নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

আয়া সোফিয়াকে লইয়া মায়াকান্নার সুযোগ নাই....

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:৪৬



আয়া সোফিয়াকে লইয়া মায়াকান্নার সুযোগ নাই....

হায় হায়! এরদোগান ইহা কি করিলেন! তিনি ইহা কিভাবে করিলেন! কোন্ জ্ঞানে করিলেন! তিনি নেহায়েত গোস্তাখি করিয়াছেন! তাহার এই কাজ করা কস্মিনকালেও সমিচীন হয় নাই! তিনি মস্তবড় ভুল করিয়াছেন! তিনি এককালের অন্য ধর্মের উপাসনালয়কে মসজিদে রূপান্তর করিয়া মহাঅন্যায় করিয়াছেন!, তিনি বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ (World heritage) কে নামাজের ঘর করিয়াছেন - ইত্যাকার অর্থহীন বাতচিৎ করিয়া যাহারা ইদানিংকালে নিজেদের হতাশা ব্যক্ত করার নামে নিজেদের ভিতরে লুকায়িত ইসলাম বিদ্বেষকে অজান্তেই প্রকাশ করিতে যাইয়া অহেতুক গলধঘর্ম হইয়া পড়িতেছেন, তাহাদেরকে বিনীতভাবে বলিতেছি, প্রিয় ভাই/ বোন, আপনি কাঁদিতে চাহিলে কাঁদেন, কাঁদিতে তো নিষেধ নাই! কান্নায় মনের ভার অনেকটা কাটিয়াও যায়। বুকের জমানো ব্যাথা হাল্কা হইয়া ওঠে। আবার কিছু ব্যাথা আছে যাহাদের প্রশমনে কান্না অমোঘ বলিয়া স্বীকৃত! আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানকেও কদাচিত কান্নার উপকারিতা স্বীকার করিতে দেখা যায়! তাই ইচ্ছা হইলে আপনি কাঁদিতেই পারেন। কাঁদিয়া কাটিয়া বুক ভাসাইতে পারার অধিকার আপনার রহিয়াছে। ইহাতে কোনো অসুবিধাও নাই। কিন্তু আপনার সেই কান্নাটা তো হইতে হইবে যৌক্তিক। সেই কান্নার পিছনে যৌক্তিক কোনো কারণ তো থাকিতে হইবে। তাই কান্নাকাটি শুরু করিবার পূর্বে আমাদের জানিয়া নেওয়া প্রয়োজন যে, তুর্কি প্রেসিডেন্ট হাফেজ রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগান আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তর করিয়া আসলেই কি কোনো অন্যায় করিয়াছেন কি না! আপাতঃদৃষ্টিতে মোটা চোখে তার এই কাজটিতে সাম্প্রদায়িকতার হাল্কা একটা ঘ্রাণ কাহারও কাহারও নাকে আসিয়া লাগিলেও লাগিতেই পারে। কিন্তু ইসলাম বিদ্বেষের চশমাটা একটু ঘষিয়া মাজিয়া ক্লিন করিয়া চোখ খুলিয়া ভালোভাবে তাকাইলে পরিষ্কার হইয়া যায় যে, কাজটি করিয়া মূলতঃ তিনি কোনো অন্যায় করেন নাই। ইতিহাসের বাস্তবতা অন্ততঃ ইহাই চোখে আঙুল দিয়া দেখাইয়াও দেয় আমাদেরকে। অবশ্য সত্য বিষয়গুলো দেখিতে কাহারও অনিহা থাকিলে অথবা বাস্তবতাকে পাশ কাটাইয়া যাইতে চাহিলে উহা একান্তই তাহার নিজের ব্যাপার। তাই এরদোগান বেচারার প্রতি অহেতুক রুষ্ট হইয়া সকল দোষের ঘানি তাহার কাঁধে চাপাইয়া দিয়া পড়িমরি করিয়া কাঁদিয়া বুক ভাসাইয়া আপনার আমার আসল লাভটা কি? তাহার চাইতে আসুন, কান্নাটা কিছুক্ষণের জন্য হইলেও দমাইয়া রাখিয়া ইতিহাসের পাতায় একটু ঘুরিয়া আসি! প্রকৃত সত্য ইতিহাস তুলিয়া না ধরা রীতিমত বেইনসাফি মনে করিয়াই অতি ক্ষুদ্র এই প্রচেষ্টা। তবে মূল আলোচনায় প্রবেশ করিবার পূর্বে ইহার নাম বিভ্রাটটা একটু দূর করা সঙ্গত মনে করিতেছি-

আয়া সোফিয়া, হায়া সোফিয়া না হাজিয়া সোফিয়া- কোনটা সঠিক?

আয়া সোফিয়াকে অনেকে বলেন হায়া সোফিয়া। কেউ বলেন হাজিয়া সোফিয়া। আবার কেউ হায়া সোফিয়াও বলেন। আসলে সঠিক কোনটা? ইহার উত্তর হইতেছে- তুর্কীগণ ইহাকে Ayasofya (আয়া সোফিয়া)ই বলেন। গ্রিক ভাষায়ও ইহাকে Ἁγία Σοφία (আয়া সোফিয়া), অর্থাৎ- 'পবিত্র জ্ঞান' বলিয়া উচ্চারণ করা হয়। আর লাতিন ভাষায় বলা হয়- Sancta Sophia বা Sancta Sapienti। তুর্কিরা অবশ্য এই স্থাপনাটিকে Hagia Sophia Grand Mosque (Turkish: Ayasofya-i Kebir Cami-i Şerifi) নামে অভিহিত করিয়া থাকে।

চলুন, এবার আসল কথায় ফিরিয়া যাই-

স্মরণযোগ্য যে, হাজিয়া সোফিয়া বা আয়া সোফিয়া নির্মিত হইয়াছিল ৫৩৭ খৃস্টাব্দে রোমান সম্রাট জাস্টিনিয়ান (প্রথম) এর শাসনামলে। এটি তদানীন্তন কনস্ট্যান্টিনোপলে (বর্তমান ইস্তাম্বুল) খৃস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হইতো এবং একই সাথে ইহা হইয়া উঠিয়াছিল বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানাদি, যেমন- রাজ্যাভিষেক ইত্যাদির জন্য প্রধান স্থাপনা। কিন্তু পরবর্তীতে ১৪৫৩ সালে উসমানিয় খলিফা আবুল ফাতিহ সুলতান মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইস্তাম্বুল বিজয়ের পর খৃস্টান ধর্মীয় নেতাদের নিকটে এই স্থাপনাটি জমিসমেত ক্রয় করিয়া নেওয়ার প্রস্তাব দেন। তবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থে নয়, বরং নিজের ব্যক্তিগত অর্থ দ্বারা। উভয় পক্ষ সম্মত হইলে উক্ত স্থাপনাটি ভূমিসহ উপযুক্ত অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করিয়া নিয়াছিলেন শাসক ফাতিহ সুলতান মুহাম্মদ।

রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থব্যয় না করিয়া ব্যক্তিগত অর্থায়নে ইহা ক্রয় করার পেছনে আবুল ফাতিহ সুলতান মোহাম্মদ এর দূরদর্শিতার পরিচয় পাওয়া যায়। শত্রু এবং ইতিহাস সম্পর্কে তিনি ছিলেন অত্যন্ত বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান। শাসক হিসাবে রাজ্যের কোষাগার কিংবা মুসলমানদের 'বায়তুল মাল' হইতে কোনো অর্থের পরিবর্তে তিনি ভূমিসমেত ওই ভবন ক্রয়ের প্রস্তাব দেন একান্ত ব্যক্তিগত সম্পদ দ্বারা, যাহা ছিল এক নজিরবিহীন পদক্ষেপ।

খৃস্টান ধর্মীয় নেতারা 'আয়া সোফিয়া'কে বিক্রয় করিতে সম্মত হওয়ার পর একজন সাধারণ মুসলমান হিসাবেই তিনি উক্ত সম্পদ ক্রয় করিতে একটি ব্যক্তিগত চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেন তাহাদের সাথে। তিনি শাসক হওয়া সত্বেও সেই চুক্তির সাথে প্রশাসনিক কোনো সংশ্লিষ্টতা রাখেন নাই।

সম্পূর্ণ লেনদেনটি ক্রয় ও স্বত্বত্যাগের একটি চুক্তির মাধ্যমে নথিভুক্ত করা হইয়াছিল এবং মূল্য পরিশোধের বিষয়টিও ছিল ভাউচার দ্বারা প্রমাণিত।



১৪৫৩ খৃস্টাব্দে হরিণের চামড়ার উপরে লিখিত খৃস্টান ধর্মীয় নেতাদের নিকট হইতে আয়া সোফিয়া ক্রয়ের দলীল এবং (ডান পার্শ্বে) তৎকালীন সময়ের মানচিত্র। সূত্র- জিডিএলআরসি, ২০০৫/এ।

এইভাবেই 'আয়া সোফিয়া' খৃস্টানদের নিকট হইতে ক্রয় করিয়া নেওয়া হয় এবং ইহার পরপরই আবুল ফাতিহ সুলতান মোহাম্মদ (আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা তাঁর প্রতি রহম করুন) সেখানে একটি ওয়াকফ এসোসিয়েশন গঠন করিয়া দেন এবং আয়া সোফিয়া ভবনটিকে তাদের মালিকানায় দান করিয়া দেন এবং পরবর্তীতে তিনি ইহার পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন সম্মন্ধে একটি ওসিয়তনামাও লিখিয়া যান। যে অসিয়তনামায় অন্যান্য কথার সাথে নিম্নোক্ত কথাগুলোরও উল্লেখ ছিল-

'এই ভিত্তি কেউ যদি পরিবর্তন করে, তাহার এবং তাহাদের উপরে আজীবন ধরিয়া আল্লাহ পাকের, নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর, ফেরেশতাকুলের, সকল শাসকগণের এবং সকল মুসলমানের লানত পড়ুক! আল্লাহ পাক যাহাতে তাহাদের কবরের আজাব মাফ না করেন, হাশরের দিনে তাহাদের মুখের দিকে যাহাতে না তাকান!

এই কথা শোনার পরেও কেহ যদি ইহাকে পরিবর্তনের চেষ্টা চালাইয়া যায়, পরিবর্তনের গুনাহ তাহার উপরে পড়ুক! আল্লাহর আজাব পড়ুক তাহাদের উপরে! আল্লাহ পাক সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।'


– আবুল ফতেহ সুলতান মুহাম্মদ, (১লা জুন, ১৪৫৩)।

উসমানিয় খলিফা আবুল ফাতিহ সুলতান মুহাম্মদ এর তুরস্ক বিজয়ের প্রেক্ষাপটঃ

ইতিহাসের পাঠকমাত্রেরই জ্ঞাত থাকার কথা যে, মহান সুলতান মুহাম্মাদ ফাতিহ কন্সট্যান্টিনোপলে অভিযান শুরুর আগে ১৫-৫-৮৫৭হি/২৪-৫-১৪৫৩ খৃষ্টাব্দে বাইজেন্টাইন সম্রাটের নিকট এই মর্মে পত্র প্রেরণ করেন যে, তিনি যেন অস্ত্র সমর্পন করিয়া আত্মসমর্পন করেন। কিন্তু বাইজেন্টাইন সম্রাট তাঁহার এই কথার প্রতি কোন প্রকার ভ্রুক্ষেপ করেন নাই। ফলে সুলতান মুহাম্মাদ ফাতিহ (২০-৫-৮৫৭হি/২৯-৫-১৪৫৩ খৃ.) তারিখে কন্সট্যান্টিনোপলে অভিযান পরিচালনা করেন এবং বিজয়লাভ করেন। ইহার ফলে গোটা কন্সট্যান্টিনোপলে মুসলিম আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন। এ ঘটনা হইতে প্রতীয়মান হয় যে, বিশাল এই ভূখন্ড মুসলিম জাতি জিহাদের মাধ্যমে লাভ করিয়াছেন, কোন সন্ধির মাধ্যমে নহে। তাই এই ভূখন্ডের প্রতিটি কণার উপর মুসলিমদের পূর্ণ অধিকার রহিয়াছে। অন্যান্য বিষয়ের মত এই ভূখন্ডের ধর্মীয় স্থাপনাদির উপরেও তাহাদের নিরঙ্কুস নিয়ন্ত্রন ও একচ্ছত্র অধিকার বিদ্যমান রহিয়াছে। উপরন্তু উক্ত আয়া সোফিয়া স্থাপনাটি তো ভূমিসমেত ক্রয় করিয়া নেওয়ার ফলে ইহাকে যে কোনো কাজে ব্যবহার করার পূর্ণ বৈধ অধিকার তাহাদের একান্তভাবেই রহিয়াছে। দেশ ও জাতির প্রয়োজনে দেশের প্রধান, সুলতান বা খলীফা যে কোন ব্যাপারে যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে পারেন। নৈতিক ও সামরিক দৃষ্টিতে ইহাতে কোন প্রকারের বাধা থাকিতে পারে না।

২৭ হাজার নথিপত্রের ম্যানুয়ালি যাচাই করার পরে পাওয়া গেল আয়া সোফিয়া ক্রয়ের মূল দলিলঃ

তুরস্কের আদালত আয়া সোফিয়াকে জাদুঘর থেকে পুনরায় মসজিদে রূপান্তরের রায় দেওয়ার পরপরই কিছু দিন পূর্বে এই বিষয়টি তুরস্ককে সুশীল সমাজের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়িতে হইয়াছিল। এই অন্ধ সমালোচনার কাজে শুধু তাহারাই ব্যস্ত ছিলেন বিষয়টি এমন নয়, অন্য ধর্মাবলম্বীগণের পাশাপাশি ইতিহাসে অজ্ঞ নামধারী কিছু মুসলিমকেও যখন আক্ষেপের তীর নিক্ষেপ করিতে দেখা যায় তখন তুরষ্কের রাষ্ট্রীয় মহাফেজখানায় রক্ষিত হাজার হাজার বছরের পুরানো ২৭ হাজার নথিপত্রের ম্যানুয়ালি যাচাই করা হইয়াছিল এবং সৌভাগ্যবশত তাহারা একটি মূল শিরোনাম দলিল (ওয়াকফ সম্পত্তির মালিকানা দলিল) স্পষ্টভাবে খুঁজিয়া পাইয়াছিলেন।



Title of deed of hagia Sophia..

এরপর প্রকৃত মালিক কর্তৃপক্ষ একটি দরখাস্ত দায়ের করে, যাহাতে তাহাদের সম্পত্তি তাহারা পূর্ণ স্বাধীনতার সাথে ব্যবহার করিতে পারে। একই সাথে তাহারা এটিকে একটি মসজিদে রূপান্তরিত করিয়া দিতে অনুরোধ জানায়, ঠিক যেভাবে এটি ক্রয়ের প্রথম দিন হইতে ব্যবহৃত হইয়া আসিয়াছে।

সমস্ত ঐতিহাসিক দলিল এবং হিস্টোরিক্যাল ফ্যাক্টস ইহাই প্রমাণ করিতেছে যে, আয়া সোফিয়াকে ঘিরিয়া খ্রিস্টান সম্প্রদায় ও পশ্চিমা বিশ্বের সকল অভিযোগ মিথ্যা। শুধু মিথ্যা নহে, বরং ডাহা মিথ্যা। এ ব্যাপারে তুরস্কের সমালোচনা করার কোনো নৈতিক অধিকার তাহাদের নাই, কারণ- এটি একান্তই তুরস্কের বিচারিক বিষয়। বাহিরের কোনো দেশ কিংবা পক্ষ ইহাতে কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করার অধিকার কোনোভাবেই রাখেন না।

আল্লাহ তায়ালা রহম করুন প্রেসিডেন্ট এরদোগানের প্রতি। ৫৬৭ বছর পূর্বে আল্লাহর এক নিবেদিত গোলাম উসমানীয় খলিফা আবুল ফাতিহ সুলতান মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরিত করিয়াছিলেন অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এবং ৫৬৭ বছর পর আল্লাহ তাআ'লার আরেক নিবেদিত গোলাম রজব তাইয়েব এরদোগান পুনরায় সেটিকে অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনরায় মসজিদে রূপান্তরিত করিয়া উহাকে সেটির প্রকৃত মালিকানা প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্পণ করিলেন।

আল্লাহ তাআ'লা এবং পরকালে বিশ্বাসী হিসাবে আমরা প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি যারা বিশ্বাস এবং ভালোবাসা পোষন করি তাহাদের বিশ্বাস করিতে হইবে যে, ইস্তাম্বুল বিজেতা খলিফা আবুল ফাতিহ সুলতান মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইনশা’আল্লাহ একজন জান্নাতী। কারণ, ইহাই ছিল রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভবিষ্যত বাণী। তিনি বলিয়াছিলেন যে, মুসলমানদের যারা ইস্তাম্বুল বিজয় অভিযানে শামিল থাকিবে, তাহারা জান্নাতী। একজন জান্নাতী মানুষের অন্ত:স্থলের অব্যক্ত দুআ বর্ষিত হউক প্রেসিডেন্ট এরদোগান এবং তাঁহার সঙ্গী সাথীগণের প্রতি।

একনজরে আয়া সোফিয়ার জীবনকালঃ

কথা হইতেছে, অর্থের বিনিময়ে সন্নিহিত ভূমিসহ যে স্থাপনাটি ক্রয় করিয়া নেওয়া হইয়া থাকে, সেই স্থানে কি করা হইবে বা সেই জমি ও স্থাপনা কি কাজে ব্যবহার করা হইবে, ইহা তো জমি যাহারা কিনিয়া থাকেন একমাত্র তাহারাই নির্ধারণ করার অধিকার রাখেন। সুতরাং, আয়া সোফিয়াকে পুনরায় নামাজের জন্য উম্মুক্ত করিয়া দেওয়ায় 'নাঁকি কান্নার' সুযোগটা আর থাকিতে পারে কোথায়? আসুন, আয়া সোফিয়ার ধারাবাহিক সংক্ষিপ্ত ইতিহাসটাতেও একটু চোখ বুলাইয়া আসি-

-ইস্তাম্বুলের গোল্ডেন হর্ন নামক স্থানে একটি গির্জা আকারের বৃহৎ স্থাপনা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন বাইজান্টাইন সম্রাট। তখন সম্রাট ছিলেন প্রথম জাস্টিনিয়ান। তার আদেশেই এই আয়া সোফিয়ার নির্মাণ কাজ শুরু হইয়াছিল ৫৩২ খৃষ্টাব্দে। ইস্তাম্বুল শহরের নাম ছিল তখন কনস্টান্টিনোপল, যাহা ছিল বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী – পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যও বলা হইত ইহাকে। আয়া সোফিয়ার নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয় ৫৩৭ সালে।

-১৪৫৩ সালে অটোমান সম্রাটদের হাতে কনস্টান্টিনোপল এর পতনের পর অটোমান বা ওসমানি সাম্রাজ্যের তৎকালীন মুসলিম শাসক ফাতিহ সুলতান মুহাম্মদ নিজ অর্থায়নে এটি খৃস্টানদের নিকট হইতে ক্রয় করিয়া মসজিদে রূপান্তরিত করেন

-তখন হইতে এখানে অটোমান সম্রাট নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করেন এবং ইহাতে ৪ টি মিনার স্থাপন করেন। কুরআনের বানী দিয়ে ইহার সৌন্দর্য্যও বৃদ্ধি করা হয়।

-ইস্তাম্বুল বিজয়ের আগে ৯১৬ বছর আয়া সোফিয়া খৃস্টানদের দ্বারা ব্যবহার হইয়া আসিতেছিল।

-১৯২৩ সালে মুসলিম নামধারী পাশ্চাত্যের পদলেহী ধর্মনিরপেক্ষতাবাদে উদ্বুদ্ধ কামাল পাশা তুরস্ক কেন্দ্রিক উসমানি খেলাফতের বিলুপ্তি ঘোষণা করিয়া সেকুলার শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। তবে তাহার শাসনামলেও দীর্ঘ আট বছরকাল যাবত ইহা মসজিদ হিসাবেই ব্যবহৃত হইয়াছিল। অতঃপর ১৯৩৪ সালের দিকে ধর্ম নিরপেক্ষতা চালু করার প্রেক্ষাপটে তিনি মসজিদটিকে জাদুঘরে রূপান্তরের মহাঅপকর্মটি করিয়াছিলেন। আল্লাহ তাআ'লা তাহাকে ক্ষমা করুন।

-১৯৩৫ সালে জাদুঘরে রূপান্তর করার আগে তৎকালীন সরকার ৪ বছর পর্যন্ত মসজিদটিকে বন্ধ করিয়া রাখিয়াছিল। পরে ৮৬ বছরকালব্যাপী ইহা জাদুঘর হিসাবে ব্যবহৃত হইয়াছিল।

-অটোমান সাম্রাজ্যের কেন্দ্রবিন্দু আয়া সোফিয়া ১৪৫৩ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত (প্রায় ৫০০ বছর) ব্যবহার হইয়াছিলো মসজিদ হিসাবে

-১৯৮৫ এর দিকে তুরস্কের সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান (প্রতি বছর প্রায় ৩৭ লক্ষ পর্যটক স্থাপনাটি দেখতে আসেন) আয়া সোফিয়া ইউনেস্কো এর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান করিয়া নেয়।

-১০ জুলাই/২০২০ তুরষ্কের আদালত আয়া সোফিয়াকে জাদুঘর বানানোর ডিক্রি (১৯৩৪ সাল) বাতিল করিয়া ইহাকে পুনরায় তাহার আসল অবস্থা অর্থাৎ মসজিদের রূপে ফিরাইয়া আনার আদেশ প্রদান করেন। তবে একই সাথে আদালত কর্তৃক সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য উম্মুক্ত ঘোষনা করা হয় বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক এই মসজিদটিকে। সকলেই ইহাতে প্রবেশাধিকার রাখিবেন এবং সকল শ্রেণির দর্শনার্থীদের জন্য ইহাকে বাধাহীন হিসাবে রাখার ঘোষনা প্রদান করা হয়।

ইহার অর্থ- আমরা দেখিতে পাইতেছি যে, ৫৩৭ খৃস্টাব্দে আয়া সোফিয়া নির্মাণের পর হইতে ১৪৫৩ খৃস্টাব্দ পর্যন্ত পরবর্তী ৯১৬ বছর ইহা খৃস্টানদের দ্বারা পরিচালিত হয়। ইহার পরে অর্থাৎ, ১৪৫৩ খৃস্টাব্দ হইতে স্থাপনাটি পরবর্তী দীর্ঘকাল, অর্থাৎ খৃস্টানদের নিকট হইতে মুসলিমগণ ইহাকে ক্রয় করার পর হইতে একটানা প্রায় ৫০০ বছর (১৪৫৩ থেকে ১৯৩৪ খৃস্টাব্দ) যাবত ইহা মুসলিমদের তত্ত্বাবধানে মসজিদ হিসাবে ব্যবহৃত হইয়া আসিতেছিল। এই একটানা ৫০০ শত বছরকালব্যাপী মসজিদ হিসাবে ব্যবহৃত হইয়া আসা এই স্থাপনাটিকেই পরবর্তীতে আবার জাদুঘরে রূপান্তর করিয়া পাশ্চাত্যের আস্থাভাজন হওয়ার চেষ্টা করিয়াছিলেন তুরষ্কের তৎকালীন পাশ্চাত্য প্রভাবিত শাসক মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক পাশা।

এইভাবেই বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় নানান চড়াই উৎড়াই পার করিয়া গত ২৪ জুলাই ২০২০ ইং তারিখ রোজ শুক্রবার জুমুআর নামাজ আদায়ের মাধ্যমে পুনরায় মসজিদের যুগে ফিরিয়া আসে আয়া সোফিয়া। সুতরাং, যাহারা না জানিয়া মায়াকান্নার মাতম তোলাদের দলে ভিড়িবেন কি ভিড়িবেন না ভাবিয়া দোটানায় আছেন, আশা করি, বিভ্রান্তির অপনোদনে সেইসব সত্যানুসন্ধানীদের জন্য এতটুকু সত্য ইতিহাসই যথেষ্ট হইবে। ইহাতে এরদোগান ভদ্রলোকও রেহাই পাইবেন অসত্য ক্ষোভ এবং তিরষ্কারের হাত হইতে।

একটি প্রশ্নঃ

তুরষ্কের আয়া সোফিয়া তো সেই ভূমিসমেত ১৪৫৩ সালে স্থাপনাটি ক্রয়ের পর হইতে কামাল পাশার অনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে জাদুঘরে পরিনত হওয়ার পর থেকে মাত্র ৮৬ বছর বাদে বাকি সময়টা অর্থাৎ প্রায় ৫০০ বছর (১৪৫৩ থেকে ১৯৩৪ খৃস্টাব্দ) যাবত মসজিদ হিসাবেই ব্যবহৃত হইয়া আসিতেছিল। আর এই পর্যায়ে আসিয়া জনাব এরদোগান তো অন্য কোনো ধর্মের প্রার্থনালয়কে জবরদখল করিয়া আনিয়া, সেই ধর্মের লোকদেরকে জোরপূর্বক বিতাড়িত করিয়া আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তর করেন নাই। অথচ এই আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের ঘটনায় কাহারও কাহারও হৃদয় ভাঙ্গিয়া চৌচির হইলেও আমাদের পার্শ্ববর্তী বন্ধুপ্রতিম(!) দেশ ভারত বাবরি মসজিদের ক্ষেত্রে যাহা ঘটাইয়া চলিতেছে তাহাতে তো দেখি, উহারা কোনো কথা বলিতে চাহেন না, বরং মুখে কেবলই কুলুপ আটকাইয়া নিরবতা পালনের ব্রত পালন করিয়া যাইতে ভালোবাসেন। ইহার মাজেজা বোধগম্য হইয়া উঠিতেছে না! কিন্তু জানিতে বড়ই ইচ্ছা হয়! এই প্রকারের বৈষম্য খুবই ভাবায়ও বৈকি! ইহাকে কোন প্রকারের চরিত্রে আখ্যায়িত করা যায়, দয়া করিয়া যদি কেহ বলিতেন!

যুগে যুগে দেশ দখলের পরে খৃস্টানদের অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় দখলের কিছু নমুনাঃ

ঐতিহাসিকভাবে এই কথার সত্যতা রহিয়াছে যে, খোদ ভ্যাটিক্যানে অবস্থিত সেন্ট পিটার্স বেসিলিকা যাহা খৃস্টানদের সবচেয়ে বড় গীর্জা, তাহা কিন্তু রোমান বিভিন্ন মন্দিরের উপরেই নির্মিত হইয়াছে। যখন স্পেনের খৃস্টানরা সরকারি তদন্তের নামে স্পেন হইতে মুসলমানদের বাহির করিয়া দিয়াছিল, তখন কিন্তু তাহারা কর্ডোভার সবচেয়ে বড় মসজিদটিকে গীর্জায় পরিনত করিয়াছিল - যেখানে আজও পর্যন্ত মুসলমানদের নামাজ পড়া নিষিদ্ধ রহিয়াছে।

অনেক মসজিদ তো একেবারেই ধ্বংস করিয়া দেওয়া হইয়াছে। অনেকগুলোকে চার্চে পরিনত করা হইয়াছে। একইভাবে স্পেনিশরা যেখানেই গিয়াছে, সেখানেই অন্যদের ইবাদতখানাকে তাহারা গীর্জায় রূপান্তরিত করিয়াছে। আজকের যে মেক্সিকো সিটি মেট্রোপলিটন ক্যাথড্রেল ইহা মূলতঃ নির্মিত হইয়াছে অ্যাজটেক মন্দিরের উপরে। স্পেন মেক্সিকো বিজয়ের আগে সেখানে অ্যাজটেক জাতির সাম্রাজ্য ছিল। স্পেনিশরা তাহাদের মন্দিরের উপর নির্মাণ করিয়া নিল আজকের মেক্সিকো সিটি মেট্রোপলিটন ক্যাথড্রেল।

গ্রীসের থেসেলোনিকিতে অবস্থিত প্রোফেট এলিজার চার্চ মূলতঃ ছিল একটি মসজিদ। ইহাকে গীর্জায় পরিণত করা হইয়াছে। বুলগেরিয়ার সেভেন সেন্টস চার্চও মসজিদ হইতে রুপান্তরিত চার্চ। ক্রোয়েশিয়াতে ৩টি উসমানিয় আমলের মসজিদকে চার্চ বানানো হইয়াছে। ভিয়েতনামে ফরাসীরা বৌদ্ধ মন্দির ধ্বংস করিয়া সেন্ট জোসেফ ক্যাথড্রেল নির্মাণ করিয়াছে।

এই পরিসংখ্যান দেখিয়া কেহ বিভ্রান্ত হইবেন না আশা করি। কারণ, ইহা অতি সামান্য পরিসংখ্যান। ইহার প্রকৃত সংখ্যা অনেক বড়। সুতরাং বুঝিতে না পারার কথা নহে যে, অন্য ধর্মের ধর্মীয় উপসনালয় কোনোক্রমে নিজেদের দখলে আসিয়া পড়িলে উহাকে যথেচ্ছ অপব্যবহার করার সুনাম ইতিহাসে কাহাদের যথেষ্ট পরিমানে রহিয়াছে। খৃস্টানদের ইতিহাসে অন্যদের ইবাদতখানাকে গীর্জা বানানোর নজির একটি দু'টি নয় অনেক অনেক। খোদ সাবেক বিশ্ব মোড়ল রাশিয়ায় বিগত কয়েক শতাব্দীতে শত শত মসজিদকে পানশালা, নর্তকীদের আসর কিংবা গো-শালা বানানোর ইতিহাস বিশ্ববাসীর সামনে এখনও জ্বলজ্বল করিয়া ফিরিতেছে। ইহাই যাহাদের ইতিহাস, তাহারাই কি না আজ আয়া সোফিয়ার আসল স্বরূপে অর্থাৎ, মসজিদে প্রত্যাবর্তনে মায়াকান্নার মাতম তুলিতে চায়! সত্যিই সেলুকাস! ধরণী তুমি দ্বিধা হও!

ইহার বিপরীতে মুসলমানদের দেড় হাজার বছরের ইতিহাস তালাশ করিয়া এমন একটি উদাহরণ কেহ খুঁজিয়া আনিতে পারিবেন? পাওয়া যাইবে না। পৃথিবীতে এমন কোনো নজীর নাই যে, মুসলমানেরা অন্য ধর্মের কোনো উপাসনালয়কে খারাপ কিছুতে রূপান্তরিত করিয়াছেন। স্পেনে মুসলমানদের ভাগ্য বিপর্যয়ের পরে সেখানকার বহু মসজিদকে মদের বার ও ড্যান্স ক্লাবে পরিণত করা হইয়াছে এবং বহু মুসলমানকে জোরপূর্বক খৃষ্টান ধর্মে দিক্ষিত করা হইয়াছে। ইহা তো সেদিনকার কথা, মুসলমানদের মসজিদকে মদের বার বানাইয়াছে দখলদার মধ্যপ্রাচ্যের বিঁষফোড়া ইসরাইল।

মুসলমান নামধারীদের মধ্যে যাহারা আজ ‘আয়া সোফিয়া’কে তাহার আসল পরিচয়ে ফিরাইয়া আনার ঘটনায় তীব্র উষ্মা প্রকাশ করিতেছেন, এমনকি ইতিহাসের পাতা উল্টাইয়া সত্য ঘটনাগুলো দেখিয়া লওয়ারও প্রয়োজন মনে করিতেছেন না- তাহাদের নিকট বিনীত প্রশ্ন, চীন, রাশিয়া প্রভৃতি দেশ সাম্প্রতিক কয়েক শতকে তাহাদের দেশের অসংখ্য মসজিদ মাদরাসাকে পানশালা ও পতিতালয়ে রূপান্তরিত করিয়াছে, এইসব ঘটনা কি আপনাদের চোখে পড়ে? না কি এসব সত্য আপনাদের দেখিতে অনিহা? এইসব বর্বরতা প্রত্যক্ষ করার পরেও আপনাদের কান্না আসে না কেন? অথচ এরদোগান তো ক্রয়কৃত জমিতে পুরাতন মসজিদকে তাহার আসল রূপে ফিরাইয়া নিয়াছেন মাত্র! তো ইহাতে এত মায়াকান্নার কি থাকিতে পারে!

পৃথিবীতে বহু স্থানে আজও মুসলমানগণ অমুসলিমদের বর্বর অত্যাচারে ধর্মীয় অধিকার হারাইয়া মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হইতেছেন। মানবিক নূন্যতম অধিকার তাহাদের নাই।

চীনে কম করিয়া হইলেও দশ লক্ষাধিক মুসলমান বছরের পর বছর ধরিয়া বন্দিদশায় রহিয়াছেন। অধিকার বা মানবাধিকার বলিতে তাহাদের কিছু নাই। সর্বস্ব হারানো নিঃস্ব এইসব মুসলমানের চোখে এখন আর কোনো স্বপ্ন নাই। ভবিষ্যতের উজ্জ্বল রঙিন কোনো ছবি নাই। গাড়ি বাড়ি কিংবা একটু ভালোভাবে জীবনযাপনের কোনো আশা তাহাদের অবশিষ্ট নাই। তিলেতিলে নিঃশেষ হওয়াই যেন তাহাদের নিয়তি। প্রতিনিয়ত নির্যাতন আর নিষ্পেষনই তাহাদের বর্তমান। বাবা জানেন না, কখন তাহার কিশোরী মেয়েটিকে সরকারের লোকেরা নিজেদের ভোগের জন্য ধরিয়া নিয়া যাইবে। মা-ও জানেন না, সৈনিকদের মনোরঞ্জনের জন্য সংসার ছাড়িয়া কখন তাহাকে সেনা ক্যাম্পে ধরিয়া নিয়া যাওয়া হইবে। যুবক ছেলেটি জানে না, স্বজাতির সকল মানবাধিকার পদদলিত করার বিরুদ্ধে সামান্য প্রতিবাদের কারণে কখন তাহার বুকে সরকারের ঘাতক বাহিনীর শেষ বুলেটটি বিদ্ধ হইবে।

মূলতঃ তাহাদের ভবিষ্যত অন্ধকার। তাহারা জানেন না, তাহারা কোন অপরাধে অপরাধী। কিন্তু বস্তুতঃ তাহাদের অপরাধ একটাই। তাহা হইলো, তাহারা মুসলমান। মুসলমান হওয়ার মহাঅপরাধে তাহারা অপরাধী। তাহাদের ব্যাপারে আপনাদের বক্তব্য কি? তাহাদের কথা স্মরণ হইলে আপনার চোখ কখনো কি অশ্রুসজল হইয়া ওঠে? এই নিঃস্বদের জন্য দুই ফোটা অশ্রু বিসর্জন দেওয়ার ফুরসত কখনো কি আপনার হইয়াছে?

হাদিসের ভাষ্য, আযানের ধ্বনি শয়তানের গায়ে জ্বালাপোড়া ধরাইয়া দেয়ঃ

বস্তুতঃ তুরষ্কের মহান প্রেসিডেন্ট এরদোগান একটি ভালো কাজ করিয়াছেন। তিনি মসজিদকে মসজিদের অবস্থায় ফিরাইয়া আনিয়াছেন। কেহ কেহ ইহাকে খুব বড় কোনো কাজ মনে না করিলেও দীর্ঘ দিন থামিয়া থাকার পরে পৃথিবীর পুরাতন একটি স্থান হইতে অন্ততঃ আল্লাহ তাআ'লার বড়ত্বের ঘোষনা আবার উচ্চারিত হইতে থাকিবে, ইহাই শান্তি এবং প্রশান্তির কথা। আযানের মাধ্যমে 'আল্লাহু আকবার', 'আল্লাহ মহান' -এর সুউচ্চ আহবান যখন ধ্বনিত হইতে থাকে মসজিদের মিনার থেকে, হাদিসের ভাষ্যমতে, শয়তানের গায়ে তখন জ্বালাপোড়া ধরিয়া যায়। দিক বিদিক জ্ঞানশুন্য হইয়া সে বাঁচিবার জন্য পশ্চাদ্ধার দিয়া বায়ু ত্যাগ করিতে করিতে ভাগিয়া যাইতে থাকে। আয়া সোফিয়ার ঘটনায় যাহাদের জ্বালাপোড়া শুরু হইয়াছে, বুঝার প্রয়োজন রহিয়াছে- তাহারা কাহারা এবং কেন তাহাদের এই জ্বালাপোড়া!

শেষের প্রার্থনাঃ

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা তাহার বড়ত্বের এই আহবানকে আমাদের অন্তরের শান্তি এবং প্রশান্তিতে পরিণত করিয়া দিন। তুরষ্কের প্রেসিডেন্ট হাফেজ রজব তাইয়্যেব এরদোগানের এই মহান কাজটিকে কবুল করুন। বাইতুল মুকাদ্দাস, বাবরি মসজিদসহ বিশ্বের সকল প্রান্তে শিকল পড়া, জিঞ্জিরাবদ্ধ মসজিদগুলোকে মুক্ত করার হিম্মত ও যোগ্যতা বহুধাবিভক্ত মুসলিম জাতিকে দান করুন। চরম নির্যাতিত উইঘুর ও আরাকানের মুসলিম, মসজিদ, মকতব এবং মাদরাসাগুলোকে আবার পূর্বের চেয়ে ভালো অবস্থায় ফিরাইয়া আনার তাওফিক দান করুন।

তথ্যসূত্র ও কৃতজ্ঞতাঃ

www.wikipedia.org।
https://www.quora.com/Why-does-Turkey-want-to-turn-Hagia-Sophia-to-a-mosque-even-if-it-means-losing-a-lot-of-money-from-tourists-visiting-it
www.islamicity.org
https://www.dailyinqilab.com/article/310157/আয়া-সোফিয়ায়-প্রথম-জুমায়-মুসল্লির-ঢল
https://islamtime24.com/2020/07/14/ইতিহাস-ও-ইসলামের-আয়নায়-আয়/
https://islamtime24.com/2020/07/13/যুগে-যুগে-দেশ-দখলের-পর-খৃস/
https://www.ummah24.com/?p=31459
https://www.bbc.com/bengali/news-53527726
https://www.bbc.com/bengali/news-53267334
ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট বইপত্র।
সাম্প্রতিক প্রকাশিত অন্যান্য পত্র পত্রিকা ও জার্নাল।



ছবিঃ অন্তর্জাল।

মন্তব্য ৪৭ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (৪৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:০৫

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: হজরত, বরাবরের মতই আনুপুঙ্খিক আলোচনা। কিন্তু, ভেবে দেখতে অনুরোধ করি, ধর্মের রাজনিতিকিকরনের বৈধতা সংক্রান্ত এ ধরণের পোস্ট ব্লগে উগ্র ধর্মবিদ্বেষীদের উপস্থিতিকে যৌক্তিক ও প্রাসঙ্গিক করে তোলে কিনা। শুভকামনা আপনার জন্যে।

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:২২

নতুন নকিব বলেছেন:



শুকরিয়া, কথাটা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বলে। আসলে লেখাটা শুরু করেছিলাম সংক্ষিপ্তভাবে আয়া সোফিয়ার সঠিক ইতিহাসটা তুলে আনার অভিপ্রায় নিয়ে। ইতিহাস না জানার ফল যে কতটা ভয়াবহ তা জ্ঞানী ব্যক্তি মাত্রই উপলব্ধি করে থাকবেন। আয়া সোফিয়ার সঠিক ইতিহাস পাঠ করার পূর্বে আমি নিজেও একটাসময় কিছুটা দ্বিধার মধ্যে ছিলাম।

আপনার হাতে সময় থাকা সাপেক্ষে আগাগোড়া লেখাটা পাঠ করার অনুরোধ থাকলো এবং আপত্তি আসতে পারে এমন কোনো কথা বা শব্দ আপনার দৃষ্টিগোচর হলে মেহেরবানি পূর্বক একটু জানাবেন। যতটুকু দেখেছি, আপনার পর্যবেক্ষন চমৎকার। এডিট করে দিব ইনশাআল্লাহ। এর জন্য দুআ এবং আগাম কৃতজ্ঞতা।

২| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৪৫

পদ্মপুকুর বলেছেন: পুরো লেখাটাই পড়লাম। আয়া সোফিয়া নিয়ে দেশি বিদেশী সব রিপোর্টেই সুলতান মেহমেদ এর ক্রয়সংক্রান্ত বিষয়টি সযতনে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। আপনাকে ধন্যবাদ ফ্যাকচুয়াল পোস্ট দিয়েছেন। আল্লাহ আপনাকে যথাযথ প্রতিদান প্রদান করুন।

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৫৪

নতুন নকিব বলেছেন:



শুকরিয়া, অনিঃশেষ আন্তরিকতা নিয়ে পোস্টটি পাঠ করায় এবং মূল্যবান মন্তব্য রেখে যাওয়ায়। আপনার প্রেরণাদায়ক কমেন্টস থেকে আশ্বস্ত হতে পেরে আনন্দিতবোধ করছি যে, গত কয়েকটি দিন সময় নিয়ে গুছিয়ে আনা এই পোস্টটির প্রয়োজন ছিল।

কল্যানের দুআ সবসময়। আল্লাহ পাক আপনার মঙ্গল করুন।

৩| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৪৬

পদ্মপুকুর বলেছেন: সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: হজরত, বরাবরের মতই আনুপুঙ্খিক আলোচনা। কিন্তু, ভেবে দেখতে অনুরোধ করি, ধর্মের রাজনিতিকিকরনের বৈধতা সংক্রান্ত এ ধরণের পোস্ট ব্লগে উগ্র ধর্মবিদ্বেষীদের উপস্থিতিকে যৌক্তিক ও প্রাসঙ্গিক করে তোলে কিনা। শুভকামনা আপনার জন্যে।

কিন্তু সঠিক বিষয়টা জানানোটাও প্রয়োজন।

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:০০

নতুন নকিব বলেছেন:



কিন্তু সঠিক বিষয়টা জানানোটাও প্রয়োজন।

-জ্বি, ঠিক বলেছেন। পূর্ণ সহমত। আবারও এসে গুরুত্বপূর্ণ অভিমত ব্যক্ত করায় ধন্যবাদ।

৪| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৪৭

অক্পটে বলেছেন: ভুল ভাঙ্গিল, ইতিহাস জানলাম। ধন্যবাদ আপনাকে। আমারও মনে হয়েছিল এরদোগান এটা কি করলেন। যাক ভাল লাগল আপনার সুদীর্ঘ লেখাটি পড়ে।

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:০৩

নতুন নকিব বলেছেন:



শুকরিয়া অশেষ। আপনার ভুল ভেঙ্গেছে জেনে আনন্দিত। সত্যি কথা হচ্ছে, এই একই ভুলের মধ্যে আমিও ছিলাম কিছুটা।

আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ। সুদীর্ঘ লেখাটি সময় ব্যয় করে পড়েছেন জেনে সত্যিই ভালো লাগছে।

অনেক ভালো থাকার দুআ।

৫| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৪৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: কিছুদিন আগেই ইস্তান্বুল ঘুরে এসেছি। আয়া সোফিয়ার বিপরীতেই আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিশাল মসজিদ আছে, যা সুলতান আহমেত মসজিদ বা ব্লু মস্ক নামে খ্যাত। একই চত্বরে আরেকটা বিশাল মসজিদের আসলে কোন প্রয়োজন নাই। আপনি যা বলেছেন, সঠিক; তারপরেও এই স্থাপনাটাকে মিউজিয়াম হিসাবে রাখাটাই আমার কাছে যুক্তিযুক্ত।

এটা এরদোগানের যতোটা ধর্মীয় কারনে করা, তার চাইতে বেশী রাজনৈতিক কারনে।

আরেকটা কথা, খৃষ্টান বা ইহুদীরা অনেক ফাউল কাজ করেছে, সন্দেহ নাই। সেখানে মুসলমানদের উদারতা দেখিয়ে মহান হওয়ার সুযোগ ছিল। । উহারা অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম হইবো না কেন?

আপনার তথ্যবহুল লেখাটা চমৎকার হয়েছে। :)

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:১৮

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনি আপনার নাম যতই 'ভুয়া' রাখেন না কেন, আর প্রিয় ব্লগার বোন জুন আপনাকে এই নামে যতই ডাকুন না কেন, সত্যিকারার্থে আপনি কিন্তু কখনোই 'ভুয়া' নন। বরং পরম সৌভাগ্যবান একজন আসল এবং খাঁটি মানুষ। আমরা ইচ্ছে থাকার পরেও যেতে পারিনি, আপনি কিছু দিন আগেও ঘুরে এসেছেন, সৌভাগ্য বটে। দুআ থাকলো, আপনার এই ঘোরাঘুরির সৌভাগ্য আরও বর্ধিত হোক।

আয়া সোফিয়ার বিপরীতেই আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিশাল মসজিদ আছে, যা সুলতান আহমেত মসজিদ বা ব্লু মস্ক নামে খ্যাত। একই চত্বরে আরেকটা বিশাল মসজিদের আসলে কোন প্রয়োজন নাই। আপনি যা বলেছেন, সঠিক; তারপরেও এই স্থাপনাটাকে মিউজিয়াম হিসাবে রাখাটাই আমার কাছে যুক্তিযুক্ত।

এটা এরদোগানের যতোটা ধর্মীয় কারনে করা, তার চাইতে বেশী রাজনৈতিক কারনে।


-হতে পারে হয়তো। তুরষ্কের সাম্প্রতিক রাজনীতি সম্পর্কে আপনার ভালো খোঁজখবর আছে।

আরেকটা কথা, খৃষ্টান বা ইহুদীরা অনেক ফাউল কাজ করেছে, সন্দেহ নাই। সেখানে মুসলমানদের উদারতা দেখিয়ে মহান হওয়ার সুযোগ ছিল। । উহারা অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম হইবো না কেন?

-আসল ফাউল কাজটা কিন্তু খৃষ্টান বা ইহুদীদের কেউ করেননি। করেছিলেন সাবেক শাসক মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগান তার সংশোধন করলেন মাত্র। সেই ভুলের মাশুল আদায় করলেন। তাই বলা অত্যুক্তি হবে না যে, আয়া সোফিয়াকে পুনরায় তার আসল পরিচয় অর্থাৎ, মসজিদে ফিরিয়ে আনার ঘটনাটা মূলতঃ খৃষ্টান বা ইহুদীদের কোনো কাজের ফলশ্রুতিতে ঘটেছে এমন নয়। তবে আপনার উদার মানসিকতা প্রশংসনীয়।

আপনার তথ্যবহুল লেখাটা চমৎকার হয়েছে। :)

-প্রীত। আপনার এই পোস্টে আগমন এবং মূল্যবান মন্তব্যে সত্যি অভিভূত। কল্যানের দুআ সবসময়।

৬| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৫৮

জুন বলেছেন: কোন কিছু নিয়ে মারামারি হিংসা হিংসি ঝগ্রা বিবাদ আমার পছন্দ না নতুন নকিব । রাজনৈতিক নেতারা একটু উদার হলে ভালো হয়। দেখতেছেন তো পাশের দেশে আযোধ্যা নিয়ে কি হচ্ছে ? মনে হয় ওদের আর কোন চিন্তা নাই একমাত্র এই বিষয় ছাড়া ।করোনায় বিপর্য্যস্ত দেশ, লক্ষ লক্ষ লোক চাকরী হারা, খেয়ে না খেয়ে দিন গুজরান করছে, চীনের হুমকি ,আমপানের ভয়াবহতা সব ছাপিয়ে আজ দেশের সর্বাধিনায়ক মন্দির তৈরীতে ব্যাস্ত। ভুয়ার মন্তব্যের সাথে একমত ।

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:২৫

নতুন নকিব বলেছেন:



কোন কিছু নিয়ে মারামারি হিংসা হিংসি ঝগ্রা বিবাদ আমার পছন্দ না নতুন নকিব । রাজনৈতিক নেতারা একটু উদার হলে ভালো হয়। দেখতেছেন তো পাশের দেশে আযোধ্যা নিয়ে কি হচ্ছে ? মনে হয় ওদের আর কোন চিন্তা নাই একমাত্র এই বিষয় ছাড়া ।করোনায় বিপর্য্যস্ত দেশ, লক্ষ লক্ষ লোক চাকরী হারা, খেয়ে না খেয়ে দিন গুজরান করছে, চীনের হুমকি ,আমপানের ভয়াবহতা সব ছাপিয়ে আজ দেশের সর্বাধিনায়ক মন্দির তৈরীতে ব্যাস্ত।

-জানি, আপনি শান্তিকামী মানুষ। আমরাও তো আপনার পথেরই পথিক। আর আপনি চমৎকার বলেছেন। আসলে সঠিক ইতিহাসটা তুলে ধরার প্রয়োজন ছিল। অনেকেই জানেন না। অনেককে জানতে দেয়া হচ্ছে না। ভুলভাল গিলিয়ে স্বার্থসিদ্ধির প্যাচতাল চলছে দুনিয়াজুড়ে। তাই মূলতঃ নিতান্ত দায়ে পড়েই এই পোস্ট।

ভুয়ার মন্তব্যের সাথে একমত ।

-তার মন্তব্য আমার কাছেও ভালো লেগেছে। তিনি উদার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গঠনমূলক কথা বলেছেন। ভুয়ার মন্তব্যের উত্তরে কিন্তু আপনার নামটা বিশেষ কারণে স্মরণ করতে হয়েছে। আশা করি, কষ্ট নিবেন না।

কল্যানের দুআ সবসময়।

৭| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:০২

রাজীব নুর বলেছেন: ৫'শ ৩৭ খ্রিষ্টাব্দে বাইজেন্টাইন শাসনামলে প্রথম জাস্টিনিয়ানের নির্দেশে নির্মাণ কাজ শেষ হয় 'আয়া সোফিয়া'র'। এই কথাটা কি সঠিক?

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:২৬

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রাপ্ত তথ্যমতে সঠিক।

ধন্যবাদ আপনাকে।

৮| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৪৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: প্রথম জুমায় সেখানের সব রাজনৈতিক নেতা নামাজ পড়েছে। আবার মসজিদ অপছন্দ করে এমন কেউ ক্ষমতায় আসলে গীর্জা বানাবে । তাদের দেশ যেটা মন চায় তাই করবে । আমরা কেন এত বলি বুঝি না ।

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:৩৩

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রথম জুমায় সেখানের সব রাজনৈতিক নেতা নামাজ পড়েছে। আবার মসজিদ অপছন্দ করে এমন কেউ ক্ষমতায় আসলে গীর্জা বানাবে । তাদের দেশ যেটা মন চায় তাই করবে । আমরা কেন এত বলি বুঝি না ।

-একার্থে আপনার কথা সঠিক। যার ভাবনা তাকেই ভাবতে দেয়া উচিত। কিন্তু অবাধ যোগাযোগ ব্যবস্থার ফলশ্রুতিতে বিশ্ব এখন বলতে গেলে হাতের মুঠোয়। এই সময়ে ইচ্ছে করলেও আমাদের চোখ কান বন্ধ করে থাকার উপায় নেই। তুরষ্ক কি করেছে- এর জন্য নানানজন নানান কথা বলেন। সঠিক ব্যাপারগুলো ইতিহাসের আলোকে জানার চেষ্টা করেন কম লোকই। সে কারণে সঠিক ইতিহাসের কিছু কথা তুলে ধরার জন্যই সামান্য এই লেখা।

আপনার জন্য কল্যানের দুআ সবসময়।

৯| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:৪৬

জাহিদ হাসান বলেছেন: তুরস্ক তার দেশের ভিতরে জনগনের সমর্থন নিয়ে যা ইচ্ছা করুক এই নিয়ে আমাদের মাথাব্যাথার কিছু নেই।

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:৩৮

নতুন নকিব বলেছেন:



সঠিক এবং সুন্দর বলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

আসলে এই কথার সাথে সাথে সঠিক বিষয়গুলো সত্য ইতিহাসের আলোকে আমাদের জেনে নেয়ারও একটা প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সেই চিন্তা থেকেই পোস্ট।

আপনার জন্য কল্যানের দুআ সবসময়।

১০| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:৪৮

আখেনাটেন বলেছেন: ব্লগার ভুয়া মফিজ ও জুনাপার সাথে একমত। হিংসা হিংসা ডেকে আনে।

আমি বাবরি মসজিদ নিয়ে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের বিপক্ষে ভারতের 'দ্যা হিন্দু' ও পাকিস্থানের 'ডন' পত্রিকার সামাজিক সাইটে কঠোর সমালোচনা করেছিলাম। ঠিক একইভাবে, হায়া সোফিয়া নিয়ে ঐ দুই পত্রিকাতে কট্টর মুসলিমদের বিপক্ষেও লিখেছিলাম। মজার ব্যাপার হচ্ছে একই শ্রেণীর পাঠক দুই ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এগুলোকে আমার 'ভণ্ডামী' মনে হয়েছে।

'এক্সট্রিমিজম' সর্বক্ষেত্রেই পরিহার্য। এরদোগান যেটা করেছে তা পুরোটাই রাজনৈতিক এবং অবশ্যই নিন্দনীয়। ভুয়া মফিজের সাথে বলতে চাই, ' উহারা অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম হইবো না কেন?'

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:০৪

নতুন নকিব বলেছেন:



হিংসা হিংসা ডেকে আনে।

-একদম সত্যি বলেছেন। কিন্তু এটাকে তো একজন মুসলিম শাসক যিনি কি না ছিলেন পশ্চিমাদের পদলেহী, আর তার বিকৃত মানসিকতায় মসজিদকে জাদুঘরে পরিনত করার মাশুল ছাড়া অন্য কিছু বলা ঠিক নয়। কারণ, ১৪৫৩ খৃষ্টাব্দে স্থাপনাটি ক্রয়ের পর থেকেই এটি মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। ৫০০ বছর মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার পরে ১৯৩৪ খৃষ্টাব্দে কামাল আতাতুর্ক এসে এটিকে জাদুঘরে পরিণত করেন। অন্য ধর্মামবলম্বী কেউ এসে কিন্তু মসজিদটিকে জাদুঘরে রূপান্তরের সাহস সেখানে করেনি।

আমি বাবরি মসজিদ নিয়ে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের বিপক্ষে ভারতের 'দ্যা হিন্দু' ও পাকিস্থানের 'ডন' পত্রিকার সামাজিক সাইটে কঠোর সমালোচনা করেছিলাম। ঠিক একইভাবে, হায়া সোফিয়া নিয়ে ঐ দুই পত্রিকাতে কট্টর মুসলিমদের বিপক্ষেও লিখেছিলাম। মজার ব্যাপার হচ্ছে একই শ্রেণীর পাঠক দুই ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এগুলোকে আমার 'ভণ্ডামী' মনে হয়েছে।

-সহমত। এমনটা কখনোই হওয়া উচিত নয়। এটা একধরণের দ্বিচারিতা। তবে আপনি নিশ্চয়ই জানেন, বাবরি মসজিদ আর আয়া সোফিয়ার ইতিহাস একইরকম নয়।

'এক্সট্রিমিজম' সর্বক্ষেত্রেই পরিহার্য। এরদোগান যেটা করেছে তা পুরোটাই রাজনৈতিক এবং অবশ্যই নিন্দনীয়। ভুয়া মফিজের সাথে বলতে চাই, ' উহারা অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম হইবো না কেন?'

-ভুয়া মফিজ ভাইকে বলিনি। আপনার কাছে একটু জানতে চাই, দয়া করে যদি বলেন- এখানে তো কামাল আতাতুর্ক ছাড়া আর কাউকে দেখা যায় না। তাহলে এই 'উহারা' বলতে কারা?

সর্বোপরি মন্তব্যের ঘরে আপনাকে পেয়ে যারপরনাই আনন্দিত। অনেক অনেক কল্যানের দুআ। সবসময় ভালো থাকুন।

১১| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:৫৭

রাশিয়া বলেছেন: আমি যদি নগদ টাকায় কোন মন্দির কিনে ভেঙ্গে সেখানে মসজিদ বানাই, তাহলে কার কি বলার আছে। কোন মসজিদের জায়গা যদি কেউ কিনে সেখানে মন্দির বানায়, তাহলেও তো আপত্তি করার কথা না, যদিও ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় মসজিদ নির্মাণের বিধান ইসলামে নেই। এরদোগান যা করেছে, তাতে তো কোন রক্তপাত হয়নি। কিন্তু অযোধ্যায় কি হল? মসজিদ তো ভাঙলোই, সেই অযুহাতে আবার শ'খানেক মুসলিমও কতল করল।

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:১০

নতুন নকিব বলেছেন:



আমি যদি নগদ টাকায় কোন মন্দির কিনে ভেঙ্গে সেখানে মসজিদ বানাই, তাহলে কার কি বলার আছে। কোন মসজিদের জায়গা যদি কেউ কিনে সেখানে মন্দির বানায়, তাহলেও তো আপত্তি করার কথা না, যদিও ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় মসজিদ নির্মাণের বিধান ইসলামে নেই। এরদোগান যা করেছে, তাতে তো কোন রক্তপাত হয়নি। কিন্তু অযোধ্যায় কি হল? মসজিদ তো ভাঙলোই, সেই অযুহাতে আবার শ'খানেক মুসলিমও কতল করল।

-সঠিক কথাটা আপনি ধরেছেন। শুকরিয়া। দেখার বিষয় জমিটির ক্রয় বৈধ কি না। বৈধভাবে ক্রয়কৃত জমিতে আপনি যা খুশি করতে পারেন। যে কোনো ক্রেতাই এই অধিকার রাখেন।

অযোধ্যার বাবরি মসজিদের বিষয়ে পশ্চিমাদের ইউরোপ আমেরিকার কাউকে কোনো কথা বলতে শুনেছেন আজ পর্যন্ত? আমি জানি না, তারা এ ব্যাপারে একটি শব্দ উচ্চারণ করেছেন কি না। মোদীজীর উগ্রবাদী দখলদারী নীতির বাস্তবায়নে সেখানে আদালত সাজানো রায় দিয়ে চলেছে, আজ পর্যন্ত কেউ কোনো কথা বলছে না। এর কি করবেন?

কল্যানের দুআ সবসময়।

১২| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:২৫

আখেনাটেন বলেছেন: 'উহারা' বলতে আমি (ভুয়া মফিজ কাদের বুঝাতে চেয়েছে জানি না) 'কট্টরপন্থী অন্যান্য ধর্মাবলম্বী'কে বুঝিয়েছি........যেমন ভারত-আরএসএস, ঈসরাইল-কট্টরপন্থীগ্রুপ, পশ্চিমা ইভানজেলিক্যালদের মতো সাম্প্রাদায়িক কাল্ট গোষ্ঠী.........যারা নানাভাবে ধর্মের নামে অধর্মের কাজ করছে, ঠিক 'আইএস বা আল কায়েদা'র মতো।



আপনিও ভালো থাকুন নতুন নকিব ভাই।

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:০২

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ, সময় ব্যয় করে আবারও আমার প্রতিমন্তব্যের উত্তরে আপনার অভিমত ব্যক্ত করে যাওয়ায়।

অনেক অনেক কল্যানের দুআ সবসময়।

১৩| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:২৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনার প্রতি-মন্তব্যের কারনে আবার আসলাম।

ধর্মীয় বিষয়ে আপনার জ্ঞান আমার চাইতে অনেক অনেক বেশী। আমি যতোটুকু জানি, ইসলামে বাহুল্যতাকে পরিহার করতে বলা হয়েছে। এই যে, এক মিনিটেরও কম হাটা দুরত্বে দু'দুটা বিশাল মসজিদ। এটা কি বাহুল্যতা না? সুলতান আহমেত মসজিদে আমি নামায পড়েছি। বিশাল জায়গা। ওয়াক্তের নামাজে পাচ ভাগের একভাগও ভরে না। তাহলে? আরেকটা মসজিদের উপযোগিতাটা কি? দয়া করে আমাকে বোঝান।

আসলে তুর্কী সাম্রাজ্যের অধিপতিরা যেভাবে বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে ইসলামের মূল শিক্ষা থেকে সরে গিয়ে নিজেদের পতন ডেকে এনেছিল, তারই ধারাবাহিকতায় এরদোগান এটা করেছে। আমার আপত্তির কারন, এখানে ইসলামের প্রতি তার ভালোবাসা কাজ করছে না। কাজ করছে ক্ষমতার লোভ! দুঃখের বিষয় হলো, বর্তমান বিশ্বে এমন কোন মুসলিম নেতা নাই, যার ইসলাম ধর্মের প্রতি ভালোবাসা আছে। এদের সীমাহীন ভালোবাসা ক্ষমতার প্রতি। সে'জন্যেই আজ মুসলমানদের এই দূর্গতি। এসব নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রচন্ড রাগ হয়, তাই বলতে চাই না। আপনাকে অল্প করে বললাম।

আরেকটা কথা, খৃষ্টান বা ইহুদীরা অনেক ফাউল কাজ করেছে, সন্দেহ নাই। সেখানে মুসলমানদের উদারতা দেখিয়ে মহান হওয়ার সুযোগ ছিল। । উহারা অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম হইবো না কেন? আমার এই মন্তব্য কামাল আতাতুর্কের ক্রিয়াকর্মের কারনে না, পোষ্টের শেষের দিকে খৃষ্টানদের অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়কে দখল করার বিষয়ে আপনার লেখার কারনে করা।

আবারও বলি, আয়া সোফিয়া মিউজিয়াম থাকলেই বরং ভালো হতো। এতে ইসলাম ধর্মের উদারতাই প্রকাশ পেতো।

অটোম্যান সম্রাটদের বিলাসিতার নমুনা আমার ইস্তান্বুলের পোষ্টগুলোতে ছড়িয়ে আছে। আপনাকে প্রথম পর্বের লিঙ্ক দিচ্ছি। প্রতি পর্বেই পরের পর্বের লিঙ্ক আছে। চোখ বুলান। আপনাকে পোষ্টগুলো দেখতে বলার আরো কিছু কারন আছে। যথাসময়ে কথা হবে।ইস্তান্বুলের অলি-গলিতে কয়েকটা দিন - প্রথম পর্ব

আর আপনি আমাকে যতোই জেনুইন বানানোর চেষ্টা করেন না কেন, আমি ভুয়া-ই, এতে কোন সন্দেহ নাই। :-B

২৬ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৪৬

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার প্রতি-মন্তব্যের কারনে আবার আসলাম।

ধর্মীয় বিষয়ে আপনার জ্ঞান আমার চাইতে অনেক অনেক বেশী। আমি যতোটুকু জানি, ইসলামে বাহুল্যতাকে পরিহার করতে বলা হয়েছে। এই যে, এক মিনিটেরও কম হাটা দুরত্বে দু'দুটা বিশাল মসজিদ। এটা কি বাহুল্যতা না? সুলতান আহমেত মসজিদে আমি নামায পড়েছি। বিশাল জায়গা। ওয়াক্তের নামাজে পাচ ভাগের একভাগও ভরে না। তাহলে? আরেকটা মসজিদের উপযোগিতাটা কি? দয়া করে আমাকে বোঝান।


-আপনি জাগতিক বিষয়াদিতে জ্ঞানী হলেও ধর্মীয় বিষয়েও আপনার ধারণা স্বচ্ছ। আমার কাছে ভালো লাগে। আপনার বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা অবশ্যই পোষন করি। আর আমার জ্ঞান অতি সীমিত। বেশী বলাটা আপনার মহত্ব। ইসলাম বাহুল্যতা পরিহারের নির্দেশ দেয়। কুরআনে হাকিমে অপচয়কারীকে শয়তানের ভ্রাতাও বলা হয়েছে। কিন্তু একটা ব্যাপার হচ্ছে, ধর্মীয় নিয়মে কোনো স্থানকে মসজিদ বানানো হলে এবং সেখানে নিয়মিত নামাজ আদায় করার পরে ঐ স্থানটি আর অন্য কোনো কাজের জন্য ব্যবহারের সুযোগ থাকে না। এইক্ষেত্রটি ব্যক্তিগত মতামতের উপরে নির্ভরশীল নয় বরং এটি গুরুত্বপূর্ণ শরয়ী বিষয় হওয়ায় এর সাথে শরিয়তের মাসআলা যুক্ত। সেকারণে সঠিক মাসআলা জেনে নেয়া উত্তম মনে করি-

মসজিদকে অন্য কাজে ব্যবহারের হুকুম কি?

একবার মসজিদ হিসেবে ওয়াকফকৃত হবার পর মসজিদ নির্মাণ হয়ে যাবার পর তা কিয়ামত পর্যন্ত মসজিদ হিসেবেই বাকি থাকবে। এটিকে পাল্টানো কিছুতেই জায়েজ নয়। বিশেষ কিছু কারণ ছাড়া, যেসব কারণ এখানে বিদ্যমান নেই।

لا يجوز نقض المسجد ولا بيعه ولا تعطيله وان خربت المحلة (تفسير قرطبى، سورة بقرة، الآية-114-1/7، تفسير المراغى-1/198، تفسير بيضاوى-1/386)

ثم الأقدام أفضل لسبقه حكما، إلا إذا كان الحادث أقرب إلى بيته، فإنه أفضل حينئذ، لسبقه حقيقة وحكما، وذكر قاضى خان وصاحب منية المفتى وغيرهما أن الأقدام افضل، (الحلبى الكبير، فصل أحكام المسجد-613)

اذا وقف كتبا وعين موضعها، فإن وقفها على أهل ذلك الموضع، لم يجز نقلها منه، لا لهم ولا لغيرهم، (رد المحتار، كتاب الوقف، مطلب فى نقل الوقف من محلها-4/366، سعيد)

কাছাকাছি একাধিক মসজিদ থাকলে করণীয়ঃ

কাছাকাছি একাধিক মসজিদ থাকলেও কোন মসজিদকে পরিকল্পিতভাবে বিরান করা জায়েজ নয়। প্রয়োজনে আরো মসজিদ নির্মিত হতে পারে, কিন্তু পুরাতন মসজিদকেও আবাদ রাখতে হবে।

وعن عطاء: لما فتح الله تعالى الأمصار على يد عمر رضى الله عنه أمر المسلمين أن يبنوا المساجد وأن لا يتخذوا في مدينة مسجدين يضارّ أحدهما صاحبه. (الكشاف عن حقائق غوامض التنزيل، سورة توبة، الأية-107-2/214، تفسير روح المعانى-11/21، تفسير قرطبى-175/1)

এমনকি মসজিদের জমিতে মসজিদ ভেঙ্গে মাদরাসা নির্মাণও করা যাবে নাঃ

মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জমিতে মসজিদ ভেঙ্গে মাদরাসা নির্মাণ করাও জায়েজ নয়। তবে প্রয়োজনে মসজিদে কুরআন শিক্ষা চালু করা যেতে পারে।

فان وقفها على مستحقى وقفه، لم يجز نقلها، (الدر المختار، كتاب الوقف-4/365، سعيد، وكذا فى النهر الفائق، كتاب الوقف-3/318، وكذا فى الجر المنتقى، كتاب الوقف-2/581)

اذا وقف كتبا وعين موضعها، فإن وقفها على أهل ذلك الموضع، لم يجز نقلها منه، لا لهم ولا لغيرهم، (رد المحتار، كتاب الوقف، مطلب فى نقل الوقف من محلها-4/366، سعيد)

উপরোক্ত মূলনীতিগুলোর আলোকে উভয় মসজিদকেই আবাদ রাখতে হবে। সর্বোপরি কথা হচ্ছে, কোনো স্থানকে মসজিদ বানানো হলে এবং সেখানে দীর্ঘ দিন নিয়মিত নামাজ আদায় করা হয়ে থাকলে পরবর্তীতে ঐ স্থানটি আর অন্য কোনো কাজের জন্য ব্যবহারের সুযোগ থাকে না।

তো, ৫০০ বছরাধিককাল মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করার পরে আয়া সোফিয়াকে জাদুঘর বানিয়ে রাখার বিষয়টা কতটুকু সঠিক কাজ হতে পারে- আপনার বিবেচনার জন্য রেখে দিলাম।

আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের বাকি অংশের উত্তরে পরবর্তীতে ইনশাআল্লাহ আবারও কথা বলার ইচ্ছে।

ভালো থাকার দুআ সবসময়।

১৪| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:২৭

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: @ব্লগার পদ্মপুকুরঃ

হজরত, আমার ইতিহাস পাঠের স্বল্প অভিজ্ঞতা থেকে আমি যদ্দুর বুঝি - ইতিহাসে সঠিক / বেঠিক বলে কিছু নাই। আছে কেবল পারস্পেক্টিভ। ধরেন - মুসলিম ইতিহাস, হিন্দু ইতিহাস, পশ্চিমা ইতিহাস, প্রাচ্যিয় পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে অ্যাপ্রোচ করা ইতিহাস ইত্যাদি।

@ব্লগার নতুন নকিব

হজরত, শব্দচয়নে সেনসিটিভিটি জিনিসটা অনেকাংশেই ভেতর থেকে আসে, বা বিলট ইন একটা ব্যাপার। এইটা আলাদা করে ধরায়ে দিতে বললে মুশকিল। যেমন ধরেন, আপনি আমাকে বললেন পুরো লেখা মনোযোগ দিয়ে পড়তে, এই মন্তব্য স্লাইট একটা হিন্ট দেয় যে আপনি ধারণা করে নিয়েছেন আমি আপনার পুরো লেখা না পড়েই মন্তব্য করেছি, এটা কেউ ইনসেনসিটিভিটির একটা উদাহরণ হিসেবে কাউন্ট করতে পারে। আবার একদম শিরোনামে যে "মায়াকান্না" শব্দটা ব্যবহার করেছেন - এটাও ইনসেনসিটিভ। এরকম উদাহরণ আরও অনেক দেয়া যায় লেখার ভেতর থেকে। কিন্তু আপনি নিজে থেকে যদি ব্যাপারটা রিয়ালাইজ না করেন, তবে কারো সেটা ধরায়ে দেয়া খুব ফলপ্রসূ কোন এফেক্ট বয়ে আনবে না।

সুলতান মাহমুদের চার্চ কেনার দলিল হিসেবে উইকিপিডিয়া, ক্যুরা ডটকম, বা ইনকিলাব পত্রিকার রেফারেন্সও প্রশ্ন সাপেক্ষ। চার্চ কিনে নিয়ে সেটাকে মসজিদ বানায়ে ফেলাকে ইসলামের বিশাল বিজয় হিসেবেও আমি দেখতে নারাজ।

অবশ্য আমি কি ভাবি - এতে করে কিই বা এসে যায়?

চিন্তা করে দেখুন হজরত, আজকাল ঢাকার বেশীরভাগ সুপার শপে ভারতীয় কসমেটিক্স / এক্সেসরিজ ভর্তি। কাল যদি ভারতের বদলে টার্কি মালামালে সুপার শপ সয়লাব হয়ে যায়, বাংলাদেশের যে বেকার মুসলিম একটা ক্ষুদ্র ব্যবসা দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে, তার লাভ হবে কি? মানে, আমরা ভারতীয় আঞ্চলিক সাম্রাজ্যবাদের প্রভাববলয় থেকে বের হয়ে যদি টার্কি বা আরব আমিরাতের সাম্রাজ্যবাদী প্রভাব বলয়ে ঢুকি - এইটায় বাংলাদেশের মানুষের, অথবা আরও সংকীর্ণ পরিসরে, একজন বাঙ্গালী মুসলমান হিসেবে আমার কি ফায়দা? যদি বলেন মুসলমান মুসলমান সবাই ভাই ভাই, একই যুক্তিতে তো পাকিস্তানের সঙ্গেও আমাদের যুক্ত করা হয়েছিল, তাই নয় কি? তার ফলাফল কি হইল?

বাবরী মসজিদ প্রসঙ্গ অনেকেই টানলেন দেখে এবিষয়ে কিছু উল্লেখ করলাম না। আপনার মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে দুঃখিত হজরত। তুরস্কের পক্ষে লিখতে গিয়ে মুসলমানদের কাছ থেকে এত বৈপরীত্যের স্বীকার হবেন হয়তো চিন্তা করেন নাই।

আমার প্রতিবেশী ওয়ালিউল্লাহ চাচা , শওকত সাহেব, প্রদীপ দা - এনাদের সবার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে ইসলাম কি ইঙ্গিত দেয় , ইসলাম সম্পর্কে আমার মূল আগ্রহের জায়গাটা ঐখানে। অর্থাৎ আমি যে ক্ষুদ্র সামাজিক গণ্ডিতে বসবাস করি, সেই প্রেক্ষাপটে শরিয়তের আহকামাদির ব্যাপারে আমার আগ্রহ। এই ব্যাপারে আপনার পরামর্শের মুখাপেক্ষী। তবে কুরআন হাদিসের সামারি থেকে না স্রেফ, কুরআন হাদিসের প্রেক্ষিতে যে কিয়াস আপনি দাঁড় করান সেটা দয়া করে শেয়ার করলে আলোচনার দরজা খোলা থাকে। আলোচনার ঘাত প্রতিঘাতে নতুন জ্ঞানের প্রবাহ তৈরি হয়।

জাঝাকাল্লাহু খাইরান।

২৭ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:২৫

নতুন নকিব বলেছেন:



অনুরোধ রক্ষা করে পুনরায় সময় ব্যয় করে পোস্টে এসেছেন দেখে বিশেষ কৃতজ্ঞতা। মূল্যবান পরামর্শমূলক দীর্ঘ মন্তব্যটি ভালো লাগলো।

আপনার সর্বাঙ্গীন কল্যান কামনা করছি। আল্লাহ পাক আপনাকে উত্তম পুরষ্কারে ভূষিত করুন।

১৫| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:৫৭

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আমি ব্লগার চাঁদগাজীর মন্তব্যকে অফেন্সিভ বলে মনে করছি, এবং ওনাকে অনুরোধ করছি এই রকম মন্তব্য পুনর্বার না করবার।

২৭ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:৩৯

নতুন নকিব বলেছেন:



একটি অন্যায়কে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ায় আবারও অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

১৬| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: নতুন নকিব ,




অনেকের ভ্রান্তি কাটবে এই লেখায়। কাটুক, সেটাই চাই।
পাশাপাশি ভুয়া মফিজ এর মন্তব্যের সাথেও সহমত জানাই। আয়া সোফিয়া দীর্ঘকাল থেকেই মিউজিয়াম হিসেবে
বিশ্বে সুপরিচিত এবং ওয়র্ল্ড হেরিটেজের একটা অংশ। রাজনৈতিক কারনে এটাকে ধর্মীয় উপাসনালয় না বানালেই ভালো হতো।

অজানা একটা বিষয় জানা হলো।
শুভেচ্ছা সহ ধন্যবাদ।

২৭ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৪২

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় শ্রদ্ধেয়,

আপনার আগমন এবং মন্তব্যে প্রীত।

অনেকের ভ্রান্তি কাটবে এই লেখায়। কাটুক, সেটাই চাই।

-আমাদেরও একই প্রত্যাশা।

পাশাপাশি ভুয়া মফিজ এর মন্তব্যের সাথেও সহমত জানাই। আয়া সোফিয়া দীর্ঘকাল থেকেই মিউজিয়াম হিসেবে
বিশ্বে সুপরিচিত এবং ওয়র্ল্ড হেরিটেজের একটা অংশ। রাজনৈতিক কারনে এটাকে ধর্মীয় উপাসনালয় না বানালেই ভালো হতো।


-যতদূর জানি, এটাকে কিন্তু মসজিদ বানানোর পরেও সকল জতি-ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য এখনও উম্মুক্তই রাখা হয়েছে। আর এই পদক্ষেপটা হয়তো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের অংশ হিসেবেই নেয়া হয়েছে। আমার দৃষ্টিভঙ্গির সাথে পুরোপুরি না মিললেও ভুয়া মফিজ ভাইয়ের মতই আপনার উদার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি শ্রদ্ধা।

অজানা একটা বিষয় জানা হলো।

-পোস্টটি আপনি পাঠ করেছেন জেনে কৃতজ্ঞতা অশেষ।

কল্যানের দুআ সবসময়।

১৭| ২৬ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

২৭ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৪২

নতুন নকিব বলেছেন:



পুনরায় পোস্টে আসায় অনেক অনেক ধন্যবাদ আবারও।

১৮| ২৭ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৩:২২

অনল চৌধুরী বলেছেন: তুরস্কের ওসমানীয় সুলতান থেকে শুরু করে এরদোগান এবং সেদেশের বেশীরভাগ লোক ভন্ড, বক-ধার্মিক।এদের চরিত্রে প্রকৃত ধর্মের লেশমাত্র নেই ।
ইউরোপের দেশগুলির মতোই সেখানে মদ খাওয়া সহ সব অপকর্ম চলে।
সুলতান সোলায়মান টিভি ধারাবাহিক দেখলে বুঝবেন, আগে থেকেই তুর্কিরা কতোটা ধর্ম ব্যবসায়ী ভন্ড। হেরেমে হাজার হাজার মেয়ে রেখে, ইচ্ছা মতো অবৈধ সন্তান জন্ম দিয়েও কে আলীর মতো মিথ্যাবাদীও মূর্খ ইতিহাসবিদদের কাছে মোগলদের মতোই তারা বিরাট ধার্মিক !!!!!!!!!!!!
এসবই এরদোগানের সুলতান হওয়ার খায়েশ।

২৭ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৫৫

নতুন নকিব বলেছেন:



এই ব্লগে আপনার আগমনে সত্যি আনন্দিত। আসলে তুরস্কের লোকদের কাছ থেকে দেখার সুযোগ খুব একটা হয়নি। খুব অল্প সংখ্যক লোকের সাথে কাজের সুবাদে কিছু দিন কাছাকাছি থাকার যতটুকু সুযোগ হয়েছে তাতে ধর্মকর্ম পালনে তাদের তেমন উৎসাহী দেখিনি। তবে তারা কাজের- কাজ পাগল, অনেকটা চাইনিজদের মত - এটা ঠিক। অন্ততঃ আমি যা দেখেছি।

টিভি দেখা হয় না। বলতে পারেন, ইচ্ছে করেই দেখি না। একই কারণে সুলতান সুলাইমান দেখারও ইচ্ছে নেই। তবে আমার ধারণা, একটি দেশ, সমাজ বা এলাকায় ভালো এবং মন্দ দু'ধরণের মানুষই কম বেশি থাকেন। তুরস্কও হয়তো এর ব্যতিক্রম নয়।

কৃতজ্ঞতাসহ অনেক ভালো থাকার দুআ।

১৯| ২৭ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:২১

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: চুলকানীওয়ালাদের মতো ব্লগের অনেকেই মনে করেন আয়া সোফিয়াকে মুসলমানরা জোড় করে দখল করেছে এই তথ্য হয়তো তাদের বিভ্রান্তি কাটবে।

২৭ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৫৭

নতুন নকিব বলেছেন:



এই তথ্য হয়তো তাদের বিভ্রান্তি কাটবে।

-জ্বি, শুকরিয়া। পোস্টের মূল উদ্দেশ্য ছিল সেটাই।

আপনার আন্তরিক মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা। অনেক অনেক ভালো থাকার দুআ।

২০| ২৭ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:০২

নতুন বলেছেন: বিষয়টা পুরুটাই রাজনিতিক।

এটা এরদোগানের সুলতান সাজার খায়েশ পুরনের জন্য করেছেন। এতে কিছু মানুষ হাত তালি দেবে।

২৭ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:০১

নতুন নকিব বলেছেন:



এতে কিছু মানুষ হাত তালি দেবে।

-অলরেডি দিয়ে ফেলেছে। দু'পক্ষই দিয়েছে এবং দিয়ে যাচ্ছেও। নানান ছুতোয় এরদোগানের উপরে মিথ্যা অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করছে লোকজন। তবে আপনি কিন্তু এই কাজটা করেননি। শুধু সুলতান হওয়ার খাহেশের কথা বলা ছাড়া! আপনি ভালো মানুষ যে!

কৃতজ্ঞতা এবং অনেক অনেক শুভকামনা ভাই।

২১| ২৭ শে আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৪

নতুন বলেছেন: বিষয়টা যদি সত্যি কিনে থাকে এবং মসজিদ বানায় তবে আইনি ভাবে ভুল না।

কিন্তু বর্তমানের প্রেক্ষিতে জাদুঘর যেহেতু আছে তাই মসজিদ বানানো ঠিক না।

সুলতান সুলাইমান কে নিয়ে মুসলমানেরা অনেক প্রসংসা করে। কিন্তু উনার হেরেমে নারী থেকে থাকলে তারা কতটু ইসলামের অনুসারী সেটা মনে হয় আপনাকে বুঝিয়ে বলতে হবেনা।

তাহলে ভন্ডের হাতে ইসলামের বিস্তার কতটা ভাল মানুষ ভেবে দেখেনা। তারা হাত তালি দেয়।

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:৪৮

নতুন নকিব বলেছেন:



বিষয়টা যদি সত্যি কিনে থাকে এবং মসজিদ বানায় তবে আইনি ভাবে ভুল না।

-যাক, এত দিনে আপনাকে সত্যের স্বীকৃতি দিতে দেখে ভালো লাগলো। শুকরিয়া। সত্যকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ারও সুযোগ ছিল। সেটা করেননি।

কিন্তু বর্তমানের প্রেক্ষিতে জাদুঘর যেহেতু আছে তাই মসজিদ বানানো ঠিক না।

-১২ নং প্রতিমন্তব্য দেখে নেয়ার অনুরোধ থাকলো।

সুলতান সুলাইমান কে নিয়ে মুসলমানেরা অনেক প্রসংসা করে। কিন্তু উনার হেরেমে নারী থেকে থাকলে তারা কতটু ইসলামের অনুসারী সেটা মনে হয় আপনাকে বুঝিয়ে বলতে হবেনা। তাহলে ভন্ডের হাতে ইসলামের বিস্তার কতটা ভাল মানুষ ভেবে দেখেনা। তারা হাত তালি দেয়।

-সুলতান সুলাইমানকে নিয়ে এই পোস্টে কোনো কিছু বলা হয়নি। তার প্রসঙ্গ কোথাও আসেনি। তার সম্মন্ধে আমার অতটা স্টাডিও নেই। তবে দোষে গুনে মানুষ - এই কথায় বিশ্বাস করি।

ভালো থাকবেন ভাই।

২২| ২৭ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:১২

করুণাধারা বলেছেন: তথ্যবহুল পরিশ্রমী পোস্ট। পড়ে অনেক কিছু জানলাম, অনেক বিভ্রান্তি দূর হলো।

আমার মতে প্রেসিডেন্ট এরদোগান সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে সঠিক কাজ করেছেন।

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:৫২

নতুন নকিব বলেছেন:



তথ্যবহুল পরিশ্রমী পোস্ট। পড়ে অনেক কিছু জানলাম, অনেক বিভ্রান্তি দূর হলো।

-আল্লাহ তাআ'লা আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন। পোস্ট পাঠ করেছেন এবং বিভ্রান্তির কিছুটা হলেও কাটাতে পেরেছেন জেনে আনন্দিত।

আমার মতে প্রেসিডেন্ট এরদোগান সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে সঠিক কাজ করেছেন।

-আপনিও একজন সাহসী মানুষ বৈকি।

সত্য সন্ধানী এমন সাহসী মানুষের জন্য দুআ সবসময়।

২৩| ২৮ শে আগস্ট, ২০২০ ভোর ৬:০৮

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: রাজনৈতিক কারণে এরশাদের মতো লম্পট এবং নীতিহীন লোক ধর্মকে যথেচ্ছারভাবে ব্যবহার করেছে। এমনকি অনেকদিনের প্ল্যান করা মসজিদ পরিদর্শনের বিষয়ে তার সিকিউরিটির জানা সত্বেও সে মসজিদে গিয়ে সে আগের রাতে স্বপ্ন দেখে যাওয়ার নাটকও করেছে। বাংলাদেশের স্বল্প শিক্ষিত ধর্মপ্রাণ মানুষ তার চতুরতা বুঝতে না পেরে তালিয়া বাজিয়েছে। সুলতান সুলেমান এরদোগানও সেই এরশাদের আরেক ক্লোন বা কপি বলতে পারেন - রাজনৈতিক চতুর এই স্বৈরাচারীর ভণ্ডামি অনেকেই বুঝতে পারে নি। এই কিছুদিন আগেও তার স্ত্রী বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কি মায়াকান্নাটাই করে গেলো - কয়জন রোহিঙ্গাকে তার নিজের দেশে আশ্রয় দিলো ফিরে গিয়ে বলতে পারেন ?

সমস্যা অন্য জায়গায় - আপনি এরই মধ্যে উল্লেখ করেছেন রাশিয়া ও চিনে মুসলিমদের উপর নির্যাতনের কথা। তাদের এই চরম অন্যায়কে প্রতিবাদ করতে গিয়ে আপনি আরেকটি অন্যায়কে জায়েজ করতে যাচ্ছেন। এটা কি ভেবে দেখেছেন, বর্তমানে সারা বিশ্বে মোদী, ট্রাম্প ও মিয়ানমারের সামরিক জান্তার মতো অনেক উগ্রবাদী মুসলিম বিদ্বেষীর উত্তান ঘটেছে। এরদোগান তার ক্ষমতার ব্যবহার করে যেটা করলো ভবিষ্যতে ঠিক তারই মতো আরো উগ্রবাদী নেতারাও যে যার ক্ষমতার জোরে অন্য ধর্মের সংখ্যালঘুদের নিপীড়নে এবং তাদের প্রার্থনালয়কে মর্জিমতো রূপান্তরের চেষ্টা করতে পারে সেটা আপনার মতো সচেতন ব্যক্তির সহজেই অনুধাবন করার কথা।

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:২৩

নতুন নকিব বলেছেন:



রাজনৈতিক কারণে এরশাদের মতো লম্পট এবং নীতিহীন লোক ধর্মকে যথেচ্ছারভাবে ব্যবহার করেছে। এমনকি অনেকদিনের প্ল্যান করা মসজিদ পরিদর্শনের বিষয়ে তার সিকিউরিটির জানা সত্বেও সে মসজিদে গিয়ে সে আগের রাতে স্বপ্ন দেখে যাওয়ার নাটকও করেছে। বাংলাদেশের স্বল্প শিক্ষিত ধর্মপ্রাণ মানুষ তার চতুরতা বুঝতে না পেরে তালিয়া বাজিয়েছে। সুলতান সুলেমান এরদোগানও সেই এরশাদের আরেক ক্লোন বা কপি বলতে পারেন - রাজনৈতিক চতুর এই স্বৈরাচারীর ভণ্ডামি অনেকেই বুঝতে পারে নি। এই কিছুদিন আগেও তার স্ত্রী বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কি মায়াকান্নাটাই করে গেলো - কয়জন রোহিঙ্গাকে তার নিজের দেশে আশ্রয় দিলো ফিরে গিয়ে বলতে পারেন ?

-স্বামীজি, বরাবরই আপনার বুদ্ধিদীপ্ত মন্তব্যগুলো ভাবনার খোরাক। রাজনৈতিক মারপ্যাচের কিছু দারুন ব্যাখ্যা দিয়েছেন এই মন্তব্যেও যেগুলোর সাথে পুরোপুরি দ্বিমত পোষন করছি না।

তবে একটি ক্রয়কৃত জমির শত শত বছরের পুরাতন মসজিদকে তার স্বরূপে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রটিতে রাজনীতির চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় বিধানের সঠিক প্রয়োগের বিষয়টি। এইক্ষেত্রে ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার একটা ব্যাপার রয়েছে যা এই পোস্টের ১২ নং মন্তব্যের উত্তর দেখলে আপনার কাছে পরিষ্কার হবে। যতটুকু জেনেছি, এরদোগান ধার্মিক মানুষ। তিনি ধর্মকে নিয়েই আছেন। এটা মানুষ হিসেবে অবশ্যই তার ভালো গুন।

আর এরদোগানের স্ত্রী তবু সাত সাগর তের নদি পাড়ি দিয়ে সেই কোথা থেকে বাংলাদেশে উড়ে এসে রোহিঙ্গাদের গলা জড়িয়ে কেঁদেকেটে গেছেন! ভাইরে, তবু তো তারা আসেন, খোঁজ নেন, কাঁদেন, হোক না সেটা মায়াকান্না বা মেকি কান্না। তবু তো কেঁদেছেন তো। আর বাদবাকি তাবত পৃথিবীর কোন কোন প্রেসিডেন্টের বউরা এইটুকু করেছেন, দেখানো যাবে কাউকে! সুতরাং, তারা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারেননি বলেই তাদেরকে খারাপ বলতে আমার কাছে সমিচীন মনে হয় না। রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের ব্যাপারটা এমন সহজ হিসাবের কোনো বিষয়ও নয়। আপনিও নিশ্চয়ই বুঝেন। এটা বৈশ্বিক রাজনীতির অংশ এখন। বিশাল একটা খেলা চলছে। আমাদের সাথে প্রতিবেশী যেসব দেশের গভীর থেকে গভীরতর সম্পর্ক, কই! তারা তো আমাদের সেই ঘোর বিপদের সময় লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাদেরকে যখন আমাদের দেশে জোরপূর্বক ঠেলে দেয়া হচ্ছিল তখন টু শব্দটি পর্যন্ত উচ্চারণ করলো না। এগুলো সবই তো রাজনীতি! জাতীয় আন্তর্জাাতিক এসব রাজনীতির মারপ্যাচ এরদোগান সম্ভবতঃ ভালো করেই জানেন। আর জানেন বলেই তার বিরুদ্ধে কঠিন বিদ্রোহ ও অভ্যুত্থান তিনি কঠোর হাতে সামলাতে পেরেছিলেন।

মোট কথা, ইচ্ছে থাকলেই তারা রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয় দিতে পারেন- বিষয়টি এতটা সহজ নয়।

সমস্যা অন্য জায়গায় - আপনি এরই মধ্যে উল্লেখ করেছেন রাশিয়া ও চিনে মুসলিমদের উপর নির্যাতনের কথা। তাদের এই চরম অন্যায়কে প্রতিবাদ করতে গিয়ে আপনি আরেকটি অন্যায়কে জায়েজ করতে যাচ্ছেন। এটা কি ভেবে দেখেছেন, বর্তমানে সারা বিশ্বে মোদী, ট্রাম্প ও মিয়ানমারের সামরিক জান্তার মতো অনেক উগ্রবাদী মুসলিম বিদ্বেষীর উত্তান ঘটেছে। এরদোগান তার ক্ষমতার ব্যবহার করে যেটা করলো ভবিষ্যতে ঠিক তারই মতো আরো উগ্রবাদী নেতারাও যে যার ক্ষমতার জোরে অন্য ধর্মের সংখ্যালঘুদের নিপীড়নে এবং তাদের প্রার্থনালয়কে মর্জিমতো রূপান্তরের চেষ্টা করতে পারে সেটা আপনার মতো সচেতন ব্যক্তির সহজেই অনুধাবন করার কথা।

-আপনার মন্তব্যের এই অংশটাও সুন্দর। একেবারে শেষের কথাটায় একটা যুক্তি রয়েছে। তবে আপনি হয়তো লক্ষ্য করে থাকবেন আয়া সোফিয়াকে তার আসল স্বরূপ অর্থাৎ মসজিদে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে রাজনীতির পাশাপাশি ধর্মীয় বিধানের একটা বিষয় জড়িত। এই পোস্টের ১২ নং প্রতিমন্তব্যে বিষয়টি সামান্য আলোকপাত করা হয়েছে। ইচ্ছে করলে দেখে নিতে পারেন। তবে মোদী, ট্রাম্প কিংবা মিয়ানমারের সামরিক জান্তার মত এমন বিখ্যাত দুয়েক জন মুসলিম উগ্রবাদীর নাম করতেন যদি!

শুভকামনা সবসময়। অনেক ভালো থাকবেন প্রিয় ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.