নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ছবিঃ অন্তর্জাল।
মাখলূকাতের ভালোবাসায় আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টিঃ
ইসলাম প্রেম, প্রীতি, ভালোবাসা, সহানুভূতি এবং সৌহার্দ্যের শিক্ষা দেয়। দেশ কাল স্থানের সীমার উর্ধ্বে উঠে, সাদা কালোর ভেদাভেদ ভুলে, আপন-পর নির্বিশেষে সকল মানুষের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা ও হৃদ্যতা পোষন ইসলামের অন্যতম শিক্ষা। শুধু মানবপ্রেমই নয়, সৃষ্টি জগতের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র থেকে শুরু করে বৃহৎ থেকে বৃহত্তম- প্রতিটি প্রাণি সিক্ত হবে আমাদের হৃদয়ের ভালোবাসার পরশে- ইসলাম আমাদের এই শিক্ষাই প্রদান করে। প্রিয়তম রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
عن عبد الله بن عمرو قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم : الراحمون يرحمهم الرحمن، ارحموا من فى الارض يرحمكم من فى السماء. رواه الترمذى فى جامعه، ابواب البر و الصلة، باب ما جاء رحمة الناس
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, (জীবের প্রতি) দয়াকারীর উপর দয়াময় আল্লাহ দয়া করেন। জমিনে বসবাসকারী মাখলুকের প্রতি দয়া কর, আসমানওয়ালা তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯২৪
অন্য এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে :
عن جرير بن عبد الله قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم : من لا يرحم الناس لا يرحمه الله. اخرجه مسلم فى صحيحه، كتاب الفضائل، باب رحمته صلى الله عليه و سلم الصبيان
হযরত জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যারা মানুষের প্রতি দয়া করে না, আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করেন না। -সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ফাযাইল, হাদীস ৬১৭২
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত :
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : الخلق عيال الله، فأحب الخلق إلى الله من أحسن إلى عياله . رواه البيهقى فى شعب الايمان جـ 6 باب طاعة أولى الأمر فصل نصيحة الولاة
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহ তাআ'লার পরিবার। আল্লাহর কাছে প্রিয় সেই ব্যক্তি যে তাঁর (অর্থাৎ, আল্লাহ তাআ'লার) পরিবারের প্রতি দয়া করে। -শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস : ৭৪৪৮
প্রিয়তম রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু মানুষকে ভালোবাসতেন না। ভালোবাসতেন পশুপাখি। ভালোবাসতেন গাছপালা, তরুলতা ও প্রকৃতি। সকল মাখলূকাতের জন্য তাঁর ভালোবাসা ছিল অবারিত। কেবল মানবজাতি নয়, জীবজন্তুর অধিকার রক্ষায়ও তিনি ছিলেন সোচ্চার। এক দিনের ঘটনা-
রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আনসারির খেজুর বাগানে প্রবেশ করলে হঠাৎ একটি উট দেখতে পান। উটটি নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখে কাঁদতে লাগলো। নবীজি অনেক ব্যথিত হলেন। উটটির কাছে গিয়ে তার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করলেন। এতে উটটির কান্না বন্ধ হল।
তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ উটের মালিক কে? এক আনসারি যুবক এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল, আমি। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহ যে তোমাকে এই নিরীহ প্রাণীটির মালিক বানালেন, এর ব্যাপারে তুমি কি আল্লাহকে ভয় করো না? উটটি আমার কাছে অভিযোগ করেছে, তুমি একে ক্ষুধার্ত রাখ এবং কষ্ট দাও'। -সুনানে আবু দাউদ : ২৫৪৯
জীবজন্তু ও পশুপাখির প্রতি কোমল ব্যবহার ইবাদতের পর্যায়ভুক্তঃ
জীবজন্তু ও পশুপাখিসহ প্রাণির প্রতি কোমল ব্যবহার ইবাদতের পর্যায়ভুক্ত। পশুপাখিকে কষ্ট দেয়া নিন্দনীয় অন্যায় এবং গুনাহের কাজ। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : ‘আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক বিষয়ে তোমাদের কাছে সদাচার কামনা করেন। অতএব, তোমরা যখন হত্যা করবে, দয়াশীল হয়ে হত্যা করবে; আর যখন জবাই করবে তখন দয়ার সঙ্গে জবাই করবে। তোমাদের সবাই যেন ছুরি ধারালো করে নেয় এবং তার জবাইকৃত জন্তুকে কষ্টে না ফেলে’। -সহিহ মুসলিম : ১৯৫৫
এ কারণে আমাদের উচিত, পশুপাখি ও জীবজন্তুর সঙ্গে যথাসাধ্য দয়াশীল আচরণ করতে সচেষ্ট হওয়া।
পশুপাখির অঙ্গহানি করা অভিসম্পাতযোগ্য অন্যায়ঃ
হাদিসের আলোকে পশুপাখির অঙ্গহানি করা নিষিদ্ধ। বর্ণিত হয়েছে- রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওই ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছেন, যে প্রাণীদের অঙ্গচ্ছেদ করে।’ -বুখারি, হাদিস নং : ৫৫১৫
বিড়ালকে কষ্ট দেয়ার কারণে এক মহিলাকে জাহান্নামে যেতে হয়েছিলঃ
রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন :
حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ بْنُ أَسْمَاءَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ عُذِّبَتْ امْرَأَةٌ فِيْ هِرَّةٍ سَجَنَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ فَدَخَلَتْ فِيْهَا النَّارَ لَا هِيَ أَطْعَمَتْهَا وَلَا سَقَتْهَا إِذْ حَبَسَتْهَا وَلَا هِيَ تَرَكَتْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الأَرْضِ
‘এক নারীকে একটি বিড়ালের কারণে আজাব দেয়া হয়েছিল। সে বিড়ালটিকে বেঁধে রেখেছিল। সে অবস্থায় বিড়ালটি মারা যায়। মহিলাটি ওই কারণে জাহান্নামে গেল। কেননা সে বিড়ালটিকে খানাপিনা কিছুই দেয়নি এবং ছেড়েও দেয়নি যাতে সে জমিনের পোকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকতো।’ -সহিহ বুখারি : ৩৪৮২ (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩২২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩২৩৩)
প্রাণী প্রতিপালন করলে, সেগুলোর সুস্থতা ও খাবারদাবারের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা ওয়াজিব বা অত্যাবশকীয়। মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا مِسْكِينٌ، - يَعْنِي ابْنَ بُكَيْرٍ - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُهَاجِرٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ أَبِي كَبْشَةَ السَّلُولِيِّ، عَنْ سَهْلِ ابْنِ الْحَنْظَلِيَّةِ، قَالَ : مَرَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِبَعِيرٍ قَدْ لَحِقَ ظَهْرُهُ بِبَطْنِهِ، فَقَالَ : " اتَّقُوا اللَّهَ فِي هَذِهِ الْبَهَائِمِ الْمُعْجَمَةِ فَارْكَبُوهَا وَكُلُوهَا صَالِحَةً "
‘এসব বাক্শক্তিহীন প্রাণীর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। সুস্থ অবস্থায় এগুলোতে আরোহণ করো, সুস্থ অবস্থায় আহার করো।’ -আবু দাউদ, হাদিস নং : ২৫৪৮
পশু-পাখির প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিঃ
পশু-পাখির প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজনে ব্যবহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এগুলোকে প্রকৃতি ও পৃথিবীর সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করেছে ইসলাম। কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে পশু-পাখির প্রসঙ্গ বিভিন্নভাবে এসেছে। বিভিন্ন প্রাণীর নামে অনেকগুলো সুরার নামকরণ করা হয়েছে কুরআনে হাকিমে। যেমন- সুরা বাকারা (গাভি), সুরা আনআম (গৃহপালিত পশু তথা, উট, গরু, বকরি ইত্যাদি), সুরা নাহল (মৌমাছি), সুরা নামল (পিপীলিকা), সুরা আনকাবুত (মাকড়সা), সুরা ফিল (হাতি) ইত্যাদি।
বস্তুতঃ এসব নামকরণ থেকে পশু-পাখির প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সুস্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَالْخَيْلَ وَالْبِغَالَ وَالْحَمِيرَ لِتَرْكَبُوهَا وَزِينَةً وَيَخْلُقُ مَا لاَ تَعْلَمُونَ
তোমাদের আরোহণের জন্যে এবং শোভার জন্যে তিনি ঘোড়া, খচ্চর ও গাধা সৃষ্টি করেছেন। আর তিনি এমন জিনিস সৃষ্টি করেন যা তোমরা জান না। -সুরা নাহল, আয়াত: ৮
অত্র আয়াতে উপকারী প্রাণিকূল সৃষ্টির কারণ হিসেবে তাতে আরোহণ করা এবং কিছু সংখ্যককে সৌন্দর্যের প্রতীক আখ্যায়িত করা হয়েছে।
প্রাণিজগতকে পৃথক জাতিসত্তার স্বীকৃতি দিয়ে কুরআনে হাকিমে বলা হয়েছে,
وَمَا مِن دَآبَّةٍ فِي الأَرْضِ وَلاَ طَائِرٍ يَطِيرُ بِجَنَاحَيْهِ إِلاَّ أُمَمٌ أَمْثَالُكُم مَّا فَرَّطْنَا فِي الكِتَابِ مِن شَيْءٍ ثُمَّ إِلَى رَبِّهِمْ يُحْشَرُونَ
আর যত প্রকার প্রাণী পৃথিবীতে বিচরণশীল রয়েছে এবং যত প্রকার পাখী দু’ ডানাযোগে উড়ে বেড়ায় তারা সবাই তোমাদের মতই একেকটি জাতি। আমি কোন কিছু লিখতে ছাড়িনি। অতঃপর সবাই স্বীয় প্রতিপালকের কাছে সমবেত হবে। -সুরা আনআম, আয়াত: ৩৮
শখের বশে বা চিত্ত বিনোদনের জন্য পশুপাখি পালনের বিষয়ে ইসলামী শরীয়া কি বলে?
শখের বশে ও চিত্ত বিনোদনের জন্য পশুপাখি পালনে ইসলামী শরীয়াতে কোনো বাধা নেই। ইসলামী শরীয়ায় পশুপাখি পালনে কোনরূপ নিষেধাজ্ঞা পাওয়া যায় না। অর্থাৎ, এ ধরণের কাজকে হারাম বা নিষিদ্ধ করা হয়নি। তবে পশুপাখি পালন করার ক্ষেত্রে ইসলাম বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে। যেমন,
পশু পাখির আহারাদিসহ যথাযথ বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো অবস্থায় পশু পাখিকে কষ্ট দেয়া যাবে না। পোষা পাখি ও পশুর প্রতি যত্নবান হতে হবে। তাদের প্রতি মমত্ববোধ থাকা বাঞ্ছনীয়। তাদেরকে ভালোবাসতে হবে। অসুস্থ্ ও রোগাক্রান্ত হলে চিকিৎসা করাতে হবে এবং পর্যাপ্ত পানি ও খাদ্য প্রদান করতে হবে।
পশু পাখিকে প্রয়োজন মাফিক তাদের সুবিধাপূর্ণ স্থানে বসবাস করতে দিতে হবে। এমন ছোট খাচায় রাখা যাবে না, যেখানে বসবাসে তাদের অস্বস্তি বা কষ্ট হয়। এক খাচায় অনেক পশু পাখি গাদাগাদি করে রাখাও ঠিক নয়। প্রজনন বা বংশবিস্তারের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এর জন্য জোড়া মিলিয়ে দিতে হবে।
এর বিপরীতে যথাযথভাবে খাদ্য পানীয় প্রদান না করাসহ উপরোক্ত বিষয়াবলী অনুসারে পশুপাখির প্রয়োজনীয় যত্ন না নিতে পারলে সে ক্ষেত্রে পশু পাখি পালন জায়েয হবে না। কারণ, পশু পাখি লালনপালনকারীর অবহেলা কিংবা অযত্নের কারণে যদি পোষা পাখি বা প্রাণির কোনোরূপ কষ্ট হয় তাহলে এর জন্য লালন পালনকারী ব্যক্তিকে পরকালে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। শাস্তি ভোগ করতে হবে।
এ জন্য পোষা পাখি বা প্রাণি যেন কোনো মতেই কষ্ট না পায় সেদিকে এর লালনপালনকারীকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কেননা, ক্ষতিকর প্রাণি ব্যতিত যে কোনো প্রাণিকে কষ্ট দেয়ায় ইসলাম নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ইসলাম একজন মানুষের জন্যে যেমন সকল প্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে, তেমনি অবলা প্রাণিকেও দিয়েছে সকল আঘাত ও কষ্ট থেকে নিরাপত্তা। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবসময় পশু-পাখির প্রতি নিজে দয়া প্রদর্শন করতেন এবং অন্যদেরও এ বিষয়ে উপদেশ প্রদান করেছেন। অকারণে তাদের মেরে ফেলা, তাদের ওপর অতিরিক্ত বোঝা চাপানো, নিজেদের মনোরঞ্জনের জন্য তাদের প্রতি কোনো ধরেণের কষ্ট আরোপ করাকে তিনি পছন্দ করতেন না।
প্রসঙ্গক্রমে বন্য পাখি ও কেইস বার্ডের কথা বলা যেতে পারে। বন্য পাখিরা বনে জঙ্গলে বড় হয়ে থাকে। তাদের আবাসস্থল উম্মুক্ত বন বাদার। তাদের যদি বন থেকে ধরে এনে খাচায় রেখে পালন করার চেষ্টা করা হয়, আবদ্ধ জীবনে অভ্যস্ত না হওয়ায় এতে বরং তাদের কষ্ট বৃদ্ধি করা হয়। এ কারণে দেখা যায়, বেশিরভাগ বন্য পাখি খাচায় রাখা হলে সেগুলো বেশি দিন বাঁচে না। বন্য পাখিদের বিচরণস্থল খোলা আকাশ, সবুজ প্রকৃতি। এদেরকে সেখান থেকে যখন খাচায় বন্দী করা হয় তখন সেটা তাদের জন্য কষ্টের কারণ হয়। এ কাজটি থেকে বিরত থাকা উচিত।
অপরদিকে, কেইস বার্ড বা খাঁচার পাখির জন্ম ও বৃদ্ধি খাচায় হয়। তারা খাচায় লালিতপালিত হয়ে অভ্যস্ত। বন্য পরিবেশে এরা বাঁচতে পারে না। এগুলোকে খাচায় রাখলে এদের কষ্ট হয় না। বরং এটাই তাদের জীবন ধারণের জন্য সুবিধাজনক। সুতরাং, আমাদের বন্য পাখি পালন থেকে বিরত থেকে একান্ত শখ অথবা প্রয়োজন মেটাতে কেইজ বার্ড বা খাঁচার পাখি পালনে আগ্রহী হওয়া উচিত।
এভাবেই ইসলামে পশু-পাখিসহ যাবতীয় প্রাণির অধিকারের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছেঃ
এভাবেই ইসলামে পশু-পাখিসহ যাবতীয় অন্যান্য প্রাণির অধিকার সংরক্ষণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। মানুষের উচিত এসব দিকনির্দেশনা পুরোপুরি অনুসরণ করে চলা। অনর্থক কোনো প্রাণিকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকা এবং গোটা মাখলূকাতের প্রতি সহৃদয়তার পরিচয় দিয়ে তাদের সাথে দায়িত্বশীল আচরণ করা। আমার ঘরের পাশে ক্ষুধার্ত যে কুকুরটি শুয়ে আছে তাকে এক মুঠো খাবার না দিয়ে আমি ঘুমাতে যাই কি করে! তাকে এভাবে ক্ষুধার্ত অবস্থায় ছেড়ে যেতে আমার অন্তরাত্মায় একটুও কাঁপন ধরে না! তাহলে আমি কেমন হৃদয়ের মানুষ হলাম! আমি যে গরুগুলো পালন করি, একেকটা আমার তুলনায় কয়েক গুণ বেশি শক্তি রাখে। কিন্তু , এগুলোকে আমার আয়ত্বাধীন করে দেয়া হয়েছে। এই অবলা পশু আমার কথামত না চললে কিংবা সামান্য ভুল ভ্রান্তি করলেই যদি এগুলোর ওপরে চড়াও হই, নির্মমভাবে প্রহার করি এদেরকে, আমার মানবতা, আল্লাহ তাআ'লা প্রদত্ত আমার শ্রেষ্ঠত্ব তাহলে থাকলো কোথায়?
আসুন, গোটা মাখলূকাতের প্রতি সদয় হই, তাদের অধিকার রক্ষায় মনযোগী হইঃ
অতএব আসুন, ক্ষতিকর প্রাণি ব্যতিত সৃষ্টি জগতের ছোট বড় সকল প্রাণীর প্রতি সদয় হই, সহানুভূতিশীল হই। তাদের জন্য ভালোবাসা ও মমতা লালন করি এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য্য রক্ষায় মনোযোগী হই। এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার সন্তুষ্টি অর্জনের বিশ্বাস ও প্রচেষ্টাকে সদা জাগ্রত রাখি। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা আমাদের তাওফিক দান করুন।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩০
নতুন নকিব বলেছেন:
আমিন।
জাজাকুমুল্লাহু তাআলা খইরান।
২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: এই সমাজের কাউকে তো পুরোপুরি ইসলাম মেনে চলতে দেখি না।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩২
নতুন নকিব বলেছেন:
সমাজের দিকে তাকিয়ে না থেকে এই প্রাকটিসটা প্রথমে নিজের শুরু করা উচিত। কি বলেন?
৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ভাল লাগলো ভায়া
দারুন বিষয়কে তুলে ধরেছেন!
আহা! ১৪০০ বছরের শিক্ষাকে আমার ভুলে গেছি!
অথচ বিশ্বে সৃষ্টি প্রেমে পরিবেশ প্রেমে, মানবতায়, জীবপ্রেমে সর্বাগ্রে থাকার কথা ছিল মুসলিমদের।
পোষাকী, অন্ধ, আচারী মুসলমানের বদলে আল্লাহ আমাদের প্রকৃত মুসলিম হবার তৌফিক দান করুন।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৫৯
নতুন নকিব বলেছেন:
সেটাই। ইসলাম সত্যিকারার্থে জীবপ্রেমের যে অতুলনীয় শিক্ষা গোটা মানবজাতির সামনে পেশ করেছে, বাস্তব জীবনে তার প্রাকটিস তো দূরের কথা, আমাদের অনেকের সে সম্মন্ধে সঠিক ধারণা পর্যন্ত নেই। আপনাকে মন্তব্যে পেয়ে অনেক ভালো লাগছে প্রিয় কবি।
বাইরের বাতাসে মৃদু শীতের স্নিগ্ধ পরশ এখন। না জানি, আবার কখন কবে শীতে জবুথবু বস্ত্রহীন অভাবী মানুষদের করুন চেহারা দেখে লিখতে হয় নতুন কোনো পোস্ট। আমাদের দেশের মানুষ ভালো থাকুক। পৃথিবীর সকল মানুষ। অভাবীদের অভাব দূরীভূত করুন মহান আল্লাহ তাআলা।
আল্লাহ পাক আমাদেরকে ইসলামের সঠিক শিক্ষা গ্রহণের তাওফিক দান করুন। বাস্তব জীবনে জীবে দয়ার প্রকাশ ঘটানোর মাধ্যমে মালিক মহিয়ানের ভালোবাসা অর্জনের কিসমত দান করুন।
৪| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:০৮
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুন্দর। ভালবাসা হোক সকল প্রাণের জন্য।
২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:২২
নতুন নকিব বলেছেন:
আমিন।
জাজাকুমুল্লাহু তাআলা খইরান।
৫| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৪৮
স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: অনেক ভালো লাগার একটি পোস্ট। আমাদের সবারই মনে মাখলুকাতের প্রতি ভালোবাসা জাগ্রত হউক।
২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০৯
নতুন নকিব বলেছেন:
শুকরিয়া।
আপনার জন্য শুভকামনা।
৬| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৫
কালো যাদুকর বলেছেন: আমিন।
আমি কুকুর পছন্দ করি, তবে ইসলামিক কারনে পালতে পারি না। এদেশে কুকুরকে ,ঘরের বাইরে আবহাওয়ার কারনে রাখা যায় না। কারন, অতি তাপে বা শীতে এদের কস্ট হয়।
এখানে দেখী অনেকে কুকুরকে খোজা করে দেয়, এটা কি জাহান্নামে যাওয়ার কারন নয়?
অনেকে দেখি খাচায় পাখি পালন করে। এতেও পাখিকে কস্ট দেয়া হয়। এ ব্যাপারে একটু বলুন। একারনে আমি পখি রাখি না। তবে পাখি দেখার জন্য প্রতি বছরই বাসার পেছনে "পাখির খাবার" রাখি। ওখানে মৌসুমী পাখিরা আসে।
২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:১৩
নতুন নকিব বলেছেন:
শখের বশে ও চিত্ত বিনোদনের জন্য পাখি পালতে ইসলামী শরীয়াতে কোনো বাধা নেই। ইসলামী শরীয়ায় পশুপাখি পালনে কোনরূপ নিষেধাজ্ঞা পাওয়া যায় না। অর্থাৎ, এ ধরণের কাজকে হারাম বা নিষিদ্ধ করা হয়নি। তবে পশুপাখি পালন করার ক্ষেত্রে ইসলাম বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে। যেমন,
পশু পাখির আহারসহ যথাযথ বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো অবস্থায় পশু পাখিকে কষ্ট দেয়া যাবে না। পোষা পাখি ও পশুর প্রতি যত্নবান হতে হবে। তাদের প্রতি মমত্ববান হতে হবে। তাদেরকে ভালোবাসতে হবে। অসুস্থ্ ও রোগাক্রান্ত হলে চিকিৎসা করাতে হবে এবং পর্যাপ্ত পানি ও খাদ্য প্রদান করতে হবে।
পাখিকে প্রয়োজন মাফিক তার সুবিধাপূর্ণ স্থানে বসবাস করতে দিতে হবে। এমন ছোট খাচায় রাখা যাবে না, যেখানে থেকে তার অস্বস্তি বা কষ্ট হয়। এক খাচায় অনেক পাখি গাদাগাদি করে রাখাও ঠিক না। প্রজনন বা বংশবিস্তারের ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য জোড়া মিলিয়ে দিতে হবে।
এর বিপরীতে যথাযথভাবে খাদ্য প্রদানসহ উপরোক্ত বিষয়াবলী অনুসারে পশুপাখির প্রয়োজনীয় যত্ন না নিতে পারলে তা পালন জায়েয হবে না। কারণ, পশু পাখি লালনপালনকারীর অবহেলা কিংবা অযত্নের কারণে যদি পোষা পাখি বা প্রাণির কোনোরূপ কষ্ট হয় তাহলে এর জন্য পালককে পরকালে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। পোষা পাখি বা প্রাণি যেন কোনো মতেই কষ্ট না পায় সেদিকে এর লালনপালনকারীকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কেননা কোনো প্রাণিকে কষ্ট দেয়ায় ইসলাম নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ইসলাম একজন মানুষের জন্যে যেমন সকল প্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে, তেমনি অবলা প্রাণিকেও দিয়েছে সকল আঘাত ও কষ্ট থেকে নিরাপত্তা। মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব সময় পশু-পাখির প্রতি দয়া প্রদর্শন করতে বলেছেন। অকারণে তাদের মেরে ফেলা, তাদের ওপর অতিরিক্ত বোঝা চাপানো, নিজেদের মনোরঞ্জনের জন্য তাদের প্রতি কোনো ধরেণের কষ্ট আরোপ করাকে তিনি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন।
প্রসঙ্গক্রমে বন্য পাখি ও কেইস বার্ডের কথা বলা যেতে পারে। বন্য পাখিরা বনে জঙ্গলে বড় হয়েছে। তাদের আবাসস্থল হলো বন। কিন্তু তাদের যদি বন থেকে ধরে এনে খাচায় রেখে পালন করা হয় এতে তাদের কষ্ট হয়। এ কারণে, দেখা যায়, বেশিরভাগ বন্য পাখি খাচায় রাখা হলে বেশি দিন বাঁচে না। বন্য পাখিদের বিচরণস্থল খোলা আকাশ, সবুজ প্রকৃতি। এদেরকে সেখান থেকে যখন খাচায় বন্দী করা হয় তখন সেটা তাদের জন্য কষ্টের কারণ হয়।
অপরদিকে, কেইস বার্ড বা খাঁচার পাখির জন্ম ও বৃদ্ধি খাচায় হয়। তারা খাচায় লালিতপালিত হয়ে অভ্যস্ত। বন্য পরিবেশে এরা বাঁচতে পারে না। এগুলোকে খাচায় রাখলে এদের তেমন কোনো কষ্ট হয় না। সুতরাং, আমাদের বন্য পাখি পালন থেকে বিরত থেকে প্রয়োজনে কেইজ বার্ড বা খাঁচার পাখি পালনে আগ্রহী হওয়া উচিত।
সুন্দর প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
৭| ৩০ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:০৩
কালো যাদুকর বলেছেন: নতুন নকিব ভাই বিস্তারিত জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ।
০১ লা ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩৭
নতুন নকিব বলেছেন:
শুকরান। জাজাকুমুল্লাহ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০৮
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ইসলাম মেনে চলার তৌফিক দেন যেনো আল্লাহ