন যে, এরূপ হুকুম নিতান্ত প্রয়োজন ও মহিলাদের স্বল্পতা ইত্যাদির কারণেই ছিল? ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, হাঁ। -সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৫১১৬, হাদিসের মানঃ সহিহ

দুই. জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ এবং সালাম আকওয়া‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃআমরা কোন এক সেনাবাহিনীতে ছিলাম এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রেরিত এক ব্যক্তি আমাদের নিকট এসে বললেন, তোমাদেরকে মুত‘আহ বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা মুত‘আহ করতে পার। -সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৫১১৭, হাদিসের মানঃ সহিহ

তিন. ইব্‌নু আবূ যিব থেকে বর্ণিতঃ আয়াস ইবনু সালামাহ ইবনু আকওয়া‘ তার পিতা সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে কোন পুরুষ এবং মহিলা উভয়ে (মুত‘আহ করতে) একমত হলে তাদের পরস্পরের এ সম্পর্ক তিন রাতের জন্য গণ্য হবে। এরপর তারা ইচ্ছে করলে এর চেয়ে অধিক সময় স্থায়ী করতে পারে অথবা বিচ্ছিন্ন হতে চাইলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। (বর্ণনাকারী বলেন) আমরা জানি না এ ব্যবস্থা শুধু আমাদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল, না সকল মানুষের জন্য ছিল। -সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৫১১৯, হাদিসের মানঃ সহিহ

মুত'আ বিবাহ যদি কুরআনের আয়াত দ্বারা হালাল সাব্যস্ত হয়ে থাকতো তাহলে এত এত হাদিসে আবার একই বিষয়ে নির্দেশনা থাকার কারণ কি? এখানেও একটু চিন্তা করলেই বুঝা যায় যে, এ বিষয়টি কুরআনের আয়াত দ্বারা হালাল সাব্যস্ত হয়নি। তাই এই ধরণের বিবাহ নিষিদ্ধ ঘোষনাও করেছেন স্বয়ং নবী কারিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বাণী তথা হাদিস দিয়ে।

হকপন্থী সকলের নিকট মুত'আ বিবাহ হারামঃ

মুত‘আ বিবাহ প্রথা রহিত হয়ে গেছে মর্মে এ ধরণের সহিহ হাদিসের বর্ণনা আরও রয়েছে। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই ধরণের বিবাহকে স্পষ্টভাবে এবং দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছেন। তাই সহিহ হাদিসের বর্ণনার আলোকে সাহাবায়ে কেরামের আমল ও ইজমা, তথা কাজ ও সম্মিলিত মতামতের মাধ্যমে মুত‘আ বিবাহ যে সর্বসম্মতিক্রমে নিষিদ্ধ তা আমরা ইতোমধ্যেই উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে উপলব্ধি করেছি। উপরন্তু মুসলিম উম্মাহর সকল যুগের হকপন্থী আলেম-উলামা ও বিজ্ঞজনদের সর্বসম্মত অভিমতও একইরকম। সকল মাযহাবের ইমামগণ, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের সকলেরই এই একই আকিদা। তারাও মুত'আ বিয়েকে নিষিদ্ধ তথা হারাম মনে করেন। বিভ্রান্তিতে নিপতিত সংশয়বাদীগন ছাড়া কেউ মুত'আ বিবাহকে এখনও জায়েজ বলছে এমন কথা শোন যায় না।

রাসূলের ফায়সালা মেনে নেয়া মুমিনের জন্য অবধারিতঃ

মহান আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন,

وَمَن يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَىٰ وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّىٰ وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ ۖ وَسَاءَتْ مَصِيرًا

আর কারো নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মুমিনদের পথ ছাড়া অন্য পথ অনুসরণ করে, তবে যেদিকে সে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে আমরা ফিরিয়ে দেব এবং তাকে জাহান্নামে দগ্ধ করাবো, আর তা কতই না মন্দ আবাস! -সূরা নিসা, আয়াত ১১৫

উপরোক্ত আয়াত থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা পাওয়া যায়। যেমন-

এক. আল্লাহর রাসূলের বিরোধিতাকারী জাহান্নামী।

দুই. কোন ব্যাপারে হক তথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত প্রকাশিত হওয়ার পর সেটার বিরোধিতা করাও জাহান্নামীদের কাজ।

তিন. এ উম্মতের ইজমা বা কোন বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছার পর সেটার বিরোধিতা করা অবৈধ। কারণ, তারা পথভ্রষ্টতায় একমত হবে না। মুমিনদের মত ও পথের বিপরীতে চলার কোন সুযোগ নেই।

মুত'আ বিবাহ নিষিদ্ধের ইজমা বা সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয় সাহাবীদের সময়ইঃ

মুত'আ বিবাহ নিষিদ্ধের ইজমা বা সম্মিলিত মতামতের ঘটনা ঘটে সাহাবীযুগেই। হযরত ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু নিজের পূর্বের রায় ছেড়ে রুজু করেছেন। অর্থাৎ, তিনি তার আগের মত পরিহার করে পরবর্তীতে মুত'আ বিবাহ হারাম হওয়ার সিদ্ধান্তে ঐকমত্য পোষন করেছেন। কিন্তু আশ্চর্যের সাথে আমরা লক্ষ্য করে থাকি যে, এ বিষয়ে প্রায় ডজনখানিক বর্ণনা হযরত আলী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে এসেছে। অথচ শিয়া মতবাদে বিশ্বাসীদের নিকট তিনিই তাদের ইমাম। ইমামের বর্ণনা অনুসারে মুত'আ বিবাহ হারাম সাব্যস্ত হওয়ার পরেও এটাকে তাদের জায়েজ বলা 'ইমাম-বিরোধিতা' ছাড়া আর কিইবা বলা যায়!

ইসলাম যেখানে বিবাহ বিচ্ছেদকে তিরস্কার করে সেখানে মুত'আ বিবাহ বা সাময়িক বিবাহের মত যখন-তখন বিবাহ ও বিচ্ছেদের এই কু-প্রথা কখনও ইসলামিক স্থায়ী রীতি বা নিয়ম হতে পারে না।

এখানে এ বিষয়টিও পরিষ্কার হওয়া চাই যে, ইসলামী শরীয়তে অতীব প্রয়োজনের ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদের অবকাশ রয়েছে, কিন্তু বিষয়টি পছন্দনীয় নয়। একেবারেই ঘৃণিত একটি কাজ। সুনানে ইবনে মাজার এক হাদিসে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই বাণী বর্ণিত হয়েছে যে-

أَبْغَضُ الْحَلَالِ إِلَى اللّهِ الطّلَاقُ.

আল্লাহর কাছে সবচেয়ে অপ্রিয় হালাল হচ্ছে তালাক। -সূত্রঃ সুনানে ইবনে মাজাহ, হা/ ২০১৮

সুনানে আবু দাউদে মুহারিব ইবনে দিছার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর সূত্রে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইরশাদ বর্ণিত হয়েছে-

مَا أَحَلّ اللّهُ شَيْئًا أَبْغَضَ إِلَيْهِ مِنَ الطّلَاقِ.

আল্লাহ তাআলা তাঁর কাছে তালাকের চেয়ে অপ্রিয় কোনো কিছুকে হালাল করেননি। -সূত্রঃ সুনানে আবু দাউদ, হা/ ২১৭৭

অতএব বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাকের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। নারী-পুরুষ উভয়ের কর্তব্য তালাক থেকে দূরে থাকা। তালাকের মত ঘৃণিত বিষয় থেকে সতর্ক থাকা। বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাক দেয়ার ক্ষমতা যেহেতু পুরুষের তাই পুরুষকে এই ক্ষমতা প্রয়োগের ব্যাপারে খুবই সংযমী হতে হবে। অন্যদিকে নারীর ব্যাপারে হাদীস শরীফে বলা হয়েছে-

أَيّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا الطّلَاقَ فِي غَيْرِ مَا بَأْسٍ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْجَنّةِ.

যে নারী তার স্বামীর কাছে বিনা কারণে তালাক প্রার্থনা করে তার জন্য জান্নাতের সুঘ্রাণ পর্যন্ত হারাম। -সূত্রঃ সুনানে ইবনে মাজাহ, হা/ ২০৫৫

সাম্প্রতিককালে সমাজের সর্বব্যাপী মহামারী আকারে পরকীয়ার যে পরিবিস্তার দৃশ্যমান হয়ে উঠছে- এতে যেমন পুরুষের অপরাধ আছে তেমনি আছে নারীরও। দেখা যাচ্ছে যে, এক নারীর দ্বারাই অন্য নারীর সংসার ভাঙছে। এক্ষেত্রে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই বাণী খুবই প্রাসঙ্গিক।

জামে তিরমিযীতে হযরত আবু হুরাইরা রা. -এর সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

لاَ تَسْأَلِ الْمَرْأَةُ طَلاَقَ أُخْتِهَا لِتَكْفِئَ مَا فِي إِنَائِهَا.

কোনো নারী যেন তার বোনের (অপর নারীর) হিস্যা নিজের পাত্রে উপুড় করে নেয়ার জন্য তালাকের ফরমায়েশ না করে। -সূত্রঃ জামে তিরমিযী, হা/ ১১৯০

এক্ষেত্রে সমাজের এই অসুস্থাবস্থার প্রতিকারে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। প্রত্যেকেরই উচিত নিজের তাকদিরের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা। যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাকার মানসিকতা থাকা চাই। অন্যের ভাগ্য নিয়ে টানাটানি কোনো রুচিশীল মানুষেরই থাকতে পারে না। অন্যের অধিকারে যা আছে তা-ও নিজের অধিকারে নিয়ে নেয়ার মতো লোভী মানসিকতা কোনো ভদ্র মানুষের হতে পারে না। উপরন্তু যখন ঐ নারীটিও একজন নারী, যে কোনো ধর্মের বা বর্ণেরই তিনি হোন না কেন!

তো এই সকল ঈমানী ও মানবীয় চেতনার বিস্তার এখন খুবই জরুরি। তাহলে অন্যায় অযৌক্তিক কারণে বিবাহ-বিচ্ছেদের হার অনেক হ্রাস পাবে।

নারী-পুরুষ উভয়ে যদি পর্দার বিধান মেনে চলে তবে পরকীয়া জাতীয় কিছু ঘটার আশংকা অনেকাংশে হ্রাস পাবে। যারা শরীয়তের এ গুরুত্বপূর্ণ বিধানটি নিয়ে কটাক্ষ করে অথবা একে জটিল মনে করে তা পালনে বিরত থাকে, তাদের বিষয়টি ভাবা উচিত।

উল্লেখ্য যে, পর্দা বলতে শুধু সামনের মানুষটির সাথেই পর্দা নয়; বরং এ ডিজিটাল যুগে টেলিভিশন, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন ইত্যাদির মাধ্যমেও ব্যাপকভাবে পর্দা লংঘিত হয় এবং এগুলোও একটি সময়ে এসে অনেক সংসারে ভাঙনের কারণ হিসেবে যুক্ত হয়ে থাকে। বিশেষতঃ ফেসবুক, টুইটারসহ ইত্যাদির মত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো যে, বিশ্বব্যাপী কত সংসার ভাঙার কারণ ঘটেছে, কত শিশুকে তাদের মা-বাবা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে তার সঠিক হিসাব হয়ত কোনো দিনই প্রকাশিত হবে না। মনে রাখতে হবে যে, পর্দা এসব ক্ষেত্রেও লঙ্ঘিত হতে পারে। সুতরাং, আধুনিক এসব ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারেও সংযম অবলম্বন একান্ত জরুরি।

আরব বিশ্বের সর্বোচ্চ ফতোয়া কমিটির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তঃ

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা অর্থাৎ, আরব বিশ্বের সর্বোচ্চ ফতোয়া কমিটিকে নিকাহে মুত'আ বা সাময়িক বিবাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে,

انتشر بين أوساط الشباب السفر خارج البلاد للزواج بنية الطلاق ، والزواج هو الهدف في السفر استناداً على فتوى بهذا الخصوص ، وقد فهم الكثير من الناس الفتوى خطأ ، فما حكم هذا ؟ .

‘তালাকের নিয়তে বিবাহ করার জন্য দেশের বাইরে সফর করা যুবকদের মাঝে ব্যাপকতা লাভ করেছে। বিয়ে করাটাই সফরের লক্ষ্য স্থির করা হয়। যার দলিল তারা একটি বিশেষ ফতয়াকে দিয়ে থাকে। অধিকাংশ লোক ওই ফতওয়া না বুঝে তার থেকে ভুল অর্থ নিয়ে থাকে। আসলে এ বিষয়ে বিধান কী?’

কমিটির উলামায়ে কেরাম উত্তরে লিখেছেন,

الزواج بنية الطلاق زواج مؤقت ، والزواج المؤقت زواج باطل ؛ لأنه متعة ، والمتعة محرمة بالإجماع ، والزواج الصحيح : أن يتزوج بنية بقاء الزوجية ، والاستمرار فيها ، فإن صلحت له الزوجة وناسبت له وإلا طلقها ، قال تعالى : ( فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌ بِإِحْسَانٍ ) البقرة/229

‘তালাকের নিয়তে বিবাহ– এটি একটি অস্থায়ী বিবাহ। আর এ ধরণের স্বল্প সময়ের বিবাহ বাতিল। কেননা এটি একপ্রকার মুত’আ তথা প্রমোদ-বিবাহ; যা উলামায়ে কেরামের ঐকমত্যে হারাম। সহিহ পদ্ধতির বিয়ে হল, বিবাহ করা হবে স্থায়ীভাবে বসবাসের নিয়তে। তারপর যদি বিবাহ-বন্ধন নিরাপদ হয় এবং স্ত্রী তার স্বামীর জন্য উপযোগী হয় তাহলে তাকে রাখবে অন্যথায় তাকে তালাক দিবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, অতঃপর বিধি মোতাবেক রেখে দেবে কিংবা সুন্দরভাবে ছেড়ে দেবে। (সূরা বাকারা ২২৯)।’ (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১৮/৪৪৮, ৪৪৯)

উল্লখ্য, শী‘আ রাফেযীরা এখনও এই ধরনের বিবাহকে জায়েয মনে করে থাকে, অথচ তাদেরই অন্যতম ইমাম জা‘ফর ছাদেক (৮০-১৪৮ হি.) এটিকে ‘যেনা’ বলে অভিহিত করেছেন। (বায়হাক্বী ৭/২০৭)

আসুন, আহলে সুন্নতের পথে থাকি, হকের পথে অটল থাকিঃ

প্রিয় ভাই/ বোন আপনি কোন দলের? কাদের সাথে যাবেন? কাদের সাথে থাকবেন? নবী কারিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তাঁর সাহাবায়ে কেরাম এবং ইসলামী জ্ঞানে পারদর্শী হকপন্থী বিজ্ঞজনদের সাথে থাকবেন? না কি, বিপরীতপন্থী ভাইদের সাথে যাবেন? ওদের সাথে গেলে অবশ্য সাময়িক ফায়দা একটা আছে! যেহেতু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিয়ামত পর্যন্ত মুত'আ বিবাহকে হারাম ঘোষনা করেছেন সে কারণে এই সাময়িক বিবাহ পদ্ধতিকে পুনরায় আর জায়েজ করা সম্ভব না বিধায় কল্পনায় এটির চান্সপ্রাপ্তির নিভূ নিভূ আশার ক্ষীণ একটা আলো কিছুদিন ধিকিধিকি করে জ্বালিয়ে রাখলেও রাখতে পারেন অন্তরে! আর হ্যা, তাতে যদি সাময়িক বিবাহের কিছুটা শান্তি মনে-প্রাণে অনুভবে গ্রহণ করে নিতে পারেন! কিন্তু শেষ বলতে যা কথা! শেষ রক্ষে কি আর হয় তাতে! আল্লাহর রাসূল আর তাঁর সাহাবীদের পথ ছেড়ে আমরা আর কোথায় যাব! আমাদের আর যাওয়ার জায়গা কোথায়! আল্লাহ তাআ'লা আমাদের ক্ষমা করুন। সকলের জন্য শুভ কামনা। ভালো থাকুন সবাই।

লেখাটি প্রিয় বোদ্ধাজন বিদ্রোহী ভৃগু ভাইকে......

মন্তব্য ৬৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:০৪

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় সাড়ে চুয়াত্তুর ভাইয়ের চোখে এই পোস্ট এসে থাকলে তাকে পোস্টটিতে একবার নজর দিয়ে, কোনো ভুল ত্রুটি রয়ে গেছে কি না- এ বিষয়ে তার মূল্যবান অভিমত জানানোর অনুরোধ থাকলো।

২| ১২ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:২৯

ফুয়াদের বাপ বলেছেন: অনেক পরিশ্রমী একটা লেখা। বিষয়ের মূল ম্যাসেজ আগে থেকেই জানতাম। বিস্তর পরিসরে জানলাম আপনার পোস্ট থেকে। আমাদের প্রতিষ্ঠানে কাজ করে এমন কয়েকজন শিয়ার সাথে কথা বললাম এই মুতা বিয়ে নিয়ে, তারা এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেনা বরং তাদের সবাই এই পদ্বতির বিবাহকে অপছন্দ করে, তবে তাদের এক বিরাট শিয়া উপশাখা এটাকে হালাল মনে করে...

১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:১৯

নতুন নকিব বলেছেন:



শুকরিয়া ভাই ফুয়াদের বাপ। আপনার ফুয়াদ কেমন আছে?

আপনাকে বোধ হয় এই পোস্টেই প্রথম পেলাম। চমৎকার মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা।

ফুয়াদ এবং পরিবারের অন্যদেরসহ আপনাকে আল্লাহ পাক ভালো রাখুন।

৩| ১২ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৪৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

এই বিয়ে এক ধরনের পতিতাবৃত্তি ছাড়া আর কিছুই নয়।

১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:২৯

নতুন নকিব বলেছেন:



মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনার ভাষা আয়ত্বের কসরত কেমন চলছে? আমার কাছে করোনাকালে আপনার ব্যক্তিগত এই উদ্যোগটা প্রশংসনীয় লেগেছে।

অনেক ভালো থাকবেন।

৪| ১২ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৫৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: @ নতুন নকিব ভাই, আমি এটা মনোযোগ দিয়ে পড়ছি। আমি কিছু নতুন বিষয় নিয়ে কাজ করছি যা এই বিতর্কের পক্ষে যাবে ইনশাল্লাহ। আমাকে কিছু সময় দিন। আজকের মধ্যে আমি মন্তব্য করব ইনশাল্লাহ।

১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩০

নতুন নকিব বলেছেন:



শুকরিয়া। অনেক অনেক ভালো থাকবেন ভাই।

মহান আল্লাহ তাআ'লা আপনাকে সর্বাঙ্গীন কল্যান প্রদান করুন।

৫| ১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:০৫

নতুন বলেছেন: অতএব সত্য তাদের অন্তর স্পর্শ করুকঃ
সুতরাং, একথা স্পষ্ট হলো যে, কুরআনুল কারিমের আয়াতে এমন কোনো দলীল নেই যাতে প্রমাণ হয় যে, মুত'আ বিবাহ হালাল। মূলতঃ তাফসীরকারদের মধ্যে যারা উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় মুত'আর বিষয়টি উল্লেখ করেছেন এটা তাদের অভিমত মাত্র। একটি বিষয়ে সর্বাবস্থায় চোখ-কান খোলা রেখে অনুধাবন করার চেষ্টা করতে হবে যে, পবিত্র কুরআন ওহীর মাধ্যমে প্রদত্ত মহান আল্লাহ তাআ'লার বাণী, এর শব্দ, বাক্য, অক্ষর কিংবা নুকতায়ও কোনো পরিবর্তন-পরিবর্ধনের কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু তাফসীর ওহীর মাধ্যমে অবতীর্ণ হয়নি। তাফসীর শব্দের সরল বাংলা অর্থ- ব্যাখ্যা। এই ব্যাখ্যা একেকজন তাফসীরকার একেকভাবে করেছেন।


তাহলে ইবনে কাথীরের তাফসির ও ঠিক না? যদি মুতাআ র ক্ষেত্রে উনি ভুল থাকেন তবে অন্য ক্ষেত্রেও তিনি মনগড়া ব্যক্ষা দিয়েছেন বলে উনার তাফসির বাদ দিতে হবে।

মুতাআ মতন একটা প্রথা ভালো কেউই সমথ`ন করবেনা।

১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩৪

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় ভাই,

আপনি বিজ্ঞ মানুষ। আপনার থেকে আমাদের অনেকের অনেক কিছু শেখার রয়েছে। বলতে চাইনি যে, কোনো তাফসীর গ্রন্থের পুরোটাতে সমস্যা। তাফসীরের কিতাবগুলো আপনিও বুঝেন যে, মানব মস্তিষ্কের দ্বারাই কৃত। সুতরাং, একেকজনের দৃষ্টিভঙ্গি এবং মতাদর্শ একেকরকম হওয়ার কারণে কোনো কোনো বিষয়ে সামান্য বৈপরিত্য পরিলক্ষিত হতে পারে। এর ফলে গোটা তাফসীরের কিতাবকেই বাতিল করা যাবে না।

অনেক ভালো থাকবেন।

৬| ১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:৪০

মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: নিকাহ মুত’য়া হালাল এমন দাবী কোন মুসলমান বর্তমানে করে বলে আমার জানা নাই। ইসলামে এটি একটি মিমাংসিত ইস্যু। এমন ইস্যু নিয়ে লেখা কিংবা আলোচনা অনেকটিই কম গুরুত্ববহ। এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনায় কেউ কেউ ভ্রান্তির শিকার হয় এবং নিজ ইচ্ছামত অর্থ করে ও হুকুম চাপিয়ে দেয়।

১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৩৮

নতুন নকিব বলেছেন:



নিকাহ মুত’য়া হালাল এমন দাবী কোন মুসলমান বর্তমানে করে বলে আমার জানা নাই। ইসলামে এটি একটি মিমাংসিত ইস্যু। এমন ইস্যু নিয়ে লেখা কিংবা আলোচনা অনেকটিই কম গুরুত্ববহ। এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনায় কেউ কেউ ভ্রান্তির শিকার হয় এবং নিজ ইচ্ছামত অর্থ করে ও হুকুম চাপিয়ে দেয়।

-চমৎকার বলেছেন ভাই। আপনার সংক্ষিপ্ত কিন্তু অর্থবহ এই মন্তব্য অনেকের জন্য শিক্ষনীয় হবে, আশা করি। আসলে মিমাংসিত ইস্যুগুলো নিয়েই তো তারা কাজ করেন। এগুলো দিয়েই বিভ্রান্তির বীজ বপনের চেষ্টা করেন। সেজন্য নিতান্ত বাধ্য না হলে এ বিষয়ে লেখার চিন্তাই করতাম না।

অনেক অনেক ভালো থাকবেন, প্রার্থনা।

৭| ১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:০০

রাজীব নুর বলেছেন: এর আগেও একজন 'মুতা' নিয়ে বেশ অগোছালো পোষ্ট দিয়েছিলেন। আপনার পোষ্ট পড়ে অনেক ধারনা পরিস্কর হলো।

১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৪০

নতুন নকিব বলেছেন:



শুকরিয়া। আপনি দীর্ঘ এই পোস্ট পড়েছেন জেনে সত্যি আনন্দিত। অনেক ভালো থাকার প্রার্থনা।

৮| ১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:১০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মুতাহ বিয়ে কোরআনের আয়াত দ্বারা অনুমোদন দেয়া হয় নাই। যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নেই যে কোরআনের আয়াত দ্বারাই হয়েছে তাহলে আমি একটা নতুন বিষয় উত্থাপন করছি। আমি এ ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত নই। তবে আপনাদের চিন্তার খোরাকের জন্য দিচ্ছি। হাদিস দ্বারাও কোরআনের বিধান রহিতের ব্যাপারে অনেক আলেম বলেছেন। এই বইটার পৃষ্ঠা ২৬ পড়তে পারেন https://www.qrfbd.org/pdf/book-31.pdf । এখানে বলা হয়েছে হানাফি আলেমগন, ইমাম মালেক ও আরও কিছু আলেম সুন্নত ও হাদিস দ্বারা কোরআন রহিত হওয়া বৈধ বলেছেন। islamqa তে nasikh দিয়ে খুজলেও কিছু মূল্যবান লেখা এর পক্ষে পাবেন। না পেলে আমি পরে দিব ইনশাল্লাহ। এছাড়া নীচের লেখাটা পড়তে পারেন এর সমর্থনে। লিঙ্কটা হোল Click This Link .

রাতের মধ্যে এ ব্যাপারে আরও কিছু বলব ইনশাল্লাহ। এখন সময় পাচ্ছি না।
ওখানে যেভাবে আছে;
Can the Sunnah Abrogate the Qur’an?
28 Oct, 2010
Answered by Sidi Faraz A. Khan

Question: My question is whether or not a Hadiath could abrogate (Naskh)an ayat of the Quran? For example, the ruling of Masah over Regular Socks/leather socks by the hanafis given the Quranic ayat (5:6).

Answer: Assalamu alaikum wa rahmatullah,

I pray this finds you in the best of health and faith.

Before answering your question, it would help to first understand what exactly abrogation refers to.

Abrogation [naskh] is generally defined as, “A clarification of the end point of one legal ruling, an end point that was preeternally known to Allah Most High yet nevertheless concealed from those addressed by the Sacred Law, such that it appeared to be a lasting ruling from the perspective of humans.” Hence, abrogation entails replacement from our perspective, yet mere clarification from the Divine perspective, i.e., clarification of the termination of a legal ruling and the beginning of a new legal ruling in its place.

Scholars are in agreement that the Qur’an can abrogate Qur’an and that the Sunna can abrogate Sunna. However, there is disagreement as to whether the Qu’ran can abrogate Sunna and whether the Sunna can abrogate Qur’an.

[Ibn Malak/Nasafi, Sharh al-Manar; Bazdawi, Usul al-Bazdawi]

Sunna Abrogation of Qur’an

There were two main opinions on this matter:

(1) The Hanafis, Imam Malik, and most theologians maintained that the Qur’an can be abrogated by a Sunna that is established by multiple-chain transmission [mutawatir] or by a Sunna that is well-known [mash’hura], “well-known” according to the Hanafis meaning a prophetic report that is accepted and implemented by the vast majority of jurists such that it is akin to multiple-chain transmission.

Imam Karkhi narrates that Imam Abu Yusuf [one of the two companions of Abu Hanifa] said, “It is valid for the Qur’an to be abrogated by the likes of the report of wiping over leather socks [khuffs], which is well-known [mash’hur].” Incidentally, this is the example you brought up in your question.

(2) Imam Shafi’i, most scholars of his school, and [according to one narration] Imam Ahmad ibn Hanbal maintained that the Qur’an is not abrogated by the Sunna. Imam Shafi’i stated this in his famous “Epistle” [al-Risala]. There was some disagreement, however, among Shafi’i scholars as to whether the Imam meant that it is not possible or simply that it never occurred.

[Amidi, Ihkam fi Usul al-Ahkam; Sarakhsi, Usul al-Sarakhsi; Farfur, Madarik al-Haqq]

There is quite a bit of debate and discussion on this complex topic, but the following will hopefully serve as a basic, summarized presentation of the issue.

The Shafi’i Perspective

The general perspective of the Shafi’i position is that the Qur’an states:

– “None of Our revelations do We abrogate or cause to be forgotten, except that We substitute something better or similar.” [2:106] Allah Most High ascribes substitution to Himself in the statement, “We substitute.”

– “But when Our Clear Signs are recited unto them, those who hope not for Our meeting say: ‘Bring us a reading other than this, or change it.’ Say: ‘It is not for me to change it of my accord: I follow not but what is revealed unto me.'” [10:15] The Prophet is commanded to say that he cannot change revelation based on his own perspective or desire, may Allah’s peace and blessings be upon him.

– “And when We substitute one verse for in place of another…” [16:101] Again, Allah Most High ascribes substitution to Himself, and specifically of “one verse” for another.

In general, the Shafi’is deemed the Sunna to be of lesser strength than the Qur’an. They also maintained that abrogation of the Qur’an by the Sunna could allow for criticism by non-Muslims that the Prophet [peace and blessings be upon him] contradicted what he deemed to be Divine speech.

[Sadr al-Shari’a, Tawdih fi Hill Ghawamid al-Tanqih; Farfur, Madarik al-Haqq]

The Hanafi Perspective

The Hanafi perspective is that abrogation of a Qur’anic verse by the Sunna does not entail abrogation of the verse the Prophet from his own accord, but rather merely his conveying Allah’s abrogation of His own verse, which is not very different from the normal Prophetic conveying of Divine rulings on behalf of Allah Most High. That is, just as the Prophet [peace and blessings be upon him] would normally convey Allah’s initial command, he can also convey Allah’s replacement of one command with another, both commands being issued from Allah Himself alone. This is not only possible according to the Hanafis, but in fact did occur. [Ibn Malak/Nasafi, Sharh al-Manar]

This is further reinforced by Allah’s statement regarding Prophetic speech in general, “And he does not speak of his own desire; it is not except inspiration sent down to him.” [53:3-4] This verse, then, serves as explanation of the verse cited above that states, “Say: ‘It is not for me to change it of my accord: I follow not but what is revealed unto me.'” [10:15] That is, abrogation of the Qur’an by the Prophet [peace and blessings be upon him] would never be from his own human desire, but rather based solely on Divine inspiration, with which the Prophet [peace and blessings be upon him] is then entrusted to convey to humanity in his own expression. The new ruling that abrogates the previous Qur’anic ruling is from Allah alone, merely conveyed to us by the word choice of the Beloved Messenger [peace and blessings be upon him]. [Sarakhsi, Usul al-Sarakhsi]

The only condition for its acceptance by jurists historically after the Prophetic period is that the Sunna is relayed by multiple-chain transmission [tawatur] such that there is no doubt whatsoever that the Prophet [peace and blessings be upon him] made the statement, or that the overwhelming vast majority of jurists accept the narration and act upon it, such that it becomes “well-known” [mash’hur] and therefore akin to such multiple-chain transmission.

An Example

The example cited most in books of legal theory [usul al-fiqh] is that of the verse, “It is prescribed for you, when death approaches any of you, if he leaves any wealth that he make a bequest to parents and next of kin…” [2:180]

The legal ruling derived from the verse is that a bequest to parents and relatives is prescribed and hence mandatory. This ruling is considered abrogated by the following hadith, “There is no bequest for an inheritor.” [Tirmidhi, Ibn Maja, Daraqutni]

Even though the hadith is not related by multiple-chain transmission, it was accepted and used by the vast majority of jurists such that, according to the Hanafis, it is deemed well-known and hence akin to multiple-chain transmission.

[Ibn Malak/Nasafi, Sharh al-Manar; Amidi, Ihkam fi Usul al-Ahkam; Ala’ al-Din Bukhari, Kashf al-Israr ‘an Usul al-Bazdawi]

A Reflection of Allah’s Veneration of the Prophet and the Noble Sunna

The great Hanafi scholar Ibn Amir Hajj states regarding the Hanafi position:

“The opinion that the Sunna can abrogate the Qur’an entails an honoring of the Messenger of Allah [peace and blessings be upon him] and a veneration of his Noble Sunna, in that Allah Most High consigned the elucidation of a legal ruling – that was originally divine revelation – to him [peace and blessings be upon him], so that he may clarify it by his own prophetic expression; and He Most High moreover granted his prophetic expression such a high rank whereby by it, the end point of a legal ruling – that was affirmed by Divine Speech – is established, since by that prophetic expression its abrogation is elucidated; and that He Most High made his prophetic Sunna akin to His own Divine Speech with respect to affirming legal rulings…”

[Taqrir wal-Tahbir/Tahrir, Ibn Amir Hajj/Kamal ibn Humam]

And Allah alone gives success.

wassalam
Faraz A. Khan

Checked & Approved by Faraz Rabbani

১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৪২

নতুন নকিব বলেছেন:



জাজাকুমুল্লাহু তাআ'লা খইরান। লিঙ্ক দেখলাম। চমৎকার। তথ্য সমৃদ্ধ, বিশদ এবং সুন্দর মন্তব্যের জন্য সবিশেস কৃতজ্ঞতা।

১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৫১

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রফেসর ডাঃ মোঃ মতিয়ার রহমান সাহেবের কিছু লেখা আগেও পড়েছি। আপনার লিঙ্কযুক্ত বইটা ভালো। বেশ তথ্য সমৃদ্ধ।

১২ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:০০

নতুন নকিব বলেছেন:



নাসিখ মানসূখ বিষয়ে islamqa থেকে যদি বাংলায় লেখা যুতসই কোনো উত্তর খুঁজে দিতে পারেন তাহলে অনেকের জন্য বেশি উপকৃত হওয়ার সুযোগ থাকবে। ইংরেজিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এমন লোকের সংখ্যা আমার ধারণা, এখনও খুবই সীমিত। আপনি যখন সময় পাবেন তখন দিলেই হবে। কোনো তাড়াহুড়োর কারণ নেই। নিচের লিঙ্কটা দেখতে পারেন-

নাসিখ কাকে বলে? নাসিখ কত প্রকার ও কি কি?

৯| ১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:১৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার লেখার শেষ প্যারাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সকল পাঠকের জন্য। তাই সকলের অন্তত শেষ প্যারাটা পড়া উচিত ও মানা উচিত।

১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৪৫

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, আপনি ধরেছেন। শুকরিয়া। যাওয়ার পথ তো একটাই। রাসূলে মাকবুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ফায়সালাকে পাশ কাটিয়ে আর কোনো পথে কি বিশ্বাসীরা যেতে পারে? যাওয়া উচিত?

১০| ১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:২৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভালো লিখেছেন । হকের পথে অটল থাকি।

১২ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৪৬

নতুন নকিব বলেছেন:



মুবারকবাদ। আপনি সবসময় সত্য পথের পথিক।

সাহসী মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন।

১১| ১২ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:০৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: islamqa এর বাংলা আমি খুজছি। নয়তো অনুবাদ করে দিব ইনশাল্লাহ। আমাকে সময় দেন। একটু ব্যস্ত আছি। ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।

১২ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:১৯

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, ব্যস্ততার মাঝে থেকেও সময় দেয়ায় শুকরিয়া। আপনাকে অনেক ভালো রাখুন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা।

১২| ১২ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:৫৪

এভো বলেছেন: এখানে একটা লিংক শেয়ার করছি একটা আলোচনা মুতা বিবাহ নিয়ে, দলিল ভিত্তিক তর্ক হচ্ছে পক্ষে এবং বিপক্ষে বাংলা ভাষাতে, আমার মনে হয় অনেক গুরুত্তপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে এখানে,
এখানে Click করুন

১৩ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:৫৮

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ।

১৩| ১২ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৩

নতুন বলেছেন: লেখক বলেছেন: প্রিয় ভাই, আপনি বিজ্ঞ মানুষ। আপনার থেকে আমাদের অনেকের অনেক কিছু শেখার রয়েছে। বলতে চাইনি যে, কোনো তাফসীর গ্রন্থের পুরোটাতে সমস্যা। তাফসীরের কিতাবগুলো আপনিও বুঝেন যে, মানব মস্তিষ্কের দ্বারাই কৃত। সুতরাং, একেকজনের দৃষ্টিভঙ্গি এবং মতাদর্শ একেকরকম হওয়ার কারণে কোনো কোনো বিষয়ে সামান্য বৈপরিত্য পরিলক্ষিত হতে পারে। এর ফলে গোটা তাফসীরের কিতাবকেই বাতিল করা যাবে না।
অনেক ভালো থাকবেন।


এটা সাধারন একটা ভুল না যে এতো হালকা করে দেখা চলে।

এখানে একটা জিনিসের বৈধতা দেওয়া হয়েছে। এখন যদি কোরানে না থাকা জিনিস লেখক নিজের মনের মাধুরি মিশিয়ে যোগ করে থাকেন তবে তিনি এই জিনিস আরো করেছেন।

আপনি সম্ভবত দুধের ভেতরে ১ ফোটা নাপাকি মিলিয়ে দেবেন না ।

আমি মনে করি ইবনে কাথীরকে আপনিও বয়কটের ডাক দেবেন।

কোরানে নেই এমন একটা জিনিস ঢুকিয়ে দেওয়া সাধারন অপরাধ না।

এই রকমের সমস্যায় আরো পড়তে হবে কারন এখন সাধারন মানুষ যুক্তি দিয়ে ভাবে এবং তাদের কাছে সব রকমের বই পড়ার সুযোগ আছে।

১৩ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:০৩

নতুন নকিব বলেছেন:



ভাই, সাধারণ আর অসাধারণ বলে কথা নয়। বিষয়গুলো তর্কের নয়, বুঝার। উপরন্তু আমার যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের সেরকম সময়ও নেই। আর আপনার ঝোলায় যে কোনো বিষয়েরই অনেক ভালো ভালো যুক্তি যে থাকে- তা তো জানা কথা। তাই অনুরোধ, পোস্ট মনযোগ দিয়ে আরেকবার দেখে এলে আশা করি, উত্তর পেয়ে যাবেন। আর আপনার কথার প্রেক্ষিতে সাড়ে চুয়াত্তর ভাইয়ের ১৪ নং মন্তব্য দেখতে পারেন।

ধন্যবাদ।

১৪| ১২ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কোরআনের আয়াতের তফসির করার সময় আলেমদের মধ্যে অনেক সময় মত বিরোধ হয়েছে। ইসলামে বহু বিষয় নিয়ে মত বিরোধ আছে। মত বিরোধ আছে বলেই বিভিন্ন মাজহাব তৈরি হয়েছে। মুতাহ বিয়ে যে কোরআনের আয়াতের মাধ্যমে অনুমোদন দেয়া হইনি এটা অধিকাংশ আলেম বলছেন। মুতাহ বিয়ের অনুমোদন দেয়া যে হাদিসের মাধ্যমে হয়েছে এর সপক্ষে অনেক গুলি সহি হাদিস আছে। আবার যে হাদিস গুলির মাধ্যমে মুতাহ বিয়ের অবসান ঘটানো হয়েছে সেগুলিও সহি হাদিস। যদি ধরে নেই যে কোরআনের আয়াত হাদিস দ্বারা বাতিল করা যায় না তাহলে এই হাদিসগুলিকে সহি হাদিস হিসাবে গণ্য করা হতো না। কারণ সে ক্ষেত্রে এগুলি কোরআনের আয়াতের বিপক্ষে চলে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে এই হাদিসগুলিকে বাতিল ধরা হতো। কিন্তু কোনও যুগেই এই আয়াতগুলিকে অগ্রাহ্য করা হয় নাই বরং সব সময় সহি হাদিস হিসাবে গণ্য করা হচ্ছে। কারণ এগুলির সনদ ও সূত্র সহি। এগুলি আলী (রাঃ) সহ আরও কিছু হাদিসের ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য সাহাবী কর্তৃক বর্ণিত। এগুলিকে সহি বলা হচ্ছে কারণ মুতাহ বিয়ের অনুমতি কোরআনের আয়াতের মাধ্যমে হয় নাই। যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নেই যে কোরআনের আয়াতের মাধ্যমে মুতাহ বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে সেক্ষেত্রে আরেকটি ব্যাপার আমাদের খেয়াল করেতে হবে। ইমাম মালেক ও আরও কয়েকজন হানাফি আলেম সহ কিছু আলেম বলেন যে হাদিসের দ্বারাও কোরআনের নির্দেশ রহিত করা যায়। আমি আগের মন্তব্যগুলিতে এর সূত্র দিয়েছি। কাজেই সেক্ষেত্রে হাদিসের মাধ্যমে মুতাহ বিয়ের নিষেধাজ্ঞা কোনও সমস্যা না। সুন্নিদের মধ্যে হকপন্থি কোনও আলেম বলেন না যে মুতাহ বিয়ে এখনও চালু আছে। এগুলি বলে শিয়া, রাফিদি, খারিজি ইত্যাদি বাতিল দল যারা হাজারও বিষয়ে সুন্নিদের সাথে মতবিরোধ করে।

১৩ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:০৪

নতুন নকিব বলেছেন:



শুকরিয়া। জাজাকুমুল্লাহ।

১৫| ১৩ ই জুলাই, ২০২০ রাত ২:৫৯

আকিব ইজাজ বলেছেন: বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পেলাম।
অনেক বড় লেখা, যথেষ্ট ধৈর্য নিয়ে লিখেছেন। আশা করি অনেকেই আপনার লেখা থেকে উপকৃত হবে।

১৩ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:০৮

নতুন নকিব বলেছেন:



শুকরিয়া আন্তরিক এবং প্রেরণাদায়ক মন্তব্যে।

দীর্ঘ পোস্ট লিখতে ধৈর্য্য প্রয়োজন- এটা সত্য, কিন্তু দীর্ঘ পোস্ট পড়তে সম্ভবতঃ আরও বেশি ধৈর্য্য প্রয়োজন। আপনি সেটা করেছেন। এজন্য আনন্দিত।

অনেক ভালো থাকবেন- প্রার্থনা সবসময়।

১৬| ১৩ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৩:১৭

এভো বলেছেন: সাড়ে ৭৪ ভাই, আপনি তো বিষয়টাকে আরো কমপ্লিকেটেড করে দিলেন

মুতাহ বিয়ের অনুমোদন দেয়া যে হাদিসের মাধ্যমে হয়েছে এর সপক্ষে অনেক গুলি সহি হাদিস আছে। আবার যে হাদিস গুলির মাধ্যমে মুতাহ বিয়ের অবসান ঘটানো হয়েছে সেগুলিও সহি হাদিস। যদি ধরে নেই যে কোরআনের আয়াত হাদিস দ্বারা বাতিল করা যায় না তাহলে এই হাদিসগুলিকে সহি হাদিস হিসাবে গণ্য করা হতো না। কারণ সে ক্ষেত্রে এগুলি কোরআনের আয়াতের বিপক্ষে চলে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে এই হাদিসগুলিকে বাতিল ধরা হতো।
---------- মুতা বিবাহের কথা যদি কোরানে না থাকে, তাহোলে নবী জী ( সাঃ ) কি মুতা বিবাহের অনুমুতি দিতে পারেন? কোরানের গাইড লাইনের বাহিরে মুতা বিবাহের অনুমুতি দেওয়া কি কখনো সম্ভব। ধন্যবাদ

১৩ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:১৯

নতুন নকিব বলেছেন:



দলিলসহ বিস্তারিত উত্তরে যাওয়ার সময় এই মুহূর্তে নেই। সাড়ে চুয়াত্তর ভাইকে যেহেতু প্রশ্ন করেছেন, আশা করছি তিনি উত্তর নিয়ে আসবেন।

ভালো থাকবেন।

১৭| ১৩ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ৭:০৪

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: ব্লগার হিসাবে আপনি মার্জিতভাবে বিরুদ্ধমত ও কমেন্টের যেভাবে উত্তর দেন তা সত্যি প্রশংসনীয়।

আমার কাছে মনে হয় মুতা বিবাহ, বহু বিবাহ, এসব বিষয় থেকেও বর্তমানে অনেক বেশি ভাবা উচিত অসৎ উপার্জন, প্রতারণা, অন্যের হক মারা, খুন, জুলুম এসব থেকে কিভাবে মুসলমানদের বিরত রাখা যায় তা নিয়ে। বর্তমানে অধিকাংশ রাষ্ট্র ও সমাজেই পতিতাগমন, বহুবিবাহ,স্ত্রীকে লুকিয়ে বহু নারীগমনকে চরম নিন্দনীয় ও আইনের চোখে দেখা হয়। সুতরাং অদূর ভবিষ্যতে প্রতিটি ধর্ম, রাষ্ট্র ও সমাজে এই সকল অনৈতিক কর্মকান্ড জায়েজ বলে আর স্বীকৃত হবার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু দুর্নীতি, প্রতারণা, হত্যা ও জুলুমের মতো চরম ঘৃণ্য কর্মকান্ড সময়ের সাথে সাথে আরো নিন্দনীয় ও গর্হিত অপরাধ বলেই সমাজে গণ্য হবে

দুঃখজনক হলেও অপ্রিয় সত্য হলো মুসলিম সমাজের এক উল্লেখযোগ্য অংশ এই সকল চরম অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত। কোরোনার মতো এই বিপর্যয়ের মধ্যেও আমাদের দেশে এক শ্রেণীর আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক টাউটরা জনগণের জীবন নিয়ে যেভাবে ছিনিমিনি খেলছে তাতে এদের সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস ও ভীতি কোনোটাই আছে বলে মনে হয় না। আমাদের ধর্মীয় নেতারাও এই সকল বিষয় থেকে সাধারণ মানুষকে বিরত রাখার জন্য তেমন কোনো উচ্চবাচ্য করেন না যা আমাকে খুব বিস্মিত করে।

১৩ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:৩৫

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার সুচিন্তিত মন্তব্য মনযোগের সাথে পড়লাম। মন্তব্যে দেশের বর্তমান অবস্থার কঠিন বাস্তবতা উঠে এসেছে। সত্যি নীতি-নৈতিকতাহীন বিভ্রান্ত এক জাতিতে পরিণত হচ্ছি দিনকে দিন আমরা। আমাদের ভবিষ্যত যে কি, ভাবতেও কষ্ট লাগে। করোনা টেস্টের ভূয়া রিপোর্ট দিয়ে কিছু লোক কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে নিয়ে গেল, তাতেও দুঃখ ছিল না, কিন্তু এরা তো টাকার সাথে এই জাতির কপালে নীতিহীনতার তকমাটাও সেটে দিয়ে গেল। পুরো বিশ্ব আজ জেনে গেছে যে, বাংলাদেশের মানুষেরা নীতিহীন। কোথায় যাবেন? আমরা করোনাকে পরোয়া করি না। স্রষ্টাকে ভয় পাই না। আমাদের মৃত্যুভয় নেই। আমাদের ভাগ্য বদলাবে কিভাবে?

অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা পোস্টে উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্য রেখে যাওয়ায়।

১৮| ১৩ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:১১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: @ এভো -
কুরআন ও সুন্নাহ ইসলামী বিধানের উৎস হওয়ার ক্ষেত্রে একই মর্যাদার অধিকারী। আলেমরা নীচের আয়াতের সূত্রে একথা বলেন। আরও অনেক দলিল আছে।

“তিনি [রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] নিজের ইচ্ছা মাফিক কথা বলেন না। এটি কেবল একটি অনুপ্রেরণা যা অনুপ্রাণিত হয় " [একটি-নাজম 53: 3-4]।

তিরমিজি- ২৬৬৪। মিকদাম ইবনু মাদীকারিব (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! খুব শীঘ্রই এমন ব্যক্তির আগমন ঘটবে যে, সে তার সুসজ্জিত গদিতে হেলান দিয়ে বসে থাকবে, তখন তার নিকট আমার কোন হাদীস পৌছলে সে বলবে, আমাদের ও তোমাদের সামনে তো আল্লাহ তা’আলার কিতাবই আছে। আমরা তাতে যা হালাল পাব সেগুলো হালাল বলে মেনে নিব এবং যেগুলো হারাম পাব সেগুলো হারাম বলে মনে নিব। সাবধান আল্লাহর রসূল যা হারাম ঘোষণা করেছেন তা আল্লাহ তা'আলা কর্তৃক হারামকৃত বস্তুর মতোই হারাম।

কথা হোল ধর্মীয় বিধি বিধানের ব্যাপারে রসূল (সাঃ) যা বলেছেন তা কোনটাই মনগড়া না। উনি আল্লাহ্‌র নির্দেশ অনুযায়ী এগুলি বলতেন। আল্লাহর নির্দেশের বাইরে তিনি কোনও কথা বলতেন না। কোরআন নাজিল ছাড়াও জিব্রাইল ফেরেশতা তার কাছে আসতেন বিভিন্ন ব্যাপারে। জিব্রাইল ফেরেশতা সশরীরে নবী (সাঃ) ও সাহাবীদের মাঝে এসেছেন ছদ্ধবেশে এমন ঘটনাও আছে। কাজেই রসুলের(সাঃ) এর সাথে আল্লাহ্‌তালার যোগাযোগ অনেক বেশী ছিল (কোরআন নাজিল ছাড়াও)। দাড়ি রাখা যে ফরজ/ওয়াজিব বলা হয় এটা কোরআনের মাধ্যমে হয় নাই। এটা রসুলের (সাঃ) নির্দেশ। রসূল এই নির্দেশ মনগড়াভাবে দেন নাই। এরকম আরও আছে। মনে রাখতে হবে কোরআন ও হাদিস এই দুটিই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং একে অন্যের পরিপূরক।

১৩ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:৫৮

নতুন নকিব বলেছেন:



জাজাকুমুল্লাহু খাইর।

১৯| ১৩ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৪০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ইমাম আবু হানিফার মত আলেমও বলে গেছেন যার সারাংশ হোল যে আমার কথাই চূড়ান্ত না তোমরা যদি আমার কথার বিপরীত কোনও সহি হাদিস পাও তবে আমার কথার চেয়ে ঐ হাদিসকে প্রাধান্য দেবে। সম্ভবতও মাজহাবের বাকি ৩ ইমামের আরও দুইজন/ একজন এধরণের কথা বলেছেন।

এই কথার অর্থ হোল আলেম মানেই নির্ভুল এমন না। এগুলি বিচারকের রায়ের মত। উনারা কোরআন, হাদিস অনুসারে যেটা ভালো মনে করেছেন সেটা বলেছেন। আরেকজন যুক্তি দিয়ে এটা সংশোধন করার অধিকার রাখেন। আর একজন আলেম হাজার হাজার পাতার মধ্যে কোথাও সিদ্ধান্ত প্রদানে ভুল করলে সেটাকে খারাপভাবে নেয়া যাবে না। ভুল ত্রুতির উরধে ওনারা না। তবে যুক্তি দিয়ে সম্মানের সাথে ওনাদের ভুল নিয়ে আলোচনা করা যাবে।

একটা হাদিসের আলোকে একটা ঘটনা বলি। এটার উদ্দেশ্য হোল রসুলের (সাঃ) এর একই আদেশ দুই দল দুইভাবে পালন করেছেন এবং রসূল উভয় দলের কাজকেই সমর্থন করেছেন। হাদিসের ঘটনাটা অনেকটা এরকম ( আমার স্মরণ শক্তি থেকে বলছি তাই সামান্য এদিক ওদিক হতে পারে। তবে সারাংশ একই)। একবার একদল সাহাবিকে রসূল (সাঃ) এক জায়গায় যাওয়ার জন্য পাঠালেন এবং বললেন যে তোমরা অমুক জায়গায় যেয়ে আসরের নামাজ পড়বে। কিন্তু দেখা গেল ঐ জায়গায় যাওয়ার আগেই আসরের ওয়াক্ত প্রায় শেষ। তখন ওনারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করলেন। নামাজ কি পড়ে নিবেন নাকি রসূল (সাঃ) এর নির্দেশ মত ঐ জায়গায় পৌঁছে নামাজ পড়বেন (সে ক্ষেত্রে ওয়াক্ত থাকবে না)। এক দল নামাজ পড়ে নিলেন এই যুক্তিতে যে নামাজের ওয়াক্তের মধ্যে নামাজ পড়া ফরজ। আরেক দল ঐ জায়গায় গিয়ে কাজা নামাজ পড়লেন। তাদের যুক্তি রসূল (সাঃ) এর হুকুম পালন করতে হবে। ঐ দল ফিরে এসে রসূল (সাঃ) কে ঘটনাটা বললেন। তখন রসূল (সা:) উভয় দলের কাজকেই সমর্থন করলেন। কিছু কিছু সিদ্ধান্ত দুইজনের দুই রকম হলেও কাউকেই দোষ দেয়া যাবে না। আসলে আলেমদের কাজ অনেকটা বিচারকের রায় দেয়ার মত। উচ্চ আদালতের দুই বিচারক দুই রকম রায় দিচ্ছেন একই মামলায়। তার মানে বিচারকদের একজন ভুল আরেকজন সঠিক এরকম সবক্ষেত্রে নাও হতে পারে। কারণ এগুলি judgmental issue. কাজেই কোনও বড় মাপের আলেম বা তফসিরকারককে ছোট করা যাবে না।

১৩ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:০০

নতুন নকিব বলেছেন:



এভো ভাইয়ের সাথে আপনার চলমান আলোচনায় অনেকের অনেক প্রশ্নের উত্তর বেরিয়ে আসবে, আশা করি। মোবারকবাদ।

২০| ১৩ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১৯

এভো বলেছেন: সাড়ে ৭৪ ভাই -- কোরানের আয়াতে কাকে এবং কার সাথে বিয়ে করা যাবে এবং বৈধ যৌনাচার করা যাবে , তার পরিপূর্ণ গাইড লাইন দেওয়া আছে এই গাইড লাইনে মুতা বিবাহের অনুমতি নেই সেটা এক পক্ষ দাবি করছে এবং অপর পক্ষে দাবি মূতা বিবাহের অনুমুতি আছে ।
আমি ধরে নিলাম মূতা বিবাহের কোন অনুমুতি কোরানে নেই , তাহোলে নবী জী সা: কি ভাবে এই বিয়ের অনুমুতি দেন ।
এবার ধরে নিলাম মূতা বিবাহের অনুমুতি আছে , তাহোলে নবী জী সা: অনুমুতি প্রদান কোরান লংঘন নহে ।
আমার এখন কোনটা কে গ্রহন কোরবো ।

আপনি ভাই আরেকটি সমস্যা তৈরী করে ফেলেছেন ---
ইমাম মালেক ও আরও কয়েকজন হানাফি আলেম সহ কিছু আলেম বলেন যে হাদিসের দ্বারাও কোরআনের নির্দেশ রহিত করা যায়। আমি আগের মন্তব্যগুলিতে এর সূত্র দিয়ে

এখানে এক পক্ষ ইবনে কাথিরে তফসিরকে প্রত্যাখান করছে , একই ভাবে অন্য পক্ষ আপনার উপরের স্ট্যাটমেন্টটাকে প্রত্যাখান করবে । তারা কখনো মানবে না যে কোরানে আয়াতকে হাদিস দিয়ে রহিত করা যায় ।
তাহোলে সমাধানটা কোথায় , ধন্যবাদ

১৩ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:০২

নতুন নকিব বলেছেন:



আমি আপনার প্রশ্নের উত্তরে যাচ্ছি না। যেহেতু ইতোমধ্যেই সাড়ে চুয়াত্তর ভাই নিচের মন্তব্যে উত্তর নিয়ে এসেছেন।

ভালো থাকুন।

২১| ১৩ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:২৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: @ এভো

আমি আগের মন্তব্যে লিখেছি যে কোরআন ও সুন্নাহ ইসলামি বিধানের ক্ষেত্রে একই মর্যাদার অধিকারি। সব কিছুর অনুমতি/ নিষেধ/ হুকুম কোরআনে থাকতে হবে এমন না। দাড়ির উদাহরণ দিয়েছিলাম যে এটাকে হাদিসের মাধ্যমে ফরজ/ ওয়াজিব করা হয়েছে। নামাজের অনেক নিয়ম কানুন ফরজ করা হয়েছে। কিন্তু এগুলি কোরআনে পাবেন না। রসুলের (সাঃ) কথাকে ছোট করার কোনও সুযোগ নাই। উনি আল্লাহর পক্ষেই কথাই বলেছেন। আল্লাহর কথা কিছু সরাসরি কোরআনে এসেছে। কিছু হাদিস কুদসিতে সরাসরি এসেছে। তাই কোনও কাজে হুকুম দেয়ার এখতিয়ার রসূল (সাঃ) রাখেন। এরকম আরও অনেক আদেশ উনি দিয়েছেন। কারণ উনার সাথে ফিরিশতার মাধ্যমে আল্লাহর যোগাযোগ ছিল। কোরআনের কথা ওনার মুখ দিয়েই আমরা জেনেছি। আপনি রসুলের (সাঃ) কথাকে গুরুত্ব দিতে চাচ্ছেন না। কারণ আমি জানি না। আরও অনেক ফরজ আছে যেটার উল্লেখ কোরআনে পাবেন না। কোরআন ও হাদিস একে অন্যের পরিপূরক।
'এবার ধরে নিলাম মূতা বিবাহের অনুমুতি আছে , তাহোলে নবী জী সা: অনুমুতি প্রদান কোরান লংঘন নহে ।
আমার এখন কোনটা কে গ্রহন কোরবো ।' আপনার এই কথাটা আমার কাছে পরিষ্কার না। আবার বুঝিয়ে বলেন।

আলেমদের মধ্যে আরও অনেক বিষয়ে মতবিরোধ আছে। একটা উদাহরণ দেই। মনে করেন আপনার একজন আত্মীয় গুরুতর কোনও রোগে আক্রান্ত। তিন জন বড় মাপের ডাক্তার দেখালেন। তারা রোগীর রোগ ও করনীয় সম্পর্কে তিন রকমের মত দিলেন। অথচ তিন জনের কথাতেই যুক্তি আছে। সেক্ষেত্রে আপনি কি করবেন। আপনার উচিত হবে যেটা আপনার বিবেকে যাকে বেশী যৌক্তিক মনে হয় সেটা মানা। ভালো ও বড় মাপের আলেমদের এই মতবিরোধ বিশ্বাসগত নয়। এই মতবিরোধের কারণে আমাদের ইমান ও পরহেজগারি ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। বেশীর ভাগ মতবিরোধ judgmental প্রকৃতির।

১৩ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:০৪

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, শুকরিয়া। ব্যস্ত জীবনে কাজের ফাঁকে সময় বের করে যৌক্তিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়ায় কৃতজ্ঞতা। সকলের কাছে পরিষ্কার হোক বিষয়গুলো।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা আপনার দ্বীনের জন্য কৃত সকল প্রচেষ্টা কবুল করুন।

২২| ১৩ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৫৯

এভো বলেছেন: সাড়ে ৭৪ ভাই -- আপনার অনেক কথার সাথে একমত হতে পারলাম না ভাই --
আমি আগের মন্তব্যে লিখেছি যে কোরআন ও সুন্নাহ ইসলামি বিধানের ক্ষেত্রে একই মর্যাদার অধিকারি।

এটা সম্পূর্ণ ভুল স্ট্যাটমেন্ট ভাই , মর্যাদার ক্ষেত্রে ১ নম্বরে কোরানে ২ নম্বরে সহি হাদিস । রসুল সা: যে হাদিস লিখতে মানা করেছেন এর পক্ষে সহি হাদিস আছে ।

১৩ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:১১

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, আপনি ঠিক ধরেছেন। আমার কাছেও বিষয়টিতে খটকা লেগেছে। আসলে সঠিক শব্দের সঠিক প্রয়োগের অভাবে এমনটি হয়েছে, যা কিছুটা পরে এসে সাড়ে চুয়াত্তর ভাইয়ের ২৩ নং মন্তব্য থেকে জানতে পারি যে, তিনি মূলতঃ আগের মন্তব্যে প্রদত্ত কথাগুলো islamqa সাইট থেকে নেয়া ইংলিশের অনুবাদ করে দিয়েছিলেন। অনুবাদের ক্ষেত্রে যথাযথ সতর্কতা গ্রহণ করা গেলে এই ধরণের সমস্যা এড়ানো সম্ভব হতে পারে।

শুভকামনা।

২৩| ১৩ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:৫৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: @ এভো আমি islamqa সাইট থেকে দিয়েছি, এটা আমার কথা না; এটা অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য একটি সাইট ; দেখেন;

Question
Does the hadeeth have the authority to abrogate or make specific the general meaning of a Qur’anic text?
Answer
Praise be to Allah.
Firstly:

The Qur’an and Sunnah are of the same status with regard to being sources of Islamic legislation. Allah, may He be glorified and exalted, says (interpretation of the meaning):

“Nor does he [the Prophet (blessings and peace of Allah be upon him)] speak of (his own) desire. It is only an Inspiration that is inspired”

[an-Najm 53:3-4].

এখানে মর্যাদা কথাটা আমার বলা ভুল হয়েছে অনুবাদের কারণে। প্রকৃত অর্থ হবে 'কোরআন ও সুন্নাহ ইসলামি বিধানের ক্ষেত্রে একই status (এটার ভালো বাংলা পাচ্ছি না) এর অধিকারি। আপনাকে বুঝতে হবে রসুলের হুকুমই আল্লাহর হুকুম। রসূল কোনও মনগড়া কথা বলেননি। এটা আমি বারবার বলছি। ওনার হুকুমে অনেক কাজ ফরজ হয়েছে, অনেক কিছু নিষেধ হয়েছে, কোরআনের আয়াতকে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়েছে ( আয়াতের অর্থ সার্বজনীন হলে)। হাদিস লেখা না লেখা এটা এখানে অপ্রাসঙ্গিক। কোরআন আর হাদিস যেন মিশে না যায়। সে জন্য রসূল (সাঃ) এরকম বলেছেন।
গাধার মাংস খাওয়া নিয়ে কোরআন ও হাদিসের বর্ণনা গুলি দেখেন;

(হে নবী!) আপনি বলে দিন: যা কিছু বিধান ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে, তার মধ্যে আমি কোন হারাম বা নিষিদ্ধ খাদ্য পাইনি, কিন্তু মৃত পশু বা জন্তু অথবা শরীর থেকে বেরিয়ে পড়া রক্ত অথবা শুকরের মাংস যা অপবিত্র বা অবৈধ; এ ছাড়াও যবেহ করা জন্তু যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়। অতপর যে নিরুপায় হয়ে (বা ক্ষুধায় কাতর হয়ে) নাফরমানি করার ও উপভোগের উদ্দেশ্য ছাড়াই এ ধরনের খাবার খেতে বাধ্য হয় এবং সীমালঙ্ঘন করে না,(তার জন্য তা পাপ হবে না) নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তা ক্ষমাশীল দয়ালু।” (৬:১৪৫)
এই আয়াতটি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে পোষা গাধার গোশত খাওয়া জায়েয, কারণ এতে বোঝা যায় যে কেবল এখানে বর্ণিত জিনিসগুলি নিষিদ্ধ বাকি সব হালাল।
তবে তার পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের দিনে সহীহ হাদীস অনুসারে বর্ণনা করেছেন যে, গাধার মাংস জায়েয নয়। তবে এই ছহীহ হাদীস এবং এর দুই বছর পূর্বে অবতীর্ণ এ আয়াতের মধ্যে কোন বিরোধ নেই, কারণ হাদীছটি একটি নতুন নিষেধাজ্ঞার কথা বলছে, এবং আয়াতটিতে এমন কিছু নেই যাতে বোঝা যায় যে ভবিষ্যতে কোনও নতুন নিয়ম প্রবর্তন করা হবে না।

যে আলেমরা বলেন যে হাদিস দ্বারাও কোরআনের বিধান রহিত করা যায় তারা উপরোক্ত উদ্ধৃতি দেন কারণ এখানে কোরআনে অনুমতি দেয়া থাকলেও পরে তা রসুলের হাদিসের মাধ্যমে নিষেধ করা হয়েছে।
আসলে আমাদের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল যে কোরআনের আয়াত দ্বারা মুতাহ বিয়ের অনুমতি দেয়া হয় নি। অধিকাংশ আলেম তাই মনে করেন। কিন্তু সকল আলেম এ ব্যাপারে একমত যে মুতাহ বিয়ে বাতিল হয়ে গেছে।

১৩ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:১৬

নতুন নকিব বলেছেন:



আসলে আমাদের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল যে কোরআনের আয়াত দ্বারা মুতাহ বিয়ের অনুমতি দেয়া হয় নি। অধিকাংশ আলেম তাই মনে করেন। কিন্তু সকল আলেম এ ব্যাপারে একমত যে মুতাহ বিয়ে বাতিল হয়ে গেছে।

-শুকরিয়া। আপনার মন্তব্যের উপরোক্ত শেষ কথাটাই পোস্টেরও মূলকথা। এই কথাতেই ফিরে আসতে হবে আমাদের। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা সত্য উপলব্ধি করার এবং তা মেনে নেয়ার তাওফিক দান করুন আমাদের। তিনিই অনেক অনেক কল্যান দান করুন এবং ভালো রাখুন আপনাকে।

২৪| ১৩ ই জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমার ১৯ নং মন্তব্যের এক জায়গাতে ভুলবশত Emoticon চলে এসেছে। এজন্য দুঃখিত।

২০ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:১৩

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, বুঝতে পেরেছি। এই সমস্যাটা মাঝে মাঝেই হয়। এটার একটা বিহীত যদি কর্তৃপক্ষ সদয় হয়ে করে দিতেন তাহলে খুবই ভালো হতো।

২৫| ১৩ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৪১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: রসুল (সাঃ) এর কথা ও কাজকে অনুসরণের ব্যাপারে আল্লাহ বলেছে;

"কেউ রাসূলের অনুসরণ করলে সে তো আল্লাহরই অনুসরণ করল। আর যারা আপনার অর্থাৎ রাসূলের অনুগত্য করল না, তারা জেনে রাখুক আমরা আপনাকে তাদের প্রহরী করিনি।" ( সুরা নিসা : ৮০)

২০ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:১৫

নতুন নকিব বলেছেন:



শুকরিয়া। সঠিক বলেছেন।

২৬| ১৩ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৪৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: রসূলের আনুগত্যের ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন;

"হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর, যাতে আল্লাহর করুণা পেতে পার।" ( সুরা আল ইমরান:১৩২)

২০ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:১৭

নতুন নকিব বলেছেন:



বিষয়গুলো তারা যদি বুঝতে চেষ্টা করতেন তাহলেই হতো। সেটাই চাচ্ছেন না। অনুধাবন করে শুধু শুধু একতরফা বিরোধিতার মানসিকতা।

২৭| ১৩ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:২৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি এমন কোন কাজ করবে যা আমার প্রদর্শিত পথের উপর নয়, তা তার উপরই ফিরিয়ে দেয়া হবে,গ্রহণযোগ্য হবে না।” [বুখারীঃ ২৬৯৭, মুসলিমঃ ১৭১৮]

৬৩. তোমরা রাসূলের আহ্বানকে তোমাদের একে অপরের আহবানের মত গণ্য করো না; তোমাদের মধ্যে যারা একে অপরকে আড়াল করে অলক্ষ্যে সরে পড়ে আল্লাহ্‌ তো তাদেরকে জানেন।(১) কাজেই যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদের উপর আপতিত হবে অথবা আপতিত হবে তাদের উপর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।( সুরা নুর- আয়াত ৬৩)

২০ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



পাশাপাশি আপনার কয়েকটি মন্তব্যে উল্লেখিত আয়াত এবং হাদিসগুলো ভালোভাবে উপলব্ধিতে আনা প্রয়োজন। এটা করা সম্ভব হলে অনেক প্রশ্নের উত্তর তারা পেয়ে যাবেন। ইসলাম আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার পক্ষ থেকে বিশ্ব মানবতার কল্যানে শাশ্বত জীবন বিধান। ইসলামকে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠার মাধ্যম হলেন আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। ইসলামী শরিয়াতের প্রবর্তক আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে ইসলামের কোনো কোনো বিধান চালু করার ক্ষমতা আল্লাহ পাক তাকে দান করেছিলেন। তা না হলে তিনি বলতেন না যে, তিনি অর্থাৎ আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তারাবিহ নামাজ সাহাবিদের সাথে নিয়ে জামাআতে আদায় করা কন্টিনিউ রাখলে তা উম্মতের উপর ফরজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই হাদিস থেকে সহজেই বুঝা যায়, আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই এখতিয়ার ছিল যে, তিনি ইচ্ছে করলে কোনো কাজকে উম্মতের জন্য ফরজ বা আবশ্যক করে দিতে পারতেন।

২৮| ১৪ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৩:৪১

এভো বলেছেন: সাড়ে ৭৪ ভাই, জানলাম অনেক কিছু, এবার নীচের আয়াত সম্পর্কে কিছু বলবেন কি ,, আপনি আগের পরের আয়াত গুলো পড়ে নিয়ে বলুন, ধন্যবাদ
সুরা আত তোওকির আয়াত ১৯ (৮১--১৯) নিশ্চয় কোরআন সম্মানিত রসূলের আনীত বাণী,
Verily this is the word of a most honourable Messenger

২০ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:৫১

নতুন নকিব বলেছেন:



মহাগ্রন্থ আল কুরআনের বিশেষ মর্যাদা স্বীকৃত। হাদিসের মর্যাদা কুরআনের সমান নয় কিন্তু হাদিসও ওহিরই একটি প্রকার। কারণ, আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের মত করে কিছু বলতেন না। তিনি যা বলতেন তা ওহীর আলোকেই বলতেন। কুরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে-

وَمَا يَنطِقُ عَنِ الْهَوَى

এবং প্রবৃত্তির তাড়নায় কথা বলেন না।

إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَى

কোরআন ওহী, যা প্রত্যাদেশ হয়। -সূরা আন নাজম, আয়াত- ৩ এবং ৪

এজন্য বিজ্ঞ ইসলামী পন্ডিতগণ ওহীকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। ওহীয়ে মাতলূ এবং ওহীয়ে গাইরে মাতলূ। হাদিস ওহীর অংশ বলেই ক্ষেত্রবিশেষে হাদিস কখনও কখনও কুরআনের আয়াতকে রহিত করতে সক্ষম। বিষয়টা ক্লিয়ার করার জন্য নাসিখ মানসূখ নিয়ে ইনশাআল্লাহ পরবর্তীতে পোস্ট দিব।

২৯| ১৪ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:১৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: @ এভো
আসলে এই পোস্টটা দিয়েছেন নতুন নকিব ভাই অন্য বিষয়ের উপরে। তাই আপনি যা জানতে চাচ্ছেন সে ব্যাপারে বলাটা ব্লগের নিয়মের বাইরে হতে পারে। তবুও সংক্ষেপে বলার চেষ্টা করছি। তবে এ নিয়ে আর আলাপ এই পোস্টে করা ঠিক হবে না।

আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে এখানে মনে হয় বলা হয়েছে যে কোরআনের আয়াতগুলি রসূল (সাঃ) এর নিজের বলা কথা । কিন্তু আসলে তা এখানে বুঝানো হয়নি। কাফেররা বলত যে কোরআন রসূল (সাঃ) নিজে লেখেন। তিনি একজন কবি, যাদুকর, পাগল ইত্যাদি। রসূল যদি সত্যিই নিজে কোরআন লিখতেন তাহলে ওনার বইয়ে এরকম বিভ্রান্তিকর (কাফেরদের দৃষ্টিতে) কথা কি উনি লিখতেন। তাহলে তো ঐ সময়ই কাফেররা এটা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করত। আল্লাহ্ অন্য আয়াতে বলেছেন;

‘তিনি সত্য (দীন) সহকারে তোমার উপর (এই) কিতাব নাজিল করেছেন, যা তোমার আগে নাজিল করা যাবতীয় কেতাবের সত্যতা স্বীকার করে। তিনি তাওরাত ও ইঞ্জিলও নাজিল করেছেন।‘ (সুরা আল- ইমরান- আয়াত নং ৩)

আসমানি কিতাবের ব্যাপারে আরবদের জ্ঞান ছিল। আসমানি কিতাব যে নবীর মাধ্যমে আল্লাহর তরফ থেকে আসে তা তারা জানত। কিন্তু সমস্যা হোল কাফেররা রসূল (সাঃ) কে নবী মানত না।

তখনকার আরবরা রসূল (সাঃ) কে একজন সাধারণ মানুষ হিসাবে মনে করত। তাকে (সাঃ) আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মাদ(সাঃ) বলে মনে করত যাকে তারা চোখের সামনে বড় হতে দেখেছে। সুরা তাকবির এর ১৯ নং আয়াতে আল্লাহ্ বলতে চেয়েছেন যে তিনি শুধু আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মাদ (সাঃ) ই নন বরং তিনি আল্লাহর Messenger । রসূল (সাঃ) আল্লাহর messenger ছিলেন এটা আমরা সবাই জানি। ওনার মুখ দিয়েই যেহেতু বলা হত সেই জন্য আয়াতে এভাবে বলা হয়েছে। কাজেই আয়াতের অর্থ ভিন্নভাবে নেয়ার কোনও কারণ নেই।

২০ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:৫৩

নতুন নকিব বলেছেন:



জাজাকুমুল্লাহ।

৩০| ১৪ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:৩৫

আরোগ্য বলেছেন: ধন্যবাদ নকীব ভাই , রমজান মাস হতেই এ বিষয়টা নিয়ে আমি ভাবছি। অনেক উপকৃত হলাম। পোস্ট প্রিয়তে।

২০ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:৫৪

নতুন নকিব বলেছেন:



অশেষ শুকরিয়া।

৩১| ১৯ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ নকীব ভায়া

দু:খিত।
আসলেই আপনার উৎসর্গটা চোখে পড়েনি। সরি এগেইন।
আর বিষয়টা এতো কম্প্লিকেটেড এ নিয়ে মন্তব্য করতে স্টাডি করে নিতে হবে ।
তাই এক নজর চোখ বুলালেও অফিস এবং কাজে সময় করতে পারিনি।

আসবো ইনশাল্লাহ।

২০ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:৫৫

নতুন নকিব বলেছেন:



অবশেষে আপনার শুভাগমনে কৃতজ্ঞতা। পাঠের পরে সুচিন্তিত মন্তব্য নিয়ে আবার আসবেন সেই প্রত্যাশায়...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.