নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
অন্তহীন মহাবিস্ময়ের মহাকাশ; চিন্তাশীলদের ভাবনার খোরাকঃ
মহাগ্রন্থ কুরআনুল হাকিমের একটি আয়াত দিয়ে শুরু করছি। কুরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে-
.إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَاخْتِلاَفِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لآيَاتٍ لِّأُوْلِي الألْبَابِ
অর্থাৎ, নিশ্চয় আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে বোধ সম্পন্ন লোকদের জন্যে। -সূরাহ আলে ইমরান, আয়াত ১৯০
হ্যা, ঠিক। মহাবিশ্বের সৃষ্টিরহস্য উদঘাটন, অনুধাবন এবং উম্মোচনে জ্ঞানীদের জন্য রয়েছে চিন্তার খোরাক। মহাবিশ্ব কত বড়? এর কোনো পরিমাপ কি আজ অবদি পাওয়া গেছে?
কুরআনে হাকিমের অনেক আয়াতের ভেতরে একটি আয়াত হাদিসের ভান্ডারে থেকে একটিমাত্র হাদিস আলোচনা করলে মহান আল্লাহ তাআ'লার অপরিমেয় ক্ষমতা, তাঁর সৃষ্টির বিশালতা, তাঁর অসীম, অন্তহীন এবং অভাবনীয় সৃষ্টি কৌশল অনুধাবন সহজ হবে হয়তো।
জান্নাতের প্রশস্ততা কেমন হবে? আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেছেন জান্নাতের প্রশস্ততা হবে আসমান-যমীনের সমান। কুরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে-
﴿ ۞وَسَارِعُوٓاْ إِلَىٰ مَغۡفِرَةٖ مِّن رَّبِّكُمۡ وَجَنَّةٍ عَرۡضُهَا ٱلسَّمَٰوَٰتُ وَٱلۡأَرۡضُ أُعِدَّتۡ لِلۡمُتَّقِينَ ١٣٣ ﴾ [ال عمران: ١٣٣]
'তোমরা তোমাদের প্রভুর ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে দ্রুত ধাবিত হও, যার প্রশস্ততা হবে আসমান-যমীনের সমান; যা মুত্তাকীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।' -সূরা আলে-ইমরান: আয়াত- ১৩৩
আর হাদিসে নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, জাহান্নাম থেকে সর্বশেষ যে ব্যক্তি মুক্তি পাবে, তাকে আল্লাহ তায়ালা এরকম দশটা দুনিয়ার সমান একটা জান্নাত দান করবেন; সুবহানাল্লাহ। বুঝার সুবিধার্থে আরবি ইবারতসহ হাদিসটির পূর্ণ পাঠ উদ্ধৃত করছি-
মুগীরা ইবন শো‘বা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
« سَأَلَ مُوسَى رَبَّهُ مَا أَدْنَى أَهْلِ الْجَنَّةِ مَنْزِلَةً قَالَ هُوَ رَجُلٌ يَجِىءُ بَعْدَ مَا أُدْخِلَ أَهْلُ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ فَيُقَالُ لَهُ ادْخُلِ الْجَنَّةَ. فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ كَيْفَ وَقَدْ نَزَلَ النَّاسُ مَنَازِلَهُمْ وَأَخَذُوا أَخَذَاتِهِمْ فَيُقَالُ لَهُ أَتَرْضَى أَنْ يَكُونَ لَكَ مِثْلُ مُلْكِ مَلِكٍ مِنْ مُلُوكِ الدُّنْيَا فَيَقُولُ رَضِيتُ رَبِّ. فَيَقُولُ لَكَ ذَلِكَ وَمِثْلُهُ وَمِثْلُهُ وَمِثْلُهُ وَمِثْلُهُ. فَقَالَ فِى الْخَامِسَةِ رَضِيتُ رَبِّ. فَيَقُولُ هَذَا لَكَ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ وَلَكَ مَا اشْتَهَتْ نَفْسُكَ وَلَذَّتْ عَيْنُكَ . فَيَقُولُ رَضِيتُ رَبِّ. قَالَ رَبِّ فَأَعْلاَهُمْ مَنْزِلَةً قَالَ أُولَئِكَ الَّذِينَ أَرَدْتُ غَرَسْتُ كَرَامَتَهُمْ بِيَدِى وَخَتَمْتُ عَلَيْهَا فَلَمْ تَرَ عَيْنٌ وَلَمْ تَسْمَعْ أُذُنٌ وَلَمْ يَخْطُرْ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ » . (رواه مسلم) .
'একবার মূসা আলাইহিস সালাম তাঁর প্রতিপালককে জিজ্ঞেস করেছিলেন, জান্নাতে সবচেয়ে নিম্নস্তরের লোকটি কে হবে? আল্লাহ তাআ'লা বললেন: সে হল এমন এক ব্যক্তি, যে জান্নাতবাসীদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর পরে আসবে। তাকে বলা হবে, জান্নাতে প্রবেশ কর। সে বলবে: হে প্রতিপালক! তা কিরূপে হবে? জান্নাতীগণ তো নিজ নিজ আবাসের অধিকারী হয়ে গেছেন। তারা তাদের প্রাপ্য বুঝে নিয়েছেন। তাকে বলা হবে: পৃথিবীর কোনো সম্রাটের সাম্রাজ্যের সমপরিমাণ সম্পদ নিয়ে কি তুমি সন্তুষ্ট হবে? সে বলবে: হে প্রভু! আমি এতে খুশি। আল্লাহ তাআ'লা বলবেন: তোমাকে উক্ত পরিমাণ সম্পদ দেয়া হল, সাথে দেয়া হল আরও সমপরিমাণ, আরও সমপরিমাণ, আরও সমপরিমাণ, আরও সমপরিমাণ, আরও সমপরিমাণ; পঞ্চমবারে সে বলে উঠবে, আমি পরিতৃপ্ত, হে আমার রব! আল্লাহ তাআ'লা বলবেন: আরও দশগুণ দেয়া হল। এ সবই তোমার জন্য। তাছাড়া তোমার জন্য রয়েছে এমন জিনিস, যার দ্বারা মন তৃপ্ত হয়, চোখ জুড়ায়। লোকটি বলবে: হে আমার প্রভু! আমি পরিতৃপ্ত। মূসা আলাইহিস সালাম বললেন: হে আমার রব! তাঁদের মধ্যে সর্বোচ্চ কে? আল্লাহ তা‘আলা বলবেন: এরা তারাই, যাদের মর্যাদা আমি নিজ হাতে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছি এবং তার উপর মোহর করে দিয়েছি; এমন জিনিস তাদের জন্য রেখেছি, যা কোন চক্ষু কখনও দেখেনি, কোন কান কখনও শুনেনি এবং কারও অন্তরে কখনও কল্পনারও উদয় হয় নি।' -মুসলিম, অধ্যায়: ঈমান ( كتاب الإيمان ), পরিচ্ছেদ: জান্নাতের সবচেয়ে নিম্নস্তরের জান্নাতবাসী (باب أَدْنَى أَهْلِ الْجَنَّةِ مَنْزِلَةً فِيهَا), হাদিস নং- ৪৮৫
এবার আসল কথায় আসি। নাস্তিক ভাইদের কেউ কেউ বলে থাকেন, সর্বশেষ জাহান্নাম থেকে যে ব্যক্তি মুক্তি পাবে তাকেই যদি এতবড় জান্নাত দেয়া হয়, তাহলে প্রথম সারির জান্নাতিদেরকে আল্লাহ তাআ'লা কত বড় জান্নাত দিবেন? আল্লাহ তাআ'লা এত জায়গা কোথায় পাবেন?
চিন্তার বিষয় বটে! চলুন, তাহলে মূল আলোচ্য বিষয়ে যাওয়া যাক। শুধু কুরআন, হাদিসের দলিল দিলে তো তাদেরকে বুঝানো যাবে না। তারা হয়তো মানবেনও না। তাই উপরোক্ত আয়াত এবং হাদিসের বিশ্বাসকে ধারণ করার জন্য সহায়ক বিজ্ঞানভিত্তিক কিছু আলোচনা করে দেখি বিষয়টা কিছুটা সহজ হয়ে ধরা দেয় কি না। আসুন, খোলা চোখে বর্তমানে বিদ্যমান মহাবিশ্ব এবং মহাশুন্যের দিকে একটু তাকাই। তাকিয়ে দেখি, এর কতটুকু অংশে আমরা চোখ বোলাতে সক্ষম হই। বাদবাকি মহাশুণ্যের যা কিছু এখনও আবিষ্কারের বাইরে রয়ে গেছে সেগুলো নিয়ে আমাদের পরে অনাগত দিনের বিশ্বাসী কেউ হয়তো কথা বলবেন কোনো দিন। আমরা শুধু কথা বলবো, যতটুকু আমাদের পক্ষে দেখা সম্ভব---
অনন্ত বিস্তৃত সীমাহীন মহাবিশ্ব বরাবরই রহস্যময়। আর এই সীমাহীন মহাবিশ্বে কিছু অদ্ভুত স্থান থাকা তো একান্তই স্বাভাবিক। মহাবিশ্বের বৃহত্তম, শীতলতম, উষ্ণতম, প্রাচীনতম, ভয়ংকরতম, দূরতম, অন্ধকারতম ও উজ্জ্বলতমসহ বিভিন্ন প্রকারের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ স্থান নিয়ে প্রতিবেদন করেছে ডিসকভার ম্যাগাজিন। ওই প্রতিবেদনের সাথে সংযুক্ত আরও কিছু গবেষনা অনুযায়ী মহাবিশ্বের কয়েকটি ব্যতিক্রমী স্থান নিয়েই মূলতঃ আজকের আলোকপাতঃ
দ্য এল গর্দো গ্যালাক্সি ক্লাস্টারঃ
মহাবিশ্বের অদ্ভুত স্থানের তালিকায় প্রথমেই আসে এল গর্দো। স্পানিশ এই নামের অর্থ ‘মোটা ব্যক্তি’। নামেই এই গ্যালাক্সি ক্লাস্টারের কিছুটা পরিচয় পাওয়া যায়। এর ভর সূর্যের চেয়ে মাত্র(!) ৩০০ লক্ষ কোটি গুণ বেশি। (একটিবার ধারণা করুন, সূর্য থেকে কি পরিমান বড় এই গ্যালাক্সি ক্লাস্টার!!!! সুবহানাল্লাহ!) আর পৃথিবী থেকে মাত্র(!) ৯৭০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে এর অবস্থান। (আলোর গতি এক সেকেন্ডে ১৮৬০০০ মাইল। সে হিসাবে আলো এক মিনিটে কত দূর যাবে! এক ঘন্টায় কত দূর যাবে!! একদিনে কত দূর যাবে!!! এক বছরে কত দূর অতিক্রম করবে!!!! ৯৭০ কোটি বছরে কতদূর যাবে!!!!!! মাথা হ্যাং হলে এই অভাগাকে দোষ দিবেন না, আশা করি! কারণ, আমাদের অতি পরিচিত এই পৃথিবী থেকে সুবিশাল দূরত্বে থাকা এই গ্যালাক্সি ক্লাস্টারের অবস্থান প্রমান করে মহাবিশ্ব কত বড়! কতই না বড়!! কতটাই বিশাল!!! আচ্ছা, এবার একটু ভাবুন তো, 'পৃথিবী' আর 'এল গর্দো' এর মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গাটা কত বড়!) এর মানে দাঁড়ায়, এল গর্দো গ্যালাক্সি ক্লাস্টার ওই অবস্থায় ছিল যখন মহাবিশ্ব বর্তমানের চেয়ে অর্ধেক বয়স্ক ছিল। এতো গেলো শুধু এক 'এল গর্দো”র কথা!!!! আসুন, এবার দেখে আসি- 'দ্য ব্লাক উইডো পালসার' এর ব্যাপারটা কেমন!
দ্য ব্লাক উইডো পালসারঃ
পালসার জে-১৩১১-৩৪৩০ এর রয়েছে হিলিয়াম-আধিপত্যের ভয়ংকর এক নিউট্রন নক্ষত্র সঙ্গী। সূর্যের চেয়ে পালসার জে-১৩১১-৩৪৩০ এর ভর দ্বিগুণ হলেও প্রস্থে এটি মোটে ওয়াশিংটন ডিসির সমান। এটি ধীরে ধীরে সঙ্গী নক্ষত্র থেকে সরে যাচ্ছে এবং আকৃতিতে বড় হচ্ছে। নক্ষত্র দু'টি প্রতি ৯৩.৮ মিনিট পরপর কাছাকাছি আসে। পালসারটির চারপাশে থাকা রঙিন দাগের মতো অংশ ধীরে ধীরে এর মধ্যে প্রবেশ করে। এটি নক্ষত্রটিকে বাড়তি শক্তি দেয়। ধীরে ধীরে এই নক্ষত্রের সঙ্গীটির শক্তি হ্রাস পেতে পেতে একসময় এটি হারিয়ে যাবে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। এবার আসুন, দেখে আসি দ্য ব্ল্যাক উইডো পালসার (বি-১৯৫৭+২০) এর অবস্থান কোথায়!
দ্য ব্ল্যাক উইডো পালসার বি-১৯৫৭+২০ঃ
নীল এবং সবুজ ক্ষেত্রের অপটিক্যাল চিত্র যেখানে 'দ্য ব্ল্যাক উইডো পালসার বি 1957 + 20' এর সন্ধান পাওয়া যায়।
দ্য ব্ল্যাক উইডো পালসার (বি-১৯৫৭ + ২০) মিল্কিওয়েতে আবিষ্কৃত একটি বাইনারি মিলিসেকেন্ড পালসার। ১৯৮৮ সালে আবিষ্কার হয় এটি। পৃথিবী থেকে এটি প্রায় ৬,৫০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এটিও পূর্বোক্ত পালসার জে-১৩১১-৩৪৩০ এর মতো একটি ব্রাউন বামন সহচরের সাথে ৯.২ ঘন্টা সময়কালের ব্যবধানের সাথে গ্রহণের সময়কাল হয় প্রায় ২০ মিনিট।
যখন এটি আবিষ্কার হয়েছিল তখন এটি প্রথম এই জাতীয় পালসার হিসাবে পরিচিত ছিল। তখন পালসারটির প্রচলিত তাত্ত্বিক ব্যাখ্যায় বোঝা গিয়েছিল যে, নিউট্রন স্টার সৃষ্ট মহাকর্ষীয় পরিবেশ (Roche lobe overflow) দ্বারা সহচরটিকে ধ্বংস করা হচ্ছে। এরপরে, একই বৈশিষ্ট্যযুক্ত অন্যান্য পালসার আবিষ্কারের পরে এটিকেও মিলিসেকেন্ড পালসার শ্রেণিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
এই পালসারের গবেষনায় প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, এইচ-আলফায় একটি ধনুকের ধাক্কা এবং এক্স-রেতেও দেখা গেছে এমন একটি ছোট-মাঝারি ধাক্কা (যা চন্দ্র স্পেস টেলিস্কোপ দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে) যা প্রতি ঘন্টায় মিলিয়ন কিলোমিটারের সামনের গতিবেগকে ইঙ্গিত করে! গতিবেগের অবস্থাটা ভাবুন একবার!
৩৭৫৩ ক্রুইথনঃ
পৃথিবীর সমান সময় অর্থাৎ, ৩৬৫ দিনে সূর্যকে ঘুরে আসে ৩৭৫৩ ক্রুইথন গ্রহাণু। ৩ দশমিক ১ মাইল ব্যাসার্ধের গ্রহাণুটির গতিপথও পৃথিবীর কক্ষপথকে দু'বার অতিক্রম করেছে। গতিপথে পৃথিবীর এই যমজের কথা জানা যায় ১৯৮৬ সালে। তবে পৃথিবীতে কোনোভাবেই এটি আঘাত করার সম্ভাবনা নেই। গ্রহাণুটি যখন পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটবর্তী হয় তখন পৃথিবী থেকে এর সর্বনিম্ন দূরত্ব থাকে মাত্র(!) ৭৫ লক্ষ মাইল।
রগ প্লানেট সিএফবিডিএসআইআর 2149-0403ঃ
সিএফবিডিএসআইআর ২১৪৯-০৪০৩। পুরো নাম- সিএফবিডিএসআইআর জে ২১৪৯৪৭.২-০৪০৩০৮.৯। সংক্ষেপে সিএফবিডিএসআইআর ২১৪৯। যে তারকা থেকে মূলতঃ এর উৎপত্তি, সেই অভিভাবক নক্ষত্র ও স্বজনদের ছেড়ে একাকী ঘুরে বেড়াচ্ছে সিএফবিডিএসআইআর ২১৪৯ গ্রহটি। পৃথিবী থেকে ১০০ আলোকবর্ষ দূরে এর অবস্থান (১০০ আলোকবর্ষ দূরে!!!!)। তারকা থেকে গঠন প্রক্রিয়ার শুরুতেই ওই গ্রহ ছিটকে পড়ে। পরে মহাশূন্যে হয়ে পড়ে একাকী। জ্যোতির্বিদদের ধারণা, মহাশূন্যে এমন নিসঙ্গ গ্রহের সংখ্যা শতকোটির কম নয়! ১০০ কোটি এমন গ্রহ!!!! জায়গা তাহলে কিছুটা আছে!
স্মিথস ক্লাউডঃ
আমাদের চোখে যদি বেতার তরঙ্গ দেখা যেত, তাহলে রাতের আকাশে পূর্ণচাঁদের চেয়ে ২০ গুণ হয়ে দেখা দিত ‘স্মিথস ক্লাউড’। হাইড্রোজেন গ্যাসের এই মেঘের ভর ১০ লাখ নক্ষত্রের চেয়ে বেশি। দৈর্ঘ্যে নয় হাজার ৮০০ আলোকবর্ষ আর প্রস্থে তিন হাজার ৩০০ আলোকবর্ষ দূরত্বের বিশাল স্থানজুড়ে ছড়ানো এই মেঘ। (আয়তনটা আলোকবর্ষের আলোকে দেওয়া!!! আলোকবর্ষের হিসাব তো শুরুতে দেয়া হয়েছে। কষ্ট করে ক্যালকুলেটর দিয়ে হিসাবটা করে নিন আর দেখে নিন, জান্নাতে স্থান সংকুলানের দুশ্চিন্তা কিছুটা হ্রাস পায় কি না!)
এর আকৃতি অনেকটা টর্পেডোর মতো। এটি আমাদের গ্যালাক্সির দিকে এগোচ্ছে। দুই কোটি ৭০ লাখ বছর পর এটি মিল্কিওয়েতে এসে পড়বে। এই উচ্চগতির হাইড্রোজেন মেঘের কারণে নক্ষত্র সৃষ্টির সময়কার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
গ্যালাক্সি এক্সঃ
আমাদের গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ে থেকে তিন লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এক স্যাটেলাইট গ্যালাক্সি, যা পুরোটাই কৃষ্ণবস্তু আর গ্যাসে তৈরি। অনেক বছর ধরেই এটি ছিল বলে ধারণা করেন জ্যোতির্বিদরা। ২০০৯ সালে প্রথম ‘গ্যালাক্সি এক্স’ এর অস্তিত্ব নিশ্চিত করেন জ্যোতির্বিদরা। গ্যালাক্সি এক্সে তেমন কোনো নক্ষত্র নেই বলে ধারণা করা হতো। তবে সম্প্রতি জ্যোতির্বিদরা জানিয়েছেন, এই গ্যালাক্সির দূরতম প্রান্তে শতকোটি বছর বয়সী অনেক নক্ষত্র রয়েছে। শতকোটি বছর বয়সী নক্ষত্র!
এইচডি ১৮৯৭৩৩বিঃ
প্রথম দর্শনে গ্রহটিকে শান্ত সাগর মনে করলে বোকা বনতে হবে। এটি হলো গ্যাসদানব যা এর সৃষ্টিকারী নক্ষত্রের কাছাকাছিই ঘুরছে। আর এই কারণে এই গ্রহে সাগর হওয়া কখনোই সম্ভব নয়। এর তাপমাত্রা প্রায় এক হাজার ৭০০ ফারেনহাইট। গ্রহের ওপরের মেঘলা আকাশ মানে হলো, এতে চলে গলিত কাচের বৃষ্টি। কাঁচের বৃষ্টি, ভাবা যায়!
সর্ববৃহৎ কৃষ্ণগহবর জে০১০০+২৮০২ঃ
মহাবিশ্বের বয়স যখন ছিল মাত্র ৮৭ কোটি ৫০ লক্ষ বছর তখন মাত্র(!) এক হাজার ২০০ কোটি সূর্যের ভর নিয়ে সৃষ্টি হয় এই সর্ববৃহৎ কৃষ্ণ গহবর। জে০১০০+২৮০২ নামের এই কৃষ্ণ গহবরের অবস্থান ‘কুয়াসার’ নামে সক্রিয় গ্যালাক্সির মধ্যে। (তার মানে এই “কুয়াসার” নামক গ্যালাক্সিতে এরকম আরো কৃষ্ণ গহবর আছে!!!! জায়গা সংকুলান নিয়ে কনফিউশন থাকলে কিছুাঃ হলেও দূর হওয়ার কথা) পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব মাত্র(!) এক হাজার ২৮০ কোটি আলোকবর্ষ। এই কৃষ্ণ গহবর নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। আরও কতকাল এই গবেষনা অব্যাহত থাকে কে জানে! সুবহানাল্লাহ!
আর১৩৬এ১ঃ
এই নক্ষত্র সূর্যের চেয়ে মাত্র(!) ২৫৬ গুণ বড়। আর উজ্জ্বলতায়ও কিন্তু সূর্য্যিমামাকে হার মানায় এটি। অর্থাৎ, সূর্য্যের চেয়ে এটি মাত্র(!) ৭৪ লক্ষ গুণ উজ্জ্বল। জ্যোতির্বিদদের মতে, অনেকগুলো নক্ষত্র একসঙ্গে হয়ে এমন নক্ষত্র গঠিত হয়। আর নিজেদের জ্বালিয়ে নিঃশ্বেষ হওয়ার আগে এরা মাত্র কয়েক লক্ষ বছর(!) আলো দেবে। 'মাত্র কয়েক লক্ষ বছর!' - কি বুঝলেন কথাটায়! কিছু কি বুঝলেন!
দ্য বুমেরাং নেবুলাঃ
মহাবিশ্বের শীতলতম স্থান বুমেরাং নেবুলা। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব মাত্র(!) পাঁচ হাজার আলোকবর্ষ। সূর্যের মতো আকৃতির একটি নক্ষত্রের ধ্বংস থেকে সৃষ্ট গ্যাস আর ধুলোর এই মেঘের তাপমাত্রা ঋণাত্মক দিকে মাত্র(!) ৪৫৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। অর্থাৎ, মাইনাস ৪৫৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট! প্রতি ঘণ্টায় মাত্র(!) তিন লক্ষ ৬৭ হাজার মাইল গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে এই মেঘ। মানুষের তৈরি যে কোনো যানের চেয়ে ১০ গুণ বেশি এর গতি।
জায়গা বা স্থানের সংকুলান হবে কিভাবে, জান্নাতপ্রাপ্তদেরকে আল্লাহ পাক এত বড় বড় জান্নাত বরাদ্দ কিভাবে দিবেন এবং সে পরিমান স্পেস কোথায় পাওয়া যাবে- ক্ষুদ্র আলোচনায় এসব প্রশ্নের জবাব দেয়ার সুযোগ নেই। তবে চিন্তাশীলদের জন্য এই আলোচনায় মোটামুটি কিছুটা অনুধাবনের অবকাশ রয়েছে, আশা করি। উপরের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা এবং উপস্থাপিত ছবিগুলো থেকে আমরা মহাবিশ্বের আকার-আকৃতি পরিমাপ করতে পারার স্পর্ধা বা ধৃষ্টতা দেখাচ্ছি না, তবে মহান স্রষ্টার সুবিশাল হিকমতপূর্ণ অসীম সৃষ্টির প্রতি দৃষ্টি সম্প্রসারিত করতে পেরে নিজেদের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জ্ঞানের পরিধিকে কিছুটা হলেও বিস্তারিত করতে সক্ষম হয়েছি- মনে করি। তাওফিকদাতা একমাত্র মহান মালিক দয়াময় প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা। তাই সকল প্রশংসা, গুণগাণ এবং কৃতজ্ঞতা শুধু তাঁরই জন্য।
দীর্ঘ সময় নিয়ে পোস্ট পাঠ এবং সাথে থাকার জন্য সকলের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন।
নিবন্ধটি প্রণয়নে সহযোগিতা গ্রহনের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতাঃ
উইকিপিডিয়া এবং অন্যান্য অনলাইন মাধ্যম।
০৮ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:০৬
নতুন নকিব বলেছেন:
শুকরিয়া জানবেন। অসাধারণ আন্তরিকতাপূর্ণ মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা। লিঙ্কগুলো দেয়ায় ভালো হয়েছে। দেখে আসবো ইনশাআল্লাহ।
শুভকামনা সবসময়।
২| ০৩ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:১৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: করোনার জীবাণু আমাদের কাছে যেমন অতি ক্ষুদ্র তেমনি মহাবিশ্বের তুলনায় মানুষ অতি ক্ষুদ্র। আমরা নিজেদের অনেক বড় মনে করলেও আমাদের আকৃতি ও জ্ঞান কোনটাই মহাবিশ্বের আকৃতি বা জ্ঞান ভাণ্ডারের তুলনায় কিছুই না। সমস্যা হোল আমরা গভীরভাবে ব্যাপারগুলো ভেবে দেখি না।
০৮ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:০৭
নতুন নকিব বলেছেন:
চমৎকার বলেছেন। শুকরিয়া।
৩| ০৩ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩৮
শেরজা তপন বলেছেন: মহাবিশ্ব নিয়ে আলোচনাটা বেশ ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য
০৮ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:০৮
নতুন নকিব বলেছেন:
মোবারকবাদ। আপনাকে মন্তব্যে পেয়ে ভালো লাগলো।
অনেক অনেক শুভকামনা।
৪| ০৩ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৪৮
আকন বিডি বলেছেন: আল্লাহ'র পূর্বে কিছু নাই তার পরেও কিছু নাই। তিনি অসীম। আর সব কিছু সসীম। এই বিশ্বজগৎ এরও সীমা আছে। তার মানে মহাবিশ্ব অন্তহীন নয়।
০৮ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:০৯
নতুন নকিব বলেছেন:
ঠিক বলেছেন, মহাবিশ্ব অন্তহীন নয়। আসলে, অন্তহীন বলা হয় এর বিশালতা পরিমাপ করার মত নয় অর্থে।
অনেক শুকরিয়া।
৫| ০৩ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৩৪
নতুন বলেছেন: এই পৃথিবিতে যত বালুকনা আছে তারচেয়ে বেশি নক্ষত্র আছে মহাবিশ্বে এমন একটা কিছু পড়ে ছিলাম।
এই মহাবিশ্বের মাঝে কোরান নাজিল হয়েছে পৃথিবিতে।
এই মহাবিশ্বে প্রথম মানুষ আদম আ: কে সৃস্টিকতা পাঠিয়েছিলেন।
এই বিশ্বের মানুষদের জন্যই এই মহাবিশ্ব সৃস্টিকরা হয়েছে।
এই পৃথিবিতেই রাসুল সা: কে পাঠানো হয়েছিলো। যার পরে আর কোন নবী বা রাসুল আসবেন না।
এই পৃথিবিতে এযাবত ১৪৭ বিলিওন মানুষ এসেছিলো বলে অনুমান করা হয়ে থাকে। কেয়ামত পযন্ত যদি আরো ১৫৩ বিলিওন মানুষ আসে তবে ৩০০ বিলিওন মানুষের জন্য এই মহাবিশ্ব সৃস্টি করা হয়েছে???
এই মানুষের মাঝে বেশির ভাগই বেহেস্তে যাবে, দোজোখে যারা যাবে তাদেও প্রায় সবাই তাদের সাজা শেষে বেহেস্তে যাবে।
হয়তো অল্প কিছু অনন্তকাল দোজোখে থাকবে।
এখন এই অল্প কয়েক জনকে দোজোখে রেখে সৃস্টিকতার কি লাভ?
বাকী ২৯৯ বিলিওন মানুষকে বেহেস্তে রেখেই বা সৃস্টিকতার কি লাভ??
আর এই বিশ্বের ইতিহাসে কয়জন মানুষের কাছে সৃস্টিকতার যোগাযোগ হয়েছে?
৪ জন মানুষ সবচেয়ে কাছে গেছেন। আদম আ: হাওয়া আ: মুসা আ: এবং মুহাম্মাদ সা:
২জনকে বাদ দেন কারন এটা অনেক আগের কাহিনি।
২ জন মানুষই সৃস্টিকতার কাছে গিয়েছিলো এবং সরাসরি কথা বলেছিলেন বলে দাবি করেছেন?
সব গুলি ধর্মই মধ্যপ্রচ্যের কয়েকটি দেশে ঘটেছিলো?
চীন, অস্ট্রেলিয়া,উত্তর/দক্ষিন আমেরিকা বা আফ্রিকার মতন কোন দেশে সৃস্টিকতা কোন নবী বা রাসুল বা কিতাব পাঠায় নাই।
উপরে যেই বিষয়গুলি নিয়ে চিন্তা করেছেন তেমনি ধমের কাহিনি গুলি নিয়াও অনেক প্রশ্ন মানুষের মনে আসে। যেটার গোজামিল দিয়েই বিশ্বাসীদের বোঝানো হয়।
০৮ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:১০
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ।
৬| ০৩ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: ''অন্তহীন মহাকাশের অপার রহস্য'' ভবেশ রায়ের লেখা চমৎকার একটা বই পড়েছিলাম।
০৮ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:১০
নতুন নকিব বলেছেন:
শুকরিয়া।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৫৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: নতুন নকিব,
মহাবিশ্ব নিয়ে আমার আগ্রহ অনেক। তাই এই লেখাটিতে আসা। মহাবিশ্ব যে কতো বিস্ময়কর তা যে কেউই জানার আগ্রহ থেকে জানতে পারেন নিজের গরজে। মহাবিশ্বের এইসব বিস্ময় আস্তিক- নাস্তিকদের আবিষ্কার নয়, আবিস্কার জ্ঞানী মানুষদের অনুসন্ধিৎসার ।
আপনার এই লেখার সাথে আরও কিছু লিংক যোগ করতে চাই পাঠকদের জ্ঞাতার্থে কারন মানুষকে জানতে হবে এই কবিতার অর্থ
"খেলিছো এ বিশ্ব লয়ে
হে বিরাট শিশু আনমনে.........
শূন্য মহা আকাশে
তুমি মগ্ন লীলা বিলাসে
ভাঙিছো গড়িছো নিতি
ক্ষনে ক্ষনে
নিরজনে প্রভু নিরজনে ...."
--- “মাগো, তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ফেরে .....”
“মাগো, তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ফেরে .....” দুই
“মাগো, তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ফেরে .....” তিন