নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ছবিঃ অন্তর্জাল।
ফযীলতপূর্ণ যেসব আমল গোলাম আযাদ করা বা দাস মুক্ত করার মত অনন্য
প্রাককথনঃ
ইসলাম ধর্মের আবির্ভাব লগ্নে পৃথিবীর দেশে দেশে দাস প্রথা চালু ছিল। প্রাক ইসলামী যুগে এ প্রথার প্রচলন ছিল আরও ব্যাপকতর। মানুষ কেনাবেচার হাট বসতো সেসময়। কালের আবহমানতায় মানুষের জীবনে সে এক অচিন্তনীয়, অমানবিক এবং অব্যবস্থাপনাময় দুঃসময়। দুর্বল, অসহায় এবং অভাবী কিছু মানুষের তখন স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার সামান্য অধিকারটুকু পর্যন্ত ছিল না। তাদেরকে দাসে পরিণত করেছিলেন সমাজের বিত্তশালী ও শক্তিমানগণ।
অমানবিক দাস প্রথার ভয়াবহ চিত্র অবলোকনে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কোমল হৃদয়ে ব্যাথার ঢেউ বয়ে যায়। তিনি ব্যথিত হন। কষ্ট পান। দরদে ভরা তাঁ অন্তরে এই কুপ্রথা দাগ কাটে। তিনি এটা মেনে নিতে পারেননি। এ কারণে দাস প্রথার প্রতি মানুষদেরকে তিনি বিভিন্নভাবে নিরুৎসাহিত করতে থাকেন। ইসলামের অভ্যুদয়ের পরে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাস প্রথা বিলুপ্তির লক্ষ্যে মানুষের ভেতরে সাম্য, ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় মগ্ন হন এবং মানুষের পারস্পারিক অধিকারের বিষয়ে সকলের ভেতরে সচেতনতা আনয়নের চেষ্টা করেন। তিনি নিজ উদ্যোগে এবং সাহাবায়ে কেরামের মাধ্যমে অসংখ্য দাসকে মুক্ত করে স্বাধীন জীবনে ফিরিয়ে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। একই সাথে শৃঙ্খলিত পরাধীন মানুষকে দাসের কলঙ্কজনক জীবন থেকে মুক্ত করে স্বাধীন জীবনে প্রবেশের সুযোগ করে দেয়ার গুরুত্ব, ফযীলত এবং সাওয়াব বর্ণনা করে অন্যদেরও এই কাজে উদ্বুদ্ধ করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন পাপের কাফ্ফারা আদায়ের জন্য দাস মুক্ত করার বিবিধ পন্থা ইসলামী শরী‘আতে বিধিবদ্ধ আছে। যেমন- হত্যা, কসম ভঙ্গ, যিহার এবং রামাযান মাসে দিনের বেলায় সহবাস প্রভৃতির কাফ্ফারা আদায়ের অন্যতম উপায় হ’ল দাস মুক্ত করা। -বিস্তারিত দেখুন, হত্যার কাফ্ফারা (সূরা নিসা ৪/৯২), যিহারের কাফ্ফারা (মুজাদালাহ ৫৮/০৩), কসম ভঙ্গের কাফ্ফারা (মায়েদা ৫/৮৯), রামাযানে দিনের বেলায় সহবাসের কাফ্ফারা (বুখারী হা/১৯৩৬; মুসলিম হা/১১১), দাসকে প্রহার করার কাফ্ফারা (মুসলিম হা/১৬৫৭; আবূদাঊদ হা/৫১৬৮) প্রভৃতি।
গোলাম আযাদ বা দাস মুক্ত করা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত লাভের অন্যতম একটি মাধ্যম। কিন্তু এ যুগের কোন কোটিপতি ব্যক্তিও যদি দাস মুক্ত করার এই ফযীলতপূর্ণ আমল সম্পাদনের ইচ্ছা করেন, তার সে ইচ্ছা পূরণ করার সুযোগ নেই বললেই চলে। কেননা বর্তমান যুগে দাস প্রথার প্রচলনই নেই। কিন্তু মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা ইসলামী শরীআতে এমন কিছু আমল প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাধ্যমে যুক্ত করে দিয়েছেন, যা দাস মুক্ত করার মতই ফযীলতপূর্ণ। বক্ষমান নিবন্ধে আমরা সে বিষয়ে সামান্য আলোকপাত করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ-
গোলাম আযাদ করা বা দাস মুক্ত করার ফযীলতঃ
গোলাম আযাদ করা বা দাসমুক্ত করার অনেক ফযীলত রয়েছে। এ কাজের সবচেয়ে বড় ফযীলত হ’ল জাহান্নাম থেকে মুক্তি। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি,
مَنْ أَعْتَقَ رَقَبَةً مُؤْمِنَةً، أَعْتَقَ اللهُ بِكُلِّ عُضْوٍ مِنْهُ عُضْوًا مِّنَ النَّارِ، حَتَّى يُعْتِقَ فَرْجَهُ بِفَرْجِهِ،
‘যে ব্যক্তি কোন মুমিন দাসকে আযাদ করবে, আল্লাহ তা‘আলা এর প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে আযাদকারীর প্রতিটি অঙ্গকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দিবেন। এমনকি এর (দাসের) লজ্জাস্থানের বিনিময়ে তার (মুক্তকারীর) লজ্জাস্থানকে মুক্তি দিবেন’। -বিস্তারিত দেখুন, মুসলিম হা/১৫০৯; তিরমিযী হা/১৫৪১; ইরওয়াউল গালীল হা/১৭৪২।
অপর বর্ণনায় তিনি বলেন,
مَنْ أَعْتَقَ رَقَبَةً مُؤْمِنَةً كَانَتْ فِدَاءَهُ مِنَ النَّارِ،
‘যে ব্যক্তি একজন মুমিন দাসকে আযাদ করে দিবে, এর বিনিময়ে তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত করে দেওয়া হবে’। -সূত্রঃ. আবূ দাঊদ, হা/৩৯৬৬, সনদ ছহীহ।
ছাহাবায়ে কেরাম এই হাদীছগুলো থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে গোলাম আযাদ করার জন্য পরস্পর প্রতিযোগিতা করতেন। নাফে‘ (রহঃ) বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) তার জীবদ্দশায় একশত দাস আযাদ করেছিলেন। -সূত্রঃ ছিফাতুছ ছাফওয়া, ১/২৪০ পৃ.।
অনুরূপভাবে সচ্ছল ছাহাবায়ে কেরাম আল্লাহর পথে নির্যাতিত গোলাম ছাহাবীদেরদে কিনে আযাদ করে দিতেন। কল্পনায় নিজেকে একজন পরাধীন ক্রীতদাস ভেবে সেই দাস প্রথা প্রচলিত সমাজের দিকে নযর দিলে এর গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়।
দাস মুক্ত করার মত মর্যাদাপূর্ণ এবং ফযীলতের আমল সমূহঃ
এক. পবিত্র বাইতুল্লাহ তথা কা‘বা ঘর তাওয়াফ করাঃ
উমাইর (রহঃ) বলেন, ইবনু ওমর (রাঃ) ভিড় ঠেলে হ’লেও হাজারে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানীর নিকটে যেতেন (তা স্পর্শ করার জন্য)। অথচ রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর অন্য কোন সাহাবীকে আমি এরূপ করতে দেখিনি। আমি বললাম,
يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ، إِنَّكَ تُزَاحِمُ عَلَى الرُّكْنَيْنِ زِحَامًا مَا رَأَيْتُ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُزَاحِمُ عَلَيْهِ
‘হে আবূ আব্দুর রহমান! আপনি ভিড় ঠেলে হলেও এই দুই রুকনে গিয়ে পৌঁছেন, কিন্তু আমি তো রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর অন্য কোন সাহাবীকে এভাবে ভিড় ঠেলে সেখানে যেতে দেখিনি। তিনি বললেন, আমি এরূপ কেন করব না? রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমি বলতে শুনেছি,
إِنَّ مَسْحَهُمَا كَفَّارَةٌ لِلْخَطَايَا وَسَمِعْتُهُ، يَقُولُ: مَنْ طَافَ بِهَذَا البَيْتِ أُسْبُوعًا فَأَحْصَاهُ كَانَ كَعِتْقِ رَقَبَةٍ وَسَمِعْتُهُ يَقُولُ: لَا يَضَعُ قَدَمًا وَلَا يَرْفَعُ أُخْرَى إِلَّا حَطَّ اللهُ عَنْهُ خَطِيْئَةً وَكَتَبَ لَهُ بِهَا حَسَنَةً،
‘এই দুইটি রুকন স্পর্শ করলে গুনাহসমূহের কাফ্ফারা হয়ে যায়। আমি তাঁকে আরো বলতে শুনেছি যে, সঠিকভাবে যদি কোন লোক বাইতুল্লাহ সাতবার তাওয়াফ করে, তাহলে তার জন্য একটি ক্রীতদাস আযাদ করার সমান নেকী হবে’। আমি আরো বলতে শুনেছি যে, যখনই কোন ব্যক্তি তাওয়াফ করতে গিয়ে এক পা রাখে এবং অপর পা তোলে, তখন আল্লাহ তাআ'লা তার একটি করে গুনাহ মাফ করে দেন এবং একটি করে সাওয়াব লিখে দেন’। -তিরমিযী, হা/৯৫৯; মিশকাত হা/২৫৮০, সনদ ছহীহ।
সুতরাং, আমাদের কর্তব্য হ’ল নেকী লাভের এই সুযোগ হাতছাড়া না করা। কেননা অনেকে এমন আছেন, যারা হজ্জ বা ওমরাহ করতে গিয়ে ঘোরাঘুরি, অধিক খানাপিনার পেছনে এবং বাজার ঘাটে, দোকানপাটে কেনাকাটায় প্রচুর সময় অপচয় করেন। মহান আল্লাহ আমাদের নেকীর কাজে অগ্রগামী হওয়ার তাওফীক্ব দান করুন।
দুই. তাওয়াফের পর দুই রাকাআত ছালাত আদায় ও ছাফা-মারওয়ায় সাঈ করাঃ
ছাফা ও মারওয়া দু’টি পাহাড়ের নাম, যা আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্তর্ভুক্ত। -সূরাহ আল বাক্বারাহ, ২/১৫৮
হজ্জের অন্যতম একটি রুকন হ’ল ছাফা-মারওয়ায় সাঈ করা, যার মাধ্যমে গোলাম আযাদ করার নেকী লাভ করা যায়। ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি,
وَأَمَّا رَكْعَتَاكَ بَعْدَ الطَّوَافِ كَعِتْقِ رَقَبَةٍ مِنْ بَنِي إِسْمَاعِيلَ وَأَمَّا طَوَافُكَ بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ بَعْدَ ذَلِكَ كَعِتْقِ سَبْعِيْنَ رَقَبَةً،
‘জেনে রাখ! তওয়াফের পর দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করার নেকী ইসমাঈলের বংশ থেকে একজন দাস আযাদ করার মত। এরপর ছাফা-মারওয়ায় সাঈ করার ছওয়াব সত্তর জন দাস মুক্ত করার সমান’। -মুসনাদে বায্যার, হা/৬১৭৭; ছহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব হা/১১১২, সনদ হাসান।
তিন. অপরকে খাদ্য খাওয়ানো এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধঃ
দাস মুক্ত করার নেকী লাভের অন্যতম বিকল্প মাধ্যম হ’ল ক্ষুধার্তকে খাদ্য খাওয়ানো, তৃষ্ণার্তকে পান করানো এবং সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা। বারা ইবনু আযেব (রাঃ) বলেন, একদিন এক গ্রাম্য লোক রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর নিকট এসে বলল,
يَا رَسُولَ اللهِ عَلِّمْنِي عَمَلًا يُدْخِلُنِي الْجَنَّةَ،
‘হে আল্লাহর রাসূল, সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাকে এমন একটি আমলের কথা বলে দিন, যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। দারা-কুৎনীর বর্ণনায় এসছে, সে বলল,
دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ يُقَرِّبُنِي مِنَ الْجَنَّةِ وَيُبَاعِدُنِي مِنَ النَّارِ،
‘আমাকে এমন একটি আমলের সন্ধান দিন, যা আমাকে জান্নাতের নিকটবর্তী করবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। -দারাকুৎনী হা/২০৫৫;
শু‘আইব আরনাঊত হাদীছটি ছহীহ বলেছেন। তিনি বললেন,
لَئِنْ كُنْتَ أَقَصَرْتَ الْخُطْبَةَ، لَقَدْ أَعْرَضْتَ الْمَسْأَلَةَ. أَعْتِقِ النَّسَمَةَ، وَفُكَّ الرَّقَبَةَ، قَالَ: أَوَلَيْسَا وَاحِدًا؟ قَالَ: لَا، عِتْقُ النَّسَمَةِ: أَنْ يَنْفَرِدَ بِعِتْقِهَا، وَفُكُّ الرَّقَبَةِ أَنْ يُعِينَ فِي ثَمَنِهَا، وَالْمِنْحَةُ الْوَكُوفُ، أَظُنُّهُ قَالَ: وَالْفَيْءُ عَلَى ذِي الرَّحِمِ الظَّالِمِ، فَإِنْ لَمْ تُطِقْ ذَلِكَ، فَأَطْعِمِ الْجَائِعَ، وَاسْقِ الظَّمْآنَ، وَأْمُرْ بِالْمَعْرُوفِ، وَانْهَ عَنِ الْمُنْكَرِ، فَإِنْ لَمْ تُطِقْ ذَلِكَ، فَكُفَّ لِسَانَكَ إِلَّا مِنْ خَيْرٍ،
‘যদিও তুমি অল্প কথায় বলে ফেললে, কিন্তু তুমি ব্যাপক বিষয় জানতে চেয়েছ। তুমি একটি প্রাণী মুক্ত কর এবং গোলাম মুক্ত কর। সে বলল, এ কাজ দু’টি কি একই নয়? তিনি বললেন, (অবশ্যই) না। কেননা প্রাণী মুক্ত করার অর্থ হ’ল একাকী একটি প্রাণ মুক্ত করা, আর গোলাম মুক্ত করার অর্থ হ’ল তার মুক্তিপণের মাধ্যমে সাহায্য করা। অধিক দুগ্ধদানকারী প্রাণী দান করা এবং অত্যাচারী আত্মীয়-স্বজনের প্রতি দয়াশীল হওয়া। যদি তুমি এসব কাজ করতে সক্ষম না হও, তাহ’লে ক্ষুধার্তকে খাদ্য খাওয়াও এবং তৃষ্ণার্তকে পান করাও। সৎকর্মের আদেশ দাও এবং মন্দ কাজে বাধা দাও। আর যদি তুমি এ কাজ করতেও অক্ষম হও, তাহ’লে উত্তম কথোপকথন ছাড়া তোমার জিহবাকে সংযত রাখ’।-বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৪০২৬; মিশকাত হা/৩৩৮৪; ছহীহুত তারগীব হা/১৮৯৮, সনদ ছহীহ্।
চার. ঋণ দেওয়া এবং পথহারাকে পথ দেখানোঃ
বারা ইবনু আযেব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
مَنْ مَنَحَ مِنْحَةَ وَرِقٍ أَوْ مِنْحَةَ لَبَنٍ أَوْ أَهْدَى زُقَاقاً فَهُوَ كَعِتْقِ نَسَمَةٍ،
‘যে ব্যক্তি একবার দহন করা দুধ দান করে অথবা টাকা-পয়সা ধার দেয় অথবা পথহারা ব্যক্তিকে সঠিক পথ দেখায়, তার জন্য রয়েছে একটি গোলাম মুক্ত করার সমপরিমাণ ছওয়াব’। -তিরমিযী, হা/১৯৫৭; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৫৫৯, ছহীহ হাদীছ।
আলোচ্য হাদীছে ঋণ বলতে কর্যে হাসানাহ এবং পথহারা বলতে রাস্তা ভুলে যাওয়া ব্যক্তিকে সঠিক পথের সন্ধান দেওয়া, অন্ধ ব্যক্তিকে পথ দেখানো প্রভৃতি বুঝানো হয়েছে।
পাঁচ. অসহায় আত্মীয়-স্বজনদেরকে দান করাঃ
আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং তাদের জন্য দান করা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের অন্যতম একটি মাধ্যম, যার মাধ্যমে গোলাম আযাদ করার নেকী অর্জন করা যায়। একবার উম্মুল মু’মিনীন মায়মূনা বিনতে হারেছ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর অনুমতি না নিয়ে নিজের দাসীকে আযাদ করে দেন। তারপর তার ঘরে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর অবস্থানের দিন তিনি বললেন,
أَشَعَرْتَ يَا رَسُولَ اللهِ أَنِّي أَعْتَقْتُ وَلِيدَتِي
‘হে আল্লাহর রাসূল, সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি কি জানেন আমি আমার দাসীকে আযাদ করে দিয়েছি? তখন রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, أَوَفَعَلْتِ؟ ‘তুমি কি তাই করেছ?’ মায়মূনা (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন,
أَمَا إِنَّكِ لَوْ أَعْطَيْتِهَا أَخْوَالَكِ كَانَ أَعْظَمَ لِأَجْرِكِ،
‘শোন! যদি তুমি তোমার মামাদেরকে এটা দান করতে তাহ’লে তোমার জন্য তা অধিক নেকীর কাজ হ’ত’। -বুখারী হা/২৫৯২; মিশকাত হা/১৯৩৫।
এই হাদীছের ব্যাখ্যায় ইবনু বাত্ত্বাল (রহঃ) বলেন,
أن صلة الرحم أفضل من العتق،
‘দাস মুক্ত করার চেয়েও ফযীলতপূর্ণ আমল হ’ল আত্মীয়তার সুসম্পর্ক বজায় রাখা’। -মির‘আতুল মাফাতীহ্, ৬/৩৭২ পৃ.।
ছয়. পরিবারের জন্য খরচ করাঃ
সাধারণ দান-ছাদাক্বার চেয়ে উত্তম দান হ’ল পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করা। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
دِينَارٌ أَنْفَقْتَهُ فِي سَبِيلِ اللهِ وَدِينَارٌ أَنْفَقْتَهُ فِي رَقَبَةٍ، وَدِينَارٌ تَصَدَّقْتَ بِهِ عَلَى مِسْكِيْنٍ، وَدِينَارٌ أَنْفَقْتَهُ عَلَى أَهْلِكَ، أَعْظَمُهَا أَجْرًا الَّذِي أَنْفَقْتَهُ عَلَى أَهْلِكَ،
‘কোন একটি দীনার তুমি আল্লাহর পথে ব্যয় করেছ, একটি দীনার তুমি ব্যয় করেছ ক্রীতদাসকে মুক্ত করার জন্য, একটি দীনার তুমি ছাদাক্বাহ করেছ মিসকীনের জন্য এবং একটি দীনার তুমি তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করেছ। এর মাঝে ছওয়াবের দিক দিয়ে সর্বোত্তম হ’ল সেটি, যা তুমি তোমার পরিবারের জন্য খরচ করেছ’। -মুসলিম হা/৯৯৫; মিশকাত হা/১৯৩১।
ইমাম ত্বীবী (রহঃ) বলেন,
فيه دليل على أن إنفاق الرجل على أهله أفضله من الإنفاق في سبيل الله، ومن الإنفاق في الرقاب ومن التصدق على المساكين،
‘এই হাদীছে দলীল রয়েছে যে, আল্লাহর পথে ব্যয় করা, দাস মুক্তির জন্যে দান করা এবং মিসকীনদেরকে ছাদাক্বাহ করার চেয়েও কোন ব্যক্তির জন্য উত্তম কাজ হ’ল পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করা’। -মির‘আতুল মাফাতীহ্, ৬/৩৬৭ পৃ.।
সাত. শ্রমিকের কাজে সাহায্য করা এবং বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাঃ
ইসলাম ছোট-বড়, ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলকে পরস্পর সহযোগিতা করতে অনুপ্রাণিত করেছে। আবূ যার (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমি জিজ্ঞেস করলাম,
يَا رَسُولَ اللهِ، أَيُّ الْأَعْمَالِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: الْإِيمَانُ بِاللهِ وَالْجِهَادُ فِي سَبِيلِهِ قَالَ: قُلْتُ: أَيُّ الرِّقَابِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: أَنْفَسُهَا عِنْدَ أَهْلِهَا وَأَكْثَرُهَا ثَمَنًا قَالَ: قُلْتُ: فَإِنْ لَمْ أَفْعَلْ؟ قَالَ: تُعِينُ صَانِعًا أَوْ تَصْنَعُ لِأَخْرَقَ قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، أَرَأَيْتَ إِنْ ضَعُفْتُ عَنْ بَعْضِ الْعَمَلِ؟ قَالَ: تَكُفُّ شَرَّكَ عَنِ النَّاسِ فَإِنَّهَا صَدَقَةٌ مِنْكَ عَلَى نَفْسِكَ.
‘হে আল্লাহর রাসূল! কোন আমল সর্বোত্তম? তিনি বললেন, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা এবং তাঁর পথে জিহাদ করা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কোন ধরনের গোলাম আযাদ করা উত্তম? তিনি বললেন, যে গোলামের মূল্য অধিক এবং যে গোলাম তার মনিবের কাছে অধিক আকর্ষণীয়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমি যদি এটা করতে না পারি? তিনি বললেন, তাহ’লে কাজের লোককে (তার কাজে) সাহায্য করবে কিংবা বেকারকে কাজের সংস্থান করে দিবে। আমি (আবারও) বললাম, যদি আমি এটাও করতে না পারি? তিনি বললেন, ‘তাহ’লে মানুষকে তোমার অনিষ্টতা থেকে মুক্ত রাখবে। বস্ত্ততঃ এটা তোমার নিজের জন্য তোমার পক্ষ থেকে ছাদাক্বাহ’। -বুখারী হা/২৫১৮; মুসলিম হা/৮৪, শব্দাবলী মুসলিমের।
বোঝা গেল, শ্রমিক বা কাজের লোককে তার কাজে সহযোগিতা করা এবং অদক্ষ ও কর্মহীন লোকের জন্য কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া দাস মুক্ত করার ন্যায় মর্যাদাপূর্ণ আমল।
আট. সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার একশত বার করে পাঠ করাঃ
উম্মু হানী (রাঃ) বলেন, একবার আমি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর নিকট এসে বললাম,
يَا رَسُولَ اللهِ، دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ فَإِنِّي قَدْ كَبِرْتُ وَضَعُفْتُ وَبَدُنْتُ،
‘হে আল্লাহর রাসূল, সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাকে একটা আমলের কথা বলে দিন। কেননা, এখন আমি তো বৃদ্ধ হয়ে পড়েছি, দুর্বল হয়ে গেছি এবং আমার দেহও ভারী হয়ে গেছে। তখন তিনি বলেন,
كَبِّرِي اللهَ مِائَةَ مَرَّةٍ، وَاحْمَدِي اللهَ مِائَةَ مَرَّةٍ، وَسَبِّحِي اللهَ مِائَةَ مَرَّةٍ خَيْرٌ مِنْ مِائَةِ فَرَسٍ مُلْجَمٍ مُسْرَجٍ فِي سَبِيلِ اللهِ، وَخَيْرٌ مِنْ مِائَةِ بَدَنَةٍ، وَخَيْرٌ مِنْ مِائَةِ رَقَبَةٍ
‘তুমি একশত বার আল্লাহু আকবার, একশত বার আলহামদুলিল্লাহ এবং একশত বার সুবহা-নাল্লাহ পড়। এটা তোমার জন্য জিনপোষ ও লাগামসহ একশত ঘোড়া আল্লাহর পথে (জিহাদে) দান করার চেয়ে উত্তম, একশত উটের চেয়ে উত্তম এবং একশত গোলাম আযাদ করার চেয়ে উত্তম’। -ইবনু মাজাহ হা/৩৮১০; ছহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব হা/১৫৫৩; সনদ হাসান।
বর্তমান যুগে যদি দাস প্রথা থাকত, তাহ’লে একশটি দাস আযাদ করতে কোটি কোটি টাকার প্রয়োজন হ’ত। অথচ পাঁচ-সাত মিনিটের মাধ্যেই আমরা এই আমলটি করতে পারি।
নয়. মাগরিব ও ফজর ছালাতের পর দশ বার তাহলীল বা কালেমা তাওহীদ পাঠ করাঃ
যে ব্যক্তি মাগরিব ও ফজরের ফরয ছালাতের পর দশবার করে বিশেষ তাহলীল পাঠ করে, তার আমলনামায় দশজন মুমিন ক্রীতদাস মুক্ত করার নেকী লিপিবদ্ধ করা হয়। উমারাহ ইবনু শাবীব আস-সাবাঈ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
مَنْ قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الـمُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ، يُحْيِي وَيـُمِيتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ عَشْرَ مَرَّاتٍ عَلَى إِثْرِ الـمَغْرِبِ بَعَثَ اللهُ لَهُ مَسْلَحَةً يَحْفَظُونَهُ مِنَ الشَّيْطَانِ حَتَّى يُصْبِحَ، وَكَتَبَ اللهُ لَهُ بِهَا عَشْرَ حَسَنَاتٍ مُوجِبَاتٍ، وَمَحَا عَنْهُ عَشْرَ سَيِّئَاتٍ مُوبِقَاتٍ، وَكَانَتْ لَهُ بِعَدْلِ عَشْرِ رِقَابٍ مُؤْمِنَاتٍ،
‘যে ব্যক্তি মাগরিবের ছালাতের পর দশবার বলবে, ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহূ লা-শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ইয়ুহ্য়ী ওয়া ইয়ুমী-তু ওয়াহুয়া ‘আলা-কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর’ (অর্থ- আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ্ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই, সকল রাজত্ব তাঁর এবং তিনিই সকল প্রশংসার অধিকারী, তিনিই জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন এবং প্রতিটি জিনিসের উপর তিনিই মহা ক্ষমতাশালী)’, তাহ’লে আল্লাহ তার (পাঠকারীর) নিরাপত্তার জন্য একদল ফেরেশতা পাঠান, যারা তাকে শয়তানের ক্ষতি হ’তে ভোর পর্যন্ত নিরাপত্তা দান করেন, তার জন্য (আল্লাহর অনুগ্রহ) আবশ্যক করার ন্যায় দশটি নেকী লিখে দেন, তার দশটি ধ্বংসাত্মক গুনাহ মুছে দেন এবং তার জন্য দশজন ঈমানদার দাস মুক্ত করার সমপরিমাণ ছওয়াব রয়েছে’। -তিরমিযী হা/৩৫৩৪; নাসাঈ হা/১০৩৩৮; ছহীহুত তারগীব হা/৬৬০, ছহীহ হাদীছ।
দশ. কালেমা তাওহীদ প্রতিদিন একশত বার পাঠ করাঃ
আবূ হুরায়ারা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
مَنْ قَالَ: لاَ إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الـمُلْكُ وَلَهُ الحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، فِي يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ، كَانَتْ لَهُ عَدْلَ عَشْرِ رِقَابٍ، وَكُتِبَتْ لَهُ مِائَةُ حَسَنَةٍ، وَمُحِيَتْ عَنْهُ مِائَةُ سَيِّئَةٍ، وَكَانَتْ لَهُ حِرْزًا مِنَ الشَّيْطَانِ يَوْمَهُ ذَلِكَ حَتَّى يُمْسِيَ، وَلَمْ يَأْتِ أَحَدٌ بِأَفْضَلَ مِمَّا جَاءَ بِهِ، إِلَّا أَحَدٌ عَمِلَ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ،
‘যে ব্যক্তি এই দো‘আটি দিনে একশ’ বার পড়বে যে, ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহূ লা-শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা-কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর’, তাহ’লে তার জন্য দশটি গোলাম আযাদ করার সমপরিমাণ নেকী অর্জিত হবে, তার জন্য একশটি নেকী লিপিবদ্ধ করা হবে এবং একশটি গুনাহ মোচন করা হবে। আর সেই দিনের সন্ধ্যা অবধি এই দো‘আটি তার জন্য শয়তান থেকে বাঁচার রক্ষাকবচ হবে এবং তার চেয়ে সেদিন কেউ উত্তম আমল করতে পারবে না। তবে তার কথা স্বতন্ত্র, যে এর চেয়ে আরো বেশী আমল করে’। -বুখারী হা/৩২৯৩; মুসলিম হা/২৬৯১; মিশকাত হা/২৩০২।
এগারো. আল্লাহর পথে জিহাদ করাঃ
গোলাম আযাদের মত বিশাল নেকী লাভের অন্যতম আরেকটি উপায় হল আল্লাহর পথে জিহাদ করা। কিন্তু জিহাদের কথা উঠলে তো কারও কারও আবার দেখা দেয় সমস্যা। তারা জিহাদের অর্থ এবং মর্ম, সংজ্ঞা এবং হুকুম কোনোটাই হয়তো সঠিকভাবে না জানার কারণে এমনটি হয়ে থাকে। সময় সুযোগ পেলে জিহাদ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা লাভের উদ্দেশ্যে পরবর্তীতে লেখার ইচ্ছে থাকলো ইনশাআল্লাহ। আমর ইবনু আবাসাহ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি,
مَنْ رَمَى الْعَدُوَّ بِسَهْمٍ، فَبَلَغَ سَهْمُهُ الْعَدُوَّ، أَصَابَ أَوْ أَخْطَأَ، فَعَدْلُ رَقَبَةٍ،
‘যে ব্যক্তি শত্রুবাহিনীর প্রতি একটি তীর নিক্ষেপ করল। অতঃপর সেই তীর শত্রুর নিকটে পৌঁছে ঠিক লক্ষ্যে আঘাত হানুক বা লক্ষ্যচ্যুত হোক, এর বিনিময়ে একজন দাস মুক্ত করার নেকী রয়েছে’। -ইবনু মাজাহ, হা/২৮১২; ছহীহুত তারগীব হা/১২৮৬, সনদ ছহীহ্।
অপর বর্ণনায় তিনি বলেন,
مَنْ رَمَى بِسَهْمٍ فِي سَبِيلِ اللهِ فَهُوَ لَهُ عَدْلُ مُحَرَّرٍ،
‘যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে একটি তীর নিক্ষেপ করবে, তার জন্য একটি গোলাম আযাদের নেকী রয়েছে’। -তিরমিযী, হা/১৬৩৮; নাসাঈ হা/৩১৪৩; ছহীহুল জামে‘ হা/৬২৬।
সময় স্বল্পতার মাঝেও এই লেখাটির সমাপ্তি টানার আগে কিছু কথা না বলে পারছি না বলে দুঃখিত! জিহাদের প্রসঙ্গ এলেই কিছু ভাইদের পক্ষ থেকে তীব্র আপত্তি আসতে দেখা যায়। সত্যিকারের একজন মুসলিম জিহাদ শব্দের মধ্যে কখনো সমস্যা অনুভব করতে পারেন না। বরং, এই শব্দটিতে তার আপত্তি অনুসন্ধানের প্রশ্নই আসতে পারে না। কারণ, এটি মহাগ্রন্থ আল কুরআনের অন্যতম একটি পরিভাষা। কুরআনুল কারিম এবং হাদিসের কিতাবগুলোতে বহুল ব্যবহৃত একটি টার্ম বা পরিভাষাকে হাস্যকরভাবে নেয়া কখনো ঈমানদার ব্যক্তির কাজ হতে পারে কি না, সে ফয়সালার ভার সম্মানিত পাঠকের প্রতি রেখে দিলাম। এটা কেবলমাত্র তাদের পক্ষেই শোভনীয় ও মানানসই যারা মৃত্যুভয়ে ভীত এবং সত্যের পথ থেকে পলায়নপর মানসিকতা যাদেরকে বিভ্রান্তির মধ্যে নিপতিত করে পার্থিব সামান্য মোহে আবদ্ধ ও বিভ্রান্ত করে রেখেছে। এদের অবস্থা দর্শনে মনে হয়, এরা 'জিহাদ' শব্দটাতেই যেন মৃত্যুর গন্ধ পান। মৃত্যুর ঘ্রাণ যেন তাদের নাকে এসে লাগে। কিন্তু বিনয়ের সাথে জিজ্ঞেস করি, ভাই! এত ভয় পাবার আসলেই কিছু আছে কি? জিহাদ মানে তো কারও উপরে অন্যায় আক্রমন নয়। জিহাদ মানে, কারও প্রতি অবিচার জুলূম চাপিয়ে দেয়া নয়। জিহাদ মানে, কাউকে কষ্ট দেয়া নয়। কাউকে আঘাত করা নয়। কাউকে হত্যা করা জিহাদ নয়। জিহাদ মানে, চেষ্টা প্রচেষ্টা, সত্যের পথে সাধনা। আর প্রকৃত জিহাদ হচ্ছে, আল্লাহ তাআ'লার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে দ্বীনের পথে অটল অবিচল থাকার আমৃত্যু অবিরাম সংগ্রাম।
উদাহরণতঃ মন তো চায় অন্যায় করতে, কিন্তু মনের সাথে বোঝাপড়া করলেন, যুদ্ধ করলেন, দীর্ঘ বোঝাপড়ার একপর্যায়ে মনের চাহিদামত সে অন্যায় কাজটি আপনি করলেন না। ফিরে আসলেন। আপনি জয়ী হলেন। এটাও জিহাদ। এটা নফসের সাথে জিহাদ। আর এই যে নফসের সাথে জিহাদ, রাগের সময় নিজেকে কন্ট্রোল করা, নিজের প্রতি নিজের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার মত মহৎ গুণকে হাদিসের ভাষায় অভিহিত করা হয়েছে, 'জিহাদের আকবার' বা 'সবচেয়ে বড় জিহাদ' হিসেবে। এর বাইরে সশস্ত্র জিহাদের যে বিষয়টি রয়েছে তার জন্য জিহাদ সম্মন্ধে ভালোভাবে স্বচ্ছ ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়। সশস্ত্র জিহাদ কোথায়, কখন এবং কোন পরিস্থিতিতে করা বিধেয়, তার রয়েছে ইসলামে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। সুতরাং, এগুলো গভীরভাবে অনুধাবন না করে, জিহাদের হুকুম সঠিকভাবে অবগত না হয়ে, না জেনে, না বুঝে কোনো ষড়যন্ত্রকারী মহলের ইন্ধন, চক্রান্ত কিংবা লোভ লালসায় বিভ্রান্ত হয়ে জিহাদের নামে অন্যায় পথে পা বাড়ানোর কোনো অনুমতি ইসলাম কখনো দেয় না। বরং, এসব চক্রান্তকারীদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়া থেকে নিজেকে সতর্কতার সাথে বাঁচিয়ে রাখা যেমন প্রত্যেকের দায়িত্ব, তেমনি অন্যদেরও বাঁচতে সাহায্য করা একান্তভাবে উচিত।
জিহাদকে অযথা অযাচিতভাবে ভয় শুধু তারাই পান যারা মৃত্যুকে ভয় পান তীব্রভাবে। বলি, প্রিয় ভাই, শ্রদ্ধেয়া বোন, মৃত্যুকে ভয় পেলেই কি মৃত্যু আমাদের ছেড়ে চলে যাবে? মৃত্যু থেকে বাঁচার তো কোনো পথ নেই। মৃত্যু অবধারিত। সুতরাং, অহেতুক ভয় পেয়ে লাভ কি? মৃত্যু আসবেই। তা সুরক্ষিত, সাউন্ডপ্রুফ আবদ্ধ কুঠুরির ভেতরে থাকলেও।
তবে, আমরা যারা অতি ভীত, জিহাদ কথাটা শুনলেই ভয়ে কেঁপে উঠি, আমাদের জন্য সুসংবাদ হচ্ছে, জিহাদের নাম শুনলেই ভীত না হবার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, জিহাদ কুরআনে বর্ণিত আল্লাহ তাআ'লার দেয়া অন্যতম একটি বিধান। তবে জিহাদের নামে শান্তিপূর্ণ সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা তৈরি করে শান্তি বিনষ্ট করার কোনো সুযোগ ইসলাম কখনো কাউকে দেয় না। জিহাদের নাম করে যেখানে সেখানে, যখন তখন উম্মাদনা সৃষ্টি করার সুযোগও আদৌ ইসলাম সমর্থন করে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। অন্য জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মানুষের জান মাল ইজ্জত আবরু নিরাপত্তায় ইসলাম সবসময় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।
শেষের কথাঃ
সালাম তথা শান্তির সম্ভাষন শুরুতে ও শেষে। প্রিয় পাঠক! যে সকল আমল সম্পর্কে অত্র নিবন্ধে আলোকপাত করা হল, তা সম্পাদন করা আমাদের কাছে আদৌ কোন কঠিন কাজ নয়। কিন্তু আবহেলা ও অলসতার দরূন নেকীর ভান্ডার সমৃদ্ধ করার এই সুযোগগুলো আমাদের হাতছাড়া হয়ে যায়। কোন কোন আমল এমন রয়েছে যেগুলো একটু ইচ্ছা করলেই স্বল্প সময়ে করা সম্ভব। তাই আসুন! নেকী লাভের সুযোগগুলোকে আমরা যথাযথভাবে কাজে লাগাই এবং উপরোক্ত আমলসমূহ সম্পাদনের মাধ্যমে গোলাম আযাদ করার নেকী অর্জনে ব্রতী হই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা আমাদের সহায় হোন। কল্যানকর প্রত্যেক কাজে আমাদের তাওফিককে বাড়িয়ে দেন। আমাদের প্রতিটি আমলকে দৃঢ়তার সাথে করার সাহস এবং শক্তি দান করুন।
লেখা ও তথ্য সূত্রঃ
[1]. হত্যার কাফ্ফারা (সূরা নিসা ৪/৯২), যিহারের কাফ্ফারা (মুজাদালাহ ৫৮/০৩), কসম ভঙ্গের কাফ্ফারা (মায়েদা ৫/৮৯), রামাযানে দিনের বেলায় সহবাসের কাফ্ফারা (বুখারী হা/১৯৩৬; মুসলিম হা/১১১), দাসকে প্রহার করার কাফ্ফারা (মুসলিম হা/১৬৫৭; আবূদাঊদ হা/৫১৬৮) প্রভৃতি।
[2]. মুসলিম হা/১৫০৯; তিরমিযী হা/১৫৪১; ইরওয়াউল গালীল হা/১৭৪২।
[3]. আবূদাঊদ হা/৩৯৬৬, সনদ ছহীহ।
[4]. ছিফাতুছ ছাফওয়া, ১/২৪০ পৃ.।
[5]. তিরমিযী হা/৯৫৯; মিশকাত হা/২৫৮০, সনদ ছহীহ।
[6]. মুসনাদে বায্যার হা/৬১৭৭; ছহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব হা/১১১২, সনদ হাসান।
[7]. ইবনু মাজাহ হা/২৮১২; ছহীহুত তারগীব হা/১২৮৬, সনদ ছহীহ্।
[8]. তিরমিযী হা/১৬৩৮; নাসাঈ হা/৩১৪৩; ছহীহুল জামে‘ হা/৬২৬।
[9]. তিরমিযী হা/১৯৫৭; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৫৫৯, ছহীহ হাদীছ।
[10]. বুখারী হা/২৫৯২; মিশকাত হা/১৯৩৫।
[11]. মির‘আতুল মাফাতীহ্, ৬/৩৭২ পৃ.।
[12]. মুসলিম হা/৯৯৫; মিশকাত হা/১৯৩১।
[13]. মির‘আতুল মাফাতীহ্, ৬/৩৬৭ পৃ.।
[14]. বুখারী হা/২৫১৮; মুসলিম হা/৮৪, শব্দাবলী মুসলিমের।
[15]. দারাকুৎনী হা/২০৫৫; শু‘আইব আরনাঊত হাদীছটি ছহীহ বলেছেন।
[16]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৪০২৬; মিশকাত হা/৩৩৮৪; ছহীহুত তারগীব হা/১৮৯৮, সনদ ছহীহ্।
[17]. তিরমিযী হা/৩৫৩৪; নাসাঈ হা/১০৩৩৮; ছহীহুত তারগীব হা/৬৬০, ছহীহ হাদীছ।
[18]. বুখারী হা/৩২৯৩; মুসলিম হা/২৬৯১; মিশকাত হা/২৩০২।
[19]. ইবনু মাজাহ হা/৩৮১০; ছহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব হা/১৫৫৩; সনদ হাসান।
১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:২৪
নতুন নকিব বলেছেন:
জাজাকুমুল্লাহু তাআ'লা। প্রথম মন্তব্যে অভিনন্দন।
কল্যানের দুআ সবসময়।
২| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:০৪
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ইসলাম দাস প্রথাকে নিষিদ্ধ করে নাই।১৮৬৩ সালে আব্রাহাম লিংকন দাস প্রথা নিষিদ্ধ করেন।
১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:১১
নতুন নকিব বলেছেন:
মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। তবে পোস্ট না পড়েই মন্তব্যটা করেছেন।
দয়া করে পোস্ট পড়ে আবার মন্তব্যে আসবেন।
দাওয়াত থাকলো।
৩| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫১
নতুন বলেছেন: গোলাম আযাদ বা দাস মুক্ত করা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত লাভের অন্যতম একটি মাধ্যম। কিন্তু এ যুগের কোন কোটিপতি ব্যক্তিও যদি দাস মুক্ত করার এই ফযীলতপূর্ণ আমল সম্পাদনের ইচ্ছা করেন, তার সে ইচ্ছা পূরণ করার সুযোগ নেই বললেই চলে। কেননা বর্তমান যুগে দাস প্রথার প্রচলনই নেই। কিন্তু মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা ইসলামী শরীআতে এমন কিছু আমল প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাধ্যমে যুক্ত করে দিয়েছেন, যা দাস মুক্ত করার মতই ফযীলতপূর্ণ।
তার মানে বর্তমানে দাস প্রথা না থাকার জন্য আল্লাহের সন্তুস্টি ও জান্নাত লাভের অন্যতম একটা মাধ্যম বন্ধ হয়ে গেছে বলে অনেক ধনী মুসলমানের কাছে কস্ট লাগছে? তাদের জন্য আপনি এই ব্লগটা লিখলেন?
তাহলে যদি দাস প্রথা থাকতো আপনার কাছেও ভালো লাগতো যে এই যুগের কোটিপতি মুসলমান দাস মুক্ত করে আল্লাহের সন্তুস্টি ও জান্নাত লাভ করার সুযোগটা পাচ্ছে?
আরেকটা জিঙ্গাসা:- ইসলাম ধর্ম কেন সেই সময় দাস প্রথা বাতিলের করেনাই যেমনটা মদ হারাম করেছিলো? পর্দা বাধ্যতামুলক? কেন সেটা অনেক পরে ততকালিন মানুষকে করতে হলো?
কেন একজন যদ্ধ বন্দী দাসীর সাথে সহবাস অবৈধ করেন নাই?
তিনি এক দাস তার কাছে বায়াত গ্রহন করার পরে যখন ঐ দাসের মালিক আসলো তখন রাসুল সা: ২টা কালো দাস তাকে দিয়ে দিলেন বিনিময়ে। যেন পন্য বিনিময় করলেন।
গ্রন্থঃ সূনান নাসাঈ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) | অধ্যায়ঃ ৪০/ বায়'আত (كتاب البيعة) | হাদিস নাম্বারঃ ৪১৮৫
২১. দাসদের বায়আত
৪১৮৫. কুতায়বা (রহঃ) .... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একজন দাস রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে হিজরতের উপর বায়আত গ্রহণ করল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানতেন না যে, সে একজন দাস। পরে যখন তার মালিক তাকে নিতে আসলো, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি একে আমার নিকট বিক্রি কর। এরপর তিনি তাকে দুটি কালো দাসের বিনিময়ে ক্রয় করেন। তারপর তিনি দাস কিনা তা জিজ্ঞাসা না করে কাউকে বায়'আত করতেন না।
তাহক্বীকঃ সহীহ। সহীহ আত-তিরমিযী ১২৬২।
তার অর্থ হলো রাসুল সা: ঐ জামানায় দাস প্রথা বাতিল করেন নাই। এবং ব্যবহার করেছেন কিছুটা মানবিক ভাবে।
আর আপনি এই জামানায় কস্ট পাচ্ছেন যে দাস প্রথা বাতিল হয়ে যাওয়ায় ধনী মুসলমানেরা জান্নাতে যাবার একটা পথ হারালো।
১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৩৯
নতুন নকিব বলেছেন:
তার মানে বর্তমানে দাস প্রথা না থাকার জন্য আল্লাহের সন্তুস্টি ও জান্নাত লাভের অন্যতম একটা মাধ্যম বন্ধ হয়ে গেছে বলে অনেক ধনী মুসলমানের কাছে কস্ট লাগছে? তাদের জন্য আপনি এই ব্লগটা লিখলেন?
তাহলে যদি দাস প্রথা থাকতো আপনার কাছেও ভালো লাগতো যে এই যুগের কোটিপতি মুসলমান দাস মুক্ত করে আল্লাহের সন্তুস্টি ও জান্নাত লাভ করার সুযোগটা পাচ্ছে?
-দাস প্রথা উচ্ছেদে মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অবদান অনস্বীকার্য। ইসলাম ধর্মের আগমনের প্রাক্কালে দাস প্রথার ছিল বিশ্বজুড়ে অধঃপতিত অবস্থা। সে অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে, মানুষদের দাসত্বের জীবন থেকে স্বাধীন জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে ইসলাম বহুবিধ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। যার ফলে একটা সময়ে এসে দাস ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসে। দাস ব্যবস্থা প্রায় শুন্যের কোটায় নেমে আসে।
দাসপ্রথা উচ্ছেদে ইসলামের অবদানঃ
সর্বপ্রথম ইসলামই মানুষকে আল্লাহর খলিফা তথা প্রতিনিধি ঘোষনা করে। ইসলাম আরও ঘোষনা করে যে, আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি হিসেবে মানুষ পৃথিবীতে স্বাধীন সত্তা নিয়েই আগমন করেছিল। কালক্রমে পরাধীনতার শৃঙ্খলে মানুষ আবদ্ধ হয়েছে। আর এ জন্য মানুষেরই স্বার্থপরতা ও মানুষকে মানুষের পণ্য করে নিজেকে ধন্য করার প্রবৃত্তিই দায়ী। মানুষের এই হীন প্রবৃত্তিই মানবসমাজে দাসপ্রথার উদ্ভব ঘটিয়েছিল। ফলে পণ্যসামগ্রীর বেচাকেনার মতো দাস-দাসী কেনাবেচা হতো। মিলতো দাসের হাট। পুরুষদের বলা হতো গোলাম আর নারীদের গণ্য করা হতো বাঁদি হিসেবে। দাস-বাঁদিদের কোনো অধিকার ছিল না। ছিল না তাদের কায়িক শ্রমে উপার্জনের কোনো অধিকার। শুধু তাই নয়, মানুষ হিসেবে তাদের কোনো মানবিক অধিকারও ছিল না। এমনকি প্রকৃতিপ্রদত্ত যৌন অধিকার থেকেও তারা বঞ্চিত হতো। তবে পণ্য উৎপাদনের কারখানার মতো তাদের যৌনচর্চার সুযোগ দেওয়া হতো। আর তাদের গর্ভের সন্তানগুলো দাস বা দাসী হিসেবে মুনিবের সম্পদভাণ্ডারে যুক্ত হতো। আবার স্বাধীন ব্যক্তিকে অপহরণ করে বা যুদ্ধে পরাজিতকে বন্দি করে দাসত্বের লাগাম পরিয়ে বিক্রি করে দেওয়ার মতো জঘন্যতাও মানবসমাজে এই ঘৃণিত প্রথা দীর্ঘায়িত করেছিল। ইসলাম মানবসমাজ থেকে দাসপ্রথা উচ্ছেদে কার্যকর কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল। ফলে হজরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর রেসালাতপ্রাপ্তির খুব অল্পদিনের মধ্যেই মানবসমাজ দাসত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি লাভ করেছিল। দাসপ্রথা উচ্ছেদে ইসলামের পদক্ষেপগুলো সংক্ষিপ্তাকারে উপস্থাপিত হলো বক্ষ্যমান নিবন্ধে।
ভ্রাতৃত্বের আসন দানঃ
দাস-দাসীদের মানুষ হিসেবেই গণ্য করা হতো না। মনিবের মনোবাঞ্চনা পূরণই ছিল তাদের একমাত্র কাজ। এমন এক অবস্থা থেকে ইসলাম তাদের পূর্ণ মানবিক অধিকারে ফিরিয়ে এনেছিল। তাদের মানুষ হিসেবে মুনিবের সমমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছিল। রাসুলুল্লাহ (সা.) বিদায় হজের ভাষণে ঘোষণা করেছিলেন, 'স্মরণ রেখো! তোমাদের অধীনস্থ দাস-দাসীরা অসহায়, নিরাশ্রয়। সাবধান! তাদের ওপর কখনো জুলুম করবে না, তাদের অন্তরে আঘাত দেবে না। তোমাদের মতো তাদেরও একটি হৃদয় আছে। ব্যথা দিলে কষ্ট পায় আর আনন্দে আপ্লুত হয়। তোমরা যা খাবে, তাদেরও তা-ই খাওয়াবে, তোমরা যা পরবে, তাদেরও তা-ই পরাবে।'
নেতৃত্বের অধিকারে সমাসীনঃ
দাসপ্রথা উচ্ছেদে তাদের সামাজিক মর্যাদার স্বীকৃতিটাই ছিল সবচেয়ে বড় বিষয়। তাই মহানবী (সা.) সর্বপ্রথম সেদিকেই নজর দিয়েছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো দাস বা দাসী যদি তার যোগ্যতাবলে সামাজিক নেতৃত্বের যোগ্য হয়ে ওঠে, তাহলে তার প্রতি অকুণ্ঠ আনুগত্য প্রদর্শনের জন্য মুসলিম উম্মাহকে নির্দেশ দিয়েছেন। আর সে জন্যই হজরত উসামা, বেলাল (রা.)-সহ আরো অনেকেই ইসলামের ইতিহাসে মর্যাদাপূর্ণ আসনে সমাসীন হয়েছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'কোনো কুশ্রী হাবশি গোলামও যদি তোমাদের কর্তৃত্বের আসনে আসীন হয়, তোমরা তারও আনুগত্য করবে।' -বুখারি শরিফ
দাসমুক্তিকে জান্নাত লাভের মাধ্যম ঘোষণাঃ
রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাস-দাসীকে আজাদ করার মাধ্যমে জান্নাত লাভ করা যাবে মর্মে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাণী উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেছেন, 'কোনো মুসলমান কোনো মুসলিম দাসকে মুক্ত করলে, এটা তার জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য বদলা হিসেবে গণ্য হবে। তার একেকটি অঙ্গ আজাদকারীর একেকটি অঙ্গের বিনিময় হিসেবে গণ্য হবে।' (বুখারি-মুসলিম)
গুনাহর কাফ্ফারা হিসেবে দাসমুক্তিঃ
দাসপ্রথা উচ্ছেদে ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হলো, গুনাহর কাফ্ফারা হিসেবে দাসমুক্তির বিধান। কয়েকটি ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ এ বিধান কার্যকর করেছেন। যেমন-
(ক) কসমের কাফ্ফারা : কেউ কোনো বিষয়ে শপথ করে তা ভঙ্গ করলে সে জন্য তার কাফ্ফারা আদায় করা ইসলামী শরিয়ত ওয়াজিব করে দিয়েছে। আর এ কাফ্ফারা গোলাম আজাদ করার মাধ্যমেও হতে পারে। ইরশাদ হয়েছে, 'আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের অনর্থক শপথের জন্য পাকড়াও করবেন না। তবে তোমাদের পাকড়াও করবেন ওই সব শপথের জন্য, যেগুলো তোমরা দৃঢ়তার সঙ্গে করে থাকো। সুতরাং এর কাফ্ফারা হলো- ১০ জন মিসকিনকে খাদ্য প্রদান করবে, মধ্যমানের খাবার, যা তোমরা তোমাদের স্ত্রী-পরিবারকে দিয়ে থাকো, কিংবা তাদের পোশাক প্রদান করবে অথবা একজন দাস বা দাসীকে মুক্ত করে দেবে।' -সুরা আল-মায়েদা : ৮৯
(খ) অনিচ্ছাকৃত হত্যার কাফ্ফারা : মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, 'কোনো মুসলমানের কাজ নয় যে সে কোনো মুসলমানকে হত্যা করবে; কিন্তু ভুলক্রমে যদি ঘটে যায়। কোনো মুসলমান কোনো মুসলমানকে ভুলক্রমে হত্যা করলে তার কাফ্ফারা হলো, সে একজন মুসলমান ক্রীতদাসকে মুক্ত করে দেবে এবং নিহত ব্যক্তির স্বজনদের রক্তপণ পরিশোধ করবে। তবে যদি তারা ক্ষমা করে দেয় (তবে সেটা ভিন্ন কথা)। আর যদি নিহত ব্যক্তি তোমাদের শত্রুসম্প্রদায়ভুক্ত ও মুসলমান হয়, তাহলে একটি মুসলমান দাসকে আজাদ করবে। আর যদি নিহত ব্যক্তি এমন সম্প্রদায়ভুক্ত হয়, যাদের সঙ্গে তোমরা চুক্তিবদ্ধ, তাহলে নিহতের পরিবারকে রক্তপণ পরিশোধ করবে এবং একজন মুসলমান দাস আজাদ করবে।' -সুরা আন্-নিসা : ৯২
(গ) জিহারের কাফ্ফারা : নিজ স্ত্রীকে চিরতরে হারাম করার উদ্দেশ্যে তথা তালাক প্রদানের উদ্দেশ্যে 'তুমি আমার মায়ের মতো' বলাকে ইসলামী ফিক্হের পরিভাষায় 'জিহার' বলা হয়। এমনটি করার পর যদি কেউ পুনরায় স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে চায়, তার কাফ্ফারা হলো গোলাম আজাদ করা। ইরশাদ হয়েছে, 'তোমাদের মধ্যে যারা তাদের স্ত্রীকে মা বলে ফেলে, তাদের স্ত্রীগণ তাদের মাতা নয়। তাদের মা তো কেবল তারাই, যারা তাদের জন্মদান করেছে। তারা তো অসমীচীন ও ভিত্তিহীন কথা বলেছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল-মার্জনাকারী। যারা তাদের স্ত্রীদের মা বলে ফেলে, অতঃপর নিজেদের উক্তি প্রত্যাহার করে নেয়। তাদের কাফ্ফারা হলো, একে অপরকে স্পর্শ করার আগে একটি দাস মুক্ত করবে। এটা তোমাদের জন্য উপদেশ। আর তোমরা যা করো সে সম্পর্কে আল্লাহ খবর রাখেন।' -সুরা আল-মুজাদালাহ : ২-৩
(ঘ) জাকাতের খাত : মানবসমাজ থেকে দাসপ্রথা উচ্ছেদে ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হলো, দীন ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম জাকাত আদায়ের খাতের মধ্যে অন্যতম একটি খাত হিসেবে দাসমুক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে : 'জাকাত হলো, কোনো ফকির, মিসকিন, জাকাত বিভাগে কর্মরত ব্যক্তিবর্গ ও যাদের চিত্তাকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক। আর দাসমুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর রাস্তায় জেহাদকারীদের জন্য এবং মুসাফিরদের জন্য। এগুলো হলো আল্লাহ নির্ধারিত জাকাতের খাত। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ-প্রজ্ঞাময়।' -সুরা আত্-তাওবাহ : ৬০
ইসলামের বিধিবদ্ধ কর্মসূচির ফলে এবং রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক বিশেষভাবে উৎসাহপ্রাপ্ত হয়ে সাহাবিগণ প্রতিযোগিতামূলক দাসমুক্ত করতে থাকেন। হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) সঞ্চিত ৪০ হাজার দিরহামের বেশির ভাগই ব্যয় করেন এ মহৎ কাজে। হজরত বেলাল, খাব্বাব, আম্মার, সুমাইয়া, সুহাইব, আবু ফুকাইহসহ (রা.) আরো অনেক বিশিষ্ট সাহাবি হজরত আবু বকর (রা.)-এর অর্থে দাসত্ব থেকে মুক্তি লাভ করেন। ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) আল-ইসাবা গ্রন্থে লিখেছেন, আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) ৮৩ হাজার দাস মুক্ত করেছিলেন। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক গৃহীত দাসপ্রথা উচ্ছেদের ধারাবাহিক কর্মসূচির ফলে অতিদ্রুত দাস-দাসীর সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকে।
আল্লামা শিবলী নোমানীর বক্তব্য মতে, হজরত ওমর ফারুক (রা.) দাসপ্রথা নির্মূলের চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তার স্বল্পকালীন শাসনামলে এর ফল পরিপূর্ণভাবে প্রকাশিত না হলেও অতি অল্প সময়ের মধ্যে মানবসমাজ দাসত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি লাভ করে।
দাসপ্রথা মানবসমাজ থেকে বিদায় নিলেও দাসত্বের নাগপাশ থেকে আজও মুক্তি মেলেনি সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর। হাটে-বাজারে দাস-দাসীর বেচাকেনা না হলেও শিল্প মালিক আর পুঁজিপতিদের দাসত্বের গ্লানি আজও টেনে চলেছে শ্রমিক-জনতা। ভাটা শ্রমিক, গার্মেন্টকর্মী ও শিল্প-কারখানায় কর্মরত কারো অবস্থাই মর্যাদাকর নয়। আর যাঁরা শ্রমিক হিসেবে বিদেশে সোনার হরিণ খুঁজতে যান, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে, তাঁদের অবস্থা মধ্যযুগীয় দাস-দাসীর থেকে মোটেও আলাদা নয়। পুরুষ শ্রমিকদের অনেকেই গৃহকর্তার স্ত্রী-কন্যাদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হন। জানাজানি হয়ে গেলে ব্যভিচারের অপবাদ নিয়ে মৃত্যুদণ্ডে প্রাণ হারান। নারী শ্রমিকদের বেশির ভাগই পাশবিক নির্যাতনের শিকার। ওয়ার্ক পারমিট অনুযায়ী কাজ, প্রতিশ্রুতি মোতাবেক পারিশ্রমিক না পাওয়াটাও নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। উন্নয়নের আজকের স্তরে এসে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতি বৃত্তশালীদের অমানবিক আচরণ প্রাচীন দাসপ্রথারই আধুনিকায়ন। সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে আধুনিক দাসপ্রথার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেই হবে।
আরেকটা জিঙ্গাসা:- ইসলাম ধর্ম কেন সেই সময় দাস প্রথা বাতিলের করেনাই যেমনটা মদ হারাম করেছিলো? পর্দা বাধ্যতামুলক? কেন সেটা অনেক পরে ততকালিন মানুষকে করতে হলো?
কেন একজন যদ্ধ বন্দী দাসীর সাথে সহবাস অবৈধ করেন নাই?
তিনি এক দাস তার কাছে বায়াত গ্রহন করার পরে যখন ঐ দাসের মালিক আসলো তখন রাসুল সা: ২টা কালো দাস তাকে দিয়ে দিলেন বিনিময়ে। যেন পন্য বিনিময় করলেন।
-ইসলাম ধর্ম কেন সেই সময় দাস প্রথা বাতিল করেনি- এই প্রশ্নটাই সঠিক নয়। ইসলাম ধর্ম দাস প্রথা বাতিল করেনি- কথাটাও পুরোপুরি সত্য নয়। এমনিতেই আগের প্রশ্নের উত্তর বড় হয়ে গেছে। এই বিষয়টির উত্তরও এখানে দিতে গেলে আরও অনেক বড় হয়ে যাবে। তাই ভালভাবে অনুধাবন করতে চাইলে নিচের লিঙ্কযুক্ত লেখাটি পড়ে দেখার অনুরোধ করছি-
ইসলামে দাস বিধি ()
আপনার আগমনে কৃতজ্ঞতা, নতুন ভাই। আপনার বুদ্ধিদ্বীপ্ত প্রশ্নগুলো উপভোগ্য। কল্যান কামনা করছি। আমরাও কল্যানের দোআ চাই আপনার কাছে।
১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:১৫
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার প্রশ্নের উত্তর পেতে হাতে সময় থেকে থাকলে, এই নিবন্ধও বেশ কাজের। পড়ে দেখতে পারেন-
দাস-দাসী প্রথা নিয়ে ইসলামের উপর নাস্তিকদের জঘন্য অপপ্রচার এবং আমাদের জবাব
ধন্যবাদ।
৪| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৩৮
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আল্লাহ আমাদের সকলকে নেক আমল ও ফজিলতপূর্ণ কাজ বেশী বেশী করার তওফিক দান করুন এবং আমদের আমলকে কবুল করুন।
১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৪০
নতুন নকিব বলেছেন:
আমিন। জাজাকুমুল্লাহ।
৫| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:০০
রাজীব নুর বলেছেন: ফযীলত, আমল, সূরা ইত্যাদি মানব এবং মানব সমাজের কোনো উপকার করে না। এগুলো দরিদ্র এবং অসহায় মানুষের ভরসা।
ফযীলত বা আমল এর উপর ভরসা রাখা ঠিক না। এরকমটাই আমি মনে করি।
দয়া করে রাগ করবেন না। আমার ভুল হতে পারে।
১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৪৮
নতুন নকিব বলেছেন:
ফযীলত, আমল, সূরা ইত্যাদি মানব এবং মানব সমাজের কোনো উপকার করে না। এগুলো দরিদ্র এবং অসহায় মানুষের ভরসা।
ফযীলত বা আমল এর উপর ভরসা রাখা ঠিক না। এরকমটাই আমি মনে করি।
দয়া করে রাগ করবেন না। আমার ভুল হতে পারে।
-আপনার ভেতরে মানবিকতা রয়েছে। হৃদ্যতা আছে। অনেকের তা নেই।
এগুলো ধর্মের অংশ। ধর্ম দিয়ে আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে পাঠিয়েছেন। মানুষ বাদে অন্যান্য পশু প্রাণিদের ধর্ম প্রয়োজন হয় না। এটা তাদের সাথে আমাদের পার্থক্য। যারা ধর্ম মানেন তারা এগুলো পড়েন, পালন করেন, এগুলো তাদের বিশ্বাসের বিষয়। তাদের বিশ্বাস, এগুলো তাদের উপকার করে। দুনিয়া এবং আখেরাতে তাদের কাজে আসছে এবং আসবে।
সুতরাং, আপনার কথা মেনে নিয়ে, রাগ না হয় আমি না-ই করলাম। আপনি ঠান্ডা মাথায় আপনিই পারলে আমাকে বুঝিয়ে দিন যে, এগুলো উপকার করে না- কথাটা কিভাবে যৌক্তিক হতে পারে? এবং ধর্মে বিশ্বাসী কাউকে এই কথা বলা আপনার উচিত কি না?
৬| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:১৫
এভো বলেছেন: মতিউর রহমান আজহারীর বক্তব্য শুনুন, কেন ইসলাম ধর্মে দাস প্রথা বিলুপ্ত করা হয় নি। তিনি বলেছেন, দাজ্জালদের সাথে ইমাম মাহাদীর যুদ্ধ হবে, সে যুদ্ধে দাজ্জালরা পরাজিত হবে এবং এরপর ইহুদি নাসাদের সাথে মুসলমানদের যুদ্ধ হবে এবং সে যুদ্ধে মুসলমানরা জয় লাভ করবে এবং প্রচুর দাসদাসী গনিমতের মাল পাবে, তাই ইসলাম দাস প্রথা নিষিদ্ধ করেনি।
কেন ইসলাম দাস প্রথা রধ করেনি -- আজহারী
১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:২৬
নতুন নকিব বলেছেন:
মতিউর রহমান আজহারী আবার কে? এই নামের কাউকে আমি চিনি না। তবে, সূত্রহীন মনগড়া কথা ইসলামের নামে এখন অনেকেই বলে থাকেন। প্রমান ব্যতিত সেসব গ্রহণ করা যাবে না।
ধন্যবাদ।
৭| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:২০
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: চমৎকার তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট।
৮| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:৫৬
নতুন বলেছেন: -দাস প্রথা উচ্ছেদে মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অবদান অনস্বীকার্য। ইসলাম ধর্মের আগমনের প্রাক্কালে দাস প্রথার ছিল বিশ্বজুড়ে অধঃপতিত অবস্থা। সে অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে, মানুষদের দাসত্বের জীবন থেকে স্বাধীন জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে ইসলাম বহুবিধ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। যার ফলে একটা সময়ে এসে দাস ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসে। দাস ব্যবস্থা প্রায় শুন্যের কোটায় নেমে আসে।
আবার কমেন্টে হাদিসে আছে রাসুল সা: এর কাছে এক জন দাস মুসলিম হয়ে গেলে তার মালিক কে রাসুল সা: ২ টা কালো দাস দিয়ে দিয়েছিলেন।
নারী বন্ধীদের সাথে সহবাসের অনুমুতি ছিলো। এবং কিছু সাহাবি আজল করলে তাদের না করতে পরামর্শ দিয়েছিলেন।
রাসুল সা: এর ভুমিকা এমনই ছিলো।
গান হারাম, মদ হারাম, যেনা হারাম, শুকরের মাংস খাওয়া করতে পারলো কিন্তু একজন মানুষকে বিক্রি করা হারাম করা গেলো না?
৯| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৪৯
এভো বলেছেন: ভাই অভিনয়টা খুব কাচা হয়ে গেল যে, আপনি মিজানুর রহমান আজহারীকে চিনেন না, যদি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন! বিষয়টা অনেকটা জাকির নায়েক কে চিনিনার মত।
ইসলাম ধর্মে দাস প্রথা এখন বহাল আছে বাতিল হয় নি।
দুনিয়ায় সব দেশে সুদ প্রথা বিদ্যমান, তাই বলে ইসলামে সুদ হালাল হয়ে যায় নি।
দুনিয়ায় অমুসলিম দেশ গুলোতে একাধিক বিবাহ নিষিদ্ধ তাই বলে ইসলাম ধর্মে চার বিবাহ নিষিদ্ধ হয়ে যায় নি।
তাগুদি বিধানে দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয়ে গেলেও ইসলাম ধর্মে বিলুপ্ত হয় নি।
জাকির নায়েক সাহেব ও বলেছিলেন, ইসলামে যুদ্ধবন্দি নারীর সাথে যৌনচার জায়েজ কারন যুদ্ধ বন্দি নারীরা বাইডিফল্ট দাসী হয়ে যায় এবং যেহেতু ইসলামে দাসীর সাথে সহবত হালাল, তাই যুদ্ধবন্দি নারীর সাথে সহবত করা যায়। ধন্যবাদ
১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৩৭
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার আগের মন্তব্যটা আরেকবার দেখে নিন। ওখানে তো 'মতিউর রহমান আজহারী' লিখেছিলেন। 'মিজানুর রহমান আজহারী' এখন লিখলেন। যা-ই হোক, 'মিজানুর রহমান আজহারী' বিখ্যাত বক্তা। তাকে না চেনার কথা নয়। কিন্তু একজনের রেফারেন্স দিতে গেলে তার নামটা অন্ততঃ সঠিকভাবে লিখতে তো হবে! 'মিজানুর' আর 'মতিউর' কি আপনার কাছে একই ব্যক্তি বলে মনে হয়?
নিজের লেখার ভুলটা না দেখে উল্টো কত কথা বলে গেলেন। যাক, ধন্যবাদ দিতেই হয়।
১০| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ২:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: মন্তব্যের উত্তর দিয়েছেন।অনেক ধন্যবাদ। আর কোনো আলোচনায় যাবো না।
১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৪৭
নতুন নকিব বলেছেন:
ফলাফলহীন আলোচনার চেয়ে নিরবতা শ্রেয়। ধন্যবাদ।
১১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:২৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুন্দর। আমলে জীবন হোক পূর্ণ।
১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৪৭
নতুন নকিব বলেছেন:
জাজাকুমুল্লাহু খইরান।
১২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:২২
এভো বলেছেন: ধন্যবাদ ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য । আপনি কি ভিডিওটা দেখেন নি ? যদি দেখতেন তাহোলে সেখানে সঠিক ব্যক্তিটির নাম দেখতে পেতেন ।
তবে, সূত্রহীন মনগড়া কথা ইসলামের নামে এখন অনেকেই বলে থাকেন।
আপনি কিভাবে বল্লেন ঐ বিখ্যাত ব্যক্তি সূত্রহীন মনগড়া কথা বলেছেন ? আপনি তো তার বক্তব্যটাকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে গেছেন বা তরা কথায় বিব্রত হয়েছেন , যার উত্তর আপনি দিতে চান না । এই ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতি হোলে মানুষ এড়িয়ে যাওয়ার ফাক ফোকর খোজে এবং সেই ফাক আপনি পেয়ে গেছেন নামের ভুলটা দেখে ।
আপনি উত্তর না দিয়ে সেই ফাকটা গলিয়ে এড়িয়ে যেতে চেয়েছেন ।
তার মানে ব্লগার নতুন সাহেব যেটা লিখেছেন --- ইসলামের একটা বড় শোয়াবের কাজ দাসদাসীকে মুক্তি দেওয়া এবং এই শোয়াব পেতে হোলে দাস প্রথা বহাল হওয়া প্রয়োজন ।
তার মানে বর্তমানে দাস প্রথা না থাকার জন্য আল্লাহের সন্তুস্টি ও জান্নাত লাভের অন্যতম একটা মাধ্যম বন্ধ হয়ে গেছে বলে অনেক ধনী মুসলমানের কাছে কস্ট লাগছে? তাদের জন্য আপনি এই ব্লগটা লিখলেন?
তাহলে যদি দাস প্রথা থাকতো আপনার কাছেও ভালো লাগতো যে এই যুগের কোটিপতি মুসলমান দাস মুক্ত করে আল্লাহের সন্তুস্টি ও জান্নাত লাভ করার সুযোগটা পাচ্ছে?
ধন্যবাদ
১৩| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:০২
নতুন বলেছেন: Click This Link সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি:
কখনও কখনও দাসত্ব প্রথা বিদ্যমান থাকার মধ্যে বড় ধরনের সামাজিক কল্যাণ নিহিত থাকে, যেমন: তার (দাসত্ব প্রথার) উপস্থিতি জাতিগত বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্যবাদ ও অবক্ষয়ের প্রবাহ থেকে সমাজকে পবিত্র রাখার ব্যাপারে ভূমিকা রাখে ... সুতরাং উদাহরণস্বরূপ যে ব্যক্তি অতিরিক্ত মোহরের কারণে কোনো স্বাধীন নারীকে বিয়ে করতে অক্ষম হয়, তখন সে কোনো দাসীকে বিয়ে করবে অথবা ক্রয় সূত্রে তার মালিক হবে, যাতে সে বৈধ উপায়ে তার স্বভাগত চাহিদা পূরণ করতে পারে এবং বৈধ মালিকানার মাধ্যমে সে নিজেকে পাপমুক্ত রাখতে পারে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ وَمَن لَّمۡ يَسۡتَطِعۡ مِنكُمۡ طَوۡلًا أَن يَنكِحَ ٱلۡمُحۡصَنَٰتِ ٱلۡمُؤۡمِنَٰتِ فَمِن مَّا مَلَكَتۡ أَيۡمَٰنُكُم مِّن فَتَيَٰتِكُمُ ٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۚ وَٱللَّهُ أَعۡلَمُ بِإِيمَٰنِكُمۚ بَعۡضُكُم مِّنۢ بَعۡضٖۚ فَٱنكِحُوهُنَّ بِإِذۡنِ أَهۡلِهِنَّ وَءَاتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِ مُحۡصَنَٰتٍ غَيۡرَ مُسَٰفِحَٰتٖ وَلَا مُتَّخِذَٰتِ أَخۡدَانٖۚ فَإِذَآ أُحۡصِنَّ فَإِنۡ أَتَيۡنَ بِفَٰحِشَةٖ فَعَلَيۡهِنَّ نِصۡفُ مَا عَلَى ٱلۡمُحۡصَنَٰتِ مِنَ ٱلۡعَذَابِۚ ذَٰلِكَ لِمَنۡ خَشِيَ ٱلۡعَنَتَ مِنكُمۡۚ وَأَن تَصۡبِرُواْ خَيۡرٞ لَّكُمۡۗ وَٱللَّهُ غَفُورٞ رَّحِيمٞ ٢٥ يُرِيدُ ٱللَّهُ لِيُبَيِّنَ لَكُمۡ وَيَهۡدِيَكُمۡ سُنَنَ ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَيَتُوبَ عَلَيۡكُمۡۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٞ ٢٦ وَٱللَّهُ يُرِيدُ أَن يَتُوبَ عَلَيۡكُمۡ وَيُرِيدُ ٱلَّذِينَ يَتَّبِعُونَ ٱلشَّهَوَٰتِ أَن تَمِيلُواْ مَيۡلًا عَظِيمٗا ٢٧ ﴾ [النساء: ٢٥، ٢٧]
“আর তোমাদের মধ্যে কারো মুক্ত ঈমানদার নারী বিয়ের সামর্থ্য না থাকলে তোমরা তোমাদের অধিকারভুক্ত ঈমানদার দাসী বিয়ে করবে; আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে পরিজ্ঞাত। তোমরা একে অপরের সমান; কাজেই তোমরা তাদেরকে বিয়ে করবে তাদের মালিকের অনুমতিক্রমে এবং তাদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দেবে ন্যায়সংগতভাবে। তারা হবে সচ্চরিত্রা, ব্যভিচারিণী নয় ও উপপতি গ্রহণকারিণীও নয়। অতঃপর বিবাহিতা হওয়ার পর যদি তারা ব্যভিচার করে, তবে তাদের শাস্তি মুক্ত নারীর অর্ধেক; তোমাদের মধ্যে যারা ব্যভিচারকে ভয় করে এগুলো তাদের জন্য; আর ধৈর্য ধারণ করা তোমাদের জন্য মংগল। আল্লাহ ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু। আল্লাহ ইচ্ছে করেন তোমাদের কাছে বিশদভাবে বিবৃত করতে, তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতিনীতি তোমাদেরকে অবহিত করতে এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করতে। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। আর আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করতে চান। আর যারা কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তারা চায় যে, তোমরা ভীষণভাবে পথচ্যুত হও।”[38]
আর জনকল্যাণকর অনেক কাজ রয়েছে, যাতে সমাজ পর্দাবিহীন নারীদের প্রয়োজন অনুভব করে; আর দাসীরাই হলো এই শ্রেণী; কেননা, ইসলাম দাসীর উপর স্বাধীন নারীর মত পরিপূর্ণভাবে পর্দা করাকে ফরয করেনি; বরং শরী‘য়তের দৃষ্টিতে তার বুক থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢেকে রাখাই যথেষ্ট, তবে তার ব্যাপারে যখন আশঙ্কা করা হবে, তখন (পাপের) উপলক্ষ বন্ধ করার জন্য পরিপূর্ণ পর্দা করা আবশ্যক হয়ে যাবে।
আর কখনও কখনও যুদ্ধের মাধ্যমে প্রাপ্ত নারীকে দাসী বানানো তার পবিত্রতা রক্ষা, অভিভাবকত্ব এবং তার মানবিক সম্মান রক্ষার জন্য একটা সফল প্রতিষেধক বিবেচিত হতে পারে; কারণ, যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পর যে ব্যক্তি তার দায়ভার গ্রহণ করবে, সে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার সাথে তার স্বামী অথবা তার ভাইয়ের মত আচরণ করবে; অথচ তাকে ছেড়ে দেওয়ার মানেই হলো তাকে নিশ্চিত ধ্বংস ও ক্ষতির দিকে ঠেলে দেওয়া।
আর এটা জানা কথা যে, ইসলামী শাসন ব্যবস্থার ছায়াতলে নারীকে দাসী বানানোর মানে হলো তাকে তার মনিবের জন্য শুধু মালিকানা সাব্যস্ত করে দেওয়া, সে ব্যতীত অন্য কেউ তাকে ভোগ করতে পারবে না; আর ইসলাম ‘মুকাতাবা’ পদ্ধতির মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করার বিষয়টিকে তার অধিকারের অন্তর্ভুক্ত করে দিয়েছে এবং অনুরূপভাবে সে তার মনিবের মৃত্যুর পর সরাসরি স্বাধীন হয়ে যাবে, যখন সে তার মনিবের জন্য কোনো সন্তানের জন্ম দিবে; তাছাড়া সে তার মনিবের ঘরে ইসলামের নির্দেশনা অনুসারে সার্বিক তত্ত্ববধান, আদর-যত্ন ও উত্তম ব্যবহার ... পাবে।
পক্ষান্তরে অমুসলিম রাষ্ট্রে তাকে দাসী হিসেবে গ্রহণ করার উদ্দেশ্য হলো তার ইজ্জত নষ্ট করা এবং তার মান-মর্যাদাকে অবজ্ঞা করা, বরং তার ইজ্জত-আব্রু প্রত্যেক আকাঙ্খীর ব্যভিচারের মাধ্যমে লুণ্ঠিত হওয়া।
তাছাড়াও সে অসদাচরণ ও প্রকাশ্য অনুভবযোগ্য অপমান-অপদস্থের শিকার হয় ! ...
অতএব দাস-দাসী বানানোটা কখনও কখনও সামাজিকভাবে কল্যাণকর হবে, আবার কখনও নৈতিকতার দিক বিবেচনায় হবে এবং কখনও মানবিক অনুকম্পার বাস্তবায়নার্থে দায়িত্ব গ্রহণের ফায়দা দিবে ... যা সচেতন আলেমগণ ব্যতীত অন্য কেউ অনুধাবন করতে পারবে না ... এই দিক বিবেচনা করেই ইসলাম কোনো স্পষ্ট ফরমান জারি ও অকাট্য ‘নস’ তথা বক্তব্যের মাধ্যমে দাসত্ব প্রথাকে চূড়ান্তভাবে বাতিল করেনি।
এই স্টুপিড ইনিয়ে বিনিয়ে দাসপ্রথার কল্যানকর দিক গুলি বলছে আর আপনি তার সাথে এক মত?????
আপনি একটু চিন্তা করুন এখন পাকিস্তান বাংলাদেশ আক্রমন করলো।
আমাদের পরিবারের সবাইকে বন্ধি করলো। আমাদের মেয়ে এবং মেয়ের জামাইকেও বন্দি করলো। দাস হিসেবে তাদের এক পরিবারে ভাগ করে দেওয়া হলো। মেয়ের বিয়ে সম্ভবত বাতিল হয়ে যাবে। ঐ মেয়ের সাথে মালিক সহবাস করতে পারবে শরিয়া মোতাবেক।
এটা খুবই মানবিক ইসলামী আইন যা মানব জাতির জন্য ফযীলত পূর্ন ।
কিন্তু বর্তমান জামানায় বন্দি করে জেলে রাখা এবং তাদের সাথে যদ্ধবন্দির মতন আচরন করার কথা ইসলামের বিধানে নাই।
কারন ইসলামের ঐ সময়ের প্রেক্ষিতে তখন এই জিনিসগুলি সাধারনই ছিলো। তাই ভবিশ্যতে এই সব জিনিস বাতিল হবে সেটা চিন্তা করে নাই।
এমন অমানবিক বিষয়টা কি ভাবে আপনি ফযীলত পূর্ণ আমল হিসেবে চিন্তা করছেন আমি ভাবতে পারচিনা।
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:১৮
এম ডি মুসা বলেছেন: তথ্য বিশ্লেষণ সুন্দর উপস্থাপনা