নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।
উমরাহ শুরু, আবার মুখরিত মক্কা মুকাররমার প্রিয় প্রাঙ্গনঃ
আলহামদুলিল্লাহ। মহান মালিকের দরবারে অগণিত শুকরিয়া আদায় করছি, যিনি তাঁর পবিত্র ঘর বাইতুল্লাহিল হারামের যিয়ারতকে আমাদের জন্য আবার উম্মুক্ত করে দিয়েছেন। দীর্ঘ বিরতির পরে আবার আমরা প্রিয় প্রাঙ্গনে ছুটে যাওয়ার সুযোগ পাব। শুকরিয়া তাঁর দরবারে। সকল শুকরিয়া তাঁর জন্য। কেবলই তাঁর জন্য।
এ যেন মহান আল্লাহর রহমতের দরিয়ায় জোয়ার সৃষ্টির প্রচেষ্টাঃ
করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ সাত মাস বন্ধ ছিল উমরাহ। অবশেষে গত ০৪/১০/২০২০ ইং তারিখ রোববার থেকে আবার শুরু হল উমরাহ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাবা চত্বরে ইহরাম পরিহিত আল্লাহ প্রেমীদের তাওয়াফ, সায়ী, নামাজ আর কান্নার আওয়াজে সৃষ্টি হয়েছে এক অভূতপূর্ব আবেগময় পরিবেশ। দীর্ঘ বিচ্ছেদের পরে অতৃপ্ত কিছু প্রাণগুলো যেন ফিরে পেয়েছে মালিকের ঘরের দরজার সন্ধান। দীর্ঘদিন পর উমরাহর সুযোগ পেয়ে, আল্লাহর ঘরকে কাছে থেকে দেখার আনন্দে সৃষ্টি হওয়া আবেগ পরিণত হয় কান্নায়। এ কান্না আনন্দের, এ কান্না মনিবের সকাশে হাজির হওয়ার। মহান আল্লাহর রহমতের দরিয়ায় জোয়ার সৃষ্টির প্রচেষ্টার।
মহান আল্লাহ আমাদের জন্য হারাম শরিফের দরজা খুলে দিয়েছেন, ইনশাআল্লাহ তিনি জান্নাতের দরজাগুলোও খুলে দেবেনঃ
আরব নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, রোববার ০৪ অক্টোবর, ২০২০ ইশার নামাজের পর উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে হারামাইন প্রেসিডেন্ট ও মক্কার প্রধান খতিব শাইখ ড. আবদুর রহমান আস সুদাইস বলেন, আজ মহান আল্লাহ আমাদের জন্য হারাম শরিফের দরজা খুলে দিয়েছেন। এ থেকে আমরা মহাসুসংবাদ ও আনন্দপ্রাপ্ত হয়েছি। এ থেকে সুধারণা নেব যে, ইনশাআল্লাহ আল্লাহ আমাদের জন্য এভাবে জান্নাতের দরজাগুলোও খুলে দেবেন। এ সময় তিনি উমরাহ পালনকারীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে একাগ্রতার সঙ্গে উমরাহসহ যাবতীয় ইবাদত-বন্দেগিতে মনোনিবেশের আহ্বান জানান। এর আগে তিনি উমরাহ পালনকারীদের মাঝে বিভিন্ন উপহার বিতরণ করেন এবং উমরাহর কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
উমরাহ শুরুর ঘোষণার সময় সউদি আরবের হজ বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ বেনতেন দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানিয়েছিলেন, প্রথম পর্যায়ে খুবই সতর্কতার সঙ্গে এবং সুনির্দিষ্ট সময়ের ভেতরে উমরাহ পালন করা হবে। উমরাহ পালনকারীদের কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত করা হবে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই উমরাহ পালনকারীদের পবিত্র কাবা তাওয়াফ করতে হবে। কাবা স্পর্শ ও হাজরে আসওয়াদ চুমু খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪ অক্টোবর মক্কার স্থানীয় সময় সকাল ৬ টায় উমরাহ পালনকারীদের জন্য খুলে দেয়া হয় মসজিদে হারামঃ
৪ অক্টোবর স্থানীয় সময় সকাল ৬ টায় উমরাহ পালনকারীদের প্রথম দলটির জন্য মসজিদে হারাম খুলে দেওয়া হয়। এ দিন হাজার হাজার মুসল্লিকে মাস্ক পরা অবস্থায় কাবা শরীফ তাওয়াফ করতে দেখা গেছে। নিয়ম মেনে তারা সায়ীসহ উমরাহর যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করছেন। এর আগে মসজিদে হারামে প্রবেশের জন্য উমরাহ পালনকারীরা কুদাই বাস স্টেশনে জড়ো হন। সেখান থেকে তাদের মসজিদে হারামে নিয়ে যাওয়া হয়। উমরাহ পালনে আসা প্রথম দলটি মসজিদে হারামের ‘আজইয়াদ’ গেট দিয়ে প্রবেশ করেন। এখানে তাদেরকে জমজমের পানি ইত্যাদি দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত মার্চে উমরাহ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় সউদি আরব। মহামারির কারণে এবার মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সমাবেশ হজও পালিত হয়েছে সীমিত আকারে।
তিনটি ধাপে উমরাহ কার্যক্রম চালুর পরিকল্পনাঃ
সউদি আরব সরকার জানিয়েছে, তিনটি ধাপে উমরাহ কার্যক্রম চালুর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। প্রথম ধাপে শুধু সউদি আরবে অবস্থানরতরাই সুযোগ পাচ্ছেন। উমরাহর জন্য বানানো নির্দিষ্ট অ্যাপ ‘ইতামারনা’র মাধ্যমে সউদি হজ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হয়েছে তাদেরকে।
প্রথম ধাপে আপাততঃ এক দিনে ছয় হাজার জনকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উমরাহ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এমনিতে আগে দৈনিক ২০ হাজার জনকে উমরাহ করার অনুমতি দেওয়া হলেও এখন এ সংখ্যা তার ৩০ শতাংশ মাত্র।
দ্বিতীয় ধাপে ১৮ অক্টোবর থেকে তা বাড়িয়ে একদিনে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার জনকে উমরাহর জন্য মসজিদে হারামে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
তৃতীয় ধাপে ১ নভেম্বর থেকে সউদি আরবে অবস্থান করা এবং বিদেশ থেকে আসা উমরাহ যাত্রীদের মক্কার মসজিদে হারামে ঢুকতে দেওয়া হবে। তখন প্রতিদিন ২০ হাজার মানুষ উমরাহ করার সুযোগ পাবেন। সউদি সরকার সম্প্রতি সীমিত পরিসরে উমরাহ শুরুর সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এরপর গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ‘ইতামারনা’র মাধ্যমে নিবন্ধন কার্যক্রম। নিবন্ধন শুরুর প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রথম ১০ দিনের উমরাহ পালনের নির্ধারিত কোটা পূর্ণ হয়ে যায়। প্রথম ধাপে ৪২ হাজার ৮৭৩ জন সউদি নাগরিক ও ৬৫ হাজার ১৬৮ জন প্রবাসীসহ মোট ১ লাখ ৮ হাজার ৪১ জনকে ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া উমরাহ পালনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালে উমরাহ পালন করেন এক কোটি নব্বই লাখ মানুষঃ
গত বছর অর্থাৎ, ২০১৯ সালে সব মিলিয়ে ১৯০০০০০০ (এক কোটি নব্বই লাখ) মানুষ উমরাহ পালন করেন। আর প্রতি বছর বিভিন্ন দেশের বিশ লাখের বেশি মানুষ হজ করার সুযোগ পেলেও এবার সউদি আরবে বসবাসরত মাত্র কয়েক হাজার মুসলমান সে সুযোগ পেয়েছেন। আরব নিউজ লিখেছে, ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে উমরাহ যাত্রীদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে কঠোরভাবে। মসজিদে হারামের প্রবেশ পথে এবং ভেতরে বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে থার্মাল ক্যামেরা, যাতে নিয়মিত তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনে জরুরি সতর্কতা জারি করা যায়।
মন পড়ে আছে প্রিয় বাইতুল্লাহর পবিত্র আঙিনায়ঃ
মন পড়ে আছে প্রিয় বাইতুল্লাহর পবিত্র আঙিনায়। মাতাফের শ্বেত মার্বেলের মন জুড়ানো শীতল অবয়বে সিজদার অবর্ণনীয় সেই স্বাদ খুঁজে ফেরে পাগলপাড়া উম্মাতাল মন। হৃদয়ে গেঁথে আছে হাজরে আসওয়াদ, মাকামে ইবরাহিমের অলৌকিক পরশ। হাতিমের অশ্রুভেজা সেই চোখ, তাওয়াফের প্রতি চক্করে অন্তর বিচূর্ণ করা দুআ মুনাজাতের অনিঃশেষ আহাজারি, জমজমের পাশে দাঁড়িয়ে দু'রাকাত নামাজ আদায়ের জান্নাতি সেই অনুভূতি আবার কবে ফিরে পাব? না কি, আর পাব না? হে আল্লাহ, হে মালিক, হে মহিয়ান, আমি দুর্বল, অসহায়, অযোগ্য, শক্তিহীন। আপনি সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান। আপনি ডেকে নেন। আপনার প্রিয় ঘরে যাওয়ার অনুমতি দিন। প্রিয় মালিক, আপনি সদয় না হলে যে সেখানে কারও যাওয়া সম্ভব নয়! আপনি রহমতের নজরে না তাকালে কারও পক্ষে সেই ঘরের যিয়ারতে হাজিরা দেয়ার সুযোগ নেই যে!
ব্যাকুল হৃদয় ধৈর্য্য বুঝে নাঃ
অবুঝ অন্তরে ত্বর সয় না। ব্যাকুল হৃদয় ধৈর্য্য বুঝে না। বারে বারে আকুতি, ক্ষনে ক্ষনে আবেগের তীব্রতা- কবে যে যাবো আবার! কখন যে ডাক আসবে মহান মালিকের! কবে যে কিসমত হবে আবার ছুটে যাবার! প্রিয়তম মালিক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার ঘর বাইতুল্লাহর পবিত্র আঙিনায়, প্রিয়তম হাবিব সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পূন্য স্মৃতির মসজিদে নববীর সবুজ গম্বুজের ছায়ায়-মায়ায় ছুটে বেড়ানোর, অস্ফুটে, কাঁপা ঠোটে, বিনীত অন্তরে, সম্ভ্রমের চরম পরাকাষ্ঠা রওজায়ে আতহারের পাশে দাঁড়িয়ে, আরও কিছু কথা বলার, প্রিয়তম হাবিব সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে! আল্লাহ পাক আমাদেরকে তাঁর ঘরের চৌকাঠপানে, তাঁর হাবিব প্রিয়তম রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মদিনায় বারবার ফিরে যাওয়ার তাওফিক দান করুন।
২| ০৬ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: উমরাহ বা হজ্বের উপকার কি মানব জীবনে?
যেমন ধরেন আমি একজন দরিদ্র মানুষকে দুই লাখ টাকা দিয়ে একটা চায়ের দোকান দিয়ে দিলাম। সে আমার কল্যানে কর্ম করে খেলো। তার উপকার হলো। আমিও নিজেও একজন মানুষের উপকার করতে পেরে শান্তি পেলাম।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১০:৩৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মাঝখানের বিরতির কারণে আগামী কয়েক বছর মনে হয় ওমরাতে ভিড় বেশী হবে। সৌদি আরবের উচিত ওমরা ও হজের জন্য প্লেনের ভাড়াতে সরকারি ভর্তুকি দেয়া যেন বেশী মানুষ ওখানে যেতে পারে।