নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ছবিঃ অন্তর্জাল।
সালামের নামে কদমবুচি বা পদচুম্বন করা নিয়ে কিছু কথা...
আমাদের সমাজে বয়োজ্যেষ্ঠ বা মুরব্বি শ্রেণির ব্যক্তিবর্গের পা ছুঁয়ে কাউকে কাউকে সালাম করতে দেখা যায়। কদমবুচিও বলা হয় এই কাজটিকে। প্রশ্ন হচ্ছে, ইসলামে এর বৈধতা কতটুকু? কিংবা, ইসলামী শরিয়ত এই কাজটি করার অনুমতি আদৌ দেয় কি না।
কদমবুচির এই প্রচলন এক সময় ব্যাপকাকারে ছিল আমাদের সমাজে। সমাজের কথা বলি কেন! আমাদের বৃহত্তর পরিবারেও দেখেছি এই কুপ্রথাটির প্রচলন। আমি একেবারেই ছোট তখন। শৈশব পার করিনি হয়তো। তবু, ঘটনাটি মনে আছে পষ্টই, কোনো এক বিয়ের অনুষ্ঠানে মুরব্বি সম্পর্কীয় এক আত্মীয়কে কদমবুচি না করার কারণে কঠিন তিরষ্কারের মুখে পড়তে হয়েছিল নববধুকে। সামাজিক প্রথা ভঙ্গ বলে কথা! বউ বেচারিকে তার জীবনের শ্রেষ্ঠ আনন্দঘন দিনটিতে মান-সম্মান হারানোর পর্যায়ে পৌঁছাতে হয়েছিল। মাথায় নিতে হয়েছিল 'বেআদব' -এর তকমা। অনাকাঙ্খিত তিরষ্কার, অসহনীয় ভর্ৎসনা আর অনভিপ্রেত পরিস্থিতিতে লজ্জা, অপমান আর অপদস্ততায় ন্যূজ বেদনাহত এবং অশ্রুসিক্ত নববধুর দুর্দশা দর্শনে ব্যথিত না হয়ে উপায় ছিল না আমাদেরও।
যাক, আলহামদুলিল্লাহ, দিন আস্তে আস্তে পাল্টেছে। পাল্টাচ্ছে দিনকে দিন। আশার কথা হচ্ছে, দিন বদলের এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষার আলো যত ছড়িয়েছে, কুশিক্ষার অন্ধকার ততই দূরিভূত হয়েছে সমাজ বক্ষ থেকে। সামাজিক ভ্রান্ত অনেক রুসম রেওয়াজ এবং কুসংস্কারের মূলোৎপাটন হয়েছে শিক্ষা-দীক্ষা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির সাথে সাথেই। সঙ্গত কারণে, গোড়ামির আশ্রয় নয়, উদার হতে হবে আমাদের। পুরাতনকে আগলে ধরে থাকার মধ্যেই সঠিকতা এবং সফলতা- এই ধারণা কোনো কোনো বিষয়ে সঠিক হলেও সকল ক্ষেত্রে নয়।
আধুনিকতাকে বহুভাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। তবে, কল্যানকর নতুন কিছুর আগমনকে স্বাগত জানানোর মানসিকতাকেই আধুনিকতা বলা যায় কি না, ভেবে দেখা যেতে পারে। আমরা না জানার কারণে একটা সময়ে আরবি হরফ ভুলভাবে উচ্চারণ করতাম। 'বে', 'তে', 'সে' পড়তাম। 'বে', 'তে', 'সে' -এর দিন শেষ হয়ে নতুন করে 'বা', 'তা', 'সা' -এর সবক যখন আমাদের সামনে এসেছে, আমরা কি তা গ্রহন করিনি? আমাদের দেশে নামের শুরুতে এক সময় 'শ্রী' যুক্ত করার চল ছিল। এক সময়ে 'শ্রী'-এর স্থানে যখন 'মুহাম্মদ' যুক্ত হয়েছে তখন কি আমরা তা বরণ করে নিইনি? ধুতির পরিবর্তে লুঙ্গি যখন লজ্জা নিবারণ ও সৌন্দর্য্য বর্ধনে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে জায়গা করে নিয়েছে তখন কি আমরা তা গ্রহণ করে নেইনি? এরকম অসংখ্য প্রথা এবং চল বিভিন্ন দিক থেকে আমাদের আচরিত জীবনে একটা সময়ে স্থান করে নিয়েছিল। দিনকে দিন আমরা আধুনিকতার দিকে এগুচ্ছি, লেখা পড়া জানা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, আগেকার মত এখন আর চিঠির পাঠ শুনতে আরেক বাড়ি কিংবা গ্রামে যেতে হয় না, সবার চোখ ক্রমে খুলে যাচ্ছে, আগে নিজের গ্রাম আর পার্শ্ববর্তী হাট-বাজার দেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল অনেকের পৃথিবী, এখন ছোট্ট শিশুও পৃথিবীর সঠিক পরিধি জানা, সে ইউরোপ চেনে, আমেরিকা চেনে, গ্রহ-নক্ষত্র, সাগর-নদী চেনে, পাহাড়-ঝর্ণা চেনে। জ্ঞানের এই অব্যাহত আলোর বিকিরণ আমাদের দেখতে সাহায্য করছে, আবদ্ধ অন্ধকারগুলো আমাদের সামনে প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে, ফলে সেগুলো বর্জন করাও সহজ হচ্ছে। এগুলোর মতই কদমবুচির প্রচলনটিও ইসলামের রীতি না হওয়ায়, কুরআন হাদিসের শিক্ষার বিপরীত প্রথা হওয়ায় দিনকে দিন হারিয়ে গেছে সমাজ থেকে। বাদ বাকি যতটুকু অবশিষ্ট রয়েছে, তারও আশু অপনোদন ক্রমান্বয়ে লক্ষনীয় ইনশাআল্লাহ।
হাদিস এবং সুন্নাহর মানদন্ডে অনুত্তীর্ণঃ
বস্তুতঃ পা ছুঁয়ে সালাম করা, কদমবুসি করা বা পায়ে চুমু খাওয়া, পদধূলি নেয়া – এর প্রতিটি কাজই হচ্ছে হাদিস এবং সুন্নাহর মানদন্ডে অনুত্তীর্ণ সামাজিক প্রথা। উপরন্তু এটি শিরকে লিপ্ত একটি সম্প্রদায়ের অনুকরণে নিকৃষ্ট বিদআ’ত। মূলতঃ বিগত শতাব্দিগুলোর অশিক্ষা, কুশিক্ষা আর কুসংস্কারের ফল ছিল এগুলো। কবর এবং মাযার পূজারী কিছু অসাধূ ব্যবসায়ী মুসলমানদের মাঝে এই কুপ্রথা ঢুকিয়েছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, এসব লোক কবর, মাযার ও তাদের তথাকথিত পীরদেরকে (সত্যিকারের পীর বুজুর্গদের আমরা শ্রদ্ধা করি এবং তারা এইসব শরিয়ত বিরোধী কাজ কখনোই নিজেরাও করেন না এবং কাউকে করার জন্য অনুমোদনও দেন না) সিজদাহ পর্যন্ত করে থাকে (নাউযুবিল্লাহ)। সুতরাং, পা ছুঁয়ে সালাম করা এদের কাছে কোন ব্যাপারই নয়।
কিছু লোক সালামের চেয়ে কদমবুসীকে বেশি গুরুত্ব দেনঃ
আমাদের সমাজে কিছু লোককে দেখা যায়, তারা মুখে সালাম দেয়ার চেয়ে কদমবুসীকে বেশি গুরুত্ব প্রদান করেন। কেউ কেউ আবার কদমবুসীকেই সালাম করা বলে থাকেন। কোনো কোনো লোককে মুখে সালাম না করে শুধু কদমবুসী করতে দেখা যায়। অথচ একজন মুসলমানের সাথে অন্যের দেখা সাক্ষাৎ হলে মুখে সালাম দেয়া এবং শুনিয়ে স্পষ্টভাবে উত্তর প্রদান করা ইসলামী শরিয়তের নির্ধারিত আমল এবং এটাই পারস্পারিক সম্ভাষনের সুন্নাত পদ্ধতি।
মতভিন্নতা যতই থাক, সুন্নাতে রাসূলই মুসলমানদের একমাত্র অনুকরণীয় আদর্শঃ
আমরা যদি ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শের কথা চিন্তা করি, তাহলে আমাদের তাকাতে হবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অনুসৃত নীতি এবং আদর্শের দিকে। আমাদের ফিরে যেতে হবে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যামানায়। জেনে নিতে হবে, কেমন ছিল তাঁর আমল, কেমন ছিল তাঁর সাহচর্য্য-সোহবতপ্রাপ্ত সাহাবায়ে কেরামের আমল, কেমন ছিল ইসলামের সোনালী যুগগুলোর উত্তম সময়ের বিজ্ঞ, বিচক্ষন এবং জ্ঞানী ব্যক্তিগণের আমল। বস্তুতঃ খাইরুল কুরূনের কোনো যুগের মুহাক্কিক, মুত্তাকি কোনো অনুসরণীয় ব্যক্তি থেকেই কদমবুচির কোনো প্রমান পাওয়া যায় না। যাবে কি করে? তারা তো অনুসরণ করতেন রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে। রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনে এই কাজটি কখনো করেননি। শুধু তিনিই নন, তাঁর কোনো সাহাবি থেকেও এই আমলটির প্রমান পাওয়া যায় না। কারণ, তাঁর সান্নিধ্য, সাক্ষাৎ এবং সাহচর্য্যলাভের উদ্দেশ্যে সুদীর্ঘ তেইশ বছরের নবুয়ত জীবনে তাঁর দরবারে ধারণা করা যায়, কমবেশি লক্ষাধিক সাহাবীর আগমন ঘটেছে। এসব সাহাবায়ে কেরামের কেউ কেউ দু'একবার এসেছেন। কেউ কেউ বেশি সংখ্যকবার প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সান্নিধ্য এবং সাক্ষাতলাভে ধন্য হয়েছেন। কেউ হয়তো হাজার বার কিংবা তারচেয়েও বেশি সংখ্যকবার সাক্ষাতপ্রাপ্তির সৌভাগ্য অর্জন করেছেন।
দেখা-সাক্ষাতর সুন্নত সালাম, মুসাফাহা এবং মুআনাকাঃ
কিন্তু লক্ষনীয় বিষয় হচ্ছে, এ সকল ক্ষেত্রে প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে সাক্ষাতের প্রাক্কালে তাঁদের আচরিত সার্বক্ষনিক আমল ছিল সালামের আদান প্রদান। কখনো কখনো দেখা হলে তাঁরা সালামের পরে হাত মিলিয়েছেন অথবা আরেক ধাপ অগ্রসর হয়ে মুসাফাহা করেছেন। এর বাইরে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, দু'একটি ক্ষেত্রে তাঁরা একজন আরেকজনের হাতে বা কপালে চুমু খেয়েছেন। এর বেশি, বড় জোর মুআনাকা বা কোলাকুলি করেছেন। অতএব, হাদিসের কিতাবগুলোর বর্ণনানুসারে, প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামের আমল হিসেবে সালাম, মুসাফাহা বা করমর্দন, হাতে বা কপালে চুম্বন এবং মুআনাকা বা কোলাকুলি করা সুন্নত। পরস্পর দেখা সাক্ষাতকালে আমল হিসেবে এগুলোই সুন্নত হিসেবে সুসাব্যস্ত। এর বাইরে সাক্ষাতকালে একে অপরকে কুর্নিশ করা, প্রণাম করা, কদমবুচি বা পদধূলি নেয়া, মাথা নিচু করা, জোড় হাত কপালে তুলে আত্মসমর্পনের ভঙ্গিতে সম্মান প্রদর্শন করা, সিজদার মত ভঙ্গি করে ভক্তি বা শ্রদ্ধা প্রকাশ করা ইত্যাদি প্রতিটি কাজই সুন্নত পরিপন্থি এবং কোনো কোনোটি অন্যান্য ধর্ম ও মতের আচরণ হওয়ায় অধিকন্তু এগুলোর সাথে শিরক, বিদআতসহ অন্যবিধ পাপের বিষয় জড়িত থাকায় এগুলো সর্বোতভাবে পরিত্যাজ্য। শিরক এর ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে মহান আল্লাহ্ তাআ’লা বলেন,
إِنَّهُ مَن يُشْرِكْ بِاللّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللّهُ عَلَيهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنصَارٍ
নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শিরক করে, আল্লাহ তাআ’লা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন আর তার জন্য জাহান্নাম অবধারিত করে দেন। আর জালিম (মুশরিকদের) জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। -সূরা আল-মায়িদাহঃ আয়াত ৭২ এর অংশ
কদমবুচি যদি জায়েজই হতো, সাহাবায়ে কেরামই প্রথম করতেন এই কাজটিঃ
সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুম এর কাছে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন নিজেদের জান মাল সবকিছুর উপরে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধার পাত্র। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ভালোবাসায় তারা অকাতরে নিজেদের জীবন দানে সামান্যতম কুন্ঠা বোধ করতেন না। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদেশে তারা এমনও দেখা গেছে যে, নির্ঘাত মৃত্যুর সম্ভাবনা দেখেও ঝাঁপিয়ে পড়তেন জিহাদের ময়দানে। সাহাবায়ে কেরাম রসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মর্যাদা জানতেন। তাদের এও জানা ছিল যে, রসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মোবারক জিসম এর সামান্য একটু পরশ এবং স্পর্শও মহামূল্যবান। তাদের ভালো করেই জানা ছিল যে, রসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একটু ছুঁয়ে নিতে পারাও সৌভাগ্য এবং বুলন্দ কিসমতের বিষয়। কিন্তু কই? হযরত আবু বাকার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু, উমার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু, উসমান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু, আলী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু, ফাতিমা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা, বিলাল রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুসহ তাঁদের মত প্রথম কাতারের সাহাবীগণকে একবারও রসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কদমবুচি করতে দেখা যায়নি! অথচ, তাদের প্রত্যেকেই বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর দরবারে বারংবার এসেছেন। বারবার দেখা সাক্ষাৎ করেছেন। কিন্তু কেউ কখনো একটিবারের জন্যও রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কদম মুবারকে চুমু খাননি বা সেখানে হাত রেখে সেই হাতেও চুমু খাননি। কদমবুচি যদি জায়েজ কিংবা উত্তম কোনো কাজই হতো, তাহলে সাহাবায়ে কেরামগণেরই তো এই কাজ সর্বাগ্রে এবং সবচেয়ে বেশি করার কথা। কারণ, রসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পা মোবারকের চেয়ে বরকতময় পা আর কার থাকতে পারে? আর তাঁর পায়ের ধুলির চেয়ে উত্তম এবং মর্যাদাপূর্ণ ধূলি কার পায়ে থাকতে পারে? সাহাবায়ে কেরাম যদি এই কাজকে জায়েজ কিংবা উত্তম বলে বিশ্বাস করতেন তাহলে তো অবস্থা এই দাঁড়াতো যে, রসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পা মোবারকে চুমু খাওয়ার জন্য, কদমবুচি করার জন্য সাহাবায়ে কেরামকে রীতিমত যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার প্রয়োজন দেখা দিত। তাই সাহাবায়ে কেরাম যেহেতু পিয়তম রসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সবচেয়ে বেশি মুহাব্বত করার পরেও তাঁর কদমে চুমু খাওয়া বা কদমবুচি করার কাজটি কস্মিনকালেও করেননি, সঙ্গত কারণে জ্ঞানী ব্যক্তি মাত্রেরই বুঝে নেয়া অতি সহজ যে, কদমবুচি বা পা ছুঁয়ে সালাম করা ইসলামী সংস্কৃতি বা কালচারের অংশ নয়, বরং পরস্পর সাক্ষাতকালে নিঃসন্দেহে এটি অমুসলিমদের একটি প্রথা। আর বলা বাহুল্য, যেটা ইসলাম ধর্মের কালচার বা সংস্কৃতিই নয়, সেটাকে সালাম বলা রীতিমত অন্যায়, সাযুজ্য বিবেচনায় এটিকে বরং প্রনাম বলাই যুক্তিসিদ্ধ।
দুই চোখের মাঝে কপালে চুম্বন করা বৈধঃ
এতদ্ব্যতিত, মুসলিমদের জন্য সম্ভাষনের এমন কোনো রীতি বা প্রথা বৈধ হতে পারে না যেখানে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও সামনে মাথা নত করতে হয়। এমনকি, সালাম ও মুসাফাহাহ করার সময়ও মাথা নত করা বৈধ নয়। সালামের পর বিশেষ শ্রদ্ধা, সম্মান বা হৃদ্যতা প্রদর্শনের লক্ষ্যে দুই চোখের মাঝে কিংবা কপালে চুম্বন করা বৈধ। এই ধরণের চুম্বনের বিষয়য় হাদিস দ্বারা প্রমানিত। যেমন- জাফর বিন আবু তালিব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হাবশা থেকে ফিরে এলে রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সাথে মুআনাকা করে তার দুই চোখের মাঝে কপালে চুম্বন দিয়েছিলেন। -ইবনে উসাইমিন; সিলসিলাহ সহিহাহঃ ৬/১/৩৩৮
আফসোস! হায় আফসোস!
হায় আফসোস! অন্য জাতির অন্ধ যত অনুকরণ দেখা যায় মুসলিমদের মধ্যে! অন্য ধর্মের কোনো লোককে দেখা যায় না, মুসলমানদের কোনো কিছুকে অন্ধভাবে আকড়ে ধরতে, ভালোবেসে তার অনুসরণ এবং অনুকরণ করতে। এই কারণে হৃদয়ে ব্যথার ঢেউ ওঠে, অন্তরে বেদনার হাহাকার লুটোপুটি খায়, প্রশ্নের পরে প্রশ্ন জাগে- দিক ভ্রান্ত মুসলিম জাতি কোন পথে চলছে আজ? কেন তারা অন্যদের প্রতি এত আসক্ত? অপরের সংস্কৃতি ও কালচার ফলো করার জন্য কেন তারা এত অস্থির? কেন এত অধীর? কেন এমন ব্যগ্র এবং উদগ্র?
মাথা নত হবে কেবল আল্লাহ তাআ'লার সামনেইঃ
প্রসঙ্গতঃ পা ছুঁয়ে সালাম করতে গেলে মাথা নোয়াতে হয়। কোনো মানুষের সামনে মাথা নোয়ানো বা ঝুঁকানো শিরক। মুসলমানদের মাথা শুধুমাত্র এক আল্লাহর সামনেই নত হয়। নামাযের রুকু ও সিজদায়। অন্য কারো জন্য নয়। অন্য কোথাও নয়। বাদশাহর সামনে নয়। রাজার সামনে নয়। বাবার সামনে নয়। শিক্ষকের সামনে নয়। কারও সামনেই নয়। সমস্যা হচ্ছে সমাজের অজ্ঞ লোকদেরকে নিয়ে। এরা জানে না ইসলাম একফোটা। জানে না কুরআন হাদিস। জানে না শরিয়তের নির্দেশনা। জানে না দ্বীনের সঠিক বিধি-বিধান। কিন্তু ফতোয়ার বেলায় ওস্তাদ। বড় বড় ফতোয়া দিয়ে নিরীহ বউ বেচারীকে পর্যন্ত দাসী-বাঁদিতে পরিণত করে নেন নিজেদের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য আর ভোগ উপভোগের পথকে নিষ্কন্টক করার জন্য। ইসলামকে এরা মানুষের সামনে ভুলভাবে উপস্থাপন করেন নিজেদের আরাম আয়েশ আর সুখ স্বাচ্ছন্দ্যকে নিরুপদ্রব করার লক্ষ্যে। এই শ্রেণির লোকেরাই বউকে দিয়ে, কাজের লোকদের দিয়ে, পীরের বেশ ধারণ করে মুরিদদের দিয়ে, অধীনস্তদের দিয়ে কদমবুচি গ্রহণ করেন। শুধু কদমবুচিই নয়, নিয়ে থাকেন নানাবিধ খেদমতও। তৃপ্ত পরিতৃপ্ত হওয়ার চেষ্টায় রত হন বৈধ এবং অবৈধ বহুবিধ সেবায়।
গঞ্জিকাসেবীদের কাছে কদমবুচির বড় কদরঃ
গঞ্জিকাসেবীদের কাছে কদমবুচির বড় কদর। জ্বি, গাজা সেবনের উপযুক্ত এবং নিরাপদ স্থান হিসেবে পরিগণিত আমাদের দেশের তথাকথিত বাবাদের দরবারগুলো। মাযার কেন্দ্রিক এসব দরবারে ইসলামের আদর্শবিচ্যুত লোকদের মিলন মেলা জমে ওঠে। ইসলামের মূল শিক্ষা এবং আদর্শবিহীন এক দল মানুষ, ফরজ, ওয়াজিব এবং সুন্নত- কোনোকিছুরই যাদের কাছে কোনো মূল্য নেই, সাধারনতঃ সেসব লোকই এসব মাযারের সাথে ঘনিষ্ট। ইসলামে নারী পুরুষ উভয়ের জন্য পর্দাপালনকে ফরজ করা হলেও এরা এই ফরজের ধার ধরার প্রয়োজন আদৌ মনে করেন না। বউকে নিয়ে যান প্রদর্শনীর জন্য। বাবার দরবারে। মাজারের মজমায়। ওরশের নামে, জশনে জুলুসের নামে এরা যেসব কাজকর্ম করে থাকেন, সেসবের দূরতম কোনো সম্পর্ক ইসলামের সাথে নেই। এরা এদের স্ত্রী কন্যাদের দিয়ে বাবার পায়ে কদমবুচি করান, যা অনেকগুলো হারাম কাজকে একত্রিত করে। এরা মূলতঃ সরলা, অবলা নিজেদের পরিবারভুক্ত নারীদেরকে এইসব অপকর্মে বাধ্য করে থাকেন। এরাও এক জাতের কঠিন তেলবাজ বৈকি! ধারণা করা অমূলক নয় যে, সম্ভবতঃ এই ধরণের লোকেরাই আল্লাহ তাআ'লাকে সিজদা দেয়ার পরিবর্তে কালে ভদ্রে মানুষকে সিজদা দিতেও কার্পণ্য করেন না। এরা আল্লাহ তাআ'লাকে খুশি করার পরিবর্তে মানুষকে খুশি করার জন্য বেশি তৎপর হয়ে থাকেন। ধর্মীয় বিধি-বিধানকে উপেক্ষা করে আত্মমর্যাদা ও স্বকীয়তাবিবর্জিত এরাই এর ওর পায়ের ধূলা নেয়ার জন্য অন্যের পায়ের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়তেও সামান্য দ্বিধাবোধ করেন না।
বস্তুতঃ এসব লোকদেরকে ইসলাম শেখানো জরুরী। এদের মূর্খতার কারণে পুরো সমাজ কলুষিত হচ্ছে। বিপর্যয় দেখা দিচ্ছে ঘরে বাইরে। কারণ, এদের নিয়ে সমস্যা দ্বিমুখী। একে তো এরা নিজেরা ইসলাম জানে না – দ্বিতীয়তঃ অন্যদের ইসলাম পালনে বাঁধার সৃষ্টিও করে থাকে এরাই। কিন্তু প্রিয় পাঠক, সমাজে পাপ এবং অনাচারের সয়লাব ঘটতে থাকলে এর ফলে যদি শাস্তি আসে, ভালো-মন্দ তা সকলকেই স্পর্শ করে। তাই সমাজ থেকে শিরক, বিদআত, কুসংস্কার ও পাপাচার উৎখাত করার জন্য কুরআন ও সুন্নাতের দাওয়াত এবং দ্বীনের সহিহ পয়গাম প্রতিটি মানুষের কানে কানে পৌঁছে দেয়ার প্রতি আরো বেশি মনোযোগী হওয়া ব্যতিত অন্য কোনো পথ নেই।
আনুগত্যের সঠিক পথ ও পন্থাঃ
প্রসংঙ্গতঃ পিতা-মাতা এবং শ্বশুড়-শ্বাশুড়িসহ মুরব্বি শ্রেণির আত্মীয়-স্বজনের মন রক্ষায় তাদের আদেশ-নিষেধ ইত্যাদি পালন করার চেষ্টা করা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় ভালো একটি গুণ। কিন্তু অবৈধ কোনো কাজের ক্ষেত্রে তাদের প্রত্যাশা বা আদেশ-নির্দেশ মেনে চলার সুযোগ নেই। এগুলো ইসলাম জায়েজ করেনি। এমনকি, হারাম কাজে শুধু তাদের নয়; স্বামীর আদেশও মান্য করা যাবে না। ইসলামের বিধান হচ্ছেঃ জায়েজ কাজে পিতা-মাতা, শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি কিংবা স্বামীর আনুগত্য করতে হবে। পক্ষান্তরে, পিতা-মাতা, শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি কিংবা স্বামী যদি এমন কোনো কাজের নির্দেশ দেন, যা কুরআন ও সুন্নাহর বিপরীত তাহলে সেটা মানা যাবে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা যায়, আজকাল অনেক স্বামীই (মুসলিম!) এটা পছন্দ করেন না যে, তার স্ত্রী পর্দা করুক। প্রকৃতপক্ষে এই ধরণের বিষয়াদিতে স্বামীর অনুগত্য করার নূন্যতম অবকাশ নেই। কারণ, স্রষ্টার অবাধ্য হয়ে কোনো সৃষ্টির আনুগত্য করা নিষিদ্ধ। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন:
﴿ وَإِن جَٰهَدَاكَ عَلَىٰٓ أَن تُشۡرِكَ بِي مَا لَيۡسَ لَكَ بِهِۦ عِلۡمٞ فَلَا تُطِعۡهُمَاۖ وَصَاحِبۡهُمَا فِي ٱلدُّنۡيَا مَعۡرُوفٗاۖ ﴾ [لقمان: ١٥]
আর তোমার পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে শিরক করার জন্য পীড়াপীড়ি করে, যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তাহলে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে। -সূরা লুকমান, আয়াত: ১৫
আর এ প্রসংগে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নির্দেশনা হচ্ছে-
« إِنَّمَا الطَّاعَةُ فِى الْمَعْرُوفِ » . (متفق عليه).
আনুগত্য চলবে শুধু সৎকাজে। -বুখারী, হাদিস নং- ৬৮৩০; মুসলিম, হাদিস নং- ৪৮৭১
অর্থাৎ, দ্বীন বিরোধী, শরিয়ত বিরোধী কোনো কাজে কারও আনুগত্য করা যাবে না।
রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন:
« لا طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فِي مَعْصِيةِ الخَالِقِ » . (رواه أحمد و الحاكم).
স্রষ্টার অবাধ্য হয়ে কোনো সৃষ্টির আনুগত্য করা যাবে না। -আহমাদ ও হাকেম রহ. হাদিসটি বর্ণনা করেন এবং হাদিসটিকে সহীহ বলেন
আর কেউ যদি মানুষকে খুশি করার জন্য আল্লাহর আদেশ অমান্য করে তাহলে তার পরিণতি সম্পর্কে রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
عَنْ عَائِشَةَ رضي الله عنها قَالَتْ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( مَنِ الْتَمَسَ رِضَى اللَّهِ بِسَخَطِ النَّاسِ ، رَضِيَ الله عَنْهُ ، وَأَرْضَى النَّاسَ عَنْهُ ، وَمَنِ الْتَمَسَ رِضَا النَّاسِ بِسَخَطِ اللَّهِ ، سَخَطَ اللَّهُ عَلَيْهِ ، وَأَسْخَطَ عليه الناس ) رواه ابن حبان "الإحسان في تقريب صحيح ابن حبان" (1 /510) ، والترمذي (2414) بلفظ : ( مَنِ الْتَمَسَ رِضَاءَ اللَّهِ بِسَخَطِ النَّاسِ كَفَاهُ اللَّهُ مُؤْنَةَ النَّاسِ ، وَمَنِ الْتَمَسَ رِضَاءَ النَّاسِ بِسَخَطِ اللَّهِ وَكَلَهُ اللَّهُ إِلَى النَّاسِ ) .
وقد اختلف في رفع هذا الحديث إلى النبي صلى الله عليه وسلم ، ووقفه على عائشة .
وقد صحح الإمام البخاري ، كما في العلل الكبير للترمذي (332) ، وأبو زرعة ، وأبو حاتم ، كما في العلل لابن أبي حاتم (5/59) ، وغيرهم وقفه . وقال الدارقطني رحمه الله : " ورفعه لا يثبت" . انتهى، من "العلل" (14/182) .
وينظر " سلسلة الأحاديث الصحيحة " ، للألباني ( 5 / 392 )
কোনো ব্যক্তি যদি মানুষকে সন্তুষ্ট করার দ্বারা আল্লাহ তাআ’লাকে অসন্তুষ্ট করে, তাহলে আল্লাহ তাআ’লা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন। পরিণতিতে আল্লাহ তাআ’লাকে অসন্তুষ্ট করে যাদেরকে সে সন্তুষ্ট করেছিল, তারাও অসন্তুষ্ট হয়। পক্ষান্তরে, যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআ’লাকে সন্তুষ্ট করার কারণে মানুষকে অসন্তুষ্ট করে, আল্লাহ তাআ’লা তার প্রতি সন্তুষ্ট হন এবং আল্লাহ তাআ’লাকে সন্তুষ্ট করার ফলে যাদেরকে সে অসন্তুষ্ট করেছিলো, তাদেরকেও আল্লাহ তাআ’লা ঐ ব্যক্তির প্রতি সন্তুষ্ট করে দেন। এমনকি সেসব অসন্তুষ্ট লোকদের দৃষ্টিতে আল্লাহ তাআ’লা তাকে উত্তম করে দেন, সেই ব্যক্তির কথা ও কাজকে তাদের দৃষ্টিতে শোভণীয় করে দেন। -সুনানুত-তিরমিযী, হাদিস ২৪১৪, সহিহ ইবনে হিব্বান, প্রথম খন্ড, হাদিস ৫১০,
উপস্থাপিত হাদিসের মান: যদিও এই হাদিস নবী কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহার বর্ণনার বিষয়ে কোনো কোনো আলেমের মধ্যে আপত্তি রয়েছে। তবে, ইমাম বুখারি রহ. হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন এবং ইমাম তিরমিযি রহ. তাঁর ইলালিল কাবির লিত তিরমিযি গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ সাব্যস্ত করেছেন। একইভাবে আবু যুরআহ হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন এবং আবু হাতিম তাঁর ই'লালু লি ইবনি আবি হাতিম গ্রন্থেও এটিকে সহিহ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
পরষ্পর সাক্ষাতকালে করণীয় সম্পর্কে হাদিসের নির্দেশনাঃ
এই বিষয়টি অনুধাবন করার জন্য নিচের হাদিসখানা গুরুত্ববহ-
حَدَّثَنَا سُوَيْدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا حَنْظَلَةُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ الرَّجُلُ مِنَّا يَلْقَى أَخَاهُ أَوْ صَدِيقَهُ أَيَنْحَنِي لَهُ قَالَ " لاَ " . قَالَ أَفَيَلْتَزِمُهُ وَيُقَبِّلُهُ قَالَ " لاَ " . قَالَ أَفَيَأْخُذُ بِيَدِهِ وَيُصَافِحُهُ قَالَ " نَعَمْ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আনাস ইবনু মালিক রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেন, কোন একসময় জনৈক ব্যক্তি প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাদের কোন ব্যক্তি তার ভাই কিংবা বন্ধুর সাথে দেখা করলে সে কি তার সামনে ঝুঁকে (নত) যাবে? তিনি বললেনঃ না। তিনি আবার প্রশ্ন করেন, তাহলে কি সে গলাগলি করে তাকে চুমু খাবে? তিনি বললেনঃ না। তিনি আবার বললেন, তাহলে সে তার হাত ধরে মুসাফাহা (করমর্দন) করবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। -হাসানঃ ইবনু মা-জাহ (৩৭০২), জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৭২৮, মিশকাত হা/৪৬৮০ ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়, মুছাফাহা ও মু‘আনাক্বা অনুচ্ছেদ-৩
উপস্থাপিত হাদিসের বিষয়ে একটি ভ্রান্তি নিরসনঃ
এ হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাথা নোয়াতে এবং চুমু খেতে নিষেধ করেছেন। অত্র হাদিসে চুমু খেতে নিষেধ করা হলেও অন্য হাদিসে চুমু খাওয়ার প্রমান রয়েছে। বস্তুতঃ এতে বিভ্রান্তির কিছু নেই। কারণ, এই হাদিসে মূলতঃ সাক্ষাতের প্রাক্কালে সকলের জন্য পালনীয় সহজ আমল শেখানো হয়েছে, যা সর্বোচ্চ মুসাফাহা পর্যন্ত করা যেতে পারে। এখানে লক্ষনীয় যে, এই হাদিসে মুআনাকা বা কোলাকুলির অনুমোদনও দেয়া হয়নি। অথচ, মুআনাকা জায়েজ হওয়ার পক্ষে অন্যান্য হাদিস রয়েছে। মুআনাকা সর্বাবস্থায় পালনীয় কোনো আমল নয়। বিশেষ বিশেষ অবস্থা এবং সময়েই সাধারণতঃ মুআনাকা বা কোলাকুলি করা হয়ে থাকে। চুম্বন করার ক্ষেত্রটি আরও সংক্ষেপিত। বিশেষ মুহাব্বতের ব্যক্তিকে ঐকান্তিক সম্মান বা স্নেহ প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে চুম্বন সাধারণতঃ কালে ভদ্রেই করা হয়ে থাকে। সুতরাং, মুআনাকা বা কোলাকুলি এবং চুম্বন করা সকলের জন্য সার্বক্ষনিক পালনীয় আমল নয় বলেই এই হাদিসে এগুলোর অনুমোদন প্রদান করা হয়নি।
কদমবুচি বা পদচুম্বনকে শর্তসাপেক্ষে কেউ কেউ জায়েজ বললেও
কদমবুচি বা পদচুম্বনকে শর্তসাপেক্ষে কেউ কেউ জায়েজ বলেছেন। যারা এটিকে জায়েজ বলেছেন তাদের যুক্তি কি? কিংবা, তাদের উপস্থাপিত যুক্তির গ্রহনযোগ্যতা কতটুকু? বিষয়গুলো বুঝার জন্য সামান্য আলোকপাতের প্রয়োজন মনে করছি। বস্তুতঃ তাদের আরোপিত শর্ত মোতাবেকই প্রশ্নের মুখে পড়ে কদমবুচি বা পদচুম্বন জায়েজ হওয়ার বিষয়টি। কারণ, মুষ্টিমেয় সংখ্যক ব্যক্তিবর্গ যারা বলেছেন যে, সম্মানার্থে পদচুম্বন করা জায়েজ; তারাও তাদের এ কথার সাথে সাথে এই শর্তারোপ করেছেন, যেন চুমু খেতে গিয়ে রুকু কিংবা সিজদার সূরত না হয়ে যায়। যদি রুকু অথবা সিজদার সূরত হয়ে যায়, তাহলে তা জায়েজ হবে না। -আল মুজতাবা-৪/২০৫, আল মুহীতুল বুরহানী-৮/১১৮, ফাতাওয়া আলমগীরী-৫/৩৬৯
এখন বুঝার বিষয় হচ্ছে, কারও পা ছুঁতে গেলে কিংবা কদমবুচি করতে গেলে অথবা পদচুম্বন করতে গেলে রুকু কিংবা সিজদার সূরত না হওয়া ব্যতিত তা করার কোনো উপায় থাকতে পারে কি? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুব বেশি পেরেশান হবার প্রয়োজন নেই- এ কথা সম্ভবতঃ প্রত্যেকেই স্বীকার করবেন। অর্থাৎ, এর সহজ উত্তর হচ্ছে, থাকে না। তাই সহজভাবে বুঝে নেয়া প্রয়োজন যে, এই কারণে, এটি করার কোনো যুক্তিও থাকতে পারে না।
অধিকাংশ আলেমের মতেই কদমবুচি বা পদচুম্বন করা নাজায়েজ যেসব কারণেঃ
ফুকাহায়ে কেরাম এবং মুহাক্কিকীনদের অধিকাংশের মতেই কদমবুচি বা পদচুম্বন করা জায়েজ নয়। এর অন্যতম একটি কারণ, বর্তমান প্রচলিত কদমবুচিতে রুকুর হালাত এবং সিজদার হালাত হওয়া স্পষ্ট। কারণ, বিষয়টি তো আর এমন হওয়া সম্ভব নয় যে, যার কদমবুচি করা হবে, তিনি এই পরিমান উঁচু স্থানে থাকাবস্থায় তার কদমবুচি করা হবে, যাতে যারা কদমবুচি করবেন তাদের বুক কিংবা মুখমন্ডল বরাবর উঁচুতে তার পায়ের অবস্থান থাকার কারণে তাদের সামনের দিকে ঝুঁকে কাজটি করতে না হয়। সেই সাথে এর পেছনে আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণ, এটি অন্য ধর্মাবলম্বীগণের একটি প্রতীক। তাদের আচরিত প্রথা এটি। যদিও অন্যদের ধর্মীয় আচার আচরণের প্রতি সম্মান বজায় রাখা আমাদের কর্তব্য, তথাপি হাদিসে অন্য ধর্মাবলম্বীগণের আচরণ, অভ্যাস, স্বভাব ইত্যাদির অনুকরণ ও অনুসরণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা রয়েছে যার মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের স্বকীয়তা, স্বাতন্ত্র্য এবং বিশেষ বৈশিষ্ট্যাবলীর পরিপূর্ণ রূপ যাতে প্রতিটি কথা এবং কাজে পরিষ্ফুটিত ও প্রতিভাত হয়ে ওঠে। উপরন্তু, এর আরেকটি কারণ, হাদিসে এই কাজটি করার পক্ষে আদৌ কোনো অনুমোদন নেই। এতসব কারণে তাদের মতে, কদমবুচি বা পদচুম্বনসহ এই ধরণের রুসম রেওয়াজ ও সামাজিক প্রথাসমূহ, যেসবের কোনো অনুমোদন ইসলামী শরিয়তে নেই, এগুলো স্পষ্টতঃ হারাম এবং বর্জনযোগ্য।
অনুকরণ হবে যার, অনুসারীও হতে হবে তারইঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'মান তাশাব্বাহা বি ক্বাওমিন ফা হুয়া মিনহুম', অর্থাৎ, 'কোন ব্যক্তি যেই জাতির অনুকরণ করবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত বলেই গণ্য হবে।' এখানেও একটি প্রশ্ন কারও কারও জাগ্রত হতে পারে যে, আমাদের বাবা-দাদাসহ পূর্ববর্তী যারা পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেছেন, তারা তো কদমবুচি এবং পদধূলি নেয়াকে বৈধ মনে করতেন এবং এই কাজটি করতেনও, তাদের কি হবে?
এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, আল্লাহ তাআ'লা একের বোঝা অন্যের উপরে চাপিয়ে দিবেন না। এটা পবিত্র কুরআনের স্পষ্ট ঘোষনা। পূর্ববর্তীগণের আমলের বিষয়ে আমরা নই বরং, তারা নিজেরাই জিজ্ঞাসিত হবেন। তারা যদি নিছক না জানার কারণেই এসব আমল করে থাকেন এবং তাদের সহিহ বিষয়গুলো জানারও কোনো পথ যদি তখন না থেকে থাকে তাহলে এমন ক্ষেত্রে আশা করা যায়, আল্লাহ তাআ'লা হয়তো তাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন। কিন্তু সত্য প্রকাশ হবার পরে, সঠিক বিষয় সামনে আসার পরেও যদি তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হয়, এই অযুহাতে যে, এগুলো পূর্ব পুরুষদের রীতি অনুসরণ করা হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে ফায়সালা কি হতে পারে, বিজ্ঞ পাঠকের কাছেই সেই ভার রেখে দিলাম।
পরিশেষে প্রশ্ন, আমরা তাহলে যাব কোন পথে?
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় মতটিকে প্রাধান্য দেয়াই সময়ের দাবি। কারণ, কদমবুচি করা এ উপমহাদেশে মৌলিকভাবে অন্য জাতি ধর্মে বিশ্বাসী একটি সম্প্রদায়ের রুসম, রেওয়াজ বা চল। তাদের কাজ তারা করবেন, তাতে আমাদের আপত্তি থাকার কথা নয়। নেইও। কিন্তু, তাদের কোনো কাজকে আমাদের বলে ধরে নিয়ে, আমাদের ঈমান, আকিদা এবং শিরক বা অন্যান্য গুনাহে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়ার মত পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া আমাদের জন্য কোনোভাবেই কাম্য নয়। এমন কাজ কোনো অব্স্থায় করা উচিতও নয়। কারণ, প্রিয় পাঠক, আমাদের মনে রাখতে হবে যে, অন্যান্য কিছু ধর্ম এমন রয়েছে যে, সেগুলোতে বিশ্বাসীগণ উপাসনা, আরাধনা বা প্রার্থনা মনে করে যেসব কাজ, প্রথা ও পদ্ধতি পালন করে থাকেন, আমাদের কাছে সেসবের অনেক কাজই স্পষ্টভাবে শিরক বা স্রষ্টার সাথে অংশীদারি সাব্যস্ত করার মত অমার্জনীয় অপরাধ; যাকে পবিত্র কুরআনের ভাষায় সবচেয়ে বড় পাপ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাই, প্রিয় পাঠক, বিনীতভাবে বলতে চাই, তারা তাদের ধর্ম পালন করুন, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীগণও তাদের স্ব স্ব ধর্ম পালন করুন, তাতে আমাদের সামান্য আপত্তি নেই; আপত্তি শুধু একটি ক্ষেত্রে, আমরা যেন হাস্যকর উদারতা দেখানোর নাম করে আমাদের ধর্মীয় স্বকীয়তাকে বিসর্জন দিয়ে অন্যদের রুসম, রেওয়াজ এবং প্রথা ও পদ্ধতিগুলোকে নিশ্চিন্তে ও নির্ভাবনায় পালন করতে অতি তৎপর হয়ে না উঠি। আগ পাছ না ভেবে এমনটা করার ফলাফল আমাদেরকেই ভোগ করতে হবে। প্রিয় পাঠক, আমাদের মনে রাখতে হবে, না জেনে, শুধু দেখে দেখে, শুধু শুনে শুনে, কারও অন্ধ অনুকরণে কিংবা বাবা দাদাসহ পূর্ব পুরুষের পালনীয় সামাজিক রীতি-নীতি গ্রহণ এবং পরিপালনের মধ্যে প্রকৃত সফলতা, কল্যান এবং কামিয়াবি নেই; বরং, সফলতা, কল্যান এবং কামিয়াবি নিহিত দ্বীনি জ্ঞান অর্জন করে, ইসলামী শরিয়তের সঠিক ফায়সালা জেনে নিয়ে বাস্তব জীবনে তা পরিপালনের মধ্যে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদেরকে সঠিকভাবে প্রতিটি বিষয় অনুধাবন করে প্রকৃত সত্য পথের অনুসারী হওয়ার তাওফিক দান করুন।
ব্লগার সোহানাজোহা -কে উৎসর্গ করছি লেখাটি। মূলতঃ তার একটি অনুরোধ রক্ষার্থেই এই লেখার অবতারণা। তাকে কথা দিয়েছিলাম যে, তার জানার বিষয়টি পোস্ট আকারে দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। সে ইচ্ছে অবশেষে পূরণ করার তাওফিক দিয়েছেন মহান মালিক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা। অসংখ্য শুকরিয়া তাঁর কাছে, সে কারণে। আর শুভকামনা সোহানাজোহার প্রতি। সম্মানিত প্রিয় পাঠক! অনেক অনেক শুভেচ্ছা আপনার প্রতিও, সময় ব্যয় করে লেখাটি পাঠ করার জন্য।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:১৩
নতুন নকিব বলেছেন:
চমৎকার মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা....
আপনার অনুরোধ রক্ষা করার চেষ্টা থাকবে ইনশাআল্লাহ। তবে একটু সময় নিতে হবে হয়তো।
কল্যানের দোআ সবসময়।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:১৫
নতুন নকিব বলেছেন:
অনুরোধ : ছোট করে পোস্ট দিবেন ভাইয়া
-পোস্টের সাইজ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। এই পোস্টের চেয়ে দুই এক লাইন যাতে খাটো হয়, সেই চেষ্টা থাকবে।
২| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:০৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: হিন্দু ধর্মে বয়োজ্যেষ্ঠদের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য চরণস্পর্শ (হিন্দিতে বলে পদস্পরশন) করা হয়। এটা প্রণামের একটা রূপ। বিয়ের পর নববধুরা তাদের শ্বশুর শাশুড়ির পা ছুঁয়ে সম্মান ও আশির্বাদ কামনা করে, জ্যৈষ্ঠ মাসে যখন জামাই ষষ্টি হয় তখন জামাইরা শ্বশুর শাশুড়ির পা ছুঁয়ে পদধূলি না নিলে জামাই ষষ্টি পুর্ন হয় না। 'আনন্দমার্গ প্রচারক সঙ্ঘ বাংলাদেশ' নামে হিন্দুদের একটা ফেইসবুক পেইজ আছে। যেখান বলা হয়েছে যে প্রনাম তিন প্রকার। ১)সাষ্টাঙ্গ প্রণাম (২) চরণস্পর্শ প্রণাম, (৩) নমস্কার। চরণস্পর্শ প্রণাম সম্পর্কে বলা হয়ছে যে প্রথমে হস্ত দ্বারা প্রণম্য ব্যষ্টির চরণস্পর্শ করে সেই হস্ত স্বীয় মস্তকে স্পর্শ করানোর নামই চরণস্পর্শ প্রণাম। যারা লৌকিক কিংবা আধ্যাত্মিক বিচারে তোমার পূজনীয় কেবল তাঁদেরই এই প্রণাম করা চলবে।ওই সকল মানুষ ব্যতিরেকে অন্য কাউকে চরণস্পর্শ করে প্রণাম যত দূর সম্ভব করবে না। যাকে তুমি শ্রদ্ধা কর না সে যেই হোক তাকে চরণস্পর্শ করে করে প্রণাম করো না। লিংক -আনন্দমার্গ প্রচারক সঙ্ঘ বাংলাদেশ
এই উপমহাদেশ ছাড়া আর কোথাও মুসলমানদের কদমবুসি করতে দেখা যায় না। কারণ ভারতের সনাতনী প্রথা থেকে আমরা এটা গ্রহণ করেছি। এই ধরণের চরণস্পর্শের কিছু ছবি -
শরিক দলের প্রধানের পা ছুঁয়ে প্রণাম, প্রশংসায় ভাসছেন মোদি
অমিতের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম শোভনের, মান -ইজ্জত বিকিয়ে গেছে বলছে নেট দুনিয়া
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:১৭
নতুন নকিব বলেছেন:
শিক্ষনীয় সুন্দর মন্তব্যে বিশেষ কৃতজ্ঞতা।
কল্যানের দোআ আপনার এবং আপনার পরিবারের সকলের জন্য।
৩| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:১৯
মুক্তা নীল বলেছেন:
দরকারি ও উপকারী পোষ্ট লিখেছেন ।
আমরা কিছু কিছু রীতিনীতি পালন না করলে যেন বেয়াদব
হয়ে যাই । পা ছুয়ে সালাম না করলে এখনো আমাদের
সবক্ষেত্রে নয় সামান্য কিছু ক্ষেত্রে মুরুব্বীরা রাগ করেন।
আপনার এই লেখাটি অসম্ভব ভালো লেগেছে ।
অনেক কষ্ট করে লিখেছেন , ধন্যবাদ আপনাকে।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:১৯
নতুন নকিব বলেছেন:
ধীরে ধীরে জ্ঞানের আলো যত ছড়াবে, কুসংস্কার আর অন্ধকারের কালো ছায়া ততই সমাজ থেকে বিদূরিত হবে। সচেতনতা তৈরির জন্য জানার এবং জানানোর বিকল্প নেই।
শুকরিয়া। কল্যানের দোআ সবসময়।
৪| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২০
মুক্তা নীল বলেছেন:
নকীব ভাই ,
পোস্টটি প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম ।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:২১
নতুন নকিব বলেছেন:
অনিঃশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন। আল্লাহ তাআ'লা আপনার এবং পরিবার পরিজনের প্রতি রহমতের বারিধারা বর্ষন করুন।
৫| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৯
সোহানাজোহা বলেছেন: অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের সাথে জানাচ্ছি আধুনিক যুগের আধুনিক ব্লগারগণ পায়ে ধরে সালাম পছন্দ করেন! তাঁরা অত্যন্ত গর্বের সাথে জানালেন এটি বাংলাদেশের সংস্কার ছিলো! আসলে বাংলাদেশে কি সংস্কার ছিলো আর কি সংস্কার ছিলো না - তাই এখন ভাবনার বিষয়।
পায়ে হাত দিয়ে সালাম এটি নিঃসন্দেহে “লাল সালু” সংস্কার। পীর বাড়িতে পায়ে হাত দিয়ে সালাম এবং সরাসরি পায়ে চুম্বন সহ পায়ে সিজদা করার প্রচলন আছে (আস্তাগফিরুল্লাহ নাওজুবিল্লাহ) সুজুদ আরবি: سُجود বা সাজদাহ আরবি: سجدة সিজদা বলে পরিচিত নামাজের একটি অংশ। রুকু থেকে দাঁড়িয়ে এরপর মাটিতে কপাল ও নাক স্পর্শ করে সিজদা করা হয়। একই সাথে হাটু ও হাতের পাতায় মাটিতে স্থাপন করা হয়। সিজদা নামাজের অন্যতম আবশ্যকীয় অংশ। কোনো মানুষকে এমনকি মাতাপিতাকেও সিজদা করার অনুমতি ইসলাম ও শরিয়াহ প্রদান করেনি।
আপনি আমার মতো অতি অভাজন মানুষের কথায় মন্তব্য না করে আস্ত একটি পোস্ট দিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে যে শ্রম দিয়েছেন মহান আল্লাহ পাক আপনার আমল নামায় তা লিখে রাখুন। আল্লাহ আপনাকে ও আপনার পরিবার পরিজনকে ঈমান আখলাক ও নেক হায়াত দান করুন। ফি আমানিল্লাহ। অনুগ্রহ করে আপনি আমাদের ও আমার আব্বার জন্য খাস নিয়তে দোয়া করবেন।
পোস্টটি প্রিয়তে রাখছি।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:২৯
নতুন নকিব বলেছেন:
অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের সাথে জানাচ্ছি আধুনিক যুগের আধুনিক ব্লগারগণ পায়ে ধরে সালাম পছন্দ করেন! তাঁরা অত্যন্ত গর্বের সাথে জানালেন এটি বাংলাদেশের সংস্কার ছিলো! আসলে বাংলাদেশে কি সংস্কার ছিলো আর কি সংস্কার ছিলো না - তাই এখন ভাবনার বিষয়।
-আসলে আমাদের দৈনন্দিন আচার আচরণ থেকে শুরু করে জীবন ঘনিষ্ট অনেক পর্ব ও প্রথা এমন রয়েছে যেগুলোর উৎপত্তি কিংবা প্রামান্যতার বিষয়ে আমরা ওয়াকিবহাল নই। অনেকে ধারণার বশবর্তী হয়ে এসবের একেকটি ব্যাখ্যা দাড় করানোর চেষ্টা করেন। সঠিক তথ্য অনেকের হয়তো জানাও থাকে না। তারপরেও বংশকালানুসারে চলে আসায় সেসব ফলো করে চলা হয়। কেউ কেউ আবার সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ড থেকে ধর্মকে আলাদা করে রাখতে চান, যদিও এর কোনো সুযোগ আদৌ নেই।
অনুগ্রহ করে আপনি আমাদের ও আমার আব্বার জন্য খাস নিয়তে দোয়া করবেন।
-অবশ্যই কায়মনোবাক্যে তাদের জন্য দোআ থাকলো। আল্লাহ তাআ'লা তাদের প্রতি দয়া করুন। আপনার প্রতিও।
৬| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:৩১
সোহানাজোহা বলেছেন: বিশেষ দ্রষ্টব্য: - দয়া করে ৫ নং মন্তব্যটি মুছে দিন তাতে ইমোজি আইকন এসে লেখাটিকে অপ্রাসঙ্গিক করেছে।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৫০
নতুন নকিব বলেছেন:
জ্বি, মুছে দিয়েছি। ধন্যবাদ।
৭| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:০৫
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: নতুন নকিব ভাই,অসংখ্য ধন্যবাদ ।এমন একটি আপাত নির্দোষ কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখার জন্য।
মহান আল্লাহপাক আমাদেরকে ধর্মের সকল বিধি-বিধান সম্পর্কে যথাযথভাবে জানার এবং সঠিকভাবে পালন করার তওফিক দান করুন । হেফাযত করুন সকল ফেতনা-ফ্যাসাদ থেকে।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৫২
নতুন নকিব বলেছেন:
ঠিক বলেছেন- আসলেই এটি আপাত নির্দোষ কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কৃতজ্ঞতা এবং দোআ থাকলো।
মহান আল্লাহপাক আমাদেরকে ধর্মের সকল বিধি-বিধান সম্পর্কে যথাযথভাবে জানার এবং সঠিকভাবে পালন করার তওফিক দান করুন । হেফাযত করুন সকল ফেতনা-ফ্যাসাদ থেকে।
-আমিন।
৮| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:১৫
মৃন্ময়ী শবনম বলেছেন: দাসপ্রথা উঠে গেছে কবে কোন কালে কিন্তু এই পায়ে হাত ধরাধরি এখনও বাহল তবিয়তে টিকে আছে। পায়ে হাত দেওয়া থেকে মনে হতে পারে মুনিব আর গোলাম সম্পর্ক। সংস্কারের নামে যারা পায়ে হাত ধরা টিকিয়ে রেখেছে তারা সংস্কারের নামে নাচ গান বাজনা থিয়েটার নাটক ছবি আঁকা পার্টি করা সহ বেগানা নারী পুরষের সামনে পর্দা বিহীন চলাফেরা টিকিয়ে রেখেছে! বলছে এগুলো বাংলার স্বাধীনচেতা রবীন্দ্র নাথের শান্তিনিকেতনী বাংলার বাংলা সংস্কারের বাংলার হৃদয়ের বাংলার --------
পায়ে হাত দেওয়া যদি শ্রদ্ধা সম্মান হতো তাহলে সৈনিকরা জেনারেলদের পায়ে ধরে সালাম করতো। যিনি পায়ে হাত দিয়ে সালাম করেছেন তিনি গুনাহগার এবং যিনি উক্ত সালাম নিয়েছেন তিনিও সমান গুনাহগার হয়েছেন।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৫৩
নতুন নকিব বলেছেন:
যথার্থ বলেছেন। সুন্দর বলেছেন।
কৃতজ্ঞতাসহ শুভকামনা অশেষ।
৯| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:২৯
নেওয়াজ আলি বলেছেন: সালাম করা ভদ্রতা । কিন্তু ঝুকে পড়ে পা ধরা তোষামোদি
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৫৩
নতুন নকিব বলেছেন:
ঠিক।
কল্যানের দোআ জানবেন।
১০| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:৩২
রানার ব্লগ বলেছেন: কাউকে সন্মান করাটা উত্তম কিন্তু জোর করে কারো পা ধরিয়ে সালাম বা কদমবুচি করানটা অত্যাচার। আমার এক খালা আমাকে ছোট বেলায় চেপে ধরে জোড় করে খালুর পায়ে হাত দিয়ে সালাম অথবা কদমবুচি করাতো আমি যথেষ্ট অপমানিত বোধ করতাম।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৫৫
নতুন নকিব বলেছেন:
একটা সময়ে এই প্রথা ব্যাপকাকারে ছিল। আলহামদুলিল্লাহ, এখন অনেকটাই কমেছে। বাকিটাও সকলের সচেতনতায় দূর হবে ইনশাআল্লাহ।
সুন্দর মতামতে কৃতজ্ঞতা। শুভকামনা জানবেন।
১১| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম। অনেক কিছু শিখলাম।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৫৬
নতুন নকিব বলেছেন:
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
১২| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৭
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আমি আপনার সাথে একমত নই। পায়ে ধরে সালাম করাটা ওলীদের রেওয়াজ।
এই সম্পর্কে আমি একটি পোস্ট দিয়েছি। ধন্যবাদ।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৫৭
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার মতামতকে শ্রদ্ধা করি।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
১৩| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৮:৩৪
সোহানাজোহা বলেছেন: #সত্যপথিক শাইয়্যান, খানিক সময়ের জন্য আপনার কথার সত্যতা যদি ধরেও নেই - তাহলেও পায়ে ধরে সালাম জায়েজ না। কারণ আপনি বা সাধারণ মানুষ ওলী আউলিয়া নন। নাকি আপনি বলতে চাচ্ছেন ব্লগে দু চারজন ওলী আউলিয়া আছেন। যারা নিজেদের পরিচয় দিতে চাচ্ছেন না।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৫৮
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ।
১৪| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৮:৪৬
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
#সোহানাজোহা,
আমাকে সালাম করতে বললাম কোথায়!!!!!!!!!
আমি লিখেছি গুরুজনদের কদমবুচি করার জন্যে।
আমার লেখায় নতুন রেফারেন্স দিয়েছি। সময় করে একটু পড়ে দেখবেন, প্লিজ।
আর, মডার্ণ যুগে, গুণীজন নিজেদের ওলী-আউলিয়া বলে ঘোষনা করেছেন, তেমন তো শুনিনি!!! বরং, তাঁদের ফোলোয়াররাই তাঁদের ওলী-আউলিয়া হিসেবে খুঁজে পেয়েছেন।
ব্লগে ওলী-আউলিয়াগণ থাকতেও পারেন।
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৫৯
নতুন নকিব বলেছেন:
ব্লগে ওলী-আউলিয়াগণ থাকতেও পারেন।
-সেটাই! অসম্ভব এমন কি!
১৫| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৯:০৮
সোহানাজোহা বলেছেন: #সত্যপথিক শাইয়্যান, আজকে হাসির মতো তেমন কিছু ঘটেনি। আপনাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্য পড়ে খানিকটা হেসেছি।
জ্বী দেওয়ানবাগ, কুতুববাগ, হিকমত শরিফ, শার্ষিনা, চন্দ্রপুরী, শাহ চন্দ্রপুরী, দয়াল বাবা গনি শাহ, আটরশি নামক ওলী আউলীয়াদের উত্তরসূরীর পা ধোয়ে সেই ময়লাযুক্ত পানিও পান করে তাদের ফলোয়ার’রা (নাওজুবিল্লাহ) তাছাড়া পায়ে ধরে ঝুলে থাকার জন্য রিতিমতো কুস্তিও হয়।
বর্তমান পীর দরবারগুলো ড্রাগের চেয়েও ভয়ানক। শিক্ষিত! লোকজন সেখানে ভক্ত হয়ে কিছু একটা খোঁজে পান।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:০৩
নতুন নকিব বলেছেন:
শর্ষিনা বাদে উল্লেখিত বাকি দরবারগু্লোর ব্যাপারে জানি না, তবে শর্ষিনা বা ছারছিনাপন্থীদের আমল অনুকরণযোগ্য। তারা শিরক বিদআতের বিষয়ে সচেতন।
পায়ে ধরে ঝুলে থাকার জন্য রিতিমতো কুস্তিও হয়।
-এটাও হয় না কি? সর্বনাশ! এমনটা হলে তো বিপদ! পীরের পায়ের দফা রফা হবার যোগার হতে পারে এর ফলে। এগুলো কোথায় কোথায় হয়? দেখতে পারলে ভালো হত।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
১৬| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৯:৩০
পুকু বলেছেন: সবই ভাল তবে সব জায়গায় যে ধর্ম নিয়ে টানাটানি করেন এটা বড়ই বিরক্তিকর।কে কাকে কি ভাবে সন্মান করবে তা কি আমাদের আরবের বেদুইনদের কাছ থেকে শিখতে হবে ?বাংলা সংকৃতি কি এতই দৈন্যদশায় এসে ঠেকেছে?যদিও কে কাকে কিভাবে সন্মান করবে তা তার ব্যক্তিগত পছন্দ।তবে যেভাবেই করুক তা তার নিজের অন্তরের ভক্তি বা শ্রদ্ধাই।তা যেকোনো ভাবেই করতে পারে।পরিশেষে একটি কথা খুব জানতে ইচ্ছে করছে যদি কিছু মনে না করেন।তাহলো উহাবিজম্ কি আপনাকে খুব উদ্বুদ্ধ করে ?কারন আপনার লেখায় প্রচ্ছন্নভাবে কট্টর ধর্মিয় আবেগ পরিলক্ষিত হয়।
০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:০১
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ ভাই। আসলে আপনার অনুসারিত আদর্শ, পছন্দ-অপছন্দ এবং ভালোলাগা-খারাপ লাগা ইত্যাদি আপনার কাছে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম ধর্মাবলম্বী ব্যতিত অন্য কারও উপরে কোনো কিছুকে চাপিয়ে দেয়ার নির্দেশনা ইসলাম দেয়নি। ইসলাম শুধু তার অনুসারীদের জন্য বিধি-বিধান প্রণয়ন করেছে এবং সেগুলো কার্যতঃ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়।
যদিও ‘আধুনিক মনস্ক’ কিছু ভাইয়ের মুখে এ প্রশ্নটি প্রায়শই শোনা যায় যে ‘সব জায়গায় ইসলাম টেনে আনেন কেন?’
সাধারণতঃ কয়েক ধরনের মানুষকে এ ধরনের প্রশ্ন তুলতে দেখা যায়। যথা-
এক. অমুসলিম অর্থাৎ, ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মে বিশ্বাসী ব্যক্তিগণ।
দুই. নাস্তিক বা অবিশ্বাসীগণ।
তিন. বংশগতভাবে মুসলিম হয়েও যারা পারতপক্ষে ধর্ম-কর্মের ধার ধারেন না।
চার. ছদ্মবেশী মুসলিম, যারা সুবিধা বুঝে কখনো কখনো ইসলাম পালন করেন, অন্যথায় গোপনে বিরোধিতায়ই লিপ্ত থাকেন। পাঁচ. ইসলাম বিদ্বেষীগণ।
এসব ক্ষে্ত্রে নিজের পরিচয় এবং অনুসরণীয় আদর্শ বা মূলনীতি স্পষ্ট হওয়া/ করা জরুরি। আপনি কে এবং আপনি কী চান—শুরুতেই এটি নির্ধারণ করা গেলে যুক্তির আলোকে কথা বলা সহজ।
সব জায়গায় ইসলাম টেনে আনেন কেন- এ প্রশ্নের সহজ-সরল জবাব হলো, প্রথমে ‘সব জায়গা’ কথাটির পরিধি নির্ধারণ করতে হবে। আপনি কি ‘সব জায়গা’র ভেতরে আছেন? যদি না থাকেন, তাহলে এ প্রশ্ন করার অধিকার আপনার থাকার কথা নয়।
আর হ্যাঁ, একজন মুসলমান, যিনি আমৃত্যু আল্লাহর আনুগত্য পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ, তার ‘সব জায়গা’য় ইসলাম থাকবে— এটিই স্বাভাবিক। একটি বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকা চাই যে, ইসলামের বিধান শুধুমাত্র যারা ইসলাম মেনে চলার অঙ্গিকার করেন তাদের জন্যই। কারণ, কোনো অমুসলিম ব্যক্তি ইসলাম ধর্মের বিধি-বিধান মানতে বাধ্য নন। বাধ্য নন নাস্তিক ব্যক্তিও। অর্থাৎ, কোনো অমুসলিম ব্যক্তি কিংবা নাস্তিককে জোর করে ইসলাম মানতে বাধ্য করার নির্দেশনা ইসলাম দেয় না। একইভাবে ইসলামের বিধান কোনো নামধারী মুসলিমের জন্য নয়। ইসলামের বিধান কোনো ছদ্মবেশী কিংবা ইসলামবিদ্বেষীর জন্যও হতে পারে না। মোট কথা, যে ব্যক্তি ইসলাম মানেনই না, তার জন্য ইসলাম নয়।
ইসলামের বিধান শুধু ওই ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহকে রব হিসেবে মেনে নিয়েছে। মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবী ও রাসুল হিসেবে মেনে নিয়েছে। আমৃত্যু আল্লাহর ইবাদত করার অঙ্গীকার করেছে। শয়নে-স্বপনে, গোপনে-প্রকাশ্যে, আলোকে-আঁধারে, ছোট থেকে বৃহৎ- জীবনের প্রতিটি কাজে যে আল্লাহকে স্মরণ করে, ইসলাম তার জন্য। যে নিজেকে আল্লাহর কাছে সঁপে দিয়েছে, ইসলাম তার জন্য। যে দুনিয়ার জীবন থেকে পরকালের জীবনকে প্রাধান্য দেয়, ইসলাম তার জন্য।
ইসলাম ওই ব্যক্তির জন্য, যে দ্ব্যর্থহীনভাবে এই ঘোষণা দেয়, ‘বলে দাও, আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও মরণ বিশ্বজাহানের রব আল্লাহর জন্য।’ -সুরা: আনআম, আয়াত: ১৬২
তাই প্রত্যেক মুসলমানের করণীয় হলো, যে কাজই সে করুক না কেন, তা কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা। সুতরাং, ‘সব জায়গায় ইসলাম টেনে আনেন কেন' - এ প্রশ্নটি সঠিক নয়।
আসলে ইসলামকে ‘টেনে আনার’ কিছু নেই, বরং ইসলাম সব ক্ষেত্রে স্বমহিমায় উপস্থিত। ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ ধর্ম। সব কিছুতে ইসলাম- এ কথার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো ইসলামে ‘সব কিছু’ আছে। কারণ, কোরআন বলছে, ‘...আমি মুসলমানদের জন্য সব বিষয়ে ব্যাখ্যাদানকারী, পথনির্দেশক, অনুগ্রহ ও সুসংবাদস্বরূপ তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি।’ -সুরা : নাহল, আয়াত : ৮৯
ইসলাম আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ অনুগত হওয়া, আনুগত্য করা, আত্মসমর্পণ করা। আল্লাহর কাছে সর্বতোভাবে আত্মসমর্পণকারীকে মুসলিম বা মুসলমান বলা হয়। ইসলামের বাণী সবার জন্য অবারিত হলেও ইসলামের বিধান মুসলমানদের জন্যই প্রযোজ্য। একজন মুসলমানকে দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জীবনের সব ক্ষেত্রে ইসলাম মোতাবেক জীবন যাপন করতে হয়।
কেননা মুসলমান মাত্রই এ কথা বিশ্বাস করে, ‘নিঃসন্দেহে (মানুষের) আল্লাহর কাছে একমাত্র (গ্রহণযোগ্য) দ্বিন (জীবনব্যবস্থা) ইসলাম।’ -সুরা: আলে ইমরান, আয়াত: ১৯
ইসলাম একমাত্র ও সর্বোত্তম জীবনব্যবস্থা। একজন মুসলমান ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া থেকে শুরু করে আবার ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক - সব কিছুর ওপর ইসলামের বিধান আরোপিত। ইসলামের আংশিক ধারণ করে, বিশেষ ক্ষেত্রে ইসলাম বর্জন করার সুযোগ ইসলামে আদৌ নেই। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ -সুরা: বাকারা, আয়াত: ২০৮
মুসলমান হতে হলে এ কথায় বিশ্বাসী হতে হয় আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিজগতের স্রষ্টা, মালিক, প্রতিপালক ও একচ্ছত্র কর্তৃত্বের অধিকারী। সুতরাং তাঁর বান্দাদের জীবনযাত্রার নিয়ম-কানুন নির্ধারণের নিরঙ্কুশ ক্ষমতাও তাঁর। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তুমি কি জানো না, আসমান ও জমিনের সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহরই?’ -সুরা : বাকারা, আয়াত : ১০৭
কোনো মুসলমানের জন্য ইসলামকে কাটছাঁট করা কিংবা সহজায়ন করা সম্ভব নয়। কোরআন বলছে, ‘...তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে ঈমান রাখো আর কিছু অংশ অস্বীকার করো? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ছাড়া তাদের কী প্রতিফল হতে পারে? আর কিয়ামতের দিন তাদের কঠিন আজাবে নিক্ষেপ করা হবে। আর তোমরা যা করো, সে সম্পর্কে আল্লাহ উদাসীন নন।’ -সুরা: বাকারা, আয়াত: ৮৫
ইসলামে কোনো রিজার্ভেশন বা সংরক্ষণ নেই। এতটুকু আমার, এতটুকু আপনার - এ বিভাজন ইসলামে নেই। এতটুকু দেশের, এতটুকু প্রদেশের - এই পার্থক্য ইসলাম করে না। এতটুকু রাষ্ট্রের, এতটুকু ধর্মের - এই দূরত্ব ইসলাম মেনে নেয় না। এতটুকু রাজনৈতিক সুবিধার, এতটুকু অসুবিধার - এই আপসকামিতা ইসলাম সমর্থন করে না।
জবাবটা একটু বড় হয়ে যাওয়ায় দুঃখিত।
কৃতজ্ঞতাসহ।
১৭| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৯:৪২
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
#সোহানাজোহা
আমার নানী'র বংশে অনেক পীর ছিলেন। তাঁদের একজনের প্রশ্রাব সোনাতে পরিণত হয়েছিলো বলে শোনা যায়।
এখন কথা হচ্ছে, কাকে বিশ্বাস করবো?
আপনার উল্লেখিত পীরগণের সাথে আমার পরিচয় নেই। এখন , তাঁদের সম্পর্কে আমি শোনা কথায় কিভাবে বিশ্বাস করবো, বলুন তো?
বার্তা-বাহক হিসেবে কাউকে না কাউকে তো বিশ্বাস করতেই হবে। তিনি কে হবেন- খবরের কাগজওয়ালা, কোন প্রত্যক্ষদর্শী নাকি কোন ব্লগার?
আপনি নিশ্চয়ই কোরআন পড়েছেন। আপনি কিভাবে জানেন --- যে কোরআন আপনি পড়ছেন সেটা ১৪০০ বছর আগের কোরানের হুবুহু নকল? কোন প্রকাশনীর কম্পিউটার সেটায় কোন পরিবর্তন করেনি?
নিশ্চয়ই, আপনি কারো কাছ থেকে নিশ্চয়তা চাইবেন যে, আপনার পড়া কোরআনটি আল্লাহর পাঠান কোরআনের মতোই।
সেই কেউটা কে বা কারা? আপনার বাবা-মা-শিক্ষক-শিক্ষিকা-আত্মীয়-বন্ধু-বান্ধব?
যদি, তা-ই হয়ে থাকে, কোন না কোন ব্যক্তির উপর আপনাকে নির্ভর করতেই হবে।
আমার ক্ষেত্রে, সেই ব্যক্তি আমার বাবা-মা-শিক্ষক/শিক্ষিকা।
আশা করি, আমি বুঝাতে পেরেছি।
১৮| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৯:৫২
সোহানাজোহা বলেছেন: #সত্যপথিক শাইয়্যান, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আপনাকে সালাম জানালাম। এবং আপনাকে ধন্যবাদ। আমি ইসলাম ও শরিয়াহ মেনে চলি এর বাইরে এবং এর বেশী কিছু আমার জানার প্রয়োজন নেই।
শুভ রাত্রি।।
১৯| ২৯ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:২৪
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: যে বা যারা পা ছুঁয়ে সালাম করাকে কোরআন - হাদিস দিয়ে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করছে, আমার ধারনা, তারা বেরেলির আহমদ রেজা খান সাহেবের অনুসারী।
২০| ২৯ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:৩৮
নতুন বলেছেন: সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: #সোহানাজোহা আমার নানী'র বংশে অনেক পীর ছিলেন। তাঁদের একজনের প্রশ্রাব সোনাতে পরিণত হয়েছিলো বলে শোনা যায়। এখন কথা হচ্ছে, কাকে বিশ্বাস করবো?
প্রশাব সোনাতে পরিণত হতে পারে এটা যদি আপনার কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হতে পারে তবে আর কিছুই বলার নাই
২১| ২৯ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:৫৬
আমি সাজিদ বলেছেন: এটা রেওয়াজ ছিল, এখন মানুষ জানছে তাই হয়তোবা রেওয়াজ থাকবে না। কতোকিছুই তো পরিবর্তন হচ্ছে এই নতুন যুগে। কতোকিছুই আগে পরিবর্তন হয়েছে। লেখার জন্য ধন্যবাদ। আমিও অনেক কিছু জানলাম। কয়েকজন ব্লগার এই বিষয়ে যথারীতি উগ্র হয়ে সহব্লগারদের ছোট করছেন। এটা উচিত নয়। তার বা তাদের নাম বললাম না। এইটা ছোট বিষয়, ভুল ভাবে চলতে থাকলে এখন সমাজ ঠিক করে নিবে। এই বিষয়ে কাউকে ছোট করার দরকার নেই।
২২| ২৯ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:১৩
সোহানাজোহা বলেছেন: #আমি সাজিদ ব্লগে ব্লগারদের ছোট করার কাজটি সবচেয়ে বেশী করেছেন আপনি। আপনার বেশ কিছু মন্তব্য হিতাহিত জ্ঞানশূন্য - যার অকাট্য প্রমাণ আমার কাছে আছে। ব্লগ থেকে ব্লগার কমে গেলে কি আপনি আনন্দ পান সাজিদ? সাজিদ আপনার অসংখ্য মন্তব্য তেলে তেলময়। কিন্তু আমি যে পোস্টে মন্তব্য করি সেখানে আপনি এসে আক্রমণ করে বসেন এর কারণ জানতে পারি?
সাজিদ খালি কলসের মতো আপনি বেশী বেজে চলছেন। প্রায় পোস্টে আক্রমণ করা আপনার রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। সাজিদ আপনার জ্ঞাতার্থে জানানো হচ্ছে পোস্টে #সত্যপথিক শাইয়্যান এর মন্তব্য ও তার প্রতিমন্তব্য দেখুন তাঁকে সন্মান করে উত্তর দেওয়া হয়েছে। আপনি মাঝে এসে বিরক্তি উৎপাদন করছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের আপনার পদক্ষেপ ব্লগ এডমিন শক্তহাতে ব্যবস্থা নেবেন।
এখানে কেউ কাউকে ছোট করেনি। ব্লগের সব পোস্ট আমি মন্তব্য করি না, তার কারণ সে সব বিষয় আমার অজানা - ঠিক তেমনি যে বিষয়ে আপনি জানেন না সে বিষয়ে চুপ থাকুন।
২৩| ২৯ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৩৬
নূর আলম হিরণ বলেছেন: আমাদের নবীর মূত্র মুবারক পান করার ব্যাপারে হাদিসে কিছু আছে?
২৪| ২৯ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৩৬
আমি সাজিদ বলেছেন: ব্লগার সোহানাজোহা আপা, আমার ২১ নম্বর মন্তব্য কি আপনাকে উদ্দেশ্য করে? আমি কারও নাম উল্লেখ করি নাই। কাজেই আপনার ২২ নম্বর প্রতিউত্তরও আশা করি নাই। আমাকে নিয়ে আপনার অভিযোগ থাকতে পারে, কিন্তু এই লেখায় সেটা একটু অপ্রাসঙ্গিক নয়কি?
ব্লগ থেকে আমার কারনে কেন ব্লগার কমে যাবে? এমন হাস্যকর ও অবাস্তব কথা কেন বলছেন আপনি? আমি কে ব্লগারদের ব্লগিং করতে না দেওয়ার?
যেহেতু আপনি আমাকে আপনার ব্লগে ব্লক করে রেখেছেন, তাই এখানে নিজ থেকে আপনার আমাকে মেনশন করে মন্তব্য আমি আশা করি নাই।
২৫| ২৯ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৪৬
আমি সাজিদ বলেছেন: ব্লগার সোহানাজোহা আপা৷ আরেকটা কথা। আমার কোন কোন মন্তব্য হিতাহিত জ্ঞানশূন্য আপনার কাছে প্রমান আছে? আর কেউ তো অভিযোগ করে নি। আপনি করেছেন। এরপর আপনি আমার নামে মিথ্যা লিখে ব্লগারদের আমার বিরুদ্ধে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করে ( আমি নাকি ব্লগারদের গালি দিয়েছি) ব্লগে পোস্ট করেছেন। একটি নয়, দুটি পোস্ট। এরপর আমার কাউন্টার পোস্ট আসার পর আপনি মুছে দিয়েছেন নিজের পোস্ট।
আপনি এমন একটি সন্দেহে ভুগছেন যেখানে আপনার মনে হচ্ছে আমি আপনাকে ফলো করছি। অদ্ভুত কথা ও অবিশ্বাসযোগ্য কথা৷ আপনার আমার ইন্টারএকশন হয়েছে বেশী হলে ৫/৬ টা পোস্ট। টাইমলাইন মিলিয়ে দেখুন। আমি কেন আপনাকে ফলো করে মন্তব্য করতে যাবো?
আপনি বলেছেন আমার অনেক মন্তব্য তেল দেওয়া৷ আমি আপনার এই অপ্রাসঙ্গিক কথা বুঝতে পারছি না। একবার বলেন হিতাহিতজ্ঞানশূন্য মন্তব্য আবার বলেন তেল দেওয়া।
সোহানাজোহা আপা, আমার মনে হয় না আপনার নিক একজন চালান। যাই হোক, কোন দিন যেন আপনার সাথে ব্লগে ইন্টারএকশন না হয় আমি এই কামনাই করি।
২৬| ২৯ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৪৮
সোহানাজোহা বলেছেন: #আমি সাজিদ অতি চালাকরা বড় বড় বোকামি করে। আপনার ২১ নং মন্তব্য কাকে উদ্দেশ্য করে ব্লগের যে কেউ বলে দিতে পারবে। আপনার অত্যন্ত আক্রোশ মূলক ব্যক্তি আক্রমণে আমার ব্লগ থেকে আপনাকে ব্লক করেছি। আপনার মন্তব্যগুলো মুছে দিয়েছি, কিন্তু চাইলেই আমি সেই মন্তব্য ফিরিয়ে আনতে পারি প্রমাণ স্বারূপ।
আপনার কারণে অবশ্যই ব্লগার কমে যাবে। আপনার আক্রমণে আমি অন্তত ব্লগ ছেড়ে যেতে বাধ্য হবো। এবং ব্লগ ছেড়ে যাবার আগে ব্লগ এডমিনের কাছে লিখিত অভিযোগ করে যাবো যার সাথে প্রমাণ দলিল থাকবে।
আক্রোশ ভুলে ব্লগিং করুন। খুব সম্ভব আপনি কোনো কারণে ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত। অথবা বিপর্যস্ত। যে কারণে আমাকে আক্রমণের জন্য বেছে নিয়েছেন। আপনি ভুল করছেন।
আপনার সাথে আর কখনো কথা বলার ইচ্ছে নেই। সময় অপচয়।।
২৭| ২৯ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:৩২
আমি সাজিদ বলেছেন: ব্লগার সোহানাজোহা আপা, আপনি কি একাই পায়ে ধরে সালামের বিপক্ষে? আমি কারও নাম উল্লেখ করি নাই৷ তাহলে ধরে নেই, এই ইস্যুতে একমাত্র আপনিই সবাইকে ছোট করছেন?
আমিও আপনার পোস্টের জবাবে আমার কাউন্টার পোস্ট ড্রাফটসে নিয়েছি। আপনি যদি আবার আমার মন্তব্যকে ব্লগারদের গালি দেওয়া ও নারীদের ছোট করা বুঝাতে আপনার পোস্ট ফিরিয়ে আনেন, আমিও আমার পোস্ট ড্রাফটস থেকে তুলে আনবো। আমার কারনে কেন আপনি ব্লগ থেকে চলে যাবেন? মাত্র ৫/৬ টা পোস্টে কি এমন ইন্টারএকশন হলো যে আপনি আমার কারনে ব্লগ ছাড়বেন আমি বুঝতে পারছি না। ব্লগে নিয়মিত লিখুন। আপনি ভালো লিখেন।
আপনাকে আমি আক্রমনের জন্য বেছে নিবো কেন? অমূলক সন্দেহ করবেন না। আমি খালি কলসি। আমার সাথে কথা বললে আপনার স্টাটাস যাবে। প্লিজ। সময় নষ্ট করবেন না।
২৮| ০৬ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:২৬
মৃন্ময়ী শবনম বলেছেন: আমি সাজিদ আপনার কাজকি নারী ব্লগারদের ব্যক্তি আক্রমণ করা? আসলে আপনি প্রবল প্রবল ফ্রাস্টেশানে থাকেন যার কারণে আপনি এ কাজগুলো করছেন। সাজিদ আপনি কিন্তু মা. হাসানের পোস্টে মেডিক্যাল নিয়ে আক্রমণ করেন নি, অথচ ধর্ম চিকিৎসা সহ যে কোনো বিষয়ে গুটি কয়েক ব্লগারের সাথে আপনি নোংরা ঝামেলা থেরি করে ছুটে আসেণ। এটি আপনার অন্যায়। নীতিহীন মানুষ হলে যা হয় তাই করছেন। ব্লগে চায় মানুষ লেগে থাকুক তাতে ব্লগের লাভ। আমাদের কোনো লাভ নেই কারো সাথে ঝামেলা করে। অযথা। বিরক্তিকর বিষয়।
ব্লগে লোকজন আসেই এ ওর সাথে দ্বন্দ্ব করার জন্য। অথচ কেউ কারো পরিচিত নয়। একবার সামনা সামনি দেখলে বুঝতে পারতো এই লোকের সাথে দ্বদ্ব দুরে থাকুক কথা বলতেও পারশিশান লাগে। যাক, ব্লগ খোদা হাফেজ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৫২
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: উফ ভাইয়া মনে মনে আমিও অনুরোধ করেছিলাম আপনাকে এমন একটা পোস্ট দেয়ার জন্য যদিও বলা হয়নি। কদমবুচির পোস্টে আমি মন্তব্য করেছিলাম। মানুষ আসলে অবুঝ, কুসংস্কারাচ্ছন্ন মন। এসব আকড়ে ধরে থাকতে চায়। দিনে দিনে কত কুসংস্কার যে দূর করেছি। অনেক অন্ধকারে ছিলাম ছোট হতেই। আস্তে আস্তে এসব বিষয়ে জেনেছি। এখনো কত কুসংস্কারে ডুবে আছি আল্লাহ জানেন। আল্লাহ আমাদেরকে হেদায়েত দিন সঠিক বুঝদান দিন।
মুসলমান অথচ কুসংস্কার প্রথা ধরে রাখতে চাই। কেমন মুসলমান আমরা। মুরুব্বিরা ভুল করেছেন বলে আমরাও জেনে শুনে ভুল করবো ? পাপ করবো বিদআত করবো। এসব বললেও মানুষ শুনে না। বলে এসব আমরা পূর্ববর্তী বুর্জুগদের হতে শিখেছি।
আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। জাজাকাল্লাহ খাইরান।
ভাইয়া মেয়েদের নামাজে সতর ঢাকা নিয়ে একটা পোস্ট যদি দিতেন।
অনেক মহিলারা নামাজ পড়েন, কিন্তু হাফহাতা জামা অথবা গিরা পর্যন্ত জামা নেই এমন অবস্থায় নামাজ পড়েন। কেউ অর্ধেক মাথা ঢাকেন না।
আবার কেউ কেউ দাঁড়িয়ে ওযু করার সময় পাগুলো এমনিতেই ধুয়ে নেন, বসে হাত দিয়ে খিলাল পা করেন না। ঠিকমত কুলি বা নাক সাফ করেন না। মানুষ কষ্ট করে নামাজ পড়ে অথব এই নিয়মগুলো মানছেন না।
অনুরোধ : ছোট করে পোস্ট দিবেন ভাইয়া