নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ছবিঃ অন্তর্জাল।
বায়ু নির্গত হলে পবিত্রতা অর্জনের জন্য অজু করার বিধান দেয়ার হিকমত কি?
প্রতি দিনের মত আজকের দিনটা ঝকঝকে রৌদ্রোজ্জ্বল নয়। আকাশও কিছুটা মেঘলা। গুমোট একটা ভাব। মনে হচ্ছে কিছুক্ষনের মধ্যেই বৃষ্টি হবে। কিন্তু হচ্ছে না। ভ্যাপসা একটা গরম যেন বাড়তি উত্তাপ ছড়াচ্ছে। তারিফের ক্লাশ বন্ধ। ক্লাশ যে কবে খোলা হবে, তারও কোনো হদিস নেই। ক্লাশ নেই, তাই পড়াশোনারও চাপ নেই। লকডাউনের বিকেলগুলো ইদানিং টিএসসি, সেন্ট্রাল লাইব্রেরি আর নজরুলের কবরের এলাকাগুলোতেই কাটে। প্রায় দিনই বিকেলবেলায় তার সঙ্গী হয় তাহমিদ, তাকরিম আর মুনজির। আজ যুক্ত হয়েছে আরও একজন। বন্ধু ক্লাশ মেট আসিম। আসিমের আবার কিছু কিছু বিষয়ে, বিশেষ করে ধর্মীয় বিষয়ে খটকা লেগেই থাকে। অধিকাংশ সময়ে তারিফের কাছ থেকেই সে জেনে নেয় সেসব। তারিফ বন্ধুমহলে এসব ব্যাপারে এক কথায় অসাধারণ। তার যুক্তির সামনে হার না মেনে উপায় থাকে না।
তারিফকে টিএসসির দিকে আসতে দেখে কিছুটা দূর থেকেই আজ হাক ছাড়লো আসিম- কিরে বন্ধু, কেমন আছিস?
কাছে আসতে আসতে প্রথমেই সালাম দিল তারিফ। তারপর বললো- ভালো, তুই কেমন আছিস?
আছি তো বন্ধু, কিন্তু খটকা তো আরেকটা লেগে গেল। অজুর ব্যাপারে।
অজুর ব্যাপারে আবার কি খটকা লাগিয়েছ?
আরে খটকা আমি লাগাইনি। খটকা আমার কাছে লেগেছে।
ও আচ্ছা, তোর কাছে লেগেছে? কি লেগেছে? কিসের খটকা? খুলে বল দেখি। খটকার জট ছাড়ানো যায় কি না।
সেটাই বলছিলাম। গতকাল ইশার নামাজের অজু করতে গিয়েই বিষয়টা মনে হয়েছে। জটটা লেগেছেও সেখান থেকে। এই জট ছাড়ানোরও খুব দরকার। নয়ছয় বলে ভুলভাল বুঝালে হবে না। পরিষ্কারভাবে পারলে উত্তর দিবি, না পারলে বলে দিবি যে, পারছি না। ঠিক আছে? আচ্ছা, বল তো দেখি, বায়ু নির্গত হলে পবিত্রতা অর্জনের জন্য অজু করতে হয় কেন? বায়ু তো বের হয় পেছনের রাস্তা অর্থাৎ, পায়ুপথ দিয়ে, আর অজুতে ধূতে হয় হাত, পা, মুখ। মাসেহ করতে হয় মাথা। তাহলে বিষয়টা কেমন হয়ে যায় না? মজারও তো বটে! বল দেখি, এর কারণ কি? এর যুক্তিগ্রাহ্য এবং বিজ্ঞানসম্মত কোনো ব্যাখ্যা কি আছে তোর কাছে? দিতে পারবি?
তারিফ বলতে শুরু করলো- দ্যাখ, প্রশ্নটা তোর কাছে অতি সাধারণ মনে হলেও আসলে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য আমাদের একটু পেছন থেকে শুরু করতে হবে। এর জন্য জেনে নিতে হবে অজু ও ইবাদত কি এবং ইবাদতের জন্য অজুর প্রয়োজনীয়তাই বা কতটুকু! চল্ আগে দেখে নিই, অজু জিনিষটা কি!
'হ্যাঁ ঠিক, বল্' বলে মাথা নেড়ে তারিফের কথায় সম্মতি জানালো আসিম। তাহমিদ, তাকরিম এবং মুনজিরও সম্মতি জানালো। মুনজির বললো, ঠিক আছে, দারুন হবে। ভালোভাবে অজুর আদ্যপান্ত ব্যাখ্যাটা পাওয়া যাবে আজ।
তারিফ বলে, শোন- অজু (ﻭﺿﻮﺀ) শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, সৌন্দর্য্য (ﺍﻟﺤﺴﻦ) ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা (ﺍﻟﻨﻈﺎﻓﺔ ) পবিত্রতা অর্জন করা। اَلْوُضُوْءُ (واو বর্ণে যম্মাযোগে) শব্দের অর্থ উযূ করা, আর واو বর্ণে ফাতাহ যোগে اَلْوَضُوْءُ -এর অর্থ উযূর পানি। অজুর মাধ্যমে বাহ্যিকভাবে শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়। অপর দিকে অজুর কারণে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হতে গুনাহ ঝরে গিয়ে সেগুলো পাপমুক্ত হয়ে নূরানী ও উজ্জ্বল হয়ে যায়। শরিয়তের পরিভাষায় অজু হলো- নির্দিষ্ট অঙ্গসমূহে নির্ধারিত পদ্ধতিতে পানি প্রবাহিত করে সেগুলো ধৌত করে নেয়া। - ﺍﻟﻔﻘﻪ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﺬﺍﻫﺐ ﺍﻻﺭﺑﻌﺔ পৃষ্ঠা ৪৬
আর অজুর হুকুমের বিষয়ে কথা হচ্ছে- অজুর মূল উদ্দেশ্য যেহেতু নাপাকী ও অপবিত্রতা দূর করা। ফলে অজুর মাধ্যমে ফরজ ও নফল যেমন নামায, তিলাওয়াতে সিজদাহ, বাইতুল্লাহর তাওয়াফ ইত্যাদি আদায় করা যায়। সুতরাং, উপরোক্ত কাজসমূহ আদায়ের জন্য অজু করা ফরজ তথা অত্যাবশ্যক। অতএব, এ কাজগুলো অজুবিহীন ব্যক্তির জন্য জায়েয নয়। অনুরূপভাবে, কুরআনুল কারিম স্পর্শ করার জন্যও অজু করা ফরজ।
এ ছাড়া, অজুর আধ্যাত্মিক ফজিলতের পাশাপাশি রয়েছে শারীরিক বহুমুখী (বৈজ্ঞানিক) উপকারিতা। দৈনিক পাঁচবার নামাজের জন্য অজু করলে শরীরে নির্দিষ্ট অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সকল ধুলো ময়লা পরিষ্কার হয়। এতে রোগ জীবানু থেকে রক্ষা পেয়ে রোগাক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সহজ হয়ে যায়।
তু্ই তো দেখছি, বিশাল লম্বা ওয়াজ শুরু করেছিস! পুরো বিকালটাই মাটি করবি না কি? বাপরে বাপ! জীবানু পর্যন্ত প্রতিরোধের যুক্তি বের করে ফেলেছিস। আসল কথা বল্। বায়ু ত্যাগের পরে মলদ্বার না ধুয়ে অজু করার বিধান কেন, সেটা বল্। দয়া করে সংক্ষেপে সেই কথাটা বল্। দুনিয়ার প্যাচানো এইসব ওয়াজ আমার একটুও ভালো লাগে না। বললো আসিম।
আরে বাবা! এত অস্থির হলে কি হবে? কোনো কিছুর আসল পয়েন্টে যেতে হলে তো তোকে সে বিষয়ের আনুসঙ্গিক ব্যাপারগুলো আলোচনা করে তারপরেই যেতে হবে। এককথায় উত্তর দেয়া তো আর সবকিছুতে চলে না। তাই না? আর তাছাড়াও তুই তো আগেই লক্ষ্য করেছিস, আমি কিন্তু বলেছি যে, বিষয়টা তোর কাছে অতি সাধারণ মনে হলেও আসলে সেরকম মোটেই নয়। যাই হোক, অল্প কথাতেই আমরা ফিনিশিংয়ে চলে যাব। তুই বিরক্ত না হয়ে বাকি কথাগুলো একটু মনযোগ দিয়ে শুনতে থাক।
আচ্ছা, বল্। দেখি, কতক্ষণ মনযোগ ধরে রাখতে পারি। তবে, আবারও বলছি, দয়া করে একটু সংক্ষেপে বল্।
ধন্যবাদ। সেই চেষ্টাটাই করবো ইনশাআল্লাহ। বললো, তারিফ। তারিফ বলে চলেছে- তুই কি জানিস ইবাদত কি এবং ইবাদত কেন করতে হয়?
ইবাদত আবার না জানার মত এমন কি জিনিষ হলো যে এটা নতুন করে জানতে হবে? ইবাদত তো সেই ছোটবেলা থেকেই করে এসেছি। নামাজ পড়া, কুরআন তিলাওয়াত করা, জিকির তাসবীহ পাঠ করা, কল্যানমূলক কাজ করা ইত্যাদি সবই তো ইবাদত।
নামাজ পড়া, কুরআন তিলাওয়াত, জিকির ইত্যাদিই সবই তো ইবাদত- তা তো ঠিক কথাই। জানতে চাচ্ছিলাম যে, ইবাদত কি এবং ইবাদত কেন করতে হয়? অর্থাৎ, ইবাদতের মর্মার্থটা তুই ঠিকঠাকভাবে বুঝিস কি না সেটাই জানার ছিল।
মর্মার্থ টার্থ অতকিছু আমি বুঝি না। আমি বুঝি- ইবাদত করার কথা আল্লাহ তাআ'লা বলেছেন, সেজন্যই আমরা ইবাদত করি।
তোর বুঝব্যবস্থা যে ভালো তার প্রমান এই কথাটাই। তুই চমৎকার বলেছিস। সোজাসাপ্টা কথা। বেশি কিছু না জেনে সংক্ষেপে যারা এতটুকু জানে এবং ইবাদত করে থাকে, তাদের ইবাদত অধিক ইখলাসপূর্ণ মনে হয় আমার কাছে। তোরটাও। আচ্ছা, শোন্ ‘ইবাদাত শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- চূড়ান্ত বিনয় ও আনুগত্য প্রকাশ এবং পরিপূর্ণ বশ্যতা স্বীকার করা। তারিফ বলতে থাকে।
তারিফের কথা শেষ হয় না। সে আবার বলে- আর শারী‘আতের পরিভাষায় প্রকাশ্য কিংবা গোপনীয় যে সকল কথা ও কাজ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা ভালোবাসেন এবং পছন্দ করেন, সেসবের একটি সামষ্টিক নাম হচ্ছে ‘ইবাদাত। তাই যতসব কথা-বার্তা ও কাজ-কর্মকে আল্লাহ পছন্দ করেন, যেমন- সালাত (নামায) ক্বায়িম করা, সিয়াম (রোযা) পালন করা, কুরবানী করা, অর্থ সম্পদ আল্লাহর পথে কিংবা দ্বীনের কল্যানের কাজে দান করা, গরিব দুঃখী অসহায় মানুষকে সাহায্য সহযোগিতায় সাদাক্বাহ এবং যাকাত ইত্যাদি প্রদান করা, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার নিকট প্রার্থনা (দু‘আ) করা, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লাকে ডাকা, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার প্রতি ভয় ও আশা পোষণ করা, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার উপর ভরসা করা, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার তাসবীহ্ (মহিমা), তাহমীদ (প্রশংসা), তাকবীর (মহত্ব ও বড়ত্ব), তাহলীল (আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার একত্ব) বর্ণনা করা, কুরআনে কারীম তিলাওয়াত করা, কুরআন ও সুন্নাহ বর্ণিত ও নির্দেশিত দু‘আ ও যিকর- আযকার করা, রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি দরুদ পাঠ করা ইত্যাদি, এগুলোর প্রতিটি কাজই একেকটি ‘ইবাদাত। রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনুসৃত ও প্রদর্শিত পন্থানুযায়ী একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীনের উদ্দেশ্যে, তাঁরই (আল্লাহর) সন্তুষ্টি লাভের নিমিত্তে, তাঁর (আল্লাহর) প্রতি শ্রদ্ধাপূর্ণ ভয় ও সর্বোচ্চ ভালোবাসা নিয়ে, তাঁর প্রতি পূর্ণ বশ্যতা ও আনুগত্য প্রদর্শন পূর্বক তাঁর (আল্লাহর) মহত্বের সম্মুখে অবনত মস্তকে চূড়ান্ত বিনয়ের সাথে উত্তম প্রতিদান লাভের আগ্রহ ও সুদৃঢ় আশা নিয়ে উপরোক্ত যে কোন কর্ম সম্পাদন করাকে আল্লাহর ‘ইবাদাত বলা হয়।
তারিফ বলে চললো- যেসব ইবাদতের জন্য অজু বাধ্যতামূলক তার মধ্যে নামাজ প্রথম ও প্রধান। অন্যান্য ইবাদতের কোনো কোনোটির ক্ষেত্রে অজুর বাধ্যবাধকতায় কিছু বিশেষ ছাড় রয়েছে। নামাজের জন্য শুধু শরীর পাকই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন দেহ, মন, পোশাক, নামাজের স্থান সব কিছুর পবিত্রতা ও মনের ঐকান্তিক একাগ্রতার সাথে চূড়ান্ত বিনয়, আনুগত্য ও বশ্যতা স্বীকার। এর যে কোন একটির অভাব নামাজের পরিপূর্ণতার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হিসেবে গণ্য হবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বায়ু ত্যাগের কারণে অজু করার কি যুক্তি বা প্রয়োজন? আগেই বলেছি, প্রতিটি ইবাদতের ক্ষেত্রে একাগ্রতা অন্যতম শর্ত। এখন আপনি কিছুক্ষণের জন্য একটি দৃশ্য কল্পনা করুন, ধরুন, নামাজ আদায়ের জন্য একটি জামাআত দাঁড়িয়েছে। সেই জামাআতে আছেন আপনিও। আর এসময় আপনি শুনছেন, আপনার ডানে বামে পেছনে সামনে বিভিন্ন দিক থেকে ভুটভাট বায়ু ছাড়ার শব্দ ভেসে আসছে। বলুন তো, পরিবেশটা কেমন হবে? সেই নামাজে একাগ্রতা বলতে কিছু থাকবে কি? না কি, পরিবেশটাই দুর্গন্ধযুক্ত এবং বিনষ্ট হবে? নামাজের একাগ্রতা তো দূরের কথা, মসজিদের পবিত্রতা বলতে কিছু অবশিষ্ট থাকবে তখন? এমন ভুটভাট শব্দ যদি চতুর্দিক থেকে এক যোগে শুরু হয়ে যায়, তখন তো হাস্যরসেরও একটা ভিন্নরকম পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। অতএব, সামান্য চিন্তা করলেই বুঝতে কষ্ট হয় না, বায়ু নিঃসরণের মত একটি অবস্থাকে ইসলামী শরীয়তে অজু ভঙ্গের কারণ সাব্যস্ত করা অবশ্যই যথার্থ এবং যৌক্তিক। তারিফের কথা শেষ হয় না।
তারিফ একটানা বলতে থাকে- এবার চল্, জাগতিক একটা উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টা আরেকটু খোলাসা করার চেষ্টা করি। ধরে নে, তুই কোনো একটি অফিসে চাকরি করিস। এই মুহূর্তে অফিসে তুই তোর উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সামনে বসে আছিস। তোদের সাথে অন্যান্য কর্মকর্তারাও রয়েছেন। অফিসের কাজকর্ম করছেন। হঠাৎ তুই লক্ষ্য করলি যে, তোর পেটে প্রচন্ড বায়ুর চাপ শুরু হয়েছে। বায়ু ত্যাগ না করলেই নয়। কিন্তু তুই জানিস, এই অবস্থায় বায়ুটা ছাড়লেই উদ্ভট এবং বিকট টাইপের একটা শব্দ বেরিয়ে আসবে। একটা অন্যরকম লজ্জাস্কর পরিবেশের সৃষ্টি হবে এটাও তুই জানিস। তোর পেটের অবস্থা খারাপ থেকে থাকলে, সেই শব্দের সাথে সাথে প্রচন্ড দুর্গন্ধেও ভরে যেতে পারে তোদের অফিস কক্ষটি। একটু বুঝে বল তো, এই অবস্থায় স্যারের সামনে, সহকর্মীদের সাক্ষাতে তুই কি বায়ুটা নিঃসরণ করতে পারবি? তোর পক্ষে এটা সম্ভব হবে?
আরে তোর অফিসের কথা বলছি কেন? হাটে বাজারে, পথে ঘাটে কিংবা বাসা বাড়ির কথাই চিন্তা করে দ্যাখ না! মনে কর্, বাড়িতে বাবা মা, ভাই বোনসহ কয়েকজন একত্রে আছিস, এমন সময়েও কি সশব্দে বায়ু ত্যাগ করা যায়? তোর পক্ষে এটা সম্ভব? বলি, পথ চলতে বায়ু নিঃসরণের প্রয়োজন হলেও তো কয়েকবার সামনে পেছনে এবং ডানে বামে মিটিমিটি করে তাকিয়ে নিস। কি, নিস না?
হো হো করে স্বশব্দে হেসে ওঠে তাহমিদ, তাকরিম ও মুনজির। আসিমকে দেখে মনে হচ্ছে, ওদের হাসির কারণে কিছুটা লজ্জা পেয়েছে।
তারিফ ওদের হাসিকে পাত্তা না দিয়ে আবার বলতে শুরু করলো- তাহলে এবার একটু ভেবে দেখ, তোর সৃষ্টিকর্তা, প্রতিপালক, মহাবিশ্বের সকল কিছুর একচ্ছত্র মালিকের সামনে দাঁড়াচ্ছিস, নামাজে, নত মস্তকে, তাঁর ইবাদতের জন্য, আর সে অবস্থায় ভুট-ভাট বায়ু ত্যাগ করছিস! কেমন লাগবে বিষয়টা? তো, সেই ইবাদতের ভেতরে একাগ্রতা বলতে কি আদৌ কিছু থাকবে? না কি, পুরো পরিবেশটাই বিনষ্ট হবে? বলা বাহুল্য, স্বাভাবিকভাবে একাগ্রতা এবং পরিবেশের ভাব গাম্ভির্য্য উভয়টাই নষ্ট হবে।
তাহমিদ বলে উঠলো, একদম ঠিক বলেছিস তারিফ। ছোট বেলায় একবার এরকম হয়েছিল। আমাদের গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায় করছিলাম। নামাজের মাঝখানে ছেলেপিলের দল একে অপরকে ঠোকাঠুকি করতে থাকে। একপর্যায়ে তাদের একজন এমন বেসাইজ আওয়াজে বায়ু ত্যাগ করে যে, সেই দুষ্টদের দলের বাকিসবগুলোই হো হো করে হেসে ওঠে। সে হাসি ভাইরাসের মত ছড়িয়ে পড়ে সবার ভেতরে। অগত্যা ইমাম সাহেব নামাজ ছেড়ে দিয়ে পুনরায় আদায় করতে বাধ্য হলেন।
তারিফ বলে- তাহলে বুঝতেই পারছিস যে, অবস্থা কতটা জটিল হতে পারে! পুরো মসজিদের সকলের না্মাজই ফাসেদ। এবার চিন্তা কর। অবস্থা বুঝে না চললে এবং বায়ু ত্যাগকে সামান্য বিষয় ভেবে বসলে যা হতে পারে এটি তার একটি উদাহরণ। বস্তুতঃ মহান রব যিনি মালিক এবং খালিক, তিনি সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাবান! তিনি যা কিছুরই নির্দেশ দেন তা তার বান্দার জন্য মঙ্গলজনক ও কল্যানকর বিবেচনায়ই তিনি করে থাকেন। তিনি কোন বোঝা তার বান্দার উপর চাপিয়ে দেন না। এ জন্যই নামাজের সময় বায়ু নির্গত হওয়ার ব্যাপারে কিছু নির্দেশনা রয়েছে। তা হচ্ছে- যদি নামাজে শব্দ ও গন্ধবিহীন বায়ু নির্গত হয় এবং তা নির্গমনকারীর সন্দেহ হয় কিন্তু নিশ্চিত না হয় তবে সন্দেহের মধ্যে নামাজ ত্যাগ না করতে বলা হয়েছে। এছাড়া মাজুর ব্যাক্তি যিনি বার বার বায়ু ত্যাগের সমস্যায় ভুগছেন, তিনি এক অজুতেই নামাজ পড়বেন, যদিও নামাজে তার বায়ু নির্গত হয় তবুও। -এবার বুঝতে পেরেছিস?
মাথা ঝাকিয়ে হ্যাঁ বোধক উত্তর দিল আসিম।
তারিফ বললো, ধন্যবাদ। শোন, এর সাথে আরেকটি ব্যাপার বুঝতে হবে তোকে। অজু ভঙ্গের কিছু কারণ রয়েছে। এসব কারণ কিন্তু কুরআন হাদিসের দলিল দ্বারা নির্দেশিত। কেউ ইচ্ছে করলেই এই ক্ষেত্রে একটি কারণ বাড়াতে কিংবা কমাতে পারবে না। আর এর বিপরীতে অজু ভঙ্গ হলে বা ছুটে গেলে সেক্ষেত্রে পবিত্রতা অর্জনের নিয়মও কোনো মানুষের বানানো নয়। এটিও কুরআন হাদিসের আলোকে ইসলামী শরিয়ত প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণ করেই করতে হয়। এখানে একটি বিষয় খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে তোকে। চল্ বিষয়টি বুঝার আগে অজু ছুটে যাওয়ার কারণগুলোতে একটু চোখ বুলিয়ে নিই-
তুই হয়তো নিশ্চয়ই জানিস যে, অজু ভঙ্গের মৌলিক ও প্রধান কারণ ৭টি। তারপরেও আলোচনার সুবিধার্থে কারণগুলো এখানে উল্লেখ করছি-
(১) পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। যেমন বায়ু, পেশাব-পায়খানা, পোকা ইত্যাদি। -হেদায়া-১/৭
কুরআনুল হাকিমে ইরশাদ হয়েছে,
أَوْ جَاء أَحَدٌ مَّنكُم مِّنَ الْغَائِطِ
অথবা, তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসলে (নামাজ পড়তে পবিত্রতা অর্জন করে নাও)। -সুরা মায়িদা-৬
হযরত আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, শরীর থেকে যা কিছু বের হয়, তার কারণে অজু ভেঙে যায়...।` -সুনানে কুবরা লিল বাইহাকি, হাদিস নং-৫৬৮
(২) রক্ত, পূঁজ, বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। -হেদায়া-১/১০
হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝড়তো, তখন তিনি ফিরে গিয়ে অজু করে নিতেন। -মুয়াত্তা মালিক-১১০
(৩) মুখ ভরে বমি করা।
হযরত আয়শা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তির বমি হয়, অথবা নাক দিয়ে রক্ত ঝরে, বা মজি (সহবারের আগে বের হওয়া সাদা পানি) বের হয়, তাহলে ফিরে গিয়ে অজু করে নিবে। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং-১২২১
(৪) থুথুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া।
হাসান বসরি (রহ.) বলেন, যে ব্যক্তি তার থুথুতে রক্ত দেখে তাহলে থুথুতে রক্ত প্রবল না হলে তার ওপর অজু করা আবশ্যক হয় না। -মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস নং-১৩৩০
(৫) চিৎ বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুম যাওয়া।
হযরত ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, সিজদা অবস্থায় ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয় না, তবে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লে ভেঙ্গে যাবে, কেননা চিৎ বা কাৎ হয়ে শুয়ে পড়লে শরীর ঢিলে হয়ে যায়। [ফলে বাতকর্ম হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে]। -মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-২৩১৫, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-২০২
(৬) পাগল, মাতাল বা অচেতন হলে।
হযরত হাম্মাদ (রহ.) বলেন, যখন পাগল ব্যক্তি সুস্থ্ হয়, তখন নামাজের জন্য তার অজু করতে হবে। -মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস নং-৪৯৩
(৭) নামাজে উচ্চস্বরে হাসি দিলে।
হযরত ইমরান বিন হুসাইন রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি নামাজে উচ্চস্বরে হাসে, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। হযরত হাসান বিন কুতাইবা (রহ.) বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি উচ্চস্বরে হাসি দেয়, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। -সুনানে দারা কুতনি, হাদিস নং-৬১২
শোন, এগুলো হল অজু ভঙ্গের প্রধান ও মৌলিক কারণ। এর প্রথম কারণটিই কিন্তু পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। এই 'কোনো কিছু' কথাটির ভেতরে পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা দিয়ে যা কিছু বের হতে পারে যেমন- বায়ু, পেশাব-পায়খানা, পোকা ইত্যাদি সবকিছুই শামিল বা অন্তর্ভূক্ত। তুই লক্ষ্য করেছিস? পেশাব পায়খানা ইত্যাদি প্রয়োজন পূরণের পরে পবিত্রতা অর্জনের এই নির্দেশনাটা কিন্তু স্বয়ং আল্লাহ তাআ'লার। কুরআনুল হাকিমে ইরশাদ হয়েছে,
أَوْ جَاء أَحَدٌ مَّنكُم مِّنَ الْغَائِطِ
অথবা, তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসলে (নামাজ পড়তে পবিত্রতা অর্জন করে নাও)। -সুরা মায়িদা-৬
আর তোকে তো এ কথা বুঝিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, পবিত্রতা অর্জনের উপায় কিন্তু সুসাব্যস্ত এবং নির্ধারিত। দু'টিই মাত্র উপায় রয়েছে এর জন্য। স্বাভাবিক অবস্থায় অজু এবং বিশেষ প্রয়োজনে তায়াম্মুম। অতএব, অজু যে কারণেই ছুটে যাক না কেন, প্রসাব পায়খানা কিংবা বায়ু ত্যাগ বা অন্য যে কারণই থেকে থাক না কেন, তোকে বুঝে নিতে হবে- সর্বাবস্থায় পবিত্রতা অর্জনের পদ্ধতি একই, অর্থাৎ, অজু কিংবা তায়াম্মুম। বুঝতে পেরেছিস?
আসিম বললো, হ্যাঁ, বুঝেছি, বলতে থাক।
তারিফ বললো, দ্যাখ, তোকে আরেকটি কথা বলি, তোর মনে হয়তো এই প্রশ্নটাও জাগতে পারে যে, মলদ্বার তো অজুতে ধোয়া হয় না, তাহলে পবিত্রতা অর্জনের ব্যাপারটা এই ক্ষেত্রে কেমনে কি? এর উত্তর হচ্ছে, বায়ু ত্যাগের ফলে মলদ্বারে কোনো ময়লা কিন্তু লেগে থাকে না বা জমে থাকে না। যদি ময়লা সেখানে লেগে থাকতো তাহলে নিশ্চয়ই তা পানি দ্বারা ধৌত করার কিংবা অন্য উপায়ে পরিষ্কার করারও বাধ্যবাধকতা বা আবশ্যকতাও থাকতো। সেই বিধানও শরিয়তে যুক্ত করা হতো। যেমনটি তুই দেখে থাকিস, মল ত্যাগ করার পরে আমরা টয়লেট টিস্যু, পানি ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকি। বিশেষ করে, পানি দ্বারা আমরা মলদ্বার ধৌত করে থাকি। তুইও তো করিস। না কি, করিস না?
দ্যাখ, এটা না করার কি আছে? আমি কেন? সবাইই তো করে। আসিম বললো।
সুতরাং, একথা কি আমরা বলতে পারি না যে, ইবাদতের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব অনুধাবন ও একাগ্রচিত্তে ইবাদতে মনোনিবেশ করার জন্যই আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন বায়ু নির্গত হলে অজুর নির্দেশনা দান করেছেন, অন্য কোন কারনে নয়। গুরুত্বপূর্ণ এসব বিষয় বুঝার জন্য বিনীত অন্তর লাগে, বিগলিত মন লাগে, অন্যথায় খটকা তো লাগতেই থাকবে। শোন, কিছু লোক কিন্তু থাকে যারা নিজেদের সবসময় অতি বুদ্ধিমান শ্রেণির ভাবেন। সে দিন একজন কথায় কথায় বলেছিলেন যে, অতি বুদ্ধিমানদের না কি সে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নামে ডাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কাউকে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ডাকা আমার কাছে অবশ্য সবসময়েই অতিরঞ্জন মনে হয়। তোর কাছে কি মনে হয়?
আমার কাছেও তাই মনে হয়। তোকে অসংখ্য ধন্যবাদ, চমৎকারভাবে বিষয়টা বুঝিয়ে দেয়ার জন্য। আসিমের নিরুত্তাপ উত্তর।
১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৪৫
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ। আপনাকে সবসময়ই কাছে পাই। আর কিছু না হলেও আপনার উপস্থিতি খুবই ভালো লাগে। শুভকামনা জানবেন নতুন ভাই।
২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:১৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
বায়ু যাতে নির্গত না হয়, উহার জন্য দোয়া নেই?
১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:০৫
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ। আপনি একটা তৈরি করতে পারেন কি না, চেষ্টা করে দেখতে পারেন। আপনার বায়ুর সমস্যা আছে?
৩| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৪৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এই প্রশ্নটা আমারও অনেক দিনের। তবে, এর উত্তর পাওয়ার জন্য ঘাঁটাঘাঁটি করি নাই। আপনার পোস্ট দেখে আগ্রহ হলো।
গল্পের ছলে সুন্দর করে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন নকিব ভাই। তবে স্বীকার করছি, এটা বোঝার জন্য অতখানি জ্ঞান আমার নাই।
আপনার গল্প বলার স্টাইল কিন্তু অসাধারণ।
১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:০৯
নতুন নকিব বলেছেন:
সোনাবীজ ভাই,
আপনার উপস্থিতি প্রেরণার। গল্প বলার ধরণটা আপনার মত গুণী সাহিত্যিকের কাছে প্রশংসনীয় হওয়ায় সত্যিই ভালো লাগলো। উৎসাহিতবোধ করছি।
বিষয়টি আসলে আমার নিতান্ত ক্ষুদ্র জ্ঞানে নিজে বুঝার চেষ্টা করেছি গল্পাকারে উপস্থাপনের মাধ্যমে। এর আরও গ্রহণযোগ্য, যুক্তিপূর্ণ এবং ভালো ব্যাখ্যা হয়তো থাকতে পারে।
শুকরিয়া। শুভকামনা।
৪| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন: বায়ু যাতে নির্গত না হয়, উহার জন্য দোয়া নেই?
হাসতে হাসতে আমি শেষ!!!! স্যলুট চাঁদগাজী। আপনার মতো মজার মন্তব্য আর কেউ করতে পারে না।
১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:১৮
নতুন নকিব বলেছেন:
হাসতে হাসতে আমি শেষ!!!! স্যলুট চাঁদগাজী। আপনার মতো মজার মন্তব্য আর কেউ করতে পারে না।
-তা হাসি কিংবা স্যালুট যতই দেন, মনে হচ্ছে লাভ তেমন একটা নেই। তাকে যত তেলই দেয়া হোক না কেন, তিনি কিন্তু তার স্থানে একদমই অটল।
আপনার ব্যাপারে এ যাবত তিনি মোটামুটি ভালোমানের উদাসীনতাই দেখিয়ে এসেছেন। শুধু একবার দেখেছিলাম, আপনাকে চায়ের দোকান বা এমন কিছু করার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৪৩
নতুন বলেছেন: বায়ু নির্গত হলে পবিত্রতা অর্জনের জন্য অজু করতে হয় কেন? বায়ু তো বের হয় পেছনের রাস্তা অর্থাৎ, পায়ুপথ দিয়ে, আর অজুতে ধূতে হয় হাত, পা, মুখ। মাসেহ করতে হয় মাথা। তাহলে বিষয়টা কেমন হয়ে যায় না? মজারও তো বটে! বল দেখি, এর কারণ কি? এর যুক্তিগ্রাহ্য এবং বিজ্ঞানসম্মত কোনো ব্যাখ্যা কি আছে তোর কাছে? দিতে পারবি?
এই জিঙ্গাসার জবাব কিন্তু উপরে পাইনাই।
যদি বলতো বায়ু ত্যাগ করলে নামাজ থেকে দুরে গিয়ে আবার কিছুক্ষন পরে শুরু করতে তবেও সমস্যা নাই। কিন্তু নাপাক বায়ু যেখান দিয়ে বের হলো সেটা না ধুয়ে মাথা পরিস্কারের যুক্তি যে খুজে পায় তাকে আর কি বলা যায়।
যদি পায়ুপথ ধৌত করতে বলতো তবে আর সমস্যা থাকতো না।
উপরে সঠিক কোন জবাব নাই থাকলে টু দা পয়েন্টে বলতে পারতো। এটা শাকদিয়ে মাছ ঢাকার চেস্টা মাত্র।